বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ২৮ || romantic love story

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ২৮
Writer Nondini Nila

আমি সবার আড়ালে লুকিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। কান দিয়ে আমার গরম হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে। ইশ ভাইয়াকে আমি চুমু খেলাম ছিঃ ভাইয়া আমাকে কি ভাবছে? এই লজ্জা আমি ক‌ই রাখি ভাইয়ার সামনে কি করে যাব আমি‌।
সবাই কতো ইনজয় করছে আমি একা লুকিয়ে বাগানে আছি। ভাইয়ার জন্য তো এখানে এসে আমি আমার তো ভাইয়ার কাছে যেতেই লজ্জা করছে কিভাবে যাব তার সামনে।
এক হাত দিয়ে আরেক হাত মুচরাতে মুচরাতে ভাবনা ভাবছি।
তখন হঠাৎ মনে হলো কেউ আমার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে। আমি চমকে পেছনে ফিরে তাকায় কিন্তু কেউ নেই। কিন্তু আমার মনে হলো কেউ আমার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে। এবার আমি ভয় পেয়ে গেলাম এভাবে বাসায় বাইরে আশা ঠিক হয়নি আমার। এদিকে কেউ নেই আমি বাসায় আশার সিদ্ধান্ত নিলাম।
আমি এক পা এগিয়ে যেতেই খচ করে শব্দ হলো আমি ভয়ে কেঁপে উঠলাম দ্রুত পাশ ফিরতেই কেউ আমার মাথায় আঘাত করলো,
আঘাত পেয়ে আমি স্তম্ভিত হয়ে গেলাম ব্যাথায় চিৎকার করে উঠলাম এক হাতে মাথায় চেপে ধরে।

মাথায় হাত দিয়ে ভিজা অনুভব করলাম ঝাপসা চোখে হাত চোখের সামনে এনে ধরতেই লাল টকটকে রক্ত ভাসলো আমি থমকে গেলাম। ব্যাথা চোখ খুলে রাখতে পারছি না। ওইভাবেই ওইখানে পরে গেলাম তীব্র ব্যাথা আমি দাঁড়িয়ে থাকতে পারছি না আমার পৃথিবী অন্ধকার হয়ে আসছে।
এতো কষ্ট আমার কখনো হয়নি কখনো না। মনে হচ্ছে এই কষ্টে আমি আমার মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবো। পৃথিবীতে সময় কি তাহলে আমার শেষ। হঠাৎ চোখের সামনে বাবা মার মুখ টা ভেসে উঠলো তাদের ভালোবাসার কথা কতো ভালোবাসে আমাকে বকে কিন্তু ভালোবাসার খুবই। আমি মরে গেলে খুব কষ্ট পাবে তারা খুব। কাঁদবে আমার জন্য আদনান ভাই সেও কি কষ্ট পাবে হুম পাবে তো কালকেই ভাইয়ার আমাকে ভালোবাসি বলল আর আজ আমার এই অবস্থা ভাইয়ার ভালোবাসা পাওয়া কি আমার কপালে ছিলো না। হয়তো ছিলো না আমার সময় এই পর্যন্ত ছিলো।চোখ খুলে রাখতে পারছি না বন্ধ হয়ে গেল চোখের কোণে পানি পরছে। কেউ আমার সামনে দাড়িয়ে কিন্তু কে সে যে আমার এই অবস্থা করলো আমি তাকাতে চাইলাম কিন্তু পারলাম না আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে কষ্টে।

আরও গল্প পড়তে ভিজিট করুন

তিথি পৈশাচিক আনন্দ নিয়ে তাকিয়ে আছে দোলার দিকে। ওর আনন্দ যেন উপচে পরছে। এতো দিনে আদনান ওর হবে খুশি ওর নাচতে ইচ্ছে করছে। আচমকা দোলার পাশে বসে পরলো।
“ইশ বেচারি। ভালোবাসা পেয়ে কি আনন্দটাই না করছিল আর কিছু ক্ষনের মাঝে তার এই অবস্থা। তোমার জন্য খারাপ লাগছে দোলা আমি এমন টা করতে চাইনি কিন্তু কি করবো বলো তুমি বেঁচে থাকলে আদনান কখনো আমার হতো না। এবার তুমি নেই এই কষ্টে পাগল হয়ে যাবে নিংস হয়ে মাবূ আর আমি হব ওর সব কিছু।এবার আদনান কে আমায় ভালোবাসতেই হবে।”
দোলার দিকে তাকিয়ে আরো কিছু কথা বলে তিথি লুকিয়ে পার্টিতে চলে এলো।
পার্টিতে এসে ড্রিংস এর কাছে এসে বসলো। একটা ওয়ানার হাতে নিয়ে তাতে চুমুক দিচ্ছে আর ভাবছে আজকে তো আমাকে সেলিবেশণ করতেই হবে আমার পথের কাঁটা দূর করতে পেরেছি বলে কথা।
আদনান এখন করছে কি আচ্ছা একটু পর যখন ওর প্রানের দোলা রানীর ওই অবস্থা দেখবে ওর কি হাল হবে? ও কি করবে?
আদনান তোকে আমি এই কষ্ট দিতাম‌ই এটা না পেলে মে তুই আমার সত্যি না কখনো। জানি আমার অন্যায় করেছি কিন্তু ভালোবাসার ক্ষেত্রে কিছু অপরাধ না আমার কাছে।

আদনান দোলার কাছে হতদম্ব হয়ে গেছে। দোলা এমন ভাবে কিস করবে ও ভাবেনি। কিন্তু মেয়েটা গেল কোথায় সে কখন থেকে খুঁজে যাচ্ছি। লজ্জায় ওর মুখে লাল হয়ে গেছিল ঝুঁকের বসে কিস করে নিজেই লজ্জা মরে যাচ্ছে পাগলি একটা। দোলার কথা ভেবে আদনান এর মুখে ও হাঁসি ফুটে উঠেছে। বারবার দোলার স্পর্শের কথা মনে হচ্ছে। আমি যে নিজের ভালোবাসার মানুষটির কাছে থেকে এতো তাড়াতাড়ি ভালোবাসা পাব কল্পনাতেও ভাবিনি‌। পার্টিতে দোলাকে খুজছে আদনান কিন্তু পাচ্ছে না বিরক্ত হয়ে যাচ্ছে।
গেল কোথায় এখানে তো নাই ওই তো দোলার মা আন্টি আম্মু সবাই ওই খানে যার সবাই সবার মতো ইনজয় করছে। হঠাৎ কোথা থেকে তিথি এসে আমার হাতে বাহু জরিয়ে ধরলো আমি চমকে উঠলাম। রেগে ওর দিকে তাকালাম তিথির সেদিকে লক্ষ্য নেই ও আমার দিকে তাকিয়ে আছে হা করে আমি ঝামটা মেরে ওর হাত নিজের বাহু থেকে সরিয়ে দিলাম।
“কি হচ্ছে এসব? এমন করছিস কেন অসভ্যের মতো।”
তিথি আমার থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে মুখ বেকা করে তখন আমার দিকে‌ তাকালো।

“তুই আমাকে আবার অসভ্য বললি আদনান।”
“অসভ্যের মত কাজ করলে বলবো না।”
‘আমি ধরলে ফোসকা পড়ে তোর গায়ে আর ওই দোলা তোকে কিস করলে কিছু হয় না তাই না।”
তিথির মুখে কিসের কথা শুনে আদনান বিশ্মিত হয়ে তাকালো ওর মুখের দিকে।
“কি রে অবাক হচ্ছিস কেন ভাবছিস আমি কি করে জানলাম এই সব?”
প্রশ্ন তো চোখে তাকিয়ে আছে আদনান।
“খোলামেলা জায়গায় এসব করলে তো আমাদের মত অনেকেই দেখতে পাবে তাই না।”
তিরস্কার করে বলল তিথি।
“সর আমার সামনে থেকে তুই ড্রাংক।”
তিথি শুনলো না উল্টা আদনান এর কাছে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরল।
“আই লাভ ইউ আদনান। আমি তাকে খুব ভালোবাসি ওই দোলার থেকে ও বেশি। প্লিজ লাভ মি।”
“ছার আমাকে তিথি। কি করছিস সব কিছুর কিন্তু একটা লিমিট আছে।”
“না ছারব না আগে বল তুই আমাকে ভালবাসবে!”
‘পাগলামো করিস না বাবা-মা আছে এখানে এভাবে দেখলে কিন্তু ওনারা মাইন্ড করবে।”
“আই ডোন্ট কেয়ার।
তিথিকে বলেও আদনান কিছু বোঝাতে পারলো না তাই নিজেই জোর করে ছাড়িয়ে নিয়ে আচমকা তিথির গালে ঠাস করে চড় মেরে বসলো। রাগে আদনান এর চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে। কপালের রগ ফুলে উঠেছে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,,
“বাসায় এত লোকের সামনে এর থেকে আর ভালো কোন পানিশমেন্ট তোর জন্য পেলাম না।নেক্সট টাইম আমি যেন তোকে আমার চোখে সামনে আর না দেখি আজকে বাসায় চলে যাবি।”

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ২৭

কথাগুলো বলে আদনান ওর সামনে থেকে চলে এলো।
তিথি গালে হাত দিয়ে ফুসফুস করতে করতে আদনান এর যাওয়ার পানে তাকিয়ে আছে। তুই আমাকে চড় মারলি আর কি বললি আমি যেন চলে যাই আমি কখনো যাবনা। চলে যাবে ওই দোলা যার জন্য তুই আমাকে এতো ইন্সাল্ট করলি।
আদনান রাগে গজগজ করতে করতে বাসার বাইরে চলে রাগে মাথার চুল ছিড়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে। তিথিকে বাসায় আনা উচিত হয় নাই। ও নিজে তো না কখনো কিন্তু ঐদিন অফিস থেকে আসার পথে তিথির সাথে দেখা হয়ে যায় আর তিথি নিজেই বলে যে আদনান,” তোর বাসায় পার্টি হচ্ছে আর তুই আমাকে একটু বললি ও না।”
তিথির মুখে পার্টির কথা শুনে আদনান চমকে ছিল কারণ তিথি এসব জানলে কিভাবে? জিজ্ঞেস করায় বলে তাদের এত বড় কোম্পানি ফার্স্ট হয়েছে সেটা কি আমরা জানব না।
আদনানর এর বিশ্বাস হয় ওর কথা আর এতো দিনে বন্ধুত্ব ওদের তাই নিজে থেকে আসা র জন্য বলাতে আর মানা করে না‌‌। আর এসে এসব শুরু করেছে।
আস্তে আস্তে বাগানে চলে এসেছে আদনান। তিথি কে নিয়ে ভাবছে আর রাগে ফুসফুস করছে। হাঁটতে হাঁটতে পায়ে নিজে কিছু পরে নরম কিছু ও চমকে পা সরিয়ে নেয় তাড়াতাড়ি।

হালকা আলোয় ও নিচের দিকে তাকিয়ে থমকে যায় সাথে সাথেই স্তব্ধ-হতভম্ব হয়ে যায়।স্তব্ধ হয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে এসব কি দোলা এ ভাবে শুয়ে আছো কেনো তাও এই খানে।ভয়ে তাড়াতাড়ি নিচে বসে পড়ে ওর বুকের ভেতরটা কেমন যেন করে ওঠে অজানা ভয়ে।

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ২৯