বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ৫ || valobashar love story bangla

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ৫
Writer Nondini Nila

কলেজের শিমুল গাছের নিচে বসে আছি গালে হাত দিয়ে। আমার পাশে বসে আছে আমার ফ্রেন্ড সার্কেল। একটু আগে ওদের এই দুইদিনে আমার উপর করা সব অত্যাচারের কথা শেয়ার করেছি। তারপর থেকে সব গুলা আমাকে এতো এতো সান্ত্বনা দেওয়া শুরু করেছে।
এবার নেহা বলল,
” কষ্ট পাস না সোনা আমার। তুই মন খারাপ করে থাকলে আমাদের কারো ই ভালো লাগে না। কিরে বল! আর তোর ওই ভাইয়াকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা আমরা করবো।”
নেহার কথায় সবাই সায় দিলো( আমার ফ্রেন্ড সার্কেল মোট পাঁচজন নেহা, মুসকান, ইলমা, আবিদা আর আমি) শুধু আবিদা বাদে ও একা বলল,,
” কি সব বলছিস মাই জানেমান কে তোরা শাস্তি দিবি। এটা কিন্তু ঠিক না আমি মেনে নেব না।”
ওর কথা শুনে আমার গায়ে আগুন ধরে গেল।

গমগম করে বলে উঠলাম,,,” কি বললি তুই জানেমান? এই আদনান খাটাশ আমাকে এতো এতো অত্যাচার করলো আর তুই ওকে শাস্তি দিতে না করছিস। বান্ধবী নামের কলঙ্ক তুই। হায় কপাল আমার।”
আবিদা আবার বলল,, ” সরি মাই জান্টুস। রাগিস না প্লিজ আদনান তোর সাথে অন্যায় করেছে কিন্তু ও তো আমার একটা মাত্র ক্রাশ আমি ওকে শাস্তি দিতে রাজি হয় কি করে বল আমার তো কষ্ট হবে।”
মলিন মুখ করে বলল। ওর কথায় ইলমা বলে উঠলো,,
” ওরে আমার একটা ক্রাশ আলা আইছে রে তুই না ঘন্টায় ঘন্টায় ক্রাশ খাস।”
“আগে খাইতাম এখন তো খাইনা। আমি ভালা হ‌ইয়া গেছি।”
গর্বিত হয়ে বলল।
” খাও না কাল ও না একজন কে দেখে বললি, কি দেখতে মাইরি এটাকে আমি লাইন মারবো।”
তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে বলল ইলমা”
আবিদা রেগে তাকালো আমার দিকে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন

আবিদার দিকে তাকিয়ে বলল,,,”কিরে এভাবে তাকাচ্ছিস কেন?”
রেগে বলল আবিদা,,,”ওদের বলতে মানা করেছিলাম ইলুর বাচ্চা।”
ইলমা হতাশ হয়ে বলল,,”আমি ইলুর বাচ্চা না তায়েফ এর বাচ্চা ভুলে কেন যাস বারবার?”
ওইটা নিয়ে লাগল দুজনের মধ্যে ঝগড়া। বিরক্ত হয়ে নাক মুখ কুঁচকে আছি। একে তে আমি আছি আমার জ্বালায় আবার এই বান্ধরনীর প্যারা। আমি একটা চিৎকার দিয়ে ওদের থামালাম।
সব গুলা চুপ করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
“আর একটা কথা বললে তোদের সব কটাকে আমি করলার জোশ খাওয়াবো।”
আমার কথায় ওরা থামলো।
সবগুলা নাক মুখ ছিটকে বলল,,নো
আমি বললাম,,
“আমার জন্য কিছু করবি তা না নিজেরা ঝামেলা করছিস। তোরা আমার বান্ধবী‌ই না একজন ক্রাশ খেয়েছে বলে কিছু করবে না। আর তোরা এই ভাবে আমাকে কষ্ট দিলি। এমন বান্ধবীর কি দরকার কোন কথা নাই তোদের সাথে।”
বলে মনে খারাপ করে উঠে দাঁড়ালাম।আমাকে উঠে দাঁড়াতে দেখে ওরা উঠে সরি বলে আমাকে জোর করে আবার বসিয়ে দিল।
“প্লীজ জানু রাগ করিস না ওই আদনান কে শায়েস্তা করবোই দেখিস।”
আমি গাল ফুলিয়ে বসে আছি।

“আমার মাথায় একটা বুদ্ধি আসছে রে।” চিৎকার করে উঠল নেহা।
সবার সাথে আমি ও বললাম,,,”কি?
উৎফুল্ল হয়ে বলল,,,,”তুই ও তোর ভাইয়ের পছন্দ এর খাবার তাকে দেখিয়ে দেখিয়ে খা তাকে না দিয়ে।”
আমি খুব উৎসুক হয়ে ছিলাম ওর কথা শুনার জন্য কিন্তু শুনার পর ওকে একটা কষিয়ে চর মারতে ইচ্ছা করছে।
আমি কিনা ভাইয়ার পছন্দের খাবার খাব। ছিঃ তার পছন্দ বলতে তো ব্ল্যাক কফি উয়াক থু।
“জীবনে না।” নাক ছিটকে বললাম।
ওরা আমাকে কোন ‌ইসু দিতে পারলো না। ক্লাস শেষ করে গেটের বাইরে আসতেই নজর পরলো আদনান ভাইয়ের উপর গাড়িতে হেলান দিয়ে চোখ সানগ্লাস পড়ে এ্যাটিডিউট লুক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
এমন লুক যে কেউ দেখেই ক্রাশ খাবে আমি খেলাম। তারপর ভাবতে লাগলাম এই খাটাশটা আমার কলেজে কি করছে?
“ও মাই জানেমান এখানে ও উফ কি হট‌ই না লাগছে। উফ আমি পাগল হয়ে যাব।”
আবিদার নেকামির কথা শুনে আমার গা পিতৃ জ্বলে যায়।
ওরা ও ভাইয়াকে ভয় পায় তাই কেউ আর আমার সাথে গেল না যার যার বাসায় গেল।

আমি একবার ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে গাড়ির জন্য দাঁড়ালাম একটু দূরে ভাইয়া আমার কাছে এসে দাঁড়ালো। আর ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইলো,,
” আমাকে দেখতে পাস নি।”
আমি একবার তার মুখের দিকে তাকিয়ে রাস্তা দিকে তাকালাম।
“কথা কানে যায় না। আমাকে দেখে ও এখানে এলি কেন?”
ক্ষোভ নিয়ে বললাম,,,”আমি তোমার সাথে কথা বলতে চাইনা‌। আর তোমার সাথে আমি যাব না। তুমি এখানে কি করছো?”
“আমার সাথে যাবি না কেন? আর আমি তোকে নিতে এসেছি কে বলল?”
আমি ভাইয়ার কথা শুনে হকচকিয়ে গেলাম।
“আমাকে নিতেই তো এসেছো আমি জানি।”
ভাইয়া বাঁকা হাসলো তারপর বললো,, ” জী না আপনি ভুল জানেন। আমি আপনাকে নিতে আপনি নাই একটা নিউজ দিতে এসেছি।”
ভাইয়ার কথায় চমকে উঠলাম।
“কি নিউজ?”
“আন্টি আন্কেল বাসায় নাই। তোকে আমাদের বাসায় যেতে বলেছে রাতে তারা আসবে।”
“এ্যা আম্মু আব্বু কোথায় গেছে? আমাকে তো কিছুই বলল না।”
“আসলে জেনে নিস। আসি বাই।”

বলেই ভাইয়া পকেটে থেকে সানগ্লাস বের করে চোখে দিয়ে চলে গেল আমি হাঁ করে তাকিয়ে ‌র‌ইলাম।
আমার চোখের সামনে আদনান ভাইয়ের গাড়ি চলে গেল।আমি দাঁড়িয়ে দেখলাম অপমান এই সব কিছুর সুদ আমি একদিন তুলবোই খাটাশ।
তার কিছুক্ষণ পর অটো এলে আমি সোজা মামনি বাসায় চলে এলাম। আদনান ভাই সোফায় বসে ছিল। আমার দিকে চোখ বাঁকিয়ে একবার তাকিয়ে উঠে চলে গেল।
ভেংচি কেটে মামনির কাছে গেলাম।‌ আমার জামা রেখে গেছে তাই ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে ছাদে চলে গেলাম।
আদনান ভাইকে আজকে আমি ভয় দেখাবো রাতে ভূত সেজে ইয়েস। এই বাসায় আজকে থাকবো আমি সব ভেবে পরিকল্পনা করে এসেছি অটোতে উঠে।
এখন শাড়ি দরকার। মামনির কাছে থেকে একটা শাড়ি নিতে হবে।
“এখানে কি করছিস?”
আদনান ভাইয়ের আওয়াজে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালাম।
“কি করছি দেখতে পাচ্ছ না।”
“দেখছি তুই না ঘুমিয়ে এখানে এসেছিস কেন?”
“আমার ইচ্ছে করছে তাই।”
“নিচে যা ঘুমা।”
“না আমি এখন ঘুমাবো না।
“যা।”
“উফফ যাব না বললাম তো ঝালাচ্ছো কেন?”
“তুই সোজা কথা শুনার মেয়ে না”। বলেই ভাইয়া আমার একদম কাছে চলে এলো। আমি ওয়ালে হেলান দিয়ে আছি ভাইয়া আমার কাছে এসে বলল,,
” তুই এতো ঘাড় তেরা কেন ?”

“আমি ঘাড় তেরা না। তুমি আমার পিছে লাগ কেন বলো তো সবসময়।”
আমি ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে কথা বলছিলাম ভাইয়া আমার দিকে এগিয়ে কাছে এসে দাঁড়িয়েছে। কিছু বলছে না কেমন নেশাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। এই চাহনি একদম অন্যরকম আমি ভাইয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিলাম কি গভীর এই তাকানো আমাকে ঘায়েল করে ফেলে। বুকের ভেতরটা ধড়াস ধড়াস করছে ভাইয়াকে যেন অচেনা লাগছে আমি আমতা আমতা করে কিছু বলবো ভাইয়া বললো,,,
” তোর পিছে শুধু আমিই লাগবো বুঝছিস আর যেন কেউ না আসে।”
কথার আগামাথা কিছু বুঝলাম না ভাইয়া পিছু ঘুরে চলে গেল।
আমি হা করে তাকিয়ে র‌ইলাম।
নিচে নেমে মামুনির কাছে বসে পরলাম। মামনি বসে ছিলো আমি ও বসে বললাম,,
মামনি, ও মামনি ” আহ্লাদী গলায় বললাম।
আমার ডাক শুনে তাকালো আমার দিকে তারপর ভ্রু নাচিয়ে জিগ্গেস করলো কি?
“মামনি তোমার না কত সুন্দর সুন্দর শাড়ি আছে আমাকে একটা দিবে আজকে আমি শাড়ি পড়তাম। আমার না খুব শাড়ি পরতে ইচ্ছে করতেছে।”
আমার কথা শুনে মামনি চোখ বড় বড় করে তাকালো,, কথাটা হজম করতে পারেনি মনে হয়।পারবে কি করে এর আগে আমি কখনও শাড়ি পরি নাই। আর যতবারই কেউ পড়তে বলেছে আমি না করে দিয়েছি। কোন বিয়েতে ও পরিনাই।
” কি হলো দিবে না শাড়ি?”
“তুই শাড়ি পরবি।এটা আমি ঠিক শুনছি তো।”
“এমন‌ করছো কেন পরবো তো বললাম। আগে না করতাম বলে কি এখন পরতে চাইতে পারবো না।”
মন খারাপ করে বললাম। আরে গাল ফুলাচ্ছিস কেন দেব না বলেছি কি?
“লাল টকটকে শাড়ি আছে আমার ওইটা পর তোকে না
পরী লাগবে।”
মামির কথা শুনে টাক্সি খেলাম লাল শাড়ি বলে কি ভূত সাজতে তো সাদা শাড়ি লাগবে না না লাল শাড়ি পড়া যাবে না।
“আমার সাদা শাড়ি চাই।”

মামনি আমার কথা শুনে ভ্রু কুঁচকে বলল,,” তুই সাদা শাড়ি পরবি?”
“হুম আমার সাদা শাড়ি পরতে ইচ্ছে করছে। প্লীজ মামনি দাও না।”
“এটা আবার কেমন ইচ্ছে রে বাবা? সাদা তো ভালো শাড়ি নাই একটা সাদার মধ্যে কালো আছে।”
বলে মামনি উঠে শাড়ি বের করতে লাগলো তারপর সাদার মধ্যে কালো টা বের করলো আরো কিছু সুন্দর শাড়ি আমি ভূত সাজতে না চাইলে অন্য শাড়ি পরতাম।
মামনির শাড়ি জর্জেট এর কালো পুরো ছোট ছোট ফুল এটা পরলে আমাকে ভূত লাগবে না‌।
“এটাতে হবে না।”
“কি হবে না?” অবাক হয়ে বলল।
মামণির কথার উত্তরে কিছুই দিলাম না মন খারাপ করে শাড়ির দিকে তাকিয়ে আছি। শাড়ির মাঝে হঠাৎ একটা সাদা কি যেন চোখে পড়ল আমি হাত বাড়িয়ে সেটা হাতে নিয়ে বললাম ,,,, এটা কি মামনি?
“আর বলিস না এইটা একটা সুতির সাদা শাড়ি। আমার কলেজের একটা ফাংশন আমাকে ভূত সাজার জন্য এই শাড়িটা কিনতে হয়েছিল। আমরা একটা নাটক করছিলাম ফ্রেন্ডরা মিলে তখন কিনা আমাকে ভূত সাজার পার্ট দিল কি আর করব তখন এই শাড়িটা কিনে ছিলাম ভূত সাজবো বলে তারপর থেকেই ঘরেই পড়ে আছে।”
মামনি কথা শুনে আমার চোখ চিকচিক করে উঠলো।ও মায় আল্লাহ ভূত সাজা জন্য মামনি এই শাড়ি ব্যবহার করেছিল। আমি ও তো তাহলে এইটাই ব্যবহার করতে পারব।
“মামনি আমি এই শাড়িটাই পরবো আমাকে এইটাই দাও।”
বলেই শাড়িটা হাতে নিলাম খুশি হয়ে।

“তুই পাগল হইলি নাকি রে দোলা। এই শাড়ি পড়বি পাগল এটা কোন শাড়ি?”
“ইস মামনি দাওনা আমার এমন একটি শাড়ি পরতে ইচ্ছে ছিল এই জন্যই তো বললাম দেখো পেয়ে ও গেলাম প্লিজ প্লিজ প্লিজ না করো না।”
“তুই সত্যিই এটা পরবি তোর মাথাটা একদম গেছে রে দোলা মা।”
“আমার মাথায় কিচ্ছু হয় নাই তুমি বুঝতে পারতেছ না দাও শাড়িটা আমি এইটাই পরবো।”
মামনি হতভম্ব হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে তার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে সব। মামনি কে দিয়ে এই শাড়িটা পড়লাম।এখন আর ভূত সাজতে পারবেনা এখন সুন্দর করে সেজেগুজে থাকি।
মামনি আমাকে শাড়িটা পরিয়ে দিল পাথর হয়েই। তারপর আমি সুন্দর করে সেজেগুজে রুমে বসে র‌ইলাম থেকে আজ বের হবো না। আদনান ভাই যদি আমাকে আবার এই শাড়ি পরা দেখি নাই তাহলে।
দরকার নেই বাবা।
“তোকে এই বাজে শাড়িতে সুন্দর লাগছে রে দোলা। আমার দোলা সোনাটাকে একদম সাদা পরী লাগছে।”
“থ্যাংক ইউ মামনি।”মিষ্টি করে হেসে বললাম।
মামনি আমার গালে হাত রেখে চুমু খেলো।
মামনি কে বলে দিলাম আজকে আমি এখানেই থাকব মামনি ও খুশি হল বলল আমার সাথে ঘুমাবে সন্ধ্যার আগে খেয়ে নিয়েছিলাম এজন্য আর রাতে খেলাম না। রুমে বসে থাকলাম মামনি খালি আমাকে দেখছিল। আগে আগে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে পড়ার জন্য শুয়ে পরলাম।

মামনিকে ও টেনে আমার পাশে শুইয়ে দিলাম।
“কিরে শাড়ি পরিয়া ঘুমাবি নাকি।”
“হ্যাঁ মামুনি আজকে আমি শাড়ি পরে ঘুমাবো।
“তোর মাথাটা সত্তি গেছে।”
“ওফ আমার মাথায় বিলি কেটে দাও না প্রচুর ঘুম পাচ্ছে।”
মামুনি আর কথা বইলোনা আমার মাথায় বিলি কেটে দিল।
আমি ঘুমের অ্যাক্টিং করছি মামনি ঘুমিয়ে পড়লে আমি আমার মিশন শুরু করে দেবো। প্রায় আধাঘণ্টা পর মামুনির নাকে শব্দ বেড়ে গেল জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে।আমি ফট করে চোখ মেলে তাকালাম মামনি ঘুমিয়ে পড়েছে ওর আমি উঠে বসে মামনি মুখের কাছে এগিয়ে মামুনকে ভালো করে দেখে বিছানা থেকে নেমে পড়লাম।
আয়না সামনে এসে শাড়িটা সুন্দর করার একটু ঠিক করে নিলাম। তারপর চুলগুলো ছেড়ে এলোমেলো করে দিলাম। ঠোটে লাল লিপস্টিক ঠোঁটে বাইরে দিয়ে ও দিলাম। তারপর চুল গুলো সামনে এনে মুখ ঢেকে ফেললাম। আরেব্বাস একদম তো ভূত লাগছে আমাকে।নিজেই নিজেকে দেখে ভয় পেয়ে গেলাম আমি আবার ভূতে ভয় পাই খুব তাড়াতাড়ি আয়না সামনে থেকে সরে এলাম। মাই গড নিজেকে দেখে নিজে ভয় পেলাম।
আদনান ভাইয়া তো আজকে ভয় পাবেই পাবে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি এগারোটা বাজে এখন যাব না বারোটায় খাব বারোটার সময় ভূত আসে।
আমার উপর অত্যাচার করার সুদ আজকে আমি নিয়েই ছাড়বো।
ওইভাবেই রুমে বসে রইলাম উঠে একবার পায়চারি করছি আবার বসছি। মাঝে মাঝে মামনি নড়ে উঠছে আমি আবার বিছানার কাছে এসে বসছি। ঘড়ির কাঁটার নড়ে না যেনো। ভাই এখনো জেগে আছে আমি জানি।কারণ অফিসের কাজ দিয়ে বেশিরভাগ সময়ই জেগে থাকে ভাইয়া।

বারান্দায় এসে দেখলাম লাইট জ্বলছে। বারান্দা থেকে দরজার সামনে এসে। আমি দরজার সামনে দাঁড়িয়ে উঁকি দিচ্ছি ভাইয়ার রুম বেশি দূরে না দুইটার পরে। ভাইয়া দরজা খুলে বেরিয়ে এলো ভাইয়াকে দিয়ে তাড়াতাড়ি রুমে ঢুকলাম।
গটগট আওয়াজ হচ্ছে কিছুক্ষণ পর আওয়াজ বন্ধ হয়ে গেল। রুমের ভেতর অন্ধকারে বসে আছি। সময় বারোটার সময় ঘড়ির কাঁটা যেতেই আমি উঠে দাড়াই।
অন্ধকারে আমি ভাইয়ার রুমে এলাম অদ্ভুত ভাইয়ের রুমে ডিমলাইট নাই। অন্ধকারের নিজেরই ভয় করছে। আমার হাতে ম্যাচ আছে এইটা ধরাবো রুমে গিয়ে। দরজা খুব সাবধানে খুলে ভেতরে ঢুকে আমি ভূতের আওয়াজ চালালাম এটা আমার আওয়াজ না এটা আমি মোবাইলে দিয়েছি।
এবার আমি মোমবাতি জ্বালাতে এমন সময় আমার সামনে আগুনের একটুখানি কুণ্ডলী জ্বলে উঠলো। আচমকা এটা হ‌ওয়ায় আমি থমকে গেলাম। বড় বড় চোখ করে সেদিকে তাকিয়ে আছি।
আগুনের কুন্ডুলিতে একাই নড়ছে আমার চোখ সেখানে স্তব্ধ । আমি স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। ভয়ে আমার মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না। শুধু সেটাই দেখছি সেটা আমার চারপাশে ঘুরছে। এটা কিভাবে হচ্ছে?কে করছে বিছানায় তাকালাম কেন কেউ শুয়ে আছে তার মানে আদনান ভাই বিছানায় শুয়ে আছে। এটাকে করছে ভূত??

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ৪

ভুতের কথা ভাবতে আমার শ্বাস বন্ধ হয়ে এলো শরীর ঘেমে একাকার। আমি ঠিক বারোটার সময় এসেছি ভূত সেজে ভাইয়াকে ভয় দেখাতে। আর আমি ভয় দেখানোর আগেই অন্য কেউ আমাকে ভয় দেখাচ্ছে তার মানে এটা সত্যি কারের ভূত। ভয়ে আতঙ্কে আমি কাঁদতে লাগলাম। আমার শরীর ভয়ে থর থর করে কাঁপছে আমার হাতের ম্যাচ কট করে হাত থেকে পড়ে গেল। পড়ার শব্দ পেয়ে নিজে ভয় পেয়ে নিজেও পড়ে যেতে লাগলাম কেউ আমাকে পেছন থেকে কোমর জরিয়ে ধরে পড়ার হাত থেকে বাঁচালো।
আমি অস্পষ্ট সুরে ভূত ভূত বলে কাপাকাপি করছি। আচ্ছা আমাকে কি ভুতে জড়িয়ে ধরেছে?কি হয়েছে আমাকে কি ভুতে জড়িয়ে ধরে রেখেছে। এদিকে সেই আগুনের কুন্ডুলিটা আর দেখা যাচ্ছে না। রুম একদম ঘুটঘুটে অন্ধকার।অন্ধকার আমি কাউকে দেখতে পাচ্ছি না শুধু একটা শরীর আমাকে জড়িয়ে ধরে আছে। তার হাত আমার কোমরে। সেকি ভুত ভূত কি আমাকে ধরেছে।এখন সত্যি কারের ভূতের হাতে কিনা আমার ঘাড় মটকানো হবে। ইস কেন যে ভাইয়াকে ভয় দেখানোর জন্য আসলাম। একবারও ভাবলাম না যদি যদি সত্যি কারের ভূত আছে আমার কি হবে?
আচ্ছা ভাইয়া তো রুমে আছে আমি ভাইরে ডাকি।
আমি ডাকলে ভাইয়া আমাকে বাঁচাতে পারবে।

ভাইয়াকে যে ডাকবো সেই শক্তিও নাই। কথা বলতে পারছিনা কথা জানো গলায় আটকে আছে কথা বলার কোন শক্তি নাই। ওই ভূত আমার ঘাড়ে নিঃশ্বাস নিচ্ছে। আচ্ছা ভূত কি নিঃশ্বাস নেয়?অমনি ভূত আমার ঘাড়ে নরম উষ্ণ ছোঁয়া দিল। সাথে মনে হয় কামড়ে দিল। কামড় দিতেই আমার মনে পড়ে গেল ভ্যাম্পায়ার আচ্ছা এটা কি কোন ভ্যাম্পায়ার আমার রক্ত খেয়ে নেবে। এখন কি আমাকে মেরে ফেলবে।
আমি অতি উত্তেজনা আর ভয়ে ওইখানে জ্ঞান হারালাম।

বৃষ্টি হয়ে নামবো পর্ব ৬