coffee & vanilla part 4 || Romantic valobashar golpo

coffee & vanilla part 4
Arohi Ayat

ছাদে দাঁড়িয়ে আছি,, কেন যেন ভিতরে অনেক কষ্ট লাগছে৷ দুই হাত ভর্তি মেহেদি দেওয়া৷ চোখ বন্ধ করতে হঠাৎ পিছন থেকে কে যেন জোরিয়ে ধরলো৷ আমি চোখ খুলে চমকে উঠলাম৷
– তুমি এখানে কেন?
কথার আওয়াজ শুনে বুঝলাম যে ফারহান৷ আমি বললাম
– ছারেন!
ফারহান আমাকে ছারতে আমি ঘুরে দাড়ালাম৷ আমার হাত দেখে ফারহান বলল
– তুমিও মেহেদী লাগিয়েছো?!
– তো লাগাবো না? আমার ফ্রেন্ড এর বিয়ে!
– কি হয়েছে তোমার? হঠাৎ আবার এমন ভরকে গেছো যে সকালে ত ঠিকি ছিলা!

আমি কালকে সারা রাত একটা কথাই ভেবেছি যে আমি ফারহানকে বললাম আমি ওর গার্লফ্রেন্ড হতে চাই এই ৩দিনের জন্যই কিন্তু এটা আমি কেন বললাম? মানে এইভাবে বলার কারণটা কি? আমি এটা জানি যে আমি ফারহানের মত এক্সপিরিয়েন্স এর জন্য বলি নি এই কথা যে আমি ওর এই বাকি ৩দিনেরই গার্লফ্রেন্ড হতে চাই! তাহলে কেন বললাম?! আচ্ছা ভালো কথা বলেছি তাহলে ৩দিন পর ফারহান চলে গেলে কি ওর কথা ভুলা সম্ভব হবে?! এত এত কথা ভাবতে ভাবতে চোখ বন্ধ হয়ে গেছে কবে নিজেও জানি না কবে ঘুমিয়েছি!
সকালে,, ঘুম থেকে উঠে রুম থেকে বের হতে দেখলাম রুমাইশা একটা ট্রে তে করে দুইটা কফি নিয়ে যাচ্ছে৷ আমি গিয়ে বললাম
– কিরে এত দিন না রুপ চর্চা নিয়ে ব্যাস্ত ছিলি বিয়ে নিয়ে ব্যাস্ত ছিলি আজকে সকালে একেবারে কাকে কফি দিয়ে আসছিস?
– আরে না,,,একটা ফারহানের জন্য আরেকটা হবু বরের জন্য!
আমি দুই ভ্রু উচু করে বললাম

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

– বাবাহ! হবু বর! তোর বরটা না আমার একদম পছন্দ হয় নাই মানে দেখতে ত পুরাই ঝাক্কাস কিন্তু একটাই সমস্যা একটু অদ্ভুত! মানে আছে না যে শালিদের সাথে একটু ভালো ভাবে কথা বলবে একটু মিল মিশ হবে শালিদের সাথে একটু মজা করবে একটু ঘুরতে নিয়ে যাবে কিন্তু বেটার মধ্যে এইসবের কিচ্ছু ত নেই তার উপর আবার ওইদিন আমাদের ফ্রেন্ডশিপ সম্পর্কে কথা বলছিলো!!!
আমি রুমাইশার হাতের ট্রে থেকে একটা কফি নিয়ে বললাম
– যা তুই তোর হবু বরকেই কফি দিয়ে আয়! আর হ্যা বলে আসিস যে তোর আর আমার ফ্রেন্ডশিপ সম্পর্কে শহরের প্রত্তেকটা গলিতে গলিতে মানুষ জানে ছোট কালের ফ্রেন্ড আমরা অফকোর্স!!
– আর তুই এই কফি নিয়ে কোথায় যাচ্ছিস?
– ও হ্যালো,, যাকে দিতে যাচ্ছিলি তাকেই দিয়ে আসতে যাচ্ছি আমি নিজে খাবো না চিন্তা নিস না! আর তোর কাজ কত সহজ করে দিলাম আমি এখন তুই সোজা তোর হবু বরের রুমে যা আর আমি আমার,,,, আব না মানে আমি এটা উনাকে দিয়ে আসি!!
– হেহ হেহ হেহ! উনাকে হুম!! যাও বাবাহ তোমার মতলব আমি বুঝতে পেরেছি!
– লিসেন আমার কোন মতলব নেই!!

ফারহানের রুমে কফি নিয়ে যেতে যেতে ভাবছি আচ্ছা আমি কেন নিয়ে যাচ্ছি ওর জন্য কফি? মানে আমার আবার ভিতরে শখ জাগলো কিভাবে কারো জন্য কফি নিয়ে যেতে? সত্যি বলতে ভিতরর কেমন যেন ইচ্ছে করছে যেন আমি উনার জন্য,,, সরি ফারহানের জন্য কফি নিয়ে যাই গিয়ে একটু ওর ঘুমন্ত ফেসটা দেখি!! ভিতরে কেন যেন এক্সাইটেড ফিল হচ্ছে!! কফি নিয়ে প্রথমে রুমে নক করলাম পরে দরজা খুলে উকি দিয়ে ভিতরে ঢুকলাম কিন্তু বিছানায় ত কেউই নেই সেকি ফারহান উঠে গেছে নাকি? কফিটা টেবিলে রেখে দেখলাম বারান্দায় নেই আর ওয়াশ্রুমেও নেই কারণ ওয়াশ্রুমের দরজাটা খোলা! আমি ভ্রু কুচকে কিছুক্ষন দারিয়ে তারপর বাহিরে যাওয়ার জন্য ঘুরতে দেখলাম দরজা বন্ধ করে দরজার সাথে হ্যালান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে৷ আমি বললাম
– আপনি,,,, আপনি ঘুম থেকে উঠে গেছেন?
ফারহান আস্তে করে আমার সামনে আসতে আসতে বলল
– তো তুমি এসেছিলে আমাকে দেখতে?! কিন্তু আমি ত অনেক আগে উঠেছি যখন তুমি ঘুমিয়ে ছিলে তখন আমি গিয়েছিলাম তোমার রুমে তোমার ঘুমন্ত ফেস দেখতে!
– আপনি সকাল সকাল আমার রুমে গিয়েছিলেন?
– হুম আর এতক্ষন রুমাইশার কাছে তুমি আমার ভাইয়ের নামে কি বলছিলে?
– আপনি আবার সেটাও শুনেছেন?! যাই হোক ভুল কিছু ত বলি নি! সত্যিই ওইদিন আমাকে শুধু শুধুই কত কিছু বলল আপনি না সেখানে বসে ছিলেন শুনেন নি?!
ফারহান আমার একেবারে কাছে এসে কোমর জোরিয়ে ধরে আমাকে নিজের সাথে মিশিয়ে আমার কানের সামনে গিয়ে আস্তে করে বলল

– গুড মর্নিং গার্লফ্রেন্ড!
এটা বলে আমার গালে একটা চুমু দিয়ে দিল৷ আমি তারাতাড়ি ওর থেকে সরে বললাম
– কি করছেন?
– কেন তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড না?
– হ্যা,,,,না মানে গার্লফ্রেন্ড হয়েছি ত কি? চিপকাচিপকি করা প্রয়োজন নাকি?
– আরে না,, এটাকে বলে গুডমর্নিং কিস!
এটা বলে আমার সামনে এগুতে আমি বললাম
– আমার আর গুড মর্নিং কিস প্রয়োজন নেই! আমি গেলাম!
– দাড়াও কই যাও আমার গুড মর্নিং কিস কই?
– প্লিজ আমার দ্বারা সম্ভব না!!
এটা বলে রুম থেকে বের হয়ে গেলাম কি যেন ভেবে আবার রুমে ঢুকে বললাম
– আচ্ছা,, আপনার আগে যত গার্লফ্রেন্ডই ছিল তাদের থেকেও কি আপনি এই গুড মর্নিং কিস আদান প্রদান করতেন নাকি?
ফারহান একটু হেসে বলল

– আরে না! আমি বললাম না ওদের সাথে আমার দেখাই কম হতো আমি বিজনেস নিয়েই ত ব্যাস্ত থাকতাম,,আর শুধু এখন একটু ফ্রিলি ভাবে তোমার সাথে সময় কাটাতে পারছি!
– আপনি সত্যি বলছেন ত??
– হুম!
– আচ্ছা তাহলে,,, শুনে রাখেন এখন আমি আপনার গার্লফ্রেন্ড আর আমি কিন্তু ওদের মত না আমি কিন্তু খুবি রেস্পন্সিবল একটা মানুষ যেটা আমার সেটা শুধু আমারই! এখন আপনি ৩/৪/৫ যত দিনের জন্যই আমার বয়ফ্রেন্ড হন না কেন আমি কিন্তু এইসব সহ্য করবো না!
ফারহান কিছু বলল না নিচে তাকিয়ে একটু হাসলো৷ আমি রুম থেকে বের হয়ে দরজা বন্ধ করে মুচরা মুচরি করে খুশি হয়ে বললাম

– হায়! এই ছেলেটার হাসি কত কিউট!! মার ডালা! আজকে এত কিউট লাগছে কেন বুঝলাম না!
আজকে রুমাইশার মেহেদি,,, আমি কিন্তু এমন না যে সাজতে পছন্দ করি না,, সাজতে ত সব মেয়েরাই পছন্দ করে,, কিন্তু আবার আমি সব সময় সেজেও থাকি না শুধু মাত্র কোন অনুষ্ঠান বা কোন দাওয়াতে গেলে সাজি,, আর মেহেদি ত আমার অনেক ভাল লাগে! আর আজকে আমি দুই হাত ভরে মেহেদি দিব!! আমি একেবারে ডার্ক সবুজ রঙের একটা লেহেংগা পরেছি বেশি কাজ নেই শুধু নিচের দিক দিয়ে একটু কাজ করা৷ আর চুল সুন্দর করে স্টাইল করে সামনে দিয়ে বেনি করে যেটাকে বলে ফ্রান্স বেনি আর নিচ দিয়ে খেজুর বেনি! আর সেজেছি হালকা৷ আমি রেডি হয়ে রুম থেকে বের হয়ে ফারহানের রুমে সামনে কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে রইলাম কিন্তু ওর রুমের দরজাটা বন্ধ৷ আমি নিচে গিয়ে রুমাইশার পাশে বসতে রুমাইশা মেহেদি লাগাচ্ছিল একজনকে ডেকে বলল আমাকেও মেহেদী দিয়ে দিতে৷ দুই হাত ভর্তি মেহেদি লাগিয়ে উঠলাম৷ ফারহান এখনো নিচে এলো না,, আমিই উপরে গেলাম৷ ওর রুমের দরজা খুলা ছিল তাই একটু উকি দিলাম কই এইবারও ত কেউ নেই রুমে ঢুকে দেখলাম ফারহান বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে৷ কার সাথে যেন কথা বলছে ফোনে৷ আমি একটু সামনে যেতে শুনতে পেলাম

– মিতিকা আমি অনেক আগেই বলেছিলাম আমাদের ব্রেকাপ এখন তুমি আবার প্যাচআপ করতে চাইছো কোন লাভ নেই! তোমার সাথে আমার রিলেশন গিয়েছিল শুধু মাত্র ১সাপ্তাহের আমাদের কয়েক বছরের রিলেশন ছিল না যে তুমি বলছো তুমি আমাকে ভালোবাসো আমাকে ছাড়া বাচবে না ব্লা ব্লা,,, প্লিজ ভুলে যাও আমাকে!! এখন আমার আরেকটা গার্লফ্রেন্ড আছে!!

বর্তমানে,,,,
– কি?
– আমি শুনেছি আপনি আপনার গার্লফ্রেন্ডের সাথে কথা বলছিলেন!
ফারহান কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বলল
– লিসেন ওইটা আমার এক্স গার্লফ্রেন্ড ছিল আর আমি ত বলেছি তোমাকে আমার আগের গার্লফ্রেন্ড দের কথা যে আমার ছিল আগে গার্লফ্রেন্ড!
– কিন্তু আমি শুনেছি আপনি ওলে বলছিলেন আপনাদের রিলেশন ছিল ৩দিনের এরপর আপনি আবার ওর সাথে ব্রেকাপ করে আমার কাছে এসে কি বলেন আমাকে ৫দিনের জন্য আপনার গার্লফ্রেন্ড হতে তাহলে কি আমি এটা মনে করবো যে আপনি সব মেয়েদের সাথে এমন করেন ৩/৫দিনের রিলেশন করে!!
– কি বলছো এইসব? হ্যা ওর সাথে আমার ছিল ৩দিনের রিলেশন আর এর পর আমার মনে হয় নি যে ও আমার যোগ্য তাই আমি ব্রেকাপ করেছি!

coffee & vanilla part 3

– ওহ আচ্ছা,,, আর আমাকে আপনি ৫দিনের গার্লফ্রেন্ড হতে কেন বলেছেন কারণ আপনি ৫দিন পর লন্ডন চলে যাবেন তাই!! আর ওই মেয়েটাকে আপনি শুধু শুধু কেন ধোকা দিচ্ছেন আমি শুনেছি ও বলছিলো ও আপনাকে অনেক ভালবাসে!!
– লিসেন আমি বলছি ত ও ওইরকম মেয়ে না যেমনটা আমি মনে করি আমার যোগ্য! আর ৩দিনেই ও আমাকে কিভাবে ভালোবেসে ফেললো বলো? তুমি ওর সম্পর্কে কিছু জানো না শুনো নাই ও শুধু মাত্র ড্রামা করছে আমার সাথে!!
– কে বলেছে আপনাকে ৩দিনে ভালোবসা যায় না? ১দিনেই ভালবাসা যায় এমনকি ১সেকেন্ডেও ভালোবেসে ফেলা যায়!!
এটা বলে আমি চলে যেতে নিলে ফারহান পিছন থেকে আমার ঘারে নিজের মুখ ডুবিয়ে বলল

– কেন তুমি কি আমাকে ভালোবাসো? শুনো ওর সাথে আমার রিলেশন এই জন্য ভেংছে কারণ ও আমার সাথে রিলেশন করার শর্তেও আরেকটা ছেলের সাথে রিলেশন করতো! যেটা আমি একদিন নিজের চোখে দেখেছিলাম! আর এইভাবেও আমার ওকে ভালো লাগতো না! আর তুমি আমার সাথে এমন রাগ কেন করেছো কারণ বলবে? আমি ত আর এখন ওর মত করছি না যে তোমার সাথে রিলেশন করে আমি অন্য মেয়ের সাথে রিলেশন করছি!!

coffee & vanilla part 5