coffee & vanilla part 3 || Romantic valobashar golpo

coffee & vanilla part 3
Arohi Ayat

– এত ভয় পাও যখন কেন উঠেছো?!
– উফফ,,আপনি বুঝবেন না! আমি ভয় পাই নাই!
– তাহলে এইভাবে গলা ফাটিয়ে চিল্লানি দিয়েছো কেন?
– এটাই ত নাগরদোলায় উঠার মজা! ধুর আপনি বুঝবেন না! চলেন আমি যে কেন এসেছি আপনাকে এখানে নিয়ে সবার সামনে ইজ্জতের ফালুদা বানিয়ে ফেলেছেন আজগুবি আজগুবি কথা বলে!
এটা বলে হাটা দিলাম৷ পিছন থেকে হঠাৎ আমাকে হ্যাচকা টান দিল অসভ্যটা৷ আমি ওর থেকে দূরে গিয়ে বললাম
– ছারেন কি করছেন? বুঝতে পারছি না কিছুই!
– কোথায় চলে যাচ্ছো? আমাকে তোমার সাথে নিয়ে এসেছো এখন নিজে একাই চলে যাচ্ছো?
– তো আসেন আমার পিছনে পিছনে আমি কি আপনাকে ফেলে চলে যাচ্ছি নাকি? আজব মানুষ! একটা মানুষ রেগে গেলেও কি বুঝেন না?
– না পিছন পিছন আসতে পারবোনা তোমার সাথেই নিয়ে যাও!
– চলেন!! এইজন্যই হয়তো আপনার কোন গার্লফ্রেন্ড আপনার সাথে কোথাও ঘুরতে যায় না দুই একদিন পরে একটু ফোনে কথা বলে কারণ ওরাও জানে আপনি যে কি,,,!
– লিসেন ওরা আমার সাথে কথা বলে না বা ঘুরতে যায় না এমন না আমি নিজেই অনেক ব্যাস্ত থাকি তাই ওদের টাইম দেই না!
– আচ্ছা চলেন!

সন্ধ্যাবেলা,,,,
দোলনায় গিয়ে বসে কানে হ্যাডফোন গুজে গান শুনছিলাম৷ দূর থেক দেখছি ফারহান আসছে আমার দিকেই৷ আমার সামনে এসেই আমার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে কি যেন বলল কিন্তু কিছু ঠিক মত শুনতে পারলাম না কারণ দুইকানেই হ্যাডফোন আর ফুল সাউন্ড৷ আমি হ্যাডফোন খুলে বললাম
– কি?
– তুমি এই সন্ধ্যায় এখানে কি করছো?
– যাই করছি তাতে আপনার প্রবলেম কি?
– shut up! আমি বলেছি মাত্র ৫দিনের জন্য তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড আর দেখেছো আজকে ১দিন কিভাবে চলেও গেছে!
– তো আমি কি করবো? আপনি নিজেই আমাকে পাগলের মত গার্লফ্রেন্ড ভাবছেন আমি কি বলেছি? আর হ্যা ভালোই যত তারাতাড়ি সময় কাটবে ৫দিন শেষ হবে আপনার থেকে পিছা ছুটবে!
– দেখো এই ৫দিনে যেন আবার আমার প্রেমে না পরে যাও!
– হাহ হাহ!
– সাইড হও আমি বসবো!
আমি একটু সাইড হতে ফারহান বসে পড়লো আমার সাথে দোলনায়৷ তারপর আমার এক কানের হ্যাডফোন নিয়ে নিজের কানে গুজে আরেকটা আমার কানে গুজে দিল৷ অনেক্ষন ধরে চুপচাপ কিছু না বলে গান শুনছিলাম৷ আমার গানের দিকে মনযোগই যাচ্ছে না বার বার আড় চোখে ওর দিকে তাকাচ্ছিলাম,,চোখ বন্ধ করে গানটা ফিল করছে ফারহান৷
এইভাবে দুইজন একসাথে বসে একটা রোম্যান্টিক গান শুনবো গানটা ফিল করবো তারপর আমি ওর কাধে মাথা রাখবো তারপর,,, ধ্যাত কিন্তু এটা ত সেই মানুষ না! আমি তারাতারি সেখান থেকে উঠে হ্যাডফোন টান দিয়ে খুলে ফেললাম৷ ফারহান ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলল
– কি হয়েছে?
– উফফ! এখন এইভাবে আপনার সাথে বসে গান শুনলে পরে কি হবে?
– কোন পরে?

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

– পরে যখন আমার প্রিন্স চার্মিং আসবে,, ওর সাথে যখন আমি আমার এই স্বপ্নটা পুরোন করবো তখন আমার বার বার আপনার কথাই মনে পরবে যে আপনার সাথে বসেও একদিন এইভাবে গান শুনেছিলাম!
– তো পরবে মনে কি হয়েছে? আর মনে পরবেই কেন ৫দিন পর ত আমি চলে যাবো এর পর আমাকে ভুলে যাবে!
– উফফ এটাই ত সমস্যা ৫দিন পর আপনি চলে যাবেন আর এখন এইসব করে আমাকে কিছু মোমেন্ট হাই লাইট করে দিয়ে গেলে পরে আমি কি করবো?!
– কিন্তু আমি ত তোমার সাথে কিছু সময় কাটাতে চাই যেটা আমার মনে থাকবে এর কারণ হলো বাংলাদেশি গার্লফ্রেন্ড এর এক্সপিরিয়েন্স! আমার সবসময় মনে থাকবে যে আমার সেখানে একটা গার্লফ্রেন্ড ছিল!
– আচ্ছা আপনি আমাকে ভালবাসেন না তার মানে? মানে আপনি শুধু এক্সপিরিয়েন্স এর জন্য আমাকে গার্লফ্রেন্ড বানানোর জন্য এমন পাগল হয়েছেন?
ছোট ছোট চোখ করে বললাম৷ ফারহান কিছুই বলল না আমি আবার বললাম
– আচ্ছা আপনি যে ৫দিন ৫দিন করছেন যদি আল্লাহ আমাদের ভাগ্য মিলিয়ে দেয় মানে এমন হয় যে আপনার সাথে আমার জোড়া আছে এরপরেও কি আপনি আমাকে ভালবাসবেন না? মানে তখনও কি আপনি এটাই বলবেন তুমি আমার ৫দিনের বউ আমি শুধু এক্সপিরিয়েন্সের জন্য,,,,,!
– আউচ!!!!
জোরে চিৎকার দিয়ে উঠলো ফারহান আমি ভয় পেয়ে বললাম
– কি হয়েছে?
– এখানে অনেক মশা! চলো ভিতরে যাই!

এটা বলে উনি উঠে চলে গেলো৷ আর আমি সেখানে দাঁড়িয়ে ভাবছি আমার একটু আগে বলা কথা গুলো আজব আমি কি বললাম এইসব আমি নিজেই বুঝছি না! মুখ দিয়ে কি আবোল তাবোল বের হলো আজগুবি কথা উফফ আমিও মনে হয় এই ১দিনেই পাগল হয়ে গেছি,,,,আউচ!!! সত্যিই অনেক মশা তারতাড়ি বাড়ির ভিতরে যাই!
রুমাইশার রুমে গিয়ে দেখলাম আরহান ভাইয়া বসে আছে৷ আমিও গিয়ে ওদের সাথে বসলাম৷
– ভাইয়া তুমি এখানে?
রুমাইশা বলল
– ভাইয়ার এই সন্ধ্যা বেলা ব্রেকাপ হয়েছে সেই কষ্টের কথাই বলতে এসেছে!
– ব্রেকাপ? যাক ভালোই হয়েছে!
– আমি ভাইয়ার জন্য চা নিয়ে আসি তুই বস!
রুমাইশা চলে গেলো৷ আমি বসে বললাম
– তো ব্রেকাপ কেন হয়েছে শুনি? ও না বলেছিল ও কখনোই তোমাকে ছেরে যাবে না!
– ও কিছু করে নাই আমিই ব্রেকাপ করেছি!
– কেন?
ভাইয়া আমার হাত ধরর বলল
– রাইসা! তুই ত জানিস আমি ওকে কত ভালবাসি!
– হ্যা ভালোবাসো ত ব্রেকাপ কেন করেছো?
– ও বলছে ওর ফ্যামিলিতে নাকি প্রবলেম হয়েছে,, এখন ও ওর ফ্যামিলির সাথে গ্রামে চলে যাবে! ওর ভাবা উচিৎ ছিল না যে এর পর আমি কি করবো? আমি রাগে ওর সাথে ব্রেকাপ করেছি!
– তাহলে তোমারও ত ভাবা উচিৎ ছিল ওর কষ্টটা!

কথার মাঝখান দিয়ে রুমাইশা চা নিয়ে এলো৷ দেখলাম ওর সাথে ফারহানও এসেছে৷ আমি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছি যে ও এখনে কি করছে? রুমাইশা চা নিয়ে আমাদের সামনে এসে দাড়াতে ফারহানও এসে রুমাইশার পিছনে দাঁড়িয়ে কিভাবে যেন ওকে ধাক্কা লাগিয়ে দিল আর রুমাইশার হাতের সব চা এসে পরলো আমার আর আরহান ভাইয়ার হাতে৷ ভাইয়া আমার হাত ধরেছিল তাই অর্ধেক আমার হাতে আর অর্ধেক ভাইয়ার হাতে এসে পরেছে৷ চা গুলো হালকা গরম ছিল তবুও একেবারে হাত জলছে৷ ফারহান বলল
– ওহ্ আ’ম রেলি সরি ভুলে ধাক্কা লেগে গেছে!
আমি রেগে ওর দিকে তাকিয়ে আছি৷ ফারহান আমার সামনে এসে আমাকে বলল
– ওহ্ নো তোমার হাতেও লেগে গেছে দেখি!
আমি ঝারামেরে হাত ছারিয়ে নিয়ে সেখান থেকে নিজের রুমে চলে এলাম দরজাও বন্ধ করে দিলাম তারপর হাতে পানি দিলাম৷ কত খারাপ এই ফারহানটা ইচ্ছে করে এমন করেছে আমি জানি! অনেক রাগ লাগছে৷ ওহ্ আরহান ভাইয়ারও ত মনে হয় লেগেছে কিন্তু এই সময় আমি বাহিরে যেতে চাই না! একটু পরে এসে রুমাইশা আমাকে ডাক দিল৷ দরজা খুলতে বলল
– আয় ডিনার করবি না?
আমি কিছু না বলে ওর সাথে গেলাম৷ নিচে গিয়ে দেখলাম আরহান ভাইয়াও বসেছে ডিনার করতে৷ কিন্তু ফারহান নেই৷ আমি গিয়ে ভাইয়ার পাশে বসে ভাইয়াকে বললাম
– তোমার হাত ঠিক আছে ত ভাইয়া? বেশি লেগেছে নাকি?
– আরে না কিছু হয় নি!

– আচ্ছা সরি! ওইসময় তোমাকে না দেখেই চলে গেলাম,, তুমি ত জানো আমি কত রেগে যাই!
ডিনার শেষ করলাম কিন্তু ওই ফারহানটা আর এলো না৷ যাজ্ঞে আমি আমার রুমের দিকে গেলাম৷ রুমে ঢুকবো তার আগে পাশের রুম থেকে হ্যাচকা টান দিল৷ আমি রুমে ঢুকতেই রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়ে আমার দিকে তাকালো দেখলাম ফারহান! আমি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছি৷ ফারহান আমার কাছে এসে বলল
– তোমার হাত দেখাও!
আমি রেগে বললাম
– কেন? কেন দেখাবো? আপনার দেখে কি? আপনি নিজে ইচ্ছা করেই ত ফেলেছেন তাই না?
– আমি কি জানতাম তোমার হাতেও লেগে যাবে?!
আমি বড় বড় চোখ করে বললাম
– তার মানে কি আপনি আরহান ভাইয়ার হাতে ফেলতে চাইছিলেন? কেন?
– ও তোমার হাত ধরেছে কেন?
এইবার রাগ ত লাগছেই আর অবাকও,, মুখ এত বড় হা করে বললাম
– উনি আমার হাত ধরেছে তাতে আপনার কি হয়েছিলো? উনি আমার ভাইয়ার মত বুঝতে পেরেছেন!
ফারহান আমার সামনে এসে বলল
– আচ্ছা তোমার হাত দেখাও!
আমি দুই হাত পিছনে নিয়ে বললাম
– না জীবনেও আপনাকে দেখাবো না!

coffee & vanilla part 2

ফারহান আমার হাত দেখার জন্য আমার সাথে জোর করতে লাগলো আর আমি ত কখনোই দেখাবো না আমাকে চিনে না এই ফারহান৷ ফারহান যে হাতে চা পরেছিল ওই হাত চেপে ধরতে একটু ব্যাথা পেলাম৷ ফারহান আমার হাত সেই ভাবেই ধরে আমাকে বসিয়ে পাশের ড্র‍য়ার থেকে একটা ঔষধ বের করে আমার হাতে লাগিয়ে দিল৷ আমি চুপচাপ বসে ওর দিকে আড় চোখে তাকিয়ে আছি৷ ঔষধ লাগানো শেষ হতে হঠাৎ করে আমার হাতে চুমু লাগিয়ে দিল৷ আমি ধরফরিয়ে লাফিয়ে উঠে বললাম
– কি করছেন?!!!
এটা বলে সেখান থেকে চলে আসতে নিলে পিছন থেকে ফারহান ডেকে বলল
– রাইসা! আ’ম সরি!
আমি দাঁড়িয়ে যেতে ফারহান আবার বলল
– আমি তোমাকে সকাল থেকে বলছিলাম যে এই ৫দিন তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড,, আর আজকে ১দিন কেটেও গেছে! এতক্ষন আমি তোমার সম্পর্কে কিছু না জেনেই এইভাবেই বলছিলাম তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড কিন্তু আজকে সারা দিন তোমার সাথে থেকে যতটুকুই তোমাকে চিনেছি এখন আমি তোমাকে মন থেকে জিজ্ঞেস করছি তুমি কি আমার গার্লফ্রেন্ড হবে?
হায় আমার বুক ধকধক করে উঠলো৷ ফারহান কি সত্যি মন থেকে তাহলে জিজ্ঞেস করছে আমাকে?! আমি পিছনে ঘুরে তাকাতে ফারহান আবার বলল
– তুমি কি আমার গার্লফ্রেন্ড হবে?

আমার মুখে কেন যেন মুভকি হাসি ফুটে উঠলো কিন্তু হাসিটা বেশিক্ষন রইলো যখন ফারহান আবার বলল
– আমি মন থেকে জিজ্ঞেস করছি তুমি কি আমার গার্লফ্রেন্ড হবে এই ৪দিনের জন্য!!!
ব্যাস আমি দাত কটমট করে আর একমিনিটও দারালাম না সেখানে দরজা খুলে সোজা আমার রুমে গেলাম৷ আমার রুমে দরজা বন্ধ করে বেডে বসে ভাবছি উফফ যখনি ছেলেটাকে একটু ভাললাগে তখনি সব শেষ করে দেয়,,,,,! আজকে সারাদিন পাগলের মত ৫দিন ৫দিন করেছে এখন আবার ছাগলের মত ৪দিন ৪দিন করছে বুঝলাম না৷ পাগলটা এই ৪/৫ কেন করছে কেন ৪দিন পরে কি পাগল খানায় ভর্তি হবে??!

coffee & vanilla part 4