coffee & vanilla part 2 || Romantic valobashar golpo

coffee & vanilla part 2
Arohi Ayat

– আমি তোমাকে বলেছি না যে এখন থেকে তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড তাহলে গার্লফ্রেন্ডের দায়িত্ব পালন করো আর আমি বলেছি আমি যা বলবো তাই করবে!
এটা বলে আমার হাত টেনে ধরে বাড়ির ভিতরে নিয়ে বলল
– যাও,, বাহিরে কি? চুপ করে রুমে গিয়ে বসে থাকো এত উরাউরি করো কেন?
আমি দাত কটমট করছি মানে আমি এইসব পাগলের আজগুবি কাহিনী দেখে অবাক হচ্ছি কিছু বলার সময়ই পাচ্ছি না! একটু আগে সেই বাগানে গিয়েছিলাম আরহান ভাইয়ার সাথে দোলনায় বসে কথা বলছিলাম৷ আরহান ভাইয়া হচ্ছে আমাদের সিনিয়র রুমাইশা আর আমি দুইজনই তাকে ভাইয়া বলে ডাকি ৷ রুমাইশাই উনাকে আসতে বলেছে এখন ও নিজেই ব্যাস্ত তাই আমি বসে বসে উনার সাথে কথা বলছিলাম জানি না কোথা থেকে পাগল ভ্যাম্পায়ারটা এসেই ভাইয়ার সামনেই কিসব বলে আমাকে সেখান থেকে নিয়ে এলো৷ আমি এখন রাগে কি করে ফেলবো আমি নিজেই জানি না এই মুহুর্তে সামনে যেই দুই,চারটাই হাতে আসবে খুন করে বসবো৷ ওইদিকে তাকিয়ে জোরে জোরে দম ছারছি৷ ফারহান চলে যেতে নিয়ে আবার ফিরে এসে আমাকে জিজ্ঞেস করলো

– আচ্ছা তোমার নামটা কি?
আমি হুস জ্ঞান ছারাই মুখ ফসকে বলে ফেললাম
– রাইসা জাহান!!
মুহুর্তেই আমি নিজেরটা নিজেই অবাক হয়ে ভ্রু কুচকে ফারহানের দিকে তাকাতে ও সেখান থেকে চলে গেলো৷ আমি ব্যাস এইবার রুমাইশার কাছে গেলাম সোজা আজকে আমি ওকেই খুন করবো৷ কি সব আজব আজব ভাই ওর আর রুমাইশা নিজেও এমন আজব আবার বিয়ে করছে এই আজব পাগলের ভাইকে এখন ত মনে হয় রুমাইশা নিজেও পাগল হয়ে যাবে এমন!! রুমাইশার রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে ওর দিকে তেরে এসে বললাম
– ওই তোর ওই ছিট পাগল ভাইরে কিছু বলবি? কি হুম কি পেয়েছে কি? এসেই বলে ৫দিনের গার্লফ্রেন্ড হতে আর এখন এসে কিসব অধিকার খাটানো শুরু করে দিয়েছে! আরহান ভাইয়ার সামনে কি সব বলল এখন ভাইয়া কি ভাববে?! কিছু বলে দে নাহলে এই বাড়িতে তুই বিয়ে করে শশুর বাড়ি বিদায় নিবি আর আমি ওকে খুন করে থানায় যাব!! ওহ্ আর গাধাটা নাকি আবার আমার নামও জানে না! মানে আমি বুঝলাম না আমার নাম জানে না এমনকি জানিস আমাকে ভালো মত দেখেও নাই এসেছে গার্লফ্রেন্ড বানাতে৷ ওর মতলব কি? আমি কিন্তু সব বুঝি!

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

– আচ্ছা আচ্ছা ঠান্ডা হ বাবা! এত রেগে আছিস কেন? ওর কোন মতলব নাই আমি জানি ও কিন্তু তেমন ছেলে না,, কিন্তু আমি ওকে বলে দেব যে তোর পিছে যেন না ঘুরে!
আমি একটু শান্ত হয়ে বসে আমতা আমতা করে বললাম
– না ঘুরে আমি সেটা বলি নি! ঘুরতেই পারে,, মানে এত সুন্দর একটা ছেলে আমার পিছনে ফিদা হলে আমার খারাপ লাগবে না নিশ্চই কিন্তু এইসব পাগলের মত কাজ গুলো না করলেই হয়! তাছাড়া গার্লফ্রেন্ড হবে নাকি যখন জিজ্ঞেস করেছে ভালো মতোই জিজ্ঞেস করতো তাহলে আমি হ্যা ও বলতে পারতাম কিন্তু আমার মাথা ঘুরিয়ে দিয়ে কি বলল!! এইজন্যই ত সকাল থেকে পাগল পাগল করছি!
– ওহো,,পিছনে যেন ঘুরে এটাও চাও আবার আমার সাথে এসে তেজ ও দেখাও ভালোই!!
– হুহ! আচ্ছা তুই তোর বিয়ে নিয়ে ব্যাস্ত থাক! তোর কাউকে কিছু বলতে হবে না আমি নিজেই সামলাতে পারি সব!

বাহিরে গিয়ে আরহান ভাইয়াকে আর দেখলাম না চলে গেছে হয়তো থাক পরে কল করে ফোনে কথা বলে নিব,, একটু বুঝাতে হবে নাহলে কি ভাববে আমার কথা! আর আমার এই বিষয়টা একেবারেই পছন্দ না যে কেউ আমার ব্যাপারে ভুল কিছু ভেবে বসে থাকবে আর আমি যতক্ষন ব্যাপারটা ক্লিয়ার না করবো আমার শ্বাস মনে হয় গলায় আটকে থাকবে! আমি রুমে গিয়ে প্রথমে ভাইয়ার সাথে একটু কথা বললাম বারান্দায় দাঁড়িয়ে৷ কথা বলার সময় দেখলাম নিচে ফারহান অসভ্যটা দাঁড়িয়ে নিজেও কার সাথে যেন কথা বলছে৷ হঠাৎ আমার দিকে চোখ তুলে তাকালো উফফ কি চাহনি বাবা! সত্যিকার ভ্যাম্পায়ার এর মত! আমি আস্তে করে ঘুরে রুমে চলে গেলাম৷

–ভাইয়া! তুমি চলে গেলে কেন?
– না একটা কাজ ছিল তাই!
– ও আচ্ছা তাহলে তুমি কিন্তু ভুল কথা ছু ভেবো না ছেলেটা আসলেই পাগল!
কল কেটে আমি রুমাইশার রুমে গিয়ে টিভি দেখা শুরু করলাম আর ও বসে ওর রূপচর্চা করতে ব্যাস্ত৷ আমি বসে ভ্যাম্পায়ার এর মুভি দেখছিলাম৷ রুমাইশা বলল
– শুন আমি একটু বাহিরে যাচ্ছি!
আমি টিভি pause করে বললাম
– যা সর্বপ্রথম তোর মাকে আর তোর হবুউউউ বরকে বলে যা! পরের এসে যেন আমাকে তোর বর আবার কিছু না বলে!
রুমাইশা ব্যাগ নিয়ে চলে যেতে আমি আবার টিভি অন করলাম৷ ওহো ভ্যাম্পায়ারটা এখনি মেয়েটার ঘারে কামর দিয়ে রক্ত শুষে নিবে,, আমি ত এমন ইন্টেরেস্ট দিয়ে দেখছি যে একটু পরে টিভির ভিতরে ঢুকে যাবো৷ একটু পরে হঠাৎ পাশে তাকাতে ভয়ে লাফিয়ে উঠলাম৷ এই ভ্যাম্পায়ার আবার কোথা থেকে এলো? আমি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছি৷ আর ফারহানের বাচ্চা বেডের উপর দুইপা উঠিয়ে আধ শোয়া হয়ে হ্যালান দিয়ে বসে আছে৷ আমি বললাম

– আপনি এখানে কেন?
– তো তুমি এইসব মুভি পছন্দ করো?
– এইসব মুভি মানে কি? এটা আমার স্বপ্নের ভ্যাম্পায়ার!
–স্বপ্নের ভ্যাম্পায়ার মানে?
– মানে আমি ওকে পছন্দ করি অনেক আর,,,,,উফফ আমি আপনাকে কেন বলবো? আপনি যান এখান থেকে!
– আমি না তোমার বয়ফ্রেন্ড! আমি এখানে থাকবো যা ইচ্ছে তাই করবো! আর এই ৫দিন তুমি যাকেই পছন্দ করো না কেন তাকে আর দেখতে পারবে না আর তার সামনে যেতে পারবে না ৫দিন পর আমি চলে গেলে তোমার যা ইচ্ছে তাই করো!
– আপনি শুধু শুধু আমার উপর গার্লফ্রেন্ড এর অধিকার খাটাচ্ছেন! আর আপনি এই ৫দিন ৫দিন কি লাগিয়েছেন? এর থেকে ভালো আমাকে যদি ভালো করে জিজ্ঞেস করতেন যে আমার গার্লফ্রেন্ড হবে কিনা আমি হয়তো ভাবতাম!
– আমি আমার সব গার্লফ্রেন্ড দের জন্যই possessive!
– সব গার্লফ্রেন্ড দের জন্য মানে? কয়টা গার্লফ্রেন্ড আপনার?
– বর্তমানে একটাই তুমি!
–তার মানে আগে অনেক গুলো ছিল?!

– হুম ছিল কিন্তু তাদের প্রতি আমি এতটাও গুরুত্ব দিতাম না মানে দুই একদিন পর পর একটু ফোনে কথা হতো ব্যাস! আর তুমিই আমার বাংলাদেশি প্রথম গার্লফ্রেন্ড তাছারা তুমি সবসময় আমার চোখের সামনে আছো তাই তোমার প্রতি গুরুত্ব বেশি দিতে ইচ্ছে করছে আমি জানি না কেন?
– আপনি কি বাংলাদেশে এই প্রথম এসেছেন?
– না আগেও এসেছি কিন্তু ভালো মত ঘুরা হয় নি এসে ঘরেই বসে থাকতাম!
– আচ্ছা আপনি আমার সাথে ঘুরতে যাবেন?
– কোথায়?
– চলেন আমি অনেক দিন ধরে ঘুরি না সারা দিন পড়তেই থাকি আর এই কয়েকদিন সময় পেয়েছি চলেন আপনাকে আমি ফ্রেন্ড মনে করেই ঘুরবো!
– কিন্তু আমি বলেছিত তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড!

– আমি না আপনার মত পাগল না আপনার সম্পর্কে না জেনেই আপনাকে বয়ফ্রেন্ড বানিয়ে ফেলবো! এখন আপনাকে আমি শুধু মাত্র ফ্রেন্ড বানাতে পারি আর আজকে ত শুধু ১দিনই আপনার সাথে ঘুরি পরে ভাববো ব্যাপারটা!
– ওহ্ তাহলে আজকে তুমি আমার সাথে Date এ যেতে চাও!
– দেখেন আপনার যা ইচ্ছা আপনি মনে করেন! আপনার আগে কয়টা গার্লফ্রেন্ড ছিল সেটা ত জানি না কিন্তু আমার এখনো ভাগ্যে একটাও বয়ফ্রেন্ড জুটে নাই! আর আপনি শুধু মাত্র রুমাইশার ভাই দেখে আপনাকে একটু বিশ্বাস করে আমি আপনার সাথে একটু ঘুরতে যেতে চাই! না,,না আপনাকে আমার সাথে ঘুরতে নিয়ে যেতে চাই কারণ আপনি ত কিছুই চিনেন না এখান কার!
রেডি হয়ে বের হতে ফারহান বলল
– আমি গাড়ি বের করছি!
– ও আচ্ছা তাহলে আপনি গাড়ি দিয়ে যান আমি হেটে যাই!
– কেন?
– এটা বাংলাদেশ এখানে আপনি গাড়ি দিয়ে ঘুরে কোন মজাই পাবেন না! আপনাদের লন্ডনেই শুধু গাড়ি দিয়ে ঘুরে! আসেন রিকশা দিয়ে যাব!
একটা রিকশা নিয়ে দুইজন উঠে বসলাম৷ আমি ওকে সব ঘুরে ঘুরে দেখাচ্ছিলাম৷ উনাকে নিয়ে গেলাম একটা মেলায়৷ আমি বললাম

coffee & vanilla part 1

– দেখেন! এইরকম মেলা আপনি আপনার লন্ডনে পাবেন না! বাংলাদেশে আরও অনেক কিছু আছে যেটা আপনি সেখানে পাবেন না!
উনি ত কিছুই বলছে না চুপাচাপ দেখছে৷ আমারও কেন যেন ভাল লাগছে ভিতরে একটা ভাব চলে এসেছে৷ এই প্রথম কাউকে এভাবে আমি নিজে ঘুরাচ্ছি৷ কোন অন্য দেশের মানুষকে নিজের দেশ ঘুরিয়ে দেখাতে অনেক ভাল লাগে আবার একটা ভাব ত থাকেই! অবশ্য পুরো দেশ ত ঘুরিয়ে দেখাতে পারবোনা কিন্তু আপাতত শুধু আমাদের এলাকাটাই ঘুরিয়ে দেখাতে পারবো৷ একটু দূরে হাওয়াই মিঠাই দেখে বললাম
– ওইযে হাওয়াই মিঠাই চলেন!
– হাওয়াই মিঠাই কি?
– আব,,,, কটন ক্যান্ডি ত চিনেন নাকি?
– ওহ! কিন্তু আমি খাই না!
– আরে চলেন!
আমি উনাকে নিয়ে সেখানে গেলাম উনাকে দিতে উনি বললেন খাবেননা মানে খাবেন না তাই আমি নিজেই একটা নিলাম৷ আমি খেতে খেতে বললাম
– আপনি কি খেয়েছেন কখনো?! খেয়ে দেখলে বুঝবেন হাওয়াই মিঠাই কি!
আমি এটা বলে হাওয়াই মিঠাই মুখে দিতে ফারহান আমার মুখের থেকে নিয়েই নিজের মুখে দিয়ে দিল৷ আমি সাথে সাথে বললাম

– কি করছেন এইসব?
– কেন কি হয়েছে?
– আল্লাহ আশে পাশে কত মানুষ আপনি কি করছেন? তাছাড়া খেতে ইচ্ছে করলে এখান থেকে খান আমার মুখেরটা,,,,,,!

coffee & vanilla part 3