কাশফুলের মেলা পর্ব ৮ || নতুন রোমান্টিক গল্পের লিংক

কাশফুলের মেলা পর্ব ৮
Nusrat jahan Sara

আরশি একবার ইশানের দিকে তাকিয়ে কাঁপাকাঁপা হাতে ফোনটা রিসিভ করলো।রিসিভ করার সাথেসাথে ওইপাশ থেকে একটা পুরুষালী কন্ঠস্বর ভেসে আসলো।
“আরশি কেমন আছো?
“আমি কেমন আছি সেটা তুমি জেনে কী করবে?ফোন কেনো করেছো আমি বেঁচে আছি কী না মরে গেছি সেটার জানার জন্যে?
“এসব কী ধরনের কথা আরশি?
“কী ধরনের কথা?আচ্ছা তোমার লজ্জা করেনা এতো রাতে একজন বিবাহিত মেয়েকে ফোন করো।তুমি তো নিজেও বিবাহিত। তাহলে আমায় ফোন করো কেন?
“বাহ গলার জোর দেখছি বেড়ে গেছে।তা কীভাবে ইশানকে পটালে?কয়েকদিন আগে ওতো বেচারা তোমার কাছে চরিত্রহীন আর লম্পট ছিলো আর এখন,,,,
“চুপ একদম চুপ।অন্যদের ব্যাপারে একদম নাক গলাবেনা বলে দিলাম।কোথায় তোমার স্ত্রী এখন কী সে দেখেনা এতো রাতে তার স্বামী আরেকজন মেয়েকে ফোন করে বিরক্ত করছে?সেদিন তো রিসোর্টে অনেক কথা শুনিয়ে দিয়েছিলো এখন কোথায় সে?আরেকবার যদি আমায় ফোন করিস তাহলে আমার চাইতে খারাপ কেউ হবেনা বলে দিলাম তুর্ব।
আরশি একনাগাড়ে কথাগুলো বলে ফোনটা কেটে বড় একটা শ্বাস ফেলল।রাগে শরীর কাঁপছে। ইশানের দিকে তাকিয়ে দেখলো সে চোখ বন্ধ করে আছে।আরশি ইশানের কপালে হাত রেখে একবার ডাক দিল,,,,

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

“ইশান আপনি ঘুমিয়ে গেছেন?
“না।
“ডক্টর তো বলেছিলো আপনাকে দুইটার সময় ঔষধ খাওয়াতে।দুইটা তো প্রায় হয়ে যাচ্ছে।দাঁড়ান আমি আপনার জন্য ভাত নিয়ে আসছি।
আরশি প্লেটে করে ভাত এনে দেখলো ইশান খাটে হেলান দিয়ে বসে আছে।আরশি ভাতটা তরকারি দিয়ে সুন্দর করে মাখিয়ে ইশানের মুখের সামনে ধরতেই সে মুখ ফিরিয়ে নিলো
“একি আপনি মুখ ফিরিয়ে নিলেন কেনো?খাবার খেয়ে তো আপনাকে ঔষধ খেতো হবে তা নাহলে জ্বর কমবে কী করে?
ইশান কোনো কথা না বলে আরশির কাছ থেকে প্লেট নিয়ে নিলো।ওর হাত পা কাঁপছে,প্লেটের ব্যালেন্স রাখতে পারছেনা ঠিকমতো।আরশি ছোঁ মেরে ইশানের কাছ থেকে প্লেটটা নিয়ে নিলো।
“নিজের ব্যালেন্সই তো রাখতে পারেননা আবার নিজে খেয়ে নিবেন।নিন হা করুন।
ইশান অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও হা করলো।আরশি ইশানকে খাইয়ে দিচ্ছে। ইশান ওর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।এই দিনটার জন্য সে কতো অপেক্ষা করেছে কিন্তু এখন যখন দিনটি এলো তখন সে অনুভূতি শুন্য।আরশির মুখে কেমন হাসি লেগে আছে দেখে বুঝা যাচ্ছে সে খুব তৃপ্তি নিয়ে ইশানকে খাইয়ে দিচ্ছে।ইশান ঠোঁটের ছোঁয়ায় মাঝেমধ্যে কেঁপে উঠছে।আরশি ইশানকে খাইয়ে ঔষধ দিয়ে বাথরুমে চলে গেলো।

কাশফুলের মেলা পর্ব ৭

ব্যালকনির দরজা উতালপাতাল হয়ে উড়ছে।বাইরে প্রচন্ড রকমের দমকা হাওয়া শুরু হয়েছে।আকাশে মাঝেমধ্যে বিজলির রেখা দেখা যাচ্ছে বজ্রপাতও হচ্ছে তবে আজ কেনো জানি আরশির ভয় করছেনা সে এক দৃষ্টিতে বাইরে তাকিয়ে আছে।হঠাৎ কারেন্ট চলে যাওয়াতে আরশি একটু ঘাবড়ে গেলো।সারা রুম একেবারে অন্ধকারে চেয়ে গেছে।আরশি হাতিয়ে হাতিয়ে ওয়ারড্রবের কাছে গিয়ে একটা মোমবাতি বেড় করে জ্বালালো।খাটের দিকে তাকাতেই দেখলো ইশান নেই আশ্চর্য ইশান কোথায়। পিছন ফিরতেই কারও বুকের সাথে ধাক্কা খেতেই তাকিয়ে দেখলো ইশান।ও কিছুক্ষন আরশির চোখে চোখ রেখে বলল,,,
“এতো রাতে ব্যালকনিতে ঘুমাবে না?
“হুম।আপনি উঠে এলেন যে আপনি ঘুমাবেননা?
” সন্ধ্যা থেকে তো শুয়েই আছি।বিছানায় থাকতে থাকতে সারা শরীর ব্যাথা করছে তাই উঠে এলাম।
“ও আপনার কিছু লাগবে?
“না
“এখন কেমন লাগছে?
“আগের চাইতে বেটার।
আরশি আর কিছু না বলে ফ্লোরে বিছানা পেতে শুয়ে পরলো।ইশান কিছু বলল না আরশিকে ডিঙিয়ে ব্যালকনিতে চলে গেলো।

সকাল থেকে ইশান বায়না ধরেছে সে স্পাইসি নুডলস খাবে।জ্বরের সময় কম বেশি সবারই স্পাইসি ভালো লাগে।আরশি দুইটা বাটিতে করে নুডলস নিয়ে রুমে গেলো।এক বাটি ইশানের হাতে দিয়ে আরেকটা নিজে নিলো।ইশান বেশ দিব্যি নুডলস খেয়ে যাচ্ছে। আরশিও কাঁপাকাঁপা হাতে এক চামচ মুখে দিলো। দেওয়ার সাথেসাথেই তার কান দিয়ে ধোঁয়া বেরোতে শুরু করলো।চোখ দিয়ে যেন আগুন বের হচ্ছে।দুইহাত ঝারতে ঝারতে সে এদিক ওদিক পানি খুজতে লাগল। খাটের এক পাশে পানির গ্লাস রাখা আরশি ঢকঢক করে সব পানি খেয়ে নিলো তবুও যেন ঝাল কমেনি উল্টো আরও বেরেছে।ইশান এবার বিরক্তিকর দৃষ্টিতে তাকালো আরশির দিকে সত্যিই ওর চোখ মুখ কেমন লাল হয়ে গেছে।ইশান ওর বাটি ট্রে তে রেখে আরশির হাত ধরে টান দিয়ে পাশে বসিয়ে ওর মুখে ফু দিতে লাগল।আরশির নিচের ঠোঁট কাঁপছে ঝালের কারনে ঠোঁট প্রচন্ড লাল হয়ে গেছে।ইশান ঘোর লাগা দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে রইলো আরশির ঠোঁটের দিকে। ওর ঠোঁটটা আরশির ঠোঁটের কাছে নিয়ে যাবে তার আগেই কেউ,,,,,,

কাশফুলের মেলা পর্ব ৯