More than love part 12

More than love part 12
মেঘলা আহমেদ

রুহি আমতা আমতা করে বলে-
-” কোন সাইমন?
রোদ্দুর চমকে তার দিকে তাকায়।‌ কপালে আঙুল ঘ/সে বলে-
-” হোয়াট কি বলছো? সাইমন একটু আগে যে ছেলেটা তোমার ঘরে লিপিকে নিয়ে এসেছিল।
রুহি হেসে বলে-

-” ওওও ঐ ছেলেটা। লিপি চলে যেতেই সেও চলে গেলো।
তখনি মেরুন ঘরে ঢোকে খাবারের ট্রে নিয়ে। সে ট্রে টা পাশের টেবিলে রেখে বলে-
-” সে কি রুহি ছেলেটা চলে গেলো আর তুই ও যেতে দিলি? আটকালি না কেন?

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

রোজা চুপ করে দাঁড়িয়ে সবাইকে দেখছে শুধু। সাইমনের কথা রোদ্দুরের থেকে শোনামাত্র সে রুহির কাছে চলে এসেছে। সাইমন গেছে তার জন্য ভালোই হয়েছে। কিন্তু রুহি ওমন চোরের মত করছে কেন? রুহি ঢোক গিলে নিজেকে সামলে বলে-
-” আটকে ছিলাম, কিন্তু সে থাকবেই না। কি না কি জরুরী কাজ আছে। আর এতো প্রশ্নই বা করছো কেন। মনে হচ্ছে আমি আ/সামী, আর তোমরা সি/আইডি।

রোদ্দুরের ব্যাপারটা ঠিক হজম হলো না। সাইমন আসলো আবার কাউকে না বলেই চলে গেলো। ব্যাপারটা ঠিক কেমন না? মেরুন রোদ্দুরের দিকে তাকিয়ে বলে-
-” এই রোদ্দুর তুই বসছিস না কেন। আয় নাস্তা করে নে। লিপি তুমিও এসো।
রুহি হাফ ছেড়ে বাঁ/চলো। কিন্তু এরা এখন এখানে নাস্তা করতে বসলে, সে সাইমন কে বের করবে কিভাবে? অপেক্ষা করতেই হবে। রোজা গিয়ে খাটের উপরে বসে। রোদ্দুর গিয়ে তার পাশে বসতেই রোজ চেঁচি/য়ে বলে-

-” এইইই আপনি আমার পাশে বসছেন কেন? সরুন, ঐ রুহি তুই আমার পাশে বস।
মেরুন ভ্রু কুঁচকে বলে-
-” ব্যাপার কি? এমন করছিস কেন?
রুহি দাঁত বের করে হাসে। মেরুনের সাথে তাল মিলিয়ে বলে-
-” ঠিকই তো আপু। আজ বাদে কাল তোমার বিয়ে হবে। হবু জামাইয়ের পাশে এখন বসতে সমস্যা কি?
এদের কাহিনী দেখে রোদ্দুরের ভীষণ হাসি পায়‌। সে হেসে বলে-

-” রুহি এসো আমাদের মাঝখানে এসে বসো। কদিন পর তোমার বোন শ্বশুরবাড়ি গেলে তোমাকে যদি আর না পায়‌।
রোদ্দুরের কথা শুনে সবাই হেসে উঠলেও, রুহি হাসে না। সত্যি তো সে চলেই যাবে। আর কখনো তো দেখাই হবে না। সে গিয়ে রোজার পাশে বসে। দুই হাতে রোজা কে জড়িয়ে ধরে। রোজা তো তার বোনেরই কপি। এতদিনে মায়ায় পড়ে গেছে তো। রোদ্দুর পাশ থেকে রুহির পায়ে খোঁ/চা দেয়। রুহি চমকে তাকায়। রোদ্দুর রুহির কানে কানে জিজ্ঞেস করে-

-” তোমার বোনের এত তে)জ কেন? যাইহোক ওকে বলো বিয়ের পর আমার পাশেই বসতে হবে।
রুহি হেসে রোজার কানে কানে রোদ্দুরের কথা বলে‌। তা শুনে রোজা বলে-
-” তুই ও রোদ ভাই কে বল। বিয়ের পর পাশেই আসতে পারবে না।
রুহি তেতে উঠে বলে-

-” ঐ তোমরা কি আমাকে বেতার মাধ্যম পাইছো। একেক জনে আমার কানে ফুসুরফুসুর করবা। আর আমি কথা আরেকজন কে বলে দিব‌। মেরুন কিছু বলবা তুমি।
মেরুন হাসতে হাসতে বলে-
-” আহারে আমার ছোট আম্মাজান। কাঁদে না। এই রোদ রোজা একদম কা নের নিচে দেবো‌। আমার ছোট মা কে জ্বালাবি না একটুও। আম্মু তুমি আমার কাছে আসো।
রুহি মুচকি হেসে মেরুনের পাশে গিয়ে বসে। রোদ্দুর হেসে বলে –

-” বাহ ছোট মরিচে দেখছি ঝাল বেশি!
সবাই একসাথে হেসে ওঠে রোদ্দু্রের কথায়। সবার সাথে থাকলে কতো সুন্দর কেটে যায় মুহূর্তগুলো। একটু পর সবাই চলে যায় রুহির রুম থেকে। রুহি তাড়াতাড়ি করে দরজা বন্ধ করে দেয়। লাইট অফ করে দেয়। মেঝেতে থাকা ল্যাবের দরজাটা খুলে যায়। সে দ্রুত নিচে নামে। সাইমন কে সে এখানেই নামিয়ে দিয়েছিল। চারদিকে চোখ বুলিয়ে ডাকে –

-” সাইমন কোথায় গেলে? এই সাইমন।
কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার সাইমন কোথাও নেই। গেলো কোথায়? এখানে নিচে চারটা রুম আছে। একটা রুম সবসময় বন্ধ থাকে। সেখানে যাওয়া রুহির জন্য নিষেধ‌। রুহি তিনটি রুম তন্নতন্ন করেও কোথাও সাইমন কে পায়না। রুহির মাথা চক্কর দিয়ে উঠছে। ছেলেটা গেলো কই? রুহি স্টোররুমের দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। দরজা খোলা! কে খুললো? সাইমন ওখানে আছে? রুহির ভয় করছে। না জানি দরজার ওপাশে কি আছে? রুহি ভয়ে ভয়ে দরজা খোলে।

কিন্তু এ ঘর তো অন্যগুলোর মতো আলোকিত নয়। রুহি ভেতরে ঢুকে। দেয়ালের পাশে হাতরে লাইট অন করে। সবকিছু আলোকিত হয়ে ওঠে। রুহি সামনে তাকাতেই সাইমন কে দেখতে পায়। সাইমন মাটিতে পড়ে আছে! রুহির বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে ওঠে। দম মনে হয় বন্ধ হয়ে আসছে। সাইমন কে এই অবস্থায় দেখে ভেতরে ভাঙচুর হচ্ছে। সে ছুটে গিয়ে সাইমনের কাছে বসে। সাইমনের মাথাটা নিজের কোলের উপর রাখে‌। মনে হচ্ছে ঘুমিয়ে গেছে বা অজ্ঞান। রুহির অদ্ভুত লাগে ব্যাপারটা। এটুকু সময়ে মানুষ কি করে ঘুমাতে/অজ্ঞান হতে পারে।

কিন্তু আগে এই ঘর থেকে বেরোতে হবে। সে সাইমনের দুই হাত ধরে টে/নে টে/নে বের করে ঘর থেকে। হাঁপিয়ে ওঠে রুহি। একটা ছেলে কে টে/নে আনা কি এতই সহজ। রুহি সেই ঘরের দরজাটা বন্ধ করে দেয়। সাইমন কে রেখে সে নিজের ল্যাবে ঢোকে। মেশিন টা তো সে ঠিক করেছে। কিন্তু আদৌও কি এতে কাজ হবে। আর বাবা ২২ বছর হওয়ার আগে এটা ইউজ করতেও না করেছে।

কেবল একবারই ভ্রমন করা যাবে এতে। এরপর আলফা প্ল্যানেট এ গিয়ে সে তার মা কে খুঁজবে। তার মা আর রোজার মা ফ্ল্যাশ হয়ে যে কই গেলো। তারপর রুহি পানি নিয়ে সাইমনের কাছে যায়। সাইমনের চোখেমুখে পানির ছিটা দিতেই সে চোখ পিটপিট করে তাকায়। তার চোখে আতংক‌। রুহির‌ দিকে চোখ বড় বড় করে তাকায়‌ সাইমন‌। মেঝে থেকে উঠে রুহিকে জড়িয়ে ধরে আচমকা। এমন করায় রুহি ভীষনভাবে চমকায়। সে সাইমনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে-

-” আরে বাবা কি হয়েছে? এমন জড়িয়ে ধরছো কেন? তুমি ওই রুমে কেন গেলে? আর অজ্ঞান হলে কিভাবে?
সাইমন ঘন ঘন নিঃশ্বাস নিচ্ছে শুধু। তার ভয় করছে এখনো। সে রুহিকে ছেড়ে দেয়। চারদিকে তাকিয়ে বলে-
-” রুহি তুমি যখন আমাকে এখানে নামিয়ে দিয়েছিলে। আমি জায়গাটা একটু ঘুরে দেখতে যাই। আগেই ঐ রুমের দিকে নজর পড়ে। তারপর রুমের দরজার উপর -“ডোন্ট টাচ ইট” লেখা দেখে অবাক হয়ে যাই।

কৌতূহল নিয়ে দরজা খুলতেই আমি অবাক হয়ে যাই। দুটো বক্স ভেতরে। সবুজ আলো আসছিল সেখান থেকে। আমি কাছে যেতেই সেই আলো আমার চোখে মুখে পড়ে। আমি শুধু দুটো মানুষ দেখেছি সেখানে। কিন্তু চেহারা দেখতে পারিনি। ওখানে কেমন একটা গ্যাস ছাড়া ছিলো যেন। আমি ঢলে পড়ে যাই তারপর। আর কিছু মনে নেই‌। তুমি ঐ মানুষ গুলোর চেহারা দেখেছো?
সাইমনের কথায় রুহি হতবাক হয়ে যায়। কি বলছে এসব। সে অবাক হয়ে বলে-

-” কি বলছো এসব? আমি তো কোন মানুষ বা বক্স দেখিনি। ওখানে তুমি ছিলে শুধু। আর কেউ ছিলো না।
-” রুহি তুমি আমাকে অবিশ্বাস করছো? আমি সত্যি দেখেছি। ওখানে মানুষ ছিল। তুমি চলো দেখবে।
-” আচ্ছা চলো।
তখনি একটা সিগনাল আসে। রুহি ঢোক গিলে সাইমনের দিকে তাকায়। ছুটে যায় ল্যাবে। পিছে পিছে সাইমন ও যায়। একটা ম্যাসেজ এসেছে‌ আলফা প্ল্যানেট থেকে-

-” রুহি রুহি তুমি কি ঐ ঘরে ঢুকেছিলে? ওখানে সিস্টেম গরবর কেন হচ্ছে? তুমি কিছু দেখেছো? ঐ ঘরে ঢুকলে কিন্তু সাথে সাথে মা রা যাবে তুমি!
রুহি অবাক হয় তার বাবার মেসেজ দেখে। সাইমন শুধু তাকিয়ে আছে। কারন সে কোডিং সম্পর্কে কিছুই জানেনা‌। আর এটা কোন ভাষার ম্যাসেজ তাও জানেনা‌। রুহি দ্রুতহাতে টাইপ করে-

-” না বাবা আমি কিছু দেখিনি‌। আর আমি ঐ ঘরে যাইনি। দেখো অন্য কোন সমস্যা হয়েছে হয়তো।
আর কোন ম্যাসেজ আসেনা। রুহি সাইমনের দিকে ঘোরে‌। সে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে-
-” এগুলো কিসের সিগন্যাল ছিল। আর কি টাইপ করলে?

-” বাবা জিজ্ঞেস করেছে এ রুমে গিয়েছিলাম কি না? তুমি কেন গিয়েছো? বাবার সিস্টেমে এখন সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু বাবা বলেছিল ঐ ঘরে গেলে আমি মা রা যাব‌। কিন্তু আমি এখনো জীবিত!
সাইমন চোখ বড় বড় করে বলে-

More than love part 11

-” তারমানে অন্য কোন রহস্য আছে। চলো আমরা আবার যাই। দেখবো কি আছে ওখানে!

More than love part 13