অভিমানেই আছো তুমি পর্ব ৭ || Writer:TanjiL Mim

অভিমানেই আছো তুমি পর্ব ৭
Writer:TanjiL Mim

“জোৎসা ভরা রাত’!!আকাশে কয়েক শত তাঁরা ঝলমল করছে’!!তার সাথে ফুড়ফুড়ে বাতাস’!!সব মিলিয়ে একটা অসম্ভব সুন্দর একটা পরিবেশ’!!আর এমন পরিবেশ দিয়ে আমার হাত ধরে হাঁটছে আদিত্য’!!উপরে উপরে রেগে থাকলেও ভিতর থেকে অসম্ভব খুশি আমি’!!এমন সময় সামনে কিছুটা দূরে ফুচকার দোকান দেখতে পেলাম’!!কিন্তু সেটা আদিত্যকে কিভাবে বলবো’!!দোকানের ফুচকার দিকে তাকাতেই ঠোঁট বাহিরে বেরিয়ে? আসলো আমার’!!ধুর!রেগে থাকলে এই এক ঝামেলা না যায় কিছু বলা না যায় কিছু করা’!!আমরা ফুচকাওয়ালার দোকান টপকে চলে যাচ্ছি’!!……
“ধুর ভালো লাগে না’!!

“কিছুটা দূর যেতেই হর্ঠাৎই আদিত্য দাঁড়িয়ে পরল’!!তার কাছে অবাক আমি’!!হর্ঠাৎই আদিত্য বলে উঠলঃ
———–“ফুচকা খেতে ইচ্ছে করছে এটা বললেই তো হয়’!
————-“বুঝলো কেমনে(মনে মনে)
————“যেভাবে তাকিয়ে ছিলে যে কেউ বুঝে যেত…
————???
————“ওভাবে তাকানোর মতো কিছু বলি নি চলো তাড়াতাড়ি……
“এই বলে আবার উল্টো দিকে আমার হাত ধরে হাঁটা দিলো’ আদিত্য….
“আমি আদিত্যের কাজে মনে মনে চরম খুশি হইছি….
“আদিত্য আমার হাত ধরে ফুচকাওয়ালার দোকানের সামনে নিয়ে গেল তারপর পর পর তিন প্লেট ফুচকা খেলাম’!!আর আদিত্য শুধু আমার মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলো……

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

“পরেরদিন বিকেলে……..
“ফুড়ফুড়ে আলোকিত সুন্দর একটা পরিবেশে ব্রিজ উপর দিয়ে গাড়ি ড্রাইভ করছিল আদিত্য’!!হর্ঠাৎই সে গাড়ি থামিয়ে দিল’!!তারপর আমার হাত ধরে নিয়ে গেল ব্রিজের নিচে’!!অসম্ভব সুন্দর আর মনো মুগ্ধকর পরিবেশ’!!আদিত্য আমার হাত ধরে নদীর কিনারার চলে গেল’!!তারপর বললোঃ
———–“উঠবে নৌকায়…..
“কোনো উওর দিলাম না’!!
“আদিত্য আর কিছু বলে আমার হাত ধরে উঠে পরলো নৌকায়’!!নদীর টেউরের শব্দ আর আশেপাশের গাছপালা দিয়ে ঘেরা একটা জায়গা’!!মুহূর্তগুলো সুন্দর’!!হর্ঠাৎই আদিত্য বলে উঠলঃ
————-“আমি জানি তুমি এখনো আমায় খুব ভালোবাসো,শুধু তোমার অভিমানের দেয়ালটা একটু ভাড়ি’!!তাই বলছো না,ঠিক আছে কোনো ব্যাপার না তোমায় কিছু বলতে হবে না শুধু কখনো ছেড়ে যেও না আমায়’!!আমি যে তোমায় অসম্ভব ভালোবাসি’!!যেদিন তোমার অভিমানের দেয়াল হালকা হবে সেদিন বেশি কিছু নয় শুধু সুন্দর করে সেজেগুজে মুখ ফুটে বলো আমায় “অভিমানেই_আছো_তুমি” ? কথা দিচ্ছি আর কখনো কষ্ট দিবো না তোমায়……
“এতটুকু বলে নৌকার উল্টো দিকে চলে গেল আদিত্য’!!আর আমি চুপটি করে আদিত্য কথাগুলো শুনলাম’!!আদিত্য চলে যেতেই আনমনে হাসলাম আমি’!!অভিমান তো কবেই ভেঙে গেছে প্রিয়……

“মাঝখানে কেটে গেল পর পর অনেকগুলো দিন’!!সারাদিন ঘুরাঘুরি আর মজার মুহূর্তেই কেটেছে দিন গুলো’!!এই কয়েকদিনে বেশ কয়েকটা জায়গায় ঘুরেছি আমরা’!!দিনের বেলা নদীর কিনারার ঢেউয়ের হাতছানি,আর রাতের বেলা আকাশে জ্বল জ্বল করা তাঁরা চাঁদের সংমিশ্রণে করা হাসি’!!সব মুহূর্তগুলোই একদম হৃদয়ে গাঁথা থাকবে’!!
||
“সকালের ফুড়ফুড়ে আলোতে ঘুম ভাঙলো আমার’!!পাশেই আদিত্য এখনো ঘুমিয়ে আছে’!!আনমনে হাসলাম আমি’!!আদিত্য অনেক বদলে গেছে’!!সত্যি খুব সুন্দর ছিলো বিগত দিনগুলি’!!আনমনেই আমার হাত চলে গেল আদিত্যের কপালে’!!অসম্ভব সুন্দর লাগছে তাকে’!!কপালের সাথে আঁটকে থাকা চুলগুলিতে অসম্ভব মানিয়েছে তাকে’!!ছেলেদের এত সুন্দর হলে চলে নাকি’!!আনমনে হাসলাম আমি’!!তারপর বিছানা থেকে উঠে সোজা চলে গেলাম ওয়াশরুমে’!!আজকে খুব খুশি লাগছে’!!ওয়াশরুম থেকে বের হতেই দেখলাম আদিত্য উঠে গেছে’!!কিছু না বলেই রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম আমি’!!

“ব্রেকফাস্ট শেষ করে আদিত্য চলে গেল তার কাজে’!!আর আমি সারাদিন শুধু ঘর থাকি’!বিকেলে ঘুরতে বের হই’!!আজকে ভেবে রেখেছি আদিত্যের সাথে আর রাগারাগি করবো না’!!আজকেই বাড়ি ফেরলে সব রাগ অভিমান ভেঙে নতুন করে সব শুরু করব আমরা’!!তারপর পরিবারের সাথেও আবার সব ঠিক করে নিবো’!!আমি জানি আব্বুকে সব বুঝিয়ে বললে ঠিক আমাদের মেনে নিবে’!!আজকে খুব সুন্দর করে সেজেগুজে আদিত্য সামনে দাঁড়িয়ে বলে উঠবো আমি “অভিমানেই_আছো_তুমি” ?আর আমার সেই অভিমানের দেয়াল ভেঙে নতুন করে তৈরি করবো আদিত্য – আরুশির নতুন জীবন’!!আর থাকবে না কোনো কষ্ট, আর থাকবে না কোনো যন্ত্রণা’!!আজকে আদিত্য তোমায় বলে দিবো তোমায় যে ভালোবাসি খুব’!!এসব ভাবতে ভাবতে আনমনে হেঁসে উঠলাম আমি’!!তারপর সিঁড়ি বেয়ে উপরে চলে আসলাম’!!
”””
“দুপুর ২ঃ০০টা…….
“শাওয়ার নিয়ে এসেছি অনেকক্ষণ হয়েছে’!!আজকে একটা রেড কালারের কাতান শাড়ি পড়েছি’!!মুঠো ভর্তি লাল কাঁচের চুরি, চুলগুলো খুলা,সাথে চোখে কাজল,আর হালকা মেকাপ’!!ঘড়ির কাঁটায় দুপুর দুটো বেজে দু মিনিট আর কিছুক্ষনের মধ্যেই আদিত্য চলে আসবে’!!আজকে অনেক বড় সারপ্রাইজ দিবো তোমায় মাই কিউট জামাই…..!!ভাবতেই খুশি খুশি লাগছে খুব’!!

অভিমানেই আছো তুমি পর্ব ৬

“মাঝখানে পাড় হয়ে গেল অনেকটা সময়’!!ঘড়ি কাঁটায় তিনটে বেজে গেছে’!!কিন্তু আদিত্য আসার নাম গন্ধ নেই’!!একরাশ টেনশন মাখা মুখ নিয়ে রুমে মধ্যে পায়চারি করছি আমি’!!হর্ঠাৎ কেন একটা অনুভব হলো আমার’!!আচমকা এমনটা হওয়ার কারন বুঝলাম না’!!ধুর আদিত্যের কিছু হয় নি’!!হয়তো কোনো কাজে আঁটকে পড়েছে’!!এখনি চলে আসবে’!!এসব বলে নিজেকে শান্ত্বনা দিচ্ছি মনকে’!!কিন্তু মনটা অস্থির হয়ে আছে’!!টেনশনে কেটে গেল আরো এক ঘন্টা’!!এখন পুরোই অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে’!!এতটা দেরি হচ্ছে কেন…
“কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না’!!অস্থিরতা কাজ করছে ভীষণ’!!বুকের ভিতর ভয় ভয় লাগছে’!!আচমকা ফোনের শব্দে আমি পুরো কেঁপে উঠলাম’!!কাঁপা কাঁপা হাতে ফোনটা তুলে নিলাম উপরে আদিত্যের নাম দেখে একটু রেগে বলে উঠলামঃ
————-“এত সময় লাগছে কেন বাড়ি ফিরতে,আর বাড়ি না এসে ফোন কেন দিচ্ছো…..
আর কিছু বলার আগেই অপর পাশ থেকে একটা অচেনা লোক বলে উঠলঃ
————ম্যাডাম,
“অপরিচিত কন্ঠ আসতেই বুক কেঁপে উঠল আমার’!!আদিত্যের ফোনে অন্য কেউ’!!আমি কাঁপা গলায় বলে উঠলামঃ
————“হুম বলুন আপনি কে আর আদিত্যের ফোনে আপনি কথা বলছেন কেন…..
———–“আসলে ম্যাডাম এই ফোনটা যার সে এক্সিডেন করেছে…..
“মুহূর্তে মধ্যে লোকটা কথা শুনে মনে হলো পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেছে আমার’!!
————“কি……
————“ওনাকে হসপিটালে নেওয়া হয়েছে আপনি চলে যান খুব গুরুতর আঘাত পেয়েছে সে’!!
“লোকটার কথা শুনে পুরো কলিজা কেঁপে উঠল আমার’!!এটা হতে পারে
———-“আদিত্য’!!চেঁচিয়ে কেঁদে উঠলাম আমি’!”
“কিছুতেই কিছু মেনে নিতে পারছি না আমি’!!আমি তো ঠিক করে নিতে চেয়েছিলাম তাহলে এটা কি হলো’!!আর ভাবতে পারছি না আমি’!!দ্রুত গতিতে হসপিটাল যেতে হবে আমার'”!
||
”হসপিটালের করিডোর দিয়ে দৌড়াচ্ছি আমি’!!বুকের ভিতর অসম্ভব যন্ত্রণা হচ্ছে’!!বার বার মনে হচ্ছে আদিত্যের কিছু হয়ে গেলে আমি কি করে বাঁচবো’!!চোখের পানি যেন থামছেই না’!!

“হসপিটালের বেডে ঢুকতেই কলিজা কেঁপে উঠলো আমার’!!পুরো মুখে ব্যান্ডেজ দেওয়া আদিত্যের’!!সারা শরীরে অবস্থা খুব খারাপ যা দেখে রীতিমতো অবস্থা খারাপ হয়ে গেল আমার’!!আমি দৌড়ে আদিত্যের হাত ধরে কেঁদে বলে উঠলামঃ
————–“এসব কি হয়ে গেল আদিত্য,আমি তো এমন কিছু চাই নি’!!এমনটা কেন হলো আদিত্য’!!আমি তো ভেবেছিলাম আজকে তোমার সাথে সব অভিমান ভেঙে দিয়ে নতুন করে সব শুরু করবো’!!তাহলে এটা কি হয়ে গেল….বলতে বলতে কেঁদে উঠলাম আমি’!!

অভিমানেই আছো তুমি পর্ব ৮