Psycho is back part 15+16

Psycho is back part 15+16
apis indica

দিন গুলো ভালই যাচ্ছিল।।
একদিনে ইউসুফ ভাইয়া ও অনেক পাল্টে গেছে,আগের মতো নেই।।আগে কথায় কথায় কপাট রাগ দেখাতো কিন্তু এখন তার সেই রাগটি নেই।।।
তার মাঝে অনেক পরিবর্ত ও হয়েছে ।।
একদিনে তার সাথে আমার ভাল বন্ধুত্ব হয়ে উঠে,,।।তিনি মাঝে মধ্য রাতের বেলা আমাকে নিয়ে ঘুড়তে যায়।।যেমন –পরশুদিন দিন আমাকে নিয়ে মধ্যরাতে চন্দ্রবিলাস করতে গেছেন।।
সেই রাতটা ছিল আমার কাছে বেষ্ট।।সেদিন ছিল আমার আম্মুর মৃত্যুবার্ষিকী।। সারাটা দিন আমার মনটা অনেক খারাপ ছিল।।সেদিন ফকির খাওয়ানো হয় বাসায়।।সাথে মিলাদও পড়ানো হয়।।সারা দিন কেঁদে কেঁটে আমার নাক মুখ ফুলিয়ে ফেলেছি।।নানুমারও একি হাল।।
খাওয়া-দাওয়ার পর্ব শেষ করতে করতে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে যায়।। সেদিন ইউসুফ ভাইয়া সারাদিন বাসায় ছিল না।।দেশের বাহির থেকে তার ক্লায়েন্ট আশায় তিনি মিটিং ব্যাস্ত ছিলেন।।
সন্ধে বাসায় আসে।।আর আমাকে ও অবস্থায় দেখে তিনি আমার রুমে আসেন।।আর ভাল মন্দ জিগাসা করতে লাগেন।।কথার এক পর্যায় তিনি বলে উঠেন,,

—-বাবুই পাখি একটা জায়গায় যাবি??
—-কই??
—-উম,,,এখন বলবো না…!!রাতে রেডি থাকিস..!!
আমি মাথা নাড়ালাম যে হ্যাঁ রেডি থাকবো।। তিনি আমার চুলে হাত বুলিয়ে, মুচকি হেসে চলে গেলেন।।
রাত তখন ১২ টা বেজে ৩৪।। ভাইয়ার আসার খবর নেই,,,আমি রেডি হয়ে বসে বসে ঝিমুচ্ছিলাম।।তখনি দরজায় কড়া নাড়ে কেউ।। আমি দরজা খুলে দেখি ভাইয়া দাঁড়িয়ে আছে বাইরে।। ভাইয়াকে খুব সুন্দর লাগচ্ছে।।তিনি ফুল ব্ল্যাক পড়েছেন।।যাতে আরো অস্থির লাগছে।। ভাইয়াকে দেখে প্রতিবারের মতো আবার ক্রাশ খেলাম।।
আজকে ভাইয়া বাইক নেননি।। গাড়ি নিয়েছেন।।গাড়ি সেই ঘন্টাখানিকের মতো চলছে।।
—-ভাইয়া আমরা কথায় যাচ্ছি??
—-সারপ্রাইজ।। মুচিকে হেসে বলল ইউসুফ।।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

গাড়ি আরো কিছুক্ষন চলার পর একটি উঁচু জায়গায় এসে থামলো।।যেখান থেকে পুরো ঘুমন্ত শহরটা দেখা যাচ্ছিল।।চারিদিক নানা রঙ্গের লাইট জ্বলছিল।। তার সাথে সাপের মতো পেঁচানো রাস্তা গুলো দিয়ে কিছুক্ষণ পর পর একটা দুটো গাড়ির আনাগোনা চলচ্ছে।।সব চেয়ে বেশী আকর্ষণ করছে আকাশের সেই এক চিলতে চাঁদটুকু।।এই উঁচু টিলায় কোনো লাইট নেই।।কিন্তু সেই চাঁদের আলোয় সবটুকু জায়গায় জুড়ে চকচক করছে।।আকেশের চাঁদকে সেই তারা গুলো যেন সঙ্গ দিচ্ছে।। আমি উঁচু জায়গাটার মাঝে দাড়িয়ে সব পর্যবেক্ষণ করছিলাম।।তখনি ইউসুফ ভাইয়া গাড়ির পিছন থেকে একটা পাটি এনে বিছিয়ে সটান করে শুয়ে পরলেন তার দু হাত মাথার নিচে গুঁজে।। আমি অবাক চোখে হাসি দিয়ে বললাম,,
—-কি করছেন কি ভাইয়া??আশেপাশে কত পোকামাকড় থাকতে পারে।। আর আপনি মাটি শুয়ে পড়লেন??
—–কিছু কিছু জিনিস উপভোগ করতে অনেক সময় অনেক কিছু মানতে হয় না,,আবার অনেক নিয়ম ভাঙ্গতেও হয়।।এই চন্দ্রিমাতে পোকা-মাকড় ও তার সঙ্গীর সাথে ব্যাস্ত।। তারা আসবে না এখানে বাবুই পাখি।।এখানে শুয়ে দেখ মনে হবে তুই আকাশটাকে নিজের হাতে ছুঁতে পারবি।আকাশের দিকে তাকিয়ে কথা গুলো বলল।।
—-ওকে….!! আমি ভয়ে ভয়ে তার পাশে বসলাম।।তখনি ভাইয়া আমাকে টান দিয়ে তার সাথে মিশেয়ে নিলেন।।এবং তার বুকের সাথে চেঁপে ধরেন।।

—-দেখ এখন বাবুই পাখি।।কত সুন্দর লাগছে আকাশ টা।।
ইউসুফ ভাইয়ার এমন কাজে যেমন আমি অবাক তার থেকে বেশী লজ্জা লজ্জা লাগছে।।কিন্তু খুব ভালও লাগছে।।
এভাবেই কেঁটে যায় কিছুক্ষণ ইউসুফের হাতে মাথা রেখে তাকিয়ে আছি মাথার উপর এই বিশাল আকাশের দিকে।। দুজনের মধ্যে পিনপতন নীরবতা বিরাজ করছে।।
নিরবতা ভেঙ্গে ইউসুফ ভাইয়া বলে উঠে,,
—-বাবুই পাখি? দেখ আকাশের তারা গুলো দিয়ে আমরা নানার রকম আকৃতি বানাতে পারি!!
—–হুম…!! কিন্তু কিভাবে ভাইয়া??
ইউসুফ ভাইয়া তার ডান হাত উঁচু করে নানান রকম ভাবে দাগ টানার মতো করে বললেন,,,
—-এইভাবে দেখ??
বলে তিনি কখনো ফুল, কখনো ফল,, কখন মানুষ,,কখনো কার্টুন তৈরি করে চলেছেন তিনি।।আমিতো এসব দেখে হেসে কুটকুট হচ্ছি।।সারাদিনের বিষণ্ণতার ছাপ যেন একেবারেই মুছে গেছে আমার।।আমি খিলখিল করে হেসে যাচ্ছি।।আর ইউসুফ ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে আছে পলকহীন ভাবে।।ঠোঁটে তার সেই মারাত্মক হাসি।।যেটি দেখে হাজার বার মেয়েরা প্রেমে পড়তে রাজি।।কিন্তু আমি চাইলেও তা পারবো না!!কারণ একটি, সে যে আমার ভাইয়া,,তার থেকে বড় করণ আমি আর প্রেম করতেই চাইনা,, শুধু ভালবাসতে চাই।।কিন্তু কেন যানি ভাইয়াকে দেখলে তার প্রেমে পড়তে ইচ্ছে হয়।।তখনি এই গানটি মনে পড়ে যায়..!!

,,””” প্রেমে পড়া বারণ
কারণে অকারণ,
আঙুলে আঙুল রাখলেও হাত ধরা বারণ।
এদিকে ইউসুফ তার কাতিলানা নিগাহে দিয়ে দেখে যাচ্ছি তার বাবুইকে।।সারাদিন কেঁদে কেঁটে মুখের ১২ টা বাজিয়ে ছিল তার।।তাই নিয়ে এসেছি তোমাকে বাবুই পাখি।।তোমার এই হাসি মুখটি যে দেখলে আমার বুকের যে শান্তি অনুভব হয়।।বুঝাতে পারবো না।।তোমার এই মাসুম চেহেরা দেখেই তো প্রথম দিন ভালবেসে ফেলি।।আমি চাইনা বাবুই পাখি তুমি আমাকে আবার ভুল বুঝো, আবারে সেই আগের মতো ভয় পাও।।এতে যে ভালবাসাটা পাওয়া হবে না।।সারাজীবন ভয়ে কুঁকড়ে থাকবে আমাকে দেখে তা আমি চাই না বাবুই পাখি।।আমি চাই তুমিও আমাকে ভালবাসো।।বেশি না হোক একটু হলেও চলবে,, বাকিটা আমার ভালবাসা দিয়ে না হয় পুষিয়ে নিব।। এসব ভাবছে আর মুচকি হাসচ্ছে ইউসুফ।।
আমরা অনেকক্ষণ চুপচাপ আকাশের দিকে তাকিয়ে শুয়ে থাকলাম।।চারিদিক ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক শোনা যাচ্ছে।। ভাইয়া হুট করেই উঠে বসেন আর আমার ধরে টেনে কোথাও নিয়ে যেতে লাগলেন…!!

—–ভাইয়া আমরা আবার কই যাচ্ছি??
—-একটু চুপ থাকো এখনো বুঝতে পারবা।।
বলে ভাইয়া একটা ঝোপের ধারে নিয়ে আসলো।। ঝোপের আশেপাশে থেকে একটু ছোট ইটের টুকরা নিল।।। এবং সে ইটটি ঝোপের মাঝে ঢিল মারলো।। আমি তোর বাচ্চার মা কাজগুলো দেখে বিস্ময় চোখে দেখতে লাগলাম।। উনাকে আজ না দেখলে কখনোই বুঝতাম না যে উনার মধ্যে একটা ছোট বাচ্চার বসবাস।। ঢিল মারার সাথে সাথে কতগুলো জোনাকি উরতে লাগলো।। পরক্ষণেই অন্ধকার জায়গাটি ছোটছোট মৃদু আলোয় আলোকিত হতে লাগলো।। একটা দেখে এতই খুশি হলাম যে পাগলের মতো ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরে থ্যাংক ইউ বলতে লাগলাম।। আমার ছোট থেকে এমন জোনাকি দেখার ইচ্ছে ছিল।।তাই আর ধরে রাখতে পারি নি নিজেকে খুশির ঠেলায়,তাকে জজড়িয়ে ধরে ফেলে।। ভাইয়া ও আমাকে জড়িয়ে ধরে।।
—–বাবু তুই খুশি হয়েছিস তো।।
—-হুম অনেক অনেক অনেক।।
এতো খুশি হয়ে ছিলাম যে আমার হুঁশ ছিল না।। যখন বুঝতে পারি ভাইয়া জড়িয়ে ধরে রেখেছি সাথে সাথে ছেড়ে দিই আর লজ্জা পাচ্ছিলাম।।আর মাথা নত করে কিছুক্ষণ আগের করা বোকামির কথা ভাবতে লাগলাম।। ভাইয়া হয়তো বুঝতে পারছে তাই তিনি বলতে লাগে,,

—–বাবুইপাখি জোনাকি পোকা গুলোকে ধরে দেখবি না।।
আমি মাথা নাড়িয়ে ঝোপের ধারে চলে গেলাম।। আর জোনাকিপোকা দের সাথে খেলতে লাগলাম।। একটু পর পর তারা আমার হাতে বসতে সে,আবার উড়ে চলে যাচ্ছে খুব মজা লাগচ্ছিল।।এদের সাথে খেলতে।।আমি কয়েকটা জোনাকি পোকা দু হাতের মাঝে ভরে ইউসুফ ভাইয়ার সামনে নিয়ে যাই।। তারপরই তার মুখে সামনে নিয়ে হাতটা খুলে দেই।। আর সাথে সাথে জোনাকিপোকা গুলো উড়ে যেতে লাগে।। এরি মাঝে আকাশ গুরমুর করে শব্দ করতে লাগলো।।ধীরে ধীরে রাতের আকাশে কালো মেঘ জমতে লাগলো।।
—–বাবুই পাখি…..!! চলো এবার বৃষ্টি নামবে…!!
—–ভাইয়া আরেকটু থাকি না….!!
—-আমি আরেকদিন নিয়ে আসবো বাবুইপাখি…!! এখন চল…!!
আমার মন খারাপ হয়ে গেল।। বৃষ্টি বুঝি আর আসার সময় পেল না?? এখন গুড়িগুড়ি বৃষ্টি পরছে।।
এদিকে ইউসুফ তার বাবুপাখির মন খারাপ দেখে তারও লাগে…!!তাই কিছু একটা ভেবে বলতে লাগে,,
—–বাবুই লং ড্রাইভে যাবি?? বৃষ্টির দিন কিন্তু লং ড্রাইভে যেতে খুব মজা।।
আমি সাথে সাথে খুশিতে গদ গদ হয়ে বললাম,,
—–আবার জিগায়।।

বলেই গাড়িতে উঠে বসি।।ভাইয়া হেসে উঠে বসে।।তারপর গাড়ি ড্রাইভ করতে লাগে।।বৃষ্টির বেগ বাড়ছে।।তখন বৃষ্টিতে আমার জামা ভিজে ছিল হালকা তাই ঠান্ডা লাগচ্ছে খুব।।ভাইয়া হয়তো বুঝতে পেরেছেন।।তাই তিনি তার জ্যাকেট এগিয়ে দিলেন।। আমি তা নিয়ে পড়ে নিলাম।।এখন কম ঠান্ডা লাগছে।।তার জ্যাকেট থেকে একটি মন মাতানো সুভাষ ছড়াচ্ছিল।।ইউসুফের চোখের আড়ালে যা বার বার ঘ্রাণটা নিয়ে ছিলাম।।আজ সত্যিই কতো আলাদা কিছু অনুভুতি অনুভব করলাম।।গাড়ি এখন কই যাচ্ছে আমার জানা নেই।।তাও কেন জানি বার বার মনে হচ্ছে।।গাড়িটি আজ না থামতো।।পাশের ব্যাক্তিটির সাথে সারা জিবন এভাবেই চলে যেত।।পরক্ষণে মনে পড়ে যা এসব ভাবা ভুল।।তাই সব অনুভুতি মনের কোনে রেখে বাহিরে তাকিয়ে রইলাম।।বাহিরে এখন তুলমুল ভাবে ঝড় শুরু হচ্ছে।।যার জন্য ভাইয়া ড্রাইভ করতে পারছেন না, ধীরে ধীরে ড্রাইভ করছেন।।তাই একটি সেইফ জায়গা দেখে দাড় করাতে চাইছেন।।
ভাইয়া ড্রাইভ করে চলছেন।।কিন্তু আমার বোরিং লাগচ্ছে এখন একটি সং শুনতে পেলে খুব ভাল লাগতো।।তখনি ভাইয়া একটি সং প্লে করেন।।

Chehre mein tere
Khud ko main dhoondhun
Aankhon ke darmiyaan
Tu ab hai iss tarah
Khwabon ko bhi jagah na mile
Yeh mausam ki baarish
Yeh baarish ka paani
Yeh paani ki boondein
Tujhe hi toh dhoondhe
Yeh dilne ki khwahish
Yeh khwahish puraani
Ho poori tujhi se
Meri yeh kahaani

গানটি যেন মুহুর্তে সুন্দর একটি পরিবেশ করে তুলল।।গানের সাথে সাথে বাহিরের বৃষ্টি অনুভব করছিলাম।।আজকে কাটানো রাতটি ভাবতে লাগলাম।।সত্যি উনি না থাকলো এমন সুন্দর একটি রাত উপভোগ করতে পারতাম না।।
ইউসুফ ড্রাইভ করছে আর আড় চোখে বার বার তার বাবুইপাখিকে দেখছে।।
—-বাবুইপাখি…!! তোর মুখে এই হাসিটি সব সময় রাখবি।।তোর হাসিটি খুব সুন্দর।।বলল ইউসুফ।।
ভাইয়ার কথায় আমি শুধু একটি মিষ্টি হাসি দিলাম।।
গাড়িটি একটি সাইডে রেখেছে ভাইয়া।।বাহিরে বৃষ্টির বেগ আরো বেড়েছে।।সাথে ঠান্ডাও লাগচ্ছে অনেক।।ঘুমও পাচ্ছে।।
—-বাবুই পিছনের সিটে যে ঘুমিয়ে পর,,যতখন বৃষ্টির বেগ না কমছে গাড়ি ড্রাইভ করা রিস্কি।।
আমি মাথা নাড়িয়ে পিছনে চলে আসলাম।।আর শুয়ে পড়লাম।।ভাইয়াও ক্লান্ত তাই তাকেও বললাম পিছনে চলে আসতে।।প্রথমে না করলেও পরে চলে আসেন।।ভাইয়া গাড়ির সিট গুলো হেলিয়ে দিলেন।।এতে আরো শুতে আরাম লাগচ্ছে।।
ভাইয়া ও পাশ ফিরে ঘুমিয়েছেন আর আর এ পাশ ফিরে।।এভাবে ঘুমানোর অভ্যাস আমার নেই।।তাই এ পাশ ও পাশ করে লাগলাম।।তখন ভাইয়া আমাকে এমন করতে দেখে এ পাশ ঘুরে বলতে লাগে,,,

—–কি হয়েছে বাবুইপাখি?? এমন করছো কেন??
—-আমি এভাবে ঘুমতে পারছি না।।আমার অভ্যাস নেই।।
তখনি ভাইয়া আমাকে টান দিয়ে তার সাথে মিশেয়ে নেয় তার বুকের সাথে।।আমি স্পষ্ট ভাইয়ার বুকের বা পাশের সেই ধুকপুকানি আওয়াজ শুন্তে পাচ্ছি।।এখন যেন এক অন্য রকম ভাললাগার ফিলিংস আসচ্ছে।।তার সাথে তার শরীরের সেই মন মাতানো ঘ্রাণ।। কিছুক্ষণ ওভাবে থাকার পর যখন তার থেকে সরে আসতে চাই।। তিনি তখন আমাকে আরো শক্ত করে তার সাথে চেপে ধরে বলতে লাগেন,,,
—-বাবুই পাখি আর নড়িস না।।নয়তো বৃষ্টির মাঝে বাহিরে বের করে দিবো।।আর বাহিরে এখন অনেক জন্তু জানোয়ারের সাথে ভূত-প্রেতের উপদ্রবে ভয় আছে।।পরে আমাকে দোষ দিসনা।।
তার কথায় আমার হতবাক।।এ অবস্থায় কেউ এমন হুমকি দেয়।।তাই উপায় না পেয়ে আর সরতে চাইলাম না।।তা দেখে ভাইয়া আমার মাথা তার বুকের সাথে চেপে তার এক পা আমার উপর তুলে দিলেন,, যে আমি তার কোলবালিশ।। আমারো ঘুম পাচ্ছিল তাই তার বুকে গুটিশুটি মেরে শুয়ে রইলাম।।।

ফোনের আওয়াজে ঘুমটা ভেঙে গেল।। চোখ পিটপিট করে খুলে দেখি আমি ব্ল্যাঙ্কেটের নিচে।।আরো ভাল করে তাকিয়ে দেখি আমি আমার রুমে।।সাথে সাথে উঠে বসলাম।।
—-আমি তো গাড়িতে ভাইয়ার বুকে ছিলাম।। তাহলে এখানে??
এসব ভাবচ্ছি।।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ১২ টা বাজে।।এতক্ষণ ঘুমিয়েছি।।কেউ ডাকি নি।।গতো রাতের কথা মনে হতেই মনের মাঝে খুশির মেলা বসে গেল।।
—–ইসসস!!রাতটা যদি না শেষ হতো।।
তখনি হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজ আসলো।। ফোনের সাথে সাথে টুং করে শব্দ হলো।।ফোন টা হাতে নি আমি অবাক চোখে তাকিয়ে আছি।।কাল রাতের কাটানো প্রতিটি মুহুর্তের ছবি সাইকো তার ফোন থেকে পাঠিয়েছে।।কি সুন্দর লাছে।।কিন্তু এগুলো তুলল কখন।।ছবি গুলোর সাথে একটি মেসেজ আসে,,
বাবুই পাখি আই হোপ ইউ লাইক দ্যা পিকচারস দিস ইজ দা স্মল গিফট ফরম মি, টু
একোম্পানি মি টুমোরো ❤❤
তার মেসেজ দেখে আমার মুখে আলাদা একটি লাল লাল অাভা ভেসে উঠলো আমার গাল দুটো।। ব্লাশিং করতে লাগলাম।।থ্যাংকস তো তাকে আমার দেওয়ার কথা।। এত সুন্দর একটি রাত উপহার দিয়েছেন তিনি।। আর উল্টো তিনি আমাকে থ্যাঙ্কস দিচ্ছেন।।

তাই আমি তাকে থ্যাঙ্কস জানালাম টেক্সট করে।।
আর পিক গুলো এফবিতে আপলোড দিলাম।।
সেদিনের পর তিনি আরো অবাক অবাক কান্ড করতেন।।প্রতিদিন আমার জন্য চকলেট আইসক্রিম এগুলো নিয়ে আসতেন।। সাথে থাকতো একগুচ্ছ গোলাপ।।নিজেকে তখন স্পেশাল মনে হতো।।তার মাঝে তিনি হুট করে আমাকে জড়িয়ে ধরেন,কখনো কখনো আমার গালে কঁপালে শব্দ করে চুমি খান।।
একদিন উনি নানুমার সাথে কথায় কথায় জানতে পারেন, আমার মাছের চোখ খুব ভাল লাগে খেতে।। তার পরের দিন তিনি বাসার কাজের লোকে সাথে করে নিয়ে অনেক বড় বড় মাছ নিয়ে আসলেন ৭/৮ টা।।যেহেতু উনি যেহেতু তিনি প্রথম প্রথম বাজারে যান তো অনেক দাম দিয়ে মাছ কিনে নিয়ে আসেন সেদিন।।আর সব গুলো মাছের মাথা রান্না করান নিজে দাড়িয়ে থেকে এবঙ আমাকে টেবিলে বসিয়ে প্রতিটি মাথা থেকে মাছের চোখ বেছে বেছে আমাকে তার সামনে বসিয়ে খাইয়ে ছিলেন।।নানু মা, আর আন্টিমাতো অবাক তার এমন কাজে।।আমিতো লজ্জায় শেষ।।এভাবেই দিন গুলো কাঁটছিল আমার।।তিনি এভাবেই কেয়ার করতে লাগলেন।।তার জন্য আমার মনে ধীরে ধীরে কিছু অনুভূতির জন্ম নিতে লাগলেন যার নাম দিতে পারতিস না।। এঁকেই কী ভালোবাসা বলে???তাহলে কি আমি না চাইতো তাকে ভালোবেসে ফেলেছি???এসব যখন ভাবি তখনি আমার কেমন লাল লাল হয়ে যায়, আর আমি লজ্জা মিশ্রিত স্মাইল দিতে থাকি?? কিন্তু কেন আমার কিছু জানা নেই।।???

দেখতে দেখতে এহসান ভাইয়ার এনগেজমেন্ট চলে আসে।। কাল ভাইয়ার এনগেজমেন্ট তাই তিনি আমাকে নিতে আসছেন,, কালকে তারা সবাই যাবেন ।।
তাদের কাজ থাকায় তারা যেতে পারেননি।।আন্টি মা আজ নানু মাকে চেক আপ করাতে নিয়ে যাবেন তাই তারাও যেতে পারছেন না।।কালকে যেহেতু শুক্রবার তাই সবাই যাবেন।।
কিন্তু নানু মা কেন জানি আমার যাওটা পছন্দ করলেন না।।বার কয়েক না করেও, আমার আর এহসান ভাইয়ার জোড়াজোড়িতে রাজি হয়ে গেলেন।।
সাইকোও আমাকে যেতে দিতে চাইছিল না।।তার অবশ্য কারণ ওই একটা নুহা আপির সেই দিনের সেই কথা ধরে বসে আছেন।।সত্যিই যদি তার ভাইয়ের জন্য আমাকে নিয়ে যায়।।
তা ভেবে অস্থির তিনি।।তখন আন্টি মা তাকে বুঝান ।। আর এহসান ভাইয়াও আসাস দেন, যে আমাকে যেভাবে নিয়ে যাচ্ছেন সেভাবে দিয়ে যাবেন।।তাই যেতে দিচ্ছেন।।আমি খুব খুশি ভাইয়ার সাথে যাচ্ছি বলে।।
আবার এটা ভেবেও কষ্ট হচ্ছে বাবা নামক প্রানীটির সাথে হয়তো দেখা হবে।।আর দেখা হলেই কি সে তো আর আমাকে চিনবেও না।।তাও তাকে একটি বার দেখতে চাই।।

হাহহহ।।।দীর্ঘ শ্বাস বেরিয়ে আসলো আমার।।
এহসান ভাইয়ার বাড়ির সামনে দাড়িয়ে আছি।।বলতে গেলে এটিতো আমার ও বাসা কিন্তু…..আমার বলার অধিকার আমার নেই।।বাড়িটি খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।।এ বাড়িতে আমি আজ প্রথম পা দিয়েছি।।শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি।।কারণ ভাই, চাচ্চু-চাচী আম্মু সবাই আমাদের বাসায় যেতেন।।
নানু মা কখনো তাদের এখানে আসতে দিতেন না।।চাচ্চু আর চাচী আম্মু অনেক ভাল আমাকে অনেক আদর করেন।।প্রতি বার আমার বার্থ ডে তে গাড়ি ভর্তি করে গিফ্ট পাঠান তারা।এহসান ভাইয়া অনেক কষ্টে ফলে আমি এ বাড়িতে এসেছি।।
সত্যিই খুব সুন্দর।। এহসান ভাইয়াদের জয়েন ফ্যামিলি হলেও আলাদা থাকেন মানে তারা সবাই বাংলাদেশের বাহিরে থাকেন।।যখন ঈদ বা কোনো অনুষ্ঠানে একত্রিত হন তারা।।যেমনি আজ হচ্ছে।। দু ভাই এক সাথে এবাসায় থাকেন।।শুনেছি আমার দাদু-দাদা ও আছেন তারা নাকি আমার বাবা নামক প্রানীটির সাথে বাহিরে থাকেন।।কিন্তু তারাও আমাকে মানতে নারায।।
বাসার ভিতর ঢুকতেই চাচী আম্মু আমাকে জড়িয়ে ধরলেন।।আর কান্না করতে লাগলেন।।আমি জড়িয়ে ধরলাম।।

—-কেমন আছো চাচি আম্মু??একটু হেসে বললাম।।
চাচি আম্মু আমার থুতনিতে তার ডান দিয়ে ধরে বলতে লাগলেন,,
—–আলহামদুলিল্লাহ আম্মু,,!! তুই কেমন আছিস?? কেমন শুকিয়ে গিয়েছিস?? ঠিক মতো খাস না তুই তাই না??
—-না না চাচি আম্মু খাইতো।।আর কই শুকিয়েছি?? দেখ সেই গুলুমুলু আছি।। আরো ২ কেজি ওজন বেড়েছে আমার।।
চাচি আম্মু হাসতে লাগেন আমার কথায়।।তারপর আমাদের গেষ্ট রুমে নিয়ে যান।।
আমি ফ্রেস হয়ে বসে আছি, যেহেতু এবাড়িতে কাউকে তেমন চিনি না,, তাই আর কি বসে বসে ফোন চাপছি।।তখনি কত গুলো মেয়ে দৌড়ে বাহিরে গেল।।কারা যেন এসেছে বিদেশ থেকে দেখার জন্য।।আমি রুমের বারান্ধা দিয়ে উঁকি দিলাম।।
একটি গাড়ি ভিতরে প্রবেশ করলো।।তা থেকে নেমে আসলো অতি ফর্সা আর অতি লম্বা একটি ছেলে, তার সাথে একটি মেয়ে সেও অনেক রূপবতী,, যার কমোড়ে একটি হাত ছেলের ধরে বাড়ির বাহিরে দাড়িয়ে আছে।।

তারপর আরেকটি গাড়ি প্রবেশ করলো,, তা থেকে নেমে এসে তাদের পিছনে দাঁড়াল খুব সুন্দর বৃদ্ধা, বৃদ্ধ, পড়নে তাদের মেচিং পোষাক।।বৃদ্ধা মহিলাটির পড়নে অতি সাধারণের মাঝে অসাধারণ একটি শাড়ি,,লোকটির গায়ে সেই শাড়ির কালাড়ের একটি সুট।।উনাদের দেখেই বুঝাচ্ছে যৌবন কালে নির্ঘাত তারা অনেক যুবক যুবতীর মরণের কারণ হয়েছেন।।এখনোতো স্মার্ট কম না।।
তারপর পর আরেকটি গাড়ি ঢুকলো,, সেখান থেকে নেমে আসলেন,,মধ্য বয়স্ক নারী-পুরুশ।।তারাও খুব সুন্দর।।কিন্তু মধ্যবয়সী লোকটিকে দেখে খুব চিনা চিনা লাগচ্ছে বাট মনে পরছে না কে সে?? বা কই দেখছি।।
তাকিয়ে দেখলাম চাচি আম্মু বাটি জাতিয় কিছু একটা বাহিরে নিয়ে বের হলেন।।যা থেকে আগুন বের হচাছে।।তারপর সেই ছেলে মেয়েদের সামনে ঘুড়িয়ে সেই আগুনে কিছু ছেড়ে দিলেন।। যা পট পট করে ফুটতে লাগলো।।তারপর তাদের জড়িয়ে ধরলেন।।তারাও ধরলো।।

তারপর পিছনের সেই বৃদ্ধ,বৃদ্ধাকে সালাম করলেন পা ধরে।। একে একে সবাই ভিতরে ঢুকে গেলেন।।তার কিছুক্ষন পর আরেকটি গাড়ি ভিতরে প্রবেশ করে।।সেখান থেকে আমার বয়সী একজন বের হয় দৌড়ে চাচি আম্মুর সামনে এসে হাপাতে হাপাতে বলতে লাগে,,
—-ছোট মা আমি কি দোষ করেছি??ভুলে গেলে আমায়।।
—-নারে তোরে কেমনে ভুলি।।তুইতো আমার সোনা মা।। আদুরী সুরে বলে যেই কাজ ওই ছেলে মেয়েটির সাথে আগুন দিয়ে করেছে,, সেই কাজটি তার সাথেও করলো।।
পরে বুঝলাম তিনি নজর উঠানোর জন্য এমন করলেন।।তারপর ঘরে চলে আসলাম,, আর মনে করতে লাগলাম ওই লোকটিকে কই দেখেছি।।
কিছুক্ষণ পর ঘরে আমার বয়সি একটি মেয়ে আসে।।
—-হেই!! হায়…আম সারা।।হাত বাড়িয়ে বলল।।
—–হ্যালো….!! আমি কায়নাত কুহু..!! আমি হাত বাড়িয়ে দিলাম তার দিকে।।
—-আমি এহসান ভাইয়ার খালাতো বোন।।ভাইয়া আমাকে তোমার কাছে আসতে বললেন।।তুমি এখানে নিশ্চয়ই কাউকে চিন না??
—–হুম।।
—–আচ্ছা চল, ভাইয়া তোমাকে নিচে যেতে বলেছে।।
—-কিন্তু…!!

—-আরে চলো না।। আমি যানি বোরিং লাগচ্ছে তোমার।।চল বলে টানতে টানতে নিচে নিয়ে আসলো।।
নিচে সেই বিদেশ থেকে আগমনকারীদের আপ্যায়ন চলছে।।এদিকে আমার ক্ষুদা পাইসে খুব।।আমি সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামচ্ছি।।সারা আমার হাত ধরে রাখছে।।নিচে নামতেই হঠাৎ করে সারার ডাক পরে।।
—-তুমি একটু দাড়াও আমি আসচ্ছি।।
আমি মাথা নাড়াই।।
এদিকে সবাই হলে বসা, তাদের হলটা অনেক বড় আর সুন্দর।।কিন্তু পরিচিত মুখ দেখতে পাচ্ছি না।।সারার আসতেও লেট হচ্ছে তাই খুঁজতে লাগলাম তাকে।।তখনি কারও সাথে ধাক্কা লাগে,,,
—-আর ইউ ব্লাইন্ড…!! চেচিয়ে বলল সামনের ব্যক্তিটি।।তাকিয়ে দেখি লাস্টে আসা সেই মেয়েটি।।
—–সরি আমি দেখিনি??
—–চোখ কঁপালে নিয়ে হাটলে দেখবে কিভাবে?? বাই দ্যা রাস্তা,,হু আর ইউ??তোমাকে ঠিক চিন্তে পারলাম না???
—-আমি কুহু…!! এহসান ভাইয়ার বোন…!!
—-ওহো…!!কিন্তু তোমাকে আমার খুব চেনা চেনা লাগচ্ছে??আমাদের কি আগে কখনো কথা হয়েছে??
—–নাহ।। আমি তো আজ ফার্স্ট আসলাম।।
—–ওহো!!

তখনি সেই বৃদ্ধা আসে আর বলতে লাগেন,,,
—–তানহা… রুমে যাও বাচ্চা, ফ্রেশ হয়ে নাও।।
তানহা মাথা নাড়িয়ে চলে গেল।।
তখনি মহিলাটি আমার দিকে চোখ পাকিয়ে বলতে লাগে,,,
—-তুই এখানে কি করিস…!!
আমি কিছু বুঝলাম না আশপাশ ভাল করে দেখলাম তখনি বৃদ্ধা মহিলাটি বলে উঠে,,
—-এদিক ওদিক কি উঁকিঝুঁকি করছিস…হুম..!!তোকে বলছি আমি??তুই আমার বাসায় কি করছিস….!!!
এক পর্যায় চেঁচিয়ে বলল কথা গুলো।।আমি সাথে সাথে কেঁপে উঠলাম।।আর হলে উপস্তিত সবাই চুপ করে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে।।
আর আমি হাত মুচড়াচ্ছি।।বুঝতে পারচ্ছি না উনি এমন কেন করছেন।।তখনি চাচী আম্মু দৌড়ে আমার কাছে আসে আর বলতে লাগে,,
—–কি হয়েছে মা??
তখনও বৃদ্ধা মহিলাটি সেই আগের মতো চিল্লিয়ে বলল,
—-ওই এখানে কেন বউ মা??
—–মা আমি আনিয়েছি ওকে,, এহসানের বিয়ে আর সবাই উপস্তিত যদি কুহু না থাকে কেমন দেখায় না??
—–কেন দেখাবে হুম?? কি পরিচয়ে আনিয়েছো ওকে??মানুষ জিগাসা করলে কি উওর দিবে…!!আর তুই!! (আমার দিক আঙ্গুল তুলে) তোর এই নাপাক কদমই কিভাবে ফাল্লি আমার বাসয়…!!তোর মা এসে আমাদের জিবনটা তছনছ করে চলে গেছে,,এখন তুই চলে এসেছিস…!!

—–মা আপনি কি বলছেন এ সব…!! ও ছোট মানুষ এখানে আসতেও চাইনি আর আপনাদের ও চেনেও না..!! শুধু শুধু কথা শুনাচ্ছেন কেন??বৃদ্ধাকে কিছু বলতে না দিয়ে চাচি আম্মু বলতে লাগেন এসব।।
বৃদ্ধা চুপ হয়ে গেলেন।।আর আমি কিছু বুঝতে পারছি ও না।।কি হচ্ছে না হচ্ছে।।আর এই মহিলাই আমাকে এসব কেন বলছে।।আমার মাকে নিয়েও কথা বলছেন।।কষ্ট দুঃখে চোখ দিয়ে টপ টপ পানি পড়তে লাগেন।।তখনি এহসান ভাইয়া এসে বলতে লাগেন,,
—-আর একটা না দাদু,, অনেক বলেছো।।ও আমার বোন আমি ওকে এনেছি…!!ওকে যদি আর একটা কথা বল তাহলে আমি এখন এই মুহুর্তে বাসা থেকে বের হয়ে যাবো।।
বৃদ্ধাও যেন দমবার নয়।।
—–দেখলি তোর জন্য আজ আমার নাতি যে চোখ তুলে কথা বলতো না সে আমাকে হুমকি দিচ্ছে।।তোর কখনো ভাল হবে না।।তখনি সেই ফর্শা ছেলেটি এসে বলতে লাগে,,
—-দাদু কি হচ্ছে চিল্লাচ্ছো কেন??
—-চিল্লাবো না?? যে কাল সাপের জন্য আমাদের সংসারটা তছনছ হয়েছিল….তার মেয়ে এসে হাজির।।এঁকে যেতে বল আমার সামনে থেকে।।এখনি বের হতে বল এ বাড়ি থেকে।।
—-নাহ দাদু কুহু কোথাও যাবে না।।গেলে আমিও চলে যাবো ওের সাথে।।এহসান ভাইয়া আমাকে জড়িয়ে ধরে বললাম।।তখনে আমার কান্নার বেগ বাড়তে লাগলো।।
দাদু কিড়মিড় করে বলতে লাগেন,,

—–তোকে আমি দেখে নিব।।বলে তার রুমে চলে গেলেন।।আর সেই ছেলেটি বলতে লাগে,,,
—–তুই তো সব জানিস তাহলে ওকে এখানে কেন আনলি।।কাজটি ভাল করিস নি।।
—–আয়মান ভাইয়া,, তুমিও এমন বলছো?? ওতো তোমার ও….!!
বাকি কথা বলার আগেই আয়মান এহসানকে থামিয়ে দেয়।।আর সে বলে উঠে,,
—-ও মার কেউ না।।বুঝতে পেরিস??
বলে গট গট করে চলে গেল।।তখনি আরেকটি মেয়ে আসে,, যাকে আয়মানের সাথে দেখেছিল তখন।।মেয়েটি এগিয়ে এসে বলতে লাগে,,
—–ভাইয়া ওকে আমি রুমে দিয়ে আসি,,তুই যদি কিছু মনে না করিস তো।।
—-কি মনে করবো,, ওতো তোর ও বোন।।
মেয়েটি আমাকে আমার রুমে নিয়ে আসে আর বলতে লাগে,,
—-কুহু কেঁদ না।।
—-আপনি আমার নাম জানেন?
—-হুম।। জানি।।আমি তোমার ফুপাতো বোন আমার নাম আমায়রা।।
—-আমার ফুপাতো বোন ও আছে??আমি তো জানতাম কেউ নেই আমার।।
—-কে বলছে নেই??আমরা সবাই আছি তো।।আচ্ছা আর কথা না।।চুপচাপ বসো আমি।। তোমার জন্য খাবার নিয়ে আসচ্ছি।।ওকে।।
আমি মাথা নাড়ালাম।।এ বাসায় এ প্রথম তিনি ছাড়া আর কেউ ভালভাবে কথা বলেন নি।।
আমার অনেক কান্না পাচ্ছে।।

দাদু কেন এতো কথা বললেন আমায়,, আমি কি এমন করেছি।। বা আমার মা কি করেছিলেন।।যে তিনি এতো রাগ আমাদের উপর।।আর আমিতো জানতাম আমার মা মারা যাওয়ার পর বাবা আমাকে ছেড়ে চলে যান।।আমি তো জানতামি না আমার একটি পরিবার ও আছে।।এহসান ভাইয়া, চাচ্চু কেউ কিছু বলেন ও নি।।আর তার কেন আমাকে এত ঘৃণা করেন।।
খুব খারাপ লাগছে।।কারো সাথে কথা বললেও হয়তো ভাল লাগতো।।ফোনটা হাতে নিলাম আর কল করলাম ইউসুফ ভাইয়াকে।।কেন জানি মনে হলো তার সাথে এখন কথা বললেই হয়তো আমার দুঃখ কষ্ট গুলো দূর হবে।।
ফোনে দু বার রিং বাজতেই ফোন তুলল ইউসুফ।।
—-বাবুইপাখি আম শকড।।তুমি আমাকে কল করলে?? মিস করছিলে বুঝি।।
আমি আনমনেই বললাম,,
—-হুম।।
—-বাবুইপাখি তোর কি মন খারাপ??
—-না।।
—-তাহলে এমন কেন লাগছে তোর কন্ঠ।।
—-ঠান্ডা লেগেছে ভাইয়া।।
—-তুই কেঁদেছিস তাই না??
আমি চুপ।।
—-আমাকে বল বাবুইপাখি কি হয়েছে?

Psycho is back part 13+14

আমি এবার কেঁদে দিলাম।।আর পারছি না।।তিনি ওপাশ থেকে অনেক বুঝাচ্ছেন।।
—–বাবুই তুই যদি না বলিস কি হয়েছে আমি কিন্তু এখনি নিতে আসবো তকে।।
আমি অনেক কষ্টে নিজেকে শান্ত করলাম।।
—-নাহ ভাইয়া কিছু হয় নি,, নানু মাকে ছাড়া কখনো থাকিনি তো তাই কান্না পাচ্ছে খুব।।
—-দূর পাগলী কাঁদিস না কালতো আমরা আসচ্ছি।।আচ্ছা শোন বাবুইপাখি তোর জন্য একটি সারপ্রাইজ আছে।।
—-কি ভাইয়া??
—-বললে তো শেষ বাবুন।।খেয়েছিস কিছু??
—-উহুম।
—-কেন??
—-সবার সাথে খাবো।।
—-ওকে।।সবাই তোর সাথে ভাল ব্যবহার করছে তো বাবুন।।
আমি চমকে গেলাম।।ভাইয়া কিছু বুঝে গেল নাতো।।আমি আমতা আমতা করে বললাম,,,
—–হে ভাইয়া।।
—–তাহলে সত্যি করে বল কাঁদছিস কেন??
—–মার কথা খুব মনে পড়ছে তাই।।
—–আচ্ছা শোন তুই কই এখন??
—–বারান্ধায়।।
—–আমিও।। দেখ বাহিরে কত সুন্দর চাঁদ।।
—–হুম।।
—–ঠিক সেই দিনের মতো তাই না।।

আমি সেদিনের কথা মনে করে লাল নীল হতে লাগলাম লজ্জায়।।ভাইয়া ওপাশ থেকে হাসতে লাগলেন।।
—–ইসস আমার বাবুই কি লজ্জাটা না পাচ্ছে।।সামনে থাকলে তোর সেই লাল লাল গাল গুলোতে আমার ঠোঁট দিয়ে ছুঁয়ে দিতাম।।
আমি চুপ লজ্জায় আমি শেষ।।আমার পরান পাখি যায় যায়।।
ভাইয়া বলতে লাগে,,
—-হইছে আর লজ্জা পেতে হবে না।।যা খেয়ে নে রাতে আমি কল দিব।।আজ সারারাত কথা বলবো।।ঠিকাছে??
—-আচ্ছা বলে কল কেঁটে দিলাম।।তখনি আমায়রা এসে ঢুকে খাবারের প্লেট নিয়ে।। আর বলতে লাগে,,

Psycho is back part 17+18