Psycho is back part 3+4 || সুরাইয়া সাত্তার ঊর্মি

Psycho is back part 3+4
apis indica

—-ভাইয়া গাড়ি আস্তে চালান!কি করছেন দেখেন সামনে!!ভয়ে লাগচ্ছে আমার খুব প্লিজ ভাইয়া।।তখনি সামনে থেকে একটি ট্রাক খুব স্প্রিডে এগিয়ে আসতে লাগলো আমাদের গাড়ির দিকে।।কিন্তু সাইকোর যেন কোনো হেলদুল নেই।।তিনি সোজা তাকিয়েই সেই ট্রাকের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে।।আর আমি চিৎকার করে যাচ্ছি,,,
—–ভাইয়া প্লিজ গাড়ি থামান।।ট্রাকটি আমাদের গাড়ি ছুই ছুই করছে সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে ফেললাম দুহাত দিয়ে।।আজ বুঝি আমার শেষ দিন।।কান্না দুগুণ বেরে গেল আমার চোখ বন্ধ করেই কেঁদে যাচ্ছি।।তখনি ভাইয়া গাড়িটি আগ মুহুর্তে অন্য সাইডে নিলেন।।আর বাঁকা হেসে আমার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলেন,,,

—-এই টুকুতেই এই অবস্থা।।
উনার কথা শুনে উনার দিক তাকিয়ে দেখি উনি বাঁকা ঠোঁটে হাসচ্ছে।।কিন্তু চোখ মুখে শক্ত করে আছে।। পরে সামনে তাকিয়ে দেখি ট্রাকটি সাইড কেটে চলে এসেছে।।তখনি চিল্লিয়ে বলতে লাগি তাকে,,
—-আর ইউ ম্যাড! কয়টা তার ছিড়া মাথার আপনার? এমন কেন করছেন! আর একটুর জন্য হলে তো…! আপনি পুরাই সাইকো…! আপনার সাথে আর এক মুহুর্ত থাকতে আমি পারবো না।।গাড়ি থামান আমি বাসায় যাবো।।কি হলো কথা শুনচ্ছেন না কেন।।
উনি যেন আমার কথা কানেই তুললেন না।। না পেরে চিল্লিয়ে বসে উঠলাম,,
—-আপনি গাড়ি থামাবেন নাকি আমি গাড়ি থেকে লাফ দেব??
সাথে ব্রেক কষলেন ভাইয়া।।
আমি কিছুটা সামনের দিক হেলে পড়ি।।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

ভাইয়ার দিক তাকিয়ে দেখি উনি গাড়ির স্টিয়ারিং উপর মাথা নত করে আছে।।সেই সুযোগে গাড়ি থেকে নেমে যাই আমি আর দৌড় লাগাই।। কিন্তু বেশী দূর জাওয়ার আগেই আমার হাত টান পরে,,।।পিছনে ফিরতেই দেখি সাইকো।।আমি কিছু বলার আগেই উনি আমাকে টেনে গাড়ির ড্যাশবোর্ড এর উপর ফেললেন।। আমি উঠতে নিলাম তখনি আমাকে চেপে ধরলেন ড্যাশবোর্ডের উপরেই।।আমি কিছু বলতে নিবো তার আগেই তিনি তার রিভলবার বের করেই আমার কন্ঠনালী উপর চেপে ধরলেন।।আমি তো অবাক।। তার সাথে ভয়ে কাপচ্ছি।।উনার দিকে তাকাচ্ছি একবার আর উনার বন্দুকের দিক।।উনি আমার দিকে লাল লাল চোখে তাকিয়ে।।এই বুঝি রক্ত বের হবে তার চোখ থেকে।।এদিকে আমি ব্যাথা পাচ্ছি।।
—-ভাইয়া কী করছেন ছাড়েন ব্যাথা পাচ্ছি! থেমে থেমে কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বলে উঠলাম আমি।।
তিনি আরো জোরে আমার কণ্ঠনালীতে চেপে ধরলেন বন্দুক দিয়ে।। আমি আর কিছু বলতেই পারছিনা।। সারা শরীর থর থর করে কাঁপছে।। বুকের ভিতর ধুক ধুক ধুক ধুক করে শব্দ করছে।।কেন জানি মনে হচ্ছে আজ আমার শেষ দিন।। তিনি আর একটু জোরে চেপে ধরায় আমি “আহ” করে উঠলাম।। সাথে সাথে চোখ দুটি বন্ধ করে ফেললাম।। বন্ধ চোখদুটি থেকে জল গড়িয়ে পড়তে লাগে।।
তখনই তার কন্ঠ শুনতে পাই,,

—-ছেলেটিকে ছিল?? গম্ভীর কণ্ঠে বললেন তিনি!
আমি কি উত্তর দিব বুঝতে পারছিলাম না।।
—- কিছু জিজ্ঞাসা করছি? দাঁতে দাঁত চেপে বললেন।
—-কোন ছেলে? কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলাম তাকে !
—-বাহ ভুলে গেলি কিছুক্ষন আগে ওই রেস্টুরেন্টের কথা?? দাঁতে দাঁত চেপে বললেন আবার।।
আমার তো এত কিছুর মাঝে তখনের কথা মনেই ছিল না।।কি থেকে কি হয়ে গেল?
তিনি আবার ধমক দিলেন,আমি সাথে সাথে বললাম
—-এহসান ভাইয়া!
—-কি হয় তোর! ওর সাথে এমন লেপ্টে ছিলি কেন?
—-ভাই হয় আমার।।কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললাম।।
তিনি বন্দুকটা আমার কন্ঠনালী থেকে সরিয়ে আমার কপালে মধ্যভাগ বরাবর ধরলেন আর বলতে লাগলেন,,
—-আর কখন যাতে না দেখি কারো সাথে এভাবে লেপ্টে আছিস! হক তোর ভাই!
বন্দুক দেখিয়ে,,
—-আদারোয়াইজ ই উইল শুট ইউ!

আচ্ছা! তার কি? আমি যার সাথে ইচ্ছা তার সাথে লেপ্টে থাকি..হুহহহহ!!
এটুকুর জন্য আমাকে এই সাইকো টা এমন হেনস্ত করল।। আমি এবার কিছু বলতে নিব তার আগেই তিনি আমার কপাল থেকে বন্দুক সরিয়ে মুখের ভিতর ঢুকিয়ে দিল।। আমি চোখ বড় বড় করে তার দিকে তাকিয়ে আছি।। তিনি আমার দিকে তাকিয়ে অন্য হাত দিয়ে আমার কপালে পড়ে থাকা ছোট ছোট চুল গুলো সরিয়ে দিতে লাগলো।। আর বলতে লাগলো,,
—নো মোর এ ওয়াডস!!
তারপর ছেড়ে দিলেন আমাকে।।আমি এখনো তাকিয়ে আছি তার দিকে।। তিনি আমার থেকে তিন কদম এগিয়ে যেতেই আমি চেঁচিয়ে বলে উঠলাম,,,
—-আপনি একটা সাইকো বুঝলেন!
সাথে সাথে উনি পিছনে ফিরে, তার বন্দুক আমার দিকে তাক করে।। পায়ের কিছুটা কাছে গুলি চালিয়ে দেন।। আমি সাথে সাথে লাফ দিয়ে উঠে সরে যাই সেখান থেকে।। তিনি তার কিলার মার্কার লোক নিয়ে বলতে লাগেন,,,
—-আরো কিছু বলার আছে??
আমি আর কি বলব? আমার কিছু বলার সাহস হয়নি।।
তিনি আমাকে ইশারা করলেন গাড়িতে বসতে, আমি আর কথা বাড়ালাম না চুপচাপ গাড়িতে বসে পরলাম।। আর সাইকোটা আমার পাশে বসে গাড়ী ড্রাইভ করতে লাগলো।। গাড়িতে দুইজনে পিনপতন নীরবতা পালন করলাম।। এমনিতেও আমার আর কিছু বলার ভাষা নেই।। দেখা যাবে আবার কিছু বলি আবার গুলি করে দেয়? তাই চুপ রইলাম।।

সেদিনের মতো বাসায় এসে নিজের ঘরে চুপটি করে বসে রইলাম।।নানু মা, আন্টি মা অনেক কিছু জিজ্ঞাসা করলেন কিছু বললাম না।।একসময় তারা চলে যান আর আমিও ঘুমিয়ে পড়ি।। আর আজ ঘুম থেকে উঠে ছাদে গিয়ে ছিলাম কাল রাতের কথা ভুলতে।।প্রাকৃতিক হাওয়া লাগিয়ে মনের মাঝের ভয়, মন খারাপ দূর করতে? বাট ওই খানেও তারা শুরু করল সাইকো টা আইসা।।
হুহহহহ!!!
থাকমু না আর এই বাসায় যামু গা নিজের বাসায়।।এইখানে থাকলে না জানি আর কি সহ্য করতে হয়! সাইকোর যে রূপ আমি দেখেছি।।আল্লাহ আর দেখবার চাই না।।?
কি করব? না করব? ভাবছি তখনই মেসেঞ্জারে কল আসে! কল টি কে দিয়েছে দেখার জন্য ফোনটি হাতে নিতেই মনটা ভালো হয়ে গেল, আমার বেস্টি কল করেছে! ফোনটা রিসিভ করুন।
—দোস্ত কেমন আছিস?
—-ভালো নেই রে! খুব খারাপ! তোর কথা বল?
—-আমি ভালো আছি। কেন তোর আবার কি হইছে??
—-হইছে কিছু তুই বল?
—-আচ্ছা শুন যে জন্য তোকে কল করেছি! কাল আমাদের রেজাল্ট সে খেয়াল কি আছে আপনার??
—-কিককক!!

আমি তো সত্যই ভুলে গেছি।।কালকে আমার রেজাল্ট।।
( মনে মনে বলতে লাগলাম
—ভাল হয়েছে!আমি একটা সুযোগ পেয়ে গেলাম)
—-ওমা! কি বলিস আমার তো একদমই মনে ছিল না ?।।
—-তা তো থাকবেই না! আর কাল স্যার সবাইকে উপস্থিত থাকতে বলে দিয়েছে! তুই তো ঢাকায় আসবি নাকি??
—-স্যার বলেছে আর আমি আসবো না তা কি হয়?? অবশ্যই আসবো! এবার তো আসতেই হবে!!
—-কি হয়েছে তোর এত আনন্দ তোকে তো কখনো হতে দেখিনি কলেজের কথা বললে?
—-কাল দেখা হওয়ার পর সব বলবো! এখন রাখছি। জরুরী কাজ আছে বাই জানু অনেক অনেক ধন্যবাদ পাখি।।তুই জানিস না তুই আমার কত বড় উপকার করেছিস।।

কল কাটার পর নানুমার ঘরে চলে আসলাম।।
নানুমা নামাজ পড়েছিল সালাম ফিরিয়ে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,
—-কিরে বুড়ি! কিছু বলবি?
;আমি আমার হাত মোচরাতে লাগলাম।।
তখনই নানুমা আবার বলে উঠলো,,,
—-কি হলো বুড়ি এত মুচরামুচরি করছিস কেন?
—-ইয়ে মানে,, নানু মা কাল আমার রেজাল্ট !!
—-সে তো ভালো কথা বুড়ি!
—-হে তা ঠিক।।কাল আমাকে কলেজে যেতে হবে!
—-সেকি কাল! এত তাড়াতড়ি কিভাবে?
—-নানুমা আমাদের তো যেতেই হতো! তাইনা? তাই কাল সকালেই রওনা করি তাহলে কালকে কলেজেও যেতে পারবো আর ভার্সিটি ভর্তির জন্য তো অনেক কাজ করতে হবে! প্লিজ নানু মা না করো না।। একদম সব বলে দিলাম।।
নানু মা কিছু একটা চিন্তা করতে লাগলেন আর বলতে লাগলেন,,,
—- ঠিক আছে যেহেতু ফিরতেই হবে তাহলে কালকে চলে যাব।আমি বৌমার সাথে কথা বলি নিচ্ছি তুই যা সব গুছিয়ে নে!
—-হুম।।

মনে মনে অনেক খুশি হয়েছি।।এই সাইকোর হাত থেকে বাঁচার জন্য যে এটি বেষ্ট!!নানু মা আন্টি মার সাথে কথা বলতে চলে গেলেন।।
আর আমি নাচতে নাচতে রুমে চলে এলাম!
আর গাইতে লাগলাম,,
“আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে ”
কত মজা এই সাইকোর হাত থেকে বেঁচে যাবো কাল।।এ কটা দিনে যে ভয়ানক রূপ আমি দেখেছি,, আল্লাহ গো আর দেখতে চাই না।। তখনি আজ সকালের কথা মনে পরে গেল,,
—-সকালে ঘুম থেকে উঠে বাগানের দিক হাঁটতে যাচ্ছিলাম।।তখনি বাসার বাউন্ডারি ওপার থেকে কিছু বাচ্চার খিলখিল করে হাসার শব্দ পেলাম।।গেটের কাছে এসে সেদিকে উকি দিয়ে দেখি ছোট একটা পার্ক! কিছু বাচ্চা খেলছে সেখানে।। অনেকেই এক্সারসাইজ করছে।।বুড়ো জোয়ান সবাই হাঁটছে কেউ কেউ দৌড়চ্ছে।।বাচ্চারা যেখানে খেলছে সেখানেই অনেক দোলনাও আছে।।ছোট থেকেই দোলনার উপর বরাবারই অ্যাট্রাকশন বেশী।।আমি আর কোনো দিক না তাকিয়ে ছুট ্লাগালাম সেদিকে।।যেই দোলনায় বসে দোল খেতে লাগলাম।।তখনি একটি ৫/৬ বছরে বাচ্চা এসে আমার সামনে হাজির!! তাও আবার দুই হাত কোমরে দিয়ে আমার দিকে ভয়ানক দৃষ্টিতে মেলা তাকিয়ে আছে তাই আমি তার গাল একটু টেনে বললাম,,

—-কি হয়েছে রে পিচ্চি! এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন যেন আমি তোর খেলনা চুরি করে পালিয়েছি?
পিচ্চি সেই একি রকম ভাবে থেকেই বলতে লাগে,,,
—-তার থেকেও বেশী করেছো তুমি?
আমি বিস্ময় হয়ে গেলাম এর কথা শুনে,,চোখ ছোট ছোট পিচ্চির নাক টান দিয়ে বললাম,,
—-কি বলিস রে পিচ্চি!!
পিচ্চি এবার আঙ্গুল তুলে আমাকে শাশিয়ে বলতে লাগে,,
—-এটা আমার দোলনা তুমি কেন বসেছো উঠো??
আমিও পিচ্চিকে দুষ্টুমি করে বলতে লাগলাম,,
—-কই তোর নাম কি লিখা আছে রে পিচ্চি।।
তখনি পিচ্চি চিল্লিয়ে কাউকে ডাকতে লাগে,,
—-চাচ্চু!!!!!!!
তখনি কেউ আমার পিছনে এসে দারায়।।
পিচ্চিটি তখন বলতে লাগে,,
—-চাচ্চু আমার দোলনা!!ছাড়তে বলো!! বলে হাউ মাউ করে কেঁদে দিল।।
আমি ভয় পেলাম কিছুটা তখনি পিছন থেকে একটি ছেলে এসে মেয়েটির কান্না থামাতে লাগে,,
মেয়েটির কান্না দেখে মনে হচ্ছে কেউ বা আমি তাকে মেরেছি।।আমি দাড়িয়ে গেলাম ভয়ে।।পিচ্চিটি সাথে সাথে কান্না থামিয়ে দোলনায় চড়ে বসে।।
আমি তো অবাক কি সাংঘাতিক এই পিচ্চি।।আমি পিচ্চির দিক তাকিয়ে আছি ড্যাব ড্যাব করে।।পিচ্চিটি আমাকে সাথে সাথে চোখ টিপ মারে।।
আল্লাহ গো আল্লাহ!!!

আমি পিচ্চির কর্মকাণ্ড দেখে হতবাক হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম।। তখনিনওই ছেলেটি আমার দিকে ফিরে বলতে লাগে,,
—-কিছু মনে করবেন না! স্নেহা একটু দুষ্ট।। যা চাই তা হাসিল করে নেয়।।যেভাবেই হোক!! একদম আমার মতো।।হা হা!! হাসতে লাগলো!
আমি তো তাদের কান্ড দেখে বেক্কেল বনে গেলাম।।ভ্যাবলার মতো তাকিয়ে আছে তাদের দুজনের দিকে।। তখনি ছেলেটি আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়,,
—-হাই! হাই আই এম রিয়ান!!হাত বাড়িয়ে দিয়ে।।
উনার কথায় আমার হুশ ফিরে।।এত খন তাদের কান্ডে বেহুশ ছিলাম।।
আমিও তার সাথে হ্যান্ডশেক করে বলে উঠলাম,,
—-হ্যালো আমি কায়নাত কুহু।।
—-ওহো নাইস নেম।।বাট ইফ ইউ ডোন্ট মাইন্ড, ক্যান আই কল কায়নাত?
—–হে কেন নয়!!
রিয়ানের সাথে যখন কথা বলছি তখনি রিয়ানের পিছন তাকিয়ে দেখি ইউসুফ ভাইয়া,,..
দু হাত বুকের মাঝে গুজে লাল লাল চোখ দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।।এখন আমার হাত পা কাঁপছে রীতিমত।। কারণ যত দিন এই বেটার এমন লুক আমি দেখেছি ততদিন আমার কপালে বাঁশ থাকে।।
..
এতখন এখানে কি হচ্ছিল ইউসুফ উপর থেকে দাড়িয়ে সব দেখছিল,,কফি খেতে খেতে।। যখনি কুহুকে সে দেখে অন্য কারও সাথে কথা বলছে।।তখনি নিচে নেমে পার্কে চলে আসে।।আর তার উপর যখন দেখলো কুহু হাত মিলাচ্ছে সামনের ছেলেটির সাথে তখন যেন তার মাথায় রক্ত চড়ে বসে।। ইউসুফ ধীরে ধীরে রিয়ানকে ক্রস করে কুহুর পাশে দাঁড়ায়।। তখনি রিয়ান বলে উঠে,,
—-হাই ইউসুফ ভাইয়া কেমন আছেন?
—-হুম ভাল! তুমি? (গম্ভীর ভাবে বলল)
—-হ্যাঁ আলহামদুলিল্লাহ ভালো।। আন্টি আঙ্কেল কেমন আছেন? শুনলাম আপনারা নাকি চলে এসেছেন একেবারে।।
—-হ্যাঁ ভালো আছে! তোমার আব্বু আম্মু কেমন আছে? বাসায় এসো সময় করে?
—-জি আলহামদুলিল্লাহ সবাই ভালো আছে! আসবো একদিন সময় করে!।
—-আচ্ছা তাহলে থাকো আমরা যাই? কুহুর হাত ধরে বলতে লাগে।।
তখনি রিয়ান বলতে লাগে,,
—-কায়নাতকে চিনেন আপনি?
—–হে ও আমার ফুফাতো বোন।।
—-ওহো আচ্ছা।।

ইউসুফ ভাইয়া আর কিছু না বলে টানতে টানতে আমাকে নিয়ে যেতে লাগলেন।।আর তা দেখে রিয়ান হা হয়ে দাঁড়িয়ে রইল।।
আর আমি বলতে লাগলাম,,,
—-কি হয়েছে ভাইয়া?এভাবে টানচ্ছেন কেন ব্যাথা পাচ্ছি তো।।
উনি আমার কথা শুনে শুধু তার ভয়ানক দৃষ্টি আমার দিক নিক্ষেপ করলেন।। সাথে সাথে আমি চুপসে গেলাম।। আর এদিকে আমার হাতে বারটা ;বাজিয়ে দিচ্ছেন।। কিছু বলতেও পারছিনা।। বুঝতেই পারছিনা কি এমন করলাম! যার জন্য উনি এমন করে যাচ্ছেন।।
উনি আমাকে টেনে হিচরে বাগানের সাইডে নিয়ে আসলেন।।যেই সাইডে উনি সেদিন ফায়ারিং করছিলেন।।ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে গেছে।।না জানি সত্যই আজ আমাকে গুলি করে দেন??
উনি আমার হাত ছেড়ে সেখানে বিছানা সোফা সেট বসলেন।।আর আমি এদিকে আমার হাতে হাত বুলাচ্ছি।।হাতটা লাল হয়ে আঙ্গুলের ছাপ বসে গেছে।।তখনি তিনি হুংকার দিয়ে রূপালীকে ডাকতে লাগলেন,,
তার এমন হুংকার আমিও কেঁপে উঠলাম।।
রুপালি দৌড়ে আসতেই তিনি বলতে লাগলেন,,
—-আমার রুম থেকে আমার রিভলবারটা নিয়ে আয়।।আর হ্যান্ডওয়াশ নিয়ে আসবি সাথে এক বালতি পানি।।রুপালি মাথা নাড়ি আবার দৌড়ে উপরে চলে গেল।

এদিকে রিভলভারের কথা শুনে আমার হাত পা কাঁপতে লাগলো ভয়ে গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল।।
তিনি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে।।এই বুঝি গিলে ফেলবে আমাকে।। আমি ভয়ে কিছু জিগাসাও করতে পাড়ছি না।।তখনি রুপালি সবকিছু নিয়ে হাজির।।
তিনি রিভলবার তার হাতে নিয়ে রুপালি কে বলে,, বালতি হ্যান্ডওয়াশ আমার দিকে দিতে।।
আমি তো কিছু বুঝতেই পারছি না।।
রুপালিকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলেন,,
—-এগুলো ওর সামনে রাখ।।আর ভিতরে যা।।আমার ফোনটা নিয়ে আয়।।
রূপালী চলে যেতেই আমাকে বললেন,,
—-শুরু করো।।খুব শান্ত ভাবে রিভলভার দেখতে দেখতে বললেন।।
আমি ভয়ে ভয়ে বলতে লাগলাম,,
—-ক,,ক,,কি শুরু করবো??
তিনি এবার বলতে লাগেন,,
—-আমি যতক্ষণ না বলল তখক্ষন এই হ্যান্ড ওয়াশ দিয়ে হাত ধৌত করতে থাকবি।। আর একটা কথা যদি তুই জিজ্ঞেস করিস তাহলে রিভলভার দেখিয়ে,,সুট করে দেব।।
আমি কি করবো বুঝতে পারছি না।।
আমাকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে তিনি আমার বাম সাইডে গুলি করলেন।।আমি সাথে সাথে মাটিতে বসে হাত ধুতে লাগলাম। আর কাঁদতে লাগলাম।।আমি পাক্কা ৩ ঘন্টা হাত ধুয়ে ছিলাম।।তারপরও তিনি আমাকে থামতে বলেন নি।।না আন্টি আর নানু মা বলে তাকে থামাতে পেরেছে।।লাস্ট মামা এসে থামিয়ে ছিলেন।।
তখন তিনি আমার কাছে এসে ফিসফিসে বললেন,,
—-আর কখনো যাতে কারো সাথে হ্যান্ডশেক করতে না দেখি।। বলেই চলে গেলেন।।
আর আমি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছি তার যাওয়ার দিক।।

Psycho is back part 1+2

আল্লাহ কি ভয়ঙ্কর অনুভূতি।। এটাতো গেল আজকের কথা।।সেদিন তো আমাকে কত বাঁকা না দিলেন,,।
সেদিন,,
টিকটক করছিলাম,,
নতুন ভাইরাল হওয়া সংয়ে।।
বড় লোকের বেটি লো লম্বা লম্বা চুল।।
এই টাতেই যেই না জ্যাকলিনের মতো কোমর দুলানো স্টেপ দিতে নিসি।।ওমনি আমার গালে “ঠাসসস” করে চর পরল।।চরটা খুব জোড়েই দিয়েছে, চোখে জল এসে গেছে।।
সামনে তাকিয়ে জোরে চিল্লিয়ে বললাম “ইউসুফ ভাইয়া”তখনি আবার পড়ল একটা থাপর।।আমি এবার দু গালে হাত দিয়ে তার দিক তাকিয়ে।।
ফর্সা মুখখানা টমেটোর মতো লাল হয়ে আছে।।চোখ গুলোও লাল।। এবার কয়েকটা শুখনো ঢোক গিললাম।।তখনি তিনি চেচিয়ে বলতে লাগে,,,

—আমার বাসায় এসব ফষ্টিনষ্টি চলবে না।।তোর তো অনেক সাহস তুই কেমনে এ কাজ করলি।।আর এসব শাড়ি টারি কেন পড়েছিস সব খুল যা সব খুল।। নয়তো এই রাতে তোকে কবর স্থানে ফেলে রেখে আসবো বদ কোথাকার।।
বলে চলে গেলেন।।এদিকে আমার হাওয়া টাট।।কি দোষটা করেছিলাম শুনি।।একটু টিকটকিতো করছিলাম শালা সাইকো আমার গালের বারটা বাজিয়ে চলে গেল।।হুহ!কত কষ্ট করে এত সুন্দর করে সেজেছি আর উনি সব নষ্ট করে চলে গেল।।?ওদিকে আমার সব বান্ধবীরা এইটা করা অল রেডি শেষ।।এখন কি করবো।।কেন যে নানু আমারে এখানে পাঠালো বুঝলাম না।।
ভাবতে ভাবতে আয়নার সামনে দাড়ালো কুহু।।তারপর মেকাপ তুলতে তুলতে ইউসুফের চৌদ গুষ্টিকে বকে উধার করতে লাগলাম।।
এসবের পরেও কি এই সাইকোর এখানে থাকা যায়!!!” থাকবো না হুহু।।কাল সকালেই চলে যাবো।।এসব ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে গেছি মনে নাই।। ঘুমার মাঝে হঠাৎ অনুভব করলাম কেউ আমাকে খুব কাছে থেকে পর্যবেক্ষণ করছে।।কিছুক্ষন পর আমার ঘাড়ে কারো গভীর নিঃশ্বাস অনুভব করলাম।। সাথে চোখ মেলে তাকিয়ে দেখি……!!!

Psycho is back part 5+6