Violent love part 18
Mariam akter juthi
“বর্তমান”
সারিবদ্ধ মানুষের ভিতর শাড়ি পড়ে বসে আছে ইভা। তার ভিতর কোন অনুভূতি নেই। নিচের দিক তাকিয়ে মনমরা হয়ে বসে আছে। এমন সময় ইভা চেনা কন্ঠ শুনে চোখ তুলে তাকাতে দেখে, সেদিনের সেই শপের ছেলেটা ওর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। এটা দেখে সাথে সাথে চোখ নিচে নামিয়ে মনে মনে বললো, —‘এটা তো সেই দিনের সেই ভাইয়া টা।
ইভাকে দেখে, রনির আম্মু রিনা খান উঠে ইভার পাশে বসে সবার দিক তাকিয়ে বললো,
‘মেয়ে আমার ভীষণ পছন্দ হয়েছে, আর হ্যাঁ ইভাকে কিন্তু আমি পুত্রবধূ হিসেবে নয় আমার মেয়ে হিসেবে নিয়ে যেতে চাই।
রিনা খানের কথায়, কেউ কিছু না বলে শুধু মুচকি হাসলেন। অতঃপর রিনা খান ইভার দিক ঘুরে একটা বক্স বের করে সেটা থেকে স্বর্ণের পেনডেট সহ একটা চেইন বের করে গলায় পরিয়ে দিয়ে বললো,
‘আমরা বড়রা তো কথা বললাম, এখন ছেলে মেয়ে যদি আলাদাভাবে কথা বলতে চায়?
ওনার কথায় মোমেনা খান বললেন,
‘হ্যাঁ অবশ্যই, আলাদা,,,, — ওনার বাকি কথা শেষ করার আগে রনি বললো,
‘আম্মু আলাদা কথা বলার প্রয়োজন নেই, বিয়ের তারিখ ঠিক করে ফেলো। মাথাটা চুলকে।
রনির কথায় বড়রা সব মুখ টিপে হাসলেও, জুথি ফারি সহ আখি, দৃষ্টি ,মাইশা সবাই হুহু করে হেসে দিল। জুথি,ফারির সাথে মেয়ে তিনজনের কে চিনলেন না তো? ওরা হচ্ছে ওদের একমাত্র ফুপির তিনজন কন্যা। জুথিদের মত ওরাও তিন বোন। ওদের কোন ভাই নেই। ইভাকে দেখতে আসবে তাই ওনাদের আগেই আসতে বলেছিলেন। কিন্তু পারিবারিক ঝামেলায় থাকায় ওনারা সন্ধ্যার সময় এসেছেন।
বড়রা সবাই আলোচনা করে, বিয়েটা সামনের মাসের ৯ তারিখ, ঠিক করলেন।ওনারা আরো কিছু কথা বলার ভিতর ইভার ফুপি, নাসিমা বেগম বললেন,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
‘রনিরা কয় ভাই বোন?
নাসিমা বেগমের কথায় রিনা খান বললেন,
‘ওরা তিনজন, মেয়ে বড়ো আর ছেলেদের ভিতর রনি বড়।
‘তো আপনার আর ছেলে কোথায়? মেয়ে আসিনি?
‘হ্যাঁ ঝুমুর এসেছে, ছোট ছেলে রকি আসেনি।
‘কেন?
‘ওর ক্যাম্পে ছুটি দেয়নি।
‘কি করে ছেলে?
‘ছোটজন আর্মি তে চাকরি করে।
‘মেয়ের পাশের দুজন মেয়ে কি তার?
‘হ্যাঁ ওরা টুএন বেবি,
নাজিনা বেগম মেয়ে দুজনার দিক তাকিয়ে বললো,
‘নাম কি তোমাদের আপু?
‘আমি স্নিগ্ধা,ও হাফসা।
‘মাশাল্লাহ খুব সুন্দর নাম, তোমরা পড়াশোনা করো কিতে?
‘আমরা ৬ এ পড়ি। হাফসা।
খান বাড়ির আপ্যায়নে, অন্য খান বাড়ির মানুষরা বেশ মহিত। দু ফ্যামিলি কে দুজনরা বেশ পছন্দ করেছেন। পেরায় ৮:৩৪ মিনিট ওনারা কথাবাত্রা শেষ করে খান বাড়ি থেকে বিদায় নেয়।
“রাত্র প্রায় ১:৫৫ মিনিট , জুথি ওর রুমে সেদিনের আরিশের সাদা টি-শার্ট টা পরে এলোমেলো হয়ে পেটে ব্যথার যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে মাত্র ঘুমিয়েছে, এমন সময় আরিশ জুথির রুমে আসে ডুবলিকেট চাবি দিয়ে।আরিশ রুমে এসে দরজাটা ভিতর থেকে লক করে জুথির কাছে এসে দেখে, তার মৌ এক হাত বালিশের উপর অন্য হাত বিছানার উপর, এক পা কোলবালিশের উপর তো আরেক পাও অন্য দিক করে ঘুমিয়ে আছে,আরিশ তার মৌকে খুঁটিয়ে খুটিয়ে দেখার মধ্যে হঠাৎ চোখ আটকে যায় জুথির উন্মত্ত পেটের উপর। হলদে ফর্সা পেট যেন আরিশের চোখে নেশা ধরিয়ে দিচ্ছে, নাবির পাশাপাশি কুচকুচে কালো তিলটা যেন বারবার আরিশ কে ডাকছে একটু ছুয়ে দিতে। আরিশ বিছানার পাশে বসে জুথির নাভির পাশের তিল টার উপর হাত রেখে, আস্তে আস্তে মুট করে ধরতে, জুথি উম শব্দ করে এ পাশ থেকে ওপাশ ফিরতে নিলে বাধা পড়ে আরিশের পেট ধরে রাখার কারণে। আস্তে আস্তে পেটের চাপ তীব্র থেকে তীব্র মনে হতে জুথি পিটপিট করে চোখ খুলে, আরিশের মুট করে রাখা হাতের উপর ডান হাতটা রেখে সামনে তাকাতে দেখে আরিশ কেমন করে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।আরিশ কে দেখে জুথি হুট করে উঠতে নিলে, আরিশ জুথির হাত দুটো এক হাত দিয়ে বিছানার উপর চেপে ধরে,জুথির টি-শার্টের ভিতর থেকে মাথাটা ঢুকিয়ে গলার কাছ থেকে মুখটা বের করে জুথির মুখের উপর মুখ রেখে বললো,
‘পরীক্ষা থাকার কারণে এতদিন অনেক দূরে থেকেছি নিজেকে কন্ট্রোল করেছি, এখন তো একটু আদর করতেই পারি তাই না?
জুথি আরিশের এমন কাজে চোখ দুটো বন্ধ করে নেয়, ঘন ঘন বার বার নিশ্বাস নিচ্ছে। আরিশ জুথির বন্ধ চোখ, ঠোঁট দুটো কাঁপতে দেখে বললো,
‘তোর শরীর এত নরম তুলতুলে কেন?
‘আ,আপনি এটা কি করছেন? প্লিজ বের হন।
‘ভিতরে এসব কি *বালছাল পরছো? ঠিক মত ফিলিংস টাও নিতে পারছি না।
জুথি আরিশের এমন নোংরা কথা শুনে যেন কান থেকে ধোয়া বের হয়ে যাচ্ছে, একে তো এক গেঞ্জির ভিতরে দুজন, তার উপর এমন নির্লজ্জ মার্কা কথা। জুথি চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে রেখেছে। আরিশ জুথির ঘাড়ে মুখ ডুবাতে ডুবাতে বললো,
‘তোর এমন এমন জায়গায় তিল যেগুলো দেখলে আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারি না। এই ধর যেমন এখন তোর বুকের তিলটা দেখলাম যেটা আমাকে বারবার গভীরতা থেকে গভীরতায় নিয়ে যেতে চাচ্ছে, এখন কি করবো বল?
‘দে,দেখুন আ,, — জুথি কথা শেষ করার আগেই আহহ শব্দ করে উঠলো, কারণ আরিশ জুথির ঘাড়ে কামড় বসিয়েছে। জুথি আরিশ কে ঠেলেও সরাতে পারছে না, ওর হাত দুটো চেপে ধরার কারণে। আস্তে আস্তে আরিশ কে ঘনিষ্ঠ হতে দেখে জুথি জোরে ফুপিয়ে কেঁদে উঠলো।জুথি কান্না করতে আরিশের ধ্যান ফিরলো, ঘাড়ের থেকে মুখ উঠিয়ে জুথির দিকে তাকাতে দেখে, জুথি চোখমুখ খিচে ফুপিয়ে কান্না করছে। এটা দেখে আরিশ গেঞ্জির ভেতর থেকে বের হয়ে, জুথি কে বিছানার উপর বসিয়ে গালে হাত দিয়ে বললো,
‘মৌ এভাবে কান্না করছো কেন? আমি কি বেশী জোরে কামড় দিয়েছি?
‘,,,,,,,। হিচকি দিচ্ছে।
‘কথা বলছো না কেন?
জুথি পেটটা দুহাত দিয়ে চেপে ধরে কান্না করেই যাচ্ছে তো করেই যাচ্ছে,আরিশ জুথি কে চুপ করে কান্না করতে দেখে মেজাজ তো চাঙ্গে,ওর রাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে,জুথির দুই বাহু ওর দিক ঘুরিয়ে ঝাক্কাতে ঝাক্কাতে বললো,
‘তোর গায়ে লাগছে না? বারবার জিজ্ঞেস করছি? চুপ করে কান্না করতে বলেছি?
জুথি আরিশের হুংকার শুনে আরো জোরে কান্না করে দিল,জুথি কে আবারো কান্না করতে দেখে আরিশ রাগে গজগজ করে উঠতে নিলে জুথি হুট করেই আরিশ কে জরিয়ে ধরে হিচকি দিতে দিতে বললো,
‘আ,আমার ভিশন পেট ব্যথা করছে। সহ্য করতে পারছি না।
আরিশ পেট ব্যথা করছে কথাটা শুনে, ভ্রু কুঁচকে কিছু বলতে নিবে তখন ওর আজকের তারিখটার কথা মনে ওঠে। অতঃপর নিজের মাথায় নিজে চাপড় মেরে মনে মনে বললো,—‘কেমন মানুষ আমি? যে একটা ডেট মনে রাখতে পারি না।
আরিশ এসব ভেবে জুথিকে জড়িয়ে ধরে বললো,
‘পেইনকিলার খেয়েছিলি?
‘হুম।
আরিশ জুথির অসুস্থতা বুঝতে পারছে, তার মৌয়ের কতটা কষ্ট হচ্ছে সেটা সে অনুভব করতে পারছে। দোষটা তো সম্পূর্ণ তার, সে যদি এত রাতে এখানে না এসে ঘুমটা ভাঙাতো? তাহলে হয়তো এখন আবার পেটে ব্যথা শুরু হতো না।আরিশ এসব ভেবে জুথির মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে, জুথি যেন ঘুমিয়ে যায় তার জন্য , কিছুক্ষণ পর আরিশ গুনগুন করে গাইতে শুরু করলো,
~~লক্ষী সোনা আদর করে দিচ্ছি তোকে,
~~লক্ষচুমু মায়া ভরা তোরই মুখে,(২)
~~কলিজা তুই আমার তুই যে নয়নের আলো,
~~লাগে না তুই ছাড়া, লাগে না তো যে ভালো,
~~রূপকথা তুইতো আমারই,
~~জীবনের চেয়ে আরো দামি ,(২)
~~তুই আমার জীবন, তুই ছাড়া মরণ, তুই যে আমার সাত রাজার ও ধন,
~~কলিজা তুই আমার তুই যে নয়নের আলো,
~~লাগে না তুই ছাড়া লাগে না তো যে ভালো।
~~রূপকথা তুই তো আমারই,
~~জীবনের চেয়ে আরো দামি।
আরিশ গান টা গেয়ে, একটা নিঃশ্বাস ছাড়লো। এমন যে দুজন কতক্ষন ছিল তা তাদের জানা নেই, একটা সময় জুথি একদম চুপচাপ হয়ে যেতে, পাশাপাশি গভীর নিঃশ্বাস ফেলতে দেখে আরিশ বুঝতে পারে তার মৌ ঘুমিয়েছে, এটা বুঝতে পেরে, আস্তে করে বালিশের উপর মাথাটা রেখে কোমর পর্যন্ত খাতা দিয়ে জুথির পাশে বসে,জুথির কপালে গভীরভাবে চুমু খেয়ে বললো,
‘তোর যত কিছু শুরু হয় আমি কাছে আসলেই। কিন্তু একদিন যে তোকে আমার হতেই হবে, তখন আমার থেকে কিভাবে পালাবি?
“সুন্দর এক সকালের সূচনা, খান বাড়ির বড়রা সকলে ব্রেকফাস্ট করছেন। এমন সময় আরিশ রেডি হয়ে নিচে নামতে নামতে ওর আম্মুর উদ্দেশ্যে বললো,
‘আম্মু আজ আমার ফিরতে লেট হবে।
‘কেন?
‘নির্বাচনের আর বেশি বাকি নেই, ২০ তারিখে ফাইনাল। সেটা নিয়ে এখন একটু ব্যাস্ত আছি।
‘খাবার তো খেয়ে যা।
‘সময় হবে না বাইরে খেয়ে নেব। বলে আরিশ দরজা পর্যন্ত যেতে ওর কানে আসে রাদিফের বলা কিছু কথা,
‘জুথি তোমার তো পরীক্ষা শেষ?ইভার ও বিয়ে ঠিক হয়ে গেল। তাই ভাবছি অফিস থেকে ছুটি নিয়ে কোথাও ট্যুরে গেলে কেমন হয়?
‘ভাইয়া ট্যুরে সাজেক গেলে ভালো হয়। ‘ফারি’
‘হুম।
ওদের কথায় জুথি কিছু বলবে তার আগে আরিশ টেবিলের কাছে এসে চেয়ার টেনে বসতে বসতে বললো,
‘তোরা দুনিয়ার জেথায় যাবি যা, কিন্তু আমার মৌ আমি ব্যতীত কারো সাথে কোথাও ঘুরতে যাবে না। দ্যাটস এ ক্লিয়ার।
‘তোর কথা শুনতে হবে আমাদের?
আরিশ রাদিফের কথায় পাত্তা না দিয়ে বললো,
‘আম্মু খেতে দাও।
Violent love part 17
সানজিদা খান খাবার বেড়ে আরিশে কে দিতে আরিশ কেবল খাবারের প্লেটে হাত রাখতে যাচ্ছিল, তখন জুথি রাদিফ কে বললো,
‘ওনার কথা শুনতে হবে নাকি?রাদিফ ভাই আমি তোমাদের সাথে ঘুরতে যাব।
ব্যাস জুথির এতটুকু কথাই পরিস্থিতি গরম করার জন্য যথেষ্ট ছিল। আরিশ খাবারের প্লেটটা মেঝেতে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে জুথির দিকে তেড়ে যেতে যেতে বললো,
‘বান্দির বাচ্চা, আমার কথা গায়ে লাগেনা?