Violent love part 20
Mariam akter juthi
“ব্যস্ত শহর ঝান ঝট ময় পরিবেশ, একে একে গাড়ি আটকে আছে জ্যামের কারণে। আর থাকবে নাই বা কেন, আজকে নির্বাচনের মিছিল। কালকে নির্বাচন, এই নিয়ে পক্ষবাদীরা রাস্তা জুড়ে আছে। এক রাস্তা আমানের লোক তো দুই রাস্তা, আরিশের লোক। সামনাসামনি দাঁড়িয়ে আছে আরিশ ও আমান। দুজনার চোখেই ক্ষমতা ক্ষমতা খেলার নেশা। দুজন যখন দুজনার দিক এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল তখন আরিশের ফোনে ফোন আসে, মূলত আয়ান ফোনটা করেছে। আরিশ আয়ান কে ফোন করতে দেখে সাথে সাথেই ফোনটা রিসিভ করে কানে ধরে বললো,
‘হ্যা বল।
‘বাজারের সভা,,
‘হ্যাঁ কাল বাজারের রোডের সভাটা সকাল দশটায় শুরু হবে। সাবেক কমিশনার কে জানিয়ে দিস, আর শোন, ইমন কে বলবি, বুথ ম্যানেজমেন্টের তালিকা আজ রাতের ভিতর চাই।
‘ঠিক আছে।
“তখন আরিশ মায়ের সাথে কথা বলে রুম থেকে বের হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই আয়ান ফোন করে ইলেকশনের কথা বলায় আরিশ সাথে সাথে বেরিয়ে পড়েছিল। ও প্রথমে কেন্দ্রীয় সভায় যায়, সেখান থেকে মোট বারোটা গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। তখন মাঝ রাস্তায় আমানের সাথে দেখা। আরিশ আমানের দিক তাকিয়ে গুরুগম্ভীর কন্ঠে বললো,
‘সেই ফাও ছুটাছুটি করছিস,পরিশ্রম করে শুধু শুধু শরীরের ঘাম ঝরাচ্ছিস।
‘শোন তোর বাবা এমপি ছিল বলে যে তুইও হবি সেটা কিন্তু না। এক ভ্রু জাগিয়ে।
আরিশ আমানের কথা শুনে বাঁকা হেসে বললো,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
‘বোকা তুই অনেক বোকা।
‘সেটা তো ইলেকশনেই দেখা যাবে।
‘অবশ্যই কালকে আমার বিজয় লাভ হবার পর তোর সাথে মিট করব নো সমস্যা।
‘আরিশশশশ,,
‘একদম চিৎকার করিস না, তোর সব কথা শুনবো।, আর তোকে পেট ভরে খাওয়াবো এমপি হওয়ার আনন্দে। টা,টা, বলে আরিশ এক মুহূর্ত না দাঁড়িয়ে গাড়িতে ওঠে, হাত ইশারা করে ওর লোকদের নিয়ে কাজে চলে যায়।— এদিকে আমান আরিশের কথার ড্যাস দেখে হাত দুটো মুঠো বদ্ধ করে বললো,
‘আমি জানি, তুই যখন নির্বাচনে একবার নাম দিয়েছিস তখন এমপি তুই হবি, সেটা আমি হাজার লক্ষ বার চেষ্টা করার পরও জয়ী হবো না।কিন্তু তোকে একটু প্যারা দিলে ক্ষতি কি? আর তুই আমার ব্যবসা লাঠে তুলেছিস, এর শোধ তো আমি নেবই। বলে আমান ওর লোকদের নিয়ে গন্তব্যে চলে যায়।
“আরিশ তখন জুথি কে বিছানার সাথে বেঁধে রেখে চলে যাওয়ার পর,জুথি একটু চেষ্টা করতেই ওর হাতের বাঁধন দুটো খুলে ফেলে, এতে বেশ অবাক হয়েছিল ও। কারণ ও ভাবিনি হাতের বাঁধন এত সহজে খুলে ফেলতে পারবে। জুথি হাত ছাড়িয়ে উঠে দরজার কাছে আসে এখান থেকে চলে যাওয়ার জন্য। কিন্তু দরজা ভেতর থেকে খোলাই ছিল, সমস্যা ছিল দরজা যতই টানছে খুলছে না। অনেকক্ষণ এরকম চেষ্টা করার পর ও বুঝতে পারে আরিশ ইচ্ছে করেই বাহির থেকে পিন লক সেটআপ করে গেছে। কারণ তার দরজার বাইরে কোনরকম তালা দেওয়ার সিস্টেম নেই। আছে পিন লক করার সিস্টেম। যেটা সে ছাড়া অন্য কেউ জানেনা। জুথির নিজের প্রতি নিজের রাগ হল, এখান থেকে বের হতে না পেরে, কি করবে না করবে ভেবে পাচ্ছে না। জুথি কিছু ভেবে না পেয়ে বিছানায় এসে বসে, পা দুটো ছড়িয়ে। তার এখন আবারও ভীষণ কান্না পাচ্ছে, নাজানি কতক্ষণ এভাবে রুমবন্দী হয়ে থাকতে হবে?
একটা জীবন্ত মানুষ কি একলা ঘরে বন্দী হয়ে থাকতে পারে? জুথি মুখ ফুলিয়ে রুমের চারপাশটা দেখতে দেখতে হঠাৎ ওর চোখ পড়ে কাবার্ডের পাশে একটা কালো ট্রলির উপর। অতঃপর উঠে ট্রলিটা বিছানার কাছে এনে, আসন করে বসে ট্রলি টা খুলতে ওর চোখ দুটো ছোট ছোট হয়ে যায়। মুখটা হয়ে যায় হা, কারণ আরিশের রুমে আরিশের ট্রলি খুলে যে মেয়েদের পোশাক দেখতে পাবে সে ভাবিনি। জুথি কিছুটা কৌতুহল নিয়ে ড্রেসটা হাতে নিতে দেখে ওটার পাশে আরো একটা ড্রেস। পরপর এক জায়গা থেকে চার চারটা ড্রেস বের করার পর ওর চোখে পড়ে বাকি ট্রলিতে চকলেটে ভরপুর। এত এত চকলেট দেখে জুথির তো মাথায় হাত। জুথি পর পর দুটো ঢোক গিলে একটা চকলেট হাতে নিতে ওর চোখ যায় পাশে একটা মোটা রেপিং প্যাচানো বক্সের উপর। জুথি হাতের চকলেট টা বিছানায় রেখে প্যাচানো র্যাপিং টা হাতে নিয়ে সেটা খুলে দেখে অনেক বড় একটা চকলেট। জুথি চকলেটটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতে, সেখানে নাম লেখা দেখে, can’t gate knafeh of it. জুথি নামটা পড়তেই মনে পড়ে এটা তো সেই দুবাইয়ের বিখ্যাত ভাইরাল চকলেট। জুথি চকলেট টা হাতে এপিট ওপিট করে, ট্রলিতে থাকা চকলেট গুলোর দিকে তাকিয়ে বললো,
‘লুচু বেটা,আমাকে রুম বন্দী করেছেন তাই না? আজকে আমি আপনার এত টাকার চকলেট সব খেয়ে নেব। আর যদি সব একসাথে খেতে না পারি তাহলে জামার ভিতরে লুকিয়ে সবগুলো চকলেট নিয়ে যাব। তখন বুঝবেন আমাকে রুমবন্দী করার মজা। হু,,। জুথি একা একা এসব বকবক করে, চকলেট টা খুলে খেতে শুরু করে। জুথি চকলেটের ৩ নে ভাগের এক ভাগ খেতে ওর মুখ ফিরে আসে। এত কুনাফা, মিল্ক,পিস্টাচিও ক্রিম, তাহিনি, সুগার মিলানো যে একটু খেতেই ওর মুখ ফিরে আসে। জুথি চকলেট টা ট্রলির ভিতরে রেখে আরিশ কে মনে মনে আরো কয়েকটা গালি দিয়ে দিল।
সময়টা প্রায় ঘড়ির কাটায় সন্ধ্যা ৭.৫৬ মিনিট, তখন আরিশ ক্লান্ত শরীর নিয়ে মাত্র বাড়ি ফিরে বসার ঘরের সোপায় হেলান দিয়ে বসেছিল। এত দৌড়াদৌড়ি করে এখন তার হাত পা চিনচিন ব্যথা করছে, আরিশ হাত পা আড়ামোড়া দিতে লিমা খান ওর জন্য ঠান্ডা এক গ্লাস লেবুর শরবত এনে ওর সামনে দিতে ও সেটা নিতে গেলে লিমা খানের দিক চোখ পড়তে চোখ নামিয়ে নেয়। মনে পড়ে তার সকালের কান্ড ঘটানোর কথা। আরিশের অনুশোচনা হয়। লিমা খানের দিক তাকাতে, আরিশ নিচের দিক তাকিয়ে লিমা খানকে বললো,
‘আই এম সরি মেঝো মা, আমি রাগের বশে সকালে,,
‘আমি জানি বাবা, তখনকার কথা বাদ দাও।
তুমি সেই সকালে বের হলে মাত্র ফিরলে শরবতটা খাও শরীরটা ভালো লাগবে।
আরিশ লিমা খানের কথায়, উনার থেকে শরবতের গ্লাস টা নিয়ে এক নিশ্বাসে শেষ করে উঠে দাঁড়িয়ে ছোট করে একটা হাসি উপহার দিয়ে বললো,
‘ধন্যবাদ মেঝো মা।— বলে দফদফ পা ফেলে ওর রুমের দিকে চলে আসে।
আরিশ ওর রুমের দরজার সামনে এসে পিন টা বসিয়ে, রুমে ঢুকতে দেখে ওর রুম আর রুম নেই। এটা এক সার্কাস রুম হয়ে গেছে। আরিশ রুমের করুন অবস্থা দেখে বিছানার দিক তাকতে দেখে তার মৌ তার টি-শার্ট পাশাপাশি তার কালো একটা প্যান্ট পড়ে ঘুমিয়ে আছে। আরিশ এটা দেখে একটু কাছে এগোতে দেখে জুথির টি-শার্টটা উঠে পেটের অনেকটা জায়গা উন্মুক্ত হয়ে আছে। হঠাৎ ওর চোখ পড়ে জুথির পেটের এক সাইডে কাটা অংশে উপর। আরিশ আস্তে পায়ে হেঁটে,বিছানায় বসে জুথির পেটের দাগ টার উপর হাত দিতে ওর মনে পড়ে এটা তারই দেওয়া আঘাতের চিহ্ন,সেই সাত বছর আগে। এটা মনে পরতে আরিশ চোখ দুটো বন্ধ করে নিয়ে দীর্ঘ এক নিঃশ্বাস ফেলে, একটু ঝুঁকে জুথির কাটা জায়গাটার উপর, পরম যত্নে চুমু খায়।
Violent love part 19
অতঃপর আরিশ জুথির মুখমণ্ডলে চুমুতে ভরিয়ে দেয়। আরিশ চুমু খেয়ে উঠতে নিলে আবারো ওর পাশে বসে জুথির ঠোঁটে হালকা চুমু খায়। অতঃপর ফ্রেশ হওয়ার জন্য জামা কাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়। আরিশ ওয়াশরুমে ঢুকতে জুথি লাফ দিয়ে ওঠে বসে, ঘনঘন নিশ্বাস ফেলতে শুরু করে। ও এতক্ষণ অনেক কষ্টে ঘুমের ভান ধরেছিল , আরিশের চুমু গুলো ওর শরীলের সমস্ত পশম গুলো দাঁড়িয়ে গিয়েছিলো। কি মারাত্মক অবস্থা? জুথি নিজে কে স্বাভাবিক করে দরজার দিক তাকাতে দেখে দরজা, ভিতর থেকে চাপানো। এটা দেখে জুথি বিছানা থেকে উঠে ট্রলি থেকে সব চকলেট গুলো ওর জামার মধ্যে পেঁচিয়ে দুহাতদারা আবদ্ধ করে আরিশের রুম থেকে গো দৌড়।
আরিশ ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে শরীর মুছতে মুছতে বের হয়ে দেখে ,,,