Violent love part 26 (2)

Violent love part 26 (2)
Mariam akter juthi

“রুমের বাইরে ওদের কথার শব্দ পেয়ে আরিশ ভ্রু কুঁচকে রুম থেকে বেরিয়ে এসে দেখে রাদিফ জুথির হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে, এটা দেখে আরিশ হাত দুটো মুচিবদ্ধ করে দাঁতে দাঁত চেপে জুথির দিকে এগিয়ে যেতে যেতে বললো,
‘ওর হাত ছাড়!
রাদিফ কে হাত না ছেড়ে, জেদ ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে, আরিশ জুথির হাত থেকে এঁটো প্লেটটা মেঝেতে আছাড় মারতে প্লেট টা ভেঙ্গে চৌচির হয়ে যায়, অতঃপর আরিশ রাদিফের টি-শার্টেরের কলার্ট চেপে ধরে দাঁতে দাঁত চিপে কিছু বলবে,তখন জুথি আরিশ কে হিংস্র হতে দেখে, রাদিফের থেকে ওর হাতটা ছাড়িয়ে আরিশ কে থামানোর জন্য পেট জড়িয়ে বললো,

‘থামুন, এমন করছেন কেন?
‘ওর সাহস হলো কি করে তোর হাত ধরার? রাদিফের দিক রক্ত আভা চোখ করে।
তাৎক্ষণে আরিশ খেয়াল করল, তার মৌ তাকে জড়িয়ে অবরতন কাঁপছে,মেজাজটা এমনিতেই তেতে ছিল, তার উপর এই কাণ্ডে, রাগে ওর চোখ দুটো লাল হয়ে উঠল। মনে হচ্ছিল, সামনে কিছু থাকলে ছিঁড়ে ফেলত,এমনই জ্বলছিল ভিতরটা। এর মধ্যে শুধু শুধু জায়গায় শরীর জড়িয়ে কাঁপাকাঁপি বিষয়টা মোটেও, ও নিতে না পেরে,জুথি কে টেনে থাপ্পর লাগিয়ে বললো,
‘ঠাসসসসস, —‘সমস্যা কি তোর?
জুথি আরিশের হাতে থাপ্পড় খেয়ে ফুপিয়ে কেঁদে বললো,
‘আ,আমার ভ,ভয় করছে তো আ,আপনাকে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

আরিশ জুথি কে কাঁদতে দেখে, কোনভাবেই রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে, দেওয়ালে ঘুসি মেরে বললো,
‘ফারি এই ন্যাকার বাচ্চাকে আমার সামনে থেকে যেতে বল, আর নয় কি করবো আমি নিজেও জানিনা।
ফারি আরিশের কথায় জুথি কে টেনে নিয়ে যেতে চাইলে, জুথি ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বললো,
‘আমি যাব না, রাদিফ ভাই কি বলে আমি শুনবো।
ব্যাস জুথির এতটুকু কথাই আরিশের ধৈর্য
সহ্যসীমার বাহিরে গেল, তেরে এসে জুথির চুলের মুঠি পেছন থেকে ধরে ওর কাছে এনে অন্য হাত দ্বারা গাল চেপে ধরে রুক্ষ কণ্ঠে বললো,
‘অবাধ্য জিনিস আমার কখনোই পছন্দ ছিল না, কিন্তু তুই সেটা পছন্দ করতে বাধ্য করেছিস। বলে জুথি কে কোলে তুলে রুমের দিক যেতে যেতে ফারি কে বললো,
‘ফারি মেঝেটা পরিষ্কার করে দিস।
আরিশ জুথি কে বিছানার উপর রেখে দরজাটা বন্ধ করে ওর কাছে এসে ওকে টানে কাছে এনে বাহু চেপে বললো,
‘সুস্থ আছিস ভালো লাগছে না?

‘,,,,,,,,,,,,,,,,,,। ফুঁপিয়ে কাঁদছে।
‘মৌ, আমার সামনে এভাবে কাঁদবি না। আমি নিতে পারি না, তোর চোখের পা,, — ওর সম্পূর্ণ কথা শেষ হতে না হতে জুথি আরিশে কে জড়িয়ে জোরে কান্না করে দিয়ে বললো,
‘মা,মাঝে মাঝে আপনি এ,এমন হয়ে যান,তখন ভীষণ ভ,ভয় লাগে তো আপনাকে!
জুথি আরিশে কে জড়িয়ে ধরতে ওর রাগ কিছুটা কমে আসে, অতঃপর জুথি কে বুকের সাথে চেপে ওর মাথায় চুমু দিয়ে,হাত বোলাতে বোলাতে বললো,
‘তুই ওর দিক তাকাবি না, ওর সাথে কথা বলবি না। তুই শুধু আমাকে দেখবি, আমার সাথে কথা বলবি। অন্য কারো সাথে না..

জুথি কান্নার তোপে আরিশের কথা গুলো মালুমে নিলো না, শুধু নিঃশব্দে ফুপিয়ে কেঁদে গেল। একটা সময় কান্নার রেশ ধরে জুথি আরিশের বুকে ঘুমিয়ে যায়,জুথির ভারী নিশ্বাস পাশাপাশি কোন সারা শব্দ না পেয়ে,আরিশ জুথিকে বুকের উপর থেকে তুলে দেখে জুথি ঘুমে গদগদু হয়ে গেছে, এটা দেখে আরিশ জুথির গালে, কপালে,নাকে চোখের পাতায়, বলতে গেলে পুরো মুখমণ্ডলীতে একে একে চুমু দিয়ে ঠোঁটে পর পর চুমু খায়, অতঃপর ওভাবেই আবারও বুকের সাথে চেপে,পাতলা খাতাটা ওর শরীরে জড়িয়ে ওভাবে শুয়ে পড়ে, অসন্য কন্ঠে বললো,
‘মৌ আমি তোকে, কিংবা তোর শরীরকে আঘাত নয় ভালবাসতে চাই, যতটা ভালবাসলে তুই আমার বুকে আশ্রয় খুঁজে নিবি। আমাকে আঁকড়ে বাঁচতে চাইবি, ঠিক ততটাই ভালোবাসতে চাই। বলে তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলে জুথির ঘাড়ে মুখ গুজে ঘুমিয়ে যায়।

“বাড়ির সকলের চেঁচামেচিতে ঘুম ভাঙ্গে জুথির, তখন হয়তো ঘড়ির কাঁটায় ৮.১৯ কি ২০। জুথি চোখ ডলতে ডলতে উঠে বসে হাউসি দিয়ে মাথা চুলকে চারপাশটা দেখলো, অতঃপর রাতের কথা মনে উঠতে ওর পাশে বিছানায় তাকাতে দেখে আরিশ নেই। আরিশ নেই দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে, বিছানা থেকে নেমে দাঁড়ালো, কি মনে করে হুট করে আবারো বিছানায় শুয়ে পড়ে মুড়িয়ে আড়মোড়া দিলো, অতঃপর উঠে বসে রুমের চারপাশটা আবারো দেখলো, না আরিশ সত্যিই রুমে নেই। এটা দেখে মুচকি হেসে আরিশের কভারে কাছে গিয়ে ড্রয়ার খুলে সেখান থেকে সেদিনের ফেলে রাখা ড্রেস গুলো বের করে, দুই হাত দাঁড়া আবাধ্য করে দরজা পর্যন্ত যেতে মনে মনে বললো — ‘হি,হি এই সব গুলো ড্রেস আমার। সেদিন চকলেটের জন্য এগুলো নিতে পারিনি,আর না সবগুলো চকলেট নিতে পেরেছিলাম? তাই এই সুযোগে আজ সব গুলো হাতিয়ে নিব হা,হা। বলে যেই দরজা খুলে বের হতে যাবে আরিশ চোর ধরার মতো জুথির পেট জড়িয়ে,ওর পা শূন্যো ভাসিয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বললো,
‘আমার রুমে এসে চুপি চুপি,চুরি করার অভ্যাসটা আজও গেল না তোর?

আরিশের কাছে ধরা পড়ে পাশাপাশি ওর গম্ভীর কণ্ঠে শুনে’ মিনমিন করে বললো,
‘আমি তো চুরি করছিলাম না, আমি তো এগুলো ফারি কে দেখাতে নিচ্ছিলাম।
‘ওওওও আচ্ছা,টেনে ভ্যাং করে ।
জুথি আরিশের ও শুনে কাচুমাচু করে বললো,
‘আপনি তো রুমে ছিলেন না? হঠাৎ পয়দা হলেন কিভাবে?
‘আমি না থাকা কালীন, এভাবে আমার রুম থেকে চুরি করিস?
জুথি আরিশের কথায় মাথা দুই পাশে নাড়ালো, যায় মানে সে এভাবে তার রুম থেকে চুরি করে না। জুথি কে মাথা নাড়তে দেখে আরিশ বললো,
‘যাই হোক আমার বউয়ের জন্য আনা, ড্রেসগুলো যে চুরি করতে যাচ্ছিলি, এখন এর শাস্তি কি দিব বল?
আরিশের মুখে শাস্তি শব্দটা শুনে জুথি ভায়াত কণ্ঠে বললো,
‘শা,শাস্তি?
‘হুম।

‘দে,দেখুন আমি কিন্তু ড্রেসগুলো নেই নি, তাই আমাকে নামান, আর যেতে দেন। আমার একছের খিদা লাগছে।
‘শাস্তি না দিয়ে তো, তোকে যেতে দিব না! — বলে জুথি কে দাঁড় করিয়ে ওর দিক ঘুরিয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বললো,
‘যা তোকে বেশি শাস্তি দেবো না, এই সাত সকালে যখন তোর মুখ দেখেই শুরু হলো,তাহলে তুই একটা ডিপলি কিস কর তাহলেই হবে।
জুথি আরিশের এমন শাস্তি শুনে ভ্রু কুঁচকে মনে মনে বললো,—‘সারাদিন খালি চুমু, তাই না? আজ একবার জোর করে চুমু খান শুধু! তারপর আমার সাদা দাঁত দিয়ে, আপনার সুন্দর ঠোঁটে কামড়ের দাঁত বসিয়ে দিব।
জুথি কে চুপচাপ ভ্রু কুঁচকে নিচের দিক তাকিয়ে থাকতে দেখে আরিশ বললো,
‘কি ভাবছিস?
‘না মানে আমি মুখ ধুইনি তো, আগে ফ্রেশ হই, তারপর আপনার শা,,জুথির সম্পূর্ণ কথা শেষ করতে না দিয়ে আরিশ বললো,

‘কোন সমস্যা নেই, তুই নোংরা কাদা মাটি মেখে আমার সামনে আসলেও, আমি তোকে সেভাবেই চুমু খাব। বলে আরিশ জুথির ঠোটে চুমু খেতে গেলে, দরজায় করাঘাতের শব্দ পেয়ে ধ্যান ভাঙ্গে ওর। অসময়ে ডিস্টার্ব পেয়ে আরিশ বিরক্তিতে কপাল কুঁচকিয়ে বললো, —‘সব *বালের উঠকো ঝামেলা সময় রেখে অসময়ে আসতে হবে? বলে আবারো জুথির দিক ঝুঁকতে নিলে, দরজায় ফারির গলা ও করাঘাতের শব্দে আরিশ এক বালতি বিরক্ত নিয়ে বিছানায় বসতে, জুথি ছোট ছোট পায়ে গিয়ে দরজাটা খুলতে, জুথি কিছু বলার আগেই ফারি বললো,
‘তোকে বড়মা ডাকল! আমি ডাকলাম, মামনি ডাকলো, তোর রুমে খুঁজলাম তোর কোন হদিস পেলাম না। পরে বড় আম্মুর কাছে গিয়ে বলতে সে বলল, —‘তুই ভাইয়ের রুমে আছিস।
জুথি ফারি কে ঘন কথা বলতে দেখে মুচকি হেসে বললো,
‘তুই একদম ঠিক টাইমে এসেছিস!
ফারি জুথিকে মুচকি হাসতে দেখে – বললো,
‘তুই সারারাত ভাইয়ের রুমে ছিলি?
ফারির প্রশ্নে জুথির হাসি মিলিয়ে যেতে, পাশাপাশি জুথি,কে চুপ থাকতে দেখে, ফারি তার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যায়। অতঃপর তৃপ্তির নিঃশ্বাস ফেলে বললো,

‘তানিশা এসেছে।
ফারির মুখে তানিশা এসেছে শুনে,হেসে ওকে সরিয়ে যেতে নিলে ফারি জুথির হাত ধরে কপাল কুঁচকে বললো,
‘ডার্টি মেয়ে আমুখ ধোয়া কোথায় যাচ্ছিস?
‘জানু এসেছে তো?
‘আগে ফ্রেশ হবি তারপর আসবি।
জুথি ফারির কথায় চোখ মুখ ছোট করে রুমে গিয়ে তাড়াতাড়ি করে ফ্রেশ হয়ে, নিচে এসে দেখে, তানিশার পাশাপাশি আশিক ও এসেছে। আশিক কে দেখে জুথি মুচকি হেসে ওর কাছে গিয়ে গাল দুটো টেনে দিয়ে বললো,
‘বাপ্পা, তাহলে আমার জামাই টা একটু ফ্রি হলো? বউয়ের কাছে আসার টাইম পেল?
জুথির কথায় আশিক ভ্রু কুঁচকে রাগী নিশ্বাস ফেলে বললো,

‘একদম জামাই জামাই করবে না, আমি ছোট বলে তোমায় বিয়ে করতে পারব না। তাই আমাকে জামাই বলো তাই না? আমি সব বুঝি! শোনো মেয়ে আমার বয়স টা যদি একটু বেশি থাকতো না, একদম সত্যি সত্যি বিয়ে করে নিতাম তোমাকে। আর তোমার জামাই ডাকটা বাস্তবে রূপান্তরিত করতাম। এখন আমি তোমার বয়সে ছোট বলে জামাই জামাই বলে আমার মনটা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিও না। লাস্টের কথাটা বলে ভেংচি কাটলো।
আশিকের কথা শুনে তানিশা,জুথি সহ সবাই খিলখিল করে হেসে দিল। তানিশা হাসতে হাসতে বলেই ফেলল,
‘ও একদম ঠিক বলেছে, ও তোর বয়সে ছোট হয়ে গেছে। তাই আমার ভাইকে শুধু শুধু জামাই বলে সান্ত্বনা দিবিনা। আমার ভাইটা যদি বড় থাকতো না, তাহলে তোকেই ভাবি বানাতাম।
জুথি হাসি থামিয়ে পেট চেপে সিরিয়াস ভঙ্গিতে বললো,
‘আন্টি কি বলেছে?
‘বুঝলাম না?

‘এখানে যে আসছিস? সেট,, ওকে শেষ করতে না দিয়ে তানিশা বললা,
‘সেটা কি আমার আম্মুর অজানা? এখানে আসলে যে তোরা যেতে দিবি না? সে তো আমার আম্মু জানে।
‘আজকে থাকবি এটাই ফাইনাল।
‘ভাইকে নিয়ে এসেছি না, আজকে যেতে হবে।
‘আমি কোন কথা শুনবো না।
‘আচ্ছা দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করে বিকেলে যাব। এবার খুশি?
‘,,,,,,,,,,,,।
জুথি কে মুখ ভার করে চুপচাপ থাকতে দেখে তানিশা ওকে জড়িয়ে বললো,
‘এভাবে মুখ ভার করে থাকিস না, আজ তো ৩ তারিখ। ৯ তারিখ তো ইভাপুর বিয়ে? তখন একদিন আগে চলে আসবো বিয়ের পরদিন যাব।
‘হুম।

Violent love part 26

আয়ান পার্টি অফিসে যাবে বলে, কালো শার্ট এর সাথে ভেতরে সাদা টি-শার্ট পরে, কালো প্যান্ট চুল স্পাইক করে, রেডি হয়ে ঘড়ি পড়তে পড়তে সিঁড়ি থেকে নিচে আসতে চোখ পড়ে তার প্রাণপ্রিয় প্রিয়সীর উপর। কি সুন্দর একে অপরকে জড়িয়ে সুফায় বসে আছে। এটা দেখে আয়ান মুখে হাত দিয়ে কাশি দিয়ে জানালো তার উপস্থিতি। আয়ানের শব্দ পেয়ে জুথি মাথা তুলে তাকাতে দেখল আয়ানের কেমন গভীর দৃষ্টি। সেই চোখে কত না বলা কথা! আয়ান কে এক দৃষ্টিতে তানিশার দিক তাকিয়ে থাকতে দেখে জুথি কিছু বলবে, তখন হঠাৎ করে বলতে গিয়েও থেমে যায়। ভ্রু কুঁচকে একবার আয়ানের দিক তাকাচ্ছে তো একবার তানিশার দিক। আয়ান ফেল ফেল করে তানিশা দিক তাকালেও, তানিশা নিচে মেঝের দিক দৃষ্টি স্থির করে রেখেছে। জুথি এটা দেখে মাথা চুলকে কিছুক্ষণ দেখলো, অতঃপর মুচকি হেসে চট করে বললো,,

Violent love part 27