Violent love part 31 (2)

Violent love part 31 (2)
Mariam akter juthi

“কড়া রোদ্র, বেলা প্রায় দুপুর ২.২২ এর ঘরে, মার্কেটের সামনে দাঁড়িয়েছে আয়ান। দাঁড়িয়েছে বললে ভুল হবে তাকে এক প্রকার বাধ্য করে মার্কেটের বাইরে দাঁড় করিয়ে,জুথি ফারি ভিতরে গেছে প্রায় এক ঘন্টা হতে চলল, এখনো তাদের কেনাকাটা শেষ হয়ে বাহিরে আসার নাম নেই। যদিও আয়ান যেতে চেয়েছিল, কিন্তু জুথি কোনভাবেই আয়ানকে ভিতরে নিতে রাজি নয়। তাই সে, সেই তখন থেকে বাহিরে অপেক্ষা করছে, এমন কিছুক্ষণ সময় অতিবাহিত হতে আয়ান দেখে, ফারি জুথি কতগুলো শপিং ব্যাগ হাতে হাসি মুখে বেরিয়ে আসছে,এটা দেখে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করে,আয়ান এগিয়ে গিয়ে বললো,

‘মেয়েদের নিয়ে এজন্যই বের হতে হয় না, অবশেষে তোমারা বের হলে?
‘আয়ান ভাই এমন করছ কেন? একটু মার্কেটেই তো নিয়ে এলো?
‘হ্যা হ্যাঁ আমাকে রোদের ভিতর বাহিরে দাঁড় করে, নিজেরা ভিতরে এসির বাতাস খাচ্ছেন, আর বড় বড় কথা বলছেন?
‘বিশ্বাস কর আর কখনো বড় বড় কথা বলবো না, একদম মেপে মেপে ছোট ছোট কথা বলবো। -মুচকি মুচকি হেসে।
আয়ান জুথি কে মুচকি মুচকি হাসতে দেখে তেরে এসে বললো,
‘তবে রে, তুই দাঁড়া, — তাকে আর কে পায়? এক হাতে ব্যাগ নিয়ে অন্য হাতে ফারির হাত চেপে রাস্তায় ভোঁ দৌড়। ওদের দৌড়াতে দেখে আয়ান থামাতে চেয়ে বললো,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

‘বনু এভাবে দৌড়াস না, আমি কিছু বলবো না।
ব্যাস আয়ানের এতোটুকু কথায় দুজনেই থেমে গেল, অতঃপর ঘুরে জুথি আয়ানের দিক তাকিয়ে বললো,
‘আইসক্রিম শপে নিয়ে চলো!
‘আচ্ছা চল।
‘টাকা কিন্তু তুমি দিবে।
‘ওকে।
তিন ভাই বোন, আইসক্রিম শপে আইসক্রিম খেয়ে, তবেই বাড়ি ফিরল। জুথি ফারি, বাড়ি ফিরে জিনিসগুলো জুথির রুমে রেখে ফারির দিক তাকিয়ে বললো,

‘সবকিছু নিয়ে তো এলাম, এবার সবকিছু ভালোয় ভালোয় হবে তো?
‘ইনশাল্লাহ! – এতোটুকু বলে থেমে ফারি আবার বললো, —‘এখন একটা লম্বা শাওয়ার নিতে হবে, বইনা আমি গেলাম। বলে ফারি যেতে নিলে জুথি ওকে থামিয়ে বললো,
‘আচ্ছা ফারি, তুই তো অনেক গভীরে চিন্তা করে পদক্ষেপ নিস, আমি জানি আমি ম্যাচিওর নয়, বারবার ভুল করি। আমার থেকে অনেক ম্যাচিউর তুই। আমার পথে পদে ভুল হলে, তুই সেটা ধরিয়ে দিতি? কোনটা ঠিক হবে, কোনটা ভুল হবে, সেটা তুই আমাকে বলে দিতি,কিন্তু একটা বিষয় তুই লক্ষ্য করলি না, আমিও প্রথমে ভাবিনি, তবে একদিন হঠাৎ মনে হল! তাই অনেক ভেবেচিন্তে মিলালাম।
ফারি জুথির হেঁয়ালি কথার কপাল কুঁচকে ভ্যাং করে বললো,

‘ও তার মানে তোর গটে বুদ্ধি হইছে?
‘ফারি আমি সিরিয়াল!
জুথি কে সত্যি সত্যি সিরিয়াস হতে দেখে, ফারিও নড়েচড়ে স্বাভাবিক হয়ে ওর কাছে এসে কাঁধে হাত দিয়ে বললো,
‘কি হয়েছে বোন?
‘আচ্ছা ফারি সেদিন রাত্রিবেলার ঘটনা তোর খটকা লাগিনি?
‘কোন রাত্রিবেলা?
‘আরে ঐদিন যেদিন আমি আর তুই গল্প করছিলাম, এমন সময় উনি (আরিশ ভাই) আমাদের নিচে ডেকে ছিলেন?
‘হুম তো?
জুথি ফারির থেকে একটু সরে নিঃশ্বাস ফেলে বললো,

‘দেখ? সেদিন উনি ডাকলো? আমি গেলাম, উনি ওনার পাশে বসতে বললো? আমি বসলাম! অতঃপর উনি সর্বপ্রথম আমাকে আন্টি গিফট দিলেন, তারপর মুহূর্তে উনি নিজে আংটি না পরে,আমার থেকে আংটি পড়লেন, তারপর পেপার সাইন করালেন, নিজেও করলেন। তারপর আমাকে কথার প্যাচে ফেলে চারবার কবুল বলালেন,আমি কবুল বলতে উনি আলহামদুলিল্লাহ বলে, নিজেও তিনবার কবুল বলে আমাকে চলে আসতে বললেন। আমরা চলে এলাম, আবার সেদিন ওখানে সবাই উপস্থিত ছিলো। বিষয়টা কেমন লাগলো না?
ফারি জুথির কথায় এবার অনেকটা সিরিয়াস ভঙ্গিমা নিয়ে ভাবতে বলে উঠলো,

‘আসলেই তো এভাবে ভেবে দেখিনি তো?
‘হু।
জুথি কে হু বলতে দেখে ফারি উত্তেজিত ভঙ্গিমায় বিছানায় বসে ছক মিলিয়ে বললো,
‘প্রথমে আংটি বদল মানে এনগেজমেন্ট, তারপর পেপার সাইন মানে রেজিস্ট্রি পেপার, অতঃপর কবুল মানে বিয়ে সম্পূর্ণ।
‘হুম।
‘আরে বাহ,ইউনিক বিয়ে হয়ে গেল না?
‘এটা তো মাত্র আমাদের ধারণা! আমরা তো শিওর নই।
ফারি জুথির কথায় মুখটা ভেজার করে নেতিয়ে পড়ে বললো,
‘হুম সেটাও ঠিক।
জুথি ফারির কাছে বসতে বসতে মুখটা ছোট করে বললো,

‘জানিস ফারি ঐদিনের রাত থেকে, উনি কিন্তু আমাকে ওনার রুমেই রেখেছেন। উনি দেশে ফিরে আমাকে অনেকবার ছুয়েছেন, তবে ওই দিনের পর থেকে ওনার ছোয়া গুলো কেমন গভীর মনে হতো, কিন্তু ওনাকে জিজ্ঞেস করতে উনি কখনোই স্বীকার করেন না। বরং বলেছেন উনি নাকি আমাকে ভালোবাসেন না,
‘তোকে যেভাবে বললাম আগে সেভাবে কর, দেখবি ভাই স্বীকার না করে থাকতেই পারবে না।
জুথি কোন উত্তর করল না, শুধু নিঃশ্বাস ছাড়লো। জুথি কে চুপচাপ থাকতে দেখে ফারি বললো,
‘প্রপোজটা করবি কবে?

‘ভাবছি আপুর মেহেদী অনুষ্ঠানের দিন! কালকে গায়ে হলুদের দিন,প্রচুর ঝামেলা থাকবে, পরশু মেহেদি ওই দিন একটু কম, তাই ঐ দিন করলেই ভালো হবে।
“খান বাড়ির বিয়েতে রাজকীয় হবে এটাই স্বাভাবিক, পাশাপাশি নতুন আত্মীয় আসবেন বলে গেস্ট আপ্পায়নের জন্য সাফওয়ান খান বিশেষভাবে আয়োজন করেছেন, বিয়ে বলে এই প্রথম বার গ্যান্টানার’ আরিশ দেশে ফেরায় উনি আসবেন। তাই উনার জন্য আলাদা ভাবে আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি গায়ে হলুদের সব আয়োজনের শেষ,বাড়িতে প্রায় দাওয়াতি মানুষ চলে এসেছেন, সাফওয়ান খান সবটা পরিচালনা করে সোফায় বসতে আরিশ শার্টের হাতা ব্লড করতে করতে সিঁড়ি বেয়ে নিচে আসতে, উনি ক্লান্ত শরীরে ওকে কাছে ডাকলেন, আরিশ উনার ডাকে সোফায় বসতে বললো,

‘তাড়াতাড়ি বল আব্বু, বাবাই এয়ারপোর্ট চলে এসেছে!
‘ও উনি এসে গেছেন? আমিও এটাই জিজ্ঞেস করবো করে। তাহলে তুমি তাড়াতাড়ি ওনাকে নিয়ে এসো।
‘হুম। বলে আরিশ চলে গেল
খান বাড়ি জুড়ে মেহমানের আবির্ভাব, বাড়ির সবাই যে যার কাজে ব্যস্ত, কীর্তিরা গ্যান্টনার’ উনার ফ্যামিলি আসবে বলে রান্নার একে একে আইটেম সাজাচ্ছেন। এমন সময় আরিশ ওনাদের নিয়ে বাড়ি ঢুকে মা,মা বলে ডাকতে সানজিদা খান বসার ঘরে আসলেন, এসে ওনাদের বিনয়ের সাথে সোফায় বসিয়ে, খাবারদাবারের আপ্যায়ন করলেন। এমন সময় মনি এসে ওনাদের পাশে বসতে ফট করে বলে ফেললো,
‘এই ভাইয়াটা দেখতে এমন কেন? আর এত সুন্দর কেন গায়ের রং? আমার তো ভীষণ পছন্দ হয়েছে।
মনির এমন কথায় লুসিয়ান মাথা চুলকে আরিশের দিকে তাকিয়ে বললো,
‘ভাই এ ময়ে কি ভোলছো? অমর ত লঝঝা লগছ।
আরিশ লুসিয়ান এর বাংলা শুনে ওর মাথায় চাপড় মেরে বললো,

‘ছোটু তোর বাংলা তুই রুমে গিয়ে বলিস, নয়তো আমার কচিকাঁচা, ভাই বোন এখনই বেহুশ হয়ে পড়বে।
লুসিয়ান আরিশের কথায় বেশ লজ্জা পেল, অতঃপর রক্ষক কন্ঠে বললো,
‘একদন তমর থকেও বালো বাংলা ভোলব।
‘যখন বলবি তখন,
ওদের কথার মধ্য, জুথি ফারি দ্রুত পায়ে রেডি হয়ে ওদের লক্ষ না করে বসার ঘর পেরিয়ে বাহিরে যেতে নিলে তৎক্ষণে আরিশ পিছু ডেকে গম্ভীর কণ্ঠে বললো,
‘কোথায় যাচ্ছিস?
জুথি আরিশের গম্ভীর কণ্ঠ পেয়ে তৎক্ষণে পিছন ঘুরে বললো,
‘আ,আপনি না বাহিরে গিয়েছিলেন?
‘তোকে কিছু জিজ্ঞেস করেছি?

জুথি আরিশের পর পর গম্ভীর কন্ঠে বলা কথায় মিন মিন করে বললো,
‘আসলে তানিশাকে নিয়ে আসতে যাচ্ছিলাম।
‘তোকে যেতে হবে না আমি আয়ান কে পাঠাচ্ছি।
আরিশ গম্ভীর কণ্ঠে কথাটা বলতে,জুথি রুমের দিকে যেতে নিয়ে দাঁড়িয়ে যায়, সোফায় বসে থাকা মানুষগুলো দেখে। উনাদের দেখে মুচকি হেসে কাছে গিয়ে বললো,
‘আরে তোমরা সেদিনের ওই আন্টি আঙ্কেল গুলো না?
জুথি কে দেখে ইন্দ্রিয়া ত্যাইনিন’ হাতের ইশারায় উনার কাছে ডাকতে জুথি ছোট ছোট পায়ে উনার কাছে গিয়ে বসতে উনি জুথি কে বুকে জড়িয়ে কপালে চুমু খেয়ে বললেন,
‘বাহ আমার মা কে দেখতে তো, মাশাআল্লাহ।

ওনাদের কথার মধ্যে লুসিয়ান বাহাত ঢুকিয়ে ওর বিখ্যাত বাংলায় বললো,
‘অরে এ ত সই আসধারণ বঙালি ময়ে টা। বলে মুচকি হাসলো।
ওর এমন বাংলা কথায় জুথি আরিশের দিক তাকাতে ধান ভাঙ্গে,ফারির উচ্চ হাসির শব্দে। লুসিয়ানের এমন বাংলা কথায় ফারি ফিক করে হেসে দিতে তৎক্ষণে লুসিয়ান দৃষ্টি ঘুড়িয়ে ওর দিক তাকালো। অতঃপর দুজনের চোখাচোখি হতে দুজনেই চোখ সরিয়ে নিল। লুসিয়ান বেশ লজ্জা পেল, শেষমেষ কিনা একটা মেয়ে ওর বাংলা বলাতে হাসলো? তবে লুসিয়ান আড় চোখে ফারিকে কয়েক বার প্রজাবেক্ষণ করলো, লম্বা চুল, হলুদ ফর্সা শরীর সরু নাক, চিকুন গোলাপি রাঙ্গা দুটো ঠোঁট, মন কারা হাসি, সব মিলিয়ে যেন কয়েকবার আড় চোখে দেখল। তাৎক্ষণে ফারি কোশল বিনিময় করার জন্য উনাদের কাছে এগিয়ে গিয়ে বললো,

‘আসসালামু-আলাইকুম! আঙ্কেল আন্টি আপনারা কেমন?
‘ফাইন আম্মু! হাউ আর ইউ?
‘আলহামদুলিল্লাহ!
‘আপনাদের আসতে কোন অসুবিধা হয়নি তো?
‘নো আম্মু আমাদের আসতে কোন সমস্যা হয়নি।
“ওনাদের সাথে সবার বেশ কিছুক্ষণ কথা হতে, উনাদের খাবারটা খাওইয়ে, বিশ্রাম নিতে সাফওয়ান খান রুমে নিয়ে গেলেন। এমন সময় হাসিমুখে হাই বলতে বলতে বাড়িতে ঢুকলো সূচি, আরিশ সূচি কে ঢুকতে দেখে রুমের দিক যেতে নিয়েও জায়গায় দাঁড়িয়ে যায়, সূচি এগিয়ে এসে আরিশ কে হাগ করতে নিলে, তৎক্ষণে জুথি আরিশের সামনে এসে দুহাতে আরিশ কে পিছনে রেখে ভ্রু কুঁচকে বললো,

Violent love part 31

‘মুখে কথা বলতে পারো না? জড়িয়ে ধরতে হবে কেন?
‘আরে আমার ভাই আমি জড়িয়ে ধরতে পারবো না? বোকা বনে যেয়ে।
‘না।
‘কেন?
‘আমি বলেছি তাই…..

Violent love part 32