Violent love part 37

Violent love part 37
Mariam akter juthi

“তীক্ষ্ণ পরিবেশ, গাড়ি চলাচলের আওয়াজ, চারিদিকে ল্যাম্পপোস্টের আলো ছড়িয়ে। ক্লান্ত হয়ে বসে আরিশ, আয়ান। তখন আয়ান আরিশ কে কোনরকম বুঝিয়ে ওকে নিয়ে থানায় আসে,সেখানের যত ঝামেলা, সবটা শুনে, সব গোছগাছ করে সামলাতে সামলাতে সেই সকাল থেকে রাত হয়ে গেছে। তবে ওদের কাজ এখনো সম্পূর্ণ হয়নি, অর্ধেক টা এখনো বাকি। রাত্র হয়ে যাচ্ছে তাই ওদের সাথে আসা লোক গুলোকে মোটামুটি সবটা বুঝিয়ে দিয়ে,আরিশ সারাদিনের চোটানো মেজাজ, ক্লান্ত শরীর নিয়ে চেয়ারে বসে পরলো। আজ অনেক কাজ করেছে, এখন তার বিশ্রাম পাশাপাশি বউ প্রয়োজন। এই মুহূর্ত বউ কাছে পেলে ক্লান্তি মেজাজ সব দূর হয়ে যাবে, তাই শ্বাস ফেলে আয়ানের দিক তাকিয়ে বললো,

‘আয়ান মস্তিষ্ক টনটন করছে, শরীর দুর্বল লাগছে। আমার বউ প্রয়োজন, বউ লাগবে আমার। দ্রুত বাসায় চল।
‘কিন্তু ভাই,,
‘আমি গেলাম বউয়ের কাছে ক্লান্তি দূর করতে, তুই ও চলে আয়। — বলে বাইক স্টার্ট দিয়ে চলে আসে। আরিশ কে চলে যেতে দেখে আয়ান ও আর দাঁড়ালো না সবাইকে সবটা বুঝিয়ে ও ও বাইক নিয়ে চলে আসে। আয়ান, ফুল স্পিডে এসে আরিশের পাশাপাশি হতে দুজনে, একসাথে ফুল স্পিডে বাইক রাইড করে একসাথে খান বাড়িতে ঢুকে, তখন রাত প্রায় দশটা। ওরা বাইক পার্কিংয়ে রেখে বাড়ির বাগান পর্যন্ত আসতে আরিশ দেখে, ফারি সূচি তানিশা পাশাপাশি বড় ছোট সব এক জায়গায় ছেলে বাড়ির লোকেদের বিদায় দিচ্ছেন। আরিশ সবাইকে এক জায়গা দেখে ভ্রু কুঁচকে ওখানে থাকা সবার দিক ভালো করে পর্যাবক্ষণ করলো, তার বউয়ের সন্ধানে। কিন্তু না তার বউ এখানে নেই। আরিশ বেশ অবাক হল। তার অবাধ্য বউ তার কথা শুনেছে? সবার মাঝে আসেনি? আরিশ একটা নিশ্বাস ফেলে মাথা থেকে রাগ কমিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে ফারিকে ডেকে বললো,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

‘আমার বউ কই?
আরিশ কে বাসায় ফিরে প্রথমেই বউয়ের খোঁজ করতে দেখে ফারি মুচকি হেসে বললো,
‘যাও যাও ভাই, তোমার জন্য চিলিকোঠার ঘরে সারপ্রাইজ আছে। – ফারিরি কথাটা বলতে দেরি কিন্তু আরিশের সামনের দিক পা ফেলতে দেরি হলো না। ব্যস্ত পাড়ে ছাদের সিঁড়ি ক্রস করে চিলেকোঠার ঘরের সামনে আসতে, চমৎকার সাজানো রুমের মধ্য তার বউকে রাদিফের সাথে জড়িয়ে থাকতে দেখে, তখনকার মস্তিষ্কে টগবগ করা রাগ যেন মুহূর্তে দাউ দাউ করে উঠলো। মুহূর্তেই ওর হাত দুটো মুঠিবদ্ধ হয়ে যায়। চোখ দুটো হয়ে ওঠে রক্ত বর্ণ। দাঁত যায় দাঁতের উপর পিষে, আরিশ এমন দৃশ্য হুংকার ছাড়তে, হঠাৎ আরিশের আগমনে রাদিফ জুথি কে ছেড়ে দিতে, সেদিক তাকিয়ে রাদিফ জুথি দেখে, আরিশ রক্ত আভা চোখ করে হাত দুটি মুঠি বদ্ধ করে, দরজার সামনে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে। তখনকার নিভে যাওয়া রাগটা যেন ওদের এমন দৃশ্যে দেখে দাউ দাউ করে ওর মস্তিষ্কে জ্বলে উঠলো। আরিশের এরাকোম চেহারা দেখে জুথি নিচের দিক তাকিয়ে বার কয়েক ঢোগ গিললো। তৎক্ষণে আরিশ মুঠিবদ্ধ হাত দুটো খুলে তাই দিতে দিতে রুমের ভিতর জুথির দিকে আসতে আসতে বললো,

‘বাহ এটাই ছিল চিলেকোঠার ঘরে তোর সারপ্রাইজ? দুজনার এমন রোমাঞ্চকর দৃশ্য দেখানোর?
আরিশ কে কথাটা বলে ওর দিকে এভাবে তেরে আসতে দেখে, জুথি ভয়ে বারবার চোখের পলক ফেলে পরনের সিল্কের শাড়িটা খামচে ধরে,- ‘ও এটারই ভয় পাচ্ছিল। আরিশ কে কাছাকাছি আসতে দেখে জুথি ভয়ে রাদিফের পিছন যেতে যেতে তুতলিয়ে বললো,
‘বি,বিশ্বাস করুন আ,আমি অবাধ্য হয়নি ত,তো আপনার। আ,আমার কোন দ,,, — ততক্ষণে আরিশ ক্রোধ শূন্য হয়ে তেরে তো আসছিল জুথির দিকে,কিন্তু রাদিফের মুখোমুখি হতে ঘুরে রাদিফ কে একের পর এক পাঞ্চ মেরে চেঁচিয়ে বললো,

‘তোর সাহস হয় কি করে? ওকে জড়িয়ে ধরার? তুই ওকে ছুঁয়েছিস? এই হাত দিয়ে ছুয়েছিস, তাই না? আজ আমি তোর এই হাত, সাথে তোকে সব একসাথে উপরে পাঠাবো। — বলে ফের মারতে যাবে ততক্ষণে রাদিফ ওর হাত চেপে বললো,
‘তোর হাত বেশি চলে, তাই না? আমিও কিন্তু তোকে মারতে পা,, ব্যাস ওর এতোটুকু বলার মধ্য আরিশের হাতে দাবাং মার্কা আরেকটা খেলো। মুহূর্তের মধ্যে দুই ভাইয়ের মধ্য হাতাহাতি শুরু হয়ে গেল। ওদের এমন মারামারি দেখে জুথি গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে বললো,

‘ক,কি করছেন? এভাবে মারামারি করলে মরে যাবেন তো আপনারা। এভাবে মারছেন কেন? – বলে আরিশ কে টেনে আনতে চাইলে, আরিশ ঘুরে জুথির গালে দাবাং মার্কা চড় মারতে জুথি ছিটকে মেঝেতে পড়লো।
‘ঠাসসসসসসস। – জুথি মেঝেতে পড়তে, আরিশ রাদিফ কে রেখে জুথি কে টেনে মেঝে থেকে তুলে চুলের মুঠি শক্ত করে চেপে ধরে বললো,
‘বান্দির বাচ্চা, হাফফুট, আমার অবাধ্য হোস, আজ আমি তোকে মেরেই ফেলবো। – বলে জুথির গলা স’জোরে চেপে ধরতে, জুথির চোখ মুখ লাল হয়ে যায়।

তাৎক্ষণে খান বাড়ির সকল মানুষ ছেলে পক্ষদের বিদায় দিয়ে, সাফওয়ান খান, সানজিদা খান লিমা খান মাহমুদ খান বাড়ির ভিতর আসেন, আর সবাই বাগানের ওখানে থেকে যায়, উনারা বসার ঘরে আসতে চিলেকোঠার ঘর থেকে এমন চেঁচামেচির আওয়াজ শুনে ছুটে গেলেন সেই ঘরের দিক, এসে এমন দৃশ্য দেখে সবার চোখ বড় বড় হয়ে যায়। –‘আরিশ তখনো জুথির গলা চেপে, তার পাশে রাদিফ বারবার চেষ্টা করছে জুথির গলা চেপে ধরে হাতটা ছাড়ানোর জন্য। ওদের এমন দৃশ্য দেখে সাফওয়ান খান মাহামুদ খান ছুটে এসে আরিশ কে টেনে দূরে আনতে আরিশ হুংকার ছেড়ে বললো,

‘আব্বু, চাচ্চু ছাড়ো আমাকে। আজ আমি এ দুটোকে মেরে দিব,তাহলে আমার জীবনের সব অশান্তি শেষ।
আরিশ কে ধরে রাখা যাচ্ছে না দেখে সাফওয়ান খান বললেন,
‘আমার বাবা, শান্ত হও! এভাবে রিয়াক্ট করছ কেন?
‘আব্বু,আমাকে ছাড়ো, রাদিফের সাহস হলো কি করে? নিষেধ করার পরেও ওই বান্দির কাছে আসার?
আরিশের শ্বাস-প্রশ্বাস কেমরে ভারী হয়ে উঠতে, ওকে সামলানো ওনাদের কাছে মুশকিল হয়ে উঠেছে। তাৎক্ষণে আরিশ উনাদের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে তেড়ে জুথির কাছে এসে আবারো ওকে মেঝে থেকে টেনে তুলে, বা হাতের কব্জি শক্ত করে ধরে বললো,

‘বান্দির বাচ্চা বারবার বলেছিলাম, আমার অবাধ্য হবেনি। এই বেহায়া রাদিফের কাছে ঘেষবি না, কিন্তু তুই আমার অবাধ্য হলি। আর অবাধ্য হওয়ার ফল আজ তোকে বোঝাবো। চল আমার সাথে। — বলে ওকে টেনে দরজা পর্যন্ত আনতে সাফওয়ান খান সানজিদা খান ওকে বাধা দিয়ে বললেন,
‘আরিশ তুমি এটা কি করছো? ওর হাতে ছাড়ো।
‘আমার সামনে থেকে সরো। -চেঁচিয়ে।
‘আরিশ তোমার মাথা ঠিক নেই, এই মুহূর্তে ওকে নিয়ে গেলে নিশ্চিত মেয়েটা মরে যাবে। – আরিশ উনাদের কথায় চোখটা বন্ধ করে জোরে জোরে শ্বাস নিতে নিতে বললো,
‘সরতে বলেছি তোমাদের সামনে থেকে।

‘আরিশ আমাদের কথাটা তো শো,, — আরিশ উনাদের কথা শেষ করতে না দিয়ে হুংকার দিয়ে বললো,
‘খোদার কসম,আজ তোমরা যদি আমার সামনে থেকে না সরো,আমি আরিশ এই মুহূর্তে বাড়ি ছেড়ে চলে যাব। তবে এবার কিন্তু একা নয় এই অবাধ্য নারীকে সাথে নিয়ে যাব, আর যদি একবার চলে যাই, তো এবারের মত আর ফিরবো না। কারণ তখন আমি বাড়ি এই নারীর জন্যই ফিরেছিলাম।
আরিশ কথাটা শেষ করতে, উনারা দুজন সরে দাঁড়ালেন। কারণ ওনারা আরিশকে ভালো করেই জানেন, আরিশ মিথ্যা বলে না। যখন সে বলেছে সে যাবে, বাধা দিলে সে যাবেই। তার কারো উপর ভরসা করে চলা লাগে না, নিজের কাজ খরচ সে নিজেই করে নিতে পারে। এই সাত বছর আরিশ বাহিরে কাটালেও একটা টাকা তার বাবা কিংবা গ্যান্টানারের’ টাকায় খরচ করিনি। নিজের টাকায় করেছে‌‌। উনারা সরে দাঁড়াতে আরিশ দরজা থেকে বের হতে নিলে জুথি ফুপিয়ে হিসকি দিতে দিতে ওর বড় আম্মু সানজিদা খানের দিক তাকিয়ে বললো,

‘ম,মা, তোমার ছে,ছেলেকে বলো না, আমাকে এ,এভাবে ভুল না বুঝতে। এ,এভাবে ভয় লাগে তো ওনাকে। কেমন রে,রেগে আছে। ও আম্মু আমার হ,হাতটা ছাড়তে বলো না,, — তাৎক্ষণে আরিশ ওকে টেনে সিঁড়ি পর্যন্ত আসতে, সানজিদা খান ওদের যাওয়ার দিক অসহায় করুন দৃষ্টিতে তাকালেন, আরিশ এতটাই জোরে সিঁড়ি থেকে নেমে আসছিল, জুথি ওর সাথে তাল মিলাতে না পেরে উষ্টা খেয়ে আরিশের পিঠে মুখ থুবড়ে বাড়ি খেলো, যার দরুন নাকে কপালে ভীষণ ব্যথা পেলো। আরিশ চলে যেতে মাহমুদ খান রাদিফের দিক তাকিয়ে গম্ভীর কন্ঠে বললেন,
‘তোমাকে জন্ম দেওয়াটা কি আমাদের ভুল ছিল? রাদিফ?

‘আব্বু,, — ওর বাকিটুকু কথা লিমা খান আর শুনলেন না, তার আগেই ওর কাছে এসে থাপ্পর বসিয়ে বললে —‘ঠাসসস।
‘তোকে সেদিন কতবার বোঝালাম, রোদের সাথে তোর বিয়ে ঠিক করলাম। আর তুই? বাবা-মা এতটাই এলা তুচ্ছ তোর কাছে? যে আমাদের কথার অবাধ্য হয়ে,,
‘আম্মু আমি রোদ কে নয় জুথি কে ভাল,,,
‘ঠাসসস। – ‘আর একটা কথা তোমার মুখ থেকে শুনতে চাই না। একটা কথা আমি ভালো করে বুঝে গেছি, তুমি কোনোভাবে শোধরাবে না। ভেবেছিলাম তোমার আর রোদের বিয়েটা কয়দিন বাদে দিব। কিন্তু না, তুমি কালকে ইভার বিয়ের আসরে রোদ কে বিয়ে করবে। আর আমাদের মুক্তি দিবে। – বলে লিমা খান মুখ অন্য দিক ঘুরাতে, রাদিফ ওর আব্বুর কাছে এসে বললো,
‘আব্বু আম্মুকে একটু বুঝাও না,

‘তোমার আম্মু যা বলছে সেটাই হবে, কাল ইভার বিয়ের মন্ডপে তোমারও বিয়ে হবে। আর এটা যদি তুমি না করো, তো এই বাড়ি থেকে সেই মুহূর্তে বেরিয়ে যাবে। –বলে উনারা সব চলে গেলেন, রেখে গেলেন এক হেরে যাওয়া ব্যথিত পুরুষকে। রাদিফ জানে লিমা খান মাহমুদ খান যখন বলেছে তখন রোদ কে বিয়েটা ওকে কালকেই করতে হবে। না মানতে চাইলেও মানাতে হবে, রাদিফ নাক ফুলিয়ে চোখ থেকে পানি ছেড়ে দিল, সে হারিয়ে ফেললো স্বপ্নে বোনা রঙিন মানুষটাকে, রাদিফ আর সইতে না পেরে দফ করে হাঁটু ঘিরে মেঝেতে বসে চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো,
“ভালোবাসা অসহায়, যদি মানুষ টা ভুল হয়” আমি ও ভুল ছিলাম, তাই তো হারালাম। তবুও খুব করে চাইছিলাম, নিয়তির কাছে তাকে আমি চিরতরে হারালাম।
“তখন আরিশ জুথি কে রুমে নিয়ে ওকে পিছন থেকে টেনে সামনে মেঝেতে ফেলে, দরজা আটকে জুথির দিকে ঘুরে চেঁচিয়ে বললো,

‘অনেকবার নিষেধ করেছিলাম আমার অবাধ্য হবি না, অবাধ্য হবি না। তোকে আমি অন্য কারো সাথে সহ্য করতে পারি না, ভিতরটা ফেটে যায়, পুরো শরীর দাউ দাউ করে জ্বলে। আজ তোকে আমি,,
‘আমার কথাটা তো একবার শুনুন, আমার ভুল হয়ে গে,,
‘’ওই চোপ, আমাকে কি তোর নায়ক মনে হয়? যে তোর ওই ন্যাকা কান্না দেখে তোকে ক্ষমা করে দিব? আমার সামনে একদম কাঁদবি না, চোখ থেকে দ্বিতীয়বার পানি বের করার সাহস দেখাবি না। কারণ আমি ভিলেন, আমি কাউকে সামান্য তেও ক্ষমা করি না। নিজের না হলে মেরে দেই, আর নিজের হলে সেটা ছিনিয়ে নেই। আর প্রসঙ্গে যখন তুই, তাহলে বরাবর আমিই ভিলেন।
জুথি আরিশের রাগ বাড়তে দেখে কান্নার তোপে হুশ হারিয়ে বললো,

‘থা,থাকবো না আমি আ,আপনার সাথে, আমি এখনই চ,চলে যাব। আ,, – ওর মুখের কথা শেষ করার আগে,আরিশ জুথির এতুর কথায় রাগে শূন্য হয়ে, পড়নের বেল্টটা টেনে খুলে জুথির ছোট শরীরে আঘাত করতে করতে বললো,
‘হাফফুটের বাচ্চা, তোর সাহস কি করে হয় আমার সাথে থাকবি না বলার? তোকে তো আমি আজ,, — বলে বেল্ট দিয়ে চার পাঁচটা বাড়ি দিতে, জুথি মার সহ্য করতে না পেরে মেঝেতে নেতিয়ে গেল। কেমন কান্না করাটাও ভুলে গেল, তার মাথা ভনভন করে ঘুরছে,এতক্ষণ এভাবে কান্না করার জন্য। তার ওপর এভাবে মার ও এই সাত বছরে খাইনি। এমন নয় যে ও মোটেও মার খায়নি, সে সবার হাতে অসংখ্য থাপ্পড় খেয়েছে, থাপ্পর খেতে খেতেই এই পর্যন্ত বড় হওয়া। জুথি কোনরকম শ্বাস নিল, তার শ্বাস নিতে বড্ড কষ্ট হচ্ছে। মনে হচ্ছে সেন্সলেস হয়ে যাবে। তাৎক্ষণে আরিশ জুথির কান্নার শব্দ না পেয়ে হাতের বেল্ট টা ছুড়ে অন্য পাশে ফেলে বললো,

‘এভাবে বেল্ট দিয়ে মারলে তুই মরে যাবি, তখন আমি কিভাবে থাকবো? কিন্তু তোকে এভাবে আর ছেড়েও দিব না, আজ তোকে সম্পূর্ণ ভাবে আমার করে নিব, তখন আর পর পুরুষের দিকে তাকাতেও মনে হবে, তুই শুধু আমার একান্তই আমার ব্যক্তিগত নারী।– বলে আরিশ শরীরের জড়ানো পাঞ্জাবিটা খুলে জুথির কাছে আসতে, জুথি নিভু নিভু চোখে আরিশের দিকে তাকালো, আরিশের বলা, তোকে সম্পূর্ণ আমার করে নিব বাক্যের মানে সে ঠিকই বুঝেছে। তবে আজ এসব কিছু হলে জুথি এবার সত্যিই মরে যাবে। জুথি আরিশ কে বারবার বলতে চাইলো, আরিশ যেন ওর সাথে এমন কিছু না করে। ও মোটেও ওর সাথে আরিশ কে সহ্য করতে পারবে না।

সে ভীষণ উইক, জুথি তো আজ তার আরিশ ভাই কে মনের কথা বলতে চাইছিলো, ও তো নিজেই চাইছিল ওদের দুজনের সম্মতিতে আজ এই রাত স্মরণীয় হোক। সেখানে কি থেকে কি হয়ে গেল? আরিশ তাকে বুঝতে চাইল না? তার কথা শুনল না? জুথি নিভু নিভু চোখ করে আরিশের দিক চেয়ে থাকলো, তবে আরিশ যেন জুথির চোখের ভাষা বুঝলো না। আরিশ জুথির কাছে এগিয়ে ওর শরীর থেকে সিল্কের শাড়িটা বুকের উপর থেকে টেনে সরিয়ে, শাড়িটা খুলে মেঝেতে ফেলে দিল। আরিশ তার মৌ কে নিজের করবে বলে, দুটো শরীরকে আজ একত্রিত করে দিল। বিষাক্ত পরিস্থিতিতে মিলন হলো দুটি হৃদয় ও দুটি শরীরের। আরিশ দশ মিনিট জুথি তে মত্ত থেকে ক্লান্ত হয়ে জুথির বুকের উপর শুয়ে পড়তে দুই মিনিট পার হতে জুথির কোন রেসপন্স পেল না। পাবে কি করে? জুথি তো সেই ছয় সাত মিনিট আগেই সেন্সলেস হয়ে গেছে। আরিশ জুথির রেসপন্স না পেয়ে, মুখটা তুলে জুথির মুখের দিক তাকাতে দেখে, জুথি হুসে নেই। না আছে কোনো রেসপন্স, না নিচ্ছে শ্বাস, জুথি কে নিঃশ্বাস নিতে না দেখে ওর মুখ থাপরে বললো,
‘বউ ব্যথা পেয়েছো? আমি কি তোমাকে জোরে ব্যথা দিয়েছি? এই বউ?

জুথির কোন সারা শব্দ না পেয়ে দ্রুত উঠে বসে ওর দিকে ভালো করে তাকাতে দেখে, বিছানার চাদরে রক্তের দাগ চিকচিক করছে। জুথির উন্মক্ত শরীরে মারের দাগ গুলো স্পষ্ট ফুটে উঠেছে কালচে বর্ণ ধরে। জুথির শরীরে ওর নিজের করা আঘাতের এমন অবস্থা দেখে কলিজা দাউ করে উঠলো ওর। গলাটা ঢোগ দিলে ভিজিয়ে নিল। সে রাগের তোপে ছোট্ট মেয়েটার সাথে কি করেছে স্মরণে আসতে, তৎক্ষণে জুথি কে টেনে ওর হাঁটুর উপর মাথাটা রেখে বললো,

‘আমার সোনা, I’m সরি। আর এমন হবেনা, চোখটা খোল প্লিজ জান। কোনভাবে কোনরকম জুথির রেসপন্স না পেয়ে ওর মাথাটা বুকের সাথে চেপে ধরে শ্বাস ফেলতে ফেলতে উন্মাদের মতো বললো,
‘মৌ, এই মৌ? কথা বলছিস না কেন? কথা বল মৌ, মৌ রে, চোখ টা খোল না জান, এই জান,জানরে বিশ্বাস কর আর কখনো তোকে এভাবে মারবো না। এখন তো তুই সম্পূর্ণ আমার হয়ে গেছিস,আমাতে বিলিন হয়েছিস, এখন আর কেউ তোকে ভালোবাসার কথা বলতে পারবে না। তোর দিকে হাত বাড়ানোর সাহস পাবে না বউ। বউ তোকে কি বেশি ব্যথা দিয়েছি? তাহলে বল, আর নয়তো এই বেল্ট দিয়ে আমাকে মার, তবুও চোখ টা খোল বউ, ও বউ,বউরে। আমার হৃদপিন্ড আমার নিঃশ্বাস, তোকে ছাড়া শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে, বুঝতে পারছিস না তুই?

Violent love part 36

আরিশ পাগলের মত করে কথাগুলো বলে,জুথির হাতের পাল্স চেক করতে দেখে ওর পাল্স খুবই সামান্য। এটা দেখে আরিশ দ্রুত উঠে দাঁড়ালো। ওর শরীরে কোন পোশাক নেই, ও সে অবস্থায় দ্রুত দরজা পর্যন্ত আসতে ওর স্মরণে এলো,ওর শরীরে কোনরকম পোশাক নেই, এটা দেখে আরিশ রুমের মধ্যে আবারো ফিরে এসে দ্রুত একটা হাটুর উপর পর্যন্ত আন্ডার প্যান্ট পরে, কভার খুলে জুথির একটা পাজামা গোল ফ্রক নিয়ে ওকে পরিয়ে, কোলে নিয়ে সোফায় রেখে, রক্তে মাখোমাখো হওয়া চাদরটা তাড়াতাড়ি করে চেঞ্জ করে, জুথির কাছে এসে ওকে আবারো কোলে তুলে বিছানায় শুয়িয়ে, দরজাটা খুলে দ্রুত পায়ে হেঁটে সানজিদা খানের রুমে এসে পাগলের মত করে বললো,
‘আম্মু আমার বউ কথা বলছে না, কান্না করছে না। দেখো না ওর কি হয়েছে? ওকে একটু বলোনা আমার সাথে কথা বলতে..

Violent love part 38