Violent love part 5
Mariam akter juthi
“প্রতিদিনের মতো আজও সন্ধ্যা হওয়ার প্রায় ১ দের ঘন্টা আগে,ফারি জুথি ছাঁদে এসে আড্ডা দিচ্ছে। সারাদিন কার কেমন কাটলো সেই নিয়েই আলোচনা। অনেকক্ষণ আড্ডা দেওয়ার পরে হঠাৎ করে জুথির মনে কিছু মনে আসতেই তারাতাড়ি করে উঠে বললো,
‘ফারি রে তুই বস, আমি এখুনি আসছি।
‘কেন কোথায় যাবি?
জুথি আর উওর করলো না, দৌড়ে নিচে নামলো। নেমে কাঙ্ক্ষিত জিনিস টা হাতে নিয়ে একই রকম দৌড়ে ছাঁদে উঠে হাঁফাতে হাঁফাতে বললো,
‘এসে পেরেছি।
‘এখন বল গেছিলি কোথায়?
‘বলছি একটু জিরিয়ে নি।
জুথি বক্স থেকে ফোন টা বের করে ফারির সামনে ধরে বললো,
‘এই দেখ,
ফারি জুথির হাতে দামি ফোন দেখে প্রচন্ড পরিমান শক হয়,মুখটা হাঁ হয়ে যায়। হুট করেই জুথির হাত থেকে ফোনটা ছো মেরে ওর হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে তাজ্জব কন্ঠে বলল,
‘ফোন টা তো মনে হয় ৫০ হাজারের উপরে হবে। তুই এই ফোন পেলি কোথায়?
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
‘রাদিফ ভাইয়া দিয়েছে।
‘হ্যা উনি তোকে এই ফোন দিয়েছে?
‘না আমি চুরি করে এনেছি।
‘আর হ্যাঁ দুই দিন হয়ে গেল আগে তো বললি না।
‘আরে এই দুদিন পর পর পরিক্ষা ছিল,তাই পরার টেবিলেই বেশি ছিলাম। আর ফোনটা যখন দিয়েছিল তখন রুমে রাখার পরে আর ফোনের কথা মনে ছিল না যে তোকে বলবো।
‘আরিশ ভাইয়া জানে? উনি তোকে ফোন দিয়েছে।
‘আরে তোকেই মাএ বললাম, উনি জানবে কি করে। আর জানলেও আমার কি? উনি ওনার মতো আমি আমার মতো।
‘ভেবে বলছিস?
‘না,গো ললিতা। আমার ভাবনা তো বোইওম বরে রাখছি।
‘জুইথা,,,,
‘আরে গাধি সাঁরের মতো চেঁচাবি না,
‘অসব্য মেয়ে গাধা হয়ে সাঁরের মতো চেঁচায় কেমনে?
‘তাহলে মানছিস তুই গাধা?
‘শয়তান মেয়ে তুই দাঁড়া, আমি গাধা তাই না?
জুথি কে আর পায় কে, খিলখিল করে জোরে জোরে হাসতে হাসতে গোল গোল দৌড়াতে লাগলো,ফারিও জুথির পিছে পিছে থাম বলছি বলে দৌড়াতে লাগলো, একটা সময় পরে জুথি নিজেই থেমে যায়। গায়ের পাতলা জর্জেটে ওরনা দিয়ে নাক চেপে ধরে বলল,
‘তুই কি বাজে কোন গন্ধ পাচ্ছিস?
এতক্ষণ দৌড়াদৌড়ি করার জন্য অনেকটা ঘেমে গেছে জুথি, হাপিয়েও গেছে বেশ, ঘন ঘন নিঃশ্বাস ফেলার ভেতর নাক চেপে ধরায় শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে ওর। প্রায় দম বন্ধ হয়ে আসার পালা, কোনরকম হাঁপাতে হাঁপাতে শ্বাস নিতে নিতে আবারো বলল,
‘ফারি রে আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। কেমন বাজে একটা গন্ধ আসছে, যে গন্ধটা আমি একদম সহ্য করতে পারছি না।
ফারিও গন্ধটা পাচ্ছে তবে ওর তেমন সমস্যা হচ্ছে না, ও ভালো করে স্মাইল নিয়ে বলল,
‘এটাতো সিগারেটের গন্ধ আসছে।
‘আমাদের ঘরে তো কেউ সিগারেট খায় না।
ফারি ছাদের আশেপাশটা ভালোভাবে তাকালো তখন ছাদের রেলিং ধরে আরিশকে এক দৃষ্টিতে জুথির দিকে তাকিয়ে সিগারেট খেতে আর তার ধোঁয়া ছড়াচ্ছে দেখে,ফারি তপ্ত শ্বাস ছেড়ে ওর দিকে এগিয়ে গিয়ে বলল,
‘ভাইয়া ওটা ফেলে দাও মউ শ্বাস নিতে পারছে না।
ফারির কথায় আরিশের কোন হেলদোল হলো না। এখনো এক দৃষ্টিতে তার মউয়ের দিকে তাকিয়ে আছে। তবে কিছু একটা ভেবে ফারির দিকে তাকিয়ে বলল,
‘তুই নিচে যা আমি আমার মউ কে সামলে নিচ্ছি।
ফারি কে কথাটা বলতে দেরি কিন্তু ওর যেতে দেরি হলো না, একবার জুথির দিকে তাকিয়ে বিনা বাক্যে চলে গেল। ফারি কে চলে যেতে দেখে আরিশ সিগারেটের ধোঁয়া ছড়াতে ছড়াতে জুথির কাছে গিয়ে দাঁড়ায়, জুথির নাকে আসা গন্ধটা আরো তীব্র হয়। দু পা পিছাতে পিছাতে একদম রেলিং এর সাথে মিশে যায়। এতটা তীব্র গন্ধ না নিতে পেরে চোখ দুটো লাল হয়ে তাতে পানি জমে যায়। তবুও অনেক কষ্টে আরিশ কে বললো,
‘দয়া ক,করে হাতের সিগারেটটা ফেলে দি,দিন। আমি এগুলো খা,,খাওয়া একদম পছন্দ করি না,আর এসব কি,,কিছুর ধোঁয়া সহ্য করতে পারি না, প্লিজ ফেলে দিন।
আরিশ মায়া ভরা দৃষ্টি নিয়ে তার মউয়ের কথাগুলো শুনলো অতঃপর সিগারেটটা মুখের কাছে নিয়ে জোরে একটা টান দিয়ে হাত থেকে সিগারেটটা ফিক্কা মেরে নিচে ফেলে দিল। মুখটা উপরে আকাশের দিকে ও এর করে ধোয়াটা আকাশের দিকে উড়িয়ে দিয়ে তার মউয়ের দিকে তাকিয়ে বলল,
‘আমি আরিশ আজ এই মুহূর্ত থেকে সিগারেট খাওয়া বন্ধ করে দিলাম শুধু আমার মৌচাকের জন্য।
জুথি আরিশের কথাটা মালুমে নিলোনা। কারন সে তখনও গন্ধ থেকে নিজেকে প্রটেক্ট করার জন্য ব্যস্ত। কিছুক্ষণ পর গন্ধটা না পেয়ে মুখ থেকে ওড়নাটা সরিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিল। তারপর আস্তে আস্তে চোখ খুলে আরিশের দিকে তাকায়।
ভেজা চোখ গোলাপি টকটকে কাঁপা কাঁপা ঠোঁট, নিজেকে স্বাভাবিক রাখতে পারল না। তাই সাথে সাথে চোখ দুটো বন্ধ করে মাথাটা একটা ঝাড়ি দিয়ে চোখ মেলে তাকালো, আবারো চোখে পরলো মউয়ের মায়া ভরা মুখটা। ব্যাস নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারল না। দুই হাত রেলিং এর দুই পাশে রেখে, জুথি কে দুই হাতের মধ্যে করে নিলো যাতে বের না হতে পারে। আস্তে আস্তে করে জুথির ঠোঁটের কাছে ঠোঁট নিয়ে গভীরভাবে ঠোঁট দুটো নিজের আয়ত্ত করে নিলো জুথি শক ভীষণ ভাবে শক হল, যেমনি ভাবে মানুষ ধ্যানে পড়লে তার আশেপাশে কি হয় কিছুই বুঝতে পারে না জুথির বেলায় ঠিক তেমনটা হয়েছে। টানা এক মিনিট না দুই মিনিট না সাত সাতটা মিনিট আরিশ জুথির ঠোঁট দুটো নিজের ঠোঁটের সাথে আবদ্ধ করে রেখেছে। আরিশের চুমু খেয়ে মন ভরে গেলে, আস্তে তার মউয়ের ঠোট দুটো ছেলে দেয়। তৃপ্তির চোখে তাকিয়ে আবারো শব্দ করে গালে চুমু খায়। হুশ আসে জুথি, আরিশ কে নিজের কাছ থেকে ঠেলে সরাতে চায়। কিন্তু আরিশ কে এক চুল ও সরাতে পারিনি।আরিশ জুথির আদলের দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,
‘তোর শত ভুল শত অন্যায়,আমি হাজার বার ক্ষমা করতে রাজি কিন্তু তোর ভুল অন্যায় ক্ষমা করলেও, তোর দিকে যে হাত বাড়ানোর চেষ্টা করবে তাকে শেষ করতে আমার এক মুহূর্ত সময় লাগবে না। কারণ তোকে সম্পূর্ণই আমার থাকতে হবে —এতোটুকু বলে আবারো অন্য গালে শব্দ করে চুমু খায়।
পরপর চুমু খেতে দেখে জুথি আরিশ কে ধাক্কা দিয়ে,হাত দুটো দিয়ে গাল ঘষতে ঘষতে বলল,
‘ছি বারবার এভাবে চুমু খাচ্ছেন কেন? আপনার লজ্জা করে না আপনি ভাই হয়ে,,,,
হুট করে কি হলো বুঝলো না, যখন ঠোঁটে ব্যথা অনুভব করে তখন উম উম শব্দ করলো, আরিশের থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য। কারণ আরিশ জুথির ঠোঁট দুটো কামড়ে ধরেছে। জুরি বারবার হাত থাপড়াচ্ছে আরিশের থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য। একটা সময় আরিশ ছেড়ে দিল। যখন জুথির ঠোট দুটো ফুলে উঠলো, জুথি ঠোঁটে হাত দিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে ফুপিয়ে কান্না করছে। আরিশ জুথি কে কান্না করতে দেখে ভেজায় বিরক্ত হয়ে বলল,
‘সোজা রুমে যাবি, গিয়ে পড়তে বসবি মউ। আমি ফারি কে দিয়ে সন্ধ্যার নাস্তা পাঠিয়ে দেবো।
জুথি ফুপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে নিচে নেমে এলো। তখন ওখান দিয়ে রাদিফ ও রুমে যাচ্ছিল। জুথি কে কাঁদতে কাঁদতে রুমে যেতে দেখে ভ্রু কুঁচকে সেদিকে তাকিয়ে পাশে থাকায় তখন আরিশ ও ছাদ থেকে নেমে এসেছে।আরিশ কে দেখে রাদিফ এগিয়ে এসে বলল,
‘জুথি কান্না করতে করতে গেল কেন? তুই কিছু বলেছিস?
‘সেটা কি তোর মত *বালেল কাছে কৈফত দিতে হবে?
‘মুখের ভাষা ঠিক করে কথা বল।
‘কি করবি তুই আমার বাল ফালাবি?
‘দরকার হলে বাল ফালাবো।
‘ঠিক আছে আগে ফালাবি তারপর বলতে আসবি।
‘তুই জুথির থেকে দূরে থাকবি।
‘সেটা তুই বলার কে রে?? বরঞ্চ তুই দূরে থাকবি আমার মউয়ের থেকে আর নয় তো ভুলে যাব তুই আমার এক রাবিতে ভাই হোস।—বলে রাদিফ কে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে দফদফ পা ফেলে সেখান থেকে চলে যায়।
সময় চলে যায় স্রোতের মতন, তখন ছাদ থেকে আসার পরে জুথি রাতের খাবার খেতে আর নিচে নামেনি।ফারিও ওর আর রুমে যায়নি। সন্ধ্যা থেকে একটানা পড়ার পর টেবিল থেকে উঠে দাঁড়ায়, জুথি অনেকটা পড়া পড়ে ফেলেছে। এখন আর কিছুই মাথায় ঢুকছেনা। তাই এখন ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি। যদিও খিদা লেগেছে, তবু সে আজ নিচে নামবে না আরিশের মুখোমুখি সে হবে না। কিছুক্ষণ পাইচারি করার পর তানিশার কথা মনে উঠতেই ওর ফোনটা হাতে নেয়। চটজলদি করে ফোন দেয় ওর নাম্বারে। কিছুক্ষণ রিং বাজার পরে রিসিভ হয় অপর পাশ থেকে।
‘ওই জানু কি করস রে।
‘এইতো মাত্র পরে উঠলাম। বাইদা এটা কি তোর নাম্বার?
‘হুম।
‘তুই কি কর?
‘আমি মাত্র পরে উঠলাম।
‘আমি বুঝতে পারি না তোর আর আমার সব সময় এত মিল হয় কিভাবে? জ্বর আসলে তোরও আসবে তোর সর্দি হলে আমারও সর্দি হবে। আমার তো মাঝে মাঝে মনে হয় আমরা আগের কোন জনমে জমজ বোন ছিলাম।
‘তুই এইসব কথা বাদ দে, এখন বল তখন কে এসেছিল?
তানিশা ওকে সব বলল শুধু বলল না, আয়ানের কথা গুলো। কারণ জুথি যদি জানতে পারে আয়ান ওকে পছন্দ করে তো কাম হয়ে গেল। এমনিতেই সারাদিন তোর মাথা খায় দুই ভাইয়ের মধ্যে এক ভাইয়ের বউ করে আনবে। তাই আর বলতে গিয়ে বলল না। তানিশার ও খুব ইচ্ছে ছিল ওর ভাইটা বড় থাকলে জুথিকে ওর ভাবি বানাবে। কিন্তু স্বপ্ন তো স্বপ্নই রয়ে গেল। কারণ ভাইটা যে অনেক ছোট। দুই বান্ধবী আরো কিছুক্ষণ কথা বলে ফোন কেটে দিয়ে যে যার মত শুয়ে পড়ল।
অন্ধকার কে কাটিয়ে বিশাল সূর্যটা উদিত হলো পৃথিবীর বুকে, চারিদিকে সূর্যের আলোয় আলোকিত হল।খান বাড়িতেও কর্তাদের খাওনের জন্য করতিরা রান্নার কাজে ব্যস্ত হয়ে গেল। এমন সময় আরিশ ফুল রেডি হয়ে আয়ান কে নিয়ে বাসা থেকে বের হতে নিলে সানজিদা খান দৌড়ে এসে বললেন,
‘আরিশ বাবা তুমি কিছু খাবে না? আর এতো সকালে তুমি কোথায় বের হচ্ছে?
‘ইলেকশন নিয়ে একটু ঝামেলায় আছি, সেখানেই যাচ্ছি।
‘খাবার খেয়ে যাও।
‘না আম্মু এখন খাওয়ার সময় পাবো না। বাহিরে গিয়ে খেয়ে নেব।
‘আয়ন তুমিও খাবে না?
‘না বড় আম্মু আমিও ভাইয়ের সাথে খেয়ে নেব, তোমরা বরং খেয়ে নাও।
Violent love part 4
দুই ভাই আর দাঁড়ালো না ব্যস্ত পায় হেটে গেল। তখন রেডি হয়ে জুথিও সিঁড়ি দিয়ে নাম ছিল। জুথিকে দেখে সানজিদা খান খাবার খেয়ে পরীক্ষা দিতে যেতে বললেন। জুথি আজ ভীষণ অবাক হচ্ছে, কত বছর হয়ে গেল তার বড় আম্মু তার সাথে হাসি দিয়ে কথা বলে না, আজ কত সুন্দর করে বলল।জুথিও দৌড়ে বড়মা যেই জায়গায় দাঁড়ানো সেখান থেকে একটা চেয়ার টেনে খেতে বসে বললো,
‘দেও বড় আম্মু খেতে দাও।
সানজিদা খান বিরক্ত হলেন, তার রেস ধরেই বললেন। যেটা খাবি ওখানে রাখা আছে নিয়ে নে,,,,