Violent love part 6

Violent love part 6
Mariam akter juthi

“অতি জ্যাম হওয়াতে সামনের গাড়িগুলো একে একে আটকে আছে, সবাই বিরক্ত বেশ। কিছুক্ষণ পরে জানা গেল সামনের রাস্তা আটকানো। সেখানে নাকি দুই পক্ষের মারামারি হচ্ছে, এমপি ইলেকশন নিয়ে। সাধারণ অনেক মানুষ এটা শুনে ভয় পেয়ে যায়। সামনে এগোনোর সাহস কেউই হলো না। গাড়ি নিয়ে চলে যাওয়ার সুযোগ হচ্ছে না। তাই যে যার গাড়ির ভিতর চুপচাপ সামনে কি হচ্ছে তা তামাশা দেখে যাচ্ছে। এক সময় মারামারি থেকে তীব্র ঠাস ঠাস শব্দ সোনা যায়। এটা কোন সাধারণ শব্দ নয়, গুলির শব্দ।
ওখানে থাকা প্রায় মানুষই দোকানপাট বন্ধ করে যে যার বাড়ির উদ্দেশ্যে জীবন বাঁচানোর জন্য চলে যায়। প্রায় অনেক মানুষ চলে যাওয়াতে জায়গাটা পুরো জনশূন্য হয়। তখন গাড়ির ডিকির উপর উঠে পায়ের উপর পা তুলে আরিশ বললো,

‘এত বছরও আমাকে চিনলি না? সোজা আমার সাথে পাঙ্গা নিতে চলে আসলি?
বিরোধীদলের নেতৃত্বের ছেলে আমান সিকদার বলল,
‘দেখ আরিশ খান তুই এত বছর দেশে ছিলি না, তাই আমাদের সম্বন্ধে তোর আইডিয়া নেই। এইবার ইলেকশনে আমরাই বিজয়ী হব। আর এতে কোন বাধা আসলে তাকে,,, ওর বাকি কথা শেষ করতে না দিয়ে আরিশ গাড়ির ডেকির উপর দু’পা উঠিয়ে আসন দিয়ে বসে বলল,
‘তা আমি তো এত বছর দেশি ছিলাম না, তখন কেন তোরা এমপি হলি না?
‘তখন হতে পারিনি হয়নি, এখন হব।
‘তোদের মনে সন্দেহ হয় না? কিভাবে প্রতিবছর আমার বাবা নেতা পদদল থেকে চেঞ্জ হচ্ছে না?
‘মানে??

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

‘আরিশ খান যে কাজে নামে তা সফল করেই ছাড়ে। আর ক্ষমতা ক্ষমতা খেলা এটা আমার ছোটকালের নেশা। তোদের মত চেলা পেলারা, পারে শুধু বাড়তি জামেলা করতে।
‘আরিশ খান তুই কি আমাদের ভয় দেখাতে চাচ্ছিস?
‘তোর কি মনে হয় শুধু ভয়, তাহলে কি তোদের নিয়ে আসা এতগুলো মানুষকে উরিয়ে দিতাম?
আমন কিছুটা ভয় পায়,আরিশ কে হাতের বন্দুকটা গোল গোল ঘুরাতে দেখে। তবুও ভয় কে আরিশ কে বুঝতে না দিয়ে বলল,
‘দেখ আরিশ খান আমাদের কাজ আমাদের করতে দে। তাহলে আমরা ও তোর পথে বাধা হবো না। তুই এবার এমপি হবি।
‘শু***র বাচ্চা , নারীদের ব্যবসা করবি তাও আমাদের খেতাব নিয়ে? আবার সেটা আমাকে জিজ্ঞেস করছিস? তোর জিভ টেনে যে এখনো ছিড়ে ফেলিনি, সেটাই তোর সাত পুরুষের কপাল। ভালই ভালই বলছি জীবনটা অকালে হারাস না। এই পথ ছেড়ে দে।

‘আরিশ খান তুই এখন নেতা হসনি।
‘হয়নি হয়ে যাব।
‘তুই কি,,,
‘দেখ তোদের সাথে ফালতু কথা বলার টাইম আমার কাছে নেই। যে জন্য এখানে আসা, মেয়েগুলোকে ছেড়ে দে।
‘যদি না দেই?
ঠুসসস,,
আমান গুলি চালানোর শব্দ শুনে নিজের শরীরে এপাশ থেকে ওপাশে দেখতে থাকে, পুরো শরীরকে চেক করে স্বস্তির নিঃশ্বাস নেয়। কারণ ও ভেবেছিল আরিশ গুলিটা ওকেই করেছে। তাই ভয়ে ভয়ে চোখ দুটো কোনরকম আরিশের দিক করে বলল,
‘মেয়েগুলোকে ছেড়ে দিচ্ছি, কিন্তু তোকে আমি দেখে নিব।
‘যাঃ দেখার পর যদি আরিশ খানের বালে দড়ি দিতে পারিস, তাহলে দিস। এখন চোখের সামনে থেকে ফট আর নয় তো এবার গুলিটা মিস হবে না, ডাইরেক্ট তোর বুকে গাধবে।

আমান একে একে মেয়েগুলোকে আরিশের গাড়িতে তুলে দেয়। তখন রাস্তাটা অনেকটা খালি থাকায় রিক্সা করে জুথি তানিশা পরীক্ষা শেষ করে বাসায় আসছিল। তখন ওখানে এক জায়গায় অনেক মানুষকে দেখে রিক্সা থামিয়ে জুথি যায় ওখানে কি হচ্ছে দেখার জন্য। গিয়ে চোখে পড়ে আরিশ পিস্তল হাতে গাড়ির ডিকির উপর বসে আছে। এটা দেখে আশেপাশটা আর একটু তাকিয়ে দেখলো। অনেক লোককে দেখে মনে মনে এটা ভাবে বজ্জাত আরিশ টা আবার কি কান্ড ঘটালো। তাই কৌতুহল নিয়ে ছুটে আরিশের সামনে গিয়ে কোমরে হাত দিয়ে বলল,
‘এই যে আপনি এখানে কি করছেন? আর আপনার হাতে এটা কি?
আরিশ জুথি কে এই স্থানে মোটেও আশা করিনি। একবার জুথির দিকে তাকিয়ে, পরমুহুর্তে মাথাটা কাত করে আমানকে দেখল, শকুনের দৃষ্টি নিয়ে ওদের দিক তাকিয়ে আছে। এটা দেখে আরিশ আবারো জুথির দিকে তাকায়, কিছুক্ষণ তাকিয়ে বাঁকা হেসে আমানের উদ্দেশ্যে বলল।

‘তোরা না কতগুলো মেয়েকে পাচার করতে চাচ্ছিলি? দেখ আমার সামনে একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে,দেখে তো মনে হচ্ছে একদম পিওর ভার্জিন। তোরা এই মেয়েটাকে বরং পাচার করতে পারিস।
জুথি এটা শুনে দুপা পিছিয়ে যায়, একবার আরিশের দিকে তো আর একবার আমানের দিকে তাকিয়ে। ঢোক গিলে বলল,
‘আমি তো এখানে শুধু কি হয়েছে দেখতে এসেছিলাম, তাই বলে এখন আমাকে পাচার করে দিবেন? মুখটা ছোট করে।
আমান জুথির দিকে তাকিয়ে কিছু বোঝার চেষ্টা করলো, আসলে মেয়েটার সাথে আরিশের কোন সম্পর্ক আছে কিনা। তাই আরেকটু বিষয়টা বোঝার জন্য ওদের দিকে এগিয়ে গিয়ে বলল,
‘ঠিক আছে, আরিশ খান কোন মেয়েকে নিজে থেকে পাচার কথা বলছে ফিরিয়ে দেই কিভাবে?
জুথি আরেকটু আরিশের কাছে এগিয়ে গিয়ে ভয়ে ভয়ে বলতে নিল,

‘ভাইয়া আমি আপনার ব,,
‘ঠাসসসস
‘আপনি আমাকে মারলেন? দুই চোখ থেকে টপ টপ পানি গড়িয়ে পড়ছে।
‘আয়ান এই মেয়েকে আমার সামনে থেকে বিদায় কর। আর নয়তো এখানে আরো একটা লাশ পড়বে।
আয়ান দৌড় জুথির কাছে এসে, ওর এক হাত ধরে রিক্সার দিক যেতে যেতে বলল।
‘তুই এখানে এলি কিভাবে বোন? তাছাড়া যেখানেই ঝামেলা সেখানেই তোকে কেন আসতে হবে? নিজেও মরবি সাথে আমাকেও মারবি।
‘কিন্তু ভাইয়া উনি,,
‘একদম চুপ কর। এখানে বসে আর একটা কথাও যেন তোর মুখ থেকে না শুনি। গাড়ি করে দিচ্ছি সোজা বাড়ি যাবি।
জুথি আর কথা বাড়ালো না, কান্না করতে করতে তানিশার সাথে গাড়িতে উঠে পড়ল।
‘ঠিকই আছে তুই এখানে গেছিলি কেন? তোকে নিষেধ করেছিলাম না? ‘তানিশা’
‘আমি কি বুঝেছিলাম ওখানে উনি ছিল? নাক টেনে টেনে।
‘তুই তো কিছুই বুঝিস না, দুটো খাস তারপর তোর শিক্ষা হয়।
‘আমি না হয় একটু ভুলই করেছি তাই বলে উনি আমাকে মারবেন?
‘,,,,,,,

তানিশাকে চুপ করে থাকতে দেখে, জুথিও গালে হাত দিয়ে চুপ হয়ে যায়।
“সারাদিন পার হয়ে গেল ছেলেটা এখন পর্যন্ত বাসায় ফিরলো না। ফোন করছি তাও ধরছেনা।আপনি একটু গিয়ে দেখুন না। বললেন সানজিদা খান।
‘আমি গেলে কি তোমার ছেলে আসবে? সে তো আমার সাথে কথা পর্যন্ত বলে না। আয়ন কে ফোন দিয়ে দেখো ওরা কোথায় আছে।
‘ওরা কেউই ফোন ধরছে না। আপনি একটু ব্যবস্থা করুন না।
‘রাদিফ তো ফিরল সেই কখন, ওকে গিয়ে বল। আমি ডেকেছি,
‘আপনার কি মনে হয়? রাদিফ কে আপনার ছেলে সহ্য করতে পারে? আমি ওর মা, ওর মনে কি চলে একটু হলেও বুঝতে পারি।
‘সে তো আমার সাথে কথা বলে না তাহলে কি আমার সাথে আসবে? কিছুটা রাগী কণ্ঠে।
‘বারবার আপনি এক কথা বলছেন কেন? আপনি যেচে গেছেন আমার ছেলেটাকে একবারও মানানোর জন্য? আমার ছেলেটা একটু রাগী কিন্তু সে আপনাকে ভীষণ ভালোবাসে সম্মান করে।
সাফওয়ান খান দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়েন, উনি কোন মুখ নিয়ে ওনার ছেলেকে মানাতে যাবেন? সেদিন কি ওনার ছেলের কথা উনি শুনেছিলেন? একদমই শুনেন নি। বরং সবার বিরুদ্ধে গিয়ে ছেলেকে শাস্তি দিয়েছিলেন। উনার মনে পড়েন সেদিনের কথা,

‘সাত বছর আগে’
“ রাদিফ জুথি, ছাদে বসে খেলছিল। মূলত সেখানে আয়ান ইভা ফারি ও রোদ ছিল।মনি তিন বছরের থাকায় সে নিজের মায়ের কাছেই ছিল। আর বাকি সবাই মিলে এক জায়গায় বসে ট্রুথ এন্ড ডেয়ার খেলছিল। খেলতে খেলতে এক পর্যায়ে বোতলের মুখ রাদিফের দিকে পড়ায় সবাই মিলে ওকে ডেয়ার দেয়। — এখান থেকে কাউকে কোলে নিয়ে তাকে পুরো ছাদে ঘুরাতে হবে। ব্যাস ডেয়ার দেওয়ার সাথে সাথে রাদিফ জুথির কাছে এসে ওকে কোলে তুলে নেয়। কারণ রাদিফ ওখানে সবার থেকে ওকে বেশি পছন্দ করত। তাছাড়া আরো বড় কারণ ও সবার ছোট ছিল, ১০ বছরের ছিল জুথি ১১ বছরের ছিল ফারি, ১৩ বছরের ছিল ইভা, ১৪ বছরের ছিল রোদ, ১৬ বছরের ছিল আয়ান, আর রাদিফ ছিল ২০ বছরের, তাই পছন্দ অনুযায়ী রাদিফ জুথি কেই বেছে নেয়। কোলে নিয়ে কিছুক্ষণ হাঁটার পরেই আরিশ ও ছাদে আসে ওরা সবাই ছাদে আছে এটা শুনে। এসে তার বিয়ে করা বউকে অন্য কারো কোলে উঠতে দেখে মাথাটা রাগে আগুন হয়ে ওঠে। দাঁত কিড়বিড় করে গিয়ে রিদিফের কোল থেকে থাবা মেরে ,জুথিকে নামিয়ে ওখানে বসেই জুথির দু’গালে ঠাস ঠাস দুটো থাপ্পড় মেরে, ওর হাত ধরে টানতে টানতে ছাদ থেকে নিচে নিয়ে এসে সোজা ওর রুমে নিয়ে যায় গিয়ে দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে দেয়,

Violent love part 5

‘তুই আমার কি হস?
‘বোন হইতো? কান্না করে।
‘তোর সাথে আমার কিছুদিন আগে কি হয়েছিল?
‘বিয়ে হয়েছিল।
‘তাহলে তোর আর আমার সম্পর্কে কি হয়?
‘কেন ভাই বোনের।
আরিশের এমনিতেই মেজাজটা আগুন ছিল, এখন ভাই বোন শব্দটা শুনে দাঁত কিড়মিড় করে, জুথির চুলের মুঠি পিছন থেকে শক্ত করে ধরে ঠোঁট দুটো চেপে ধরে বলল।
‘স্বামী বুঝিস? স্বামী হই তোর, বিয়ে হয়েছে না তোর? তাহলে পর পুরুষের সাথে কি তোর? কেন ওর কোলে উঠেছিস?
‘আমি কি ইচ্ছে করে উঠেছি, হিচকি দিয়ে কথাটা বলল।
‘তুই কোলে না উঠলে কি তোকে জোর করে উঠাতে পারতো?

Violent love part 7