You are mine part 19 || romantic valobashar golpo

You are mine part 19
Poly Anan

বাড়ির সবার কান দিয়ে যেন গরম ধোয়া উড়ছে। লিপির কথা কারো মাথায় ডুকছেনা।কি বলছে সে? সবার কাছে সবটা এখনো ঝাপসা কিছুক্ষন আগে ঈশান যখন বলে,
“হ্যা বলুন কেনো আপনি আমার ক্ষতি করতে উঠে পরে লেগেছেন(চিৎকার দিয়ে ঈশান)
“কারন তুই….তুই আমার স্বামীর খুনি!(চিৎকার দিয়ে)
লিপির চোখে মুখে ঈশানের জন্য ঘৃণ্য ছাড়া কিছুই দেখতে পাচ্ছেনা সবাই।কথাটা শুনেই ঈশান দু পা পিছিয়ে যায়।সবাই একে অন্যর মুখ দেখা দেখি করছে।আমজাদ (লিপির হাজবেন্ড)কিছু সময়ের জন্য থমকে গেছে। কি বলছে তার বউ পাগল হয়ে গেছে নাকি!
ঈশান নিজেকে শক্ত করে, মাথা থেকে সব চিন্তা ঝেরে বলে,

” তাহলে জেঠু কে? জেঠুতো এখনো জিবিত কোন কথার ভিত্তিতে বলেছো আমি জেঠুকে মেরেছি!(ভ্রু কুচকে)
“উনি আমার ২য় পক্ষের স্বামী আমি আমার ভালোবাসা প্রথম স্বামীকে তুই খুন করেছিস!(চিৎকার দিয়ে)
অতীতের কথা মনে পড়লে লিপির মাথা ঠিক থাকেনা। রাগের কারছে তার সারা শরীর থর থর করে কাপছে।
” আমি শুরু থেকে যানতে চাই সবটা..!কে তোমার স্বামী আর কেন আমি শুধু শুধু তাকে মারবো।আজ পর্যন্ত নিজের হাতে কাউকে হত্যা করিনি তাহলে তুমি বলছো কি করে আমি তোমার প্রথম পক্ষের স্বামীকে খুন করি।(সন্দেহ চোখে)
“মনে পরে মামুনের কথা! মনে আছে, তোর লোকেরা তাকে গুম করে দিয়েছিল।পরে খবর আসে বস্তায় বন্ধি লাশ পাওয়া যায় নদী থেকে।
ঈশানের মাথায় কিছুতেই আসছেনা মামুন কে। রাসেল ঈশানের কানের সামনে গিয়ে মামুনের ডিটেলস বলে তখনি ঈশানের মনে পরে মামুনের কথা।
” জেঠিমা আমি শুরু থেকে যানতে চাই। আমি অতীত জানতে চাই। মামুনের মৃত্যু হয়েছে আজ থেকে চার কি পাচঁ বছর আগে। আর আপনি তখন আমার জেঠুর বউ, লিজার মা ছিলেন তাহলে মামুন আসলো কোথা থেকে?

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

হুট করেই লিপি থমকে যায় মুখ ফসকে এতটা কথা যখন বলেই দিয়েছে বাকি গুলো ঈশান তার মুখ থেকে বের করিয়ে ছাড়বে তা ভালো করেই যানে ঈশান।বাড়ির সবাই থ বনে লিপির দিকে তাকিয়ে আছে। সবচে বেশি পুড়ছে আমজাদের। তিনি এবার বুঝতে পেরেছেন বিবাহিত জীবনের এতো বছরেও কেন তিনি তার বউয়ের প্রকৃত ভালোবাসা কেন পাননি।তাদের সর্ম্পক ছিল টাকা, চাহিদা,আর সারাদিন ঝগড়ার নানান বাহানা।
সংসারী জীবনে সুখ নামক অনুভূতি কখনোই তার ভাগ্যে ছিল না। শুধু লিজার মুখের দিকে তাকালে তিনি বাবা হওয়ার আনন্দ খুজে পান।ব্যস এইটুকুই।
লিপিকে চুপ থাকতে দেখে ঈশান রেগে যায়….।
“আপনি কি বলবেন নাকি আমি আপনার উপর পানিশমেন্ট রেডি করবো..!
” আমার আর কিছুই বলার নেই ঈশান তুই শুধু শুধু গর্ত খুড়ছিস।(শান্ত কন্ঠে)
“এই ঈশান এমনি এমনি কোন কাজ করেনা আমি টের পাচ্ছি এখানে বিশাল বড় কোন চত্রুতো নিশ্চই আছে।গর্ত যখন খুড়ছি সাপ তখন আমি বের করেই ছাড়বো।
” বললাম তো আমি আর কিচ্ছু বলতে পারবো না।

“উফফফ ভালোয় ভালোয় বলছি এদের সহ্য হচ্ছেনা।আমাকে এরা খারাপ বানিয়েই ছাড়বে তারা। রাসেল এদের একটু ইলেক্ট্রিক শক দেতো…আগে লিমন তারপর ইমন আর তারপর….!
ঈশানের কথা শুনে দুইজন গাড এসে হাজির হয়।তাদের ইশারা করলে লিমনকে সত্যি সত্যি শক দেওয়া হয়। লিমন তারপর ইমন দুইজনের অবস্থা এখন করুন।তাদের দিকে তাকিয়ে লিপির ভয়ে দম বন্ধ হয়ে আসছে।
” আপনার মুখ থেকে কথা কি বের হবে নাকি শক দিতে হবে।এতেও যদি কাজ না হয় তবে গরম পানি গায়ে ঢালা হবে।ঈশান গাডকে ঈশারা করে লিপিকে শক দেওয়ার জন্য তখনি লিপিত চিৎকার দিয়ে বলে,,,
“বলছি বলছি কিছু করিস না তুই আমায় ..!
“”” সময়টা আজ থেকে প্রায় ২৩/২৪ বছর আগের।তখন আমি ছিলাম টগবগে এক তরুনি।ঘরে শুধু বাবা, ভাই আর মা ছিল।আমার এক ছোট বেলার বন্ধু ছিল তার নাম সেজুতি।ছোট থেকেই আমাদের চলা ফেরা ছিল একসাথে। হুট করেই সেজুতির বিয়ে হয়ে যায়।সেজুতির বিয়েটাও হয় বেশ ছোট থাকতে।সে সময় মেয়েদের যতো আগে বিয়ে দেওয়া যেত ততই ভালো। তার বরটা দেখতেও সুর্দশন ছিল।বিয়ের পর সেজুতিকে তিনি চাকরির সুবাধে এই ঢাকায় নিয়ে আসে।বিয়ের পর একবার সেজুতি গ্রামে যায় তখন ইমন তার কোলে।ঢাকায় ফেরার সময় সবার সাথে বেশ জোর কসারত করেই আমাকেও ঢাকায় নিয়ে যায়।

ইমনকে নিয়ে তাদের সবকিছু ভালোই চলছিল।এদিকে ইমনের বাবা মামুন সেজুতির জন্য ছোট ছোট যত্ন ভালোবাসা গুলো দেখলে আমার মনের মাঝে একটা চাপা হিংসে হতো।কিন্তু কেন তা আমি যানতাম ও না।পরের বার আমার বাড়ি ফেরার প্রায় চারবছর কেটে যায়।হুট করেই বাবা সিধান্ত নেন আমায় বিয়ে দিবেন।চারদিকে বাবা অনেক ধার দেনা করে। এইসব টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য পাওনাদাররা উঠে পরে লাগে।৪০/৪৫ বছরের একজন বাবাকে প্রস্তাব দেয় আমাকে বিয়ে করতে পারলে বাবার সব পাওনা শোধ করে দেবে।
বিষয়টি যখন যানতে পারি তখন আমার চোখে মুখে দিশেহারার ছাপ।আমার বয়স থেকে এতো বৃদ্ধকে আমি কিছুতেই বিয়ে করবো না।আমার আম্মা ও চাইতেন না বিয়েটা হোক।বাবার হুমকিতে আম্মাও রাজি হন,, বিয়েটা হবে। তখন আমি বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাই সেজুতির বাড়ির উদ্দেশ্য । তত দিনে শুনেছিলান সেজুতির আরেকটি ছেলে হয়েছে। ঢাকা গিয়ে যানতে পারি তাদের ভাড়া বাসাটি পাল্টেছে কোথায় গেছে কিছুই যানতাম না।তখন সেজুতির আগের বাসার মালিক আমাকে সেজুতির পরের বাসায় নিয়ে যায়।

তারপর সেজুতি আমায় আশ্র‍য় দেয়।এভাবে কাটছিল সময়। প্রায় পাচঁমাস কেটে যায়।ইমন আর লিমন দুজনেই বড় হতে থাকে। তাদের সংসারটা ছিল খুব সুখের।কিন্তু ওই সুখের মাঝে আমি কাটাঁ হয়ে ঢুকে পরি।
আমার সাথে ধীরে ধীরে সম্পর্ক গড়ে উঠে মামুনের(সেজুতির হাসবেন্ড)সাথে।আমাদের সম্পর্কটা অবৈধ সম্পর্কে রুপ নেয় কিন্তু এইসব কিছুই যানতো না সেজুতি।মামুন আর আমি দুজন দুজনের মাঝে আসক্ত হয়ে পরি।সেজুতির সাথে মামুন ধাপে ধাপে ঝগড়া শুরু করে কিন্তু সেজুতি ছিল ধৈর্য ধরার মেয়ে।কোন ঝগড়ার প্রতিক্রিয়া সে দেখাই নি।এভাবেই দিন কাল চলছিল।
আমি আর মামুন আমাদের পথের বাধাঁ সেজুতিকে সরাতে উঠে পরে লাগি। কিন্তু কি করবো কিছুতেই ভেবে পাচ্ছিলাম না।এরপর আমরা সিধান্ত নি লিমন আর ইমন কে আগে সরাবো তাদের শোকে সেজুতি এমনি তেই পাগল হয়ে যাবে।সকাল এগারোটায় সেজুতি রান্না ঘরেই থাকে। ঘর থেকে রান্না ঘরটা আলাদাই ছিল।সেদিন লিমন আর ইমন দুজনেই ঘুমিয়ে পরে।আমাদের প্লানিং অনুসারে আমি তাদের বিছানার আশে পাশে কেরোসিন ঢেলে রাখি।তারপর জানালা দিয়ে ছোট্ট একটু আগুনের উল্কা
ছাড়লেই প্লান সাকসেস।

কিন্তু আমাদের সবটাই ঠিক ছিল। পাশের বাড়ির দুটো মেয়ে ছিল তারা সম্পর্কে বোন জুই আর টগর।আমি আগে থেকেই দেখেছি লিমন আর ইমনকে তারা প্রচন্ড ভালোবাসে।আমি এদিকে মামুনের সাথে দেখা করে এসে বিষয়টি যানাই।আমার কাজ সম্পুর্ন শুধু আগুন দেওয়ার বাকি আমি যখন জানালা দিয়ে আগুন ছুড়ে দিলাম।তখন সাথে সাথে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে উঠে।রুম থেকে বেরিয়ে আসছিলো সেজুতির চিৎকার।আমি ভেবেছিলাম লিমন আর ইমন ও আছে হয়তো।
ভয়ে আমার হাত পা অসাড় হয়ে আসছিল। নিজেকে বাচাঁতে জুই আর টগরের বাড়িতে হাজির হই।সময়টা দুপুর হওয়ায় সব কিছু নিরিবিলি ছিল এদিকে যে আগুন লেগে একটা মানুষ ছাই হয়ে যাচ্ছে কেউ আচঁ করতে পারেনি।জুইঁ আর টগরের সাথে লিমন ইমন খেলা করছিল। লিমন আর ইমনকে দেখে আমার দুনিয়া ঘুরতে শুরু করে।
তাদের সামনে দাড়িয়ে আমি নিজেকে স্বভাবিক করতে চেয়েছি। কিন্তু পারিনি।আমি ঘেমেই যাচ্ছিলাম বার বার।ভয়ে কাপছিলাম।হুট করেই চারদিক থেকে চিৎকার চেচামেচি শুনতে পেলাম।আমার বোঝার আর বাকি রইলো না আগুনের খবরটা সবাই পেয়ে গেছে।

সবার সাথে সাথে আমিও দৌড়ে গেলাম। আগুনে ছাই হয়ে গেছে সব কিছু। সবাই পানি ঢালছে।কিছু সময় পর আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে মামুন বাড়ি ফেরে।।শুরু হয়ে যায় আমার আর মামুনের মরা কান্না সেজুতি আগুনের ভেতরেই ঝলছে যায় ।এভাবে আরো ১৭ দিন কেটে গেলে লিমন আর ইমনের দিকে তাকিয়ে এলাকাবাসী আমাদের বিয়ে দেওয়ার সিধান্ত নেয়।মামুন আর আমি তখন নাটক করে না না বললেও মনে মনে খুশি ছিলাম।
এভাবে আমার আর মামুনের দীর্ঘ দুই বছরের সংসার ছিল।সেজুতির পরিবারে এক বৃদ্ধা দাদী ছাড়া কেউ ছিল না। তাই সেজুতির মৃত্যুর খবর গ্রামে পাঠানো হয় নি.।সংসার জীবনে আমি কখনো লিমন আর ইমনকে অবহেলা করিনি। সবসময় মায়ের ছায়ার মতোই আগলে রেখেছিলাম।একদিন বাজার করতে আমি গিয়েছিলাম একা,তখন দেখা হয় আমাদের গ্রামের আলতাফ চাচার সাথে তিনি যানান বাবার অবস্থা বেশি ভালো না বাচবে নাকি মরবে তার নিশ্চয়তা নেই।
বিষয়টা আমি মামুনকে যানালে মামুন আমাকে গ্রামে যাওয়ার জন্য অনুমতি দেয় তবে শর্ত এক মাসের মধ্যে আমাকে ফিরে আসতে হবে।শেষ বারের মতো তখন মামুনকে দেখেছিলাম ইমন আর লিমনকে আদর করে ফিরে এসেছিলাম চির চেনা গ্রামে।

তখনো জানতাম না গ্রামে ঠিক কি চলছিল।বাবা হুট করেই এক রাতের মধ্যে আমার আর লিজার বাবার বিয়ে ঠিক করে দেন।পালানোর সুযোগটাও আমি পাইনি সেদিন। একরাতের মধ্যেই আমাদের বিয়ে হয়ে যায় আর পরের দিন আমাকে আমার শশুর বাড়ি ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।তবে মামুনের বাড়ি থেকে ঠিক কতটা দূরে ছিলাম বুঝতাম না।বড়লোক স্বামী,উচ্চ বংশীয় শশুর বাড়ি সবকিছুর লোভ মামুনের কথা আমি আস্তে আস্তে ভুলতে থাকি।ওই বাড়িতে যাওয়ার পর ভাবির কোলে ঈশানকে দেখতে পাই। ঈশানকে দেখেই আমার লিমনের কথা মনে পড়ে যায়।
তখন থেকেই আমি ঈশানের কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলতাম।আস্তে আস্তে যানতে পারি ঈশানের বাবা আর মায়ের আগেই সম্পর্ক ছিল তারপর পরিবারকে জানিয়ে তারা বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকেই আমি ঈশানদের পরিবারকে সহ্য করতে পারতাম না কিন্তু কেন তা আমি নিজেও যানতাম না।হয়তো তাদের সুখ আমার গায়ে কাটার মতো লাগতো। ওই বাড়িতে যাওয়ার পর থেকেই আমি বিভিন্ন তাল বাহানায় ঝগড়া করতাম।হুট করেই আমার শাশুড়ী মারা যান।তারপর ঈশানরা আর আমরা আলাদা হয়ে যাই।তখন আমাদের বাড়ি আলাদা ঈশানের বাড়ি আলাদা।লিজার বাবা বেশির ভাগ সময় দেশের বাইরে কাটাতো বলে আমি একাই থাকতাম বাড়িতে।

এভাবে দীর্ঘ পাচ বছর কেটে যায়। তখন আমার মামুনের সাথে কোন যোগাযোগে ছিল না।একের পর এক সময় কাটতে থাকে আর আমিও মামুনকে খুজতে থাকি। সেবারে ঈশান কলেজে উঠেছে তার সাথে আমি আর তার মা তাকে পৌছে দিয়ে একটু শপিংএ যাবো বলে সিধান্ত নি৷ঈশানকে নিয়ে কলেজে গেটের সামনে পৌছেতেই ঈশানের থেকেও একটু বড় একটা ছেলেকে দেখতে পুরো সেজুতির ভাব।আমি তখনি থমকে যাই এই ছেলেটা কি তবে ইমন…?
পরের দিন আমি একাই কলেজ গেটের সামনে দাড়াই তখন আবারো সেই ছেলের সাথে দেখা হয় যানতে পারি ও আমাদের ইমন।তারপর সেদিন কয়েক বছর পর আমার মামুনের সাথে দেখা হয়। আমি হয়তো ভেবেছিলাম মামুন আমায় জড়িয়ে কেদেঁ দিবে কিন্তু তার কিছুই হলো না উলটে সে যানতো আমার নাকি বিয়ে হয়েগেছে। এবং কোথায় বিয়ে হয়েছে তাও যানতো। পরে আস্তে আস্তে জানতে পারি মামুন পরনারীতে আবারো আসক্ত।নারী পাচার কারীর সাথে হাত মিলিয়ে একের পর এক টাকা কড়ি জমাচ্ছে।
মামুন জানতে পারে আমার একটা মেয়েও আছে।লিজাকে দেখতে কখনোই চায়নি মামুন তার সাথে দেখা হওয়ার পর একদিন আমায় একটা কথা বলেছিল “”আমার সাথে তুমি দেখা করতে আসলে ওই মেয়েকে নিয়ে আসবে না খবরদার””

লিমন আর ইমন ছোট থেকেই এতিমের মতোই মানুষ হয়। তারা যানতে পারে আমি তাদের মা। কিন্তু এতে তাদের কোন রিয়েকশন হয় নি।তারা আমাকে মা বলে ডাকলেও তেমন গুরুত্ব আমার ছিল না তাদের কাছে।কারন তারা ছোট থেকেই একা বড় হয়েছে।মামুনের সাথে আমার সম্পর্ক আবারো শুরু হয়।কেন যাননি আমি তখনো মামুনকেই ভালোবাসতাম।আমজাদ দেশে এলেও আমার অসহ্য লাগতো।মামুনের সাথে সারাদিন কাটানো হতো আর সন্ধ্যার সময় বাড়ি ফিরে আসতাম। সার্ভেন্টদের কাছে লিজাকে রেখে যেতাম।
সময় সময়ের মতো করে কাটতে থাকে। এদিকে ঈশান ছিল পরিশ্রমী তার নিজের এক্সপোর্ট ইনপোর্টের ব্যবসা চালু করে।এতটুকু একটা ছেলে ব্যবসা করতো আবার ছুরি ঘুরিয়ে ভার্সিটি এলাকা পাড়া,সব কিছু দমিয়ে রাখতো।তাকে দেখে সত্যি আমার অবাক লাগতো।ছোট থেকেই সে বেপরোয়া।পরর্বতীতে যানতে পারি ঈশানের অফিসেই মামুন চাকরি নেয়। সেই অফিস থেকে মামুন দুটো মেয়েকে ভালোবাসার নামে প্রতারণা করে বিদেশে পাচাঁর করে দেয়।

খবরটা ইতিমধ্যে ঈশানের লোক যানতে পেরে যায় তাই মামুনকে তুলে নিয়ে শরীরে উত্তপ্ত গরম পানি ঢালে। আর পাচঁ মাসের সময় দেয় তাকে এইসব পথ থেকে সরে আসতে।বিষয়টা যখন যানতে পারি আমার ঈশানের উপর আরো রাগ বেড়ে যায়।আমি ছিলাম মামুনের অন্ধ ভক্ত তাই তার ন্যায় অন্যায় আমার চোখে লাগতো না।মামুন যা করতো তা ছিল ঠিক এমনটাই মনে হতো।এদিকে ঈশানের সাথে ভার্সিটিতে কয়েকদিন পর ইমনের ঝগড়া হয় ঈশানের লোক ইমনের লোকদের প্রচুর মারে।প্রায় কয়েকজনকে পঙ্গু করে ছাড়ে।তখন ইমন আর মামুন দুজনেই ঈশানের উপর প্রতিশোধ নিতে উঠে পড়ে লাগে। কিন্তু ঈশান যানতো না মামুনের ছেলে ইমন আর লিমন।
প্রথম বার আমি বাধা দিতে চাইলেও মামুন আমাকে ব্লাকমেইল করে। সে আমজাদকে সত্যিটা যানিয়ে দেবে বলে আমাকে দমিয়ে রাখে।হুট করেই একদিন মামুন নিখোঁজ হয়ে যায়।তারপর তার বস্তা বন্ধী লাশ পাওয়া যায় নদীর ঘাটে।মামুনের মৃত্যুর জন্য যে ঈশান দায়ী ছিল তা আর বুঝতে অসুবিধা হয় নি আমাদের। প্রতিশোধের আগুন তখন আমার আর ইমনের মাঝে জ্বলছিল।

লিমন তখন তেমন কিছুই যানতো না এইসব বিষয়ে।সে শুধু মেয়েদের সাথে রিলেশনে জড়িয়ে মেয়েদের গুম করে পাচার করতো । একদিন একটা পার্টিতে লিমন তার বন্ধুদের ইনভাইট করে।তার মাঝে ঈশা,তাহা,নিশিও ছিল।ইমনের দুবাইয়ের এক পাটনার ঈশাকে পছন্দ করে। কিন্তু ঈশা তো আর জেনো তেনো ঘরের মেয়ে ছিল না তখন সবসময় তার বাবা আড়ালে তার জন্য সিকিউরিটি রাখতো।তাই তাকে পাচার করা সহজ ছিল না।লিমন কয়েকবার ঈশাকে একা ঘুরতে যেতে বলতো তার সাথে এতেও ঈশা রাজি ছিল না।ঈশাকে পাচার করা ছিল বহুল কষ্টসাধ্য কাজ।
দুবাইয়ের লোকটা কোটি টাকার অফার করলে ইমন আর লিমন দুজনেই ঈশাকে পাচার করতে রাজি হয়।আমি তখন সবকিছুতে আড়ালেই ছিলাম।এর মাঝে ইমনো বিয়ে করে নেয়।এদিকে ঈশাকে ফাসাঁতে লিমন বন্ধু থেকে ভালোবাসার দিকে সম্পর্ক টানতে থাকে।কিন্তু ঈশা কিছুতেই রাজি ছিল না।হুট করেই ঈশার জীবনে ঈশানের আগমন।

যেদিন থেকে ঈশানের আগমন হয় সেদিন থেকেই অদৃশ্য দেয়াল ঈশার মাঝে ঘিরে থাকে। সেই দেয়াল টপকে ঈশার ক্ষতি করাতো দূরের কথা ঈশার দিকে চোখ তুলেও তাকাতে পারেনা।
আমি তখন সবটাই যানতাম। লিমন আর ইমনের মাঝে এবার আবার নতুন করে মামুনের মৃত্যুর প্রতিশোধ জেগে উঠে।সাথে আমারো।
পরের ঘটনা গুলোতো সবার যানাই আছে।ঈশার বিয়ের পর ঈশাকে চেয়েছিলাম কথা শুনিয়ে ঘর থেকে বের করে দিতে।কিন্তু পারিনি।ঈশান ঠিক আর জীবন সঙ্গীটাকে আগলে রাখে।আমাকে ফোনে না পেলে লিমন প্রায় ঈশানের বাড়িতে ডুকতো আর শেষ বার গিয়েছিল ঈশানের বিরুদ্ধে কিছু ছবি নিয়ে।যা দেখালে ঈশা ভুল বুঝবে আর বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাবে।তারপর লিমন তাকে কিডন্যাপ করে দুবাই পাচার করবে। ঈশার শোকে ঈশান এমনিতেই থমকে যাবে। ইমন তার বউকে নিয়ে প্যারিস চলে যাবে৷ এদিকে সব ঝামেলা মিটিয়ে আমি আমার মতো করে থাকবো…..

লিপির কথা গুলো শুনে থমকে যায় ঈশান, বাকিরা। কিন্তু সবচে বেশি ধাক্কাটা খায় ইমন আর লিমন।আমজাদ দুপা পিছিয়ে সোফায় বসে পরে লিজা থমকে গিয়ে তাকিয়ে আছে তার মায়ের দিকে।ঈশানের মাথায় সব জট লেগে গেছে এরপর কি করবে সে।একজন মহিলার কারনে একে একে কয়েকটা মানুষ ধ্বংস।এর শাস্তিকি সে নিজে দেবে নাকি আইন দেবে।
লিমন আর ইমন তাদের কি করবে এদের শাস্তি কে দেবে।ঈশান তো তাদের শাস্তি দিতে পারবেনা। আজ যদি তাদের সত্যি কারের মা বেচে থাকতো তবে তাদের জীবনটাও আট দশটা মানুষের মতো স্বাভাবিক হতো।কিন্তু আসল কালপিট তো লিপি। ঈশান সোফায় বসে হাটুর উপর হাত রেখে মাথা নুইয়ে তার চুল টানতে থাকে। ঈশার একদৃষ্টিতে ঈশানের দিকে তাকিয়ে আছে। ঈশানকে আজ অসহায় লাগছে দেখতে।মাহমুদা মুখে আচঁল গুজে কাদছে লিজাকে শক্ত করে ধরে।ঈশানের বাবা আবিদ তার ভাইয়ের পাশে বসে হাতে হাত দিয়ে আছে।

ঈশানের অবস্থা দেখে রাসেল এগিয়ে আসে।দীর্ঘ জীবনের এই বন্ধুটাকে আজ এক মূহুর্তের জন্য থমকে যেতে দেখেছে।আর জ্ঞান বুদ্ধি গুলো আজ যেনো লোপ পেয়েছে।রাসেল ঈশানের সামনে বসে বলে,
“হাতে একদম কম সময় ঈশান কি সিধান্ত নিবি তুই। এরা প্রত্যকে এক দিক না একদিকে অপরাধী।এদের শাস্তি কি তুই দিতে পারবি।?
ঈশান কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে,
” আমার ঈশুর ক্ষতি করতে চেয়েছে তার শাস্তি একটু হলেও দিয়েছি কিন্তু এই জঘন্য অপরাধ গুলোর শাস্তি আমার হাতে আসবেনা ভাই। যত যাই হোক তিনি আমার মায়ের সমান।আমি পারবো না।লিমন আর ইমনের পরিস্থিতি ভাব যাকে বিশ্বাস করে এসেছে মা যেনে এসেছে সেই মা তাদের আসল মাকে খুন করলো….!একবার ভাব যদি আজ সেজুতি আন্টি বেচে থাকতো তবে তাদের এই পরিনতি হতো না।আসল কালপিট তো লিপি..!ভিডিওটা রেকড হয়েছে এতোক্ষন?

“হুম
” ওকে পুলিশ কে ফোন কর!
রাসেল পুলিশ কে ফোন করে। এদিকে লিপি ডুকরে কেদেঁ উঠে তার ভুলের ক্ষমা চাইতে থাকে কিন্তু সবাই তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।লিজা তার মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে,
“কেউ ক্ষমা করবেনা তোমায়। একবার ভেবে দেখো কতটা অন্যয় করেছো।আমার বাবাটার সাথে কি আচরন করো তুমি তা আমি ভুলিনি।সেজুতি আন্টির সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করলে।একদিন এর শাস্তি তোমায় পেতেই হতো।
ইমন আর লিমন শক্ত পাথর বনে গেছে।তারা কখনোই যানতো না এই মহিলা তাদের আসল মা না।এতো টা বিশ্বাস করেছি কিন্তু সেই মহিলা তাদের মায়ের খুনি।
কিছুক্ষনের মধ্যেই পুলিশ বাড়িতে চলে আসে।ইমন ঈশানের দিকে তাকিয়ে বলে,

You are mine part 18

” ঈশান তোর কাছে আমার শেষ আবদার যত যাই হোক উনি আমার মা। উনাকেই মা যেনে এসেছি।শেষ বারের মতো তাকে একবার জড়িয়ে ধরার সুযোগ করে দে ভাই।
ঈশানের মাথায় কিছু ডুকছে না তবুও পুলিশের দিকে তাকিয়ে ঈশারা করে ইমন কে ছাড়তে।।
লিপি ছলছল চোখে ইমনের দিকে তাকায়।ইমন কাছে এসে লিপিকে জড়িয়ে ধরে তারপর বলে,
“আপনার লোভে আজ আমাদের দুই ভাইয়ের করুন পরিস্থিতি।যদি বন্ধুত্বের বিশ্বাস ঘাতকতা না করতেন তবে আমার মা বেচেঁ থাকতো একটি সুস্থ স্বাভাবিক পরিবারেই বড় হতাম। আপনাকে এর শাস্তি পেতে হবে আর সেই শাস্তি আমি দেবো…
চোখের পলকে ইমন টি-টেবিলের উপর থেকে ফুলদানি ভেঙ্গে লিপির পেটে ডুকিয়ে দেয়।রক্তের ছিটকা এসে ইমনের চোখে মুখে পড়তে থাকে।

সবাই স্তব্দ হয়ে গেছে।পুলিশরা এসে ইমনকে আটকে ধরে।ইমন চিৎকার দিয়ে বলে,
“আমার প্রতিশোধ আমি নিলাম। এবার আমি মরলেও আমার শান্তি।
আমজাদ এক দৃষ্টিতে লিপির দিকে তাকিয়ে থাকে। নিচে লুটিয়ে পড়ে লিপি রক্তে ভেসে গেছে মেঝে।নিজের মায়ের দিকে একবার তাকিয়ে লিজা সেন্সলেস হয়ে যায়।তাকে আগলে ধরেন মাহমুদা।এইসব দেখে ভয়ে গুটিয়ে যায় ঈশা। এত রক্ত এত করুন পরিস্থিতি সে আগে দেখেনি।
মূহুর্তেই দুচোখ বন্ধ করে সেন্সলেস হয়ে যায় ঈশা লুটিয়ে পড়তে নিলেই ঈশান ঈশার দিকে তাকায়
তখনি ঈশান “” ঈশা” বলে চিৎকার দিয়ে দৌড়ে আসে কিন্তু তার আগেই ঈশা মেঝেতে পড়ে যায় আর একটি ভাঙ্গা কাচেঁর অংশ ঈশার কপালে ডুকে যায়।
ঈশান থমকে ঈশার পাশে বসে পরে…….

You are mine last part