দিগন্তবেলার প্রেমান্দোলন পর্ব ৪৫

দিগন্তবেলার প্রেমান্দোলন পর্ব ৪৫
আফরোজা আশা

‘ দাঁড়িয়ে পড়লেন যে। ’
প্রশ্ন শুনে ধ্যান ভাঙলো দিগন্তের। দৃষ্টি রহমানের দিকে থাকলেও ও হারিয়েছিল তার কথার গভীরে। ভাবুক গলায় বলল,
‘ আপনি মানুষটা যেমন জটিল, কথাবার্তাও জটিলতায় ঘেরা। ’
রহমান শান্তভাবে বলল,
‘ সহজ কথাই বলেছি। আপনি মানতে চাইছেন না, তাই জটিল লাগছে। ’
ভারী দম ছাড়লো দিগন্ত। রহমানকে কাঠকাঠ গলায় বলল,

‘ আপনি আপনি করছেন কেনো? এসব আপনাকে মানায় না পাটোয়ারী সাহেব। তুমিতেই কম্ফোর্টেবল। ’
মৃদু হাসির রেখা এলো রহমানের ঠোঁটের কোণে। তাচ্ছিল্য মিশ্রিত গলায় বলল,
‘ আপনি আমার ছোট মেয়েকে ভালোবাসা শিখিয়েছেন। সম্মান না দিয়ে পারি! ’
‘ কটাক্ষ করলেন? ’
‘ আর কথা বাড়িয়ে লাভ নেই। ভেতরে চলেন। ’
পকেটে দুহাত গুজে সটান হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো দিগন্ত। রহমান হাঁটার জন্য পা বাড়িয়ে আবারো থেকে গেল। পেছন থেকে দিগন্তের আওয়াজ ভেসে এলো,
‘ ভেতরে গিয়ে চা খাওয়ার মতো সম্পর্ক এখনো হয়নি যে। ’
ভ্রু কুঁচকে রহমান বলল,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

‘ বিয়ে করার ইচ্ছে নেই নাকি? ‘
কিঞ্চিৎ হেসে দিগন্ত বলল,
‘ অবশ্যই আছে। তবে বিয়ে করে বউ বাপের বাড়ি ফেলে রাখার বয়স নেই। অসামাজিক নই আমি। দাদা-দাদী জীবিত। তালুকদার বাড়ির বড় ছেলে। হুট করে এসে বিয়ে করে চলে যাবো ব্যাপারটা আমার সাথে যায় না পাটোয়ারী সাহেব। এভাবে বিয়ে করতে হলে কতদিনে বেলাকে তুলে নিয়ে কাজ সেরে ফেলতাম। আপনার কি মনে হয় সে ক্ষমতা আমার নেই? ’
ক্রোধের আভাস ফুটে উঠলো রহমানের চেহারায়। জোর গলায় বলল,
‘ এতো ছোট মেয়ের কাঁধে এখনি শ্বশুড়বাড়ি নামক বোঝা চাপিয়ে দিবো? ’
রহমান পরিবর্তিত চেহারা দেখে স্বাভাবিক গলায় দিগন্ত বলল,
‘ আপনি যদি দশ বছর পরও বিয়ে দেন তাও কবুল। কিন্তু বিয়ে করে বউ এক বাড়িতে, আমি আরেক বাড়িতে। অসম্ভব ব্যাপার।’
রহমানের কণ্ঠস্বর তেজালো হলো,

‘ তোমার সাথে বেলার আকদ করিয়ে রাখতে চাইছি এতে কি তোমার শুকরিয়া আদায় করা উচিত নয়?এমনিও মেয়ে বিপথে চলে গিয়েছে। ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করলে পারব না জানি। আমি বড়জোর যে চেষ্টা করতাম, তাতে ওর ক্ষতি ছাড়া কিছু চোখে পড়ছে না। তুমি যেকোনো ভাবে ওর ব্রেইনওয়াশ করবেই। অন্তত ইন্টার লেভেলটা শেষ করতে দেও। তাছাড়া বেলা কালকেই রংপুর চলে যাবে। ’
বক্র হাসি ফুটলো দিগন্তের ঠোঁটে। সে হাসি দেখে ভড়কালো রহমান। দিগন্ত বলে উঠলো,
‘ রংপুর গিয়ে কাজ নেই ওর। আপনি হয়তো খেয়াল করেন নি, চয়েস লিস্ট কবেই চেঞ্জ করেছি আমি। ওর যে মার্কস তাতে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট চলে আসবে। ’

ফোঁস করে শ্বাস ছাড়লো রহমান। কথাথা বলার শক্তি পাচ্ছে না। তাও রুক্ষ কণ্ঠে বলল,
‘ বিয়েতে খরচ জানো? এক মেয়ের বিদায় দিয়ে আমার হাত শূন্য প্রায়। আরেক মেয়েকে বিদায় দেওয়ার শক্তি-সার্মথ্য কোনোটাই নেই। ’
রহমানের কথা শুনে আশেপাশে চতুরভাবে দৃষ্টি ঘোরালো দিগন্ত। সাজানো বাড়িঘর অবলোকন করে বলল,
‘ যা আছে সেটা দিয়েই হয়ে যাবে। আমার পরিবারের লোকজনকে আপ্যায়ন করার ক্ষমতা আপনার আছে। এতোটাও অসহায় সাজবেন না। ’
কথাটা বলে থামলো দিগন্ত। পরক্ষনেই ঠেস মেরে বলে উঠল,
‘ এমনিতেই আমার অর্ধেক পরিবারের বাস আপনার বাড়িতে। ’
‘ কি চাইছো? ’
শান্ত গলায় বলল দিগন্ত,
‘ তৈরি করে রাখবেন আপনার মেয়েকে। কাল তালুকদার বাড়ির বড় বউ করে নিয়ে যেতে আসবে দিগন্ত তালুকদার। ’

পরক্ষনেই কণ্ঠ খাদে নামিয়ে বলল,
‘ পাটোয়ারী সাহেব, দিবেন না আপনার মেয়েকে? ’
দিগন্তের স্বরে অনুনয়ের আভাস পেয়ে ভেতরে ভেতরে চমকালো রহমান। বাহিরে নিজের গাম্ভীর্যতা ঠিক রেখে বলল,
‘ না দিয়েই উপায় কি? নিয়েই তো নিয়েছো। অপেক্ষায় থাকলাম।’
ঠোঁটের আকার প্রসারিত হলো দিগন্তের। হালকা মাথা ঝাঁকিয়ে উল্টো দিকে হাঁটা ধরলো। রহমান একদৃষ্টে ওর দিকে তাকিয়ে রইলো।

গুম পরিবেশ। অন্ধকারে ঢাকা চারপাশ। নিস্তব্ধতা জেঁকে রয়েছে পুরো রুমজুরে। হাটখোলা জানালার পাশে দাঁড়িয়ে আছে শক্তপোক্ত পেটানো শরীরের পুরুষ। জোছনার মৃদু মন্দ আলোয় তার অবয়ব জানালায় পড়েছে। একগাছি স্লিক চুল এলোমেলো হয়ে কপাল জুরে বিস্তার করছে। ধ্যান তার আকাশ পানে। দূর আকাশের দিকে চেয়ে আছে এককভাবে। দৃষ্টির নড়চড় নেই। উদাসীনতা আর হারানোর বীভৎস ছায়া চোখমুখে।
পেছনে এসে দাঁড়ালো আরেক পুরুষ অবয়ব। তার উপস্থিতি টের পেয়ে আকাশ থেকে নজর সরালো ফাহাদ। ফয়সাল ফাহাদের পাশাপাশি এসে দাঁড়ালো। তাকে একপলক দেখে আবারো সামনের দিকে মনোযগী হলো ফাহাদ। রুমের বিদীর্ণ নিস্তব্ধতা কাটলো ফয়সালের আওয়াজে,

‘ দেবদাস হওয়ার ইচ্ছে আছে? ’
ঠোঁট এলিয়ে কিঞ্চিৎ হাসলো ফাহাদ। অবহেলায় ছড়িয়ে থাকা চুলগুলো পেছনে ঠেলে বললো,
‘ পারু তো তাও দেবকে ভালোবেসেছিল। কিন্তু মেয়েটা ভালোবাসা দূর, আমাকে একটু দামও দিল না। দেবদাস হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। ’
‘ তাহলে খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে, রুম অন্ধকার করে লুকিয়ে আছিস কেনো? ’
ফয়সালের প্রশ্নের জবাব দিল না ফাহাদ। মুখে শয়তানি হাসির রেখা টেনে বলে উঠলো,
‘ বাসর রাতে বউ বাপের বাড়ি রেখে এলে। এখন সময় কাটছে দেখে আমাকে খোঁচাতে এসেছো। ’
চোখজোড়া সরু করে ফেললো ফয়সাল। ফাহাদের দিকে ফিরে বললো,

‘ অপেক্ষার ফল মিষ্টি হয় বুঝলি। তোর হারামজাদা ভাই মেয়েটাকে কেমন গুমোট বানিয়ে দিয়েছে। এখন পর্যন্ত আমার সাথে কথা বললো না। আমি কথা বলার চেষ্টা করলেও কেমন ভয় পায়। ’
ফাহাদ জোরে শ্বাস ফেললো। ওর বড় ভাইয়ের কাহিনী আগে জানতো না। যখন থেকে জেনেছে, তখন থেকে কোনো যোগাযোগ রাখেনি। পাটোয়ারী বাড়ির মানুষগুলোর মন-মেজাজ ভালো ছিল না। তাই ফয়সাল বৃষ্টিকে আনেনি। ফাহাদরা চলে আসার অনেক পরে, ফয়সালও চলে এসেছে তবে একা। সিদ্ধান্ত হয়েছে, কাল একসাথে দুই মেয়েকে দুই জামাইয়ের হাতে তুলে দিবে রহমান পাটোয়ারী। ফয়সাল আর জহিরুল দেওয়ান মেনেছে সে কথা। ও চাইলে বৃষ্টিকে আজই নিয়ে আসতে পারতো কিন্তু ওর সাথে স্বাভাবিক আচরণ করতে পারছে না বৃষ্টি। তাই আরেকটু সময় দিয়ে এলো।

রাত গভীর হয়েছে ঠিক। তবে নিদ্রা নেই পাটোয়ারী বাড়ির মানুষের। বাড়ির মহিলাগণ এলোমেলো বাড়ি গোছাতে ব্যস্ত। বিয়ে বাড়িতে মানুষজন এসেছে, গিয়েছে। বাচ্চা-কাচ্চা যেখানে যেখানে আউলে-ঝাউলে রেখেছে সবকিছু। ধুলো-বালি ময় অগোছালো বাড়ি গোছাতে হিমশিম খাচ্ছে তারা। সারাদিনের ক্লান্ত শরীর তাও করতেই হচ্ছে। আর পুরুষগণ কালকের জন্য নতুন আয়োজনের সব ব্যবস্থা করছে। এইতো মাত্র কয়েকঘণ্টা। বিয়ে ছোট করে হোক আর বড়, খরচ যা করার তা করতেই হয়। রাসেল আর রহমান হাতে যা টাকা আছে সেগুলো নিয়ে হিসেবে বসেছে।
বেলার রুমে বাড়ির তরুণীদের ভির।

বৃষ্টির বিয়ে উপলক্ষে মেহেদী পড়েছিল। এখন আবার একদু জায়গা যা ফাঁকা রয়ে গিয়েছে সেটা পূরণ করতে বসে পড়েছে সবাই। বেলা একহাতে আগেই মেহেদী দিয়েছিল। এখন আরেক হাতে দিয়ে দিচ্ছে দিশা। হাতের মাঝখানে আবার দিগন্তের নাম লেখার জন্য জায়গা টেপ লাগিয়ে রেখেছে। পুরো হাত ভরে মেহেদীর জমকালো ডিজাইন করে দিল দিশা। টেপটা উঠিয়ে যেই না নাম লিখতে যাবে ওমনি বাঁধ সাজলো বেলা। দিশার হাত থেকে মেহেদীর প্যাকেটটা কেড়ে নিয়ে নিজে লেখা শুরু করলো। বেলার কাজ দেখে হাসলো সবাই।
মিনিট পাঁচেক সময় নিয়ে হাত ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দিগন্তের পুরো নাম লিখলো বেলা। বাংলায় লিখতে চেয়েছিল কিন্তু দিগন্ত ওর বাংলা পড়াশোনা নিয়ে মজা উড়িয়েছিল বলে লিখলো না। ইংরেজিতে লিখলো এবার। লেখা শেষ হতেই বাণীর ফোনটা নিয়ে বাইরে দৌড়ে গেল। আরেকদফা হাসলো সবাই।

বাণীর শরীর বেশি ভালো নেই। হয়তো সারাদিনের ব্যস্ততার জন্য খারাপ লাগছে। বৃষ্টি ওদের সাথে বসে ছিল। কিছুক্ষন আগে একপাশে গিয়ে শুয়ে পড়েছে। বউ সাজের মেক-আপের কারণে ওর চোখমুখ ফুলে গিয়েছে কিছুটা। এলার্জির কারণে এরকম হয়েছে। তাছাড়া অনেকটা ধকল গিয়েছে তাই শোয়ার সাথে সাথে ঘুমিয়ে গিয়েছে ও। বাণীও একটা বালিশ টেনে বৃষ্টির পাশ ঘেঁষে শুলো। ঘুমন্ত বোনের মাথায় বিলি কেটে, ওকে জড়িয়ে ধরে চোখ বুজলো। অপরপাশে মাইশা, দিশা ফোনে কিছু একটা করছে। বাণী আর বৃষ্টিকে ঘুমিয়ে যেতে দেখে ওদের মধ্যে গুজুরফুজুর জোড়ালো হলো। দিশার কোলজুড়ে ঘাপটি মেরে ঘুমিয়ে আছে প্রত্যাশা। দিগন্ত বারবার বলেছে ওর খেয়াল রাখতে।

ভিডিও কল লাগিয়ে ফোন মুখের সামনে ধরে রেখেছে বেলা। অন্যদিকে, উদোম শরীরের উপর হয়ে গভীর তন্দ্রায় দিগন্ত। ফোনের ওয়াইফাই অন ছিল। ফলস্বরূপ, সশব্দে বেজে উঠলো। ফোন আওয়াজে ঘুম হালকা হলো দিগন্তের। হাতড়িয়ে সামনে এনে দেখলো বাণীর নাম্বার থেকে হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিও কল এসেছে। সময় দেখলো আগে দিগন্ত। রাত প্রায় সাড়ে তিনটা।
কল রিসিভ করে কাঁচা ঘুম ভাঙা লাল জোড়া নিয়ে তাকালো স্ক্রিনের দিকে। সরাসরা আলোয় চোখ কিছুটা ছোট হয়ে গেল। স্ক্রিনে দিগন্তের মুখ ভেসে উঠতে বেলার হাস্যরত মুখ জ্বলজ্বল করে উঠলো। দিগন্ত ঘুমে জোড়ানো ভাঙা গলায় বললো,

‘ ঘুমাসনি এখনো? ’
বেলা টকটকে চোখে চেয়ে বললো,
‘ কাল না আমাদের বিয়ে। ঘুম আসছে না। গান ছেড়ে নাচতে ইচ্ছে করছে। ’
তারপর আবার দুইপলক চোখ টিপনী দিয়ে বললো,
‘ দেখেন চোখের কোথাও ঘুমের রেশ নেই। ’
দিগন্ত চোখমুখ ভেটকিয়ে দিয়ে বলে উঠলো,
‘ বেসরম মেয়ে। তোর বাপের সামনে এমন নাচানাচি করিস না। আগুন জ্বলা বুকে কেরোসিন পড়বে। ’
বেলার হাসি মুখ একটু নিভে গেল। আবার হাতের দিকে তাকাতেই সেটা বিস্তর হলো। স্ক্রিন ঘুরিয়ে হাতের দিকে ধরে আমোদিত কণ্ঠে দিগন্তকে বলে উঠলো,
‘ দেখেন দিগন্ত ভাই। আমার হাতগুলো। ’

নজর বেলার হাতের উপর ফেললো। ব্যস, রাঙা হাতদুটো দেখে চোখ জুড়িয়ে এলো দিগন্তের। ছোটখাটো নরম হাতের মাঝে প্যাঁচানো কাজের ডিজাইনটা মন দিয়ে দেখতে শুরু করলো। মাঝখানে নিজের নাম দেখে মন ভড়াতেই যাচ্ছিলো কিন্তু হলো না। ভেঙ্গে গেল। জ্বলন্ত চোখে বলল,
‘ নাম কে লিখে দিয়েছে? ’
স্ক্রিন নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিল বেলা। মুখে হাসি রেখে গদগদ ভাব নিয়ে বললো,
‘ কেউ কেনো লিখবে? আমিই লিখেছি আপনার নাম। যত্ন নিয়ে।’
দিগন্ত রাগী স্বরে বললো,
‘ নাদানের বাচ্চা! কি লিখেছিস এটা? Digonto Talukber? এই তুই ডি আর বি এর পার্থক্য জানিস না? ’
ঠোঁট উল্টালো বেলা। ম্যান ম্যানে স্বরে বলল,
‘ বাংলার উপর চিল্লান বলে বুদ্ধি করে ইংরেজিতে লিখলাম। এটাতেও ভুল ধরেন। কেমন যেন খাটাশ লোক! ’
অবাক দিগন্ত! চরম অবাক! ও ভুল লিখেছে সেটা কিছু না। দিগন্ত ভুল ধরিয়ে দিল দেখে খাটাশ। নিভে আসা আওয়াজে বলল,

‘ তুই গোল্ডেন কিভাবে পাইছিলি রে? টুকলি করেছিলি? নাকি পাশেজনের দেখে দেখে মেরে দিয়েছিস? আর তোর টিচাররা? একদিন দেখা করে আচ্ছা মতো ট্রিট দিবো। ফাঁকিবাজ! একটা সাবজেক্টেও ভালো না। বাংলায় চৌধুরি লাগায়, বায়োলজি মুখস্থ করে, কেমেস্ট্রির কিছু বুঝে না, ইংরেজিও ভুল করে। বুঝি না, তুই এসএসসি লেভেল পার করলি কিভাবে। ’
দিগন্তের বিড়বিড়ানো দেখে রেগে গেল বেলা। হাত দেখাতে এলো প্রশংসা শোনার জন্য কিন্তু লোকটা কোথাকার কি টেনে আনছে। নাকমুখ কুঁচকে নিয়ে ঠাস করে লাইন কেটে দিল ও।
লাইন বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর নিজের কাজে নিজেই বিরক্ত হলো দিগন্ত। নিজ উদ্দেশ্যে দু’এক অশ্রাব্য গালি ছুড়লো। উঠে বসে বেডের সাথে হেলান দিয়ে টাইপিং করতে লাগলো।
ফোন কেটে কয়েক কদম এগোতেই মেসেজ টোন বেজে উঠলো। বেলার নজর পড়লো সেখানে। দিগন্তের মেসেজ দেখে কৌতুহলি নেত্রে চেক দিল।

‘ ওহে মিসেস দিগন্ত তালুকদার, শুনছেন? ’
লাইনটা দেখে ফুস করে উবে গেল খানিক আগের উদিত রাগ। বিগলিত মনে ঝটপট টাইপ করলো বেলা,
‘ বলেন। ’
বেলার মেসেজ আসতেই ঠোঁট কামড়ে অল্পবিস্তর হাসলো দিগন্ত। লিখলো,
‘ যত্ন নিয়ে আমার নাম লেখার জন্য গিফটা নাহয় কাল দেই। ’
অপর পাশ থেকে তাতক্ষনাৎ মেসেজ এলো,
‘ কি দিবেন? ’

দিগন্তবেলার প্রেমান্দোলন পর্ব ৪৪

সেটা দেখে আর রিপ্লাই করলো না দিগন্ত। মেসেজের মধ্যে একটা ইমোজি দিয়ে ওয়াইফাই সংযোগ বন্ধ করে দিল। অন্যদিকে রিপ্লাইয়ের আশায় থাকা বেলার কাছে ভেসে উঠলো একটা ইমোজি। ওর প্রশ্নকৃত লাইনে দিগন্ত দিয়েছে। ঠোঁট কামড়ে ধরে রাখা ইমোজিটা দেখে বোকার মতো চেয়ে থাকলো বেলা। কিছুক্ষন পর চোখমুখ বেঁকিয়ে আওড়ালো,
‘ কিহহ! ’

দিগন্তবেলার প্রেমান্দোলন পর্ব ৪৬

1 COMMENT

Comments are closed.