মাঝরাতের রোদ্দুর পর্ব ৪৫

মাঝরাতের রোদ্দুর পর্ব ৪৫
নওরিন কবির তিশা

সোনালী পাখির ডানায় ভর করে নেমে আসা এক আদুরে বিকেল, চারিদিকে মিইয়ে পড়া রৌদ্ররেখা, নাহিয়ান মঞ্জিলের রাস্তার ধারের বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে শিশির। নাহিয়ান মঞ্জিল নাহিয়ানদের বাড়ি, ঢাকার সবচেয়ে বিলাসবহুল বাড়িটি! কিন্তু যার নামে বাড়িটি সেই এই বাড়িতে নেই আজ প্রায় মাস খানেক।
দিনগুলো ঠিকই কেটে যাচ্ছে তবুও শিশিরের মনের কোণের বেদনাগুলো যেন ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। ধীরে ধীরে সে বুঝতে পারছে কথাটা গভীরভাবে ‌সে ভালোবেসে ফেলেছে নাহিয়ানকে। আজকে সকালেই নওরিফা খানমের কথা অনুযায়ী বাড়ির ড্রাইভার গিয়ে নিয়ে এসেছে তাকে।

হঠাৎই মেসেজের টুং শব্দে ধ্যান ভাঙলো শিশিরের। দ্রুত বেলকনি থেকে রুমে এসে মোবাইলটা হাতে নিতেই সে দেখতে পেল নাহিয়ানের মেসেজ, মুহূর্তেই এক প্রসন্নময় মুচকি হাসির রেখা ‌ঠোঁটের কোনে। আর কোন দিকে না তাঁকিয়ে মোবাইলটা হাতে নিয়েই সে উপুর হয়ে শুয়ে পড়লো বিছানার উপর। মোবাইল অন করে মেসেঞ্জারে ঢুকতেই নাহিয়ান এর মেসেজ,,
“আলতো ছুঁয়ে বলতে গেছি তোকে…”
মুহূর্তেই শিশিরের ঠোঁটের কোণের হাসির ঝিলিক উজ্জ্বল নক্ষত্রের ন্যায় জ্বলজ্বল করে উঠল। এটা নতুন কিছু নয় নাহিয়ানের সাথে মেসেঞ্জারে কথা মানেই এরকম কিছু গানের চরণ নয়তো কিছু দুষ্টু মিষ্টি খুনসুটি! শিশির মুচকি হেসে রিপ্লাই লিখলো,,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“তাই নাকি?”
মুহূর্তেই ওইপাশ থেকে রিপ্লাই,,
“কিন্তু কথা আটকে গেল মুখে…”
শিশির:”আচ্ছা”
নাহিয়ান:”কোনদিকে যে যাই!”
শিশির:”ইস!”
নাহিয়ান:”ভাল লাগে না ছাই..”
শিশির:”আহারে”
নাহিয়ান:”এলোমেলো মন গড়া মুলুকে!”
শিশির নাহিয়ানের এমন অদ্ভুত গান দেখে রিপ্লাই দেওয়ার সাথে সাথে কিছুক্ষণ আনমনে হাসলো তারপর সেও লিখলো,,

“কোন দেশের বীর পুরুষ এলো”
ওইপাশ থেকে নাহিয়ানের বিস্ময়কর ইমোজি!শিশির আবারও লিখলো,,
“রাজকন্যা যেই না খুঁজে পেল!”
নাহিয়ান:”আসলেও সে রাজকন্যা”
শিশির:”থমকে গেল মুখ!”
নাহিয়ান:”আসলেও”
শিশির:”দুরুদুরু বুক!”
নাহিয়ান:”একদম ঠিক!”
শিশির:”চলল সেই তো মন গড়া মুলুকে!”

নিউইয়র্কে নিজের শ্যাডো হেভেনে উত্তর সাইডের রুমটিতে একটা কাউচের উপর বসে আছে নাহিয়ান। দেয়ালে ঝুলে থাকা কালো সাদা ধাতবপ্রান্তের minimalist Scandinavian ঘড়িটির টিকটিক শব্দ যেন সকাল সাতটার জানান দিচ্ছে।১০ মিনিট হলো ঘুম থেকে উঠেছে সে।
মাঝে মাঝে ভেসে আসছে হাডসনের স্বচ্ছ পানির কলকল শব্দ। সেই সাথে শিশিরের সাথে এমন খুনসুটি! সকালটা যেন অভূতপূর্ব সুন্দর তার জন্য। কিছুক্ষণ নিশ্চুপ থেকে পাশ থেকে ম্যাট সিরামিক কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে সে শিশিরকে টেক্সট করল,,

—”শুনলাম ম্যাম আপনি নাকি শ্বশুরবাড়িতে এসেছেন?”
এপাশ থেকে শিশির যেন নাহিয়ানের এই প্রশ্নটারই অপেক্ষা করছিল। সঙ্গে সঙ্গে সে রিপ্লাই দিলো,,
—”হুম! শ্বশুরবাড়িতে তো এসেছি কিন্তু জামাইয়ের দেখা নেই!”
নাহিয়ান:”এমা কি বলেন?তা আপনার জামাই কোথায়?”
শিশির:”আমার জামাই কি আর আপনার মতো অকর্মণ্য নাকি? যে সারাদিন মেসেজ দিতেই থাকবে সে বহুৎ ব্যস্ত মানুষ!এতোই ব্যস্ত থাকে যে দিনে একবার আমাকে ফোনও দেয় না মেসেজও করেনা!”

নাহিয়ান শিশিরের চাপা অভিমান বুঝতে পারল! সত্যিই তো আমেরিকা আসার পর থেকে সে সেভাবে শিশিরকে সময় দিতে পারছে না! যতটুকু সময় হয় সাধারণত মেসেঞ্জারেই কথা হয় তাদের! এরকম দুষ্টু মিষ্টি খুনসুটির মধ্য দিয়ে! সাধারণত সেই দিনের ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৭ ঘন্টাই সে বিভিন্ন কেসের সল্ভের জন্য ব্যস্ত থাকে, বিগত কয়েক মাসে অনেক ইনফরমেশন জমা হয়েছে সেগুলোরই এনালাইসিসের জন্য সারাদিন ব্যস্ত থাকতে হয় তাকে, আর যখন সে সময় পায় তখন হয়তো বাংলাদেশ সময়ে রাত একটা, অথবা দুপুর বারোটা! আর এরকম সময় শিশিরের কাছে ফোন দেওয়াটা বোকামি ভিন্ন অন্য কিছু মনে হয় না তার কাছে! কেননা দিনের বেলায় সময় শিশির ভার্সিটিতে থাকে আর রাতের বেলার কথা তো বাদই দিল। সে চোখে মুখে অপরাধ পরায়নতা নিয়ে লিখল,,

—”রেগে আছেন ম্যাম?”
এবার আর এই পাশ থেকে কোন রিপ্লাই আসলো না নাহিয়ান আবার লিখল,,
—”আসলে কিছু ফাইল জমা হয়ে পড়েছিল তো সেগুলোই এনালাইসিস করতে গিয়ে টাইম ছিল না কিন্তু এই দেখুন কানে ধরছি। এরপর থেকে আর এরকম হবে না!”
এবারও কোন রিপ্লাই আসলো না। নাহিয়ান বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে দ্রুত টাইপ করল,,
—”এই রিপ্লাই দিচ্ছেন না কেন এবার যদি রিপ্লাই না দেন আমি কিন্তু ফোন দিব সিরিয়াসলি বলছি!”
শিশির এবার দ্রুত টাইপ করে বলল,,
—”আরে মিস্টার টাইপ করার টাইম দিবেন তো! আমি বাংলায় অত ফার্স্ট নই! আর তাছাড়া এতই যদি ভয় লাগে নিজের বিয়ে করা বউকে ফোন দিতে তাহলে জোর করে বিয়েটা করেছিলেন কেন তখন ভয় করেনি!”
নাহিয়ান মুচকি হেসে টাইপ করলো,,

—”কষ্টের কথা কাকে বলি বউটা তো নিজেই আমাকে ‌ফোন দিতে বারণ দিয়েছে! তার নাকি আবার তার শাশুড়ি আম্মার সাথে সম্পর্ক খারাপ হয়ে যাবে জামাই ফোন দিলে! তাই আর আমি সাহস করে দিতে পারি না! বাই দ্যা ওয়ে তুমি কি আমাকে সাহসের খোটা দিলে?”
শিশির:”হ্যাঁ দিলাম! তো?”
নাহিয়ান:”একবার শুধু দেশে আসি তারপর তোমাকে দেখাচ্ছি আমার সাহস! পুরো পরিবারের সামনে তোমাকে দীর্ঘ একটা কিস করে বলবো সি ইস অনলি মাইন! আই নিড হার! আই নিড টু…”
নাহিয়ান আর কিছু লিখলো না! তবে শিশিরের আর বুঝতে বাকি রইলো না নাহিয়ান কি বলতে চাইছে! কান লাল হয়ে ধোয়া বের হয়ে গেল তার! লজ্জায় তার ফর্সা মুখশ্রী যেন রক্তিম বর্ণ ধারণ করল!সে ধাতস্থ হয়ে লিখলো,
—”আগে দেশে তো আসুন! সকাল হতে এখনও বহু দেরি! সবে সন্ধ্যা!”
নাহিয়ান:”সন্ধ্যা হোক বা মাঝরাত সেখানে রৌদ্রজ্জ্বল দিনের সোনালী রোদ্দুর হয়ে অতি দ্রুতই আমার আগমন ঘটবে প্রাণনাশিনী!”

নওরিফা খানম:”আর একটুখানি মা এইটুকু, এইটুকু নিয়েই শেষ!”
শিশির মুচকি হাসলো ‌নওরিফা খানম এখনো তাকে সেই পাঁচ বছরের বাচ্চা মেয়েদের মতো করে খাওয়াচ্ছে দেখে, সে শেষবার বিরিয়ানিটুকু গালে নিয়ে বলল,,
—”উফফফ আন্টি! আমি কি বাচ্চা? এইভাবে কেন বলছ!”
নওরিফা খানম হাতে পানি দিয়ে বলল,,
—”আমার কাছে তো এখনও বাচ্চাই!”
শিশির আবারও হাসলো, যার ফলে তার পা-চোয়ালের টোলটা গর্তের মতো হয়ে ভেতরের দিকে ঢুকে গেল কিঞ্চিৎ। তা দেখে নওরিফা খানম বলল,,
—”নুয়া, একটা কথা জানিস?”
শিশির:কি কথা আন্টি?”

নওরিফা খানম:”যার চোয়ালে টোল পরে তাকে তার স্বামী অনেক ভালবাসে!”
শিশির ভীষণ লজ্জা পেল নওরিফা খানমের এমন কথায়। সে আর কিছু বলার আগেই রুমে প্রবেশ করল ইমতিয়াজ চৌধুরী। কিছু একটা খুঁজতে চারিদিকে সে তারপর ‌নওরিফা খানমের দিকে তাকিয়ে সে বলল,,
—”রিফু আমার মাউস প্যাড কই?”
নওরিফা খানম:”তোমার মাউস প্যাড কই তা আমি কি জানি? ঠিকমতো রাখতে পারো না!”
ইমতিয়াজ চৌধুরী:”আমি ঠিক করে রাখবো তো তুমি আছো কেন?”
নওরিফা খানম:”ইস আমার নাগর ‌রে! কেন তুমি কি আমাকে বাসার কাছের লোক পেয়েছো? যে আমি উল্টাপাল্টা করে রাখবা আর আমার সেগুলো সব গুছিয়ে রাখা লাগবে!”
ইমতিয়াজ চৌধুরী স্বভাবসুলভ হেসে বললেন,,

—”তুমি বুয়া হতে যাবে কেন? তুমি তো আমার গিন্নি আমার বস! তাই আমি কিছু উল্টাপাল্টা করলে ঠিক করে দেয়া হোক দায়িত্ব তো তোমার তাই না!”
নওরিফা খানম:”আসছে আমার!দেখো ওই ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারে আছে!”
ইমতিয়াজ চৌধুরী এগিয়ে গিয়ে ড্রয়ার খুলে মাউস প্যাডটা‌ হাতে নিয়ে বলল,,
—”এজন্যই তো বলি তুমি আমার বস!”
নওরিফা খানম:”হইছে আর বেশি তেল দিতে হবে না!”
ইমতিয়াজ চৌধুরী শিশিরের দিকে ফিরে বলল,,
—”দেখেছিস নুয়া মা! তোর আন্টিকে ভালো বললেও খারাপ অর্থটাই বের করে! আমি কত যত্ন করে আমার বস বললাম আমার উনি বলছে আমি নাকি তেল দিচ্ছি!”
শিশির এতক্ষন নওরিফা খানম আর ইমতিয়াজ চৌধুরীর কাণ্ডে মুখ চেপে হাসছিল। হঠাৎই ইমতিয়াজ চৌধুরীর কথায় সে বলল,,

—”আসলেও আংকেল!”
তারপর শিশির নওরিফা খানমের দিকে তাকাতেই দেখতে পেল নওরিফা খানম তার দিকে কটমট দৃষ্টিতে চেয়ে আছে। তা দেখে শিশির বলল,,
—”আঙ্কেল তুমি যাও তো! তোমার না কাজ আছে।”
ইমতিয়াজ চৌধুরী হেসে বের হয়ে গেলেন। শিশির নওরিফা খানমের দিকে তাকিয়ে বলল,,
—”আচ্ছা আন্টি তোমাদের তো অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ তাই না?”
নওরিফা খানম:”অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ না ছাই! লাভ ম্যারেজও না আমাদের!”
শিশির অবাক হয়ে বলল,,
—”কিন্তু আমি তো জানতাম তোমাদের অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ!”

নওরিফা খানম:”আর বলিস না নুয়া! আমার পরিবারের লোকগুলো সরল ছিল তো এই জন্য বুঝতে পারিনি।তোর আঙ্কেল মানে ইমতিয়াজ আমার কাজিন ছিল। তো প্রায়ই ও আমাদের বাসায় আসতো,ও অনেক আগে থেকে আমাকে পছন্দ করত কিন্তু আমি জানতাম না, তো একদিনও আমাকে প্রপোজ করল একসেপ্ট কি!ভয়ে রীতিমতো কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে গিয়েছিল আমার। কারন আমার বড় ভাই ভীষণ ডেঞ্জারাস ছিল ভাইয়া যদি জানতে পারতো তাহলে ইমতিয়াজকে ওইখানেই পুতে রেখে দিত!”
শিশির:”তারপর কি হলো?”

নওরিফা খানম:”তারপর আর কি ইমতিয়াজ ও কি কম যায় নাকি? ওই দিনই জোর করে আমায় কাজী অফিসে নিয়ে গেল,সেখানেই বিয়ে হলো আমাদের, তারপর আস্তে আস্তে ওর ব্যবসায় প্রফিট হতে শুরু করল। অতঃপর ওর পরিবার আমার পরিবারের কাছে প্রস্তাব নিয়ে আসলো ভাইয়াও রাজি হলো যেহেতু ও তখন বড় ব্যবসায়ী হয়ে গিয়েছে! তারপর আমাদের আবার বিয়ে হলো! এজন্যই সবাই জানে আমাদের অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ! কিন্তু আমাদের বিয়ে হয়েছিল সাড়ম্বরে বিয়ে হওয়ারও প্রায় পাঁচ বছর আগে!”
শিশির মনে মনে বললো,,

—”ও তার মানে আজকে বুঝলাম যেরকম বাপ তার সেই রকম ছেলে! একজন প্রপোজ এক্সেপ্ট করেছিল না বলে বিয়ে করেছিল আর একজন….”
নওরিফা খানম:”কি হলো মনে মনে কি ভাবছিস?”
শিশির:”মাইন্ড ব্লোয়িং আন্টি! আংকেল কে দেখলে তো বোঝাই যায় না!”
নওরিফা খানম:”তাহলেই বোঝ!”
শিশির কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,,
—”আচ্ছা আন্টি?”
‌নওরিফা খানম:”হুম!”

শিশির:”না মানে আমি বেশিরভাগ সবার কথাই জানি কিন্তু কখনো তো তুমি তোমার বাবা বাড়ি সম্পর্কে কিছু বলো না! ভীষণ ইচ্ছা তোমার বাবা বাড়ি যাওয়ার! এটলিস্ট ঐখানকার মানুষগুলো সম্পর্কে কিছু বলো?”
নিজের বাবা বাড়ির কথা শুনে হঠাৎই নওরিফা খানমের মুখশ্রীতে অমুল পরিবর্তন দৃষ্টিগত হলো, কেন যেন হঠাৎই তার শান্ত মুখশ্রীতে নেমে এসেছে কালবৈশাখীর অশান্ততা! শিশির লক্ষ্য করেছে যখনই নওরিফা খানমকে তোর বাবা বাড়ি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয় তখনই এমনটা হয়, মুখে আঁধার নেমে আসে তার সে চুপসে যায় নয়তো সারাক্ষণ তো সে হাসিখুশিই থাকে!
কি জানি নিজের বাবা বাড়ির কথা শুনলে কি হয় নওরিফা খানমের? যাইহোক শিশির আর কথা বাড়ালো না।সে বুঝতে পারলো নওরিফা খানম নিজের বাবার বাড়ি সম্পর্কে কথা বলতে আগ্রহী নয়। তাই শিশির বলল,,
—”আচ্ছা আন্টি থাক পরে একদিন শুনবো এখন আপাতত তুমি ঘুমিয়ে পড়ো রাত তো বেশ হলো!”
নওরিফা খানম অনিচ্ছাকৃত হেসে বললেন,,
—”আচ্ছা!”
শিশির দ্রুত বের হয়ে গেল। কিন্তু সে এটা ঠিকই বুঝতে পারল যে কিছু তো একটা আছে কিছু একটা রহস্য অবশ্যই আছে নাহলে কোনো কারণ ছাড়াই কেন বাবা বাড়ির কথা শুনলে নওরিফা খানমের মুখে বিষন্নতা নেমে আসবে!

খুলনার চৌধুরী আবাসন……
ঘড়ির কাঁটায় রাত ১২ টা ছুঁই ছুঁই।কালকে থেকে ফারিন এর ইয়ার চেঞ্জ এক্সাম শুরু হচ্ছে। প্রথম দিন জীববিজ্ঞান পরীক্ষা হয় কিছুটা নিশ্চিন্ত সে। তার প্রিয় সাবজেক্ট এটাই, আর মূলত এটার কারণেই সে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ছে। না হলে কবেই বিজ্ঞান বিভাগ থেকে মানবিক বিভাগে চলে যেত, এত প্যারা নিয়ে আর জীবন চলে না।
সবাই বলে পরীক্ষার আগের রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়া উচিত,আর সেখানে পরীক্ষার আগের রাত কেটে দিন হয়ে যায় ফারিন এর পড়া শেষ হয় না যেন সারা বছরের পড়া পরীক্ষার আগের দিন রাতেই পড়তে হবে তাকে! স্টাডি টেবিলের চেয়ারে বসে গুনগুন করে গান গাইছে সে, ফারিনের বহু পুরনো অভ্যাসের একটি হচ্ছে পড়ার সময় সে কখনোই শান্তভাবে একটানা পড়তে পারে না।

৩০ মিনিট পড়লে তার ভিতরে ১৫ মিনিট গান গাইতে গাইতে চলে যায় তার। এদিকে নির্ঝর বিছানার উপর বসে ল্যাপটপে একটা প্রেজেন্টেশন এর কাজ করছে আর মাঝে মাঝেই ফারিনের দিকে আড়চোখে তাকাচ্ছে! ফারিনের আর তাতে কি যায় আসে সে নিজের মনে গুন গুন করে গান গাইতেই আছে।
হুট করেই তার নিম্ন উদরে চিনচিন ব্যথা অনুভূত হল, তৎক্ষণাৎ চোখ দুইটা বড় বড় হয়ে গেল ফারিনের, ব্যথা ক্রমশ বাড়ছে। ফারিন বুঝতে পারল না। তবে কি তার শঙ্কাই ঠিক!সে যা আশঙ্কা করছে তা যদি সত্যি হয় তাহলে তার মান সম্মান পুরাই শেষ, অন্তত নির্ঝরের সামনে তো! হুট করে একবার উঠে দাঁড়ালো সে! যা ভেবেছিল ঠিক তাই! নির্ঝর তাকিয়ে আছে তার দিকে এবার কি হবে?সে ওয়াশরুমেও বা কিভাবে যাবে।

তার পরনের সাদা চুড়িদারের করুণ দশা! সেটা ভালোভাবেই অনুভব করতে পারছে সে! কেন যে মরতে আজকে সাদা চুড়িদারটা পড়তে হলো তাকে! অন্য রং পড়লে কি সমস্যা হতো? থেকে হাজার টা গালাগালি দিয়ে তবে থামল সে। কিছুক্ষণ পর কোনো উপায়ান্ত না পেয়ে সে নির্ঝরকেকে রুম থেকে বের হয়ে যাবার জন্য বলবে তার আগেই সে দেখতে পেল নির্ঝর কারো একজনের সাথে ফোনে কথা বলতে বলতে রুম থেকে বের হয়ে যাচ্ছে!
শান্তি! ফারিন দ্রুত ওয়াশরুমের দিকে ছুট লাগালো। কিছুক্ষণ পর ওয়াশরুম থেকে বের হয়েই বাধলো আরেক মহা বিপত্তি! তার কাছে তো কাঙ্খিত বস্তুটিই নেই! এখন তো নির্ঝরকে বলতেই হবে না হলে সারারাত! তার উপর এত জোর পেটে ব্যথা করছে! সে নিম্ন উদরে নিজের বাঁ হাত ঠেকিয়ে নির্ঝরকে ডাকতে যাওয়ার আগেই দেখতে পেল স্টাডি টেবিলের উপর ইতিমধ্যেই একটা ন্যা’প’কি’নে’র প্যাকেট এনে রেখেছে কেউ! তবে কি কাজটা নির্ঝর করেছে! শেষ শেষ! ফারিনের মান-সম্মান যাও বাকি ছিল তাও আজকে শেষ!
একদিকে মান সম্মান অন্যদিকে তীব্র পেটে ব্যথা! এই দুইয়ের দোলাচলের মধ্যে দরজার দিকে তাকাতেই সে দেখতে পেল একটা হট ওয়াটার ব্যাগ হাতে রুমে প্রবেশ করছেন নির্ঝর! ফারিন কে দেখে সে বললো,,

—”তুমি এখনো চেঞ্জ করো নি!”
ফারিন:”স-স-স্যার!”
নির্ঝর:”দ্রুত ওয়াশরুম থেকে চেঞ্জ করে আসো! আর কোনো কথা নয় যাও!”
লজ্জায় মাথা নুইয়ে ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ালো ফারিন! কিছুক্ষণ পর ওয়াশরুম থেকে বের হওয়ার পর সে দেখতে পেল ওয়াটার ব্যাগটা হাতে বিছানার উপর বসে আছে নির্ঝর! ফারিনকে দেখে সে বলল,,
—”সেঁক নিজে দিতে পারবে নাকি আমি দিয়ে দিব?”
ফারিন কিছু বলতে পারলো না,শুধুমাত্র লজ্জায় মাথা নুইয়ে রাখল। নির্ঝর তার সাথে এই বিষয়ে কথা বলছে ভাবলেও লজ্জায় মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছা করছে তার। অপরদিকে তাকে এমন নিশ্চুপ দেখে নির্ঝর উদ্বিগ্ন কন্ঠে শুধালো,,

—”ব্যথা কি বেশি করছে? মেডিসিন লাগবে? কি হলো কথা বলছো না কেন?”
ফারিন মাথা নিচু করেই ফিসফিসিয়ে বলল,,
—”না স্যার এসব কিছু লাগবে না!”
কথাটা বলেই তীব্র পেট ব্যথায় চোখমুখ খিযে বন্ধ করল। তা দেখে নির্ঝর দ্রুত বিছানা থেকে উঠে তার কাছে এগিয়ে এসে তার বাহুমূলে আলতোভাবে হাত রেখে তাকে বিছানায় বসিয়ে বলল,,
—”হাজব্যান্ড হই আমি তোমার! সো আমার সামনে লজ্জা পাওয়ার কোনো কারণ নেই!”
এমনিতেই নির্ঝরের স্পর্শে ফারিনের লজ্জায় মরি মরি অবস্থা,দেহের প্রতিটি লোমকূপে যেন বয়ে যাচ্ছে লজ্জার শিহরণ, তার উপর নির্ঝরের বলা কথাটা,,’হাজব্যান্ড হই আমি তোমার!’কথাটাই যেন তার কানে বারবার বাজছে। লজ্জায় কান লাল হয়ে গেল তার।

সকালের মিষ্টি রৌদ্রকিরণের ঝলকানিতে ঘুম ভাঙলো ফারিনের। হঠাৎই দেয়াল ঘড়িটার দিকে চোখ যেতে সে দেখতে পেল ঘড়ির কাটায় সকাল সাতটা ছুঁই ছুঁই! আজকে প্রথম পরীক্ষা থাকায় হলে দ্রুত যেতে হবে তার উপর পড়াগুলো একবার রিভিশনও তো দিতে হবে।কত দেরি হয়ে গেল!আর কিছু না ভেবে দ্রুত বিছানা থেকে উঠে ওয়াশরুমে দৌড় লাগালো সে।
ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে টাওয়াল দিয়ে চুল মুছতে মুছতে সে আনমনে ভাবলো এখন যদি একটু চা হলে মন্দ হতো না। মাথাটাও ঝিমঝিম করছে সেই সাথে পেট ব্যথাটারও উপশম হতো খানিকটা! ভাবতে ভাবতেই দরজা দিকে তাকাতেই সে দেখতে পেল দুইকাপ চা হাতে রুমে প্রবেশ করছে নির্ঝর।নির্ঝরের ‌হাতে চা দেখে বেশ অবাক হলো ফারিন।তাকে আরও অবাক করে দিয়ে নির্ঝর বলল,,

—”চা টা খেয়ে নাও!ব্যাথাটা কম লাগবে আর মাথা ঝিমঝিম কমে আসবে!”
ফারিন হতবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল তার পানে। নির্ঝর কি করে জানল ফারিনের মাথা ঝিমঝিম করছে! তবে সে আর কোন প্রশ্ন না করে চা টা হাতে নিয়ে বলল,,
—”আম্মু তো সম্ভবত এখনো ওঠেনি চা কে বানালো?”
নির্ঝর কোনো কথা না বলে স্টাডি টেবিলের দিকে এগিয়ে গিয়ে বায়োলজি বইটা হাতে নিয়ে বলল,,
—”লাস্ট চ্যাপ্টারটা বাকি ছিলো না তোমার এখন রিভিশন করে নাও!”
ফারিন:”আচ্ছা!”

—”কোন টেনশন করবি না। মাথা ঠান্ডা করে সব প্রশ্নের আনসার দিবি। আর যদি পেটে বেশি ব্যথা করে তাহলে বাইরে চলে আসবে, আমি বাইরেই বসা থাকবো, ঠিক আছে?”
পঞ্চম বারের মত একই কথা বলে থামলেন হাসনা খান। তিনি যাচ্ছেন ‌ফারিনের সাথে।গাড়ি চলছে আপন গতিতে ভেতরে তিনজন হাসনা খান, নির্ঝর আর ফারিন। নির্ঝরের ডিউটি অন্য হলে হওয়ায় হাসনা খান ফারিনের পরীক্ষা শেষ হওয়া অব্দি ‌ ফারিনের হলের বাইরেই থাকবেন।হাসনা খানের উদ্বিগ্ন মুখশ্রীর দিকে তাকিয়ে ফারিন মুচকি হেসে বলল,,

—”আম্মু তোমায় বললাম তো টেনশন করো না! কোনো সমস্যা হবে না আমি মেডিসিন নিয়ে তারপরে এসেছি!”
হাসনা খান:”তাও!”
ঠিক তখনই গাড়ির ব্রেক কষে নির্ঝর বলল,,
—”চলে এসেছি আম্মু!”
হাসনা খানের সাথে বাইরের দিকে তাকাল ফারিন। সঙ্গে সঙ্গে তার দৃষ্টিগত হলো মেহনাজ। সে দ্রুত হাসনা খানকে সামান্য ধাক্কা দিয়ে বলল,,
—”আম্মু আম্মু এই দেখো সেই মেহনাজ!”
হাসনা খান ফারিনের দৃষ্টি অনুসরণ করে বাইরের দিকে তাকাতেই দেখতে পেল তাদের থেকে একটু দূরে একটা মেয়ে এদিকেই আসছে, পরনে ব্ল্যাক কালার লং টপসের সাথে সামান্য ঢিলেঢালা জিন্স, ওড়নাটা গলার সামনে থেকে পেচিয়ে মাথার উপরে রাখা,আর চোখে একটা সানগ্লাস। তাকে দেখে হাসনা খান বলল,,

—”এই সেই ঢঙ্গি?”
ফারিন:”হুম!”
হাসনা খান কিছু বলতে যাবে তার আগেই নির্ঝর বলল,,
—”নামবে তোমরা? তোমাদের এখানে দিয়ে আমার আবার অন্য কলেজে যেতে হবে!”
হাসনা খান ফারিনের দিকে ফিরে বলল,,
—”নাম পুতুল!”
ফারিন নামতে গেলেই তার ওড়নাটা আটকে ধরল হাসনা খান তা দেখে ফারিন বলল,,
—”কি হয়েছে আম্মু?”
হাসনা ইশারা দিয়ে বোঝালেন কিছু না। ফারিন নেমে গেল। নির্ঝরও নামলো। কিন্তু গাড়ি থেকে একটু দূরে যেতেই ফারিনের মনে হল তার ওড়নাটা আটকে গেছে কোথাও। পিছন ঘুরে এসে দেখতে পেল গাড়ির জালনার কাঁচের সামান্য ছিদ্রে আটকে গেছে তার ওড়নাটা। সে পিছন ঘুরে ছাড়াতে যাওয়ার আগেই হাসনা খান দ্রুত নেমে এসে নির্ঝরকে বললো,,

—”পুতুলের ওড়নাটা ছাড়িয়ে দে তো নির্ঝর!”
নির্ঝর কিছুটা পিছিয়ে গিয়ে ফারিনের ওড়নাটা কাঁচের ছিদ্র থেকে সরিয়ে দিল। তখনই তাদের পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিল মেহেনাজ। নির্ঝরকে ফারিনের ওড়না সরিয়ে দিতে দেখে দ্রুত বেগে মুখ সরিয়ে নিল সে। তা দেখে হাসনা খান ফারিনের কানে ফিসফিসিয়ে বলল,,
—”কিছু বুঝলি পুতুল?”
ফারিন অবাক দৃষ্টিতে হাসনা খানের দিকে তাকিয়ে বলল,,
—”আম্মু!”
হাসনা খান:”কিসের আম্মু? এসব দিক থেকে আমি তোর বান্ধবী! এরপর থেকে ওই মেয়ে কখনো ঝামেলা করলে সরাসরি আমাকে এসে বলবি!”
ফারিন মুচকি হেসে বলল,,
—”তো বান্ধবী চলো!”
হাসনা খান হেসে বললেন,,
—”হুম চল!”

আনায়া:”দ্রুত চলনা!”
ভার্সিটির ক্লাস শেষে ক্যাম্পাসের ভিতরের রাস্তা দিয়ে হাটছিল শিশির ও তার বন্ধুরা। হাসি আনন্দঘন পরিবেশে ভিজে যাচ্ছিল মুহূর্তগুলো। হঠাৎই আনায়ার এমন কথায় সবাই সন্দেহের দৃষ্টিতে তার দিকে তাকালো শিশির বলল,,
—”বোঝনা”প্রথম প্রেমের প্রথম নেশা কাটে না সহজে”এই বেডির অবস্থা হয়েছে তাই! দেখতেছি আমরা দ্রুত যাচ্ছি তারপরেও!”
পাশ থেকে লিজা বলল,,
—”বোঝনা ওনার ওগো অপেক্ষা করছে যে! এজন্যই এত তাড়া!”
পাশ থেকে শিশির,,

—”আজ কেও নাই বলে!”
তার কথায় তীব্র প্রতিবাদী কন্ঠে আশা বলল,,
—”ওনারা নাকি আবার কেউ নাই! তা বলি নাহিয়ান ভাইয়া আপনার কি হয় মিস?”
শিশির কটমট দৃষ্টিতে আশার পানে তাকিয়ে বলল,,
—”তোকে না একদিন বারন দিসি নাহিয়ানের নাম মুখে আনবি না!”
সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত সবাই হেসে বলল,,
—”এবারে ঠেলা সামলাও! এতক্ষণ আনাইয়ার পিছনে লাগতেছিল আর শুধুমাত্র নাহিয়ান নাম শুনেই মেয়ে এত ক্ষেপে উঠল বুঝতে হবে!”
শিশির:”যা ইচ্ছা বোঝ! বাট একটা কথা মনে রাখ নাহিয়ান এর নাম এখানে আমি ব্যতীত অন্য কোন মেয়ে উচ্চারণ করবে না এমনকি লিজা ও না!”
সঙ্গে সঙ্গে লিজা বললো,,

—”মাফ কর বইন আমার অলরেডি সম্বন্ধ চলতেছে দরকার নেই তোর ওগোর আমার, এ কথাটা বরং তুই আশাকে বল!”
আশা:”বাপরে বাপ শুধু নাম বললে যে এত কিছু হবে জানলে আমি জীবনে নাম তো কি ন ও বলতাম না!”
শিশির:”এটা ভালো ন ও বলবি না!”
সজল আর সাইফ এবার সশব্দে হেসে উঠলো। হঠাৎই এত লোকের সাথে সম্মুখে বেঁধে গেল শিশির। লোকটি শিশিরকে দেখে কিছু বলার আগেই তার সাথে থাকা কিছু লোক শিশিরকে বললো,,
—”এই মেয়ে সরো!..”
বাকি কিছু বলার আগেই লোকটি তাদেরকে থামিয়ে দিয়ে শিশিরের দিকে চেয়ে বললো,,
—”নাম কি তোমার মামনি?”
মধ্যবয়স্ক লোকটির কন্ঠ ঘুমন্ত পাহাড়ের গহীন গর্জনের মতো,র ভয়ংকর। দৃষ্টি এক অন্যরকম রহস্যময়, প্রথম সাক্ষাতেই লোকটিকে বড় অদ্ভুত হিসেবে আবিষ্কার করল শিশির। সে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে লোকটির দিকে তাকিয়ে বলল,,
—”শিশির শিশির!”
লোকটির অনুমান বোধহয় সঠিক হলো না। সে এক অন্যরকম ভঙ্গিতে বলল,,

—”ওহ আচ্ছা!”
লিজা, আনায়া আশা, সাইফ সজলরা ততক্ষণে বেশখানিকটা এগিয়ে গেছে। শিশির লোকটার সাথে সামান্য আলাপচারিতা শেষে এগিয়ে গেল তাদের দিকে।। তাকে দেখে সাইফ বললো,,
—”বান্ধবী! তুই ওই লোকের সাথে কি কথা বলছিলি?”
শিশির:”না উনি আমার নাম শুনতে ছিল বাবার নাম তাই আর কি? কিন্তু তুই এত অদ্ভুত বিহেভ করছিস কেন?”
সাইফ:”উনিই তো ফুয়াদ ভাইয়ের বাবা। ফরিদ আহমেদ, এলাকার নাম করা ‌লোক নেতা। পাতি নেতা টাইপ যাকে বলে!”
শিশির কিছু একটা ভেবে আস্তে করে বলল,,
—”ওওহ”

মাঝরাতের রোদ্দুর পর্ব ৪৪

শিশির কি একটা ভেবে ফের পিছনে তাকাতেই দেখতে পেল লোকটা এখনো সেই রহস্যময় তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার দিকে। শিশিরকে তাকাতে দেখেই সে তার পাশে থাকে একটা লোকের সাথে কি জানি একটা বলতে বলতে ভার্সিটির প্রিন্সিপালের রুমের দিকে এগিয়ে গেল। কিন্তু শিশিরের কাছে কিছু একটা অদ্ভুত ঠেকলো। কেন যেন মনে হল লোকটা সাধারণ কেউ নয়! লোকটির সাথে হয়তো কোন পুরাতন হিসাব বাকি আছে তার। কিন্তু কি জানি একেই শিশিরের নিছকই চিন্তার অলস দোলায় ভেসে ওঠা এক আবছা ছায়াপট‌। নাকি এমন কিছু যা পাল্টে দেবে তার জীবনের গতিপথ??

মাঝরাতের রোদ্দুর পর্ব ৪৬