হৃদয়ের সঙ্গোপনে পর্ব ১২

হৃদয়ের সঙ্গোপনে পর্ব ১২
তোয়া নিধী দোয়েল

বৈঠকখানায় মাথায় ঘোমটা টেনে বসে রয়েছে তুর্কি। মহিলা মানুষে গিজগিজ করছে চারিদিক। একে একে এসে দেখছে যাচ্ছে মাস্টার বাড়ির বড় ছেলের বউ।
অসহ্য লাগছে তুর্কির। মা নিশ্চয়ই জানতো ওই বুড়ো লোকের সাথে ওর বিয়ে ঠিক হয়েছে তাই এত তাড়াতাড়ি করে বিয়েটা দিয়ে দিলো। মা হয়ে বেইমানি কি ভাবে করলো। হুমাইরা এসে বলে,
-ও বউমা উঠো এখন। রান্না ঘরে চলো। পায়েস রান্না করবা সবার জন্য।

তুর্কি ঢোক গেলে। ও জীবনে রান্নাঘরে ঢোকেনি বড় কোনো রান্নার উদ্দেশ্যে। হুমাইরা মোহনা সূচনাকে বলে তুর্কিকে রান্না করে নিয়ে যেতে। সে দুধ আনতে যাচ্ছে। মোহনা সূচনা এসে তুর্কিকে উঠতে সাহায্য করে। তুর্কি ভ্রু কুঁচকে ভেবে যাচ্ছে পায়েস কি ভাবে রান্না করে। মায়ের সাথে কথা বলতে হবে। কেনো ওকে মাঝ নদীতে ফেলেছে তাই জানতে হবে। তার আগে পায়েস রান্না করার পদ্ধতি শিখতে হবে। কিছু দূর এগোনোর পর; তুর্কি মোহার কানে কানে বলে ওর ওয়াশরুমে যাওয়া প্রয়োজন। তাই ওদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে রুমে চলে যায়।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

রুমে ঢোকা মাত্র চোখ পরে আদনানের উপর। সে স্টাডি টেবিলের সামনে বসে কিছু পেপার দেখছে। তুর্কি সেই দিকে এক পলক তাকয়ে মুখ ভেঙায়। বিছানার কাছে গিয়ে ফোন খুঁজেতে থাকে। ফোন তো বিছানার উপরে-ই রেখেছিলো তাহলে গেলো কই। ও বিছানার ওই পাশে যাওয়ার সময় ওর পায়ের নিচে একটা কাগজ অনুভব হয়। পা সরিয়ে দেখার চেষ্টা করে। এইটা তো সেই কাগজ যেটা একটু আগে ও ফেলে রেখে গেছিলো। তুর্কি বিরক্তি নিয়ে আদনানের দিকে তাকায়। কাগজ টা সেই জায়গায় রয়েছে। ও নিচু হয়ে কাগজ উঠিয়ে জানলার কাছে গিয়ে ফেলে দেয়।
বাড়ির পেছনের দিকটায় কাঠ-বাগান। তার পরে ছোট একটা পুকুর। তুর্কি কাগজ ফেলে ঘুরতে-ই আদনান ওর পাশে এসে জানালা দিয়ে কিছু একটা ফেলে। তুর্কি সেই দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুঁচকে চকে প্রশ্ন করে

-কী ফেললেন?
-তুমি কী ফেললে?
-আপনার এত শুনতে হবে কেনো?
– তো, তোমার এত শুনতে হবে কেনো?
-আপনি কি সোজাসুজি কথা বলতে পারেন না?
আদনান কোনো উত্তর দেয় বা। তুর্কি মুখ ভেঙিয়ে চলে আসে। এই লোকের সাথে ঝগড়া করার কোনো ইচ্ছে ওর নেই। ঘাড়ত্যাড়া একটা লোক। তুর্কি বিছানার কাছে এসে আবার ও খুঁজতে থাকে ফোন। আদনান ও ওর আগের জায়গায় এসে বসে। তুর্কি ড্রেসিং টেবিলের সামনে খোঁজে। ওয়্যাড্রোবের উপরে খোঁজে। নাহ্ ফোন টা কোথাও নেই। এখানে-ই তো রেখেছিলো। তাহলে গেলো কই! তুর্কি আদনানের দিকে তাকিয়। বোধহয় এই লোক কিছু একটা করেছে। ও শান্ত কণ্ঠে বলে,

-আমার ফোন কই?
আদনান শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে,
-আমার দেওয়া পেপার কই?
তুর্কি বুকে দুই হাত ভাঁজ করে দৃষ্টি অন্য দিকে নিয়ে গর্বের সাথে বলে,
-ফেলে দিয়েছি। ওই যে জানাল দেখতে পাচ্ছেন; ওই খান দিয়ে ফেলে দিয়েছি।
আদনান চেয়ার থেকে উঠে শার্টের হাতা ভাঁজ করতে করতে বলে
-ওই যে জানালা দেখতে পাচ্ছো; ওই খান দিয়ে ফেলে দিয়েছি।
তুর্কি আঁতকে উঠে বলে,

-কীইইই?
-তোমার ফোন।
তারপর দৌড়ে জানালার পাশে যায়। জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করে। তার পর আদনানের দিকে তাকিয়ে বলে
-আপনি… আপনি কি পাগল? ফোন ফেলেছেন কেনো?
আদনান কলার ঠিক করতে করতে বলে,
-আমার পেপার ফেললে কেনো?
-আপনার পেপারের সাথে আমার ফোনের তুলোনা?
-অবিয়েসলি।
তুর্কি আদনানের সামনে এসে বলে,

-আমি আপনার মতো ঘাড়ত্যাড়া অসভ্য লোক আমার জীবনে আর একটা ও দেখি নাই।
এই জঙ্গলের মধ্যে আমার ফোন কীভাবে খুঁজে পাবো? চুপ চাপ আমার ফোন এনে দিন।
-এই জঙ্গলের মধ্যে আমার পেপার কীভাবে খুঁজে পাবো? চুপ চাপ আমার পেপার এনে দেও।
তুর্কি রাগে কটমট করতে থাকে। এই লোক এত অসভ্য। কেনো যে ওই দিন লোকটার পেছনে লাগতে গেছিলো।
-দেখুন আপনাকে ভালোই- ভালোই বলছি, আমার ফোন কোথায় ফেলেছেন সেটা এনেদিন।
-দেখো তোমায় ভালোই- ভালোই বলছি, আমার পেপারটা কোথায় ফেলেছো সেটা এনে দেও।
তুর্কি রাগে গজগজ করতে করতে বলে,

-ঘোড়ার মাথা আনবে। অসভ্য বুড়ো একটা লোক।
এরপর দরজার দিকে ফিরে বাইরে বের হয়ে যায়। আদানান ও বের হয়। ওর কলেজে ইম্পরটেন্ট কাজ আছে। তুর্কি সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় সূচনা মোহোনা এগিয়ে এসে বলে
-ভাবি এতক্ষণ লাগে। চাচিয়াম্মু কখন দুধ দিয়ে গেছে। তাড়াতাড়ি আসো। অনেক মেহমান আসছে। সবার জন্য রান্না করবা।
তুর্কি ধীর পায়ে আসতে থাকে। ভেবে ছিলো মায়ের কাছ থেকে শুনবে কি ভাবে রান্না করে কিন্তু অসভ্য বুড়ো লোকের জন্য তা ও হলো না। ও ভয়ে ভয়ে রান্নাঘরের দিকে এগোতে থাকে। উপর থেকে সব কিছু শোনে আদনান।
সূচনা আবার বলে,

-চাচিয়াম্মা, বাইরে কাজ করছে। কাটাকুটির মহিলারা এসেছে। তাই পেঁয়াজ মরিচ আদা রসুন দিতে গেছে।
মাত্র জিয়াসমিনের সাথে কথা বলে ফোন রেখে রেডি হচ্ছিলো রেজুয়ান। গরু কেনার জন্য বের হতে হবে। এর মধ্যে আবারো কল বেজে উঠে। বিরক্তিতে ফোনের দিকে তাকায়। সাথী কল করেছে। এ জীবনে গার্লফ্রেন্ড নামে জিনিসটার অভাব নেই তার। এই যে মেয়েটা কল করেছে ওর মনে নেই এই মেয়েটার সাথে আগে কখনো কথা বলেছিলো নাকি।

মেয়েরা পছন্দ করার অনেক কারণ ও আছে। আদনান রেজুয়ান দুই ভাই সুন্দর। তবে রেজুয়ান একটু বেশি সুন্দর। এই সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দেয় ওর গজ দাঁতের হাসি। হাসি দিলে ডান পাশে থাকা গজ দাঁত বের হয়। আরো সুন্দর লাগে। তবে এই দাঁত ওর বিন্দু মাত্র পছন্দ নয়। ছেলে মানুষের গজ দাঁত কেনো থাকবে। ওর ইচ্ছা অপারেশন করে উঠিয়ে ফেলবে কিন্তু হুমাইরার জন্য পারে না। তার ধারনা গজ দাঁত নাকি ভাগ্যবান ভাগ্যবতীদের হয়।
ফোন ধরার সাথে সাথে ওপাশ থেকে মেয়েটি বলে উঠে

-কি সমস্যা তোমার কল কেনো ধরনা?
-কে আপনি?
-আমি কে মানে? তুই আমাকে চিনছ না?
-চিনি না দেখেই তো জিগাইলাম। তাড়াতাড়ি বল। তা না হলে ফোন রাখ। প্যাঁচাল পারার সময় আমার নেই।
-মীম আমি সাথী।
-বাড়ি কই? কবে পরিচয় হয়েছিলো আমাদের?
-ফাজিল তুই আমাকে চিনছ না? আমার বাড়ি কই তুই জানছ না?
-নারে বইন।
-কুত্তা তুই ফোন রাখ।

মেয়েটি বলার আগেই রেজুয়ান কল কেটে দেয়। ওর সময় ও নেই এত প্যাঁচাল পারার। মানুষের একটা গার্লফ্রেন্ড গেলে দশটা আসে। আর ওর বিশটা গার্লফ্রেন্ড থাকা সত্ত্বেও আরো দশটা আসে। রেজুয়ান বাইরে যাওয়ার জন্য বের হতেই আরেকটা কল আসে। সোহেলী।
-হ্যাঁ, বেবি বলো।
-চুপ। তুই কল কেন দেছ না?
-রাগ করছো তুমি কল আমি দিমু কেন? এমবির টাকা কি মাসে মাসে তুমি ভরে দেও?
-মানে সিরিয়াস্লি! আমি রাগ করলে তোমার কিছু যাই আসে না?
-যাইতো যদি মাসে মাসে এমবির টাকা টা পাঠিয়ে দিতা। নেক্সট মাস থেকে পাঠিয়ে দিও আমি কল দিয়ে দিয়ে বিরক্ত করে তুলবো।

-চুপ কথা কবি না। গার্লফ্রেন্ড রাগ করলে রাগ ভাঙ্গাতে হয় এইটা কি জানছ না?
-রিলেশন রাখতে চাইলে রাখ তা না হলে ভাগ। আমি কোনো রাগটাক ভাঙ্গাইতে পারুম না। টাটা।
এই বলে রেজুয়ান কল কেটে দেয়। দরজা থেকে আদনান ডাকে
-মীম।
-ওই।
-জাহিদে মাস্টারের রুমে আয়। কথা আছে
-কেন আবার কোন মিশনে নামতে হবে?

ওপাশ থেকে আর কোনো উত্তর আসে না। রেজুয়ান আর কথা না বাড়িয়ে মুজাহিদদের ঘরের দিকে যায়।
মুজাহিদদের ঘরে ঢুকতে আদনান রেজুয়ান কোনো দিন ও অনুমতি নেয় না। আজ ও তার বিকল্প হলো না। মুজাহিদ জানলার পাশে বসে খুব মনোযোগের সাথে কারো একটা ছবি দেখছিলো। হঠাৎ দরজা খোলার আওয়াজ শোনে দ্রুত ছবিটি পাশে রাখা টিনের বক্সের মধ্যে ঢুকালো। সে জানে কে হতে পারে। নয় রেজুয়ান নয় আদনান। আদনান দ্রুত এসে মুজাহিদকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো

– যার জন্য চিরকুমার হওয়া, মি: চিরকুমার কি এখন সেই ভাগ্যবতী নারীকে দেখছিলো?
-চুপ। কিসের জন্য এসেছস সেটা বল।
আদনান মুজাহিদ কে ছেড়ে দিয়ে বিছানায় বসে। পেছন থেকে রেজুয়ান বেতের মোড়ায় বসতে বসতে বলে
-হারিয়ে গেছো তুমি বহুদূরে
ভাবি তুমি আসবে ফিরে
ধরবে এই হাত গুলো
বলবে তুমি কেঁদনা
ফিরে এসেছি এই দেখো।
রেজুয়ানের গাওয়া কয়েকটি বাক্যে এলোমেলো হয়ে যায় মুজাহিদ। পরক্ষণে-ই নিজেকে সামলিয়ে নেয়। এই বিচ্চু গুলোর সামনে কখনো নরম হওয়া যাবে না। বিশেষ করে রেজুয়ানের সামনে। তাহলে সারাক্ষণ পিছনে লেগে থাকবে।

আদনান মুজাহিদ রেজুয়ান ওরা তিনজন চাচা ভাতিজা কম বন্ধু বেশি। আদনান বাইরে যেমনি থাক চাচার সামনে আসলে বাচ্চা হয়ে যায়। আর রেজুয়ান তো সব সময় আঠার মত লেগে-ই থাকে। তিনজনের মধ্যে গোপন কিছু নেই বললেই চলে।
মুজাহিদ আদনানের দিকে তাকিয়ে বলে,
-ওরে থামতে বল- বলছি। তা না হলে ওর কান কিন্তু, আর ওর সাথে থাকবো না
রেজুয়ান দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলে,
-আমি কি করলাম? আমি তো আমার জন্য গাইলাম। তিন দিনের রিলেশন আজ ব্রেকআপ হলো। সব শেষ। খুব কষ্ট লাগতেছে। কষ্টে বুক ফেটে যাচ্ছে। উফফ কি যন্ত্রনা! সেই দুক্ষে একটু গান গাইতেছিলাম, তোমার জন্য তাও পারি না।

-ওরে থামতে বল।
-আরে পরে করিছ ঝগড়া। এখন যে কাজের জন্য আসছি সেটা শোন।
-আবার কোন পাপ করতে হবে? আমি আগে-ই স্যারেন্ডার করতেছি ;আমি আর তোগো সাথে নাই। তোগো জন্য আমার পাপের খাতা ভরে গেছে। নিজের একটা পাপ ও নাই। কিন্তু পাপের খাতা ভরা। সব তোগো জন্য করা। তাড়াতাড়ি সর।
আদনান মুজাহিদদের হাত ধরে বলে,
-বাপের ভাই এই রকম করো না। এইবার লাস্ট যাও। আর কোনো দিন তোমারে কোনো কাজে ফাঁসাবো না।
মুজাহিদ ব্যঙ্গ করে হেসে বলে,
-তোরা এই কথা জ্ঞান হওয়ার পর থেকে বলে আসতাছস। এই বার লাস্ট এই বার লাস্ট। এই বলে বলে আজ এই পর্যন্ত।

-বললাম তো এইবার লাস্ট,।
রেজুয়ান বলে,
-হ্যাঁ, কাজ টা না করলে তোমার আর বিয়ে হবে না।
-ওরে থামতে বল- বলছি। ও সব সময় আমার বিয়ে নিয়ে পরে কেন।
-মীম থামবি তুই। আরেকটা কথা বললে…
তারপর মুজাহিদদের দিকে তাকিয়ে বলে,
-বাপের ভাই এটাই লাস্ট আর কখনো কোনো পাপের মধ্যে তোমাকে জড়াবো না।
মুজাহিদ জানে সে রাজি থাকলে ও মিশনে নামতে হবে; রাজি না থাকলে ও মিশনে নামতে হবে। তাই পরাজিত সৈন্যের মত পিছু হটে গেলেন। তিনি আদনানের দিকে তাকাতেই আদনান বলতে শুরু করে
-আমার বউকে মা পায়েস রান্না করতে বলেছে। কিন্ত, ও তো কখনো রান্নাঘরে-ই যাই-নি। আমি সিউর ও পায়েস রান্না করতে জানে না। আর আমার সাথে ওর ঝগড়া লেগেছে। তাই আমি কিছুতে-ই ওর সামনে গিয়ে হেল্প করবো না। তাই আমার বদলে তুমি এখন গিয়ে ওকে পায়েস রান্না করতে সাহায্য করবে।

মুজাহিদ অবাক দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে থাকে। বউয়ের সাথে ঝগড়া তাই নিজে সাহায্য করতে যাবে না। উলটে চাচা শ্বশুর-কে পাঠাবে সাহায্য করতে। তাও আবার রান্নাবান্না করার জন্য। রেজুয়ান উঠে দাঁড়িয়ে বলে,
-তাহলে আমি যাই। আমাকে কেনো ডাকছস। বাপের ভাই একাই সব করবো।
আদনান রেজুয়ানের শার্ট টেনে ধরে বলে,
-আমাদের সব পাপের মিশনে আমরা এক সাথে থাকি। তাই এতে ও বিকল্প হবে না। তুই রান্নাঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে পাহারা দিবি যেনো কেউ রান্না ঘরের ভেতরে না যেতে পারে।
মুজাহিদ কিঞ্চিৎ চ্যাঁচিয়ে উঠে,

-হো পাগলা কুত্তায় কামড়া-ইছে। এমনি-তে-ই মেয়ের মাকে ভুংভাং দিয়ে মেয়েটার সাথে তর বিয়ে দিয়েছি। এইটা যদি জানে, এমনিতে-ই আমাকে পেটাবে। আর এখন যাবো পায়েস রান্না করতে?
-বাপের ভাই প্লিজ। এই বার- ই লাস্ট। আর কখনো কোনো কাজে তোমাকে জরাবো না। বাড়ি ভর্তি মানুষ আমার বউ যদি রান্না করতে না পারে তাহলে মান-সম্মান সব চলে যাবে। তাই প্লিজ…
-কোন পাপের জন্য যে তোগো মতো শয়তানের চাচা হয়েছিলাম আল্লাহ জানে। ভাবি কোথায়?
-মা কালকের অনুষ্ঠানের জন্য ব্যস্ত। তাই তো তোমাকে পাঠাচ্ছি। এখন কথা না বাড়িয়ে চলো।
আদনান মুজাহিদদের হাত ধরে উঠায়। সাথে রেজিয়ান ও উঠে। এক সাথে রুম থেকে বের হয়ে। তুর্কি যেনো এই প্ল্যান সম্পর্কে না জানতে পারে তাই ও আগে আগে চলে যায়। রেজুয়ান মুজাহিদদের ঘাড় পেছন থেকে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে হাঁটতে থাকে। খোঁচা মারার জন্য বলে,

-এ বার একটু লজ্জা সরম ঢোকা-ও মনে। এ বার বিয়েটা করো। ছেলের বউয়ের রান্নার কাজে সাহায্য করতে যাচ্ছো। কখনো ইচ্ছা করে না নিজের বউয়ের রান্নার কাজে সাহায্য করতে?
মুজাহিদ চিৎকার করে উঠে,

হৃদয়ের সঙ্গোপনে পর্ব ১১

-ওই আদনান আমি যাবো না। ও আমারে আবার খোঁচাইতাছে।
সিঁড়ি দিয়ে নামছিলো আদনান। নিশ্চয়ই রেজুয়ান আবার মুজাহিদের পেছনে লেগেছে। ও ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায়। রেজুয়ান মুজাহিদদের ঘাড় জোরে ধরে বলে,
-আরে বাপের ভাই বাটাম খাওয়াবা নাকি আমাকে। চলো চুপ চাপ।

হৃদয়ের সঙ্গোপনে পর্ব ১৩