আগুনের তৃষ্ণা গল্পের লিঙ্ক || Maishara Jahan

আগুনের তৃষ্ণা পর্ব ১
Maishara Jahan

বিয়ের প্রথম রাতেই আমার স্বামী আমাকে চেয়ারের সাথে বেঁধে চলে গেছে। বিয়ে বাড়ি বলে কথা নিশ্চয়ই অনেক মানুষ থাকবে, এতো চিৎকার চেচামেচি করলাম কিন্তু না, কেও একজন আসলো না। কান্না করতে করতে চোখের কালো কাজল লেপ্টে গেছে। আমার সাথে কি হলো কিছুই বুঝলাম না। এখানে বসে কান্না করা ছাড়া আমার কাছে আর কোনো উপায় নেয়।
কিছু ক্ষন আগের ঘটনা,,,,,,,,,

আমার নাম মারুফা ইয়াসমিন,, সবাই মারু করেই ডাকে, জানি নামটা অনেক অদ্ভুত তাও ভালো লাগে মা বাবা অনেক ভালোবেসে দিয়েছে। এখন অনার্স ২য় বর্ষে পড়ি। বর্তমানে বিয়ের সাজে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি। আকাশের কালো ঘন আঁধারের মতো আমার মনেও আঁধার ছেয়ে আছে।
আজ আমার বেস্ট ফ্রেন্ড রিয়ান এর সাথে আমার বিয়ে। কিছু ক্ষন পরেই হয়তো রিয়ান বর যাত্রী নিয়ে চলে আসবে। আমার কাজিনরা একটু পরে আসে, এসে আমাকে নিয়ে যায়।কিন্তু অভাক করার বিষয়টা হলো একটু আগে যেখানে সবার মধ্যে একটা আনন্দ ছিলো সেটা এখন কারো মধ্যে দেখা যাচ্ছে না। সবাই চুপচাপ।

আমাকে আলাদা একটা রুমে বসানো হয়। আমি এক গভীর ভাবনায় মগ্ন। কিছুই যেনো আমি শুনতে পারছি না। আমাকে কবুল বলতে বলা হলে,কবুল বলে দিয়, আর পেপার এ সাইন ও করে দিয়। দুবার ভাববার মতো কারন ও আমার কাছে নেয়।
বিদায় এর সময় রিয়ান বা ওদের পরিবারের কাওকেই আমি দেখতে পারছি না। শুধু একজন মহিলা আমার সাথে গাড়িতে বসে। আমাকে যে রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সেই রাস্তাটাও বেশ অচিনা। আমি শুধু চুপচাপ বাহিরে তাকিয়ে আছি, আর পুরোনো কিছু স্মৃতি বার বার এসে মনে হানা দিচ্ছে। শুধু ভাবছি যে সম্পর্কে আমি জরিয়েছি তার ভার আমি নিতে পারবো কিনা।
বেশ কয়েক ঘন্টা জার্নির পর আমরা এসে পৌঁছালাম। অনেক বড়ো একটা বাড়ির সামনে এসে নামি। কিন্তু এটা তো রিয়ান এর বাড়ি না। জিজ্ঞেস করার মতো কাওকে না পেয়ে আমার সাথে থাকা মহিলাটাকে আস্তে করে বললাম,,,,আচ্ছা আন্টি এটা আমরা কোথায় এসেছি।
মহিলাটা মৃদু হেঁসে উওর দিলো,,,,, এটা আজ থেকে তোমার বাসা।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

আমি মনে মনে ভাবলাম রিয়ান নতুন বাড়ি কিনলো কিনা। বেশি কথা না বলে ভিতরে গেলাম, সেখানে বসে থাকা মধ্যে বয়সী একটা লোক এসে, আমার দিকে করুনা ভাবে তাকিয়ে, আমার মাথায় হাত রেখে অন্য রুমে চলে যায়।
আমাকে উপরের রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। বেড রুমটা বেশ বড়ো, কিন্তু এই বাড়ি দেখে বিয়ে বাড়ি বলে মনে হচ্ছে না। বিয়ের মতো কোনো সাজ নেয়। মনের ভিতরে কেমন একটা অস্থির লাগছে। একটু পর কিছু সার্ভেন্ট খাবার দিয়ে যায়।
বেশ অনেক ক্ষন শুয়ে থাকার পড়ে দরজা খুলার আওয়াজ পেলাম। ঐ দিকে না তাকিয়ে শুয়ে শুয়েই বলছি,,, এই তোর আসার সময় হলো, আর নতুন বাড়ি নিলি আমাকে বললি না কেনো। যাই হোক এখন দয়া করে আমার লাগেজটা এনে দিবি চেঞ্জ করবো। তোর অপেক্ষায় আমার ঘুম চলে এসেছে। রিয়ান কথা বলছিস না কেনো।

ওপর পাশ থেকে একজন শক্ত কন্ঠে বলে উঠলো,,,,, এখন থেকে শুধু আমার জন্য অপেক্ষা করবে, আর কারো নাম জেনো তোমার মুখে আমি না শুনি।
অপরিচিত গলা শুনে ধুপ করে উঠে বসে ঐদিকে তাকায়। একজন অপরিচিত লোক আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। লোকটার প্রতি তাকাতেই একটা আকর্ষণ চলে যায় তার প্রতি।
লোকটা বেশ লম্বা, চওড়া গায়ের গঠন, মনে হয় রোজ জিম করে। ফর্সা গায়ের রং, দেখে মনে হয় বিদেশে থাকে এমন। দীর্ঘ নীল চোখ। আমি দাঁড়িয়ে ভাবছি এমন সুদর্শন পুরুষ আমি আগে দেখেনি।
ওনি নিজের কোর্টটা খুলে চেয়ারে রাখলেন, আমি উঠে দাঁড়িয়ে ওনাকে প্রশ্ন করলাম,,,,,কে আপনি,রিয়ান কোথায়।
ওনি টাই খুলতে খুলতে বললো,,,,,,, রিয়ান এখানে থাকবে কেনো, ও ওর বাসায়। আর এটা আমার বাড়ি।
আমি একটু হতভম্ব হয়ে বললাম,,,,, মানে,, তাহলে আমি এখানে কেনো।

ওনি আমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে বললেন,,,, because you are my wife now…
এবার আমি একটু রেগে গিয়ে বলি,,,,,,, এটা কোন ধরনের মজা। আমার বিয়ে রিয়ান এর সাথে হয়েছে, আপনার সাথে না। আর আমি তো আপনাকে চিনিও না,তাহলে বিয়ে কেনো করবো আপনাকে, আমি রিয়ান এর কাছে যাবো সরেন।
আমি রিয়ান রিয়ান করতে করতে যেতে নিয়ে ওনি আমার হাত ধরে টান দিয়ে সামনে এনে বলে,,,,,, কবুল বলার সময় নাম শুনোনি কার নাম বলা হচ্ছে। আর বিয়ের পেপার এ সাইন করার আগে দেখোনি তোমার পাশে কার নাম লেখা ছিলো। যদি দেখা না হয়ে থাকে তাহলে টেবিলে আমাদের বিয়ের পেপার রাখা আছে পড়ে নাও।

ওনার কথার আগা মাথা বুঝতে না পেরে টেবিলে রাখা পেপার পড়ে আমার মাথা ঘুরে গেলো। এখানে তো রিয়ান এর নাম লেখা নেয়। এখানে কোনো অয়ন খান লেখা। আমি ওনার দিকে ফিরে বললাম,,,,, অয়ন খান কে।
ওনি কিছুক্ষণ রাগী ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে তারপর শান্ত ভাবে বললেন,,,, এটা আমার নাম, এই নাম শুধু তোমার মাথায় না মনেও গেঁথে নাও। এই নাম ছাড়া যেনো তোমার মুখে, মনে, মাথায় কোনো নাম না থাকে।
আমার হাত থেকে পেপারটা পড়ে গেলো, আমি মাথা ধরে বিছানায় বসে পড়লাম, ওনার দিকে তাকিয়ে বললাম,,,,, কি হচ্ছে আমার সাথে, আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। আমার পরিবার আমার সাথে এমন বিশ্বাসঘাতক করলো আর রিয়ান ও,ওরা কেনো করলো এমন। নিশ্চয়ই আপনি কিছু করেছেন তাই না।

ওনার দুই হাত পকেটে ঢুকিয়ে বললেন,,,,,,, হুমম অনেক কিছু করেছি।
আমি উঠে দাঁড়িয়ে বললাম,,,,,,, কে আপনি, কেনো করছেন এমন, উদ্দেশ্য কি আপনার, সবার সাথে কি করেছেন। থাকবো না আমি এখানে চলে যাবো।
বলে দৌড় দিতে যায় ওনি দরজা বন্ধ করে দেয়, আমি তাড়াতাড়ি খুলতে নিয় ওনি আমার হাত টান দিয়ে বিছানায় ফেলে দেয়। আমি ভয়ে বলতে থাকি,,,,,,, যেতে দিন আমাকে, কি করবেন আমার সাথে, আমাকে ছোঁয়ার সাহস করবেন না বলে দিলাম।
অয়ন নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করে বললো,,,,,, সাহস আমার অনেক আছে, কিন্তু আমি এমন কিছু করতে চাই না, তাই এসব বলে আমাকে বাধ্য করোনা কিছু খারাপ করতে। আমি ড্রেস এনে দিচ্ছি, চুপচাপ চেঞ্জ করে শুয়ে পড়ো।

আমি রাগে বললাম,, থাকবো না আমি এখানে, আর আপনি আমাকে এখানে আটকে রাখতে পারবেন না। আমি জোরে জোরে চিৎকার করে সাহায্যর জন্য চিল্লাচ্ছি। এবার সে এসে আমার মুখ চেপে ধরে বললো,,,, চিৎকার করতে করতে তোমার গলা ব্যাথা হয়ে যাবে তাও এখানে কেও আসার সাহস করবে না। চুপচাপ বসে থাকো আমাকে রাগীও না, এমনিতেও আজ আমাদের প্রথম রাত আর এই রাতে এতো চিৎকার করলে মানুষ কি বলবে নীর।
এবার আমি অয়নকে ধাক্কা দিয়, কিন্তু কোনো লাভি হয় না, আমার ধাক্কাতে মনে হয় না ওনি এক চুল ও সরেছে। আমি ওনার বুকে ইচ্ছে মতো কিল ঘুষি দিচ্ছি কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না, তাই জোরে বললাম,, যেতে দিন আমাকে রিয়ান এর কাছে।
কথাটা শুনার সাথে সাথে ওনি এক হাত দিয়ে আমার গাল চেপে ধরে ওনার মুখের একদম কাছে নিয়ে আসে, রাগে মুখ লাল হয়ে গেছে, যে চোখ দেখে যে কেও প্রেমে পড়ে যাবে সে চোখ দেখে এখন ভয় লাগছে।

রাগে ওনার চেহেরা কাঁপছে, চোখে হালকা পানি যার কারনে আরো হিংস্র দেখা যাচ্ছে ওনাকে। খুব জোরে আমার গাল চেপে ধরে বলে,,,,কার কাছে যাবি তুই,, তুই শুধু আমার এই অয়নের, আমার থেকে দূরে যাওয়ার চিন্তা মাথায় আনলেও মেরে ফেলবো।
আমি কোনো মতো ভয়ে বললাম,,,,,,, আ আমি থাকবো না এখানে, আ আ আজি পালিয়ে যা যা যাবো।
অয়ন আমাকে ছেড়ে দিয়ে একটা চেয়ার এনে সেখনে জোর করে বসিয়ে আমার হাত পা শক্ত করে বেঁধে দিয়ে বলে,,,,এবার দেখে কোথায় পালাও, ভালো কথার মানুষ না তুমি।
আমি চিৎকার করতে করতে বল্লাম,,, ছাড়েন আমাকে ছাড়েন, আমাকে বেশি দিন আটকিয়ে রাখতে পারবেন না। আমি ঠিক আপনার থেকে দূরে চলে যাবো।

অয়ন থাপ্পড় মারতে নিয়েও হাত আটকে ফেলে, সে রাগে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। অয়ন রাগে নিচে যায়,নিচে যেতেই মিসেস রোদেলা খান অয়নের পথ আটকিয়ে বলে,,,,,,,, কি করেছিস মেয়েটার সাথে এভাবে চিৎকার করছে কেনো, মেরেছিস নাকি ওকে।
অয়ন সোফায় বসে বলে,,,,, না মা
,,,,,আমি গিয়ে দেখে আসছি।
অয়ন রাগে বলে,,,,,, ঐ রুমে কেও গেলে বা নীরকে কিছু বললে আমি নীরকে নিয়ে এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাবো। রাত অনেক হয়েছে সবাই নিজের রুমে গিয়ে কান বন্ধ করে শুয়ে পড়ো।

মিসেস রোদেলা কিছু না বলে নিজের রুমে চলে যায়, সব সার্ভেন্টদের ও পাঠিয়ে দেয়। অয়ন সোফায় বসে ড্রিংকস করছে আর মারুর চিৎকার শুনছে। মারু চুপ হয় যায়, তার কিছু ক্ষন পরে অয়ন রুমে যায়, গিয়ে দেখে মারু ঘুমিয়ে পড়েছে। অয়ন ডুলতে ডুলতে মারুর চেয়ারের সামনে গিয়ে বসে।
কিছু ক্ষন মারুর দিকে এক চোখে তাকিয়ে ছিলো, যেনো এই চোখ কতো বছর ধরে অপেক্ষা করছে এই চেহেরা দেখার জন্য। কিছু ক্ষন পরে নিজেকে সামলে নিয়ে মারুর হাত পা খুলে দেয়। মারুকে কোলে করে নিয়ে গিয়ে বিছানায় শুয়িয়ে দেয়। অয়ন মারুর পাশে শুয়ে মারুর দিকে তাকিয়ে আছে।
হাত বাঁধা সময় কিছু চুরি ভেঙে গিয়ে মারুর হাতে আঁচড় লাগে। অয়ন আস্তে করে চুরি গুলো খুলে দিয়ে হাতে মলম লাগিয়ে দেয়। অয়ন আস্তে করে মারুর সব গহনা খুলে দিয়ে তার পাশে শুয়ে মারুর দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,,, এই আগুনের তৃষ্ণা তুমি,,, অনেক কষ্টে পেয়েছি তোমাকে নীর, আর কোথাও যেতে দিবো না।

সকালে আলোর মৃদু ছোঁয়া মারুর মুখে লাগলে মারু উঠে যায়। আস্তে আস্তে চোখ খুলে উঠে বসে। নিজেকে বিছানায় দেখে অভাক আশেপাশে তাকালো কিন্তু কাওকেও এই রুমে দেখলো না। দুম মেরে বিছানায় আসন পেতে বসে আছে।
একটু পর অয়ন ওয়াশ রুম থেকে একটা সাদা টাওয়াল পড়ে আরেকটা দিয়ে মাথার চুল মুছতে মুছতে বের হয়। অয়নের সারা শরীর ভিজা, বিন্দু বিন্দু পানি গা বেয়ে পড়ছে। মারু এক নজরে তাকিয়ে আছে। একটা অজানা আকর্ষণ তাকে টানছে।
অয়ন মারুর এভাবে তাকানো দেখে মুশকি হেঁসে বলে,,, নিজের স্বামীর দিকে কু নজর দিচ্ছো।
আমি হেবলার মতো এ্যা করছি। উনি আরেকটু এগিয়ে এসে বলছে,,,,, সকাল সকাল এভাবে তাকিয়েও না, পরে আমিও এভাবে তাকালে তোমার ভালো লাগবে না।

আমার মস্তিষ্কে উনার কথা ডুকছে না, তাই তাকিয়ে আছি,, ওনি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল মুছছে। একটু পর আবার আমার দিকে মাথা ঘুরিয়ে তাকিয়ে বলে,,,, আমাকে দেখা শেষ হলে, সাইডে শারী রাখা আছে গোসল করে পড়ে আসো।
আমি শারির দিকে তাকিয়ে হুম বলে বিছানা থেকে উঠে নিজেকে আয়নায় দেখে সব মনে পড়ে যায়। একটু রাগ দেখিয়ে বলি,,, আমি আপনার কথা মতো কেনো চলবো হুম,,আমি এখন চলে যাবো, কি ভেবেছেনটা কি আমাকে হুম।
অয়ন আলমারি থেকে নিজের কাপড় বের করতে করতে বললো,,, যাওয়ার কথা বললে জানো তোমার সাথে কি হতে পারি, তুমি এখান থেকে আমি না চাওয়া পর্যন্ত যেতে পারবে না, সো তুমি কি নিজেকে একটা বন্ধ রুমে বন্ধী দেখতে না চাইলে চুপচাপ ভালো বউয়ের মতো গোসল করে শারি পড়ে আসো। যদি শারি পড়ে নিচে আসো কোনো জামেলা ছাড়া তাহলে নিজের পরিবারের সাথে কথা বলতে পারবে। আর যদি না পড়তে চাও,,

আমি কপাল কুচকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,, তাহলে
ওনি অন্য রকম একটা হাসি দিয়ে বলে,,,, তাহলে আমি পড়িয়ে দিবো,,,আর আমি যা বলি তাই করি, এটা নিশ্চয়ই বুঝে গেছো।
আমি নিজের কাপড় আঁকড়ে ধরে বলি,,,,, এটা আপনি করতে পারেন না।
ওনি,, আচ্ছা তাহলে করে দেখায় বলে আমার দিকে এগিয়ে আসতেই আমি শারি নিয়ে ওয়াস রুমে দৌড় দিয়। অয়ন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাসছে। আমি কতো ক্ষন ওনাকে বকে ঝকে, গোসল করে শারি পড়ে বের হলাম।
চোখ মুখ ফুলে গেছে তাই আমিও একটু সেজে নিলাম।

রেডি হয়ে ভাবছি নিচে যাবো কি যাবো না, এই সময় অয়ন আসে, এসে আমার পা থেকে মাথ পর্যন্ত একবার চোখ ঘুরায়। পরে অন্য দিকে তাকিয়ে বলে, চলো নীর আমার সাথে নিচে।
,,,,,, আমার নাম মারু,, নীর না।
অয়ন আমার হাত ধরে নিচে নিয়ে যেতে যেতে বললো,,, তুমি আমার জন্য নীর,, আর মারু কোনো নাম হলো। আচ্ছা নিচে শান্ত থাকবে না হলে আবার আমি অশান্ত হয়ে যাবো।
অয়ন আমার হাত ধরে নিচে নিয়ে যায়, সব সার্ভেন্টরা নিজের মতো কাজ করছে। খাবার টেবিলে কালকের ঐ লোকটা বসে আছে সাথে ঐ মহিলাটাও। আমাকে দেখে হাসতে হাসতে বললো,,,, আসো মা, এসে নাস্তা করতে বসো। আমি শুধু ভাবছি এরা এতো স্বাভাবিক ব্যবহার কিভাবে করছে আমার সাথে যেনো কিছুই হয়নি। এরা সবাই পাগল না তো আবার।
আমি খেতে বসি, টেবিলে এতো খাবার রেখে অয়ন শুধু জেম পাউরুটি আর জুস খাচ্ছে। আমার ক্ষুধা লাগছে তাই কথা না বলে খেতে শুরু করি।

মিসেস রোদেলা,,,,, আচ্ছা তোমার নাম কি।
আমি অভাক হয়ে বললাম,, মারুফা ইয়াসমিন,, মারু বলেই সবাই ডাকে।
কি অদ্ভুত কাল বিয়ে পড়িয়ে আনলো অথচ নাম জানে না। তারপর আবার ওনি বললো,,,,, আমি অয়নের মা, ওর ওনি অয়নের বাবা।
আমিও ওনাকে জিজ্ঞেস করলাম,,,,আচ্ছা কাল রাতে আপনারা কোথায় ছিলেন।
ওনার মা হেঁসে বললো,,,, বাড়িতেই ছিলাম আর কোথায় থাকবো।

অয়ন আমার দিকে রুটি খেতে খেতে তাকায়,, আমিও নিচে মুখ করে খেতে থাকি আর ভাবতে থাকি,,, বাড়িতে এতো মানুষ থাকার সর্তেও কেও আমার চিৎকার শুনলো না, ভয়রা নাকি। থাক এখন কিছু জিজ্ঞেস করা যাবে না, অয়ন না থাকলে জিজ্ঞেস করতে হবে।
নাস্তা শেষ করে কার জেনো একটা কল আসে অয়ন কথা বলতে একটু সাইডে চলে যায়। আমি দাঁড়িয়ে আছি, অয়নের মাকে কিছু জিজ্ঞেস করতে যাবো তখনি একজন লম্বা সুদর্শন লোক বলতে বলতে ডুকে,,, কিরে অয়ন তুই নাকি বিয়ে করে নিয়েছিস।
আমি সে দিকে তাকায়, আমার কথা শুনে লোকটির হাত থেকে লাগেজটা পড়ে যায়, নিজের দীর্ঘ কালো চোখ দিয়ে আমাকে অভাক হয়ে দেখছে।

ওনার চোখ জেনো খুশিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে, ঠোঁটে আমাকে দেখতে পেয়ে খুশির হালকা ঝলক। ওনার এভাবে তাকিয়ে থাকার মানে আমি বুঝলাম না। ওনি খুশিতে আত্ম হারা হয়ে বলছে,,,, তুমি, এখানে, মানে তুমি ঠিক আছো।
তখনি মিসেস রোদেলা বলে উঠে,,,,,প্রহর তুই,,, আরে একেই তো বিয়ে করেছে অয়ন।
এই কথা শুনার সাথে সাথে মনে হলো ওনার মুখের হাসি গায়েব হয়ে গেছে। আমার দিকে এক অদ্ভুত মলিন মুখ করে তাকিয়ে আছে। একটা কষ্টের ছাপ দেখা যাচ্ছে, যেটাকে ওনি হাসির মাধ্যমে লুকানোর চেষ্টা করতে থাকে।

আগুনের তৃষ্ণা পর্ব ২