আগুনের তৃষ্ণা পর্ব ২৮ || Maishara Jahan

আগুনের তৃষ্ণা পর্ব ২৮
Maishara Jahan

কথাটা আমার বুকে ছুরির মতো গিয়ে বিধলো গিয়ে। আমি জালানার পাশে দাঁড়িয়ে পাশে রাখা দিয়ার ছবিটা নিয়ে, তার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলাম,,, জীবনের প্রথম কোনো মেয়েকে দেখে আমার প্রচুর হিংসা হয়৷ তুমি মরে গিয়েও সায়নের মন থেকে যেতে পারোনি, আজো তোমাকে সে ভালোবাসে। আর আমি সায়নের জীবনে বন্ধু হয়ে থেকে যাবো। সে আমাকে আর ভালোবাসবে না। তার মনে আমি জায়গা করতে পারবো না, কারন পুরো জায়গা জুড়েই তুমি আছো।
এটা ভেবেই কেনো জানি চোখের মধ্যে থেকে কয়েক ফোঁটা পানি নিচে পড়ে গেলো। একটু পরেই সায়ন জেগে যায়। সে আমার চোখে পানি দেখে তাড়াতাড়ি উঠে জিজ্ঞেস করে,,,,,, কি হয়েছে আলো, তুমি কান্না করছো কেনো। আমি কি নিজের অজান্তেই তোমাকে কোনো কষ্ট দিয়েছি।

আমার হাত ধরে দেখতে দেখতে বলে,,, আমি কি তোমাকে আঘাত করেছি। কোথাও ব্যাথা পেয়েছো। দেখাও আমাকে।
আমি কিছু ক্ষন নিস্তব্ধ হয়ে বসে থাকার পর মুখে হাসি এনে বলি,,,, আরে আমার কিছু হয়নি, আমার চোখে কিছু একটা পড়েছে তাই চোখ থেকে পানি বের হচ্ছে।
সায়ন আমার কাছে এসে বলে,,, দেখি।
সে আমার চোখ ধরে দেখছে কিছু আছে নাকি,, আর বলছে,,,কোথাই কিছুই তো দেখতে পারছি না।
আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম,,,,, হয়তো বেরিয়ে গেছে কিন্তু ব্যাথা এখনো রয়ে গেছে। সব ব্যাথা তো আর দেখা যায় না।
সায়ন আমার চোখ ধরে ফু দিতে থাকে। জানি না কেনো আমার এই মূহুর্তে সায়নকে জরিয়ে ধরতে খুব ইচ্ছে করছে। নিজেকে আটকে রাখা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। সয়ন ফু দিচ্ছে, আমি সায়নকে জরিয়ে ধরি,কিছু না ভেবেই। সায়ন অভাক হয়ে যায়। আমার চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে যায়।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

কিছু ক্ষন দুজনেই চুপচাপ থাকি, তারপর সায়ন আমাকে জিজ্ঞেস করে,,,, কি হয়েছে আলো, তোমার মন কি কোনো কারনে খারাপ।
আমি সায়নকে জরিয়ে ধরেই কান্না ভরা কন্ঠে উত্তর দিয়,,,, হুমম অনেক।
,,,কেনে শুনি।
,,,,,, জিজ্ঞেস করবেন না পিল্জ, আমি বলতে পারবো না।
সায়ন মুচকি হেঁসে আমার মাথায় হাত রেখে বলে,,,,, ঠিক আছে,, কিন্তু তোমাকে হাসি খুশিই মানায়, এমন মুখ আধার করে রাখলে আলো নাম রেখে লাভ কি হলো বলো।
আমি সায়নকে জিজ্ঞেস করি,,,, আচ্ছা আপনি আমাকে নিজের কি ভাবেন,, সত্যিটা বলবেন, আমার জন্য আপনার মনে ঠিক কোন স্থানটা আছে।

সায়ন কিছু ক্ষন চুপ থেকে বললো,,,, তুমি আমার একজন খুব ভালো বন্ধু। এমন বন্ধু যাকে আমি হাড়াতে চাই না। খুব কম মানুষের ভাগ্যে জুটে এমন বন্ধু।
আমি সায়নকে ছেড়ে দিয়ে মাথা নিচু করে মাটির দিকে তাকিয়ে বললাম,,,, শুধুই বন্ধু
,,,,,, মানে।
,,,,, না কিছু না। আচ্ছা দিয়ার জায়গা কি আপনি কোনো দিন অন্য কাওকে দিবেন।
,,,,, না,, কোনে দিনও না, দিয়ার জায়গা আমি কোনো দিন কাওকে দিতে পারবো বলে আমার মনে হয় না।
আমি জোর করে ঠোঁটে হাসি এনে সায়নের সাথে নজর এড়িয়ে টেবিলে রাখা ঔষধ বাক্সের কাছে গিয়ে, সেটাকে খুলে ঔষধ বের করতে করতে বলি,,,,, হুমম জানি, আমি তো এমনি জিজ্ঞেস করলাম। আমি আপনার ঔষধ গুলো বের করে দিচ্ছি। খেয়ে নিন, আজ থেকে আপনার দেখা শুনা করার জন্য অন্য ডক্টর আসবে।

,,,,, মানে তুমি আসবে না।
আমি হালকা হেঁসে সায়নের দিকে তাকিয়ে বললাম,,,, দায়িত্ব যখন নিয়েছি পূরণ তো অবশ্যই করবো। আমিও আসবো, তবে আপনার জন্য আপনার ভাই বিদেশ থেকে ডক্টর এনেছে, সেও আজ থেকে আসবে।
,,,,, হুমম ঠিক আছে।
আমি ঔষধ গুলো বের করে সায়নের দিকে ধরি, আর এক গ্লাস পানি এগিয়ে দিয়। সায়ন ঔষধ গুলো খায়। আমি পানির গ্লাসটা টেবিলে রেখে বলি,,, আজ আমি আসি।
আমি যেতে নিয় কিন্তু সায়ন আমার পথ আটকিয়ে বলপ,,, আজ এতো তাড়াতাড়ি চলে যাবে, গল্প করবে না আমার সাথে।
আলো হালকা হেঁসে বলে,,, আমার জীবনটাই একটা গল্প হয়ে গেছে।

,,,, মানে।
,,,,,, কিছু না সায়ন,, সবার জীবনী একেকটা গল্প। কারো বা ভালো, কারো বা খারাপ, আর কারো সব টুকুই মিলিয়ে।
সায়ন হেঁসে বলে,,,,, তুমি তো প্রহর ভাইয়ার মতো কথা বলছো৷
আমিও হেসে দিয়ে বললাম,,, হুমম,, আচ্ছা আমার একটু কাজ আছে, আজ আমি আসি।
,,,,, আর আসবে না আজ।
,,,, রাতে আসার চেষ্টা করবো।

বলে আমি দরজা পর্যন্ত যেতেই সায়ন বলে উঠে,,,, আমি কিন্তু অপেক্ষা করবো।
আমি পিছনে তাকিয়ে কিছু না বলে শুধু মাথা নাড়িয়ে বের হয়ে যায়। সায়নের দরজা আটকিয়ে চোখের পানি আর থামাতে পারিনি। যাকে তুমি ভালোবাসো তার মনে অন্য করো জন্য ভালোবাসা দেখাটা যে কি কষ্টের সেটা বুঝানো যাবে না।
আমি নিজের চোখের পানি মুছে যেতে নিয় মারু ভাবী এসে আমাকে বলে,,,, কি হয়েছে আলো তুমি কান্না করছো কেনো।
,,,, না ভাবী কিছু হয়নি,, আমি আসি, একটু কাজ আছে।

বলে তাড়াতাড়ি চলে গেলাম। মারু সায়নের রুমে যায়। সায়ন আমাকে দেখে উঠে দাঁড়িয়ে বলে,,,,ভাবী আসো।
আমি ভিতরে গিয়ে বললাম,,,,, তুমি কি আলোকে কিছু বলেছো, বা তোমাদের মধ্যে কিছু হয়েছে।
,,,,, না ভাবী তেমন কিছুই হয়নি, শুধু অদ্ভুত অদ্ভুত প্রশ্ন করছিলো।
,,,,কি প্রশ্ন শুনি।
সায়ন আমাকে সব কিছু বলে,, আমি সায়নকে জিজ্ঞেস করি,,, তুমি কি বলেছো।
,,,যা সত্যি তাই বলেছি।
,,,হুমম তোমার সত্যিটা আমি বুঝতে পেরেছি। শুনো সায়ন তোমার জীবনকে একটা সুযোগ দাও৷ পুরোনো স্মৃতি ধরে রাখলে সুখি হতে পারবে না। আর দিয়াও হয়তো এটাই চাই যে তুমি নিজেকে একটা সুযোগ দাও।

,,,,,, মানে,, ভাবী আমি তোমার কথা বুঝতে পারছি না।
,,,,সায়ন আলো তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছে।
,,,, কিহহ
,,,,হুমম, আর কোথাও না কোথাও তোমার মনেও ওর জন্য কোনো একটা ফিল অবশ্যই আছে যেটা তুমি বুঝতে পারছো না।
,,,,, ভাবী তুমি যেমন ভাবছে তেমন কিছুই না।
,,,,,, সায়ন আমাকে না নিজেকে বুঝাও, আর নিজের জীবন আর আলোকে একটা সুযোগ দিয়ে দেখো।
,,,,কিভাবে দিবো, দিয়াকে ভুলতে পারছি না, আমি।

,,,,,,, যদি তুমি কাওকে তোমার জীবনে আসার সুযোগী না দাও তাহলে দিয়াকে ভুলবে কিভাবে। তুমি এক বার আলোকে সুযোগ দিয়ে দেখো আমার বিশ্বাস আলো তোমার মন ওর দিকে এনে ছাড়বে। আমার কথা গুলো ভেবে দেখো।
বলে আমি সেখান থেকে চলে যায়। একটু পরে অয়ন আসে। বাচ্চাদের কিছু সুন্দর সুন্দর পোস্টার নিয়ে। এগুলো আমার হাতে দিয়ে বলে,,, তুমি এগুলো বেডের সামনে লাগাও আমি সাওয়ার নিয়ে আসছি।
আমি পোস্টার গুলো সাইডে রেখে বলি,,,,, অন্য জনের বেবির ছবি কেনো লাগাবো, আমি তো তোমার ছবি লাগাবো, যেনো আমার বেবি একদম তোমার মতো হয়।

,,,,আচ্ছা তাহলে এক কাজ করো সেখানে তোমার ছবিও লাগিয়ে দিয়ো যেনো, তোমার মতো হয়।
আমি আর কিছু বলার আগেই অয়ন বলে উঠে,,,, বেস এটা নিয়ে কোনো কথা হবে না। আমার ছবি লাগালে তোমার ও লাগাতে হবে।
এটা বলে ওয়াশ রুমে চলে যায়। আমি পোস্টার গুলো হাতে নিয়ে ছবি গুলো দেখতে থাকি৷ বাচ্চা গুলো কি সুন্দর।
আমি দুলনায় বসে আছি, অয়ন ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে আমার আমার কোলে শুয়ে পড়ে।

,,,,, কি হলো এটা। উঠুন, আমার কাপড় ভিজে গেলো তোহহ।
,,,,,, আমি আমার বউকে ভিজাবো শুখাবো আমার ইচ্ছা,তোমার কি হুমম।
,,,,হেহহহ আপনার বউ তো আমিই,, তো আমার ইচ্ছে থাকবে না।
,,,,, না,,,, কারন তোমার উপর তোমার থেকে বেশি অধিকার আছে আমার বুঝলা।
,,,,, আচ্ছা ঠিক আছে,,, আপনার আমার অতীতের কথা বলার সয়ম কি আছে স্যার এখন।
,,,,, ওহহ সরি ভুলে গেছিলাম।
,,,,,ঠিক আছে তাহলে আজ শুনাচ্ছি।
,,,,,,হুমম বলো।

জানো তুমি আমাদের নদীর হালকা পানিতে ফেলে দিয়েছিলে, সেতু দিয়ে যাওয়ার সময়।
আমি হাসতে হাসতে বললাম,,,,, তাই নাকি,পড়ে কি হলো।
,,,,, হুমম,, পরে আমি তো অনেক রেগে গিয়েছিলাম। আমি আর প্রহর কোনো ভাবে বাসায় গেলাম। আমি তো শুধু ভাবতে লাগলাম কিভাবে তোমাকে জব্দ করা যায়।
অতীতে,,,,,
অয়ন বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে প্রহর পিছন থেকে বলে,,,, কিরে এতো কি ভাবছিস।
অয়ন,,,, কিছু না, শুধু ভাবছি আজকের কথা। আমার তোহহ রাগ হচ্ছে।

,,,,,, তোর রাগ হচ্ছে, আমার হাসি পাচ্ছে। বয়সের তুলনায় বুদ্ধিটা একটু কম হয়েছে মনে হয়।
,,,,,, বুদ্ধি ঠিকি আছে, শুধু বাচ্চা মানসিকতাটা এখনো ছাড়লো না। ওকে তো আমি বুঝাবো।
,,,,উল্টা পাল্টা কিছু ভাবিস না। আমি তো আমার গল্পের মেইন চরিত্রটা কে পেয়ে গেছি।
অয়ন চাঁদের দিকে তাকিয়ে আস্তে বলে,,,, আর আমি আমার জীবনের,ভেবেছিলাম কিন্তু এই মেয়েকে তো শিক্ষা না দিলে হবে না৷
কিছু ক্ষন পর প্রহর একটা বই পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে যায়। অয়ন ও ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ে।
পরেরদিন সকালে, প্রহরকে কোনো রকমে একা বাড়িতে রেখে অয়ন বেরিয়ে পড়ে। মারুর কলেজে যাওয়ার সময় হয়ে গেছে। অয়ন আড়াল থেকে দেখছে।
আমি একা একা যাচ্ছি।

হঠাৎ করেই কিছু গুন্ডা টাইপ লোক আমার সামনে এলো। অদ্ভুত ভাবে হাসছে। আমি একটু পিছিয়ে বলি,,,, কি চাই আপনাদের, পথ কেনো আটকালেন। এখনি যদি চিৎকার করি না, তাহলে সবাই এসে জরো হয়ে যাবে।
ওরা বললো,,, এই নিড়িবিলি জায়গায় বেশি মানুষ আছে বলে তোহ মনে হয়না।
ওদের হাব ভাব ভালো মনে হচ্ছে না, তাই উল্টো দিকে দৌড় দিতে গেলেই ওরা আমাকে ধরে ফেলে। মুখ চেপে ধরে, আমাকে গাড়িতে উঠিয়ে কোথায় নিয়ে যেতে থাকে। আমি শুধু আল্লাহ আল্লাহ করছি মনে।
একটু পরেই একটা নিড়িবিলি জায়গায় এসে থামায়। জায়গাটা গাছ পালায় ভরা। আমার তো ভয় হচ্ছে, মান হাড়ানোর ভয়।
ওরা আমাকে টেনে একটু ভিতরে নিয়ে যায়, আমি ছটফট করছি। একটু পরে কেও একজন একটা গুন্ডার হাত ধরে ফেলে। তাকিয়ে দেখি অয়ন।

সে ওদের ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। ওরা বলতে থাকে,,, কে তুই, ভালোই ভালোই চলে যা না হলে এখানে মেরে পুতে দিবো।
অয়ন,,,তোরা চলে যা, না হলে আমি তদের মেরে ফেলে দিবো৷
মারামারি শুরু হয়ে যায়। অয়ন কে একটা ঘুষি মেরে ফেলে দেয়। একটু রক্তও বেরিয়ে যায়।অয়ন মাটিতে পড়ে আস্তে করে বলে,,, আব্বে এ দেখি সত্যি সত্যি মারছে। আমাকে মারার জন্য টাকা দিছি নাকি।
উঠে দাঁড়াতেই আরেকটা মারতে আসে, আমি তার হাত ধরে আস্তে করে বলি,,,, আব্বে অভার এক্টিন হয়ে যাচ্ছে। সত্যি সত্যি কেনো মারছিস। টাকা শুধু মার খাওয়ার দিয়েছি, মার দেওয়ার না।

লোকটা অয়নের হাত ছাড়িয়ে একটা ঘুষি দিয়ে বলে,,,, কে রে তুই,, আর কিসের টাকা কার টাকা। চুপচাপ চলে যা।
অয়ন বুঝতে পেরে যায়, এটা তার পাঠানো লোক নয়। এরা সত্যি মারুকে উঠিয়ে এনেছে। দুটো লোক মারুর হাত ধরে টানাটানি করছে৷ এটা দেখে অয়নের রাগ চরম পর্যায় পৌঁছে যায়। আর সে সবাইকে মারতে থাকে। যেমন মার খাচ্ছে তার থেকে বেশি দিচ্ছে।
গুন্ডা গুলো মার খেয়ে চলে যায়। মারু কিছু বলছে না, অয়ন সামনে দাঁড়িয়ে আছে, আর মারু পিছনে। অয়ন পিছনে তাকায়৷ আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করে,,, তুমি ঠিক আছো তো।
এ কথা বলার সাথে সাথে আমি আর নিজেকে আটকে রাখতে পারি না, সোজা জোরে জোরে কান্না করে দিয়। অয়ন আমাকে থামানোর চেষ্টা করতে থাকে।

,,,, আরে আরে কান্না করো না, এখন সব ঠিক আছে, কেও কিছু করবে না তোমাকে।
আমার কান্নার আওয়াজটা একটু বেশিই বেড়ে যায়। চোখ বন্ধ করে কান্না করছি। অয়ন কোনো মতেই মারুর কান্না থামাতে পারছে না। অয়ন তখন আমার মাথায় হাত রেখে শান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করে, যেনো আমি একটা বাচ্চা।
আমি কান্না থামিয়ে অয়নের দিকে তাকিয়ে হিচকি তুলতে তুলতে বলি,,,,,,, অনেক ভয় পেয়ে গেছিলাম আমি, আপনি না এলে হয়তো,,
এটা বলে আবার কান্না শুরু করে দিয়। অয়ন আমার চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে,,,,, এসব কিছু চিন্তা করে লাভ নেয়। তোমার কিছু হয়নি, না হবে। তাই একটু চুপ করে আমার সাথে চলেন।

,,,,কোথায়।
,,,,,, কেনো তোমার বাসায় যাওয়ার ইচ্ছে নেয় নাকি।
,,,,,,হুমম,, আমি বাসায় যাবো।
,,,,হুমম চলো, তোমায় দিয়ে আসি। ( মেয়েটা সত্যিই অনেক ভয় পেয়ে গেছে দেখা)
বাইকে উঠে আমাকেও উঠতে বলে। আমি চুপচাপ পিছনে বসে পড়ি।
অয়ন বাইক চালানো শুরু করলেই আমি অয়নের কাঁধ খামছে ধরি৷ অয়ন আমাকে জিজ্ঞেস করে,,, কি হয়েছে , ভয় পাচ্ছো নাকি।।
,,,আসলে আমি আগে কখনো বাইকে বসিনি।
,,,,, কি,, তুমি আগে কখনো বাইকে উঠোনি।
,,,,এতে এতো অভাক হওয়ার কি আছে।
,,,,, না মানে এমনি,, তাহলে আমিই তোমাকে আগে বাইকে উঠালাম।
,,,,হুমমম।

একটু আগে যেতেই আমি অয়নকে থামাতে বলি। অয়ন বাইক থামালে, আমি নেমে যায়। অয়ন বলে,,, এখানে কেনো নামলে।
,,,,,, বাকি রাস্তাটা আমি একাই যেতে পারবো। কেও যদি আমাকে আপনার সাথে দেখে তাহলে নানা ধরনের কথা বলবে।
,,,,,,, হুমম ঠিক আছে, তাহলে যাও।
আমি যেতে নিয়ে আবার ফিরে এসে অয়নের সামনে দাঁড়িয়ে বলি,,,, ধন্যবাদ আমাকে বাঁচানোর জন্য। আর সরি ঐ দিনের জন্য।
অয়ন ঠোঁটে হাসি এনে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ওনার তাকানো দেখে আমার কেনো জানি লজ্জা করছে।
আমি আবার বলি,,,, আপনার ঠোঁট কেটে গেছে, ঔষধ লাগিয়ে নিয়েন।

আগুনের তৃষ্ণা পর্ব ২৭

অয়ন শুধু মাথা নাড়িয়ে হ্যা বলে। আমার কেমন লজ্জা লজ্জা লাগছে তাই আমি তাড়াতাড়ি হেঁটে চলে এলাম।আমি বাসায় আসা পর্যন্ত ওনি আমার কিছুটা দুরে দূরে ছিলো। আমি বাসায় ডুকার আগে অয়নকে হাত নাড়িয়ে বাই বলে তাড়াতাড়ি ভিতরে ডুকে যায়।
অয়ন ও হাসি মুখে চলে যায়। অয়ন যেতেই প্রহর অয়নের সামনে রাগী ভাবে দাঁড়িয়ে আছে, অয়নের মুখে মারের দাগ দেখে প্রহর ব্যস্থ হয়ে বলে,,, কে মেরেছে তোকে, তাকে তো আজ মেরেই ফেলবো। চল দেখে কে মেরেছে।
অয়ন প্রহরের কাঁধে হাত রেখে বলে,,,অয়ন মার খেয়ে আসে না দিয়ে আসে।

,,,হুমম সে তো দেখায় যাচ্ছে। আচ্ছা একটা কথা বল তুই মারুকে কিটনাপ করার জন্য লোক ভারা করেছিস কিন্তু কেনো।
,,,, আরে হ্যাঁ মনে পড়ছে, শালারা একটাও যায়নি কেনো, তাদের তো আমি____
,,,,আমি না করেছিলাম।
,,,,,মানে, তুই জানলি কিভাবে।
,,,,স্যার আপনার কথা আমি শুনে ফেলেছি। এখন বলবেন আপনি মার কেনো খেলেন।
অয়ন সব কিছু প্রহরকে বলে, প্রহর রাগে বলে,,,, শালাদের ধরে ইচ্ছে মতো মারিসনি। আমার তো এখন হাত চুলকাচ্ছে।
,,,,আরে চিন্তা করিস না, মেরেছি ইচ্ছে মতো।
,,,,, হুমম দেখায় যাচ্ছে।

আমি সাওয়ার নিয়ে বের হয়ে, শুয়ে শুয়ে শুধু অয়ন এর কথা ভাবছি। ওর কথা ভাবতেই কেনো জানি ঠোঁটে নিজের অজান্তেই হাসি এসে পড়ে, আর চেহেরায় লজ্জার ছাপ। ভালোবেসে ফেলেনি তো আবার। আর যদিও ভেসে ফেলি তাও আমার খারাপ লাগবে না।

আগুনের তৃষ্ণা পর্ব ২৯