আমার তুমি সিজন ২ পর্ব ৩৪
তানিশা সুলতানা
রাত দশটা ছুঁই ছুঁই। টেনশনে রীতিমতো তুলতুলের হাত পা কাঁপছে। সায়ান কিছুখন আগে কল করে জানিয়েছে কাছাকাছি এসেছে। ঘন্টা খানিকের মধ্যে চলে আসবে। তুলতুলকে কিছু রান্না করতে বলেছে।
কিন্তু তুলতুল কিভাবে কিচেনে যাবে? মা কাকিমা আর সুমুকেই বা কি বলবে? “বলবে আমার বর আসছে আর আমি তার জন্য রান্না করতে এসেছি” কতোটা বাজে দেখাবে বেপারটা। নিলজ্জ বলবে সবাই তুলতুলকে। কিন্তু এমনই বা করবে টা কি? না রান্না করলে সায়ান খাবে কি? এতোটা জার্নি করে এসে না খেয়ে থাকবে? এটা হতেই পারে না।
স্কুল ড্রেস চেঞ্জ করেছে কিছুখন হলো।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
এখন কি করবে? লজ্জা সরম ভুলে চলে যাবপ কিচেনে? না কি এখানেই বসে থাকবে?
দোটানায় ভুলছে তুলতুল। এই দোটানা দূর করতে চলে যায় তনুর রুমে। তনু খাটে উপুড় হয়ে শুয়ে হিমুর সাথে কথা বলছে।
“বোইন পরে কথা বলিস। আগে আমার কথা শোন।
তনুর কান থেকে ফোনটা কেড়ে নিয়ে কল করে দেয় তুলতুল। বিরক্ত হয়ে উঠে বসে তনু।
” বল কি হয়েছে?
চোখ মুখ কুঁচকে বলে।
“আমার আপন জামাই এখন আমারে রাইখা আমার বান্ধবীর প্রতি ইমপ্রেস হচ্ছে। মনে হচ্ছে প্রেম ট্রেম করবে।
কাঁদো কাঁদো হয়ে বলে তুলতুল। তনু চোখ দুটো বড়বড় করে ফেলে।
” সে কি রে তুলা? কি বলছিস তুই?
“হ্যাঁ রে। জানিস কি করেছে? তিথির ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট এক্সেপ্ট করেছে শয়তান বেডা। আবার তিথির মেসেজ ও সীন করেছে।
বলতে বলতে কেঁদে ফেলে তুলতুল।
” লক্ষণ ভালো না তুলা। বিয়ের পরে বউ দুরে দুরে থাকলে সে তো অন্য মেয়ের দিকে তাকাবেই। তুই কখনো জান, বাবু সোনা, এসব বলে ডেকেছিস? কখনো শাড়ি পড়ে সুন্দর করে সাজুগুজু করে তাকে দেখিয়েছিস? এসব না করলে জামাই আর জামাই থাকবে না। এক্স হয়ে যাবে।
হাই তুলে বলে তনু। তুলতুলের কান্না থেমে যায়। সত্যিই তো এসব করা হয় নি। তার জন্যই কি সায়ান অন্য নৌকায় উঠতে চাইছে?
“বোইন বুদ্ধি দেই তোকে। জামাইকে আঁচলে বাঁধার ব্যবস্থা কর। চট করে বেবি টেবি নিয়ে ফেল। এমনিতেই তোর জামাই হেব্বি স্মার্ট। বাচ্চা হলে আর কোনো দিকে চোখ দেবে না।
তুলতুল বুঝতে পারে। তনুর কথা সঠিকও মনে হয়। এতো লজ্জা পেলে চলবে না। চোখ মুছে ফেলে তুলতুল।
” ভালো উপকার করলি তুই আমার। এটাই করতে হবে এখন দেখছি। আজকে আসুক শাড়ি পড়ে কি সমাজটাই না দেবো দেখেনিস তুই। আমি কি কম সুন্দর বল? কতো সুন্দর আমি। নাকটা কি সরু,চোখ দুটো গরুর চোখের মতো। আমার মতো সুন্দরী বউ রেখে সে অন্য দিকে নজর দেই। তার চোখ তু*লে দেওয়া উচিৎ। নেহাৎ তুই আমার বোন তাই ভালো একটা বুদ্ধি দিলি।অন্য কেউ হলে এতো ভালো বুদ্ধি দিতো আমায়? দিতো না তো।
“বোন যা তুই। মাথা খাস না আমার। আমি তোর অনেক বড় উপকার করছি এটা আমি জানি। এখন তুই যা।
দুই কানে হাত দিয়ে বলে তনু। তুলতুল মুখ বাঁকায়।
” তুই আমায় দেখতেই পারিস না। থাকবোই না তোর কাছে।
চলে যায় তুলতুল। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে তনু।
“আজকে তোর কপালে দুঃখ নাচছে রে ভাঙা রেডিও।
বিরবির করে বলে তনু।
তুলতুল কিচেনে চলে যায়। আপাতত কিচেন ফাঁকা। তুলতুল স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। যাক শান্তিতে রান্না করা যাবে। কাউকে কিছু বলতে হবে না। কিন্তু কথা হচ্ছে কি রান্না করবে? নুডলস রান্না করে খাওয়ানো যাবে না। ভালো কিছু রান্না করতে হবে।
অনেকখন ভেবে সিদ্ধান্ত নেয় বিরিয়ানি রান্না করবে। দেরি না করে চট করে বিরিয়ানি রান্না বসায় তুলতুল। ইউটিউবের সাহায্যে খুব তাড়াতাড়ি রান্না শেষ করে খেলে।
রান্না শেষের দিকে সুমু আসে রান্না ঘরে।
” এ মা তুলতুল কি রান্না করছো তুমি? আর রান্না কেনো করছো?
সুমু রান্না ঘরে ঢুকতে ঢুকতে বলে। তুলতুল চমকে ওঠে।
“সুমু তোমার ভাই আসছে। আর উনি বলেছে আমাকে কিছু একটা রান্না করতে। তাই বিরিয়ানি রান্না করলাম।
মাথা নিচু করে আমতা আমতা করে বলে তুলতুল। সুমু ফিক করে হেসে ফেলে।
” আরে পাগল তাতে ভয় পাওয়ার কি আছে? তোমার বরের জন্য তুমি রান্না করছো। দোষ তো করছো না।
তুলতুলের কাঁধ জড়িয়ে বলে সুমু। তুলতুলও হেসে ফেলে।
“ভয় না। আসলে লজ্জা পাচ্ছিলাম। তোমরা কিভাববে।
” ওরে আমার লজ্জাবতী রে। যে মানুষের পাল্লায় পড়েছো তার কিন্তু একটুও লজ্জা নাই। তাই তুমিও লজ্জা কমিয়ে ফেলো।
তুলতুল লজ্জা পেয়ে যায়।
“তুমিও দাভাইয়ের জন্য এভাবে লুকিয়ে রান্না করো?
তুলতুল নিজের লজ্জা কমাতে সুমুকে প্রশ্ন করে। সুমুর হাসি মুখ কালো হয়ে যায়।
” আমাদের মধ্যে কি এতো ভালোবাসা আছো বলো? তার তো আমার সাথে কথা বলারই সময় নেই। জোর করে গলায় ঝুলেছি কি না?
তাচ্ছিল্য হেসে বলে সুমু। তুলতুলের মুখটাও কালো হয়ল যায়।
“এভাবে বলো না সুমু। আমার দাভাইও তোমাকে ভালোবাসে। শুধু বলতে পারে না।
“হুমম সেটাই। আচ্ছা তুমি যাও ফ্রেশ হয়ে নাও। আমি নামিয়ে দিচ্ছি।
” সুমু আমাকে একটু সাজিয়ে দেবে?
মাথা নিচু করে রিনরিনিয়ে বলে তুলতুল।
“ভাইয়াকে পাগল করার চিন্তা ভাবনা করছো বুঝি?
দুষ্টুমি করে বলে সুমু।
” যাহহহহ একদম না।
লজ্জা পেয়ে বলে তুলতুল। খিলখিল করে হাসে সুমু।
“আচ্ছা যাও তুমি। আসছি আমি।
তুলতুল চলে যায়। সুমু দীর্ঘ শ্বাস ফেলে। ওদের সম্পর্কটাও এমন হতে পারতো। তন্ময় একটু ভালোবাসেই পারতো।
তুলতুল রুমে ঢুকে কালো একটা শাড়ি নেয়। শর্ট হাতার কালো ব্লাউজ পড়ে সুমুর জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। একটু পরেই সুমু চলে আসে। সুন্দর করে সাজিয়ে দেয় তুলতুলকে।
পাতলা সিল্কের কালো শাড়িটাতে দারুণ মানিয়েছে তুলতুলকে। ঠোঁটে গাড়ো টকটকে লাল লিপস্টিক আর চোখে মোটা করে দেওয়া কাজল। কোমড় ছাড়িয়ে লম্বা চুলগুলো খোলা।
চোখ ধাঁধানো সুন্দর যাকে বলে। সুমু বিরিয়ানি তুলতুলোর রুমে দিয়ে যায়। শশুড় শাশুড়ী তাদের রুমে। তারা জানলে লজ্জা পাবে তুলতুল।
” কলিং বেল বাজলে তোমাকে বের হতে হবে না। আমিই দরজা খুলে দেবো। কেমন?
তুলতুল মাথা নারায়। চলে যায় সুমু।
ঘড়িতে এগারোটা ছাড়িয়ে গেছে। তুলতুল নিজের রুমের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ঢং করতে থাকে।
এমন সময় কলিং বেল বেজে ওঠে। বুকের ভেতর ধক করে ওঠে তুলতুলের। মানুষটা এসে গেছে? হাত পা মৃদু কাঁপতে থাকে। গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। পেট আর বুকে অদ্ভুত ভাবে চাপ দিচ্ছে। আশ্বাসও আটকে আটকে আসছে। এতোটা অস্বস্তি কেনো লাগছে? এভাবে সাজার জন্য? আগে তো এমন হতো না।
এমন সময় দরজা ঠেলে ভেতরে ঢোকে সায়ান। তুলতুল চমকে সায়ানের দিকে তাকায়। সায়ান থ মেরে যায়। পা থেমে যায়। চোখ দুটো তুলতুলের দিকে গেড়ে বসে।
তুলতুল মাথা নিচু করে ফেলে। জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নেয়।
“আসুন। বিরিয়ানি রান্না করেছি আপনার জন্য।
রিনরিনিয়ে বলে তুলতুল। তুলতুলের কথায় ঘোর কাটে সায়ানের। দৃষ্টি সরিয়ে ঠাসস করে দরজা বন্ধ করে ফেলে।
” পাগল করার ধান্দা এঁটেছিস না কি?
আমার তুমি সিজন ২ পর্ব ৩৩
তুলতুলের দিকে এগোতে এগোতে বলে সায়ান। তুলতুল শুকনো ঢোক গিলে পেছতে থাকে।
“আআপনি
তুলতুল কিছু বলতে যায়। সায়ান ওকে বলতে না দিয়ে কোমর জড়িয়ে ধরে।
” আজকে তুই শেষ তুলা
Porar part ajkai deya Dan please 🥺🥺🙏🙏🙏
Akta golpo thik moto den na tahole aita deuyar ki dorkar chilo.na dilei to parten…r jkhn atoi problem tahole part gulo sesh kore den ak part ai
Poroborty porbo kobe diban
Poroborty porbo kobe diban??