আমৃত্যু ভালোবাসি তোকে পর্ব ১১

আমৃত্যু ভালোবাসি তোকে পর্ব ১১
লেখনীতে সালমা চৌধুরী

প্রতিদিনের মতো আজও খাবার টেবিলে একসাথে খেতে বসেছে সকলে৷ কিন্তু মেঘের মাথায় আজ অন্য প্ল্যান ঘুরছে। সবার খাওয়া মোটামুটি শেষ, মেঘ ইচ্ছে করেই অল্প অল্প খাচ্ছে।
এদিকে মোবাইলে কি যেনো চেক করছিলো আবির, মোবাইল চেক করে করেই খাচ্ছিলো , আবিরের খাওয়া শেষ, তাই মোবাইল টেবিলের উপর একপাশে রেখে হাত ধৌতে উঠে পরে।

৩-৪ কদম যেতেই মেঘ হাত বাড়িয়ে আবির ভাইয়ের মোবাইল হাতে নেয়৷ তাড়াহুড়োতে হয়তো পাওয়ার বাটনে চাপ দিতে ভুলে গেছে আবির ভাই। হোমপেইজ ভেসে আছে। এখানে ২ টা হাতের ছবি। একটা বড় হাতের উপর একটা পিচ্চি হাত। মেঘ ১ সেকেন্ড তাকালো ছবিটার দিকে৷ কিন্তু এখন ছবি নিয়ে গবেষণা করার সময় না।
তাই মেঘ তাড়াতাড়ি ফেসবুকে ঢুকলো,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

friend requests অপশনে ঢুকতেই চোখে পরলো কত ছেলে মেয়ের আইডি৷ সে খোঁজতে লাগলো গত রাতের নীল জামা পরিহিতাকে। একটু নিচে যেতেই পেয়ে গেলো, প্রত্যাশিত ব্যক্তির আইডি। এক সেকেন্ড না ভেবে ব্ল*ক করে দিলো তাকে। তাড়াতাড়ি ফেসবুক থেকে বের হয়ে ফোন রেখে দিলো আগের জায়গায়।
এবার মেঘ দীর্ঘশ্বাস ফেললো, মনে খুব শান্তি লাগছে এখন।
আবির ভাই টেবিলের কাছে এসে মোবাইল নিতে নিতে, মেঘের দিকে তাকালো,
নিরুদ্বেগ কন্ঠে বললো,

“যতক্ষণ সময় খাবার টেবিলে বসে থাকিস ততক্ষণ যদি তুই খাইতি, তাহলে আজ ক*ঙ্কালের মতো থাকতি না! ”
মোবাইল আর ব্যাগ নিয়ে অফিসের জন্য বেড়িয়ে গেলেন।
এদিকে মেঘ মুচকি হেসে বিড়বিড় করে বললো,
“আমি তো আপনার জন্যই বসে থাকি। আমি খাবার খেয়ে রুমে যেতে যেতে আপনি বাইক নিয়ে চলে যান৷ দেখতেই পারি না। তাই তো বাধ্য হয়ে এখন টেবিলেই বসে থাকি! ”
★★★★
আবির ভাইয়ের কথা মতো মেঘ ১১ টার মধ্যে গোসল করেছে আজ। যথাসময়ে রেডি হয়ে রওনা দিলো টিউশনের উদ্দেশ্যে। মনটা ভিষণ খারাপ। আজ থেকে একা একা টিউশন আর কোচিং এ পড়তে হবে এটা ভেবেই মন ভা*ঙছে বারবার।
টিউশনে ঢুকতেই বন্যা ডাকলো,
“মেঘ,এখানে আয়!”

মেঘ চোখ গোল গোল করে অবাক চোখে তাকালো, ছুটে গেলো বন্যার কাছে,
মেঘ: তুই এই সময় টিউশনে কেন? আগের ব্যাচে পড়িস নি?
বন্যা: কিভাবে পড়বো? তোর বেস্ট হয়েছি, তোর ভোগান্তি তো আমাকে ভুগতে হবেই।
মেঘ: মানে?
বন্যা: গতকাল রাতে তানভির ভাইয়া কল দিয়েছিল আমায়, বললো তোর সাথে আমারও টাইম পাল্টায় দিছে। আজ থেকে যেনো বিকেলে আসি৷
মেঘ: তাহলে তুই জানাস নি কেনো আমায়? আমি পুরো রাস্তা মন খারাপ করে এসেছি। একা একা পড়তে হবে বলে।

বন্যা: তোকে কিভাবে জানাবো? তুই তো আবির ভাইয়ের ঘো*রে ডুবে আছিস।
মেঘ কিছুটা লজ্জা পেলো।
তারপর স্ব শব্দে হেসে বললো, জানিস বন্যা আমার হিজাব টা আবির ভাই কিনে দিছে। শুধু এটায় না সর্বমোট ৩০ টা হিজাব কিনে দিয়েছে। শুধু তাই না দেখ আমার পায়ের নুপুর গুলো। এগুলোও আবির ভাই দিয়েছে৷ তাও আবার নিজের হাতে পড়িয়ে দিয়েছেন। দেখ, সুন্দর না?
বন্যা কপাল ভাজ করে নুপুর গুলো দেখলো, তারপর বললো,
“হ্যাঁ খুব সুন্দর হয়েছে। কিন্তু কাহিনী কি বল তো? ঐ ব্যাটার হঠাৎ তোর প্রতি এত মায়া হচ্ছে! তোকে কিছু বলছে কি?”

মেঘ: হ্যাঁ বলছে। আমি কই যাই না যাই তা পর্যবেক্ষণ করতে নুপুর দিয়েছে৷
বন্যা হা করে তাকায় আছে!
ততক্ষণে স্যার পড়াতে চলে এসেছেন।
টিউশন, কোচিং শেষে মেঘ বাসার উদ্দেশ্যে চলে গেছে৷
সন্ধ্যার পর আবার জান্নাত আপু আসবে। পড়া রিভিশন দিতে হবে৷
জান্নাত আপু শুক্রবার, শনিবার বাদ দিয়ে বাকি ৫ দিন পড়ান। জান্নাত আপু খুব ভালো পড়ান৷ মেঘ ওনার ভক্ত হয়ে গেছে একেবারে। জান্নাত আপুও মেঘকে খুব আদর করে৷ পড়াশোনার পাশাপাশি কিভাবে পড়লে ভালো হবে, রুটিন করা সবকিছুতেই হেল্প করেন৷ এজন্য মেঘ ইদানীং পড়াশোনাতেও গুরুত্ব বেশি দিচ্ছে।

এভাবে কেটে গেলো ১০-১২ দিন। আবিরের সাথে মেঘের প্রতিদিন সকালে খাবার টেবিলে দেখা হয়৷ মাঝে মাঝে মেঘ আগে আসে, মাঝে মাঝে আবির আগে চলে আসে। তারপরও দেখা তো হয়, এতেই যেনো মেঘের মনে সারাদিন প্রশান্তি কাজ করে।
আবির বাড়ি ফেরে ১১-১২ টার দিকে৷ আবিরের বাইকের শব্দ পেলেই মেঘ ছুটে যায় নিজের রুমের বারান্দায়। হেলমেট টা খুলে যখন বাইক থেকে নামে,

“মেঘ গভীর মনোযোগ দিয়ে দেখে সে দৃশ্য আর গুনগুন করে গান গায় ” তারপর বাড়িতে ঢুকার আগ পর্যন্ত যতটুকু সম্ভব তাকিয়ে তাকিয়ে আবির ভাই কে দেখে। আবির ভাই বাড়িতে ঢুকে গেলে হাসিমুখে ঘুমিয়ে পরে মেঘ৷ এটায় যেনো মেঘের দৈনিক রুটিন। কেনো আবির ভাইকে দেখে, তার কোনো উত্তর নেই অষ্টাদশীর কাছে।
আবির ভাই কি শুধুই তার ক্রাশ নাকি সে আবির ভাইকে ভালোবাসে এর উত্তর নিজেও খোঁজে পায় না। তবে আবির ভাইকে অসম্ভব ভালো লাগে, আবির ভাইয়ের শীতল চাউনি বারংবার অষ্টাদশীর হৃদ*য়টা চূ*র্ণবিচূ*র্ণ করে। আবির ভাই অষ্টাদশীর মন- মস্তিষ্ক জোড়ে বিচরণ করছে ।

১০-১২ দিন পর সকালবেলা আবির জুসের গ্লাস হাতে নিয়ে দু চুমুক খেলো কি না।
আলী আহমদ খান বলে উঠলেন,
“আবির তোকে একটু চট্টগ্রাম যেতে হবে। ”
আবির তৎক্ষনাৎ বিসুম খেলো।
তানভির তাড়াতাড়ি উঠে, ভাইয়ের মাথায় ফু দিচ্ছে। রান্না ঘর থেকে ছুটে এসেছেন মালিহা খান৷
এদিকে মেঘ অসহায়ের মতো তাকিয়ে আছে আবির ভাইয়ের দিকে৷
কিছুক্ষণ পর আবির স্বাভাবিক হয়ে বললো,

“আমি চট্টগ্রাম গিয়ে কি করবো?”
আলী আহমদ খান স্বাভাবিক ভাবেই বললেন,
“আমাদের কোম্পানিতে কিছু সমস্যা হচ্ছে, কিছু ডিলার ঝামেলা করতেছে শুনলাম। তোর কাকামনিকে সিলেট যেতে হবে। কোম্পানির CEO হিসেবে এখন দায়িত্ব তোর উপর ই পরে। তুই কথা বললেই আশা করি সমাধান হবে। ডিলাররা অর্ডার ডেলিভারি করা পর্যন্ত তুই থাকবি ঐখানে৷ যদি সব ঠিকঠাক হয়ে যায় তখন চলে আসিস। ”
আবির এক পলক মেঘের দিকে তাকালো, তারপর দৃষ্টি নামিয়ে প্রশ্ন করলো,

“কবে যেতে হবে?”
আলী আহমদ খান সহসা বলে উঠলেন,
“আজ রাতে অথবা আগামীকাল সকালে চলে গেলে ভালো হবে। ”
আবির চুপচাপ মাথা নিচু করে বসে আছে। আলী আহমদ খান আর মোজাম্মেল খান উঠে গেলেন।
তানভির এবার ভাইকে বললো,

“ভাইয়া তোমার কি একা যেতে খারাপ লাগবে? আমি কি যাবো তোমার সঙ্গে? ”
আবির অ*গ্নিদৃষ্টিতে তাকালো তানভিরের দিকে, দাঁতে দাঁত চেপে বিড়বিড় বিড়বিড় করে কি যেনো বললো,
কেউ কিছু বুঝলো না কিন্তু তানভির স্ব শব্দে হেসে উঠলো।
আবির এবার রা*গে ফুঁসতে ফুঁসতে বললো,
“”তানভির..!!””

তানভির হাসতে হাসতে চেয়ার থেকে উঠে বেসিনের দিকে দৌড় দিলো।
আবির অ*গ্নিদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তানভিরের দিকে তারপর মাথা নিচু করে প্লেটের খাবার টা কোনোরকমে শেষ করে উঠে চলে গেলো।
এদিকে মেঘ, মীম আর আদি বসে আছে।
আদি আর মীম প্ল্যান করছে আবির ভাইয়াকে বলবে কক্সবাজার গেলে ওদের জন্য খেলনা, সাজুনি, শামুক নিয়ে আসতে।

মেঘ নিশ্চুপ বসে খাচ্ছে! আবির ভাই কে দেখার জন্য ই এখন সে প্রতিদিন ফজরের সময় ঘুম থেকে উঠে৷ রাতে ঘুমানোর আগেও আবির ভাইকে দেখে ঘুমায়৷ আবির ভাই চট্টগ্রাম চলে গেলে ও থাকবে কিভাবে!
মীম হঠাৎ ডেকে উঠলো,
“আপু ভাইয়াকে তুমি কি আনতে বলবা?”
মীমের ডাকে ধ্যান ভাঙলো মেঘের, একটু হাসার চেষ্টা করলো, তারপর কোমল কন্ঠে বললো,
“আমার কিছু লাগবে না!”

সারাদিন কেটে গেলো, মেঘ নিজের মতো কোচিং, টিউশন শেষ করে আসছে৷ মীম, আদি স্কুল থেকে ফিরেছে।
আবির ৮ টায় বাসায় ফিরেছে। ততক্ষণে জান্নাত আপু পড়িয়ে চলে গেছেন। মেঘ বই খাতা নিয়ে নিজের রুমে চলে গেছে। রাত ১০ টার দিকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে যাবে আবির।
রুমে গিয়ে শাওয়ার শেষ করে, একেবারে রেডি হয়ে রুম থেকে বের হলো আবির। মেঘের রুমের দরজার সামনে এসে থামলো,

দরজা ধাক্কা দিলো আস্তে করে।
মেঘ বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে আছে । পাশে বই খাতা পরে আছে, ফ্যানের বাতাসে পৃষ্ঠা গুলো উড়ছে। জান্নাত আপু যাওয়ার পর ই রুমে এসে শুয়ে ছিল।
আবির আস্তে করে ডাকলো,
“মেঘ”

কোনো সাড়া নেই। তাই রুমের ভিতরে ঢুকলো আবির। শান্ত পায়ে এগিয়ে গেলো মেঘের কাছে।
মেঘের মুখের একপাশ বিছানায় লেপ্টে আছে। ফ্যানের বাতাসে চুল গুলো এলোমেলো হয়ে উড়ছে,ছোট চুল গুলো বার বার মুখে ঝাপটে পরছে, লাইটের আলোয় অপর গালটা চিকচিক করছে।
আবির বিছানার এক পাশে বসলো, কিছুক্ষণ সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে পরখ করলো অষ্টাদশীকে। তারপর গালে হাত রেখে মুখ থেকে ছোট চুলগুলোকে সরিয়ে দিলো। ২-১ বার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে চুপচাপ রুম থেকে বেড়িয়ে, ব্যাগ নিয়ে নিচে চলে আসলো।

মীম আর আদি খুব করে বললো,
“ভাইয়া কক্সবাজার যেয়ো প্লিজ, চাটনি নিয়ে এসো, খেলনা,শামুক আরও অনেক কিছুর আবদার করলো ভাইয়ের কাছে। ”
উত্তরে আবির শুধু বললো,
“সময় পেলে যাব!”
খেয়ে ১০ টা নাগাদ বেড়িয়ে গেছে আবির।
ইকবাল খান আগামীকাল সকাল ৮ টায় সিলেট যাবেন।

আবিরের বাবার কোম্পানি ঢাকার বাহিরে তিনটা শাখা আছে। চট্টগ্রাম, সিলেট এবং রাজশাহী । ইকবাল খানকে বেশিরভাগ সময় ই বিভিন্ন জায়গাতে দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। কখনো চট্টগ্রাম, কখনো রাজশাহী, কখনো সিলেট, বাকি সময় বাড়িতে থাকলে হেড অফিসে থাকেন। একই সাথে দুই শাখাতে যেতে হলে কখনো কখনো মোজাম্মেল খানকেও যেতে হয়। তবে আলী আহমদ খান এখন আর ঢাকার বাহিরে যান না। আবির আসাতে ওনি চাইছেন আবির সব দায়িত্ব বুঝে নেক৷

রাত ১১ টায় মীম এসে ডাকছে,
“আপু উঠো, খাবে না?”
মেঘ ঘুমঘুম চোখে তাকায় মীমের দিকে,
মীম আবার বলে,
“১১ টা বাজে, তুমি কখন খাবে? আম্মু, বড় আম্মু সবাই বসে আছে তোমার জন্য। আমিও খাই নি আসো৷ ”
১১ টা শুনেই মেঘের ঘুম উদাও হয়ে গেছে, সহসা মনটা খারাপ হলো৷
চিন্তিত স্বরে বললো,

“আবির ভাই কি চলে গেছে?”
মীম হাসিমুখে বলছে,
“হ্যাঁ, ভাইয়া তো ১০ টার আগেই চলে গেছে। আমি আর আদি বলে দিছি আমাদের জন্য, খেলনা, গিফট, চাটনি নিয়ে আসতে৷ তোমার জন্যও আনতে বলেছি। ভাইয়া বলেছে সময় পেলে যাবে কক্সবাজার। ”
মেঘের মনটা চূ*র্ণবি*চূর্ণ হয়ে গেছে। মনে মনে ভাবছে,
কেনো যে শুইতে গেলাম, না ঘুমালে তো আবির ভাইকে দেখতে পারতাম৷ আমি ঘুমিয়ে ছিলাম তাতে কি, আবির ভাই কি আমায় বলে যেতে পারতো না?
মীম আবার ডাকলো,

“আপু আসো খেতে যাই! ”
মেঘ কঠিন স্বরে বললো,
“আমার খিদা নেই । খাবো না। তুই খেয়ে নে। ওদের বল খেয়ে নিতে। আমি ঘুমাবো। আর লাইট টা অফ করে দিয়ে যা৷ ”
মীম মন খারাপ করে চুপচাপ লাইট অফ করে চলে গেলো,
এদিকে মেঘ ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁ*দছে, কিছুক্ষণ পর নিজে নিজেই ভাবছে,
আবির ভাই তো আমায় নিয়ে ভাবেন ই না।ভাবলে তো আমাকে ডেকে বলেই যেতেন। তাহলে আমি কেনো ওনার জন্য কা*ন্না করছি। আর কাঁদবো না আমি। কিছুক্ষণ পর থামলো। খুব খিদে পাচ্ছে কিন্তু সে খাবে না। বড্ড অভিমান জমেছে বুকে। এভাবেই ঘুমিয়ে পরলো আবার।

ভোরবেলাও উঠলো না মেঘ৷ ৮ টার উপরে বাজে খাবার টেবিলেও আসে নি। বাধ্য হয়ে মোজাম্মেল খান নিজে গেলেন মেয়েকে ডাকবে। মেঘ তখনও ঘুমে৷
আব্বুর ডাকে ঘুম ভাঙলো মেঘের। ১০ মিনিটের মধ্যে ফ্রেশ হয়ে নিচে আসলো। খাবার টেবিলে আবির ভাই নেই দেখে মনটা খারাপ হলো , কাকামনিও সকাল সকাল সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। চুপচাপ খেতে বসলো মেঘ কিন্তু গলা দিয়ে খাবার নামছে না। কোনো রকমে অল্প কিছু খেয়ে উঠে পরলো৷

রুমে গিয়ে পড়ার চেষ্টা করলো কিন্তু পড়া মাথায় ঢুকছে না। মাথায় শুধু আবির ভাই ঘুরছে। আবির ভাই কেনো বলে গেলো না, এখন আবির ভাই কোথায় আছেন, খেয়েছেন কি না এসব চিন্তায় ব্যস্ত হলো৷ একটু পর পর ডাটা অন করে ফেসবুকে ঢুকছে৷ কিন্তু আবির ভাই নেটে নাই, কোনো আপডেট ও নেই। ১০ মিনিট পর পর মেঘ ফেসবুক চেক করছে কিন্তু তাতে কোনো লাভ হচ্ছে না।
সারাদিন গেলো, এই পড়তে বসছে এই আবার ফোন চেক করছে৷ বিকাল নাগাদ কোনো খবর না পাওয়াতে মন খারাপ করে ঘুমিয়ে পরলো।

আবির চট্টগ্রাম এসে অফিসের কাজে ব্যস্ত হয়ে পরেছে। বাসা থেকে আবিরের আম্মু কল দিয়ে খোঁজ নিয়েছে ছেলের। এছাড়া মোজাম্মেল খানও কাজের জন্য কয়েকবার কল দিয়েছে আবিরকে৷
দেখতে দেখতে ৩ দিন হয়ে গেলো আবিরের চট্টগ্রাম আসা। সাথে অফিসের ঝামেলায় সারাদিন এক মুহুর্ত রেস্ট নিতে পারে না। অফিসের কাজের ফাঁকে ২-১ বার বাসায় কল করে, আম্মু, মামনি,তানভিরের সাথে কথা হয়। মীম আর আদির এক কথা ভাইয়া কক্সবাজার যেয়ো প্লিজ, আমাদের জিনিস গুলো নিয়ে এসো। কিন্তু মেঘ যেনো নিখোঁজ।।

আবির বিদেশে থাকাকালীন তানভির বাসায় না থাকলে যেই মেয়ে একায় সারা বাড়ি মাতিয়ে রাখতো৷ এখন আবির চট্টগ্রাম, তানভির সকালে বের হয়ে পার্টি অফিসে আর ফেরে ১০ টার দিকে৷ বাবা চাচাও সারাদিন অফিসে থাকে। তারপরও মেঘকে সারাদিনে খোঁজে পাওয়া যায় না।
সকালে অল্প খেয়ে যে রুমে ঢুকে কোচিং থাকলে বের হয়, না হয় ৩-৪ টায় খুদা লাগলে চুপচাপ এসে খাবার খায়, মাকেও ডাকে না। জান্নাত আপু এসে পড়িয়ে গেলে, মেঘ অল্প খেয়ে আবার রুমে চলে যায়। মনমরা হয়ে থাকে সবসময়।

আবিরের অফিসের ঝামেলা মোটামুটি মিটেছে। ডিলার প্রোডাক্ট ডেলিভারি দেয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। দুদিন ফ্রী থাকাতে মীম আর আদির কথা মনে করে কক্সবাজার গেলো। এর আগে কখনো কক্সবাজার যায় নি আবির। এটায় জীবনে প্রথমবার। 5★ হোটেলে রুম নিয়েছে। ফ্রেশ হয়ে বের হতে হতে বিকেল হয়ে গেছে।
সমুদ্র সৈকতে দাঁড়িয়ে আছে আবির,

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের স্পষ্ট রূপ দিয়ে সজ্জিত বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। কক্সবাজারের সূর্যাস্তের ছবি প্রায় সবাই স্মৃতি হিসেবে রেখেছেন নিজেদের মোবাইল ফোন বা প্রতিটা বাড়ির দেয়ালে।আবির সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গে গোধূলি বেলার সূর্যাস্ত দেখে বিমোহিত। অসংখ্য প্রাপ্তি, ক্লান্তি, হতাশা বিকীর্ণ হয়ে আছে আবিরের মনে। সমুদ্রের পানিতে অস্তমিত সূর্যের অপরূপ দৃশ্য উপভোগ করেছে।
কিছুক্ষণ পর আবিরের ফোনে কল আসে।। পকেট থেকে ফোন বের করে দেখে তানভিরের কল। রিসিভ করে,
তানভির: আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া

আবির: ওয়ালাইকুম আসসালাম।
তানভির: কোথায় আছো?
আবির: কক্সবাজার আসছি আজ। কেনো?
তানভির: একটু দরকার ছিল !
আবির: বল।

তানভির: এমপির মেয়ে নাকি তোমায় রিকুয়েষ্ট দিয়েছিল৷ তুমি নাকি তাকে ব্লক করে দিয়েছো। আজ এমপির বাসায় গেছিলাম। মেয়ে তো তোমার কথা জিজ্ঞেস করতেছে আমায়।
আবির: তুই কি বলছিস?
তানভির: প্রথমে তো এমনিতেই বুঝানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু মানতেছে না তাই বাধ্য হয়ে বলছি তুমি আরেকজনকে পছন্দ করো। তারসাথে তোমার বিয়ে ঠিক।
আবির: আচ্ছা ঠিক আছে ।
তানভির: কিন্তু একটা সমস্যা আছে ভাইয়া।
আবির: আবার কি সমস্যা?

তানভির: এমপির মেয়ে যদি এমপিকে বলে আর ওনি যদি আমায় জিজ্ঞেস করে তখন আমি কি বলবো? যদি মেয়ের কথা জিজ্ঞেস করে তখন কি বলবো?
আবির: প্রথমত এমপি কোনোসময় এসব বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাবে না। আর যদি শুনে ছেলে অন্য কাউকে পছন্দ করে তাহলে আরও কিছু বলবে না।
তানভির: তারপর ও যদি জিজ্ঞেস করে ফেলে তখন কি বলবো?
আবির: বলবি তোর বোনের সাথে বিয়ে ঠিক।
তানভির: তারপর?

আবির: তারপর আবার কি? বাকিটা আমি সামলে নিবো।
তানভির: যদি ফোর্স করে?
আবির একটু গম্ভীর কন্ঠে বললো, “বেকুবের মতো কথা বলিস না তানভির। এমপির মেয়ে হোক আর মন্ত্রীর মেয়ে তারজন্য কি তুই নিজের ভালোবাসা কোরবান করবি নাকি, আজব।”
তানভির আর কথা বাড়ালো না।
তানভির: আচ্ছা ভাইয়া এখন রাখি তাহলে৷ আল্লাহ হাফেজ।
আবির: আল্লাহ হাফেজ ।

কল কেটে আবির ডাটা অন করে ফেসবুকে ঢুকে। কেনো জানি মনে হলো ব্লকলিস্ট চেক করবে৷ ব্লক লিস্টে ঢুকতেই চোখে পরলো প্রথম আইডিটাই ঐ মেয়ের।
দু সেকেন্ড ভাবলো, সে তো শুধু কমেন্ট ডিলিট করেছিল, ব্লক তো করে নি। এটা যে মেঘের কাজ তা বুঝতে বেশিক্ষণ সময় লাগলো না । কিন্তু মেঘ ফোন পেলো কোথায়? আরও কিছুক্ষণ ভাবার পর মনে হলো, টেবিলের উপর ফোন রেখে যাওয়ার ঘটনা। তারমানে সেদিন ই ব্লক করেছে।
অজান্তেই ঠোঁটের কোণে এক চিলতে মুচকি হাসির ঝলক দেখা গেলো।
আস্তে আস্তে বললো,

“”এই সামান্য বিষয়ে জ্বলে উঠলে
সইবি কিভাবে এত ঝড়-ঝঞ্ঝা।
এত তাড়াতাড়ি তো তোকে আমার করে নিবো না।
আবার খুব বেশি কষ্টও দিবো না তোকে। ”
অন্ধকার নেমেছে বিচে, একটু হাঁটাহাঁটি করলো আবির। ভাই বোনের জন্য কিছু কেনাকাটাও করলো। তারপর হোটেলে চলে আসছে।

কেটে গেলো আরও ২ দিন। আবির বাড়ি নেই ৬ দিন যাবৎ। অষ্টাদশীর মনে বিষন্নতা ছেয়ে গেছে। খাই না ঠিক মতো, পড়াশোনা করে না, মোবাইল ও চাপে না, কথাও বলে না কারো সাথে। শুধু টিউশন আর কোচিং যায় আসে এতটুকুই।

আজ সকাল থেকে মনটা মাত্রাতিরিক্ত খারাপ। তানভির ডেকে এনে খাবার টেবিলে বসিয়েছে। তানভির আজকাল পার্টি অফিসের দৌড়াদৌড়িতে মেঘকে কিছুই বলে না। মেঘকে এখন আর আগের মতো বকেও না। মেঘ যেমন পাল্টে গেছে তেমনি তানভিরও পাল্টে গেছে। মেঘ খাবার টেবিলে বসে কোনো কথা না বলেই অল্প খাবার খেলো।
তানভির মোজাম্মেল খান কে প্রশ্ন করলো,

আব্বু, ভাইয়া কবে ফিরবে?
মোজাম্মেল খান যথারীতি জবাব দিলেন,
“কাজ শেষ হলে ফিরবে, কাজ এখনও শেষ হয় নি!”
মেঘের হৃদয়ে র*ক্তক্ষরণ হচ্ছে, কয়েকটা দিনেই আবির ভাইয়ের শূন্যতা খুব করে ভোগা*চ্ছে অষ্টাদশীকে।
টিউশন শেষ করে কোচিং এ গেলো দুই বান্ধবী একসাথে।
বন্যা বার বার জিজ্ঞেস করছে,
“কি হয়ছে তোর?”

মেঘ শুধু মাথা নাড়ছে একটা কথাও বলছে না।
একটা ক্লাস শেষ হয়েছে । স্যার বেড়িয়ে যাওয়া মাত্রই ওষ্ঠ উল্টে কান্না শুরু করলো মেঘ, প্রথম দিকে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদলেও নিজেকে বেশিক্ষণ কন্ট্রোল করতে পারলো না । কা*ন্নার মাত্রা বেড়ে গেছে। শ্বাস নিতে পারছে না।
মেঘের এই অবস্থা দেখে আঁতকে উঠে বন্যা। মেঘকে নিয়ে ওয়েটিং রুমে চলে যায়। ওখানে যাওয়াতে বাধভাঙ্গা কা*ন্না শুরু হয় মেঘের। বন্যা কোনোভাবেই শান্ত করতে পারছে না। ১০-১৫ মিনিট স্থির হয় এই কা*ন্না । তারপর কিছুটা থেমেছে, এখন জোরে জোরে শ্বাস ছাড়ছে৷ একটু কাঁদলেই মেঘের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়৷
বন্যা মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে শান্ত কন্ঠে বললো,

“কি হয়েছে তোর? এভাবে কান্না করছিস কেন?”
মেঘ ফুপিয়ে ফুপিয়ে উত্তর দিলো,
“আমার খুব কা*ন্না পাচ্ছে! ”
বন্যা ভ্রু কুঁচকে বললো,
“কা*ন্না পাচ্ছে তা তো দেখতেই পাচ্ছি! কিন্তু কেনো কান্না পাচ্ছে সেটা বল!”
মেঘের গম্ভীর জবাব,

“জানি না!”
বন্যা নিজেকে কন্ট্রোল করে আবার প্রশ্ন করলো,
“রেজাল্ট নিয়ে চিন্তা করছিস? নাকি চান্স পাওয়া নিয়ে? নাকি বাসায় কেউ বকেছে তোকে?”
আবারও কাঁদছে মেঘ, কাঁদতে কাঁদতেই বললো,
“আমি আবির ভাইকে খুব মিস করছি বন্যা, ওনি ফেসবুকেও আসেন না, আমি ওনাকে না দেখে, ওনার কথা না শুনে আর থাকতে পারছি না ”
বন্যা এবার অবুঝ বাচ্চার মতো হাসলো, তারপর বললো,
“মিস করছিস তো কল দে”

মেঘ কাঁদতে কাঁদতেই বললো,
“ওনি কি আমার সাথে কথা বলবেন?”
বন্যা এবার স্ব শব্দে হাসলো,
“ওনি কথা বলবেন কি বলবেন না, এসব যদি তুই ভাবিস তাহলে ওনি কি ভাববেন?”
মেঘ এবার মুখ তুলে তাকালো বন্যার দিকে,
বন্যা এবার হাসতে হাসতে বললো,
“বেবি, তুমি তো আবির ভাইয়ের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছো, সাবধান বান্ধবী ডুবে যেয়ো না, সামনে কিন্তু ভর্তি পরীক্ষা। ”
মেঘ ভেংচি কেটে বললো,
আমি আবির ভাইকে ভালোবাসি..

এটুকু বলেই থেমে গেলো, না টা বলার খুব চেষ্টা করলো কিন্তু বলতে পারলো না।
বন্যা মেঘকে ঠান্ডা মাথায় বেশ কিছুক্ষণ বুঝালো৷ মেঘ শান্ত হয়ে বসে আছে।
বন্যা বললো,
“তুই তাহলে বাসায় চলে যা, ক্লাস করতে হবে না৷ ফোন দে, আমি ড্রাইভার আংকেল কে কল দিচ্ছি।। ”
তারপর মেঘকে গাড়িতে দিয়ে বন্যা এসে ক্লাস টা শেষ করলো।

মেঘ বাসায় এসে ফ্রেশ হয়েই ছুটে গেলো মায়ের রুমে। হালিমা খান ঘুমাচ্ছিলেন। মেঘ মায়ের হাতের উপর মাথা রেখে মাকে জরিয়ে ধরে শুয়ে পরেছে।৷ হালিমা খান ঘুমের মধ্যে ই একবার চোখ খুলে দেখলেন, মেঘকে দেখে মেঘের পিঠ বরাবর জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরলেন পুনরায়।
অনেকক্ষণ কান্না করায় মেঘও ক্লান্ত ছিল সেও মাকে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরেছিলো। বেশ কিছুক্ষণ পর মেঘের ঘুম ভাঙে। ততক্ষণে হালিমা খান সজাগ হয়ে গেছেন৷ শুয়ে শুয়ে মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। মেঘ সচরাচর মায়ের কাছে শুতে আসে না। যখন খুব বেশি মন খারাপ থাকে তখন ই আসে।
মেঘের ঘুম ভাঙতেই হালিমা খান বললেন,

“তোর কি শরীর খারাপ মা?”
মেঘ মাথা নেড়ে, না করলো
হালিমা খান পুনরায় বললেন,
“রেজাল্ট নিয়ে চিন্তা করছিস?”
মেঘ আবারও মাথা নেড়ে, না করলো
মেঘ এবার মাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে বললো,
“আম্মু আবির ভাই কবে আসবে?”
মেয়ের প্রশ্নে হালিমা খান মুচকি হাসলেন আর বললেন,
“কেনো ভাইয়ের জন্য পেট পু*ড়ছে?”

মেঘ মনে মনে বললো,
“পেটের সাথে মনটাও পু*ড়ছে আম্মু। ”
মেঘকে নিরব দেখে হালিমা খান বললেন,
“দুপুরে তো কথা হলো, বললো আরও ২-৪ দিন লাগতে পারে। ”
কথা হয়েছে শুনে সহসা মেঘের মনটা খারাপ হলো, নিজেকে সামলে বললো,
“আম্মু আবির ভাইকে কল দাও না প্লিজ।”

হালিমা খান: বিকেলেই তো কথা হলো। এখন আবার কল দিয়ে কি করবো, ছেলেটা মনে হয় ব্যস্ত।
মেঘ: আম্মু প্লিজ দাও না।
হালিমা খান নিজের ফোন হাতে নিয়ে কল দিলো আবিরকে। লাউড স্পিকারে দিয়েছেন।
কয়েকবার রিং হতেই রিসিভ হলো৷
আবির: আসসালামু আলাইকুম মামনি
আবির ভাইয়ের কন্ঠ শুনে মেঘের বক্ষস্পন্দন জোড়ালো হলো।
হালিমা খান: ওয়ালাইকুম আসসালাম। ব্যস্ত আছিস বাবা?
আবির: হ্যাঁ কিছুটা৷ কেনো?

হালিমা খান: মেঘ একটু কথা বলবে তোর সাথে!
আবির: ঠিক আছে দাও।
হালিমা খান মেঘের দিকে ফোন এগিয়ে দিলেন। মেঘ কাঁপা কাঁপা হাতে ফোন নিলো, সঙ্গে সঙ্গে লাউডস্পিকার অফ করে দিলো মেঘ।
মেঘ ধীর কন্ঠে বললো,
“হ্যালো”
আবির তৎক্ষনাৎ রেগেমেগে বললো,

“হ্যালো কি রে? প্রথমে কল দিয়ে সালাম দিতে হয় এটাও জানিস না?”
আবিরের ধমকে চুপসে গেলো মুখটা। আস্তেধীরে বললো,
“আসসালামু আলাইকুম ”
আবির গম্ভীর কন্ঠেই উত্তর দিলো,
“ওয়ালাইকুম আসসালাম”
মেঘ এবার কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,
“কেমন আছেন আবির ভাই?”
আবির কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে বললো,
“আলহামদুলিল্লাহ ভালো, তুই কেমন আছিস?”
মেঘ দীর্ঘশ্বাস ফেলে উত্তর দিলো,
“আলহামদুলিল্লাহ । ”

দুজনেই কয়েক সেকেন্ড নিরবতা পালন করলো,
আবির নিরবতা ভেঙে রাশভারী কন্ঠে শুধালো,
“তোর ফোন দিয়ে কল দিতে পারিস না? মামনির ফোন থেকে দিতে হলো কেনো?”
মুখের উপর মেঘ বলে ফেললো,
“আপনার নাম্বার নাই আমার কাছে”
আবির এবার দীর্ঘশ্বাস ফেললো, গম্ভীর কন্ঠে জবাব দিলো,
“রাখছি, ব্যস্ত আছি আমি। ”

এই বলে কল কেটে দিলো। মেঘ আহাম্মকের মতো ফোনের দিকে তাকিয়ে রইলো। বুঝে উঠতে পারলো না ব্যাপার টা। আবির ভাইয়ের নাম্বার নেই এই কথা শুনে রেখে দিলো নাকি সত্যি ই ব্যস্ত।এটা ভেবে পাচ্ছে না অষ্টাদশী।
ফোনের স্ক্রীনে ভেসে আছে, আবির নামে সেইভ করা নাম্বার টা। মেঘ মনে মনে নাম্বার টা মুখস্থ করতে ব্যস্ত হলো। তারপর মাকে ফোন দিয়ে নিজের রুমের দিকে দৌড় দিলো।

আমৃত্যু ভালোবাসি তোকে পর্ব ১০

নিজের ফোনে আবির ভাইয়ের নাম্বার টা লিখে নামের অপশনে লিখলো,
“আমার আবির সাথে লাভ ইমুজি কিছুটা দূরে লিখলো ভাই। ” সেইভ করলো নাম্বারটা।

আমৃত্যু ভালোবাসি তোকে পর্ব ১২