রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ৩

রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ৩
সিমরান মিমি

“এতো বড় একটা ঘটনা ঘটলো।একজন সুইসাইড করলো।আরেকজনকে সেই মৃত মানুষ টার সাথে বিয়ে দিচ্ছেন।আর প্রশাসন বা পুলিশকে কিচ্ছু জানান নি?আপনি কি ভয় পাচ্ছিলেন ঠাকুরমশাই?সে যাই হোক।পেতেই পারেন।আচ্ছা বাদ দিলাম।পুলিশ বাদ।অন্তত গ্রামের চেয়ারম্যান আর মেম্বার কে তো আনুন।তারাও বসুক,শালিস করুক।আর তা না হলে আমি সোজা 999 এ কল দিলাম।আর সেখানে কল দিলে শুধু পুলিশ না ঠাকুরমশাই,সোজা মন্ত্রণালয় থেকে অফিসার আসবে।আর তখন আপনার এই সম্মানিত বিধি-নিষেধ,শাস্তির ধরণ,নিয়ম কানুন সব শুনবে।এরপরে সেগুলো সংবিধানে যুক্ত করবে।এরপর আমরা সবাই সেগুলো অনুযায়ীই দেশ চালাবো। ভালো হবে না ঠাকুর মশাই?”

হতভম্ব হয়ে গেলেন বৃদ্ধ লোকটি।ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে আশেপাশে তাকাতে লাগলেন।স্পর্শী আলতো পায়ে হেটে গেল সব্যসাচী রায়ের দিকে।বললো-
“এই এলাকার চেয়ারম্যান এর নাম্বার টা দিন তো আংকেল।”
কোনোরুপ বাকবিতন্ডায় না জড়িয়েই পকেটে হাত দিলেন তিনি।ছোট্ট বাটন ফোনটা চেপে স্ক্রিনে নাম্বার এনে দিয়ে দিলেন স্পর্শীর হাতে।পরপর দু’বার রিং যাওয়ার সাথে সাথেই ওপাশ থেকে রিসিভড করলেন চেয়ারম্যান। স্পর্শী নিজের কথাগুলোকে সাজিয়ে নিলো। বললো-

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

“আসসালামু আলাইকুম চেয়ারম্যান সাহেব।আমি আপনার ইউনিয়নের রুপাতলি গ্রামের রায় বাড়ি থেকে বলছি।এখানে একজন উনিশ বছরের ছেলে সুইসাইড করেছে।আরো কিছু ঝামেলা হয়েছে যেটাকে আমি ফোনে বলতে সক্ষম হবো না।আপনি কিছুক্ষণের মধ্যে এই গ্রামের মেম্বার কে নিয়ে এখানে আসবেন।”
হুট করে ফোন ধরতেই এমন তেজস্বী কন্ঠের বার্তা শুনে খানিকটা চমকে গেলেন চেয়ারম্যান। কি ঝামেলা হয়েছে সেটা জিজ্ঞেস করতেই পুনরায় স্পর্শী বললো-

“আমার জানামতে রায় বাড়ি থেকে আপনার বাড়ির দূরত্ব মাত্র ১৫ মিনিট।আশা করি শীঘ্রই আসবেন।আর না আসলে এক্ষুনি বলবেন, আমি পুলিশকে আসতে বলবো।”
কিছুটা চিন্তায় পড়ে গেলেন চেয়ারম্যান। ব্যাতিব্যস্ত কন্ঠে বললেন-
“আ আমি আধ ঘন্টার মধ্যে আসছি।”

অস্থির হয়ে আশেপাশে তাকাচ্ছে স্পর্শী।প্রায় বিশ মিনিট হয়ে গেলেও এখনো চেয়ারম্যানের টিকিটাও দেখা যাই নি।এক হাত দিয়ে শ্রাবণীর গাল ধরে নিজের দিকে ফেরালো।কন্ঠে আফসোসের সুর এনে বললো-
“তুমি বিশাল ভুল করেছো।কাজটা মোটেও করা উচিত হয় নি।যদি সম্পর্কের পূর্ণতাই না ঘটাতে পারো তাহলে জড়িয়েছিলে কেন?ছেলেটাকে আশা দেখিয়েছিলে কেন?কিছু না কিছু শাস্তি তোমাকে মাথা পেতে নিতেই হবে।”
মেয়েটা আঁতকে উঠলো।অস্থির কন্ঠে হেঁচকি তুলে বললো-

“দিদি,তুমি আমাকে বিশ্বাস করো।আমি কখনো শুভর সাথে রিলেশনে জড়াই নি। ও আর আমি তো একই ক্লাসে পড়ে।সেই হিসেবে আমরা একসাথে স্কুল কলেজে যেতাম।কিন্তু ও আমায় পছন্দ করতো।প্রেম করতে চাইতো কিন্তু আমি কখনো সাড়া দিতাম না।ও পুরো স্কুল,কলেজ এমনকি পাড়ায় পাড়ায় বলে বেড়াতো আমাদের মধ্যে সম্পর্ক আছে যাতে অন্যকেউ আমাকে পছন্দ না করে।কিন্তু বিশ্বাস করো আমি সব সময় ওকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেছি।তুমি আমার পুরো চ্যাটলিস্ট চেক করে দেখো। আমি এমন কিছুই করি নি।

ও রাত বিরেতে জ্বালাতো আমায়।জানলার কাছে এসে বসে থাকতো।টোকা মারতো।কেউ দেখলে সম্মান যাবে।সে জন্যই আমি কাল রাতে ওকে অনেক বাজে কথা বলেছি।বলেছি আমি ওকে পছন্দ করি না।অন্য আরেকজনের সাথে প্রেম করি।তাইই….
কিন্তু বিশ্বাস করো,আমি বুঝতে পারি নি ও এমনটা করবে।”

বলেই কান্নায় পুরোপুরি ভেঙে পড়লো।স্পর্শী মলিন হাসলো।শ্রাবণীর পিঠে হাত বুলিয়ে বললো-
“ব্যাস এটুকুই দরকার ছিলো। নিশ্চিন্ত থাকো।আমি থাকতে তোমার কিচ্ছু হবে না।”
এরইমধ্যে লোকজনের পায়ের আওয়াজ শোনা গেল মন্দিরের ডান দিক থেকে।চেয়ারম্যান, মেম্বার,চৌকিদার সহ এলাকার গণমান্য আরো সাত/আটজন ব্যাক্তি এসেছেন।তাদের কে দেখতেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন শুভর মা।বললেন-

“চেয়ারম্যান সাহেব,আমার ছেলে টা আর নাই।এই মাইয়া আমার ছেলেটারে খাইছে।ওই রাক্ষসী আমার ছেলেটারে মায়ায় ফালাইয়া শেষ কইরা দিছে।আমার বাবা আর কথা কয় না।ও বাবা,ওঠ। ওর থেইকা ভালো মাইয়া আইনা দিমু আমি তোর জন্য।”

ছলছল করে উঠলো স্পর্শীর চোখ।কিন্তু সে ভীষণ নিরুপায়।একজন সদ্য সন্তান হারা মায়ের সাথেই তার লড়তে হবে অন্য আরেকজনের সন্তানের জন্য।শান্ত কন্ঠে শুভর মায়ের গায়ে হাত দিলো।বললো-
“দেখুন আন্টি।শ্রাবণীর কোনো দোষ নেই। ও তো আর শুভর সাথে প্রেম ভালোবাসায় জড়ায় নি।বরং উলটো আরো আপনার ছেলেই ওকে দিনের পর দিন বিরক্ত করছে।এভাবে কাউকে এক পাক্ষিক ভালোবেসে ব্যর্থ হয়ে নিজের প্রাণ নেওয়া পুরোটাই বোকামি।এবারে আপনার সন্তানের বোকামির জন্য অন্য আরেকজনের সন্তানকে তো শাস্তি দেওয়া উচিত নয়।তাই না?”

মুহুর্তেই আশপাশ থেকে তেজী চিৎকারে চেঁচিয়ে উঠলো শুভর পিসি,কাকি,প্রতিবেশী রা।যে যার মতো পারছে স্পর্শীর বিরুদ্ধে বলতে।শুভর মাকে কিছুটা চিন্তিত দেখালো।মুখের অবয়ব হুট করেই পালটে গেল যেন সে আগেই জানতেন এই ব্যাপারে।নিজেকে সামলে স্পর্শীর বিরুদ্ধে বললো-
“সেইটা না হয় বুঝলাম।কিন্তু আমার ছেলে কোন দিক দিয়া খারাপ আছিলো।আমার ছেলেরে মাইনা নিতে ওর কোথায় সমস্যা আছিলো।ওর তো সাত রাজার কপাল আমার পোলা ওরে পছন্দ করছে।ও গাইল দিছে শুভরে।হের লাইগাই আমার পোলা ঘেনায় মরছে।ওরে তো আমি নিজে হাতে গলা টিইপ্পা মারমু।ওরে ছাড়মু না আমি।”
হুংকার ছাড়লেন চেয়ারম্যান। গলা হাকিঁয়ে বললেন-

“আমাকে এখানে কি জন্য ডাকা হয়েছে।কেউ কি বলবে এসব কি হচ্ছে?”
মুহর্তেই একজন ছুটে গিয়ে কয়েকটা চেয়ার এনে বসতে দিলেন তাদের।স্পর্শী শ্রাবণীর হাত ধরে চেয়ারম্যানের সামনে গেলেন।শান্ত কন্ঠে বললেন-

“আমি আপনাকে সবটা বলছি।এই মেয়েটাকে ওর পাশের ঘরের ছেলে শুভ রায় পছন্দ করে।দুজন কিন্তু সমবয়সীই।কিন্তু আবেগী।ছেলেটা ওকে পছন্দ করলেও মেয়েটা তাকে বরাবরই এড়িয়ে গেছে।কিন্তু যখন ছেলেটার ওই আবেগগুলোতে মেয়েটা বিরক্ত হতে লাগলো তখন তাকে খোলাখুলি বারন করে দিয়েছে।হয়তো কিছু কঠোর গালি ও দিয়েছে।যার কারনে ছেলেটা প্রত্যাখ্যান সহ্য করতে না পেরে সুইসাইড করেছে। এবারে বলুন তো আংকেল এখানে মেয়েটার কি দোষ?

তার তাকে পছন্দ না হতেই পারে।রাত বিরেতে জানালায় এসে টোকা মারা, কথা বলার চেষ্টা করায় মেয়েটা বিরক্ত হয়ে, মানসম্মানের ভয় কিছু কঠোর কথা বলে থাকলেও সেখানে নিশ্চয়ই তার দোষ হবে না?”
চেয়ারম্যান মাথা নেড়ে সায় দিলেন।সাথে সাথেই স্পর্শী পুনরায় বললো-
“এক্সাটলি।আমরা এখানে সবাই ‘ই জানি মেয়েটা এখানে নির্দোষ।কিন্তু সমাজ সেটা মানতে নারাজ।সেই সকাল হতে মেয়েটার উপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে।দেখুন আপনি।ওর চুলে হাত লাগাতে পারছিলাম না আমি যন্ত্রনায়।ওর মাথার চুল ধরে ওকে মারা হয়েছে।সারা শরীর ব্যাথায় নীল হয়ে গেছে।

বুঝলাম সদ্য ছেলে হারিয়ে তাদের মা-বাবা পাগল প্রায়।তারা এমন করতেই পারেন।এটা স্বাভাবিক।কেননা প্রত্যক্ষ ভাবে না হলেও পরোক্ষ ভাবে শুভর মৃত্যুর জন্য শ্রাবণীই দায়ী।কিন্তু তাই বলে সমাজের মানুষ,পাড়া-প্রতিবে্শী, এমনকি যিনি পূজো-আর্চনা করে থাকেন তিনিও এতটা জঘন্য বিচার কি করে করে?তাদের কোনো শাস্ত্রেও এ ধরণের শাস্তি নেই।কিন্তু ঠাকুরমশাই নিজে এই নিয়ম বানিয়েছেন।তারা চাইছিলেন শ্রাবণীকে শুভর পা দিয়ে সিঁদুর পড়াবেন।এটা মোটেও কোনো বিয়ের মধ্যে পড়বে না।কিন্তু মেয়েটার উপর সামাজিক,মানসিক,শারিরীক ভাবে প্রচন্ড প্রভাব পড়বে।ও ভেঙে গুড়িয়ে যাবে।

আমি ভেবে পাই না।মেয়েদেরকে এতোটা দুর্বল কেন ভাবা হয়।আজ এই ছেলের জায়গায় যদি শ্রাবণী বা অন্য কোনো মেয়ে থাকতো।আর সে যদি সুইসাইড করতো। তাহলে সেই ছেলেটাকে মোটেও দোষারোপ করতো না সমাজ।আর না তো শাস্তি দিতো।বরংচ,সেই মৃত মেয়েটাকে কলঙ্কীনি করা হতো।তাদের ঘর,পরিবার কে সমাজ থেকে কোনঠাসা করা হতো।কথায় কথায় অপমান করা হতো সেই বাবা- মাকে।

এমনকি সেই মৃত মেয়েটাকে সবাই এটাও বলতো যে”হয়তো পেটে অবৈধ সন্তান ছিলো,যার কারনে মুখ দেখাতে না পেরে আত্নহত্যা করেছে।বিশ্বাস করুন আংকেল কেউ তখন সমবেদনা জানাতো না। বরংচ তাদের যত ভুল সেগুলো সমাজে তুলে ধরা হতো।কিন্তু এখন দেখুন সব উলটো।এখানেও মেয়েটাকে দোষারোপ করা হচ্ছে।কিন্তু ছেলেটা একদম বীরপুরুষ। এরকম’টা কেন করা হয়?মেয়েদের কি একটুও অধিকার নেই।তাদের কি ন্যায় বিচার পেতে ইচ্ছে করে না।

আজ এই মেয়েটাকে দেখুন।ওর কারনে একটা ছেলে মারা গেছে।দোষী না হলেও শুভর মৃত্যুর কারন ও।ও কোথায় কান্না করবে,শোক করবে,নিজেকে দোষারোপ করবে এই ভেবে। কিন্তু তা না, বরং ওর এখন নিজেকে বাঁচাতে হচ্ছে সমাজের হিংস্রতার থেকে।কি নির্মম!”

আশেপাশের মানুষ জন নিরব। চেয়ারম্যান অবাক হয়ে তাকালেন।তারপর ক্ষুদ্ধ কন্ঠে বললেন-
“এসব কবে হয়েছে?আর আমাকে কেন জানানো হয় নি।কোনো বিপদ আপদ হলে তো সবার আগে আমার কাছে ছুটে যান।অথচ বিচারের সময় দেখছি আপনারাই পারদর্শী।আমাকে দরকার পড়ে না তাহলে।আর ঠাকুরমশাই,আপনি তো ভীষণ বুদ্ধিমান লোক।আপনাকে অনেকেই মানে।তাহলে আপনি নিজে থেকে কি করে এই ভুল করলেন।”

এতোকিছুর পরেও যেন ঠাকুরমশাই হার মানলেন না।ক্ষুদ্ধ কন্ঠে বললেন-
“এই মেয়ে দোষী।একে কিছুতেই এই রায় বাড়িতে রাখা যাবে না।আজকের মধ্যেই এই মেয়ে বাড়িছাড়া হবে।না হলে আমি আর এই রায় বাড়িতে পূজো করবো না।আর তুমি(স্পর্শীকে উদ্দেশ্য করে)ভোরের আলো ফোটার আগে রায় বাড়ি ত্যাগ করবে।বিধর্ম,অপয়া নারী।দ্বিতীয়বার যেন এদিকে আর পা না পরে।”
হাসলো স্পর্শী।বললো-

“সে আপনি বললেও আমি যাব।আর না বললেও যাবো।আর কি করে ভাবলেন এতো কিছুর পরেও আমি শ্রাবণীকে এই বাড়িতে রেখে যাবো।আমি জানি তো ওর কোনো নিরাপত্তা নেই।এরপর ওর বাবা-মা ওর লেখাপড়া বন্ধ করে দেবে মেয়ের নিরাপত্তার কথা ভেবে।তারপর মানসম্মানের ভয়ে কোথাও থেকে এক লোক এনে বিয়ে দিয়ে ঝামেলা সরিয়ে দেবে।কিন্তু আমি তো এসব হতে দেবনা।মাত্র এইচএসসি পরিক্ষা দিলো।ওকে আমি আমার সাথেই নিয়ে যাবো।”

পিছু ফিরে শ্রাবণীর বাবার দিকে তাকালো।বললো-
“আংকেল শ্রাবণী অনেক মেধাবী।ওকে কি আপনারা পড়াতে চান না।”
ভাঙাচোরা কন্ঠে তিনি বললেন-
“আমার অবস্থা এতটাও খারাপ নয় যে একমাত্র মেয়েকে পড়াতে পারবো না।”
মুচকি হাসলো স্পর্শী।বললো-
“ঠিক আছে।ওকে আমার পরিচিত এক কোচিং এ ভর্তি করে করে দিব।ওখানেই মেয়েদের সাথে হোস্টেলে থেকে লেখাপড়া করবে।”

অন্ধকারাচ্ছন্ন রাত।চারদিকে ভরা পূর্ণিমার জ্যোৎস্নায় ছেয়ে গেছে পৃথিবী।ঘড়ির কাঁটায় তখন মাত্র সাড়ে দশটা।আজকে প্রতিদিনের তুলনায় দ্রুতই বাড়িতে এসেছে পরশ।ঢোলা একটা ট্রাউজার আর গেঞ্জি পরে বিছানায় এলো।বালিশে মাথা দিতেই ভেসে উঠলো তখন কার ঘটনা।মুহুর্তেই চোয়াল শক্ত হয়ে গেল।পাশ ফিরে কাঁত হয়ে শুতেই কানে বাজলো পাভেলের বলা কথাগুলো।
“তোকে দেখলে আমার’ই তো ভয় করে।”

ভাবতেই দুম করে উঠে বসলো। সত্যিই কি তাকে এতটাই ভয়ংকর দেখায়।বিছানা থেকে উঠে আলতো পায়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে গেল। আলতো হাতে বড় চুলগুলো আঙুল দিয়ে পেছনে টেনে নিলো।হাত দিয়ে দাঁড়ি গুলো ছুয়ে মনে মনে বললো-

“সামান্য কিছুটা হলেও দাঁড়িগোফ ছোট করা উচিত।তার বয়সের সাথে এতটা বড় রাখা হয়তো কিছুটা বেমানান।”
ভাবনায় নিমজ্জিত থাকা অবস্থাতেই হুট করে কানে ভেসে আসলো পাভেলের কথা।দাঁত কেলিয়ে বলছে-
“এ বাবা,তুই কি এখনো সেই মেয়েটার কথা ভাবছিস।এখনো ভুলতে পারিস নি। বাই দা ওয়ে প্রেমে ট্রেমে পড়ে যাস নি তো ভাই?”

অবাক নয়নে পেছনে তাকালো পরশ।পাভেল এখনো হেসেই যাচ্ছে।ভ্রুঁ কুঁচকে অন্যদিকে তাকালো। তারপর বিরক্তির সুরে বললো-
“এখন আমি ঘুমাবো।একটুও বিরক্ত করার চেষ্টা করবি না।তুই ঘর থেকে বের হ।দরজা লাগাবো।”
এক ছুটে রুমের ভেতরে এলো পাভেল।পুনরায় হেয়ালির সুরে বললো-
“তুই এমন কেন?ভালো লেগেছে বললেই তো হয়।এমন ঢং করার কি আছে।এক্ষুণি তো দাঁড়িতে হাত দিয়ে ওই মেয়েটার কথাই ভাবছিলি।”

দাঁতে দাঁত চেপে পরশ বললো-
“আশ্চর্য!আমি ওই মেয়েটার কথা ভাবতে যাবো কেন?আমি তো তোর কথা ভাবছিলাম।”
মুহুর্তে’ই দাঁত দিয়ে জিভ কেটে পাভেল বললো-
“ছি!ছি!তুই আমার কথা ভাববি কেন?ছেলেদের ভাবনায় থাকবে মেয়েরা।তাদেরকে বাদ দিয়ে তুই আমায় নিয়ে কেন ভাবছিস ভাই। প্লিজ!বোঝার চেষ্টা কর। আমি একটা ছেলে।আমিতো…….

সাথে সাথেই পিঠের উপর দুম করে কিল বসালো পরশ।কান টেনে দরজার বাইরে বের করে বললো-
” আমার রুমের ধারে কাছেও যেন তোকে না দেখি।”
বলেই দরজা লাগিয়ে দিলো।নিজের উপর বিরক্ত হয়ে থমথমে পায়ে বিছানায় বসলো।দরজার ওপাশ থেকে পুনরায় পাভেল বললো-
“রাতে যদি ওই মেয়েটাকে নিয়ে স্বপ্নে দেখিস।তাহলে আমাকে পুরোটা খুলে বলিস।আমি তোকে স্বপ্নের পুরো অর্থ বুঝিয়ে দিবো।তুই তো আর কিচ্ছু বুঝিস না।”

“যাদের আমার গল্পটা পছন্দ হচ্ছে না তারা গল্পটা ইগনোর করবেন।কেননা,আমার কাছে আমি পুরোটাই সঠিক।এবারে আপনাদের কাছে আমি বা আমার লেখা যদি ভুল হয় তাহলে দয়া করে সেই ভুলগুলো দ্বিতীয়বার পড়তে এসে ভুল করবেন না।

রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ২

গতবারেও গল্প শুরু করার পর থেকে নায়িকার চরিত্র নিয়ে আপনাদের অনেক অসন্তুষ্টি ছিলো।এ
বারেও সেম। গত পরিচ্ছেদে যদি আমি আপনাদের সেই চরিত্রটাকেই পছন্দের করে দিতে পারি তাহলে এ পরিচ্ছেদেও আমাকে সময় দেওয়া উচিত।
যারা সময় দিতে পারবেন না তারা ইগনোর করুন।ধন্যবাদ।”

রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ৪