রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ৭

রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ৭
সিমরান মিমি

নিশিরাত।দূর থেকে শহরের বুকে কুকুরের অভিশপ্ত ডাকে বারংবার শিউরে উঠছে দেহ।জানালার এক কোনে বাতাসের গতিবেগ এসে শব্দ করছে আরো ভয়ঙ্কর ভাবে।মনে হচ্ছে জানালার বাইরে কোনো অতৃপ্ত আত্মা দাঁড়িয়ে আছে তার অপেক্ষায়।সময়ের গতিতে সে বিরক্ত হয়ে জানালার কাচ খুলতে চাইছে ক্রমশ।চমকে কাঁথার বাইরে বের হলো আর্শি।

গা ঘেমে নেয়ে একাকার হয়ে গেছে। কাঁথার উপর ফোন ফেলে অন্ধকারের মধ্যে’ই বোর্ড হাতরে ফ্যান চালালো।বিছানার মাঝখানে উপর হয়ে ব্যাঙের মতো বসে জিরিয়ে নিলো আরো কিছুক্ষণ।তারপর কাঁথার ভাঁজে পড়ে থাকা ফোন হাতে নিয়ে আবারো চেক করলো মেসেজ।নাহ,কোনো রকম রিপ্লাই আসে ওপাশের ব্যক্তির থেকে।বিরক্তিতে নাকচোখ কুঁচকে এলো তার।এ কেমন মানুষ?

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

একটা মেয়ে সেই থেকে মেসেজ দিচ্ছে অথচ রিপ্লাই তো দূর সিন ও করে নি।এতো অহংকার মোটেও ভালো না।আর্শি বইয়ে পড়েছে, “অহংকার পতনের মূল।” নিশ্চয়ই এই ব্যাটার ও পতন হবে কোনো দিন।এতো ইগো,এটিটিউট ধুলোয় গড়াগড়ি খাবে। সেদিন আর্শি দেখবে আর ইগনোর করবে।

আচ্ছা এমন কি হতে পারে না ;কোনো একদিন এই লোক আর্শির সাথে কথা বলার জন্য ছটফট করে গুমড়ে মরবে।তার একটুখানি রিপ্লাই পাওয়ার জন্য রাতের পর রাত মোবাইলের স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকবে।কাঁদবে….।মুহুর্তেই নাকচ করলো মন।না না না ধ্বনিতে প্রতিদ্বন্দীতা করে বললো,”নাহ,কাঁদবে না।কাঁদা টা মোটেও স্মার্টনেসের মধ্যে পড়ে না।এই লোক আর্শির জন্য কাঁদবে না। কিন্তু ভীষণ কষ্ট পাবে।”

কিন্তু কিভাবে?এই লোক না আর্শিকে চেনে,আর নাতো আর্শি এই লোক’কে চেনে?কি এমন বাধা পড়বে আর্শির জন্য কষ্ট করার। আচ্ছা এমন’টা হতে পারে না;যে ভুল করে এই পাভেল শিকদার নিজের ফোনে রিচার্জ করতে গিয়ে নাম্বার ভুল করে আর্শির ফোনে দিয়ে দিলো।হ্যাঁ, হ্যাঁ, হতেই পারে এমন’টা।খুব মোটা অংকের রিচার্জ করবে এই লোক।এই যেমন,পাঁচশো,একহাজার।তখন তো নিশ্চয়ই টাকা ব্যাক নেওয়ার জন্য তাকে ফোন দিবে।অনেক অনুরোধ করবে।

কিন্তু নাহ,আর্শি এই লোকের ফোন মোটেও ধরবে না,কথা বলা তো দূর।কেন ধরবে?এই লোক কি তাকে রিপ্লাই দিয়েছে?দেয় নি তো।তাহলে সে কেনো সাড়া দিবে তার কথায়?দিবে না।মোটেও সাড়া দিবে না।ভাবতে ভাবতেই মুখ চেপে ধরে হেসে ফেললো আর্শি।তার তো নিজস্ব কোনো সিম’ই নেই।মোবাইল’ই তো মায়ের সেখানে সিম রাখা তো বিলাসিতা।আর যেখানে উৎস’ই নেই, সেখানে এতো কিছু কল্পনা করা একদম কাঁঠাল গাছে পেয়ারা ফলানোর মতো।

লাস্ট বারের মতো মেসেজ এসেছে কি না চেক করে মোবাইল হাতে ত্রস্ত পায়ে বিছানা থেকে নামলো।দরজা খুলে পা চেপে চেপে মায়ের রুমের সামনে এলো।ভেড়ানো দরজা আলতো হাতে খুলে ধুকপুক হৃদয় নিয়ে সামনে এগিয়ে গেল।ফোন টা ভীষণ গরম হয়ে আছে। এই ফোন মায়ের পাশে রাখার পর যদি ভুল করে হাত এসে পড়ে ফোনের উপর;তাহলেই তো মা জেগে যাবে।দ্রুত ফ্লোরের উপর বসলো। ফোন’টাকে উলটে পালটে ঠান্ডা ফ্লোরে রুটির মতো ভাজলো কিছুক্ষণ।

কিন্তু ফলাফল শূণ্য। ফ্লোরটাও বেইমানি করছে তার সাথে।পাশের ফ্রিজের উপর হাত রেখে ঠান্ডা করে তারপর ফোন চেপে ধরছে।এ যেন জরাক্লান্ত ফোন’কে জলপট্টি দিচ্ছে।প্রায় পনের মিনিট পর বুকে অনেক সাহস নিয়ে মায়ের বালিশের নিচে ফোন রেখে দ্রুতপায়ে রুমের দিকে দিলো এক ছুট।দরজার সামনে গিয়ে ভেতরে ঢুকতে গেলে পেছন থেকে কেউ চলের বেনী ধরে টেনে ধরলো।অন্তরাত্মা উড়ে গেল আর্শির।

নিশ্চয়ই এ কোনো ভুত হবে।পেটের ভেতরে সমস্ত চিৎকার ঘুরপাক খাচ্ছে।কিছুতেই তারা কন্ঠনালী ভেদ করে বাইরে আসতে পারছে না।ভয়ে ভয়ে পেছনে তাকাতেই অন্ধকারের মধ্যে গাল চেপে ধরলো কোনো ছায়া।টেনে রুমের মধ্যে এনে লাইট জ্বালাতেই আরো ভয় পেয়ে গেল আর্শি।স্পর্শী রাগী অবয়বে এখনো তার গাল চেপে ধরে আছে।ঝাঝালো স্বরে বললো,

“এই জন্য আজ আমার সাথে ঘুমাস নি।ফোনে ধরেছে তোকে।তোর ফোন ছুটাচ্ছি আমি।”
ভয়ের চোটে কেঁদে দিলো আর্শি।নাক টেনে বললো,
“তোর পায়ে পড়ি আপু।আম্মুকে বলিস না প্লিজ।আর এমন করবো না।”
মুহুর্তেই ধমক মারলো স্পর্শী। বললো,
“এই একদম চেঁচাবি না।জিভ টেনে ছিঁড়ে ফেলবো।মায়ের যেন ঘুম ভাঙে না।চুপচাপ ঘুমাতে যা,সকালে উঠে তারপর তোকে দেখছি।”

এ যেন বাঘের হাত থেকে ছাড়া পেয়েছে আর্শি।কোনো মতে স্পর্শী বেরোতেই ভেতর থেকে দরজা আঁটকে দিলো।তারপর চেচানো স্বরে দরজার ওপাশ থেকে বললো,
“হ্যাঁ টিপছি ফোন।আমি একা কর ছি নাকি।তুই ও তো এতোক্ষণ ফোন টিপছিস।এখন চার্জ শেষ তাই বাইরে বার হইছিস।আমি কিছু বুঝি না নাকি।তোকে ফোন কিনে দিছে, এখন সারা রাত দিন তুই চালাস।আমাকে তো ফোন দেয় নাই।একটু মাঝেমধ্যে চুরী করে চালাই।তাতেও তোর এত্তো জ্বালা কেন?আমার কি কোনো অধিকার নাই, নাকি?”

দরজার উপর ধুড়ুম করে ধাক্কা মারলো স্পর্শী।চিবিয়ে চিবিয়ে বললো,
তোর সাহস থাকলে দরজা খুলে কথাগুলো বল। অসভ্যে’র বা”’চ্চা,আর একটা কথাও যেন আমি না শুনি।তাহলে কিন্তু দরজা ভেঙে এসে পিটাবো।”
এ যাত্রায় থেমে গেল আর্শি।ফ্যান ছেড়ে কাঁথা মুড়ি দিয়ে গুনগুনিয়ে কাঁদতে লাগলো ফোনের দুঃখে।তার কি কোনো অধিকার নাই?বড় বোন পাবে অথচ সে পাবে না। কেন?কেন এই বৈষম্য?

কিছুক্ষণ পর পর দরজার উপর ধড়াম করে শব্দ হচ্ছে আর সাথে শাসনের সুরে কেউ বলছে,”এই আর্শি,ওঠ।সাড়ে সাত’টা তো বেজে গেল।তাড়াতাড়ি ওঠ। আমাকে যেতে হবে।গেট আটকে দে।”
অত্যন্ত বিরক্তির সাথে চোখ দুটো খুললো।এতো শান্তির ঘুম ভাঙাচ্ছে দেখে একপ্রকার কান্না এসে গেল। মুখ ভেঙে বললো,”উফফফফ!!আম্মু,তুমি এত্তো জ্বালাও কেন আমাকে?প্রতিদিন সকাল বেলা কি এমন হয় তোমার?ভাল্লাগেনা”
বলতে বলতে খাট থেকে নামলো।রুমের জানালা খুলতেই একফালি তেজস্বী আলো এসে আক্রমণ করলো সারা মুখে।বিরক্তিতে আবারো মুখ কুঁচকে এলো।থমথম করতে করতে দরজা খুললো।আরেকটু সামনে যেতেই দেখলো মা এখনো খুন্তি নাড়ছে।মাথা বিগড়ে গেলো এবারে। রাগ নিয়ে বললো,

“তোমার তো এখনো রান্না’ই হয় নি।অথচ আমাকে এতো ডাকছিলে কেন?প্রতিদিন যাওয়া এক/দেড় ঘন্টা আগে থেকে সাইরেন বাজাতে শুরু করো।ভাল্লাগেনা।”
আলতো হাসলেন পিপাসা।আর্শি ঘুম ঘুম চোখে নাক মুখ কুঁচকে হাটতে হাটতে আবারো রুমের সামনে গেল।গতরাতের কথা মনে হতেই কাঁত হয়ে স্পর্শীর রুমের দিকে চাইলো।পুরো রুম ফাঁকা।দু পা হেটে মায়ের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো,

“আম্মু,আপু কোথায়?”
পিপাসা ব্যস্ত হাতে রান্নায় মন দিতে দিতেই বললো,”টিউশনিতে গেছে।”
“ওহ”,বলেই মায়ের রুমের দিকে এগিয়ে গেল।চার্জে থাকা ফোন টাকে হাতে ধরে মায়ের উদ্দেশ্যে বললো,” আমার আজকে কোচিং হবে কি না ;আলো কে জিজ্ঞাসা করে দেখি।”পাঁচ মিনিটেই আবার চার্জে লাগাচ্ছি মোবাইল।”মায়ের কোনো উত্তরের অপেক্ষায় না থেকেই রুমে ঢুকলো আর্শি।ফেসবুক ওপেন করতেই বুক’টা ধক করে উঠলো।সিন করেছে সেই এটিটিউট ওয়ালা ব্যাটা।কিন্তু রিপ্লাই দেয় নি।আজব!সে কি আর্শি কে অপমান করলো।নাহ, এতো মানা যায় না।ফোন হাতে দাঁত কামড়ে হেসে’ই পুনরায় গুটিগুটি অক্ষরে লিখলো,

“kamon acan?”
বানান ভুল হয়েছে দেখে জিভ কাটলো।আবারো ছোট ছোট অক্ষরে লিখলো,
“কেমন্ন আচেন?”
এবারেও তাড়াহুড়োতে ভুল করে ফেললো।মুখমন্ডলে বিরক্তি এনে লিখলো,
“ধুর!!”

মেসেজে’র টুংটাং আওয়াজে বিছানা থেকে উঠে বসলো পাভেল।ঘুম ঘুম চোখে ফোন হাতে নিয়েই মেসেঞ্জারে ঢুকলো।লিস্টে থাকা আর্শিয়া সরদার আইডি’তে ঢুকতেই মুখ চেপে হেসে ফেললো।ওদিকে ইতোমধ্যে আর্শি আরো দুই বার ভুল বানানে মেসেজ সেন্ড করলো।পাভেল ত্রস্ত হাতে তার বানানকে শুধরে লিখলো,
“কেমন আছন?” সাথে হাসির ইমোজি।
মুহুর্তে’ই ওপাশ থেকে সেকেন্ডের মধ্যে রিপ্লাই আসলো,

“আলহামদুলিল্লাহ, ভালো।কে আপনি?”
অবাক হয়ে গেল পাভেল।বললো,
“আমি কে মানে?”
“আজব তো, জিজ্ঞেস করলেন কেমন আছি।বললাম ভালো।এবারে আপনার পরিচয় বলবেন না কে আপনি?অপরিচিত মেয়েদের ‘কেমন আছেন’জিজ্ঞেস করতে লজ্জা লাগে না?”
বাকরুদ্ধ হয়ে গেল পাভেল।মস্তিষ্ক যেন সাময়িক ভাবে ফাঁকা হয়ে গেছে।ফোন হাতে কিছুক্ষণ হা হয়ে মেসেজের দিকে তাকিয়ে রইলো।কি বলা উচিত তার?এরইমধ্যে ওপাশ থেকে আর্শি আবার ও মেসেজ দিলো,”কি হলো,বললেন না তো’কে আপনি?’

“এই তুই ফোন রাখবি এখন।মুখ ধুতে যা।ঘুম থেকে উঠতে না উঠতেই ফোন নিয়ে বসেছে।দ্রুত গেট আটকা।”,মায়ের ডাক শুনতেই চমকে উঠলো আর্শি। দ্রুত হাতে টাইপ করলো,
” এই শুনুন,আমি আপনার সাথে পড়া কথা বলবো।এখন মা ডাকছে।ওকে বায়।”
পাভেল ভ্রুঁ কুঁচকে তাকিয়ে রইলো মেসেজের দিকে।”আশ্চর্য! এই মেয়েকে মেসেজ দিতে কে বলেছে।আর যেতেই বা কে বলেছে?তাঁড়ছিড়া কোথাকার।”

টানা তিন বার গেটে ধাক্কা দেওয়ার পরে ঢুলতে ঢুলতে গেট খুললো আর্শি।স্পর্শী ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিয়ে বললো,
“হুশ থাকে কোথায়?কোন রাজ্যে ছিলি?কতক্ষণ ধরে গেট ধাক্কাচ্ছি।তুই জানিস না, এখন আমি ক্যাম্পাসে যাব।”
কোনো সাড়া দিলো না আর্শি।চুপটি করে বোনের পেছন পেছন রুমে ঢুকলো।স্পর্শী বই বের করে ব্যাগের ভেতর ঢুকাচ্ছে।তারপর ত্রস্ত পায়ে রান্নাঘরে ঢুকে খাবার বেরে খেতে লাগলো।বেশ কিছুক্ষণ এপাশ ওপাশ তাকিয়ে আর্শি বললো,

“আপু,তোমার টিউশনি করিয়ে আবার ক্লাস করতে কষ্ট হয় না?সেই সকালে বের হও।দুজন কে পড়িয়ে ভার্সিটিতে যাও।আবার বিকেল থেকে রাত আট’টা পর্যন্ত চার জন কে পড়াও।এরপর আবার নিজে পড়ো।কষ্ট হয় না তোমার?”
আর্শির দিকে এক ঝলক তাকিয়ে আবারো খাওয়ায় মনযোগ দিলো। মুখের খাবার টুকু শেষ করে আস্তে ধীরে বললো,
“কলেজে যাবি না?”

“নাহ,তিনটার সময় কোচিং আছে।ওখানেই যাবো শুধু।”আর্শি আনমনে বললো।
মুহুর্তেই চট করে তার দিকে তাকালো স্পর্শী।আর্শির কোচিং পর্যন্ত খোঁজ নিয়ে ফেলেছে পিয়াশ।ব্যাপার টা মোটেও অবহেলা করা যাবে না।পরবর্তী লোকমা মুখে নিতে নিতে বললো-
এই ছেলেটা কি কখনো তোকে ডিস্টার্ব করেছে?(পিয়াসে’র ছবি দেখিয়ে)
আর্শি ছবির উপর হুমড়ি খেয়ে দেখলো।তারপর বললো,

” না তো,কেন?”
“কখনো দেখিস ও নি রাস্তায়?”-স্পর্শী আবারো বললো।
আর্শি ঠোঁট উলটে বললো,” না, কিন্তু কেন?
শান্ত হয়ে নিঃশ্বাস নিলো স্পর্শী।তার মানে তার ধারণাই ঠিক।আর্শির ব্যাপারে কারো থেকে খোঁজ নিলেও ওকে কখনো সরাসরি কোনোরকম ডিস্টার্ব করেনি।মুখকে সিরিয়াস বানিয়ে আর্শির দিকে চেয়ে বললো,

“কখনো যদি দেখিস এই ছেলে তোর পিছু নিয়েছে বা তোকে কাছে ডেকেছে;তৎক্ষনাৎ চিৎকার করে লোক জড়ো করবি।আর সবাইকে বলবি, ও তোকে ডিস্টার্ব করছিলো।আর আশেপাশে লোকজন না থাকলে ছুটে বাড়ির দিকে অথবা যেখানে লোকজন বেশী থাকবে সেদিকে যাবি।মনে থাকে যেন।আর হ্যাঁ, বিকাল থেকে আমি তোকে কোচিং এ দিয়ে আসবো।”

অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো আর্শি।বললো,
“শুধুমাত্র ডাকলেই চেঁচাবো?কিন্তু কেন?লোকটা কি সন্ত্রাস?কিন্তু দেখে তো ভীষণ হ্যান্ডসাম মনে হয়।”
বিরক্ত হলো স্পর্শী।চেঁচিয়ে বললো,
“তোকে যা বলেছি সেটা মনে রাখবি।কোনটা ভালো আর কোন’টা খারাপ সেটা তোর থেকে আমি ভালো বুঝি।একটা কথা মাথায় রাখবি” আমার মাথার উপর বাবা ছায়া নেই,আর নাতো কোনো বড় ভাই আছে।”এমন কেউ নেই যে আমাদের অগোছালো জীবনটাকে প্রটেক্ট করার জন্য ছায়া হয়ে থাকবে।স্কুল থেকে সোজা বাড়ি আসবি।কোনো বন্ধু বান্ধবীদের সাথে যেন আড্ডা দিতে না দেখি।”

কিছুটা বুঝলো আর্শি।কিন্তু বাবার কথা মনে হতেই ভীষণ মন খারাপ হলো।এই বাবা শব্দ টা সে জন্মের আগেই হারিয়েছে।চিরদিনের মতো এতিম সে।তাদের মাথার উপর কোনো ছাদ নেই।নিজেদের’ই সারাক্ষণ এই হাতদুটো উপরের দিকে মেলে ধরে নিজেদের প্রটেক্ট কর‍তে হয়।কিছুটা চিন্তিত হয়ে স্পর্শীর উদ্দেশ্যে বললো,
“কিন্তু আপু,লোকটা যদি খারাপ’ই হয় তাহলে তো তোমার আরো সাবধান হওয়া উচিত।তুমি তো রাত বিরাতে বাইরে থাকো।ও যদি তোমার কোনো ক্ষতি করে দেয়।মা’কে কি জানাবো?”

রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ৬

কিছুক্ষণ থম মেরে বসে রইলো স্পর্শী।দীর্ঘশ্বাস ফেলে কন্ঠে কাঠিন্যতা এনে বললো,
“আমার টা আমি বুঝে নিব।মাকে জানানোর দরকার নাই।তুই ঠিকমতো চলিস।আর হ্যাঁ, আমি বের হচ্ছি।গেট ভালো করে লাগিয়ে দিস।আর আমার আসতে দেরী হলে মাকে ক্যাম্পাসে যেতে,,,,,বলতে গিয়েও থেমে গেল স্পর্শী।পরক্ষণেই বললো” নাহ, আমার দেরী হবে না।এসে যাব হয়তো।

রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ৮