এই অবেলায় তুমি পর্ব ৩৫

এই অবেলায় তুমি পর্ব ৩৫
Sabihatul Sabha

নূর বাসায় এসেই শুনলো এক খুশির খবর।
সকালে শুভ্রতা ভাবি কাজ করতে গিয়ে রান্না ঘরে মাথা ঘুরে পড়ে গেছেন। ধরাধরি করে রুমে এনে মাথায় পানি দিয়ে একটু স্বাভাবিক করে ডক্টর কে কল দিলো বড় আম্মু। বাসায় কোনো পুরুষ না থাকায় বড় আম্মু নিজেই ডক্টরের কাছে নিয়ে গেলেন শুভ্রতা ভাবি কে। ওখানে গিয়ে রুদ্র ভাইয়া নিজের পরিচিত ভালো ডাক্তার দেখালো ভাবি কে।
কয়দিন ধরে নাকি মাঝে মাঝে বমি-টমি হয়,মাথা ঘুরে, কোনো কিছুর গন্ধ শুনলেই পেট আওরায়।
ডাক্তার কতগুলো টেস্ট দিলো।

টেস্ট গুলো করে। ডক্টরের চেম্বারে গেলো রুদ্র ভাইয়া।
অনেকক্ষন পর রিপোর্ট হাতে একজন নার্স এসে দিয়ে গেলো।
ডাক্তারঃ রুদ্র পেশেন্টের স্বামী কোথায়??
রুদ্রঃ ভাইয়া অফিসে আছে।
ডাক্তারঃ আর কে এসেছে সাথে??
রুদ্রঃ আম্মু এসেছে। কেনো কি দরকার শফিক ভাই বলতে পারেন আমাকে।
ডাক্তারঃ আগে মিষ্টি মুখ করাও তারপর না হয় বলছি..

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

রুদ্রের যা বুঝার বুঝে নিলো। খুশিতে ডাক্তার কে জড়িয়ে ধরে বললো। আমার আম্মু, আব্বু, ভাইয়ার জন্য এর থেকে বড় সারপ্রাইজ কি হতে পারে। ধন্যবাদ শফিক ভাই।
ডাক্তারঃ আমাকে ধন্যবাদ না দিয়ে যা কে দেওয়ার তাকে দাও। আর আমার কিন্তু মিষ্টি চাই।
ডাক্তারের কথা শুনে রুদ্র হুঁ হুঁ করে হেঁসে উঠলো।
রুদ্রঃ আজ আমি ভাইয়ার পক্ষ থেকে সবাইকে মিষ্টি খাওয়াবো।
ডাক্তারঃ না রুদ্র আমরা এই মিষ্টি খাবো না।
রুদ্রঃ কেনো??

ডাক্তারঃ আমরা খুব জলদি আঙ্কেল ডাক শুনতে চাই। ওই দিন শুধু মিষ্টি নয়, ওই দিন পেট ভরে তোমার বাসায় গিয়ে ছোট ভাইয়ের বউয়ের হাতে রান্না খেয়ে আসবো।
রুদ্র ডাক্তারের কথা শুনে মনে মনে বললো,’ সেই দিন আর মনে হয় বেঁচে থাকতে দেখবেন না ভাই…
রুদ্র ডাক্তারের ক্যাবিন থেকে বের হতেই শায়েলা বেগম চিন্তিত হয়ে ছেলের সামনে গিয়ে বললেন,’ ডাক্তার কি বললো রে রুদ্র?? বউ মা ঠিক আছে তো?? বড় ধরনের কিছু হয়নি তো??

রুদ্রঃ আস্তে আম্মু এত টেনশনের কিছু নেই। শুনো এখন আমি যেটা বলবো একদম মন দিয়ে শুনবে। লাফালাফি করবে না।
শায়েলা বেগম মনে আবার ভয় ঢুকে গেলো। উনি শুভ্রতাকে নিজের মেয়ের মতো ভালোবাসেন।
শায়েলা বেগমঃ কি হয়েছে রে রুদ্র আমাদের শুভ্রতার??
রুদ্রঃ আম্মু আমাদের পরিবারের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেতে যাচ্ছে। নতুন অতিথি আসছে। আমি চাচ্চু হতে যাচ্ছি।
শায়েলা বেগম খুবই বুদ্ধিমতী মহিলা রুদ্রের প্রথম কথাতেই তিনি বুঝে ফেলেছেন। খুশিতে বউয়ের কেবিনের দিকে দৌড়ে গেলেন।

শাশুড়ী কে এভাবে আসতে দেখে শুভ্রতা ঘাবড়ে গেলো।
শায়েলা বেগম খুশিতে কথা বলতে ভুলে গেছেন। কি বলবে না বলবে কথা সব পেচিয়ে যাচ্ছে। চৌধুরী বাড়ির প্রথম সন্তান আসতে যাচ্ছে এত খুলে রাখবে কোথায়।
রুদ্র জিসান কে কল দিয়ে বললো তারাতাড়ি বাসায় চলে আসতে।
শুভ্রতা খুশিতে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না করছে। এটা যে অধিক পরিমাণে খুশির ঠেলায় কান্না আসছে।বিয়ের তিন বছর পর অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে।
ইতি মধ্যে বাড়ির সবাই জেনে গেছে এই খুশির খবর।
কিন্তু এখনো জিসান যানে না।

জিসান বাসায় এসে দেখে সবার চোখে মুখে খুশির জলক। কাউকে কিছু না বলে মায়ের সামনে গিয়ে বললো,’ আম্মু সবাই জানুক বা না জানুক তুমি তো জানো অফিসে আমার থাকাটা কতটা জরুরি। এত বার কল দিয়ে পাগল বানিয়ে বাসায় আনার কি প্রয়োজন।
জিসান বাসায় এসেছে শুনে শুভ্রতার লজ্জা, লজ্জা লাগছে তাও রুম থেকে বের হয়ে সিঁড়িতে এসে দাঁড়িয়ে ছিলো। স্বামীর মুখে এমন বিরক্তি প্রকাশ পেয়ে আবার রুমে চলে গেলো। এই লোক কাজ ছাড়া চোখে কিছুই দেখে না। এই লোকের বিয়ে কাজের সাথে হওয়া দরকার ছিলো মানুষের সাথে না!!

শায়েলা বেগমঃ এক থাপ্পড় দিয়ে দাঁত ফেলে দিবো। এত কাজ! কাজ করতে কে বলেছে?? আজ থেকে তোর কাজে যাওয়া বন্ধ। আমাকে কাজ দেখাস তুই। শুধু কাজ নিয়ে পড়ে থাকলেই চলে না বউ বাচ্চার দিকেও নজর দিতে হয়।
জিসান অবাক হয়ে বললো,’ বাচ্চা কোথায় পেলে আম্মা। দিন দিন তোমার দেখি সৃতি শক্তি কমে যাচ্ছে।
শায়েলা বেগমঃ সারাদিন রাত বাহিরে থাকলে এমনটাই মনে হবে। ঘরের খবর রাখিস তুই? আমাদের কথা বাধ দিলাম নিজের বউটার খবর তো রাখবি।

জিসানঃ কি হয়েছে আম্মা সেটা বলো??
শায়েলা বেগম কিছু বলতে গিয়েও বললো না।
শায়েলা বেগমঃ ঘরে যা।
জিসান ওর আম্মুর এমন পাগলামি তে খুবই বিরক্ত হলো। এটা কোনো কথা কাজ থেকে এনে বলবে ঘরে যা।
শায়েলা বেগম ইচ্ছে করেই বললেন না। মায়ের মুখে শুনার থেকে নিজের বউয়ের মুখে শুনার আনন্দই অন্যরকম।
নূর মিষ্টি খেতে খেতে নিজের রুমের দিকে গেলো।

ফ্রেশ হয়ে এসে মাহি কে কল দিলো। এত বড় খুশির খবর অথচ তার বোনটা এখনো জানে না।
জিসান রুমে গিয়ে দেখলো শুভ্রতা ব্যালকনিতে। কিছু না বলে ফ্রেশ হয়ে এসে খাটে বসলো।
শুভ্রতা রুমে আসতেই ওকে কফি আনতে বললো।
শুভ্রতা চুপচাপ নিচে নামতেই শায়েলা বেগম যা বুঝার বুঝে গেলো। এই বেআক্কেল ছেলে উনার গর্ভে কিভাবে হলো??
শুভ্রতা কফি নিয়ে জিসানকে দিলো।
জিসানঃ আচ্ছা বাড়িতে কি আজকে কোনো কিছু হয়েছে??

শুভ্রতা রাগে চোখ মুখ লাল করে একটা কাগজ জিসানের হাতে ধরিয়ে দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
জিসান শুভ্রতার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। আজ সবাই ওকে এভাবে রাগ দেখাচ্ছে কেনো। কাগজের বাজ খুলে দেখলো হসপিটালের রিপোর্ট।
জিসান থম মেরে বসে আছে। মানুষ বলে অধিক দুঃখে নাকি মানুষ পাথর হয়ে যায়। আর এদিকে জিসান অধিক সুখে, আনন্দে পাথর হয়ে বসে আছে।

নূর রেলিং এ পা ঝুলিয়ে বসে আছে৷ আকাশের দিকে তাকিয়ে সারাদিনের কথা ভাবছে। আকাশের চাঁদের দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ মনে হলো একটা বাচ্চার মুখ বেসে উঠছে চাঁদয়ের সামনে। এমনিতেই নূরের বাচ্চা খুব পছন্দ।
ওর মনে হলো এমন একটা ফুটফুটে শিশু ওর ও চাই। শুভ্রতা ভাবির কোল জুড়ে ফুটফুটে বাচ্চা আসবে।ওর একটা মেয়ে বাবু থাকলে অনেক আদর করতো, ভালো বাসতো,যত্ন করে আগলে রাখতো।

পিছন থেকে রুদ্র বললো,’ রেলিং এর উপর কেনো?? নিচে নামো।
নূর শুনলো রুদ্রের কথা। নেমে গেলো।
নূর কিছু সময়ের জন্য ভুলে গেলো কালকে রাতের সেই অপ্রত্যাশিত কাহিনি।
নূরঃ কয়টা বাজে??
রুদ্রঃ ১২:৫০
নূরঃ আজ এত দেরি কেনো??

রুদ্রঃ আজ দুইটা অপারেশন ছিলো রাতে তাই। তুমি রাত বেরাতে ছাঁদে কি করো??
নূরঃ বাসায় তো আপু নেই তাই ছাঁদে সময় কাটাতে চলে আসলাম।
রুদ্রঃপড়াশোনা কি ছেড়ে দিয়েছো??
নূর কিছু বললো না। কথা বললেই কথা বাড়ে।
রুদ্র আবার বললো,’ কি হলো চুপ কেনো??
নূরঃ শুভ্রতা ভাবি প্রেগন্যান্ট!..
রুদ্রঃ তাতে সমস্যা কি..বিয়ে যেহেতু হয়েছে প্রেগন্যান্ট হওয়াটা স্বাভাবিক না..
নূরঃ হুহ্! আমারও বাচ্চা খুব ভালো লাগে।

রুদ্রঃ তাই??
নূরঃ হুম।
রুদ্রঃ কাল রাতে কোথায় ছিলে??
কাল রাতের কথা মনে হতেই লজ্জা ঘিরে ধরলো নূরকে। ছি কিভাবে এমন কাজ করতে পারলো সে।
নূর কিছু না বলে চলে যেতে নিলে রুদ্র হাত আঁকড়ে ধরে নূরের।
রুদ্রঃ আর কিছু সময় থাকো।
নূর এবারও শুনলো রুদ্রের কথা।
রুদ্র আকাশের দিকে তাকিয়ে বললো,’ নূর!!’
নূর রুদ্রের শান্ত কন্ঠে ডাক শুনে রুদ্রের দিকে তাকালো।

রুদ্রঃ তুমি চাইলে আমাদের ও একটা মিষ্টি বাবু তোমার কোলে আসতে পারে। অতীত ভুলে যাও। অতীত মনে রাখতে নেই।যে দিন অতীত ভুলে আমার কাছে আসবে শীতের রাতের চাদরের মতো করে জড়িয়ে নিবো যত্ন করে। আমি অপেক্ষায় থাকবো তুমি আমার কাছে নিজ ইচ্ছায় আসার।
অতীতের কথা বলতেই নূরের চোখ জ্বলজ্বল করে উঠলো। তারমানে রুদ্র সব জানে!..
ঠোঁটের কোনে হাসি ঝুলিয়ে নূর বলে উঠলো, ‘ আমি সব ভুলে গেছি। ওটা অতীত নয় ওটা ছিলো এক কালবৈশাখী ঝড় হঠাৎ আমার জীবনের সাথে জড়িয়ে গেলো আবার হঠাৎ আমাকে ছেড়ে অন্য কারো জীবনে জড়িয়ে গেছে।’
সামনের বাসার ছাঁদের আলোই নূরের মুখটা স্পষ্ট হয়ে আছে।

রুদ্র নূরের মুখের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,’তুমি জানো এই চোখের চিকচিক করা জল আর ঠোঁটের কোনে হাসি তোমাকে মারাত্মক মায়াবিনী লাগে। আমার দেখা সৃষ্ট সুন্দরী।’
নূর মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে তার সামনে মানুষটির দিকে, তার বরের দিকে। হা সামনের মানুষটি শুধু তার অন্য কারো কোনো অধিকার নেই। শুধু ওর অধিকার এই মানুষটির উপর।

মাহি রুমে আসতেই ফায়াজ সামনে রাস্তা আগলে দাঁড়ালো।
মাহি নিচের দিকে তাকিয়ে বললো,’ সরে দাঁড়ান। ‘
ফায়াজঃ কাল থেকে আমাকে ইগনোর কেনো করছো??
মাহিঃ আজব তো!! আমি কেনো আপনাকে ইগনোর করবো??
ফায়াজঃ তাহলে কি করছো?? সামনে পড়লে এরিয়ে যাচ্ছো। ঠিক মতো কথা বলছো না। তোমার এই নিরবতা আমাকে কষ্ট দিচ্ছে মাহি সেটা কি তুমি বুঝো..?

মাহি কিছু বলছে না। আসলে সে এমন কেনো করছে?? কাল রাতে ফায়াজ কোনো মেয়ের সাথে কথা বলেছে মনে হওয়ার পর থেকে সব কিছু এত বিরক্ত লাগছে কেনো?? এটা কেই মনে হয় স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক বলে। নারী সব কিছু সয্য করবে কিন্তু স্বামী কোনো নারীর আশেপাশে গেলেও সয্য করতে পারবে না।
ফায়াজঃ কি হলো বলো?? মাহি সব কিছু ভুলে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া যায় না? জানি তুমি আমাকে মন থেকে বা ইচ্ছে করে বিয়ে করনি। কিন্তু এখন আমরা এমন একটা বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গেছি চাইলেও বের হতে পারবো না। সব কিছু মেনে নেওয়ার চেষ্টা করো।

মাহি অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ফায়াজের দিকে খুব ইচ্ছে হলো বলতে,’ আপনি আগলে নিন না আমাকে। এত এত এত ভালোবাসা দিন যেনো আমি সব ভুলে যাই। সারাক্ষণ যেনো আপনার নামটাই মাথায় ঘুরে। এখন আমার আপনার ভালোবাসা খুব বেশি প্রয়োজন।ভালোবাসবেন আমায়? একটু ভালোবেসে আগলে নিন না। একটু জায়গা দিন না আপনার বুকে। কিন্তু না মনের কথা মনেই রয়ে গেলো মুখে আর বলা হলো না।

ফায়াজ মাহির মুখের উপর থেকে যত্ন করে চুল গুলো কানের পিছনে গুঁজে দিলো। ফিসফিস করে বললো, ‘ অন্য কাউকে ভুলতে নয়। যে দিন এই আমি টাকে মন থেকে ভালোবাসবে ওই দিন আগলে নিবো যত্ন করে নিজের বাহুডোরে। মাহি ভালো অনেক কেই লাগতে পারে কিন্তু ভালো একজন কেই বাসা যায়। আমি চাই সেই একজন টা আমি হতে।

আবির মেয়েদের মতো গাল ফুলিয়ে বসে আছে।
আদিবাঃ কি হয়েছে আপনার??
আবিরঃ জিসান ভাই বাবা হয়ে যাচ্ছে।
আদিবাঃ তো?
আবিরঃ আমি এখনো হতে পারলাম না।
আদিবা বেআক্কেল এর মতো তাকিয়ে আছে। বিয়ে হয়েছে ১৫দিন হলো। আর এই লোক বাবা হওয়ার স্বপ্ন দেখছে পরক্ষনে লজ্জায় গাল দুটো লাল হয়ে উঠলো। যেখানে আজও ওদের মধ্যে কিছুই হয়নি সেখানে বাবা হওয়ার কথা আসে কোথায় থেকে।

আবিরঃ লজ্জা পেলে হবে না। আমিও বাবা হতে চাই??
আদিবা এক পা এক পা করে রুম থেকে বেরিয়ে চলে গেলো শাশুড়ীর রুমে।
আদিবার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আবির হেসে উঠলো। আদিবার মুখের রিয়াকশন দেখে খুব মজা পেয়েছে। বেচারি লজ্জায় একদম টমেটোর মতো টকটকে লাল হয়ে গেছে।

এই অবেলায় তুমি পর্ব ৩৪

রুহি মোবাইল হাতে রেগে চিৎকার করে বলে উঠলো,’ নিজেকে কি ভাবো তুমি?? কোথায় আছো??
আদিঃ আজ থেকে ২মাস পর ডিভোর্স পেপার পেয়ে যাবে। বলেই খট করে কল রেখে দিলো।
রুহি বার বার কল দেওয়া শুরু করলো কিন্তু সিম বন্ধ।
নিচে হাঁটু গেড়ে বসে কান্নায় ভেঙে পড়লো। জীবন এত নিষ্ঠুর কেনো?? এমন কঠিন খেলা ওর সাথে কেনো খেলছে?? কোথায় পাবে এত এত প্রশ্নের উত্তর??

এই অবেলায় তুমি পর্ব ৩৬