এক মুঠো কাঁচের চুরি পর্ব ২৮

এক মুঠো কাঁচের চুরি পর্ব ২৮
Fabiha bushra nimu

মুয়াজ্জিনের আজান কানে আসতেই মেয়েরা নামাজ পড়ার জন্য কলপাড়ে ভির জামালো।কে কার আগে অজু শেষ করতে পারে।তানহা-ও এসেছে।কলপাড়ে এসে,চৈতালি আর রোকেয়া বেগমকে দেখে ভির ঠেলে তাদের কাছে গেল।

–আম্মা কখন এসেছেন।আমাকে ফোন করেন নাই কেনো?হাঁটুর ব্যথা নিয়ে আপনি দাঁড়িয়ে আছেন।
–তোমার চাচি আমাদের বসার জায়গায় করে দিয়েছিল মা।নামাজ পড়ব।তাই অজু করতে আসলাম।তোমাদের জানাতে চেয়েছিলাম।কিন্তু চৈতালি বলল তোমাদের চিন্তা না দিতে,তাই ফোন করা হয় নাই।
তানহা ভির ঠেলে সবাইকে সরে যেতে বলল।রোকেয়া বেগম বয়স্ক মানুষ।এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে ওনার কষ্ট হচ্ছে,জায়গা একটু ফাঁকা করে দিয়ে তানহা বলল।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

–আসুন আম্মা আপনি আগে অজু করে নিন।রোকেয়া বেগম অজু করতে লাগলেন।
–তানহা তোর শাশুড়ী নাকি রে।খুব ভালোবাসিস শাশুড়ীকে।
–জ্বী ভাবি আমার শাশুড়ী।পায়ের ব্যথার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না।বয়স হচ্ছে তো’।
–এভাবেই শাশুড়ীকে দেখে রেখো মা।দোয়া করি আল্লাহ তোমাকে সুখে শান্তিতে সংসার করার তৌফিক দান করুক।
–মামি আপনি এবার অজুটা করে ফেলুন।সবাই মিলে অজু করে,এক রুমে নামাজ পড়তে গেল।চৈতালি-ও নামাজ পড়তে শুরু করেছে।ভাবতেই তানহা খুশি হলো।আবিরের সাথে রিলেশনে যাবার পরে,নামাজ পড়াও ছেড়ে দিয়েছিল মেয়েটা।আল্লাহ তায়ালা এই জন্য মেয়েটাকে এতটা কষ্ট দিল।

সৃষ্টিকর্তা তো’ বলেই দিয়েছে,তুমি যাকে আমার থেকে বেশি ভালোবাসবে,আমি তাকেই তোমার থেকে দূরে সরিয়ে দিব।এবং তোমার ওপরে চাপিয়ে দিব একাকিত্বের ভয়ংকর অভিশাপ।
এজন্য পরিস্থিতি যতই খারাপ হোক না কেনো আল্লাহ তায়া’লাকে ভুলে যাওয়া ঠিক না।ভালো সময়ে আমরা আল্লাহ তায়ালাকে ভুলে যাই।খারাপ সময়ে আমরা তাকে বেশি বেশি মনে করি।আমরা তার ডাক ফিরিয়ে দিলে-ও খারাপ সময়ে তিনি আমাদের ফিরিয়ে দেন না।এজন্য নামাজটা সব সময় ধরে রাখা আমাদের জন্য আবশ্যক।

নামাজ শেষ করে সবাই উঠে চলে গেল।চৈতালি দু-হাত তুলে মোনাজাত করছে,আর অঝোরে কান্না করে যাচ্ছে।
–হে আল্লাহ।আমার অবস্থা,আমার পরিস্থিতি আমার সবকিছু আপনি জানেন,নিজের ভালোবাসার মানুষটা অন্য কারো হয়ে যাচ্ছে,এটা সহ্য করা কতটা কষ্টকর আপনি জানেন,আপনি আমাকে ধৈর্য দিন।সহ্য করার ক্ষমতা দিন।আমি আমার পরিবারের মানসন্মান রক্ষা করতে পারি।আবির স্যারের কথায় যেনো আর আসক্ত না হয়ে পড়ি।

নামাজ শেষ করে চৈতালি মায়ের পাশে বসে আছে।চুপচাপ সবকিছু দু’চোখে দেখছে।স্থির নয়নে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছে।মারিয়া এসে,চৈতালিকে নিয়ে গেল।রোকেয়া বেগম নিষেধ করলেন না।মেয়ের মন খারাপ দেখে।চৈতালি চলে যাওয়ার সাথে সাথে ইফাদ ঝড়ের গতিতে মায়ের কাছে আসলো।মাকে একটু আড়ালে নিয়ে এসে,রাগ দেখিয়ে বলল।

–আম্মু মেয়ের সাথে তোমার-ও সব জ্ঞান বুদ্ধি লোপ পেয়েছে।হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলছো।তুমি কেনো চৈতালিকে নিয়ে,এই বাসায় এসেছো।তোমার কোনো কমনসেন্স নেই।তোমার মেয়ে যদি এই বিয়ে বাড়িতে কোনো অঘটন ঘটিয়ে বসে,তার দায় কে নিবে।তুমি নিবে আম্মু।কাজটা একদম তুমি ঠিক করো নাই।আসার আগে আমাকে জানাতে পারতে।
–তুই এভাবে কথা বলছিস কেনো?চৈতালি তোর নিজের বোন হয়।ওর প্রতি তোর বিশ্বাস নেই।চৈতালি আসার আগে আমাকে কথা দিয়েছে।এ বাসায় এসে কোনো সমস্যা করবে না।মেয়েটার মন খারাপ ছিল।ভাবলাম মানুষের মধ্যে আসলে,হয়তো ভালো লাগবে।তাই এসেছি।

–তুমি ওকে নিয়ে ভালো কোনো রেস্টুরেন্টে যেতে পারতে,সুন্দর সুন্দর দার্শনিক পার্কে যেতে পারতে।বাহিরে কি মানুষ জনের অভাব পড়েছে।বেছে বেছে তোমার এই বাসায় আসতে হলো।
–তোর সমস্যা কি রে’।তুই এমন করছিস কেনো?তোর বোন ভালো থাকুক।এটা তুই চাস না নাকি বল তো’ ইফাদ।
–ইয়াদ ভাইয়ার মতো যখন মেয়েকে হারাবে।তখন বুঝবে ছেলে কেনো কথা গুলো বলেছিল।ইয়াদ ভাইয়াও বলেছিল।সে,কিছু করবে না।পেরেছো নিজের ছেলেকে বাঁচাতে।মেয়েকে হারানোর পরে তোমার হুস আসবে।আমি কিছু বললেই দোষ হয়ে যায়।কোনো অঘটন ঘটলে তার দায় তুৃমি নিবে।বলেই রাগ দেখিয়ে চলে গেল।

মারিয়া চৈতালিকে আবিরের রুমে নিয়ে আসলো।চৈতালি আবিরকে দেখেই রুম থেকে বেড়িয়ে যেতে লাগলো।মারিয়া চৈতালির পথ আঁটকে রাখলো।চৈতালি রেগে মারিয়ার গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো।মারিয়া কিছু বলতে যাবে।তার আগেই আবির হাত দিয়ে মারিয়াকে যেতে বলল।মারিয়া রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে চলে গেল।
–চৈতালি আমার ওপরে রাগ করে আছো।

–প্লিজ আমাকে যেতে দিন।আম্মু বা ভাইয়া দেখতে পেলে,অনর্থ হয়ে যাবে।
–আমি তোমাকে যেতে দিব।আঁটকে-ও রাখবো না।তুমি শুধু আমাকে কাগজটা ফিরিয়ে দাও।
–সে,আপনি আমাকে আঁটকে রাখবেন না।সেটা আমি ভালো করেই জানি।কাগজটা আমার কাছে নেই।রুমে রাখ ছিলাম।খুঁজে পাচ্ছি না।

–কাগজটা তানহার কাছে আছে।তুমি এখন তানহার রুমে যাবে।ওর থেকে কাগজটা নিয়ে চলে আসবে।
চৈতালি আবিরের কথায় পাত্তা না দিয়ে,আবিরের দু-হাত ধরে হাউমাউ করে কান্না করে দিলো।
–স্যার চলুন না আমরা,পালিয়ে যাই।এখনো সময় আছে।আপনার বিয়েটা হয় নাই।আপনাকে নিয়ে দূরে কোথাও চলে যাব।এতদূরে চলে যাব।কেউ আমাদের খুঁজে পাবে না।আপনার গোলাম হয়ে থাকবো।চলুন না পালিয়ে যাই।আপনাকে ছাড়া আমি ভালো থাকতে পারছি না।আমার দম বন্ধ আসে।নিঃশ্বাস নিতে অনেক কষ্ট হয়।ভালো থাকতে পারছি না।

–এ মেয়েকে একটা কাজের জন্য ডেকে নিয়ে আসলাম।মরা কান্না জুড়ে দিল।চৈতালি আবিরের পায়ের কাছে বসে গেছে।দুই পা জড়িয়ে ধরে কান্না করছে।দৃশ্যটা এড়ালো না বাসার লোকজনের,মুহুর্তের মধ্যেই কানাঘুষা শুরু হয়ে গেল।বাসায় এক প্রকার ছিঃ ছিঃ রোল পড়ে গেল।ইফাদ আর তানহা দৌড়ে আবিরের রুমে আসলো।চৈতালিকে আবিরের পায়ের নিচে বসে থাকতে দেখে ভির ঠেলে ভেতরে গেল ইফাদ।চৈতালিকে তুলে নিজের সবটুকু শক্তি দিয়ে কষে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো।এই প্রথম প্রাণ প্রিয় বোনের গায়ে হাত তুলল ইফাদ।

–নিজের আত্মসন্মান সবকিছু হারিয়ে ফেলছিস।এটা কেমন ব্যবহার তোর চৈতালি।এভাবে সবার সামনে আমাদের অপমান না করালে-ও পারতি।তোকে খুন করতে ইচ্ছে করছে।
–এভাবে সবার সামনে এত বড় মেয়ের শরীরে হাত দিয়েন না।বলল তানহা।
ইফাদ কোনো কথা বলল না।বোনের হাত ধরে টানতে টানতে বাসার বাহিরে নিয়ে আসলো।

–তানহা যাও ব্যাগটা নিয়ে এসো।আম্মুকেও সাথে নিয়ে এসো।এক মুহুর্ত এই বাসায় থাকবো না।তখন রাগ না দেখিয়ে কেনো যে বাসায় চলে গেলাম না।নিজের ওপরে বেশ রাগ হচ্ছে ইফাদের।তানহা একহাতে ব্যাগ আর একহাতে রোকেয়া বেগমকে নিয়ে আসলো।রোকেয়া বেগম মাথা নিচু করে আছেন।মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হচ্ছে না।ইফাদ একটা গাড়ি ডেকে বাসায় চলে আসলো।বাসায় এসে অনেক কথা শুনিয়েছে চৈতালিকে।ড্রয়িং রুমে সবাই দাঁড়িয়ে আছে।

–আম্মু তুমি বলেছিলে তোমার ভালো মেয়ে কিছু করবে না।এখন রাস্তায় বের হয়ে দেখো,সমাজের মানুষের মুখের কথা বিষের চেয়েও বেশি বিষাক্ত।আমি সমাজের মানুষের কথা পরোয়া করি না।কিন্তু আমরা এই সমাজে থাকি।সমাজের কিছু নিয়ম নিতি আছে।রাস্তায় যখন বের হব।চৈতালিকে নিয়ে দু’কথা মানুষ আমাকে বলবে,তখন আমার কোথায় গিয়ে লাগবে।
–আমার চৈতালি এমন হয়ে গেল কেনো?আমার চৈতালি এমন তো’ ছিল না।বললেন রোকেয়া বেগম।
–অনেক কথা শুনিয়েছেন।এবার একটু থামুন।মেয়েটার মাথার ওপরে চাপ পরছে প্রচুর,এতটা চাপ দেওয়া ঠিক না।বলল তানহা।তানহার কথা শেষ হবার সাথে সাথে চৈতালি উত্তর দিলো।

–তুমি তো’ খুশি হয়েছো ভাবি।তুমি তো’ এটাই চেয়েছিলে,আল্লাহ তোমার মনের আশা পূর্ণ করে দিল।আজকে আমি যেভাবে কান্না করছি।একদিন তুমিও আমার মতো কান্না করবে।আমি যতটা কষ্ট পাচ্ছি।তার থেকে দিগুন কষ্ট তুমি পাবে।কখনো ভালো থাকতে পারবে না।আল্লাহ যেনো তোমার কপাল থেকে সব সুখ কেঁড়ে নেয় ভাবি।তোমার কখনো ভালো হবে না।আমি তোমাকে কোনোদিন মাফ করবো না।তুমি চাইলে ভাইয়াকে,মাকে,আবির স্যারকে বুঝিয়ে বলতে পারতে
,তোমার কথা সবাই রাখতো।তুমি যদি সবাইকে রাজি করাতে,তাহলে প্রিয়া আপুর জায়গায় আমি থাকতাম।

আল্লাহ তোমার কোনোদিন ভালো করবে না ভাবি।মানুষের বাচ্চা হয়ে থাকলে,কখনো আমার সাথে কথা বলবে না।তুমি যতদিন এই বাড়িতে থাকবে।আমি কখনো এই বাড়িতে আসবো না।তোমরা আমাকে বিয়ে দিয়ে দাও।মরে লাশ হয়ে যাব।তবুও তোমাদের কাছে আসবো না।তোমরা আমাকে বাঁচতে দিলে না।আমার না।কিছু ভালো লাগছে না।আমার বাঁচতে ইচ্ছে করছে না।আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে।এই যন্ত্রনা আমি কিভাবে সহ্য করবো।মা’ গো মা আমি সহ্য করতে পারছি না।আমি তোমাকে কোনোদিন ক্ষমা করবো না ভাবি।আমাকে যতটা কষ্ট দিয়েছো।আল্লাহ তায়া’লা তার সাত গুন তোমাকে ফিরিয়ে দিবে।বলেই নিজের রুমে চলে গেল।চৈতালি প্রতিটি কথা তানহার কলিজায় এসে লাগছে,চৈতালির ভালো না চাইলেও পারতো।এভাবে সবার কাছে খারাপ হয়ে যেত না তানহা।

তরোয়ালের আঘাতের সুস্থতা আছে।কিন্তু কথার আঘাতের সুস্থতা নেই।হযরত আলী(রাঃ)
এই কথার আঘাতে অসুস্থা দিন দিন বেড়েই চলেছে।তানহা আর এসব কিছু নিতে পারছে না।চৈতালির আজকাল যা কথা হয়েছে।সবাই মেনেই নিতে পারছে না।

–আম্মু তুমি চৈতালির সাথে থেকো।চৈতালি-ও আবার ইয়াদ ভাইয়ার মতো ভুল করে বসে।
ইফাদের কথার মাঝেই তানহা দৌড়ে চৈতালির রুমের দিকে গেল।কি হয়েছে তা’ বোঝার জন্য ইফাদও গেল।চৈতালি আত্মাহত্যা করার জন্য সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না বেঁধেছে।সবেমাত্র গলায় ওড়না বাঁধতে যাবে।তখনই তানহা এসে চৈতালিকে ধরে ফেলে।চৈতালির গালে থাপ্পড় মেরে বলল।

–পাগল হয়ে গেছো তুমি।একটা ছেলের জন্য নিজের জীবন ত্যাগ করবে।আল্লাহর কাছে গিয়ে কি হিসাব দিবে।একটা কথা মনে রেখো চৈতালি।আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে।
–সব ভালো কেনো আমার সাথেই করে,তুমি আমার সাথে কথা বলবে না।তুমি যদি আমার সাথে কথা বলো।তাহলে তুমি তোমার স্বামীর মরা মুখ দেখবে ভাবি।বেড়িয়ে যাও আমার রুম থেকে।বলেই তানহাকে ধাক্কা দিল।তানহা পড়ে যেতে নিলে ইফাদ এসে দু-হাতে ধরে ফেলল।নিজের রাগ সংযত রেখে বলল।

–আম্মু তুৃমি তোমার মেয়ের সাথে থাকো।দেখো আমার ভুলভাল কিছু না করে।দরকার পড়লে আজকে ঘুমাবে না।জেগে থেকে মেয়েকে পাহারা দিবে।কোনো কিছুর দরকার পড়লে আমাকে ডাকবে।
–এখন বউকে বুঝ দিয়ে বউয়ের কাছে ভালো সাজতে হবে না।তাই মাকে বসিয়ে রেখে বউকে বুঝ দিতে নিয়ে যাবে।তোমার বউই তোমার কষ্টের কারন হয়ে দাঁড়াবে।যে,বউ নিয়ে এত অহংকার করছো।সেই বউই তোমাকে কথার আঘাতে টুকরো টুকরো করে ফেলবে।তোমার মনের মধ্যে কষ্টের পাহাড় গড়ে তুলবে তোমার বউ।

ইফাদ চৈতালির কথায় কোনো উওর দিল না।চুপচাপ রুম থেকে বেড়িয়ে আসলো।চৈতালিকে এখন কিছু বোঝানো আর না বোঝানো এক কথা।রোকেয়া বেগম ভয়ে মেয়েকে কিছু বলতে-ও পারছে না।
কোনোরকমে রাতটা পার হয়ে গেল।বিয়ের বাসায় আর কেউ গেল না।সন্ধ্যা বেলায় আবির বউ নিয়ে এসেছে।মাহতাব সাহেব কালকে আবিরকে অনেক কথা শুনিয়েছেন।ছেলের গায়ে হাত-ও তুলেছেন।নিজের ছেলে ফেলে-ও দিতে পারছেন না।মারিয়াকে বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছে।আবির রাস্তার মধ্যে দাঁড়িয়ে বন্ধুদের সাথে গল্প করছে।চৈতালি গাছের আড়ালে থেকে সবকিছু দেখছে।পুরো বাসাটা কি সুন্দর করে সাজানো।সবকিছু ঠিক থাকলে,আজ সে আবিরের বউ সেজে এই বাসায় থাকতো।

এদিকে চৈতালিকে বাসায় না পেয়ে সবার অবস্থা খারাপ।ইফাদ একদম পাগল হয়ে গেছে।চারিদিকে তন্ন তন্ন হয়ে খুঁজছে।রিয়াদও এসেছে।রোকেয়া বেগম কান্না করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।রিয়াদের বুদ্ধিতে চৈতালির ফোন নাম্বার ট্যাগ করে এক ঘন্টা পরে চৈতালির অবস্থান গননা করা গিয়েছে।ততক্ষণে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে।চৈতালি দুপুরে বাসা থেকে বের হয়েছে।ইফাদ অবস্থা জানা মাত্র এক মুহুর্ত দেরি করল না।আবির ফোনে কথা বলতে বলতে হঠাৎ রাস্তার মাঝখানে চলে গেল।

আবিরের বন্ধুরা আবিরকে সরে যেতে বলছে।আবির ফোনে মগ্ন হয়ে আছে।দ্রুত গতিতে একটা গাড়ি আবিরের দিকে এগিয়ে আসছে দেখে চৈতালি আর স্থির থাকতে পারলো না।গাছের আড়াল থেকে বেড়িয়ে আসলো।আবিরের পেছনে গিয়ে বলল।আবির স্যার বলেই আবিরকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল।গাড়িটা চৈতালিকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে দ্রুত গতিতে চলে গেল।চৈতালির রক্তে পুরো রাস্তা গোসল দিয়ে উঠলো।

ইফাদ চলেই এসেছিল।চৈতালিকে দৌড়ে যেতে দেখে চলন্ত গাড়ি থেকে ইফাদ লাভ দিয়েছে।চৈতালিকে আটকানোর জন্য।শেষ রক্ষা হলো না।আশেপাশে ভির জমা হয়ে গেল।আবিরের হুস আসলো।এই প্রথম মেয়েটার জন্য আবিরের খারাপ লাগছে।ইফাদ দৌড়ে চৈতালির কাছে আসলো।তড়িঘড়ি করে চৈতালিকে কোলে তুলে নিল।চৈতালির রক্তে ইফাদের শুকনো শার্টটা ভিজে গেল।

এক মুঠো কাঁচের চুরি পর্ব ২৭

আবিরও ইফাদ আর রিয়াদের সাথে আসলো।কাছের একটা হসপিটালে নেওয়া হলো চৈতালিকে।জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়েছে চৈতালিকে।ডক্টরা রক্ত জোগার করে রাখতে বলেছে।ইফাদ পুরো হসপিটাল পাগলের মতো হয়ে ঘুরছে।মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে।মুখে যত কথাই বলুক না কেনো?নিজের জীবনের থেকেও বেশি ভালোবাসে চৈতালিকে।রিয়াদ ইফাদের ফোন নিয়ে তানহাকে ফোন করে আসতে বলেছে।এখন ইফাদের পাশে তানহার থাকাটা খুবই জুরুরি।

এক মুঠো কাঁচের চুরি পর্ব ২৯