এক মুঠো কাঁচের চুরি পর্ব ৪৫

এক মুঠো কাঁচের চুরি পর্ব ৪৫
Fabiha bushra nimu

ঘড়ির কাটায় রাত দু’টো ছুঁই ছুঁই।হঠাৎ করে-ই তানহা উঠে বসলো।শরীর’টা বড্ড খারাপ লাগছে।নিজেকে আর দমিয়ে রাখতে পারলো না।ইফাদ’কে ডাকতে শুরু করল।
–এই উঠো না,আমার খুব খারাপ লাগছে।তানহা’র ডাক শুনে আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসলো ইফাদ।দু-চোখ ডলে,রুমের আলো জ্বালিয়ে দিল।তানহা’র পাশে বসে নরম কণ্ঠে বলল।

–কি হয়েছে তোমার?খুব বেশি খারাপ লাগছে?ডক্টর ডাকতে হবে।
–ডক্টর তোমার শশুর হয়।এই রাত দু’টোর সময় তোমার জন্য বসে থাকবে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

–হসপিটালে গেলে,ডক্টরের অভাব আছে।তানহা কোনো কিছু না বলে,উঠে চলে যেতে লাগলে,ইফাদ তানহা’র হাত ধরে বলল।কোথায় যাচ্ছে’?তানহা কোনো উওর দিল না।এক হাতে মুখ চেপে ধরে আছে।এক হাত দিয়ে ইফাদে’র হাত ছাড়িয়ে,নেওয়া’র চেষ্টা করছে।ইফাদ কিছু বলতে যাবে।তার আগেই তানহা হলহল করে বমি করে দিল।ইফাদে’র পা-সহ পুরো বিছানা মাখিয়ে ফেলেছ।তানহা অসহায় দৃষ্টিতে ইফাদে’র দিকে তাকালো।ইফাদ তানহা’র কপালে হাত দিয়ে দেখলো।শরীরের তাপমাত্রা একদম ঠিকই আছে।তাহলে মেয়েটা বারবার অসুস্থ হয়ে পড়ছে কেনো?ইফাদ তানহা’র মাথায় হাত রেখে বলল।

–কিছু হয় নাই পাখি।যাও তুমি চেঞ্জ করে আসো।আমি পরিষ্কার করে দিচ্ছি।
–ছিঃ তোমাকে এসব করতে হবে না।আমি করে দিচ্ছি।তুমি ফ্রেশ হয়ে এসো।
–ইফাদ রেগে গেলে,কি জানো তো’।কথা কম বলো।আর গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসো।তানহা আর কথা বাড়ালো না।এমনিতে-ই শরীরটা বড্ড ক্লান্ত লাগছে।একটা শাড়ি নিয়ে,ফ্রেশ হতে চলে গেল।

ইফাদ বিছানার চাদর তুলে,রুমের এক কোণে রেখে দিল।আলমারি থেকে নতুন একটা চাদর বের করে,
বিছানায় মেলে দিল।নিজে-ও ফ্রেশ হতে চলে গেল।তানহা রুমে এসে ইফাদ’কে দেখতে পেল না।কোনো কথা না বলে,বিছানায় উঠে শুইয়ে পড়লো।একটু পরে ইফাদ এসে তানহা’র পাশে শুইয়ে পড়লো।
–তোমার শরীর’টা এমনিতে-ই খারাপ।এই অসুস্থ শরীর নিয়ে,তুমি আমার জন্য কতটা কষ্ট করলে,আমার খুব খারাপ লাগছে।বলল তানহা।

–আমার খেয়াল রাখতে রাখতে,নিজে অসুস্থ হয়ে পড়েছো?সে,দিকে কি তোমার খেয়াল আছে।কাল’কে সকালে আমরা ডক্টরের কাছে যাচ্ছি।আম্মু’কে বলে দিয়েছি।একটা কাজের লোকের ব্যবস্থা করে দিতে,
আশা রাখছি।দু-এক দিনের মধ্যে পেয়ে যাবে।বলল ইফাদ।
–আমি কোথাও যাচ্ছি না।ডক্টরের কাছে গেলে বলবে,

এই টেস্ট করো।ঐ’ টেস্ট করো।খালি টাকার খেলা।আমার টাকা এত বেশি হয় নাই।ঔষধ খেলে ঠিক হয়ে যাব।ইফাদ তানহা’কে টেনে নিজের বুকের মধ্যে আগলে নিল।তানহা’র মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল।
–ঘুমাও।তানহা আর কোনো কথা বলল না।সে-ও ইফাদ’কে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে গেল।

পরের দিন সকাল বেলা,ইফাদের আগে ঘুম ভাঙলো।উঠে ফ্রেশ হয়ে রুমের বাহিরে আসলো।আজকে রোকেয়া বেগম,রান্না করেছেন।সেজন্য ইফাদ তানহা’কে বিরক্ত করল না।মেয়েটা অনেক দিন,ভালো করে ঘুমোতে পারে নাই।রুমে এসে,কাল রাতের কাপড় আর বিছানার চাদর নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল।সেগুলো ধুইয়ে ছাদে মেলে দিয়ে আসলো।ইফাদ’কে দেখে রোকেয়া বেগম ক্রোধিত কণ্ঠে বলল।

–আমাকে বা চৈতালি’কে বললে-ই পারতি।এই অসুস্থ শরীর নিয়ে কাপড় ধুইতে গেলি কেনো?ডক্টর তোকে ছয় মাস বেড রেস্ট থাকতে বলেছে।এক মাস-ও হয় নাই।আর তুই যা ইচ্ছে খুশি করছিস।আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে,তুই বাঁচবি।এই শরীরটা’কে আর কত কষ্ট দিবি।

–আম্মু আমি তোমাদের ছেলে বুঝছো?এত অল্প আঘাতে আমার কিছু হবে না।আল্লাহ তায়ালা আমাকে আঘাত সহ্য করার অসীম ক্ষমতা দিয়েছে।সেজন্য এতকিছুর পরে-ও বেঁচে আছি।আলহামদুলিল্লাহ।
–হয়েছে আর বড় বড় কথা বলতে হবে না।আচ্ছা ওরা যে,মেয়েটা’র বাড়িটা নিয়ে নিল।এটা নিয়ে কিছু বলবি না।ওদের কি কোনো শাস্তি হবে না।

–আম্মু আমি ভেবেছি,আমি ওদের সবার নামে মামলা করবো।এর জন্য আমার যতদুর যাওয়া লাগে,আমি যাব।
–দেখিস বাবা।বেশি কিছু করতে যাস না।নিজের ক্ষতি হয়।এমন কোনো কাজ করবি না।
–তুমি চিন্তা করো না আম্মু।আমি তানহা’কে ডেকে নিয়ে আসি।ওর শরীর’টা প্রচন্ড খারাপ যাচ্ছে,আজকে ওকে ডক্টরের কাছে নিয়ে যাব।

–আমি একটু পাশের বাসা থেকে ঘুরে আসি।বলেই রোকেয়া বেগম চলে গেল।
ইফাদ এসে তানহা’র মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে ডাকতে শুরু করল।
–বউজান উঠেন,সূর্য মামা উঠে পড়লো।এখনো আপনি উঠতে পারলেন না।আমি খাবার নিয়ে আসতে যাচ্ছি।এসে দেখি তুমি উঠে পড়েছো।বলেই ইফাদ চলে গেল।তানহা উঠে ঘড়ির দিকে তাকালো।দশটা বেজে গেছে।তানহা চোখ বড় বড় করে,ঘড়ির দিকে তাকালো।দ্রুত উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেল।ফ্রেশ হয়ে এসে দেখলো।ইফাদ খাবার নিয়ে বসে আছে।এক লোকমা ভাত মেখে তানহা’র মুখের সামনে ধরলো।তানহ এক লোকমা ভাত মুখে নিয়ে বলল।

–আমি বুঝতে পারছি না।অসুস্থ তুমি না আমি।যেখানে আমার তোমাকে সেবা করার দরকার,সেখানে তুমি আমার সেবা করছো।
–তুমি আমাকে সেবা করে সুস্থ করে তুলেছো।এখন আমি তোমাকে সেবা করে,সুস্থ করে তুলবো।খাবার সময় এত কথা বলতে হবে না।চুপচাপ খেয়ে নাও।খাওয়া শেষ হলে,আমরা ডক্টরের কাছে যাব।তারপরে দু’জন মিলে ঘুরতে যাব।
–তোমার মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে।সুস্থ থাকতে কখনো কোথাও ঘুরতে নিয়ে যাও নাই।অসুস্থ অবস্থায় ঘুরতে গিয়ে,আবার অসুস্থ হয়ে পড়ি।

–সমস্যা নেই।তুমি আর আমি অসুস্থ হয়ে পাশাপাশি শুইয়ে থাকবো।হাউ রোমান্টিক।তানহা ভ্রু কুঁচকে তাকালো।ইফাদ তানহা’র তাকানো দেখে,হেসে দিল।ইফাদে’র হাসি দেখে,তানহা-ও হেসে দিল।

তানহা আর ইফাদ গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে আছে।সময়ে’র সাথে রোদের প্রখরতা বেড়েই চলেছে।দু’জনেই ঘেমে অস্থির হয়ে গেছে।অবশেষে একটা গাড়ির দেখা মিলল।গাড়িতে উঠে,যথা সময়ে হসপিটালে এসে, পৌঁছালো।টেস্ট করিয়ে,দু’জন ঘুরতে চলে গেল।টেস্টের রিপোর্ট গুলো,ইফাদ বাসায় দিয়ে আসতে বলেছে।রিপোর্ট দিতে দেরি হবে।তাই ইফাদ গরমের মধ্যে অপেক্ষা করতে পারলো না।

পার্কের মধ্যে দিয়ে,হাতে হাত রেখে হাঁটছে তানহা আর ইফাদ।চারদিকে মানুষের কোলাহল।সবাই তার পরিবার,প্রিয়জনদের নিয়ে ঘরছে।কেউ কেউ ছবি তুলছে।তানহা আর ইফাদ-ও কিছু ছবি তুলল।শরীর খারাপ থাকায় বেশি ঘুরলো না।বাসার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে আসলো।রাস্তায় এসে ফাইয়াজে’র সাথে দেখা।ফাইয়াজ ইফাদ’কে খেয়াল করে নাই।তাসফিয়া’র সাথে দোকানে দোকানে ঘুরছে।ইফাদ ফাইয়াজ’কে উদ্দেশ্য করে বলল।

–আরে ফাইয়াজ যে,কেমন আছো তুমি?শুনলাম আমাকে খুঁজে বের করার জন্য,তানহা আর চৈতালি’কে অনেক সাহায্য করছো?তোমার কাছে ঋণী হয়ে গেলাম।আমার কাছে তোমার কিছু চাওয়া’র থাকলে,
বলবে আমি পূর্ণ করে দেওয়া’র চেষ্টা করবো।
ইফাদে’র কথা শেষ হবার আগেই,ফাইয়াজ কোনো ভনিতা না করে বলল।

–আমার চৈতালি’কে চাই।চৈতালি’কে আমার কাছে দিয়ে দাও না।খুব যত্ন সহকারে রাখবো।কখনো কষ্ট পেতে দিব না।সর্বদা ভালো রাখার চেষ্টা করবো।
ফাইয়াজে’র কথা শুনে,ইফাদে’র মুখ ফ্যাকাশে হয়ে আসলো।দীর্ঘ সময় চুপ থেকে বলল।

–আজকে যে,কথা বলেছো?দ্বিতীয় দিন যেনো আর না শুনি।একবার ভাইয়া’কে হারিয়েছি।নতুন করে আর বোন’কে হারানো’র ইচ্ছে নেই।অন্য কিছু চাওয়া’র থাকলে বলবে,আজকে আসছি।আবার পরে কথা হবে।বলেই চলে গেল।ফাইয়াজ মুখটা মলিন করে,বোনের দিকে এগোতে লাগলো।
রোকেয়া বেগম,তানহা আর ইফাদ বাসায় একসাথে কথা বলতে বসেছে।চৈতালি বাসায় নেই।অফিসে গিয়েছে।নিরবতা ভেঙে ইফাদ বলল।

–আম্মু আমি চৈতালি’র বিয়ে দিতে চাই।এখন তোমার মতামত চাই।বলল ইফাদ।
–আলহামদুলিল্লাহ।আমি তোকে আগেই বলেছিলাম।চৈতালি’কে বিয়ে দিতে,তুই আমার কথা শুনিস নাই।মেয়ের বয়স হয়েছে।এখন বিয়ে দিয়ে দেওয়ায় উত্তম।মরে গিয়ে-ও শান্তিতে থাকতে পারবো।মেয়েটার আমার একটা কুল হবে,মেয়েকে বিয়ে না দিয়ে মরলে,ভেতরে একটা অশান্তি নিয়ে মরে যাব।আমি না থাকলে আমার মেয়ের কি হবে?
–আম্মু এসব কি কথা বলছো?একটা ভালো কথা বলতে বসেছি।আর তুমি আজে-বাজে কথা বলছো?তোমার আগে আমি’ও মারা যেতে পারি?

–এখানে আলোচনা করতে বসেছো?নাকি কে আগে মারা যাবে।সে-সব নিয়ে তর্ক করতে বসেছো।বলল তানহা।
–আমার হাতে কয়টা ছেলে আছে।ইফাদ চাইলে তুই যাচাই বাছাই করতে পারিস।খোঁজ খবর নিয়ে দেখা শুরু কর।বলল রোকেয়া বেগম।

–আম্মা চৈতালি’র মতামত নেওয়া আবশ্যক।আর যাই হোক কেনো,জোর করে কখনো সংসার করা যায় না।বলল তানহা।
–চৈতালি’র কোনো মতামত নেই।আমরা যা’ বলবো।চৈতালি তাই মেনে নিবে।বলল ইফাদ।
–আমার মনে হয় তুমি ভয় পাচ্ছো।চৈতালি যদি আবার এক ভুল দ্বিতীয় বার করে বসে।আমার চৈতালি’র ওপরে বিশ্বাস আছে।চৈতালি এক ভুল বারবার করবে না।বলল তানহা।

–তুমি বুঝতে পারছো না তানহা।মানুষের মন আল্লাহ তায়ালা কখন কোন দিকে ঘুরিয়ে দিবে।তুমি নিজে-ও বুঝতে পারবে না।আল্লাহ তায়া’লা চাইলে সবকিছু পারেন।চৈতালি যদি ফাইয়াজে’র ওপরে দুর্বল হয়ে পড়ে,তাহলে কষ্ট ছাড়া কিছুই পাবে না।আমি জানি ফাইয়াজ খুব ভালো ছেলে।কিন্তু ফাইয়াজে’র বাবা মোটে-ও ভালো মানুষ না।ওদের সম্পর্ক কখনো মেনে নিবে না।পরে ইয়াদ ভাইয়া’র মতো চৈতালি’কে-ও হারাতে হবে।তা’ আমি এটা একদম-ই চাই না।যত দ্রুত পারি চৈতালি’র বিয়ে দিয়ে দিব।বলল ইফাদ।

–বিয়ে দাও।তাতে আমার কোনো সমস্যা নেই।এভাবে নিজের মতামত চৈতালি’র ওপরে চাপিয়ে দিও না।চৈতালি’র থেকে মতামত নিও।ও কি চায় এটা জেনে নিও।তাহলেই হবে।বলল তানহা।
–ইফাদ তানহা একদম ঠিক কথা বলেছে।তুই আজকে চৈতালি’র সাথে কথা বলবি।বলল রোকেয়া বেগম।
–আচ্ছা চৈতালি আসলে,চৈতালি’র থেকে মতামত নেওয়া হবে।বলল ইফাদ।কথা শেষ হলে,যে যার রুমে চলে গেল।সন্ধ্যায় চৈতালি বাসায় আসলো।দেখে মনে হচ্ছে মনটা খুব ভালো।ফ্রেশ হয়ে এসে,সবার সাথে বসলো।সবাই কেমন চুপচাপ হয়ে আছে।চৈতালি আড়চোখে সবাই’কে পরখ করে নিল।চা হাতে নিতে নিতে বলল।

–তোমরা সবাই আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?
–ভাইয়ের ওপরে তোর বিশ্বাস-ভরসা আছে চৈতালি?
–আমার ভাই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভাই।আমি আমার ভাইয়া’কে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করি।
–তোর কাউকে পছন্দ আছে।বা তুই কাউকে পছন্দ করিস।কারো প্রতি তোর কোনো দুর্বলতা আছে।
চৈতালি ভাইয়ের কথা মাথা নিচু করে ফেলল।নিম্ন স্বরে বলল না।

–আমরা ঠিক করেছি।তোর বিয়ে দিব।এখন তুই বল।তুই আমাদের পছন্দ মতো বিয়ে করবি।নাকি তোর পছন্দ মতো।তুই যেটা বলবি।সেটাই হবে।তুই কষ্ট পাবি।আমরা এমন কোনো কাজ করবো না।বলল ইফাদ।
–আমি তোমাকে কালকে বলি ভাইয়া।আজকে আমার ভালো লাগছে না।বলেই উঠে চলে গেল চৈতালি।চৈতালি’র যাওয়া’র তাকিয়ে থেকে দীর্ঘশ্বাস ফেলল ইফাদ।ইফাদ তানহা’র দিকে তাকিয়ে বলল।

–বয়স আমার এমনি এমনি হয় নাই।দেখেছো চৈতালি ফাইয়াজে’র প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছে।যেটা কোনোদিন সম্ভব না।সেটা বলে-ও লাভ হবে না।আমি চৈতালি’কে কিছুতে-ই চৌধুরী বাড়িতে বিয়ে দিব না।আমার বোনটা’কে ওরা মেরে ফেলবে।
–আচ্ছা তুমি চিন্তা করো না।তুমি কষ্ট পাবে,এমন কোনো কাজ চৈতালি কখনো করবে না।ইফাদ কিছু বলল না।

উঠে নিজের রুমে চলে গেল।চৈতালি নিজের রুমে এসে,ফোনটা হাতে নিল।বিয়ের কথা উঠতে-ই সর্ব প্রথম ফাইয়াজে’র কথা মনে হলো চৈতালি’র।মনের মধ্যে খুব করে কষ্ট অনুভব করছে।চৈতালির পরিবার চৈতালি’র কাছে বড্ড আদরের,চাইলে-ও কষ্ট দিতে পারবে না।একবার যে,কষ্ট দিয়েছে।দ্বিতীয়বার সে,কষ্ট দিতে চায় না চৈতালি।রুম থেকে বেড়িয়ে আসলো।ভাইয়ে’র রুমে এসে বলল।

–ভাইয়া আমি রাজি।তোমরা বিয়ের ব্যবস্থা করতে পারো।আমি জানি তোমরা কখনো আমার খারাপ চাইবে না।যেটা করবে আমার ভালো জন্য-ই করবে।বলেই চলে গেল।কথা গুলো বলার সময় চৈতালি’র গলা ধরে আসছিল।চোখের পানি গুলো বৃষ্টি হয়ে,ঝরে পড়ার অপেক্ষায় রয়েছে।নিজের রুমে এসে,দরজা লাগিয়ে দিল।বালিশে মুখ গুঁজে কান্না করতে লাগলো।এত কষ্ট কেনো হচ্ছে,চৈতালি নিজে-ও জানে না।হয়তো পরিবার’কে ছেড়ে চলে যাওয়ার কষ্ট,নয়তো অজানা কোনো কষ্ট।
পরের দিন সকাল বেলা চৈতালি অফিসে চলে গিয়েছে।রোকেয়া বেগম ১৭ বছর বয়সের একটা মেয়ে’কে নিয়ে আসলো।তানহা’কে উদ্দেশ্য করে বলল।

–তানহা মা ওর নাম মিনু।বাবা-মা কেউ নেই।নানির সাথে থাকে।আজ থেকে,মিনু তোমাকে কাজে সাহায্য করবে।মিনু দেখতে খুব মিষ্টি।তানহা মিনু’কে কাছে ডেকে ভালো মন্দ প্রশ্ন করতে লাগলো।রোকেয়া বেগম মিনু’কে রান্না ঘরে নিয়ে গিয়ে,কাজ বুঝিয়ে দিতে লাগলো।তানহা খাবার আর ঔষধ নিয়ে নিজের রুমে আসলো।আজকে ইফাদ ঘুম থেকে উঠে নাই।তাই তানহা খাবার নিয়ে রুমে আসলো।ইফাদ’কে তুলে ফ্রেশ হতে পাঠিয়ে দিয়ে,বিছানা গুছিয়ে দিল।তানহা বিছানায় বসে,ইফাদে’র জন্য অপেক্ষা করছে।এমন সময় কলিং বেল বেজে উঠলো।ইফাদ ফ্রেশ হয়ে আসছিল।তানহা’কে উঠতে দেখে বলল।

–তুমি বসো।আমি দেখছি।বলেই চলে গেল।দরজা খুলে দেখলো,তানহার রিপোর্ট গুলো চলে এসেছে।
–রিপোর্ট গুলো কালকে দেওয়ার কথা ছিল।দিতে এত দেরি করলেন কেনো?

এক মুঠো কাঁচের চুরি পর্ব ৪৪

–আসলে স্যার একটু সমস্যা কারনে দেরি হলো।ইফাদ কোনো না বলে,রিপোর্ট গুলো হাতে নিয়ে ভেতরে আসলো।বিছানায় বসে একটা একটা করে রিপোর্ট খুলে দেখেছে।তানহা উসখুস করছে,রিপোর্ট কি আছে।তা জানার জন্য,কিন্তু ইফাদ গম্ভীর মুখ করে রেখেছে।তা দেখে তানহার অস্থিরতা দিগুণ বেড়ে গিয়েছে।রিপোর্ট গুলো দেখে শান্ত চোখে তানহা’র দিকে তাকালো।ইফাদে’র দৃষ্টি এতটাই শান্ত ছিল।ভয়ে,
তানহা’র কলিজা ছুঁইয়ে গিয়েছে।

এক মুঠো কাঁচের চুরি পর্ব ৪৬