কুয়াশা মিলিয়ে যায় রোদ্দুরে শেষ পর্ব

কুয়াশা মিলিয়ে যায় রোদ্দুরে শেষ পর্ব
লেখায় নামিরা নূর নিদ্রা

কুয়াশা আর সাফওয়ান পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে। দু’জনের কেউই আজ কোনো কথা বলছে না। দীর্ঘক্ষণ চুপ করে থাকার পর সাফওয়ান নিজে থেকেই বলে ওঠে,

“আর কিছুক্ষণ পর আমি চলে যাব আমেরিকায় আমার পরিবারের মানুষদের কাছে। বিদায় বেলায় কিছু বলবে না আমায়?”
সাফওয়ানের দৃষ্টি সামনের দিকে। কিন্তু কুয়াশার দৃষ্টি আটকে আছে কেবল সাফওয়ানের দিকে। তার আজ অনেক কিছু বলতে ইচ্ছা করছে। তবে সে কিছু বলবে না। নিজের মনের অব্যক্ত কথাগুলোকে নিজের মধ্যেই রেখে দিতে চায় কুয়াশা।
“তুমি অনেক ভালো থেকো সাফওয়ান। আমার সব সময় তোমাকে মনে পড়বে। আমাদের একসাথে কাটানো মুহূর্তগুলো আমি সব সময় মনে রাখব।”

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

কুয়াশার কথাগুলো বার বার আটকে যাচ্ছে। সাফওয়ান তার দৃষ্টি কুয়াশার দিকে দিতেই লক্ষ্য করে সে কাঁদছে।
“এই মেয়ে কী হয়েছে তোমার? কাঁদছ কেন তুমি?”
“আমি তোমাকে খুব বেশি কষ্ট দিয়ে ফেলেছি তাই না?”
“তুমি এখনো আগের কথা ভাবছ? কুয়াশা তোমার সামনে এখন অনেক কাজ বাকি। তুমি কেন এসব ভাবছ?”

“সাফওয়ান জানো? আমিও না ভালো থাকতে চেয়েছিলাম। আমি তোমাকে ফেরাতে চাইনি। কিন্তু আমার কাছে আর কোনো পথ খোলা নেই। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যে সম্পর্ক হয় সেরকম কিছু আমি তোমাকে দিতে পারব না। তুমি তো মানুষ। তোমারো কিছু চাহিদা আছে। বৈবাহিক সম্পর্কে একজন স্ত্রী তার স্বামীকে যা যা দেয় তার কিছুই আমি তোমাকে দিতে পারব না। তোমাকে ফিরিয়ে দিয়ে আমি সবার কাছে খারাপ হয়ে গিয়েছি। সবাই বলছে যে আমি সত্যিকারের ভালোবাসার মূল্য দিতে পারি না। কিন্তু আসল সত্যিটা কেউ একবারও জানতে চাইলো না। আমিও কাউকে বলতে চাই না এসব। তোমাকেও কিছু জানতে দিব না আমি। বরাবরই আমি সবার কাছে খারাপ হয়ে এসেছি। আজ না হয় তোমার ভালোর জন্য আরো একবার খারাপ হলাম।”

আনমনে কথাগুলো ভেবে কুয়াশা সাফওয়ানকে বলে,
“আমাদের আর কখনো দেখা হবে না তাই না?”
“হয়তো!”
“শেষ বেলায় একটা কথা বলি? তুমি কিন্তু ভালো থেকো। আমার জন্য কষ্ট পেয়ো না। এমন হলে আমি আজীবন নিজের কাছেই নিজে অপরাধী হয়ে থাকব।”

“ভালো থাকব কিনা জানি না। তবে চেষ্টা করব।”
“তোমার ফ্লাইটের সময় হয়ে এলো। এবার আমাদের যেতে হবে।”
“চলে যাওয়ার আগে আমি তোমাকে কিছু দিতে চাই কুয়াশা।”
“কী?”
সাফওয়ান নিজের ব্যাগ থেকে একটা কাগজ বের করে কুয়াশার হাতে তুলে দেয়।
“কী এটা?”
“তোমার স্বপ্ন পূরণে কোথাও না কোথাও আমি থাকতে চাই। তারই প্রচেষ্টা মাত্র।”
“মানে?”

“তোমাকে বলেছিলাম না? আমাদের পুরোনো বাড়িটাকে নতুন করে সাজিয়ে সেখানে বৃদ্ধাশ্রম আর এতিমখানা তৈরি করে তোমার স্বপ্ন পূরণ করতে চাই। আসলে এটা তোমার জন্মদিনের দিনই উপহার হিসেবে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরিস্থিতি সেদিন স্বাভাবিক না থাকায় এটা তোমার হাতে তুলে দিতে পারিনি। আজও যদি না পারতাম, তাহলে আর কখনোই সম্ভব হতো না। পুরো বাড়ির কাজ শেষ। বাইরে বড়ো করে লেখা আছে ‘স্মৃতির দেয়াল’। এই নামই তো দিতে চেয়েছিলে তুমি।”
কুয়াশা অবাক নয়নে তার সামনে থাকা মানুষটাকে দেখছে। ভালোবাসলে বুঝি এভাবেই ভালোবাসতে হয়? যেখানে সীমাহীন কষ্টের মাঝেও কোনো এক জায়গায় শান্তি অনুভব করা যায়!

“আবার কাঁদছ তুমি? তোমার চোখের পানিতে এখন আমি ভেসে যাব তো।”
“তুমি এত ভাবো আমাকে নিয়ে? আমি তোমাকে এত কষ্ট দিলাম। তারপরেও?”
“কে বলেছে তুমি আমাকে কষ্ট দিয়েছ? তুমি তো আমাকে কষ্ট দাওনি। একটা সত্যি কথা কী জানো? আমি তোমাকে নিজের করে না পেয়ে ভালোই হয়েছে।”

“এমনটা কেন বলছ?”
“যাকে কখনো নিজের ভালোবাসার চাদরে মোড়াতেই পারব না তাকে কাছে পেলে যন্ত্রণা আরো বেশি হবে। তার থেকে ভালো আমি তোমাকে দূর থেকেই ভালোবাসবো।”
“সাফওয়ান!”

“অবাক হলে? আমি জানি তুমি এই কথাটা কাউকে বলোনি। ভালোবাসি তো। তাই তোমার মনের কিছু কিছু কথা বুঝতে পারি। সত্যি বলতে এমন কাছে পাওয়ার চেয়ে দূর থেকে ভালোবাসায় শ্রেয়। কী? তাই না?”
কুয়াশা কোনো উত্তর দেয় না। সাফওয়ান হেসে কুয়াশার হাতে একটা কালো গোলাপ দিয়ে বলে,
“এটাকে যত্নে রেখো।”

কথাটা বলে সাফওয়ান সামনের দিকে হাঁটতে শুরু করে। বারবার পেছন ফিরতে চেয়েও পেছন ফিরে তাকায় না সে। কী হবে পেছন ফিরে? মায়া বাড়বে। যে মায়া বাড়ানোর আর কোনো মানেই হয় না!
কুয়াশা এক দৃষ্টে সাফওয়ানের যাওয়ার পানে তাকিয়ে থাকে। মানুষটাকে আটকানোর সাধ্য আজ তার নেই। সে নিজের পরিবারের কাছে গেলে ভালো থাকবে। এই মুহূর্তে সাফওয়ানের ভালো থাকাটাই কুয়াশার কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
নিজের জীবনের ঘটনাগুলো বর্ণনা করতে করতে ষাটোর্ধ্ব একজন বৃদ্ধা হঠাৎ করেই থেমে যায়। তার পাশে বসে থাকা মানুষগুলো উৎসুক জনতার মতো প্রশ্ন করে,

“তারপর কী হলো মা?”
একমাত্র মেয়ের কথায় তিনি আবারো বলতে শুরু করেন,
“সাফওয়ান চলে যাওয়ার বছরখানেক পর তার কল আসে। এক বছর পর্যন্ত তার সাথে আমার কোনো যোগাযোগ ছিল না। সেদিন কল দিয়ে সে আমাকে বলেছিল সে বিয়ে করেছে। বিয়েটা অবশ্য পরিবারের চাপে পড়েই করেছিল। কিন্তু তার জীবনে কেউ একজন এসেছে এটা ভেবে আমি শান্তি পেয়েছি। সেদিনই তার সাথে আমার শেষ বারের মতো কথা হয়। কল কেটে দেওয়ার আগে তার থেকে প্রতিজ্ঞা করিয়ে নিয়েছিলাম যদি সে আমাকে এক মুহূর্তের জন্যও ভালোবেসে থাকে তাহলে যেন তার স্ত্রীকে পূর্ণ মর্যাদা দেয়। সে আমাকে কথা দিয়েছিল তার স্ত্রীকে সে খুব সুখে রাখবে।”

“আর কোনোদিন কথা হয়নি তোমাদের মধ্যে?”
“না। আমি চাইনি সে আমার সাথে কথা বলে তার স্ত্রীর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করুক।”
“বাবা আপনার কথা রেখেছে। আমার মা’কে পূর্ণ মর্যাদা দিয়েছে।”
হঠাৎ এমন কথায় চমকে ওঠেন বৃদ্ধা। হ্যা, কুয়াশা আজ বৃদ্ধাতে রূপান্তরিত হয়েছে। তার চুলে পাক ধরেছে। শরীরের চামড়া কুঁচকে গিয়েছে। চোখের জ্যোতি কমে এসেছে। সেই সাথে কমে এসেছে তার আয়ু। আজ সে ষাটোর্ধ্ব একজন বৃদ্ধা। তার জীবন থেকে একষট্টি বছর চলে গিয়েছে। মেয়ে ওয়ানিয়ার পাশে বসে থাকা তরুণীকে কুয়াশা জিজ্ঞেস করে,

“কে তোমার বাবা?”
“আপনি যার কথা বলছেন সেই আমার বাবা।”
“মানে? তুমি তো বলেছিলে তুমি আমার মেয়ে ওয়ানিয়ার বান্ধবী। বিদেশে পড়াকালীন তোমাদের পরিচয় হয়েছে।”
সাহিরা মুচকি হেসে উত্তর দেয়,

“হ্যা, ওয়ানিয়া আপুর সাথে আমার পড়তে গিয়েই পরিচয়। আমরা এক সাথেই থাকতাম বিদেশে। পড়াশোনার জন্য বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে থাকতে হতো আমাকে। কোনো এক ছুটির মৌসুমে আমি ওয়ানিয়া আপুকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে যাই। গল্পে গল্পে আমরা সবাই জানতে পারি আপুর মায়ের নাম কুয়াশা। বাবার তখনই সন্দেহ হয়। পরবর্তীতে বাবা নিশ্চিত হন যে এই সেই মেয়ে যাকে আপনি দত্তক নিয়েছিলেন।”
“তুমি এতদিন বলোনি কেন আমাকে যে তুমি সাফওয়ানের মেয়ে।”

“বাবার নিষেধ ছিল। বাবা মা রা যাওয়ার আগে আপনাকে একবার দেখতে চেয়েছিলেন। ওয়ানিয়া আপুর সাহায্যে ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে বাবার সেই ইচ্ছা আমরা পূরণ করি আপনার অগোচরে।”
“তুমি বাংলাদেশে কেন এলে?”
“বাবার শেষ ইচ্ছা পূরণ করার জন্য। বাবা মা রা যাওয়ার সময় আমার হাতে একটা ডায়েরি দিয়ে বলেছিল ডায়েরিটা যেন আমি আপনার কাছে পৌঁছে দিই।”

“সাফওয়ান কোথায়?”
“বাবা আর আমাদের মাঝে নেই। গত কয়েক মাস আগেই সে আমাদের ছেড়ে এই পৃথিবী ত্যাগ করে বহুদূরে চলে গিয়েছেন।”
কুয়াশা স্তব্ধ হয়ে যায়। সে বিশ্বাস করতে পারছে না, সাফওয়ান আর এই পৃথিবীতে নেই। তার সবকিছু অবিশ্বাস্য লাগছে। হঠাৎই সে অস্বাভাবিকভাবে কাঁপতে আরম্ভ করে। সাহিরা, ওয়ানিয়া আর নিহাল তার কাছে গিয়ে প্রশ্ন করে,
“মা ঠিক আছো তুমি?”

কুয়াশা মা থা নেড়ে বলে সে ঠিক আছে। কুয়াশা আলতো হাতে সাহিরাকে ছুঁয়ে দেয়। সাহিরা হেসে বলে,
“জানেন? বাবা প্রায়শই আপনাকে নিয়ে গল্প করত। আমার মা তাতে একটুও বিরক্ত হতো না। বরং বলতো, আপনার জন্য বাবা আমার মা’কে কখনো কষ্ট পেতে দেয়নি। বিয়ের দিনই নাকি বলে দিয়েছিল, আমার মনে অনেক আগে থেকেই একজন আছে। তাকে সহ আমাকে গ্রহণ করতে পারবে তো? মা অকপটে উত্তর দিয়েছিল, পারব। আসলে বাবাকে মা ভীষণ ভালোবাসত। তাই যে কোনোকিছুর মূল্যে তাকে পেতে মা রাজি ছিল। মায়ের আপনাকে দেখার খুব ইচ্ছা। মা বিশ্বাস করে আপনার জন্যই সে বাবাকে পেয়েছিল।”

কথাগুলো শুনে কুয়াশা প্রতিবারের ন্যায় দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়। অতঃপর নিহাল, ওয়ানিয়া আর সাহিরাকে উদ্দেশ্য করে বলে,
“আমি আর কতদিন বাঁচব জানি না। আজ তোমাদের কাঁধে একটা দায়িত্ব দিয়ে যেতে চাই। সাফওয়ান আর আমার স্বপ্নের এই ‘স্মৃতির দেয়াল’কে তোমরা আগলে রেখো। সাহিরা এই জায়গাটা তোমার বাবার। আমি চাই তুমিও এখানকার দায়িত্ব নাও। আমি এবার অবসরে যেতে চাই।”

ছেলে-মেয়েদের সাথে কথা বলে কুয়াশা লাঠিতে ভর দিয়ে নিজের ঘরে চলে যায়। তারপর সাফওয়ানের ডায়েরিটা খুলে পড়তে শুরু করে। পুরো ডায়েরি জুরে সে কুয়াশার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে। কুয়াশা জানে না সে আদৌও এসবের যোগ্য কিনা!
জানালা খুলে রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে সে তার এই জীবনের সমীকরণ মেলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

“পঁচিশে পা দেওয়ার পর আমার জীবনে বিশাল দায়িত্ব এসে পড়ে। প্রথমে দায়িত্ব নিলাম বয়স্ক বাবা-মা আর ছোট ছোট বাচ্চাদের একটা নিরাপদ আশ্রয় গড়ে তোলার। এরপর আহনাফ আর আর্শিয়ার খু নি দের শাস্তি দিতে নয়টি বছর কেটে গেল। ফাঁ সি র রায় না আসা পর্যন্ত আমি থামিনি। এসবের পর এলো নিহাল আর ওয়ানিয়াকে মানুষের মতো মানুষ করার দায়িত্ব। সেটাও যথাযথভাবে পালন করলাম।

এসবের মাঝে একদিন খবর পেলাম তুরাব অতিরিক্ত নেশা করার ফলে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। শেষ দেখা করতে যেদিন গেলাম সেদিন তার কান্না আমার মনকে আহত করেছে। মা রা যাওয়ার আগে সে আমার থেকে ক্ষমা চাইল। করলাম তাকে ক্ষমা৷ শুনলাম তিন্নি আপুর সংসারে নাকি প্রায় প্রায়ই ঝামেলা হয়। সর্বশেষ হলো রায়াদ। যার জন্য আমার জীবনে সহজ সমীকরণ জটিল হয়ে গিয়েছিল। আজ সে আমারই বৃদ্ধাশ্রমে বসে বসে চোখের পানি ফেলছে। যেদিন মা আমাকে সম্পূর্ণ একা করে চলে গেল না ফেরার দেশে, সেদিনই আমার কান্নাগুলো আমাকে ছেড়ে চলে গেল। সবশেষে আজ আমি একা। ভীষণ একা। এই শেষ বয়সে এসে নিজের জীবন থেকে এটুকু উপলব্ধি করতে পারলাম, আমার নামের স্বার্থকতা এখানেই।”

~আমি কুয়াশা
আমি রাতের গভীরে জন্ম নিই,
আর ভোরের আলো ফোঁটার সাথে সাথে মিলিয়ে যাই!
আমি সেই কুয়াশা,
যে সবার জীবন আলোকিত করে।
দিনশেষে একটা বাক্যে নিজেকে গড়ে তোলে,
কুয়াশা মিলিয়ে যায় রোদ্দুরে!

সমাপ্ত

বিঃদ্রঃ আসসালামু আলাইকুম। #কুয়াশা_মিলিয়ে_যায়_রোদ্দুরে এখানেই শেষ। বরাবরই ভিন্ন ধারার গল্প লিখতে আগ্রহী আমি। আমি এমন একটা গল্প লিখতে চেয়েছিলাম যে গল্পে কোনো নায়ক থাকবে না। নায়ক বিহীন গল্প লেখার চিন্তা করতেই এই থিম চলে আসে আমার মস্তিষ্কে। গল্পের ক্যারেক্টারগুলো বাস্তবে থাকলেও গল্পের শেষটা করেছি নিজের মতো করে। আচ্ছা, প্রতিটা গল্পে কেন নায়ক থাকতে হবে? নায়ক বিহীন কি কোনো গল্প হতে পারে না? এমনই একটা গল্প এটা। গল্পটা সবার মনমতো হয়নি জানি। তবে কিছুটা হলেও ভিন্ন রকম কিছু দিতে পেরেছি তো আপনাদের? যদি পারি, তবে এখানেই আমার স্বার্থকতা। পরিশেষে আমার ভুলত্রুটিগুলো মাফ করবেন। ভালো থাকবেন সবাই।

কুয়াশা মিলিয়ে যায় রোদ্দুরে পর্ব ২৯