চৈত্রিকা পর্ব ৪৮

চৈত্রিকা পর্ব ৪৮
বোরহানা আক্তার রেশমী

জমিদার বাড়িতে বৈঠক বসেছে। নীরার বাপের বাড়ির লোকজন এসেছে তাকে নিতে। নীরার সাথে সবাই কথা বলার মাঝেই চৈত্রিকা পল্লবীকে এক পাশে টেনে নিয়ে নীরার প্রেগন্যান্সির কথা বলে। পল্লবী অবাক হয়। সে জানে নীরা কেমন! তাই নীরাকে সন্দেহ করার প্রশ্নই আসে নাহ। পল্লবী ভরা বৈঠকে কথাটা তুলতেই পরিবেশ গম্ভীর হয়ে গেলো। চয়ন গম্ভীর মুখ নিয়ে বসে রইলো মেঝের দিকে তাকিয়ে। নীরা নিঃশব্দে চৈত্রিকার হাত ধরে রেখেছে। নীরার বাবা মা একটু নড়েচড়ে বসলেন। এক পলক মেয়ের দিকে তাকিয়ে চয়নকে উদ্দেশ্য করে নীরার বাবা বলেন,

‘দেখেন বেয়াই সাহেব! আমার মেয়ের বয়স কম। ওদের বিয়েরও তো যুগ যুগ পার হয়নি। আমরা শিক্ষিত পরিবারের মানুষ। এভাবে মেয়েকে কষ্ট পেতে দেখতে পারি নাহ।’
‘আমরাও চাই নাহ নীরা কষ্ট পাক। আপনাদের মেয়ে আপনারা কি করবেন তা আপনাদের ব্যাপার!’
চয়নের কথায় নীরার বাবা মা স্বস্তি পেলেও চৈত্রিকা, নীরাসহ বাড়ির বাকি লোকজন গুলো স্বস্তি পেলো নাহ। অস্থির হয়ে গেলো। অর্পিতা বার বার নীরার দিকে তাকাচ্ছে৷ নীরার মা নীরার উদ্দেশ্য বললেন,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

‘নীরা মা! তৈরী হয়ে আয়। আমরা ফিরবো!’
নীরা জবাব দিলো না তবে নিজ জায়গা থেকে সরলোও নাহ। শুধু শক্ত করে চৈত্রিকার হাত চেপে ধরে থাকলো। বড় বড় শ্বাস নিয়ে নিজেকে সময় দিলো। নীরার বাবা ভারী কন্ঠে বলে,
‘যাচ্ছো না কেনো?’

নীরা মাথা নিচু করে ছোট্ট করে উত্তর দেয়, ‘আমি যেতে চাই নাহ আব্বাজান। আমি আবার বিয়ে করতে চাই নাহ। আমি… আমার অ-অনাগত বাচ্চাকে নিয়েই বাকিটা জীবন কাটিয়ে দিতে চাই।’
নীরার কথা শুনে বেশ অবাক হয় তার বাবা মা। চৈত্রিকা ঠোঁট প্রসারিত করে হাসে। নীরার ধরে রাখা হাতটা নিজেও শক্ত করে ধরে আশ্বাস দেয়। অর্পিতা, শায়লা, পল্লবীও ভীষণ খুশি হয়। নীরার বাবা রাগী কন্ঠে বলে,
‘আব্বাজানের মুখের ওপর কথা বলা শিখেছো কবে থেকে? কে শিখিয়েছে তোমাকে এসব?’

পল্লবী মুখ খোলে। মাথার আঁচল টা আরেকটু টেনে নিয়ে শান্ত কন্ঠে বলে, ‘শিখানো কি আছে ভাইজান? মেয়ে নিজের সিদ্ধান্ত জানানোটা মুখের ওপর কথা বলা নয়। তাছাড়া ওর সন্তান আসছে তাহলে ‘ও’ তাকে বিসর্জন দিয়ে নতুন বিয়ে করবে কেনো? ওর কি নিজের সন্তানের প্রতি মায়া নাই?

নাকি আপনি আপনার সন্তানকে ভালোবাসেন আর ‘ও’ বাসে না?’
নীরার মা ক্যাটক্যাটে গলায় বলে, ‘আপনি আর আমার মেয়েকে বিগড়ে দিয়েন না বেয়াইন সাহেবা! আমার মেয়ের পুরো জীবন পড়ে আছে৷ এই সন্তান দিয়ে ওর কি হবে? আজীবন এমনি যুবতী হয়ে ঘরে পড়ে থাকবে! এতো সহজে কি আমি আমার মেয়ের জীবন ন’ষ্ট করবো! আজ আপনার মেয়ে হলে আপনি কি করতেন? রাখতে দিতেন এই বাচ্চা? যে বাচ্চার বাপ জন্মের আগেই মা’রা গেছে!’

‘আমি আমার মেয়েকে অন্তত তার বাচ্চা বিসর্জন দিতে বলতাম না। ওর মতামত নিতাম। ওর ইচ্ছেকে সম্মান করতাম। তাও যদি হয় এমন বুঝদার, লক্ষী একটা মেয়ে তাহলে কোনো কথা-ই নেই।’
পল্লবীর শান্ত গলার কথা শুনে মহিলা মুখ বাঁকালেন। চয়ন ধমকে থামিয়ে দেয় পল্লবীকে। নীরার মা উঠে নীরার কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। বাহু চেপে ধরে বলে,

‘চলো! তৈরী হবে তুমি।’
নীরা যাবে নাহ। চৈত্রিকা নীরার বাহু থেকে হাত সরিয়ে দেয়। নীরার মা ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই চৈত্রিকা হেঁসে বলে, ‘নীরা বুবু যখন যেতে চায় না তখন তো আপনি উনাকে নিয়ে যেতে পারবেন না আম্মা!’
নীরার মা ফুঁসে উঠলেন। রেগে গলা উচু করে বললেন, ‘তুমি বলার কে? আমি আমার মেয়েকে নিয়ে যাবো নাকি রেখে যাবো তা আমাদের ব্যাক্তিগত বিষয়। ছাড়ো তুমি ওকে! আর ভাই সাহেব! আপনি থাকা অবস্থাতে বাড়ির বউরা কথা বলে কেমন করে?’

চৈত্রিকা কিছু বলার আগেই চয়ন এবার ধমকে দেয়। দাঁতে দাঁত চেপে বলে, ‘দুজন যদি আর একটাও শব্দ করেছো তাহলে ভালো হবে নাহ।’
কথা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই নীরার মা চৈত্রিকার হাত নীরার থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে সিড়ির দিকে টেনে যেতে নেয়। নীরা বার বার ‘না’ বলতে থাকে। চৈত্রিকা এগিয়ে গিয়ে কিছু বলার আগেই সদর দরজার কাছ থেকে প্রহরের ভারী, গম্ভীর কন্ঠ কানে আসে। নীরার মা সহ সবাই সেদিকেই তাকায়। প্রহর ভরাট গলায় বলে,

‘আমাদের বাড়ির বউ যেতে না চাইলে আপনি জোড় করে নিয়ে যেতে পারবেন না। অতএব উনার হাত ছাড়ুন!’
নীরার মায়ের হাত আলগা হয়ে যায়। এতক্ষণ প্রহর ছিলো না বলেই তিনি এতো বড় বড় কথা বলতে পেরেছেন। কারোরই অজানা নয় প্রহর সম্পর্কে। জমিদার বাড়ির বড় ছেলে সবার কাছে আতঙ্ক। যতটা ভালো, বুদ্ধিমান ততটাই নি’কৃষ্ট হয় এরা। প্রহর সরাসরি এসে বসে পড়ে চয়নের পাশে। চয়নের দিকে না তাকিয়ে নীরার বাবাকে সরাসরি প্রশ্ন করে,

‘নীরার বিয়ে দিতে চান ভালো কথা! ওর অনুমতি নিয়েছেন?’
নীরার বাবা ভ্রু কুঁচকে উত্তর দেয়, ‘ওর অনুমতি কেনো নিতে হবে? ‘ও’ আমার মেয়ে। ওর বিষয়ে সব ধরনের সিদ্ধান্ত আমি নিতে পারি।’
‘বলা শেষ? আসতে পারেন!’

নীরার বাবা অবাক হয়ে বসা থেকে দাঁড়িয়ে পড়ে। চৈত্রিকা হা করে তাকায় প্রহরের দিকে। প্রহর স্বাভাবিক। যেনো সে খুবই সাধারণ একটা কথা বলেছে। নীরার বাবা রেগে চয়নকে বলে,
‘জমিদার বলে যা তা! বাড়িতে বসিয়ে অ’পমান করে তাড়াবেন! বড়দের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় এটুকু শিক্ষাও নেই?’
চয়ন কপাল কুঁচকালেন। সে বরাবরই মানুষের কথা সহ্য করতে পারে নাহ।

তাই ছেলেকে চুপ না করিয়ে চুপচাপ বসে রইলেন। ভাবটা এমন ‘প্রহর যা করছো তা ঠিক! পারলে ঘা’ড় ধা’ক্কা দিয়ে বের করে দে!’ নীরার বাবা চয়নের গা ছাড়া ভাব দেখে আরো রেগে গেলেন। নীরাকে ফের যাওয়ার কথা বললেন। নীরা শুধু ভেজা নয়নে তাকিয়েছিলো। সে এই বাড়ি থেকে বের হওয়ার সাথে সাথেই তার সন্তানের অস্তিত্ব যে দুনিয়া থেকে মিটে যাবে তা সে হাড়ে হাড়ে জানে। তাই না গিয়ে উল্টো দু পা পিছিয়ে যায়। নীরার বাবা মা রেগে বেড়িয়ে গেলেন। প্রহরের ওপর বিশাল ক্ষো’ভ জন্মালো তাদের। নীরা কান্না চেপে নিজের ঘরে চলে যায়। চৈত্রিকা এক পলক প্রহরের দিকে তাকায়। প্রহরের দৃষ্টি তখন মেঝেতে। চৈত্রিকা আর অর্পিতা দুজনেই নীরার পিছু যায়।

নীরা ঘরে এসে কান্না শুরু করে। হাজার হলেও উনারা তার বাবা মা ছিলেন কিন্তু এটা ছাড়া তারও তো কোনো উপায় ছিলো নাহ। অর্পিতা আর চৈত্রিকা ঘরে এসে নীরাকে কাঁদতে দেখে দুজনে দু পাশে বসে। অর্পিতা আলগোছে নীরার চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে বলে,

‘কাঁদবেন না মেজো ভাবীজান। সব ঠিক হয়ে যাবে। দেখবেন উনারাও ঠিক এই বাচ্চাটাকে স্বাভাবিক ভাবে নিবে।’
নীরা নিঃশব্দে কাঁদে। চৈত্রিকা নীরার থুতনীতে হাত রেখে মুখটা উপরে তোলে। শান্ত কন্ঠে বলে, ‘কাঁদছেন কেনো বুবু্? আজ যা করেছেন তা তো সব মেয়ে পারে নাহ। ক’জন পারে নিজের সুখ বিসর্জন দিয়ে সন্তানকে আঁকড়ে ধরতে!’
অনেকক্ষণ বুঝিয়ে দুজনে নীরাকে স্বাভাবিক করে। নীরা একটু স্বাভাবিক হয়ে দুজনের দিকে কৃতজ্ঞতার দৃষ্টিতে তাকায়। চৈত্রিকার হাত নিজের হাতের মুঠোয় এনে চৈত্রিকার চোখে চোখ রেখে বলে,

‘মেয়ে হলে চৈত্রিকা বানাবো আর ছেলে হলে প্রহর রেনওয়াজ! যে অ’ন্যায়ের সঙ্গী না হয়ে অ’ন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলবে।’
নীরার ঠোঁটে প্রশান্তির হাসি। অর্পিতাও হাসে। চৈত্রিকা হাতের মুঠো থেকে নিজের হাত দিয়ে নীরার দু হাত আঁকড়ে ধরে। শীতল কন্ঠে আওড়ায়,
‘নিজে আগে চৈত্রিকা হন বুবু! তারপর দেখবেন ছেলে মেয়ে একাই চৈত্রিকা নয়তো প্রহর হয়ে উঠবে।’

ইদানীং নাসিমা ঘর থেকে বের হয় নাহ। মনের মাঝে একটা ভয় ঢুকে গেছে। সেই আতঙ্ক থেকেই চৈত্রিকাকে দেখলে তার পা’গল পা’গল লাগে। বার বার বলতে থাকে ‘আমাকে মা’রিস নাহ!’ এইসব কিছুর জন্যই সে আর ঘর থেকে বের হয়,নাহ। খেতে পারে না, ঘুমাতে পারে না। সবসময় মনে হয় ‘এই তো চৈত্রিকা! তাকেই মা’রার জন্য ধেয়ে আসছে তলোয়ার হাতে!’ তখনই মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা শুরু করে। নাসিমার অদ্ভুত ব্যবহার দুদিন লক্ষ্য করেছিলো চৈত্রিকা কিন্তু বিষয়টা বুঝতে পারেনি। তাই নীরাকে রেখে ঘরে আসার সময় এক বার নাাসিমার ঘরে উঁকি দেয়। সেখানে নাসিমা মাথা চেপে বসে আছে। চৈত্রিকা ঘরে ঢুকে ছোট্ট করে ডাকে,

‘মা!’
নাসিমা লাফিয়ে ওঠে। চট করে তাকায় দরজার দিকে। আঁতকে উঠে সরে যায়। বার কয়েক ফাঁকা ঢোক গিলে বিড়বিড় করে বলে, ‘আসবি না চৈত্র। আমাকে মা’রবি নাহ। আমি মা হই তোর!’
একই কথা সে বেশ কয়েকবার আওড়ায়। চৈত্রিকা শুধু তাকিয়ে দেখে। নাসিমার পা’গলামি বেড়ে যায়। চৈত্রিকা বের হওয়ার আগে শুধু এটুকুই বলে,
‘এগুলো তোমার পা’পের শা’স্তি! তবে আরো অনেক বাকি।’

এরপর চুপচাপ চলে আসে নিজের ঘরে৷ এক মিনিট এক মিনিট করে রাত বাড়ে। প্রহর আসে। তবে একটাবারও চৈত্রিকার দিকে তাকায় নাহ। চৈত্রিকার দিকে তাকালে তার ভেতরটা হাহাকার করে। যে মেয়ের মুখে জমিদার সাহেব শুনলে সে শান্তি পেতো! যে চোখের দিকে তাকালে ভালোবাসা খুঁজে পেতো এখন তার চোখে তাকাতে ভয় হয়। ভালোবাসাময় দুটি চোখে ঘৃ’ণা! চৈত্রিকা প্রহরকে দেখলো।

সন্তর্পণে তাকে এড়িয়ে যাওয়াটাও দেখলো! শুধু দেখা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ রইলো। ঘড়ির কাটা ঘুরতে ঘুরতে গভীর৷ রাত হলো। চৈত্রিকা তখনো চেয়ে আছে। প্রহরের দিকে তাকিয়ে দেখে প্রহর ঘুমে। সে আস্তে করে প্রহরের কাছে এগিয়ে আসে। মুখটা এগিয়ে প্রহরের কপালে ছোট্ট করে চুমু এঁকে দেয়। কাঁপা কাঁপা হাতে প্রহরে গাল দুটো আগলে নিয়ে নিজে কিছুক্ষণ মাথাটা ঠেকিয়ে রাখে প্রহরের কপালে। চোখের কোণা বেয়ে এক ফোটা জল গড়ায়। মাথা সরিয়ে এনে প্রহরের বুকে রাখে। প্রহরের গায়ের গন্ধ শুঁকে নিয়ে ভাঙা ভাঙা ভাবে আওড়ায়,

‘আমি আর পারছি না জমিদার সাহেব। আপনি নেশার মতো টানেন কেনো? বোঝেন না কেনো আপনার চৈত্র বাঁচতে পারছে না? অ’পরাধবোধে ভেতরটা ক্ষ’য় হয়ে যাচ্ছে। সাথীকে হারানোর পর আমার আর বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করে না জমিদার সাহেব। আপনি কেনো আগেই ওই জা’নো’য়া’রটা কে শা’স্তি দিলেন না? কেনো দিলেন না জমিদার সাহেব!’
ফুঁপিয়ে উঠে নিজেই নিজের মুখ চেপে ধরে। নিজেকে সামলে ফের বলে, ‘আমাকে বাঁচান জমিদার সাহেব! আমি ম’রে যাচ্ছি! আমি তো আপনার থেকে মুক্তি চাইনি। তবুও কেনো বার বার আপনার থেকে সরে যাওয়ার সময় হয়? আমি তৃষ্ণায় ম’রে যাচ্ছি। আমাকে একটু ভালোবাসুন না!’

চৈত্রিকা চুপ করে যায়। নিঃশব্দে কেঁদে যায়। কি করবে আর কি করবে না ভাবলেই তার পা’গল পা’গল লাগে। সাথীর মৃ’ত্যুর পর তার নিজেকে দো’ষী মনে হয় বেশি। এতো কিছু করেও, এতো চেষ্টা করেও সে প্রহরের থেকে সরতে পারে নাহ। তার কান্নার মাঝেই পিঠে হাতের ছোঁয়া পায়। প্রহর শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে। এক ফোঁটা ঠান্ডা কিছুর স্পর্শ পায় কাঁধে!

হাত পু’ড়ে যাওয়ায় অর্থির সারা রাত জ্বর ছিলো। নিবিড় সারারাত একটুও ঘুমায়নি। অর্থির মাথার কাছে বসে ছিলো। মেয়েটা ঘোরের মধ্যে বার বাার প্রহরকেই স্মরণ করছিলো। অর্থির এই অবস্থা দেখে নিবিড় চিন্তিত হয়ে পড়ছে। এখানে অর্থিকে রেখে যাওয়াটা যে যুক্তিযত নয় তা সে বুঝে গেছে। কিন্তু করবে টা কি সে? নিপা বেগম সকাল থেকে চেচাচ্ছেন। অর্থি পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছে আর নিপা বেগম সব কাজ করছেন! বিষয়টা মানতে পারছে নাহ। চেঁচামেচিতে বিরক্ত হয়েই নিবিড় এগোয় রান্নাঘরের দিকে। সেখানে শামীম আহমেদ নিপা বেগমকে থামানোর চেষ্টা করছেন। এক পর্যায়ে তিনি বিরক্ত হয়ে তেঁতো গলায় বললেন,

“সমস্যা ডা কি তোমার? মাইয়াডার লগে এমন করো ক্যান? তুমি কি ভুইলা যাও ওয় জমিদারের মাইয়া! তুমি যে ওর লগে এমন করো! ওয় যদি বাপ ভাইরে কইয়া দেয় তাইলে আমাগো শু’লে চড়াইবো!’
নিপা বেগম চোখ মুখ কুঁচকে জবাব দেন, ‘ওই মাইয়া রে আমার সহ্য হয় নাহ। আমার পোলাডারে ফা’সাইয়া বিয়া করছে! ওয় যা বোকা তাতে বাড়িত কিছুই কইবো না। নিশ্চিত থাহো!’

‘তোমার পোলা কোথাকার কোন রাজপুত্তুর যে ওর ফা’সাাইয়া বিয়া করা লাগবো?’
নিপা বেগম উত্তরে শামীম আহমেদ আর অর্থিকে যা তা শুনিয়ে দিলেন। এই অ’ত্যা’চা’র সে থামাবে না তা ঢের বুঝে গেলো নিবিড়। কোনো কথা না বলে সরাসরি নিজেদের ঘরে গিয়ে এক টানে অর্থিকে শোয়া থেকে তুলে দেয়। অর্থি ঘুম ঘুম চোখে অবুঝের মতো তাকায়। নিবিড় শক্ত কন্ঠে বলে,
‘এক্ষুণি তৈরী হও! তোমাকে তোমার বাপের বাড়ি দিয়ে আসবো!’

চৈত্রিকা পর্ব ৪৭

(আসসালামু আলাইকুম। ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আমি এসএসসি পরীক্ষার্থী না ভাই🤦‍♀️ কোচিং এ এক্সাম ছিলো ওটার কথা-ই বলা হয়েছিলো। এই অসময়ের জ্বরে পড়েছি। ২ দিন থেকেই জ্বরে আমি শেষ। আজ একটু কমেছে তাই দিয়েছি। আপনাদেরই শুধু শেষ হওয়ার তাড়া নেই! আমারও আছে। এ মাসের শেষে এক্সাম। তাার আগেই শেষ করতে হবে আমার। আমি আরো বেশি টেনসড! যায় হোক আজ রিচেক দেওয়া হয়নি। একটু মানিয়ে নিবেন! দুঃখিত।)

চৈত্রিকা পর্ব ৪৯