ডাক্তার ম্যাডাম পর্ব ৪৬

ডাক্তার ম্যাডাম পর্ব ৪৬
মুমতাহিনা জান্নাত মৌ

মানুষের জীবন বড়ই বৈচিত্র্যময়। কার জীবনে কখন কি ঘটবে কেউ বলতে পারবে না।
নোমান আর তানিশা কখনোই ভাবে নি তারা সারাজীবনের জন্য দুইজনের হয়ে যাবে।অন্যদিকে তন্নি কখনোই ভাবে নি বান্ধুবীকে ঠকানোর ফলে তার জীবন টা এমন ছন্নছাড়া হবে।যদিও তার দ্বিতীয় স্বামী ইকবাল যথেষ্ট ভালো একজন মানুষ তবুও তাকে সারাজীবন শুনতে হবে তার দুই টা বিয়ে হয়েছে।আর সে ইকবালের দ্বিতীয় স্ত্রী।
অন্যদিকে তায়েব চৌধুরী আর মালিহা চৌধুরীর এতো বছর পর দেখা হওয়া টা সবচেয়ে বেশি আশ্চর্যের। তারা কখনোই কল্পনা করে নি আবার তারা একসাথে সংসার করতে পারবে।

একসময় যে আমান তানিশার জন্য পাগলামি করেছিলো আজ সে শিরিন কে বিয়ে করে অতীতের সেই আবেগ সম্পূর্ণ ভুলে গেছে।সে আর ভুল করেও তানিশার কথা মনে করে না।
জিসান অন্য কোনো মেয়েকে বিয়ে করবে বলে প্রেমিকা নীলাকে ঠকাতে চাইছিলো।কিন্তু তার ভাগ্য তাকে এমন ভাবে বেঁধে দিলো যে জিসান চাইলেও আর নীলাকে ঠকাতে পারবে না।কারণ নীলার পেটে যে তারই সন্তান।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

আর সবচেয়ে অবাক করা দুইজন চরিত্রের মানুষ হলো শিলা আর সিফাত।যারা প্রচন্ড ভাবে কাউকে ভালোবেসেও তাদের মনের মানুষ কে পেলো না।শিলা নোমানকে ভালোবেসে তো নিজের মূল্যবান জীবন টাই শেষ করতে চাইছিলো।
অন্যদিকে সিফাত তানিশাকে একতরফাভাবে দশটি বছর ভালোবেসেও নিজের জীবনের বিন্দুমাত্র ক্ষতি করে নি।বরং সে ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিয়েছে সব।সে জানে ভাগ্যে যা লেখা আছে তা ব্যতীত সে বিন্দুমাত্র বেশি কিছু পাবে না।
শিলা আর সিফাত আদৌ কি তাদের অতীত ভুলে নতুন কোনো সম্পর্কে জড়াতে পারবে এটাই এখন দেখার পালা।

তবে এটা ঠিক যে শিলার মধ্যে অনেক পরিবর্তন এসেছে।সে আর নোমানকে মিস করে না।কারন যে তার নয় তার কথা সে কেনো ভাববে?এই কৃতিত্ব টা সম্পূর্ণ সিফাতের পাওয়া উচিত।কারণ সিফাত তাকে শিখিয়েছে যে ভালোবাসলেই কি তাকে পেতে হবে?কিছু ভালোবাসা অপূর্ণ থাকাই ভালো। যে যাকে ভালোবাসতো তাকেই যদি পেয়ে যেতো তাহলে তো দুনিয়ায় ভালোবাসা বলতে কোনো শব্দই থাকতো না।মানুষ ভালোবেসে ব্যর্থ হয় দেখেই ভালোবাসার আজ এতো মূল্য।

জিসান আর নীলার বিয়ের প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে।
তবে তানিশা আর নোমান ঘরের মধ্যে বসে গভীর চিন্তায় মগ্ন আছে।তারা কিছুতেই একটা অংক মেলাতে পারছে না।এজন্য দুইজন মিলে চিন্তা করতে লাগলো কিভাবে এর সমাধান করা যায়?অবশেষে তারা অংক টা সমাধান করতে সফল হয়েও গেলো।

তাদের অংক টা হলো শিলা আর সিফাতকে নিয়ে।যে করেই হোক এক দুইটাকে তাদের মিলাইতেই হবে।শিরিন বলবে শিলাকে আর তানিয়া বলবে সিফাতকে।এর ফলাফল কি হতে পারে নোমান আর তানিশার আর তর সইছে না।
সেইজন্য নোমান আর তানিশা তাদের রুমের মধ্যেই থাকলো।তারা এখন পর্যন্ত বিয়ে বাড়িতে যায় নি।হঠাৎ দুইজন দুইজনার অজান্তেই একে অপরের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেলো।স্বামী স্ত্রীর মধ্যকার এই পবিত্র তম ভালোবাসা যেনো দুনিয়ায় সবকিছুর ঊর্ধ্বে। এই ভালোবাসার সত্যি কোনো তুলনা হয় না।ভালোবাসা সত্যি সুন্দর!

তানিশা?নোমান?এই তোরা কি আজ ঘর থেকে বের হবি না?বিয়ে বাড়িতে যাবি কখন?শিরিন আর আমান বার বার ফোন করে আসতে বলছে।আমরা কিন্তু রেডি হয়েছি।
তানিশা মিসেস মালিহা চৌধুরীর ডাক শুনে নোমান কে বললো, ছাড়ুন এখন।উঠতে হবে আমাকে।মা ডাকছে তো।
নোমান তখন তানিশাকে আরো জোরে জড়িয়ে ধরে বললো, মা জানে, এখন ওনার ছেলে কাজে ব্যস্ত আছে।সো নো ডিস্টার্ব!এখন শুধু ভালোবাসার সময়।

তানিশা সেই কথা শুনে জোর করেই নোমান কে সরিয়ে দিয়ে বললো,ভুল কথা বললেন আপনি।এখন ভালোবাসার সময় নয়,এখন বিয়ে বাড়িতে যাওয়ার সময়।এই বলে তানিশা দরজা খুলে বাহিরে চলে গেলো।
আর মালিহা চৌধুরী কে বললো, মা!আপনি আর বাবা চলে যান।আমরা একটু পড়ে আসছি।
মালিহা চৌধুরী আর তায়েব চৌধুরী সেই কথা শুনে চলে গেলো।তবে তাহমিনা গেলো না।সে বললো সবাই চলে গেলে বাসায় থাকবে কে?এভাবে সবার বাসা ছেড়ে যাওয়া ঠিক হবে না।

তানিশা মেরুন কালারের একটা জামদানী শাড়ি পড়লো।বিয়ে বাড়ি বলে কথা।সেজন্য আজ একটু ভালোভাবেই সাঁজগোজ করলো সে।লম্বা চুল গুলো ছেড়ে দিয়ে শুধু কানের দুই সাইটে দুইটা করে ক্লিপ মেরে দিলো।যাতে চুলগুলো বার বার সামনে না আসে।অন্যদিকে নোমান হোয়াইট কালারের একটা শার্ট আর জিন্সের প্যান্ট পড়ে নায়কদের মতো হয়ে তানিশার সামনে এসে দাঁড়ালো।নোমানকে বেশ হ্যান্ডসাম লাগছিলো দেখতে।কিন্তু নোমানের ভাব বেড়ে যাবে দেখে তানিশা আর মুখে কিছু বললো না।তবে মনে মনে বললো মাশাল্লাহ! আমার ডাক্তার সাহেব আসলেই সুন্দর।

তানিশা কে চুপচাপ থাকা দেখে নোমান বললো,কেমন লাগছে তোমার হাজব্যান্ড কে?
তানিশা সেই কথা শুনে বললো, রোজ যেমন লাগে আজও তেমনি লাগছে।
নোমান তখন বললো,একটুও চেঞ্জ লাগছে না?
“না,লাগছে না।চলেন এখন।এই বলে নোমান তানিশার হাত ধরে রুম থেকে বের হলো।
নোমান তখন বললো,তানিশা তোমাকে কিন্তু পেত্নীর মতো দেখা যাচ্ছে।
তানিশা সেই কথা শুনে নোমানের হাত ছেড়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে গেলো।আর বললো, কি? আমাকে ভালো লাগছে না?সত্যি পেত্নির মতো লাগছে?

নোমান তখন বললো, আগে সত্যি কথা বলো আমাকে কেমন লাগছে?তারপর বলবো তোমাকে কেমন লাগছে।
তানিশা তখন বললো, ওকে।জোর করেই প্রশংসা শুনতে চাচ্ছেন তো?তাহলে বলেই দিচ্ছি।আপনাকে
বেশ হ্যান্ডসাম লাগছে।
নোমান সেই কথা শুনে বললো, তাহলে এখন হ্যান্ডসাম জামাই এর কি করা উচিত?
–কি?

নোমান তখন তানিশার কাছে এগিয়ে আসতে লাগলো আর বললো,তোমাকে না আজ একদম অপ্সরাদের মতো লাগছে।তোমার দিকে আজ সারাক্ষণ শুধু তাকিয়ে থাকতেই ইচ্ছে করছে।আমার সুন্দরী লক্ষ্ণী বউ টা।এই বলে নোমান তানিশাকে কিস করতে ধরলো।
তানিশা তখন বললো হইছে হইছে আর প্রশংসা করতে হবে না।তা না হলে আবার অঘটন ঘটে যেতে পারে।
এই বলে তানিশা গাড়িতে গিয়ে বসলো।

বিয়েটা ঘরোয়াভাবে হচ্ছে বিধায় নিকটতম আত্নীয় দের শুধু ইনভাইট করা হয়েছে।নীলাদের পরিবারের সবাইকে জিসানের বাসাতেই আনা হয়েছে।কারণ বিয়ে জিসানের বাসায় হচ্ছে।
হঠাৎ সিফাত বললো,ডাক্তার ম্যাডাম!আপনাদের দুইজনার একটা ছবি তুলি?
–হ্যাঁ হ্যাঁ।কেনো নয়?

সিফাত ছবি তুলছে আর বলছে আমাকে যে কেনো ডাকলে তোমরা?আমি কার ছবি তুলবো সেটাই তো বুঝছি না।
আর এটা কোনো বিয়ে বাড়ি হলো?কোনো আয়োজনই নাই।কেমন যেনো নীরব নীরব লাগছে চারপাশে।আর বিয়ে বাড়িতে মিউজিক না বাজলে কি ভালো লাগে?

হঠাৎ শিলা আসলো সেখানে।সে সিফাতকে দেখে অনেক বেশি অবাক হলো?কারণ তার বিশ্বাসই হচ্ছে না সিফাতও এসেছে।কারণ সে তো ইনভাইট করে নি সিফাতে কে।তবে শিলা সিফাতকে ইনভাইট করতে চাইছিলো কিন্তু যেহেতু বাহিরের কোনো রিলেটিভদের ইনভাইট করা হয় নি সেজন্য সে ও আর কিছু বলে নি সিফাতকে।
সিফাত তানিশা আর নোমানের ছবি তোলার পর শিলাকে বললো দেখি তোমার কয়েকটা ছবি তুলি।এই বলে সিফাত শিলার ছবি তুলতে লাগলো।

অন্যদিকে তানিয়া তানিশার কানে কানে বললো,আমি কিন্তু সিফাতকে এখনো কিছু বলি নি।তুই বল।আমার কেনো জানি সাহস হলো না।অন্যদিকে শিরিন নোমানকে বললো, আমিও কিন্তু শিলাকে কিছু বলি নি।কিভাবে বলবো বুঝতে পারছি না।
নোমান সেই কথা শুনে বললো,বাহঃ খুব ভালো হয়েছে।এখন জিসান আর নীলার বিয়ে পড়ানো হবে।আর তোমরা ওদের কে এখনো বলোই নি।তা বলবে টা কখন?আমি তো ভেবেছিলাম আজ একসাথে দুইজোড়া বিয়ে হবে।
তানিশা তখন বললো, নোমান তুমি শিলাকে গিয়ে বলো।আর আমি সিফাতকে গিয়ে বলি।আমরা ছাড়া এই সমস্যার সমাধান আর কেউ করতে পারবে না।

তানিশার কথা শুনে নোমান শিলাকে বললো, শিলা!একটু এদিকে আসবে?
শিলাকে নোমান ডাকা দেখে সিফাত বেশ অবাক হলো।কিন্তু কিছু বললো না।শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতে লাগলো।অন্যদিকে শিলা নিজেও ভীষণ অবাক।নোমান তাকে আবার একাকি ভাবে কি বলবে?
–কি হলো?এসো?

শিলা সেই কথা শুনে চলে গেলো নোমানের সাথে।
তানিশা এবার সিফাত কে বললো,তুমি ওভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?তুমি আমার সাথে এসো।
সিফাত সেই কথা শুনে বললো কেনো?
তানিশা তখন বললো এসোই আগে।সিফাত এবার চলে গেলো।
নোমান শিলাকে কোনো সংকোচ ছাড়াই সরাসরি জিজ্ঞেস করলো,তুমি কি সিফাত কে পছন্দ করো?
শিলা সেই কথা শুনে বললো হঠাৎ এ কথা?
নোমান তখন বললো, এটা রেপিড ফায়ার চলছে।সরাসরি উত্তর দাও।
শিলা তখন বললো, হ্যাঁ।

নোমান সেই কথা শুনে বললো তাহলে আমি সবাইকে বলছি কিন্তু।আজকেই তোমার সাথে সিফাতের বিয়ে হবে।
শিলা তখন বললো, না।এক্ষুনি না।কথাটা শুধু আমার আর আপনার মধ্যে থাকবে।কারণ আমি আরো কিছুদিন সময় নিতে চাই।দেখতে চাই এটা ভালো লাগা,না ভালোবাসা?এতো তাড়াতাড়ি আমি ভালোবাসার বন্ধনে নিজেকে জড়াতে চাই না নোমান।
–ওকে।তোমার যতদিন মন চায় তুমি সময় নাও।

অন্যদিকে তানিশা সিফাতকে বললো, তুমি বিয়ে কেনো করছো না?
সিফাত সেই কথা শুনে হাসতে হাসতে বললো যেভাবে বলছো মনে হয় বিয়ের জন্য মেয়ে রেডিমেড পাওয়া যায়।
–ইচ্ছা করলেই পাওয়া যায়।যদি তুমি রাজি থাকো আমি ঘটকালি করতে পারি।
সিফাত সেই কথা শুনে বললো তাই নাকি ম্যাডাম?তাহলে এ তো আমার অনেক বড় সৌভাগ্য।
তানিশা তখন হঠাৎ করেই বললো আচ্ছা তোমার শিলাকে কেমন লাগে?
–শিলা,,,,মানে বুঝলাম না।

“না বোঝার কি আছে?তুমি যে শিলাকে পছন্দ করে ফেলছো তা কিন্তু আমি বুঝে ফেলছি।
সিফাত তানিশার প্রশ্নের কোনো উত্তর দিলো না।
তানিশা তখন বললো ওকে।ধীরে সুস্থে সিদ্ধান্ত নিও।এতো তাড়াহুড়োর কিছু নাই।
নোমান আর তানিশা এবার একসাথে হয়ে বললো,দুইজন দুইজনরেই পছন্দ করে।বাট বোঝা যাচ্ছে তারা একটু সময় নিতে চায়।
জিসান আর নীলার বিয়ে ভালোভাবেই সম্পন্ন হলো।এবার নীলার ফ্যামিলির লোকজন তাদের বাড়ি চলে যাবে বলে রাস্তায় বের হলো।
কিন্তু হঠাৎ আমান আকবরকে বললো,আপনি আগেই যাবেন না।আমার সাথে থানায় যেতে হবে আপনাকে।

–থানায়।কিন্তু কেনো?
আমান তখন বললো প্রয়োজন আছে বিধায় নিয়ে যাচ্ছি।
আকবর সেই কথা শুনে চিল্লায়ে বললো আমি কি চোর না ডাকাত যে আমাকে থানায় যেতে হবে?
আমান এবার কোনো কথা না বলে আকবরকে জোর করেই গাড়িতে ওঠালো।
ওদিকে মালিহা শুধু বলছে কি হয়েছে বাবা?আকবর কি করেছে?
আমান মালিহার প্রশ্নের কোনো উত্তর দিলো না।

আমান এবার সোজা তাদের বাসায় চলে গেলো।আর তাহমিনা চৌধুরী কে বললো ফুপি!মাফ করবে আমাকে।কিন্তু কিছুই করার নাই আমার।তোমাকে আমার সাথে থানায় যেতে হবে।
তাহমিনা সেই কথা শুনে বললো তোরা কিন্তু আমাকে অযথায় সন্দেহ করছিস আমান।
আমান সেই কথা শুনে বললো তুমি এতো ভয় পাচ্ছো কেনো ফুপি?তুমি তো কোনো অন্যায় করো নি।
তাহমিনা সেই কথা শুনে বললো আগে ভাই বাসায় ফিরুক।তারপর যাবো তোর সাথে।
আমান সেই কথা শুনে বললো লিমা আর মিরা তাড়াতাড়ি এসো বাসার মধ্যে।আর মিসেস তাহমিনা চৌধুরী কে নিয়ে যাও।
তাহমিনা সেই কথা শুনে বললো, আমান!এবার কিন্তু খুব বাড়াবাড়ি হচ্ছে।

আমান তখন বললো এটা আমার ডিউটি মিসেস তাহমিনা চৌধুরী। এখন তুমি আমার ফুপি নও।আর আমিও তোমার ভাতিজা না।এই বলে আমান গাড়িতে গিয়ে বসলো।
আকবর আর তাহমিনা কেউই সত্য টা স্বীকার করতে চাইছিলো না।তারা দুইজনই শুধু বলছে তারা মালিহাকে বাসা থেকে উঠে নিয়ে যায় নি।তখন আমান চিৎকার করে বললো,স্টপ।দুইজনই চুপ হয়ে যাও।আমি সাক্ষী প্রমান যোগাড় না করেই কি ধরে নিয়ে এসেছি তোমাদের।
চাচা!এদিকে এসো।

একজন বয়স্ক লোক রুমে প্রবেশ করলো।ইনি সেই লোক যিনি মালিহা আর আকবরকে তিন বেলা খাবার দিয়ে এসেছেন রুমে।সেই চাচাকে খুঁজে বের করেছে আমান।এই চাচাই সব সত্যি বলে দিয়েছে।তাহমিনা আর আকবর প্লান করেই এই কাজটা করেছে।তাহমিনা মালিহা কে তার ভাই এর জীবন থেকে এমন ভাবে সরাতে চাইছিলো যাতে করে তার ভাই সারাজীবন তাকে শুধু ঘৃনায় করে।অন্যদিকে আকবর মালিহাকে তার জীবনে আবার ফেরত নিতে চাইছিলো।সে ভেবেছিলো মালিহার নামে এসব কুৎসা রটালে সে হয় তো আবার আকবরের জীবনে ফিরে আসবে।কিন্তু মালিহা আর আকবরকে গ্রহন করে নি।আকবর মালিহার পিছে পিছে অনেক ঘুরেছে তবুও মালিহা আর আকবরের জীবনে ফেরে নি।
অনেক টর্চার করার পর অবশেষে আকবর আর তাহমিনা মুখ খুললো।

সত্য টা জানার পর সবাই ভীষণ অবাক হলো।কারণ তাহমিনাকে সবাই অপরাধী ভাবলেও আকবরকে কিছুতেই অপরাধী ভাবতেই পারছে না।সবচেয়ে বেশি অবাক হলো মালিহা।কারণ মালিহা কখনোই কল্পনা করি নি আকবর এইভাবে তার জীবন থেকে এতোগুলো বছর কেড়ে নিয়েছে।যে আকবর একসময় তাকে পাগলের মতো ভালোবেসেছিলো।আর এটাই কি কারো ভালোবাসার নমুনা?যে ভালোবাসার মানুষ কে না পেলেই তার ক্ষতি করার ধান্দায় থাকবে।যে মন থেকে কাউকে ভালোবাসবে সে তাকে না পেলেও তার কখনোই অনিষ্ট করতে চাইবে না,তার ভালোই চাইবে সবসময়।

রাতের পর দিন এলো।আর দিনের পর রাত।এইভাবে দিন পেরিয়ে মাস আর মাস পেরিয়ে বছর চলে গেলো।অবশেষে দীর্ঘ এক বছর পর শীলা আর সিফাত বুঝতে পারলো তারা দুইজন দুইজনকে সত্যি ভালোবাসে।এই এক বছরে তারা কেউ কারো সাথে কথা বলে নি।তারা দেখতে চেয়েছে এই এক বছরে দুইজন দুইজনকে কত টা মিস করে।
এই দূরত্বের কারণ আছে।কারন যেহেতু তারা দুইজনই অন্য আরেকটা সম্পর্ক থেকে বের হয়ে এসেছে সেজন্য তারা এই সময় টা নিয়েছিলো।তারা দেখতে চেয়েছিলো এটা কি সত্যি লাভ ছিলো না এট্রাকশন ছিলো?

ডাক্তার ম্যাডাম পর্ব ৪৫

কিন্তু তারা বুঝতে পারলো আসলেই দুইজন দুইজনকে ভীষণ ভাবে ভালোবেসে ফেলেছে।আর এখন তারা বিয়ে করতে চায়।
অবশেষে সবার সম্মতিতে শিলা আর সিফাতের বিয়ে হয়ে গেলো।

ডাক্তার ম্যাডাম শেষ পর্ব