তার শহরের প্রেম পর্ব ১৬ || konika Islam sanju

তার শহরের প্রেম পর্ব ১৬
konika Islam sanju

আয়াতের পাশে হাত ধরে বসে আছে আয়ান,,,, সারা রুম জুরি সবার মুখে শুধু এক ভয়ের ছাপঁ। ডক্টর বলে
—- সমস্যা নেই,,, শুধু একটু দূর্বল আর ভয়ের কারণে এমন হয়েছে। ডক্টরকে বিদায় দিয়ে সবাই ড্রয়িং রুমে দাড়িয়ে আছে। পিনপিন নিরবতা,,, আর সোফায় বসে আছে আরিফা। হ্যা সেই মানুষটা আর কেউ না আরিফা। হঠাৎ করেই সাদী গিয়ে আরিফা কে দাড় করিয়ে বলে
—– এখানে আসার মানে কি?? আরিফা বলে

—- আমি আমার ভুল বুজতে পেরেছি,,, সৌরভ আমার জন্য ঠিক না,, আই এম সরি আয়ান,,। তখনই আরিফার আম্মু গিয়ে চড় বসিয়ে দেয় আরিফার গালে,,, আরিফাকে বলে
—- তোর আগে এইসব মনে ছিল না? এখন কেন এসেছিস? তোর মুখ পর্যন্ত আমরা দেখতে চাই না। আরিফা বলে
—- আমি বুঝতে পারেনি,, আয়ান প্লিজ আই এম সরি!! আমাকে কি ক্ষমা করা যায় না?? একবার ফিরিয়ে নাও!! আয়ান তাচ্ছিল্যের সুরে বলে
—- আমার শহরটা সাত রঙের রঙধনু মতো রঙিন আর যাক জমক,,,করে তুলিছে আয়াত,, যে টাকে তুমি করতে চেয়েছিলে অন্ধকারে ঘেরা এক অভিশপ্ত নরক,, কিন্তু তা তুমি পারোনি ।।। তাহলে কেন আজ আমার শহরে তুমি সুখের খুঁজ করতে আসো??? আমি যে আর চাই না তোমাকে,,,, কারণ সেটা তুমিও জানো!!! তারপর একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলে

আর আমার আয়াত আছে। আর আরিফা তোমাকে ওয়ার্ন করছি তোমার জন্য যদি আয়াতের কিছু হয়,, জানে মেরে ফেলব!! আরবি তুই একটা কথা বলেছিলি না। যে আমাকে ছাড়তে যে একবার ভাবেনি,, আর আরেকজনকে আমার ছাড়ার কথা বলতেই এই পৃথিবীর মায়া ছাড়তে চেয়েছে তো আজ আমি বলছি,,, তাকে আমি ছাড়ছি না এট লিস্ট এমন থার্ড ক্লাস মেয়ের জন্য তো নাই। আমি উপরে যাচ্ছি৷ আয়াত ঘুমাচ্ছে কোনো শব্দ আমি চাই না বিকেলে পার্টি সবাই হাসি খুশি থাকো। কোনো সিনক্রিয়েট করছো তো খবর আছে,,,এখন আমার দায়িত্ব শুধু আয়াত তা কিন্তু না আমার অস্তিত্ব আয়াত।
বলেই রুমে চলে যায়,, আর আয়ানের কথা মতো সবাই কাজে লেগে পরে,,, সবাই হাসছে কথা বলছে কিন্তু আরিফা তাদের সাথে কথা বলতে গেলেই তারা তাকে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

আয়ান রুমে গিয়ে দেখে আয়াত জেগে গিয়েছে বালিশে হেলান দিয়ে আধো শুয়া হয়ে বসে আছে। আয়ান রুমে ঢুকে দরজাটা লাগাতেই আয়াত বলে উঠে
—– এখনতো আরিফা আপু চলে এসেছে,, তো আমাকে নিশ্চয়ই ছেড়ে দিবেন। আয়ান রেগে ছিল আগেই, কারণ একেতো অসুস্থ তারপর এইসব কথা। আয়ান সোজা গিয়ে আয়াতের দুই গাল চেপে ধরে বলে
—- তোকে আমি কোনো দিন ছাড়বো না। তুই আমার এই আয়ানের,, আর না খেয়ে খেয়ে অসুস্থ হওয়ার মানে কি? কানের নিচে দিব। আয়াত আয়ানকে ধরে কেঁদে দেয়। আয়ান আয়াতকে আগলে নিয়ে বলে
—- তুই আমার অস্তিত্ব হয়ে গিয়েছিস আর মানুষ নিজের অস্তিত্ব ছাড়া বাঁচে? পাগলীটা আমার। এখন রেস্ট কর বিকেলে পার্টি আছেতো? আয়াতও চুপচাপ আয়ানের কথা মেনে নেয়।

দুপুরে সবাই একসাথে খেতে বসেছে আয়াত এখনো নামেনি,,, আয়ানের পাশের সিট টা ফাঁকা সেখানে আয়াত বসবে। কিন্তু সেখানে গিয়ে বসে পরে আরিফা। আয়াত তখন নিচে নামছিল। তা দেখে আয়ান বলে
—- আয়াত উপরে যাও আমি খাবার নিয়ে আসছি। আয়ান আয়াতের আম্মুকে বলে
—- আম্মু আমার আর আয়াতের খাবারটা রুমে পাঠিয়ে দাও।আয়াতের চাচি বলে
—- সেটাই ভালো মেয়েটা অসুস্থ,, আয়াতের বাবা খাবার খেতে খেতে বলে
—- আয়াত মামুনি তুমি রুমে যাও। আয়াত রুমে চলে যায়।
। আরিয়ান আরিফার আম্মুকে বলে
—- মামী আমিও রুমেই খাবো। আরবি বলে

—- আমাদের রুমে চলো একসাথে খাবো আর গল্প হবে। তা দেখে আরিফা রেগে গিয়ে খাবারের টেবিল থেকে পেলেট টা নিচে ফেলে দেয় আর বলে
—- কি হয়েছে এমন!! ভুল করেছি ক্ষমাও চেয়েছি!!আর সবাই আমাকে এভাবে কেন ইগনোর করছ!? ছোট একটা কমন ব্যাপার আজকাল কতই তো এমন হয়!! আর আয়াতের তেমন কিছু হয়নি যে নিচে নামতে পারবে না।
আয়ান চেয়ার ছেড়ে উঠে সবার সামনে একটা চড় বসিয়ে দেয় আরিফার গালে। বসা থেকে সবাই দাড়িয়ে যায়। আয়ান দাঁত চেপে চেপে বলে

—– এটা তেমন কিছু না?? জানিস তোর জন্য আমাদের ফ্যামেলির কতটা অসম্মান হতো যদি আয়াত তখন বিয়ে টায় রাজি না হতো!! আরিফা রেগে চিৎকার বলে
—- এতে আয়াতেরও স্বার্থ ছিল কারণ আয়াত তোমাকে লাইক করত। আয়ান রেগে গিয়ে বলে
—- সেটা পরের হিসাব তোর একবার রুহ কাপেনি এইসব করতে? আরিফা অন্য দিকে মুখ করে নেয়। আয়ান বলে
—- তোর আর আয়াতের মধ্যে পার্থক্য,,,, তুই শুধু নিজেরটা বুঝিস আর আয়াত সবারটা নিয়ে ভাবে। তা তুই ফিরলি কেন? সৌরভ কোথায়!! আরিফা মাথা নিচু করে বলে

— সৌরভ আমাকে মিথ্যা বলেছে। সে বলেছিল তার বাবার কোম্পানি আছে,,, কিন্তু ওদের দিনই পার হয় টেনেটুনে,,, রুমে একটা এসি অব্দি নেই কারেন্ট চলে গেলে গরম। আর একটা সার্ভেন্টও নেই,,, মা অসুস্থ সব কাজ আমার করতে হয়। আরিয়ান বলে
—— অহহহহহ এই না হলে কাহিনী?? আলভিরা বসে খাবার খেতে খেতে বলে
—- Khuda pahar nikla coha… আরবি ভ্রু কুচকে বলে
—– তা তুই এখন কি চাইছিস? আরিফা বলে
—- আমি যেই ভুলটা করেছিলাম সেটা ঠিক করতে। সাদী বলে
—– মানে কি!! আরিফা বলে

—- মানে আয়ানের সাথে বিয়ে। আয়ান এবার রেগে গিয়ে আরেকটা চড় বাসায়,,, এবার আরিফা তাল সামলাতে না পেরে চেয়ারে বসে গিয়েছে। আলভিরা লাফিয়ে বলে উঠে
—– ২য় বলেই রান আউট। সবাই আলভিরার দিকে তাকায়। আলভিরা কি করবে ভেবে না পেয়ে খাবারটা নিয়ে রুমে চলে যায়। অন্য দিকে মাথা ঝিম ঝিম করছে আরিফার,,, থাপ্পড়টা এতটাই জুড়ে ছিল যে মনে হচ্ছে গালটা এখনই ফেটে যাবে। গরম হয়ে আছে। আয়ান বলে
—- কথা কান দিয়ে যায় না?? আয়াত আমার বিয়ে করা বউ আর আমি ওকে আমার বউ হিসাবে মেনে নিয়েছি বুঝছিস? আরিফা মাথা দোলায়। আরিফার বাবা বলে

তার শহরের প্রেম পর্ব ১৫

—- সাদীর আম্মু,,, খাবার নিয়ে রুমে আসো। আর ওকে এখান থেকে বেড়িয়ে যেতে বলো। সুখের সংসারে আগুন লাগানোর কোনো প্রয়োজন নেই। আরবি বলে
—– এইসব না করলেই হতো,, আর এর জন্যই তোকে কেউ পছন্দ করে না আয়ান কি মনে করে তোকে লাইক করত,, কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ ভালো হয় যা হয়। ইরা বলে
—- কিছু মানুষই আছে,,, লজ্জা শরম কিছু থাকে না। আর আরিফা আপু তো ইস্টার জলসার অনেক বড় ভক্ত তা একটু আদটুতো শিখেছেই। অপূর্ব বেঙ্গ করে বলে

—- তা যা বলেছিস। আরিফা আর কিছু না বলেই উঠে চলে যেতে চাইলে আরিফার মা বলে
—- এগুলো পরিষ্কার কে করবে?? আরিফা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। আয়াতের মা বলে
—– এগুলো আমি আমার বাসায় মেনে নিব না। আরিফার বাবা বলে
—- তোমাকে যেন দ্বিতীয় বার বলতে না হয় কালকে সকালে সুইজারল্যান্ডের টিকেট করে দিব সোজা চলে যাবে। আর তুমি তোমার ভাগের সব পেয়ে যাবে,, শুধু আমাদের মেয়ের জীবন থেকে সরে যাও। আরিফা বলে
—- আমি তোমার কিছু না? আরিফার বাবা চলে যেতে যেতে বলে
—- আমার একটাই মেয়ে আয়াত। একে একে সবাই চলে যায়। আর শুধু একা থাকে আরিফা

তার শহরের প্রেম পর্ব ১৭