তার শহরের প্রেম শেষ পর্ব || konika Islam sanju

তার শহরের প্রেম শেষ পর্ব
konika Islam sanju

রাতে আয়ান রুমে আসে দেখে আয়াত জুয়েলারি খুলছে তা দেখে আয়ান নিজে গিয়ে আয়াতের জুয়েলারি খুলে দেয়,,, আর আয়াত একমনে তাকিয়ে দেখছে আয়ানকে। এটা কি স্বপ্ন? যদি স্বপ্ন হয়তো তাহলে যেন কখনো আমার এই নিদ্রা না ভাঙে। এইসব আয়াত ভাবছিল কিন্তু আয়াতের ভাবনা জগৎে ছেদ ঘটে তখন যখন আয়ান আয়াতের গলায় একটা চেন পরিয়ে দেয় আর কানে কানে বলে

—– বিয়ের দিন রাতে কিছু না কিছু দিতে হয় নিজের বউকে তখন দেয়নি তো কি হয়েছে,,, এখন দিয়ে দিলাম। আয়াতও আয়ানের দিকে ঘুরে ফিরে বলে
—- আপনার জন্যও একটা কিছু আছে,,, বলেই আয়ানকে সাইড করে কাবার্ড থেকে একটা ঘড়ির বক্স নিয়ে আসে,,, আর সেটা থেকে ঘড়ি বের করে আয়ানের হাতে পরিয়ে দেয় আয়ান আয়াতকে হাগ করে বলে
—– ভালোবাসি তোকে প্রয়িতমা,,,, #তোর_শহরের_প্রেম কে ভালোবাসি জানানি কত দিন বাচঁবো কিন্তু তোকে নিয়ে বাঁচার ইচ্ছাটা প্রবল।

অপর দিকে রুমে ঢুকে দাড়িয়ে আছে আরিয়ান আর ইরা কমড়ে হাত দিয়ে বলে
—- সমস্যা কি তোমার? আরিয়ান চোখ গুলো ছোট করে বলে
—- তুমি আমাকে বিয়ে কেন করলে? ইরা একটা হাসি দিয়ে বলে
—- ভালোবাসি তাই,,, আর এটা তোমার মেনে নিতে হবে আমি তোমার বিয়ে করা বউ। আরিয়ান,,, পান্ঞ্জাবির বোতাম খুলতে খুলতে বলে
— বললেই হলো? ইরা পাশে তাকিয়ে দেখে ফল কাটার ঝুড়িতে একটা ছুড়ি সেটা নিয়ে আরিয়ানের দিকে তেরে আসলে আরিয়ান দেয় এক দৌড়,, আর বলে
—– ইরাবতী,,,, ডলফিনের রাণী,, কুটনি বুড়ি তোমায় আমি ভালোবাসি,,, ছুড়িটা ফালাও,,,,। ইরা বলে
—– আমি কুটনি,,? ডলফিনের রাণী!? আরিয়ান বলে
—– বিগ বি গো তুমি আমাকে এই কষাইয়ের কাছে কেন পাঠাইলা,,,,, ।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

অন্য দিকে আরবি দাড়িয়ে আছে ছাঁদের এক কোণে। পাশেই অপূর্ব। অপূর্বকে আরবি বলে
—- এতো মেয়ে থাকতে আমাকে কেন বিয়ে করতে চাইছো,, আমার থেকে অনেক ভালো মেয়ে তুমি পেতে। অপূর্ব আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে
—- আমি তো তোর চেয়ে ভালো কাউকে চাইনি,, আমি তো তোকে চেয়েছি। আর আলহামদুলিল্লাহ পেয়েও গিয়েছি। ওয়াদা করলাম তোকে কখনো কাদঁতে দিব না।

সকাল সকাল আফিয়া বেরিয়ে পরে সুইজারল্যান্ডের জন্য ,,, এইসবের মাঝে তাকে মানায় না। এতে অবশ্য কারো মাথা ব্যাথা আছে বলে মনে হয় না।
সময় খুব অদ্ভুত জিনিস। কখনো খুব দ্রুত চলে যায় আবার কখনো যেনো কাটতেও চায় না। এটা নির্ভর করে মানুষ সময়কে কীভাবে চায় তার ওপর। সে বড়ই অবাধ্য। মানুষের মন মস্তিষ্ক নিয়ে খেলে খুব মজা পায় সে। যদি কেউ চায় সময় ধীরে চলুক তাহলে সময় যেনো খুব বেশিই দ্রুত চলে যায়। আবার যদি কেউ চায় সময় তাড়াতাড়ি পার হয়ে যাক তাহলে সময় যেনো আর কাটতেই চায় না। দোষটা আসলে কার? মানুষের মনের নাকি সময়ের সেটাও এক বিশাল প্রশ্ন। দেখতে দেখতে কেটে গেছে ২ বছর এর মধ্যে। সময়টা একটু বেশিই দ্রুত চলে গেলো এরকমটাই মনে হচ্ছে আমার কাছে। কিন্তু কী আর করার?

আজ অপূর্ব আর আরবির বিয়ে। বড়ির মেয়ে+ বউ হওয়াতে আয়াতের যেন কাজের আর শেষ নেই। খাওয়া-দাওয়া না করেই কাজে লেগে আছে। আয়ানও কমনা দেখে মনে হবে না যে সে এতোকাজ করতে পারে। আরিয়ান আর সাদীও লেগে পরেছে কাজে,, সাদীর আর আলভিরার এনগেজমেন্ট হয়েছে মাসখানিক হবে। সব কেমন দ্রুত হয়ে যাচ্ছে তা বলা বড় দায়।

উপরে উঠছি,,, কাজ আছে। কিন্তু মাথাটা ঝিম ঝিম করছে,, সকাল থেকেই কেমন লাগছে মাথা। মাথা ঘুরে উঠছে মাঝেমাঝে। কিছু খেতেও ইচ্ছে করছেনা।কাউকে বলিনি কারণ বিয়ে বাড়িতে সবাই এখন আবার আমায় নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরবে। আম্মু আমায় ফলের ঝুড়িটা আনতে বলল। আমিও ফলের ঝুড়ি নিয়ে বেড়িয়ে এসে আরেকটু এগোতেই মাথাটা ভীষণ জোরে ঘুরে উঠল। সবটা অন্ধকার হয়ে আসছে। ঝুড়িটা আর ধরে রাখতে পারলাম না, পরে গেল হাত থেকে, কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে কী হল জানিনা আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না লুটিয়ে পরলাম মাটিতে। চোখ খুলে দেখি সবাই মিষ্টি খাচ্ছে আর আয়ান আমার হাত ধরে পাশে বসে আছে। আলভিরা দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে

—- আপ্পি আমি ফুপি হবো আর তুমি মাম্মা। সাদী আলভিরারকে বলে
—- তুমি মামি হবে আর আমি মামা। আলভিরা ভাব নিয়ে বলে
—- তুমিই ফুপা হবা মানে আঙ্কেল,,, ইরা আরিয়ানকে বলে
—– ওয়াও,,,, কি মজা ছোট একটা বেবি আসবে। আরিয়ান ইরার মুখে মিষ্টি ভরে দিয়ে বলে
— এক বেইবি বলে আরেক বেইবির কথা। ইরা মিষ্টি টা শেষ করে বলে।
—- তুমি আমাকে ইনডিরেক্টলি অপমান করছ? আরিয়ান বলে
— না ডিরেক্ট। তখনই আয়ানের মা বলে
—- আয়ান তুই আয়াতের সাথে থাক আর আমরা বাকিটা দেখে নিচ্ছি। সবাই যেতেই আয়ান আয়াতকে হাগ করে বলে।
—- আই এম সো হ্যাপি আয়াত,,,, তোই আমাকে কতটা হ্যাপি করেছিস বলে বুঝতে পারবো না। আয়াতও অনেক হ্যাপি,, আয়াত আয়ানকে হাগ দিয়ে বলে
—- আমিও অনেক হ্যাপি।।

চারদিকে হৈচৈ,,, সবাই কত এনজয় করছে আর আয়াত এক কোনে বসে আছে। এটা আয়ানের সাফ কথা আয়াত কোনো কাজ করতে পারবেনা। আয়াতের কি বসে বসে আইসক্রিম খাচ্ছে আর চাতক পাখির মতো এইদিক সেইদিক তাকাচ্ছে আর আয়ানকে খুজছে। কিছু সময়ের মধ্যেই আরবি আর অপূর্বের বিয়ে কম্পিলট হয়ে যায়। দেখতে দেখতে কেটে যায় আরো আটটা মাস আয়াতের মেজাজ এখন খারাপ থাকে খিটখিটে হয়ে গিয়েছে,,, আয়ানকে ঝাড়ির উপর রাখে। আর আয়ানও মুখ বুজে সব সহ্য করে,,,, কখনো রাত ২ বাজে বলে সে আইসক্রিম খাবে কখনো বা রাতে তার ঘুম আসে না। এখনো সেম আয়াত আয়ানকে ডাকছে

—- এই এই শুনো। আয়ান ধরপাকড় খেয়ে উঠে বসে আর বলে
—- কি হয়েছে? পেন হচ্ছে ডক্টর ডাকবো?? দাঁড়াও আমি কার বের করছি। আয়াত ভ্রু কুচকে বলে
— কিছু হয়নি,,, আমার ঘুম আসছিল না। আয়ান বলে
—- কি!? তুই জানিস কতটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আয়াত বলে
—- মাঝে মাঝে ভয় পাওয়া ভালো,,, ভয় পেলে ভালোবাসা বারে,, আচ্ছা বায় এখন আমি ঘুমাবো। আয়ান মাথায় হাত দিয়ে বলে
—- আল্লাহ আর যে কত কি সহ্য করতে হবে। আয়ান গিয়ে আয়তের পাশে শুয়ে পরে। কিন্তু অন্য দিকে মুখ করে,, আয়াত তা দেখে আয়ানকে পিঠে হালকা করে মেরে বলে

—- এইদিকে ঘুরে ঘুমান। আয়ান এবার আয়াতকে নিজের হাতে নিয়ে আসে আর মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলে
—– ঘুমিয়ে পর সোনাপাখি। আয়াতেও ধীরে ধীরে ঘুমিয়ে পরে।
তারপরের দিন সকালে আয়াতকে নাশতা করিয়ে আয়ান অফিসে যায়,,,,, দুপুরের দিকে আয়াতের পানি তেষ্টা লাগে কিন্তু আয়াত দেখে রুমে পানি নেই তাই সে উঠে দাড়ায় পেটে হালকা হালকা ব্যাথা করছে,,,, আরিয়ান আর ইরা আয়াতের বেইবির জন্য সপিং করে বাসায় ফিরছে,, ড্রয়িং রুমে বসে সবাই একসাথে গল্প করছিল৷,, হঠাৎ করে আয়াত ব্যাথায় চিৎকার দিয়ে উঠে,, তা দেখে দৌড়ে গিয়ে আয়াতকে ধরে আরিয়ান আর৷ ইরা।। সবাই হসপিটালের বাইরে অপেক্ষা করছে তখনই পাগলের মতো ছুটে আসে আয়ান,,,আরবি অপূর্ব সাদী সবাই হাজির। তখনই একটা নার্স বের হয় কোলে ফুটফুটে একটা বাচ্চা মেয়ে। নার্স এসে বাচ্চাটা আয়ানের কোলে দেয়। আয়ান তার মেয়েকে পেয়ে অনেক খুশি চুমুয় ভরিয়ে দেয় তার মুখ। সবাই মেতে উঠে বাচ্চা নিয়ে,, আয়ান জিজ্ঞেস করে

তার শহরের প্রেম পর্ব ১৭

—- আমার আয়াত? তখনই নার্সটা বলে
—- সবাই ঠিক আছে,,একটু পর তাকে বেডে দেওয়া হবে।
চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে আয়াত কিছু সময় আগেই তাকে বেডে দেওয়া হয়েছে। একে একে সবাই এসে দেখা করে যাচ্ছে কিন্তু আয়ান আর বেইবি আসছে না। সব শেষে আয়ান আসে কোলে তার বেইবি। আয়াত তার বেইবিকে দেখে খুশিতে কেঁদে দেয় আর হাতটা বারিয়ে দেয় আয়ান আয়াতের কাছেকোলে বেইবিটা দিয়ে আয়াতের মাথায় চুমু দিয়ে বলে
—- ভালোবাসি,,, আয়াত উপরের দিকে তাকিয়ে বলে
—- আমিও। আর বাইরে থেকে সবাই দেখছে আয়ান আর আয়াতকে।
ভালো থাকুক সুখে থাকুক আয়াত আর আয়ান। সবাই ভালো আছে। শুধু এত কিছুর পরেও সুখে নেই আফিয়া। হয়তো এটাই তার প্রাপ্য।

সমাপ্ত

তো এখনােই ইতি টানালাম আয়াত আর আয়ানের। যারা সাইলেন্ট রিডার ছিলা তারাও আজ সারা দাও,, দুই তিন লাইন তো আজ মন্তব্য করতেই পারো। কালকে থেকে নতুন গল্পে দেখা হচ্ছে #ক্লান্ত_বিকেলে ??নতুন গল্প নতুন কাহিনীতে। আল্লাহ হাফেজ টেক কেয়ার ??

5 COMMENTS

  1. Amr kache ekhn pora sb golpoi onek…sb golpe gula pore aladha feelings , alada valo laga kaj kore….thank you writer der k eto sundor sundor present kora jonno????

  2. Amr kache ekhane r pora sb golpoi onek valo lage…sb golpe gula pore aladha feelings , alada valo laga kaj kore….thank you writer der k eto sundor sundor present kora jonno????

Comments are closed.