তার শহরের প্রেম পর্ব ১৭ || konika Islam sanju

তার শহরের প্রেম পর্ব ১৭
konika Islam sanju

আয়াত শাওয়ার নিয়ে এসে রেডি হচ্ছে,,,, চুলগুলো এখনো হালকা হালকা ভিজা,,,,,পরনে একটা স্কাই ব্লু কালারের ড্রেস সাথে স্কাই ব্লু কালারের পাথর বসানো।আয়াত মেকাপ করছে,, আর আয়ান একমনে তাকিয়ে আয়নায় দেখছে তার আয়াতকে। আয়াত বলে
—-কি দেখেন? আয়ান দুষ্ট হাসি দিয়ে বলে
— দেখলাম,,, ভিভো থেকে আই ফোন কিভাবে হতে হয়। না ভাই মানে মেকাপ এমন একটা জিনিস,, যা,, কাককে বক আর বককে কাক করে দেয়। আয়াত রেগে চোখ গুলো বন্ধ করে চেচিয়ে বলে
—- আপনি বের হন,,, রুম থেকে,,, । আয়ান ভয় পেয়ে বলে
— আরে আরে আমিতো মজা করছিলাম,,, আয়াত আবারও একই রকম করে বলে
—- আমি বের হতে বলছি। আয়ান তাড়াতাড়ি করে বেড়িয়ে যায়।

মেহমান আসা শুরু হয়েছে,,,, সাদী, আয়ান, আরিয়ান ও অপূর্ব সবাই তাদের ওয়েলকাম জানাচ্ছে। তখনই আলভিরা আসে সাদীর সামনে। সাদীতো আলভিরাকে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। পরনে রেড কালারের লেহেঙ্গা হেভি মেকাপ। আলভিরা আয়ানকে বলে
—– ভাইয়া কয়েকটা পিক তুলে দিবা? তখনই আরিয়ান বলে
—– এমনই পেত্নীর মতো লাগছে নিজের ছবি নিজে দেখলে সেন্স হারাবি। আলভিরা নিজের চুলগুলো সরিয়ে ভাব নিয়ে বলে

—– দেখ আমি জানি আমাকে সুন্দর লাগছে ,,,, আর তাছাড়া আমি কোনো ছেলের পাশ দিয়ে গেলে,,,, সে এমনই সেন্স হারায়। আরিয়ান একটা চওড়া হাসি দিয়ে বলে
—– তো পারফিউম ব্যবহার করতে পারিস,,, তা তো করবি না। বুঝ তাহলে তোর ঘামের গন্ধে মানুষ সেন্স হারায়। আলভিরা এবার পারেতো কেঁদে দেয়,,,৷ আর সাদী তো ঠোঁট চেপে হাসছে। আয়ান আলভিরাকে হাগ করে বলে
—- এই কেউ আমার বুড়ি কে রাগাবি না। তখনই আসে ইরা ডার্ক গ্রিন কালারের ড্রেস সেম আয়াতের মতো। দুপাট্টা ঠিক করতে করতে আসছে। ইরাকে দেখে আরিয়ানের হার্ট জুড়ে জুড়ে বিট করতে লাগে। আরিয়ানের হাত আপনাআপনি বুকের বা পাশে চলে যায়। আর অন্য দিকে মুখ করে বলে

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

—- হায়। একটু হলেই এ্যাটাক করতাম। এতো সাজতে হয় নাকি!? সাজুক কিন্তু আমার কি?! ধূর কি হচ্ছে এইসব আমার সাথে। ইরা এসে তাড়াতাড়ি করে আয়ানের কানে কানে কিছু বলে। আর আয়ান অপূর্বকে বলে
—– অপূর্ব আমার সাথে আয় একটু। আয়ান অপূর্বকে নিয়ে চলে যায়,,,, আর সাদী আলভিরার হাত ধরে বলে
—- আমারও আসছি। সবাই চলে গিয়েছে শুধু দাড়িয়ে আছে ইরা আর আরিয়ান। ইরা হালকা কাশি দিয়ে বলে
—– এহেম,,, এহেম,,,,আমাকে কেমন লাগছে বললে না যে? আরিয়ান অন্য দিকে মুখ করে বলে
—-আমি কি বলবো। ইরা ভেংচি কেটে বলে
—- আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম,,, তুমি একটা আহাম্মক। আর চলে যায় ।

আয়াত নিচে নামছে,,, কানে দুল পরতে পরতে আর আয়ানও পানি খেয়ে কিচেন থেকে আসছে,, আর আয়াতকে দেখে আয়ান দাড়িয়ে যায়।।।।। আয়াত আয়ানকে দেখেও না দেখার মতো করে গার্ডেনে চলে যায়। আয়ান বলে
—- আয়ানরে তোর বউ রাগ করছে রাগ ভাঙা নয়তো রাতে বিছানা তো দূরে থাক রুমে অব্দি যেতে দিবে না। বউগো কই তুমি। এই বলে আয়ানও আয়াতের পিছু পিছু দৌড় আসে।।।। আর আরিয়ান,, সাদীকে বলে কিছু একটা। হঠাৎই গানের সুরে পিছনে তাকায় আয়াত,,,। এমা সে কাকে দেখছে তার গুনধর স্বামী,,, ভাই সবাই একসাথে,,,, হঠাৎ আয়ান গেয়ে উঠে

এই মন টাকে লিখে দিলাম,,, তোরি নামেতে,,,
তুই কি আসবি বলনারে,, প্রেমের টানে।
( আয়াত হা হয়ে আছে সাথে এখন যোগ হয়েছে ইরা, আলভিরা। আর এইসব উপর থেকে দেখছে আরিফা। সত্যি আরিফা অনেক বড় ভুল করেছে আয়ানকে ছেড়ে। আয়ান আয়াতের হাত ধরে চুমু খেয়ে গানের সাথে তালমিলায়
ভালোবাসার মাতাল হাওয়া।
বইছে যে আমার প্রাণে।
তোর ছোঁয়া তে যেন যাই,,
সবকিছু আমি ভুলে… ( আলভিরার লজ্জা লাগছে)
ইরা আরিয়ানের সাথে ডান্স করছে।।।
তুই যে জানের জিগার ওই খোদাই জানে।
(সাদী আলভিরার কাঁধে নিজের কাঁধ দিয়ে ধাক্কা দেয় বেচারি লজ্জা পাচ্ছে)
তুই যে জানের জিগার ওই খোদাই জানে।
ও ও তুই যে জানের জিগার ওই খোদাই জানে।
তুই যে জানের জিগার ওই খোদাই জানে।।।।।
তখনই এন্ট্রি হয় আরবির,,,, সবাই থেমে যায়। ইয়েলো কালারের লেহেঙ্গা হেভি মেকাপ আর জুয়েলারি,,,, আজ অনেকদিন পর নিজের বোনকে সাজতে দেখেছে আয়ান,, সবাই অনেক খুশি। তখনই অপূর্ব সবার সামনে হাটু গেড়ে বসে পরে আরবির সামনে,,, এটা একটা প্লানিং ছিল,, সবাই জানতো,, আয়ানও জানতো। নিজের বোনের জীবনটা কে নতুন করে সাজিয়ে দিতে। অপূর্ব

ও,,পৃথিবীর সবটুকু সুখ, দেবো যে আমি তোকে।
সব বাধা পেরিয়ে, যদি তুই আছিস ছুটে।
ও,ও, বড় নাজেহাল এই দিল।
তোর ভালোবাসাতে,,
বাঁচি কি করে বলনা তোকে ছাড়া,,,,
তুই যে জানের জিগার ওই খোদাই জানে।
তুই যে জানের জিগার ওই খোদাই জানে।
ও ও তুই যে জানের জিগার ওই খোদাই জানে।
তুই যে জানের জিগার ওই খোদাই জানে।
(বাকিটা নিজ দায়িত্বে শুনে নিয়) আরবি অবাক সবাই চুপ মিউজিক ওফ হয়ে যায়। সবাই বলে

—- আরবি হ্যা করে দাও। আরবি আয়ানের দিকে তাকালে আয়ান চোখ দিয়ে বলে হ্যা করে দিতে
—– আরবিও হ্যা করে দেয়। সবাই করা তালি দেয় আর শুরু হয় পার্টি। আয়ান চোখের পানি মুছে তখনই আয়াত আয়ানের কাঁধে হাত রেখে বলে
—- কি হয়েছে কান্না করছেন কেন? আয়ান আয়াতকে হাগ করে বলে
—- আমার লাইফের বেস্ট গিফট হিসেবে আমি তোকে পেয়েছি আয়াত। জানিনা কি এমন কাজ করেছিলাম। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ তুই আমার লাইফে আসার পর সব কেমন মেজিকের মতো লাগছে। আর ধন্যবাদ তোকে অপূর্বের ব্যাপারটা আমাকে বুঝানোর জন্য,, আমি তোকে পেয়ে সত্যি হ্যাপি। আয়াত বলে
—- বারে আরবি আপু বুঝি আমার কিছু লাগে না?।। আয়ান কিছু বলে না শুধু আয়াতকে হাগ করে রাখে।

সাদী আলভিরার কানে কানে বলে
—- তোকেও কিছু দিন পর প্রপোজ করব। আলভিরা বলে
—- করলেও কাজ হবে না। যত দিন না অব্দি ইরা আপু আর আরিয়ান ভাইয়ার বিয়ে হয়। সাদী বলে
—– বিয়ে আজকেই হবে। আলভিরা বলে
—- মানে!? সাদী বলে
—- ইরা সেই ব্যবস্থা করে রেখেছে। হঠাৎ করেই ইরা গিয়ে আরিয়ানের বাবাকে বলে
—– আঙ্কেল তোমার ছেলে আমাকে পাত্তাই দেয় না। আরিয়ানের মা আরিয়ানের কান ধরে বলে
—– কেন রে মেয়েটা তোকে এত লাইক করে আর তুই? আরিয়ান কান ছাড়িয়ে বলে
—– তো আমি কি করব!? ইরা একটা হাসি দিয়ে বলে
—- বিয়ে,, মানে আমাকে বিয়ে করবা। আরিয়ান বলে
—- এ্যা!!! সবাই একসাথে বলে
—- এ্যা না হ্যা। আরিয়ান পিছাতে পিছাতে একদম স্টেজের শেষে চলে এসেছে,, যেই না নিচে পরে যাবে। ওমনি ইরা গিয়ে আরিয়ানের হাত ধরে ফেলে। আরিয়ান বলে
—- আমি বিয়ে করবো না। ইরা মাথা দোলাতে দোলাতে বলে
—- বিয়ে করতে হবে,, কাল করলেও করবা তা আজকেই কর।

তার শহরের প্রেম পর্ব ১৬

ইরা আর আরিয়ানের কথাটাও সবাই জানতো শুধু আরিয়ান জানতো না। কাজী সাহেব আরিয়ানকে কবুল বলতে বলে। আরিয়ান সামনে তাকিয়ে দেখে ইরা একটা লম্বা হাসি দিয়ে বসে আছে। তা দেখে আরিয়ান বলে
—- এই ঐ হাসছে কেন আমি কবুল বলবো না। আয়াত ইরাকে ধমক দিয়ে বলে
—- এই ইরা চুপ। আয়ান আরিয়ানের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে
—- এইবার কবুল বল। আরিয়ান আয়ানকে ধরে বলে
—- বিগ বি আমি এই বিয়ে করবো না। আয়ান আরিয়ানের পিঠে হাত বুলিয়ে বলে
—- কিচ্ছু হবে না। ডারকে আগে জিত হে মেরে ভাই। আরিয়ান ইরার দিকে তাকিয়ে বলে
—- আর এই কবুল বলার পর জেলে কারা বন্দি। অনেক কষ্টে আরিয়ান আর ইরার বিয়ে হয়।এই নিয়ে অবশ্য হাসাহাসি কম হয়নি।

কিন্তু এখন ঘটছে বিপত্তি আরিয়ান ড্রয়িং রুমে বসে বসে ভিডিও গেম খেলছে। আর ইরা উপরে রুম দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে। আয়াত আয়ানকে বলে
—– আরিয়ানকে রুমে যেত বল। আয়ান গিয়ে আরিয়ানকে বলে
—- কিরে রুমে যাবি না। আরিয়ান গেম খেলতে খেলতে বলে
—- এখন ঐটা আমার না ইরা শাঁকচুন্নির রুম। আয়ান বলে
—- ভালো কথায় কাজ হবে না। সাদী,, বাবা,চা্চ্চু, অপূর্ব সবাই আসো। সবাই মিলে আরিয়ানকে জোর করে উপরে তুলছে,,, আরিয়ান বলেছে
—- আমি যামু নারে।। যামু না।।।।।। আয়াত, আলভিরা,, আরবি সবাই হাসছে।।
আরবি বলে
—- ইতিহাসের পাতায় সুনালী অক্ষরে লেখা থাকবে,,, ইরা আর আরিয়ানের বিয়ের কাহিনী।

তার শহরের প্রেম শেষ পর্ব