তুমি নামক প্রাপ্তি পর্ব ২৭ || Suraiya Aayat || SA Alhaj

তুমি নামক প্রাপ্তি পর্ব ২৭
Suraiya Aayat

জেলের ভিতরকার মোটা মোটা রডগুলো দুই হাতে শক্ত করে চেপে ধরে আছে আরিস, চোখে লাল আভা যেন আগুনের ফুলকি ঝরছে ৷
সবাই আরিশের দিকে উৎসুক হয়ে তাকিয়ে আছে,সবার মনে একটাই প্রশ্ন যে আরিশের প্রতি করা অভিযোগের সত্যতা ঠিক কতোটা ৷ সবার দৃষ্টি আরিশের উপর স্থির ৷ আরিশ রীতিমত গম্ভীর হয়ে রয়েছে কারোর প্রশ্নের কোন উত্তর দিচ্ছে না ৷

আরিশ উত্তর দিলে না হয় কিছু একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত ৷ তাহির আব্বানকে খুনের অভিযোগে আরিশকে জেলে ভরা হয়েছে ৷ আর এই বিষয় নিয়ে সোটা খবরের চ্যানেল সহ মিডিয়াতেও তোলপাড় ৷
টিভির ব্রেকিং নিউজ:

কিছুক্ষন আগে জাতীয় দলের আসামী তাহির আব্বানকে নারী পাচার কান্ডে যুক্ত থাকার দরুন হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় , তাহির আব্বান সহ আরো 15 জনকে আটক করেছে পুলিশ তাদেরকে আপাতত জেলে রাখেছে , কোর্ট তাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ৷ কিন্ত ইতিমধ্যেই জানা গেছে যে পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ তার পায়ে সহ হাতে গুলি করে আটক করেন,হসপিটালে ভর্তি থাকাকালীন তাকে খুন করা হয়, সিসিটিভি ফুটেজে খুনীর ছবি স্পষ্ট ৷ আসামীকে আপাতত গ্রেফতার করা হয়েছে ৷
এতটা বলার পর রিপিট করে হসপিটালের সিসিটিভি ফুটেজ দেখানো হচ্ছে ,যেখানে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে তাহির আব্বানের রুমে আরিশ ঢুকছে , তবে তারপর হঠাৎই ফুটেজ অফ হয়ে যাই ৷
মিডিয়ার অতিরিক্ত প্রচারে তারা তুমুল চেষ্টার মাধ্যমে এটা আবিষ্কার করেন যে আসামী ইচ্ছাকৃত সিসিটিভি বন্ধ করে দিয়েছে ৷

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

এইটুকু শুনতেই আবির ফোনটা অফ করে দিলো ,social media তে এইসব খবরের ছড়াছড়ি ৷
আরিশ শুধু শুনছে কিন্ত কিছু বলছে না৷
আরিশের সামনে মিনহাজ সাহেব গালে হাত রেখে বসে আছেন, আবির মাথা নীচু করে আছে , মিহির আর্শিয়ানের কাছে ৷ আর্শিয়ানের অবস্থা ভালো নয়, হঠাৎ করে নাকি বুকে ব্যাথা শুরু হয়েছে তার ৷ এই এতো ছোট বয়সে এতো কষ্ট কি করে সহ্য করছে ছেলেটা !
হঠাৎ মিনহাজ সাহেব মুখ খুললেন,,,

” এভাবে আর কতক্ষন আরিশ , এভাবে চলতে থাকলে না তোমার কোন ব্যাবস্থা হবে আর না আমরা একধাপ এগোতে পারবো ৷ এরকম হলে তো মিডিয়া ধরা কে সরা জ্ঞান করে বসবে, আরো আজেবাজে জিনিস রটাবে ৷আর্শিয়ানের অবস্থা ভালো নয়, ওর তোমাকে প্রয়োজন ৷ ”
আরিশ মুখ খুললো,,,
” যা হচ্ছে হতে দিন শুধু আমার একটু সময় চাই ৷”
মিনহাজ সাহেব বিরক্ত হয়ে বললেন
” এখন তোমার সময় লাগবে ! এটা বললে আমি মেনে নিলেও কি আরো সবাই মেনে নিবে! কি চাইছো টা কি তুমি, ঠিক রে কিছু বলছো না আবার,,,,,”
এটুকু বলে মিনহাজ সাহেব থেমে গেলেন ৷ পুনরায় ওনার মাথায় হাত, আরিশ কোনভাবেই কিছু বলছে না যে আসলে কি হয়েছে ৷

হঠাৎ আরিশ বলে উঠলো,,,
” আঙ্কেল আই নিড ইউর হেল্প ৷ উড ইউ হেল্প মি ?”
মিনহাজ সাহেব এবার একটা স্বস্তির নিশ্বাস নিয়ে বললেন
” আমি তো এতখন ধরে এইকথাটাই শুনতে চাইছিলাম, কিন্তু তুমি তো বলছিলেই না ৷ এখন কুইকলি বলো কি হেল্প লাগবে আই এম রেডি টু ডু ইট ৷”
আরিশ মুচকি হেসে বলল,,,,,
” ওয়েট সাম মিনিট ৷ আর কিছুখন পর বলছি ৷”
বাইরে এক ভদ্র মহিলার চিল্লাপাল্লার আওয়াজ জেলের ভিতরে আসছে আর তা সবাই শুনতে পাচ্ছেন ৷ মিনহাজ সাহেব বা আরিশ দুজনের কারোরই বুঝতে অসুবিধা হলো না যে কে হতে পারে ৷ —- আফসানা বেগম এসেছেন আরিশের সাথে কথা বলতে ৷

একজন পুলিশ কনস্টেবল এসে মিনহাজ সাহেবকে বললেন
” sir,আসামীর সাথে একজন কথা বলতে এসেছেন ৷”
আসামী শব্দটা শুনে আরিশ চোখটা বন্ধ করে নিলো আর লোহার রডটা শক্ত করে চেপে ধরলো ৷ রাগে ওর সারা শরীর জুড়ে অদ্ভুত শিহরন বয়ে যাচ্ছে ৷তবুও এখন নিজেকে সামলানোর প্রয়োজন ৷
মিনহাজ সাহেব সেই কনস্টেবলকে ধমকে বললেন
” এখন থেকে কি তোমরা বিচার করবে কে আসামী কে আসামী না, তোমার সাহস হয় কি করে ওকে আসামী বলার ৷ যাও, আর ওনাকে ডেকে আনো ৷ যা জানো না তা নিয়ে কখনো কোন মন্তব্য করবে না ৷”

” সরি sir ৷” বলে কনস্টেবলটি মাথা নিড়িয়ে চলে গেল ৷
উনি চলে যেতেই এক মিনিটের মধ্যেই আফসানা বেগম অনেকটা দোড়াতে দৗড়াতে ছুটে এলেন ৷
মিনহাজ সাহেব একনজরে আফসানা বেগমের দিকে তাকিয়ে আছেন, এখনো ওনার মাঝে সেই পুরোনো মাধুর্য উনি খুজে পান ৷
আফসানা বেগম মিনহাজ সাহেবকে এখনো দেখেননি, আরিশকে দেখতে পেয়ে আরিশের কাছে ছুটে গেল ৷
কাঁদোকাঁদো হয়ে বলল

” আমার আরূ কোথায় আরিশ , আমার মেয়ে কোথায়! আমার মেয়েকে তুমি ফিরিয়ে আনো ৷”
কথাটা বলে আরিশের সামনে হাউহাউ করে কাঁদতে শুরু করলেন ৷আরিশ ওনার দিকে দৃষ্টি স্হির করে বলল
” আরু আছে, কোথাও আছে , যেখানেই থাক আল্লাহ ওকে ঠিক আমার কাছে ফিরিয়ে দেবেন আমার বিশ্বাস ৷”
আরিশের এমন শান্ত ভঙ্খিমার কন্ঠ শুনে আফসানা বেগম তেতে উঠলেন
” আজ তোমার এতো বড়ো একটা ভুলের জন্য আমার মেয়ে নিখোঁজ, আরশিয়ান হসপিটালে শয্যাশায়ী ৷ না জানি আমার মেয়েটা এখন কি অবস্থায় আছে ৷ আর তুমি খুন করেছ কেন ? খুন করে লাভটা কি হলো, খুন করে এবার জেলে পচে মরবে, কে ছাড়াবে তোমাকে ? কে?”
পিছন থেকে মিনহাজ সাহেব বলে উঠলেন

” আমি ৷ আমি ছাড়াবো , আরিশ আমার ছেলের মতো আর তার সাথে আমার জামাই সে তুমি মানো আর না মানো ৷”
আফসানা বেগম মিনহাজ সাহেবের দিকে ভেজা চোখে তাকালেন, আজো ওনার চোখে আগের মতো একই ভালোবাসা দেখতে পাচ্ছেন ৷
উনি ভাঙাভাঙা গলায় বললেন
” আমি অতশত কিছু জানিনা, আমি আমার মেয়েকে ফিরে পেতে চাই ৷ ”
কথাটা বলে উনি শাড়ির আঁচল দিয়ে মুখটা চেপে কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে গেলেন ৷ পুরোনো প্রেম ফিরে পেতে চাইলে তার কষ্টটা হবে ভয়ংকর ৷
আফসানা বেগম চলে যেতেই মিনহাজ সাহেব বললেন

” আমি আজো বুঝিনা ও কেন এভাবে আমার থেকে পালানোর এতো চেষ্টা করে ৷ আমি মকনুষটা কি খুব খারাপ !”
আরিশ ওনার কথা শুনে হো হো করে হেসে বলল
” মে বি আপনি পুলিশ তাই ? ৷ চোরের মন সবসময় পুলিশ পুলিশ ই হয়, সেটা নিশ্চই খুব ভালো করেই জানেন ৷”
আরিশের এমন ঘোরপ্য৷চের কথা বোঝার ক্ষমতা আজ অবধি কারোর হয়নি আর কখনো হবে বলে মনে ও হয় না ৷
মিনহাজ সাহেবের থতমত মুখ দেখে আরিশ বলল
” sir আমার জামিন চাই ৷”

” কিন্তু এভাবে যে সম্ভব না আরিশ, আইনের চোখে তুমি অপরাধী ৷ এভাবে নিমেশেই জামিন আমি দিতে পারি কিন্তু অন্যরা কি মেনে নেবে !”
” আমার দুই ঘন্টার জন্য জামিন চাই sir, আর শুধু তো আমি একা যাবো না, গোটা পুলিশ বাহিনীকে আমার সাথে যাওয়ার অনুরোধ যানাচ্ছি, তাই যত তাড়াতাড়ি ব্যাবস্থা করবেন ততই ভালো ৷ আমার আরুপাখি অনেক কষ্ট পাচ্ছে আর আমার ছেলেটাও ৷”
মিনহাজ সাহেব অবাক হয়ে বললেন
” তুমি জানো আরু মা কোথায় ?”
” হয়তো জানি৷”
মিনহাজ সাহেব আবেগের বশে কান্না করে ফেললেন,

” আমি এক্ষুনি সবকিছুর ব্যাবস্থা করছি, আমরা সবাই যাবো অপরাধীর শাস্তি হবে ইনশাআল্লাহ ৷”
আরিশ শুধু মুচকি হেসে মেঝেতে বসে পড়লো ৷ চোখজোড়া বন্ধ করে ওর মায়াবতীর মুখটা মনে করতে লাগলো ৷ আর ভাবতে লাগলো, এতো বছর পর আরিশকে ফিরে পেয়ে আরু কি পাগলামোই টা না করবে ৷ ওকে দেখেই ছুটে জড়িয়ে ধরবে আর কাঁপাকাপা কন্ঠে বলবে ” ভালোবাসি ৷”
আরিশের দুচোখের কোনা বেয়ে নোনা জল গড়িয়ে পড়লো ৷ সেগুলো হাত দিয়ে মুছে দেওয়ার বৃথা চেষ্টা আরিশ কখনোই করবে না ৷

অনিকা খান আর সানা তাদের মোনাযাতে আরিশ আর আরুকে রেখেছে, দুচোখের জল এক করে ফেলছে নামাজের পাটিতে ৷ অঝোর ধারায় আল্লাহর কাছে সকলের হেফাজত আর সুস্থতা কামনা করছে ৷ আহান মেয়েকে ধরে আছে, আর একের পর এক কল করেই চলেছে এখানে সেখানে, মুখ দিয়ে ঘাম টুপিয়ে টুপিয়ে পড়েছে ৷ তার বাবা যা পাপ কাজ করেছে তার জন্য ওর কোন অনুতাপ নেই কারন অপরাধীর জন্য কষ্ট পাওয়া বৃথা যে কিনা তার প্রিয়জনের পরোয়া না করে প্রিয়জনেরই ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে ৷ অপরাধীরা কখনো কারোর আপন হতে পারে না ৷
আরু আর আরিশের খোজ চালাচ্ছে ক্রমাগত মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ৷
অনিকা খানকে আরিশ কথা দিয়ে গেছে যে আরুকে ও ফিরিয়ে আনবে নাহলে কখনো ও আর ফিরবে না ৷ ছেলে বউমা আর নাতির জন্য চোখের জল ফেলছে উনি, সানা ও ক্রমাগত দোয়া করেই চলেছে সকলের জন্য ৷

শরীরের মধ্যে তীব্র এক জ্বালা দগদগ করে উঠতেই আরুর ঠোঁটদুটো কেঁপে কেঁপে উঠলো ৷ হাতদুটোকে যেন কেউ জুতো দিয়ে ক্রমাগত পিষে দেওয়ার মতো যন্ত্রনায় ছটফট করছে , মুখের বামদিকের অংশটাই মরিচ ছড়িয়ে দেওয়ার মতো অসম্ভব জ্বালা তার মাঝে ওর ছোট্ট জাহানটা ধুকপুক করছে,মৃত্যু যন্ত্রনা ঠিক কতখানি সেটা ও জানে না তবে সারা ক্ষতেপূর্ন দগদগে শরীর নিয়ে বেঁচে থাকার যন্ত্রনাটা ঠিকই অনুভব করতে পারছে ৷

ডানদিকের চোখের কোনাটা খানিকটা থেতলে গিয়ে সেখানকার রক্ত-মাংস শুকিয়ে গিয়ে এক হয়ে আটকে গেছে,যাতে করে ডানদিকের চোখটা ভালোভাবে খুলতে পারলেও বামদিকের চোখটা খুলতে বাধা পাচ্ছে ৷ কোনক্রমে পিটপিট করে তাকালো আরু ৷ অনুভব করছে যে হাতদুটো আর পুরো শরীরটা কাঠের কোন চেয়ারে কেউ শক্ত করে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে রেখেছে, শরীরটা নাড়ানোর ক্ষমতাটুকু ওর নেই, এখন মনে হচ্ছে চোখটা না খুলে বৃথা তাকানোর চেষ্টা না করলেই ভালো হতো তাহলে হয়তো এতোটা ব্যাথা অনুভব করতে হতো না ৷

শরীর থেকে রক্তের কালচে আভার তীব্র বিদঘুটে গন্ধ ছড়িয়ে যাচ্ছে চারিদিকে, রক্তগুলোও শুকিয়ে গিয়ে বাদমী বর্ন ধারন করেছে ৷ চোখ খুলতেই আর্শিয়ানের সেই হাসি মুখটা ভেসে উঠতেই আরুও একটু মুচকি হাসলো তবে তা অন্যদিনের মতো এতো প্রানচ্ছল ভাবে নই, কারন আজ যে ওর শরীরের প্রতিটা অঙ্গ প্রতঙ্গ ওর প্রতি তীব্র অভিমান মেটাতে ব্যাস্ত ৷

হাসিটুকু বেশিখন মুখে ধরলো না তার আগেই কানে ভেসে আসতে লাগলো মহিলার কন্ঠস্বর ৷ আওয়াজটা যে অত্যন্ত আবেগঘন মুহূর্তেই কোন মহিলার মুখ থেকে বেরিয়ে আসে তা আর আরুর বুঝতে বাকি রইলো না ৷ আরুর গা ঘিনঘিন করতে লাগলো, এ কোথায় এনেছে ওকে ! মহিলার কন্ঠস্বরটা আরুর খুব চেনা যাকে বলে খূবই চেনা, তবে এই মূহুর্তে ওর মস্তিষ্ক আর কাজ করছে না,শরীর ঘিনঘিন করছে, বুঝতে বাকি রইলো না এটা একটা পতিতালয় ৷ বেশ কয়েক মিনিট ধরে আরুর কানে আওয়াজটা ভেসে আসছে আর হঠাৎই আওয়াজটা থেমে গেল , আরুর গলাও ইতিমধ্যেই শুকিয়ে এসেছে, ঠিক কত ঘন্টাবা,কতো দিন আগে যে জল খেয়েছে তাও ও জানে না ৷

তবে নিমেষেই কারোর জুতোর টাকটাক আওয়াজ আরুর কানে হালকা ভেসে আসতেই আরুর কলিজা কেঁপে উঠলো ৷ কেউ যে খুব করে ওর দিকে এগিয়ে আসছে আরুর বুঝতে বাকি নেই ৷ আরু বিশ্বাসঘাতকতা নামক জিনসটাকে খুব করে ভয় পাই , সেই ভয়টা আরো দৃঢ হয় যখন জানতে পারে যে আরমান সাহেব ওর বাবা হয়ে ওকে পাচার করতে চেয়েছিলো ৷ এতোদিন কেবল শুনে এসেছে প্রিয়জনের থেকেই নাকি বিশ্বাসঘাতকতা বেশি হয় তাহ ঠিক কতোটা সত্য আরু এখন বোঝে ৷ কিন্তু যখন বুঝলো তখন হয়তো অনেকটা দেরি হয়ে গেছে ৷

তুমি নামক প্রাপ্তি পর্ব ২৬

পায়ের আওয়াজটা আরো গাঢ় হতে লাগলো, যার অর্থ মানুষটা ওর খুব কাছে চলে আসছে ৷আরু মাথা নীচু করে নিলো, এই মহিলা কে আর ওকেই কেন বা এখানে নিয়ে এসেছে , কি তার স্বার্থ এই হাজারো প্রশ্ন মাথায় আসছে তবে এটুকু জানে যে ও মরলে তার আগে সব প্রশ্নের উত্তর জেনেই মরবে ৷
আরু মাথা নীচু করে হালকা চোখে তাকিয়ে দেখল,
হাটুর ওপরে একটা ওয়েসটার্ন ড্রেস পরা, পায়ে বেশ অনেকটা বড়ো হাইহিল তবে পায়ের গঠনপ্রকৃতিতে খানিকটা হলেও বয়সের ছাপ বিদ্যমান ৷ বাকি তার চেহারা টুকু আরু এখন দেখবে না তাই চোখ খিচে বন্ধ
করে রাখলো ৷

মহিলাটা এসে আরুর গালদুটো শক্ত করে চেপে ধরতেই আরুর সমগ্র শরীর কেপে উঠলো, তীব্র যন্ত্রনা আর বিশ্বাসঘাতকতা ৷
মহিলাটা উদ্ভট কন্ঠে বলে উঠলো
” আরূ,,,, কেমন আছিস মা ৷”
কন্ঠস্বর শুনে আরুর কলিজা কেপে উঠলো ৷ তিনি আর কেউ না ওর মা আফসানা ৷
আরু হালকা চোখে ওনার দিকে তাকালো ৷ ওনার চোখের কাজল লেপটানো, ঠোঁটের লিপস্টিকটা মুছে হালকা হয়ে গেছে যেন কেউ সেই ঠোঁট জোড়া দখল করে রসনাতৃপ্ত হয়েছে ৷ গায়ের ছোট পোশাকটাতে শরীরের প্রায় বেশিরভাগ অংশই দেখা যাচ্ছে ৷
আরুর চোখ দিয়ে টপটপ করে জল গড়িয়ে পড়ছে ৷ ভাঙাভাঙা গলায় ডেকে উঠলো
” আম্মু !”

তুমি নামক প্রাপ্তি পর্ব ২৮