তুমি হৃদয়ে লুকানো প্রেম পর্ব ১৭

তুমি হৃদয়ে লুকানো প্রেম পর্ব ১৭
তাহিরাহ্ ইরাজ

মুখোমুখি দাঁড়িয়ে দুই পক্ষ। তৃষা ও বন্ধুরা মৃদু ঘাবড়ে রয়েছে। সন্তর্পণে একে অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করছে। আর বিপরীতে দাঁড়িয়ে থাকা মানব? সে ভ্রূ কুঁচকে শুধালো,
” কি বললে? দুয়া বিয়ে করেছে? ”

পুষ্পি এখন বোকা বনে গেছে। বুঝতেই পারছে না কি থেকে কি বলবে। শেষমেষ এভাবে ফেঁসে গেল? কি দরকার ছিল মুখ ফসকে সত্যিটা বলার? এবার কি হবে? ওরা যখন অস্থিরতায় চরম বিপর্যস্ত তখনই হঠাৎ সশব্দে হেসে উঠলো রুমান। হকচকিয়ে গেল ওরা সকলে। ক্যান্টিনে উপস্থিত বাকিরাও ওদের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। রুমান হাসতে হাসতে একটা চেয়ার টেনে বসে পড়লো। তার পেছনে গিয়ে দাঁড়ালো সাগরেদরা। রুমান হাসতে হাসতে বললো,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

” হোয়াট অ্যা জোকস্! হা হা। আমার দুয়া ডার্লিংয়ের কথা ব্যতিত বহুদিন পর অন্য কারোর কথায় হাসলাম। পুষ্পি থ্যাংকস টু ইউ। একটা ক্লেমন ট্রিট দিলাম। মনে করে ক্যান্টিন থেকে খেয়ে নিয়ো। ওকে? ”
পুষ্পি দাঁতে দাঁত চেপে মুখ ঘুরিয়ে দাঁড়ালো। ওই শ*তান এর দিকে তাকালেই গা’লমন্দ করতে ইচ্ছে করবে। রুমান এবার ওদের দিকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকালো। উদাসীন কণ্ঠে শুধালো,

” দুয়া ডার্লিং কোথায়? আসেনি? ”
তৃষা রাগ নিয়ন্ত্রণ করে জবাব দিলো,
” না আসেনি। ”
” কেন? ও ঠিক আছে তো? অসুখ হয়েছে? ”
আলগা পিরিত দেখে বন্ধুদের মেজাজ বেশ গরম!

” রুমান ভাই। দুয়া ঠিক আছে। সময় হলে চলে আসবে। এবার আমরা আসি? আসসালামু আলাইকুম। ”
বিশাল লম্বা এক সালাম দিয়ে বন্ধুদের নিয়ে ক্যান্টিন থেকে বেরিয়ে এলো। হাঁটতে হাঁটতে রাগ প্রকাশ করলো বিন্দু।
” শা লা শ*তান! মেয়ে মানুষ দেখলেই জিভ ল্যাক ল্যাক করে ওঠে! কোন অলক্ষুনে যে ওইটার কুনজর দুয়া’র ওপর পড়লো? মন তো চায় ওর লু* চোখ দুইটা তুলে মার্বেল খেলি। ”
বিশাল গম্ভীর স্বরে বলে উঠলো,

” নেহাত ভার্সিটির সিনিয়র ভাই। পাওয়ারফুল লোক। নইলে বুঝিয়ে দিতাম কত ধানে কত চাল। ”
তিয়াশ চোখের চশমা ঠিক করে বললো,
” সবকিছুরই সীমা থাকে। সেই সীমা অতিক্রম করলে অসুবিধা। আপাতত যা হচ্ছে অতিরিক্ত হচ্ছে। ঠিক হচ্ছে না। আদ্রিয়ান স্যারকে কি জানানো উচিত? ”
তৃষা ভাবুক হয়ে বললো,

” উঁহু আপাতত থাক। ভাইয়া এমনিতেই চায় না ভার্সিটির কেউ জানুক ভাইয়া আমাদের আপনজন। যদি ওই রুমান বেশি বাঁদরামি করে তখন নাহয় বলা যাবে। ”
” ঠিক বলছোছ। আপাতত ওইটারে দাঁতে দাঁত চিপা টলারেট করতে থাকি। ”
পুষ্পির কথায় সম্মতি পোষণ করলো বন্ধুরা। হাঁটতে হাঁটতে ওরা যার যার ডিপার্টমেন্টের দিকে অগ্রসর হতে লাগলো।

আদিত্যর কিরণে উজ্জ্বল বসুধা। ফজরের সালাত আদায় করে দুয়া আর ঘুমায়নি। বাগানে হাঁটলো অনেকটা সময় নিয়ে। নিজেকে বিলিয়ে দিলো প্রকৃতির মাঝে। ফুলের সুবাস টেনে নিলো ঘ্রাণেন্দ্রিয়ে। ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা হাওয়ায় দেহমন জুড়িয়ে গেল। অনেকটা সময় অতিবাহিত হলো বাগানে। অতঃপর দুয়া বাড়িতে প্রবেশ করলো। পুরো বাড়ি এখনো কেমন নীরব! সবাই ঘুম থেকে ওঠেনি বোধহয়। দুয়া বড় শ্বাস ফেলে লিভিংরুম ক্রস করে সিঁড়ির দিকে অগ্রসর হলো। পথিমধ্যে দেখা হলো তাসলিমার সাথে। দু’জনেই একে অপরকে দেখে মুচকি হাসলো।

” আসসালামু আলাইকুম খালামণি। গুড মর্নিং! ”
” ওয়া আলাইকুমুস সালাম। গুড মর্নিং। কিন্তু এসব কি শুনছি দুয়া? ”
ভ্যাবাচ্যাকা খেল দুয়া!
” মানে? আমি কি ভুল কিছু বলেছি? ”
” নিশ্চয়ই বলেছিস। তবে কি আমি ভুল শুনেছি? ”
তাসলিমার কণ্ঠ কিঞ্চিৎ রূঢ়। যাতে ঘাবড়ে গেল মেয়েটা। আমতা আমতা করে বললো,
” খালামণি আ আমি..”
কথাটা সম্পূর্ণ করতে না দিয়েই,
” আবারো? তোর সাহস তো কম না। ”

দুয়া এবার মলিন মুখে খালামণির কাছে গিয়ে তাকে দু হাতে আলিঙ্গন করলো। আদুরে কণ্ঠে বললো,
” খালামণি! ও খালামণি! রাগ করছো কেন? আমি কি ভুল করেছি? তুমি বলো। আমি শুধরে নেয়ার চেষ্টা করবো। ”
” কচু করবি। যে মেয়ে বিয়ের পর শাশুড়িকে খালামণি ডাকে তার দৌড় কতদূর জানা আছে আমার। ”
জিভ কা’মড়ে হালকা সরে গেল দুয়া। মেকি হেসে বললো,
” হি হি। তুমি শাশুড়ি মা! মনে থাকে না তো। তাই গালতি ছে মিস্টেক হয়ে যায়। ”
তাসলিমা ওর কান মলে দিলো।

” পাঁজি মেয়ে। ভুল করে আবার হিন্দি বলা হচ্ছে? ”
দুয়া মিথ্যা মিথ্যা কঁকিয়ে উঠলো।
” আউচ! লাগছে খালামণি। ”
” আবারো? খালামণি বলে কতকাল ডাকবি? মা বল। ”
দুয়া শাশুড়ির হাতটা কান থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে করতে বললো,
” উঁহু খালামণি! লাগছে তো। কান ছাড়ো। আমি মা বলছি। উফ্। ”
তাসলিমা দজ্জাল শাশুড়ির ভান ধরে কান ছেড়ে দিলেন। শাসনের স্বরে বললেন,
” মা বলবি কিনা বল। ”

ফিক করে হেসে উঠলো দুয়া। হাসতে হাসতে বললো,
” তোমার কথা শুনে বাংলা সিনেমার নাম মনে পড়ে গেল খালামণি। ভালোবাসা দিবি কিনা বল। শাকিব খানের। হা হা হা। ”
তাসলিমা আর অভিনয় জারি রাখতে পারলেন না। ব্যর্থ হয়ে উনিও হেসে উঠলেন। জড়িয়ে ধরলেন আদুরে ছানাটাকে। দুয়াও ওনার বুকে আদুরে ছানার মতো মিশে গেল‌। তাসলিমা ওর চুলের ভাঁজে চুমু এঁকে বললেন,

” ভার্সিটি যাবি না আজ? ”
” হুঁ যাবো। ”
” আচ্ছা রুমে যা। ধীরে সুস্থে রেডি হ। ”
” হুঁ। ”
খালামণির অধরের ছোঁয়া ললাটে পেয়ে দুয়া তৃপ্তিময় হাসলো। মাথা সরিয়ে নিলো বক্ষস্থল হতে। তাসলিমা ওর এলোমেলো চুল গুছিয়ে দিলেন। বললেন,
” গিয়ে দেখ তূর্ণ উঠেছে কিনা। না উঠলে ডাক দে। ”
” আচ্ছা। আমি যাচ্ছি। ”
মুচকি হেসে লিভিংরুম ত্যাগ করলো দুয়া। সেথায় তাকিয়ে তৃপ্তির আভা ফুটে উঠলো তাসলিমার মুখশ্রীতে। উনি খুশিমনে কিচেনের দিকে অগ্রসর হলেন।

দুয়া’র মুখমণ্ডলে খুশির ছাপ। আনমনে মেয়েটা প্রবেশ করলো বেডরুমে। প্রবেশ করেই সম্মুখে দৃষ্টি আবদ্ধ হলো। হকচকিয়ে গেল তৎক্ষণাৎ। মৃদু চিৎকার করে দু হাতে আঁখি যুগল আড়াল করে ঘুরে দাঁড়ালো। ওর চিৎকারে হতবিহ্বল হলো উপস্থিত মানব!
” হোয়াট দ্যা হেক! সকাল সকাল চেঁচামেচি করছিস কেন পুতলা? ”
অপর দিকে ঘুরে দাঁড়িয়েই দুয়া জবাব দিলো,

” চিৎকার করবো না তো কি করবো? এ কি হাল করে দাঁড়িয়ে আছো? ছিঃ। লজ্জা শরম নেই নাকি? ”
তূর্ণ সমতল আরশিতে দুয়া’র অবস্থান লক্ষ্য করে ঘুরে দাঁড়ালো। একবার তাকালো নিজের দিকে। পড়নে তার শুভ্র রঙা তোয়ালে। উদোম দেহে শুধুমাত্র তোয়ালে। যা কোমড় থেকে হাঁটু অবধি। ডান হাতে শুকনো একটি তোয়ালে। যা চালনা করে চলেছে কেশের ভাঁজে ভাঁজে। নিজেকে দেখে তূর্ণ বক্র হাসলো। দুয়া’র পৃষ্ঠদেশে তাকিয়ে বললো,
” লজ্জা নারীর ভূষণ। জন্মগত ভাবেই ছেলেরা বেলাজ। বেশরম। জানিস না বুঝি? ব উ? ”

শেষোক্ত থেমে থেমে বলা ‘ বউ ‘ শব্দটি দুয়া’র কর্ণ গহ্বরে ঝঙ্কার সৃষ্টি করলো। অজান্তেই চক্ষুযুগল হতে দু হাত সরে গেল। অধর কোলে দেখা মিললো সরু রেখার। দু কপোলে লজ্জালু আভা। ওপাশে থাকা মানুষটি কি তা অনুধাবন করতে পারলো? হাতে থাকা তোয়ালেটি বিছানায় ফেলে দিলো তূর্ণ। আস্তে ধীরে অগ্রসর হতে লাগলো তার মাইরা’র পানে। পুরুষালি কদম অনুভব করতে পারলো মেয়েটি।

ললাটে দেখা মিললো স্বেদজলের। সেথা হতে সরে যাওয়ার ইচ্ছে সত্ত্বেও এক কদম নড়তে পারলো না দুয়া। পদযুগল যেন মেঝেতে আটকে। ওর খুব সন্নিকটে এসে থামলো তূর্ণ। দাঁড়ালো পৃষ্ঠদেশ ছুঁই ছুঁই করে। এত সন্নিকটে পুরুষালি উপস্থিতিতে মেয়েটার রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়লো শিহরণ। তড়িৎ সেথা হতে সরে যাওয়ার প্রয়াস চালালো। কিন্তু বাধাপ্রাপ্ত হলো অপ্রত্যাশিতভাবে। ডান কাঁধ আঁকড়ে ধরেছে মানুষটি। না চাইতেও থমকে গেল মেয়েটি। শ্বাস প্রশ্বাস এর গতিবেগ দ্রুততম। কাঁধে হাত রেখেই আরো সন্নিকটে এলো তূর্ণ। কর্ণে উষ্ণ শ্বাস ফেলে ফিসফিসিয়ে শুধালো,

” সে কি বেলাজ পুরুষের সান্নিধ্যে লজ্জা পাচ্ছে? ভেঙ্গে দেবো কি লাজের সমস্ত স্তর? ”
এমন ভ”য়ংকর শব্দমালায় মেয়েটির সারা কায়ায় কম্পন শুরু হলো। আর পারলো না সইতে। কাঁধ হতে হাতটি সরিয়ে দ্রুততম পায়ে কক্ষ ত্যাগ করলো। সেথায় তাকিয়ে নিম্ন অধর কা’মড়ে হাসলো তূর্ণ। সে কি মোহনীয় হাসি!

” দুয়া বেবি! তুই নাকি বিয়ে করে ফেলেছিস? ”
সবে মাত্র বোতলে মুখ লাগিয়েছিল দুয়া। পুষ্পির কণ্ঠে এতটাই স্তব্ধ হলো যে নাকেমুখে বিষম খেলো। ঘাবড়ে গেল ওরা সকলে। তৃষা তাড়াতাড়ি করে ওর পিঠে হাত বুলিয়ে দিলো। আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হলো মেয়েটা। তৃষা চক্ষু গরম করে পুষ্পির দিকে তাকালো।

” ফ*ন্নি মাইয়া! আরেকটু হলেই তো আমার ভাইয়ের ভবিষ্যত মাইরা দিতি। ”
” স্যারের ভবিষ্যত! মানে কি বুইন! এক্সপ্লেইন মি প্লিজ।”
পুষ্পির নাটুকে কথায় তৃষা দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
” আমার ভাইয়ের বউ এই মাইয়া। অর কিছু হইলে আমার ভাইয়ের কি হইতো? আমার অনাগত ভাতিজা ভাতিজি কোথ থে আইতো? প্লে স্টোর থে? ”

এত ভ’য়াবহ দূরদর্শিতা! হতবিহ্বল বন্ধুরা সকলে! দুয়া তো পারছে না লাজে রাঙা হয়ে মাটির অন্তরালে লুকিয়ে পড়তে। ছিঃ! মেয়েটা এত বেশরম কেন? পুষ্পি দাঁত কেলিয়ে হাসলো।
” প্লে স্টোর কেন? আমি আছি না? একশো উনপঞ্চাশ তম ক্রাশরে নাহয় শাদী করে তোরে ভাতিজা ভাতিজি গিফট করতাম। ”

” এ্যাহ্! শখ কত মাইয়ার। ” তৃষা বিদ্রুপ করে হাসলো।
তিয়াশ এসব ছেড়ে দুয়া’র পানে তাকালো।
” দুয়া। ”
ডাক শুনে ওর দিকে তাকালো দুয়া।
” হাঁ বল। ”
” তুই কি সত্যিই…। বিয়েটা সত্যি সত্যিই হয়েছে? ”
দুয়া তাকালো তৃষার পানে। তৃষা মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো। দুয়া এবার দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,
” হাঁ রে। সত্যি। নাউ আ’ম ম্যারিড। বেটারহাফ অফ আদ্রিয়ান আয়মান তূর্ণ। ”
বন্ধুরা চরম আশ্চর্যান্বিত! ভুলে গেল কোনোরূপ বাক্য ব্যয় করতে। ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইল বান্ধবীর দিকে। বিন্দু এবার ঘোর থেকে বেরিয়ে এলো। দুয়া’র পিঠে ঘু|ষি মে রে বললো,

” কত্ত বড় শ*তান। বন্ধুমহলরে না জানাইয়া তিন কবুল বইল্লা ফেললো! এই তুই এইডা করতে পারলি? একটুও বুক কাঁপলো না? আমগো ভাগের খাবার এমনে মাইরা দিলি? ছিঃ ছিঃ ছিঃ। তুই তো বন্ধু নামের ক*লঙ্ক। ”
দুয়া রাগ করতে গিয়েও পারলো না। সশব্দে হেসে উঠলো। এতে আরো তেঁতে উঠলো বিন্দু। দুয়া হাসতে হাসতে বললো,
” ডায়লগবাজি শেষ? নাকি আরো আছে? ”
” আছে। কিন্তু এহন বলার মুড নাই। আই অ্যাম তো ক্লান্ত। ”
সকলেই হেসে উঠলো। দুয়া হাসি থামিয়ে এবার গম্ভীর হলো।
” দোস্ত যেখানে আমি নিজেই জানতাম না বিয়ে হবে সেখানে তোদেরকে বলবো কি করে? ”
বন্ধুরা এহেন কথায় চমকালো!

” মানে? ঠিক বুঝলাম না। ”
তিয়াশ জিজ্ঞাসু নয়নে তাকিয়ে রয়েছে। দুয়া দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,
” বিয়েটা একদম আনএক্সপেক্টেড ছিল। আমরা কেউই জানতাম না। ”
” দেখ দোস্ত আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না। তুই একটু ক্লিয়ার করে বলবি! ”
বিশালের কথায় সম্মতি পোষণ করলো বিন্দু।
” হাঁ ক্লিয়ার করে বল। আসলে হয়েছিল টা কি? ”
জবাবের অপেক্ষায় বন্ধুমহল। দুয়া বুঝতে পারছে না সে কি জবাব দেবে। যেখানে সে নিজেই প্রকৃত সত্য সম্পর্কে অবগত নয়। এখন বলবে টা কি?

অপরাহ্ন প্রহর। ক্লাসমেটের কাছ থেকে জরুরি নোটস কালেক্ট করে বাড়ি ফিরছে তৃষা। চলন্ত রিকশায় বসে উপভোগ করছে শহরের অপরাহ্ন। এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে হঠাৎ দৃষ্টি গেল রাস্তার এক পাশে। অবাক হয়ে গেল মেয়েটা! এ কি দেখছে সে! জাবির! হাঁ জাবির ই তো। রাস্তার এক পাশে দাঁড়িয়ে কারো সাথে কথা বলছে। ক্ষণিকের মধ্যেই মানুষটিকে পেছনে ফেলে অগ্রসর হলো রিকশা। পিছু ঘুরে আরেকবার তাকালো তৃষা। নিশ্চিত হলো ওটা জাবির ই। আস্তে করে সোজা হয়ে বসলো তৃষা।

” জাবির ভাইয়া! উনি এখানে কি করছেন? ওনার মা-বোন না বিয়ের দু’দিন পর ই বগুড়া চলে গেল? তাহলে উনি রয়ে গেলেন কেন? আর উনি যে শহরেই আছেন এটা কি দুয়া জানে? উঁহু জানে না বোধহয়। ও জানলে কোনো না কোনোভাবে আমিও জানতে পারতাম। এর মানে ও জানে না। তাহলে এই মানুষটা শহরে করছে কি? ”
ভাবনায় পড়ে গেল তৃষা। চলন্ত রিকশায় ভাবুক মেয়েটি অপরাহ্নের সৌন্দর্য বাদ দিয়ে ভাবনার সাগরে ডুবে গেল।

তুমি হৃদয়ে লুকানো প্রেম পর্ব ১৬

” তূর্ণ ভাইয়া! আজ একটা সত্যি জানতে চাই। আমাদের বিয়ের পেছনে লুকায়িত সত্যিটা কি? কেন বিয়ে হলো আমাদের? সে রাতে এক্সাক্টলি কি হয়েছিল? ”
একসাথে এত প্রশ্ন! হতবিহ্বল হলো আদ্রিয়ান আয়মান তূর্ণ!

তুমি হৃদয়ে লুকানো প্রেম পর্ব ১৮