তোমার নেশায় আসক্ত পর্ব ১৮ || Suraiya Aayat || SA Alhaj

তোমার নেশায় আসক্ত পর্ব ১৮
Suraiya Aayat

সকাল আটটার সময় এমারজেন্সি টিকিট কেটে আরূ আর আরিশ ঢাকায় পৌঁছেছে….
সেই ভোরবেলা থেকে সানা ফোন করেই চলেছে যাতে ওরা তারাতারি চলে আসে…..
আরূ বাড়ি এসে আসতেই আরূ কে সানা টেনে নিয়ে ওর ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে নিয়েছে , ওকে চেঞ্জ অবধি করতে দেয়নি ৷
সারারাত ঠিক করে চিন্তায় চিন্তায় ঘুমাতে পারিনি আরূ ৷ একদিকে আরিসকে নিয়ে চিন্তা, অন্যদিকে ওর বাবাকে নিয়ে চিন্তা , আর এদিকে সানার , সকলের চিন্তা একসঙ্গে ছোট্ট মাথাটায় বড্ড বেশি প্রেসার দিচ্ছে ৷ মাথাব্যথা করছে প্রচন্ড কিন্তু এখন যদি সে কথাটা ও সানাকে বলে তাহলে সানা ভাববে আরু হয়তো ওকে সাহায্য করবে না বলেই এমনটা বলছে তাই আরূ কিছু বলতে পারছেনা ৷

সানা: কিরে তুই কিছু বলছিস না কেন? বল আমি কি করবো এখন?
আরূ নিজেকে ক্রমশ স্থির রাখার চেষ্টা করে বলল: দেখ সানা জেদ করিস না আমার মনে হয় তোর আরাভ ভাইয়াদের বাড়ি যাওয়া উচিত ৷আর তুই বললেও আমার মনে হয় না বাবা তোর কথা শুনবেন তাই বেকার জেদ করিস না তাহলে খামোখা বকা খাবি সকলের কাছে ৷
সানা : আরূ তুইও ওইরকম বললি তো সকলের মত! আমাকে কেউ বুঝলো না বলে ন্যাকা কান্না করে৷
আরু: দেখ সানা তুই যেটা ভাবছিস সেটা নয় , তোর ভালোর জন্যই বলছি ৷ তুই যদি আরাভ ভাইয়াকে বিয়েটা করতে না চায় তাহলে ওনার সঙ্গে একান্তে কথা বলে সরাসরি ওনাকে জানা যে তুই ওনাকে বিয়ে করতে চাস না তাহলেই তো সব সমস্যা মিটে যায়৷
সানা : উনার সঙ্গে আলাদাভাবে আমি আর কথা !কোনভাবেই না ৷ বাবা উনি মানুষ না ডাকাত ৷আমার ওনাকে খুব ভয় লাগে ৷
আরু: সানা তুই কিন্তু এবার একটু বেশিই জেদ করছিস ৷ এরকম করলে আমি কিন্তু তোকে কোন সাহায্য করবো না বলে দিলাম

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

সানা :আচ্ছা আমি ওনাকে গিয়ে সব বলবো তবে তোকেও আমার সঙ্গে যেতে হবে ৷
হঠাৎ বাইরে থেকে আরিশ এসে বলল : হ্যাঁ তোর সঙ্গে যাবে তবে তার আগে আমার বউটাকে তুই আমার সঙ্গে যেতে দে ৷
সানা আরুকে হালকা করে ওর কাঁধ দিয়ে ধাক্কা মেরে:উফফফ ভালোবাসা ৷
আরু সানার দিকে অবাক চোখে তাকালো ,তাকিয়ে বলল : সানাহহহ এসব কি কথা!
আরিস: আরূপাখি তাড়াতাড়ি এসো ৷
সানা : না ও যাবে না , আমি এখন ওর সঙ্গে একটা ইমপরটেন্ট কথা বলছি ,আমার কথা শেষ হলে তারপর যাবে ৷
আরিশ: আরূপাখি আসবে কি আসবে না?
আরু আরিশের দিকে কাচুমুচু মুখ করে রইল,,,,,
সানা : ভাইয়া ও একটু পরে যাচ্ছে, তুই এখন যা তো৷
আরিশ এবার আরুর কাছে গিয়ে আরুকে কোলে তুলে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল ৷

আরু শক্ত করে আরিশের গলাটা জড়িয়ে ধরেছে ওর হাত দুটো দিয়ে ৷ অনেক ভরসা করে মানুষটাকে , জানে যে কখনও তাকে ছেড়ে যাবে না ৷ মাঝে মাঝে ওর খুব ইচ্ছা হয় আরিশকে ভালবাসতে তবে কোথাও যেন একটা দ্বিধা বোধ কাজ করে তাই জন্যই হয়তো এখনো ভালোবাসি কথাটা বলে উঠতে পারেনি ৷ ভালোবাসা শব্দটা নিয়ে ওর মনে কিঞ্চিৎ একটু সন্দেহ আছে কারণ সত্যিই কি এইকদিন এ একটা মানুষের প্রতি ভালোবাসা সম্ভব ? ভালোবাসার কোন সময় লাগে না সেটা মন মানলেও মস্তিষ্কটা কিছুতেই যেন মানতে চায় না , বারবার বিরোধিতা করে মনটার৷ ভালোবাসি শব্দটা বলার সুযোগ টা কি ও পাবে?
আরিশ ওকে কোলে করে নিয়ে ওয়াশ রুমে চলে গেল ৷ ওয়াশ রুমে ঢুকতে দেখে আরূ আরিশকে বলল,,,,,
আরুশি: একি আপনি ওয়াশরুমে নিয়ে যাচ্ছেন কেন?
আরিস আরুশিকে শাওয়ারের নিচে দাঁড় করিয়ে নিজেও দাঁড়ালো তারপর শাওয়ারটা ছেড়ে দিতেই জল গুলো পড়ে দুজনের শরীরকে ভিজিয়ে দিল…..
আরিশ :তোমার যে মাথা ব্যাথা করছিল তাও তুমি ওখানে বসে ছিলে কেন ?সানাকে তো বলতে পারতে, বলে কি চলে আসা যেত না!

আরু অবাক চোখে আরিশের দিকে তাকালো ৷ মাথা থেকে টপটপ করে জলের ফোঁটা গুলো চোখে মুখে আছড়ে পড়ায় ঠিক করে তাকাতেও পারছে না তাই কোনোরকমে পিটপিট করে আরিশের দিকে তাকিয়ে বলল : আপনি কি করে জানলেন যে আমার মাথা ব্যাথা করছিল?
আরিশ আরুর কোমর জড়িয়ে ধরে নিজের কাছে টেনে নিয়ে বলল : ভালোবাসা আরুপাখি ,সবই ভালোবাসা ৷ যেদিন তুমিও আমাকে আমার মত করেই ভালোবাসবে সেদিন তুমিও বুঝবে আমার প্রতিটা হৃদয়ের স্পন্দন, তোমার অনুভবে শুধু আমিই থাকবো, তোমার আসক্তিতে পরিণত হব আমি , তখন আমি বিহীন তুমি কিছুই নয় , প্রতিটা মুহূর্তে তুমি আমাকেই পেতে চাইবে ,এমনই এক ভালোবাসা বাসতে হবে তোমাকে যেমনটা আমি তোমাকে বাসি আরুপাখি , তাই বুঝতে পারি তোমার না বলা সত্ত্বেও তোমার এই অজানা অনুভূতিগুলো ৷ তুমিও এক এমন এক অনুভূতিতে একদিন জর্জরিত হবে তবে সেদিন হয়তো আর সুযোগ থাকবে না যদি কোন ভুল করো ৷

“সুযোগ থাকবে না “কথাটা শুনেই আরুর সমস্ত শরীরটা যেন কেঁপে উঠলো ৷ আরিশের কথার মধ্যে যে কোথাও একটা গভীর ইঙ্গিত রয়েছে সেটা আরূ বুঝতে পারল৷ তবে সত্যিই কি ভুল করছে ও আরিশকে এভাবে ঠকিয়ে , যেখানে ওর আরিশকে সমুদ্র সমান ভালোবাসার কথা ৷
আরিশ আরুশিকে ঝাকিয়ে: কি হলো আরুপাখি?কী ভাবছো এত?
আরুশি চমকে গিয়ে বলল : কই কিছু নাতো…
আরিশ আরুশিকে জড়িয়ে ধরে বলতে লাগলো :সারা জীবন এভাবেই ভালোবাসবো তোমাকে সেদিন হয়তো তুমিও আমার অনুভূতি গুলো বুঝতে পারবে৷
আরুশি আরিসের বুকে মাথা রেখে মনে মনে বলতে লাগল : সত্যিই কি সেই দিন আসবে নাকি সবকিছু হওয়ার আগেই শেষ হয়ে যাবে?

ওরা রেডী হয়ে আরাভদের বাসায় চলে গেছে ৷ সানা একটা লাল রংয়ের থ্রি পিস পরেছে আর আরু একটা সবুজ রঙয়ের শাড়ি পড়েছে সঙ্গে আরিশের পছন্দ করে দেওয়া ম্যাচিং করা জুয়েলারি আর লিপস্টিক পরেছে , সব মিলিয়ে অপ্সরীর থেকে কম লাগছে না ওকে ৷ আরিশ ও আরূর সঙ্গে ম্যাচিং করে একটা সবুজ রঙের পাঞ্জাবি, হাতে কালো ব্র্যান্ডের ঘড়ি আর চুলগুলোতে সামান্য জেল দিয়েছে ৷ আরূ তো আরিশকে দেখেই ক্রাশ খেয়েছে ৷

ড্রয়িং রুমে সকলে বসে আছে আর সকলের নজর এখন সানার দিকে ৷ ভয়ে বেচারি গুটিসুটি হয়ে গেছে৷ আরূ ও বেশ নার্ভাস ফিল করছে সানাকে দেখে ৷ সারা রাস্তা সানাকে সাহস দিতে দিতে এসেছিল আরূ তবু এখানে এসে ভয়ে কেমন গুটিসুটি হয়ে গেছে মেয়েটা ….
আরাভের মা :আমার অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল আমি সানাকে আমার বাড়ির বউ করে আনব৷ তবে ওকে আমার বউ নয় আমার মেয়ের মত করেই রাখবো….
আরিশ : আন্টি আরাভ কিন্তু ওর সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে , আমি ভাবি নি, যে সারাক্ষণ ভিজে বিড়ালের মত হয়ে থাকে সে এভাবে নিজের বিয়ের প্রস্তাবটা নিজেই দেবে ৷ আই এম ইমপ্রেসড ৷
আরাভ: তুই আমার কথা কি বলছিস ?তুই নিজেই তো একটা ভিজে বিড়াল ৷ মনে নেই 6 মাস আগের কথা, যখন ভাবির accident……

আরাভ কিছু বলতে যাবে তার আগে আরিশ ওকে থামিয়ে দিল…..
আরিস : সে তুই যাই বলিস না কেন তোর সাহস আছে ব্রো ৷
আরাভ কিছু বলতে বলতেই আরিশ যে ওকে থামিয়ে দিলে সেটা আরুর চোখে এড়ায়নি ৷
“ভাবির অ্যাক্সিডেন্ট” কথাটা মানে আরুশির অ্যাক্সিডেন্টের কথা ওরা বলছিল ৷আরাভ কথাটার মাধ্যমে যা ইঙ্গিত দিলো তা পুরোটা শুনতে পারল না আরিশের জন্য৷
আরুশির মনে এখন অনেক প্রশ্ন জাগছে ,তাহলে আরিশ কি আরুশিকে অনেক আগে থেকেই জানে? কিন্তু ওদের তো আলাপ সবে তিন মাস মাএ, তাহলে কিভাবে ?
এদিকে সকলের কথা শুনছে সানা আর প্রচন্ড অস্বস্তিতে ভুগছে , প্রচণ্ড বিরক্তি লাগছে ওর , তাড়াতাড়ি বাড়ি যেতে পারলে বাচে….

সানা আরুকে সামান্য খোঁচা দিয়ে বললো : আরূ আমার একটা ব্যবস্থা কর না , আমি আর কতক্ষণ বসে থাকবো? আর ভাইয়াকে দেখ আমার বিয়ে ভাঙতে এসে আরো উল্টে জোড়া লাগিয়ে দিচ্ছে ,বাড়ি যাই ওকে দেখাচ্ছি মজা ৷
আরূ:আমি ব্যবস্থা করছি তার আগে নিজে একটু নরমাল হ , কেমন আনইজি লাগছে তোকে দেখতে…
সকলের কথার মাঝখানে হঠাৎ আরু বলে উঠলো: আন্টি আমার মনে হয় আরাভ ভাইয়া আর সানার একান্ত কিছু কথা থাকতেও পারে তাই ওদের একটু ফ্রি স্পেস দিলে ভালো হতো….
আরাভের মা : অবশ্যই, তোমরা কথা বল আমি আসছি….

আরাভের মুখে একটা ডেভিল হাসি তা দেখেই সানার গলা শুকিয়ে আসছে, একেই আরাভের বাড়িতে এসেছে তাই আরাভের জোরটাও বেশি তার ওপর আবার দুজন একই সঙ্গে আলাদা কথা বলবে ৷ এতদিন আরাভকে যা যা বলে অপমান করেছে আজকে যদি আরাভ তার প্রতিশোধ নেয়, তখন কি করবে ও ? চেঁচামেচি করে হাঙ্গামা করলেও খারাপ দেখায় , তাই যথেষ্ট স্থির রেখে কাজগুলো করতে হবে ৷ আসার আগে আরূ ওকে যা যা শিখিয়ে দিয়েছিল সমস্ত লাইনগুলো একবার মনে করে নিচ্ছিল সানা , কোন একটা লাইন ভুল হলেই মুশকিল ৷ মনে মনে আরুকে হাজারটা থ্যাংকস জানাচ্ছে সানা কারণ আরু যে স্ক্রিপ্টটা ওকে বলতে বলেছে তা যদি যে কাউকে শোনানো হয় তাহলে সে বিয়ে ভেঙে দিতে অবশ্যম্ভাবী৷
আরাভের সাথে পা টিপে টিপে সানাও আরাভের ঘরে গেল,,,,
আরাভ:হ্যাঁ শুনলাম তোমার নাকি আমাদের বিয়েটা নিয়ে কোন কথা আছে তা বল ৷ আরাম করে সোফাতে বসে বলতে লাগলো আরাভ ৷

সানা দাঁড়িয়ে আছে আরাভের পাশে বসার সাহস টুকুও পাচ্ছে না ৷
আরাভ: দাঁড়িয়ে আছো কেন ? বস নাকি আমার পাশে বসতে ভয় পাচ্ছো ?
সানা: না না ভয় পাবো কেন ! আমার ভাল লাগছে তাই আমি দাঁড়িয়ে আছি আপনার কোন সমস্যা?
আরাভ ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে: না সমস্যা নেই, তবে চোখের সামনে একটা অভাগী নারী দাড়িয়ে থাকবে সেটা আমার সহ্য হয় বল ! বলে মুখ টিপে হাসতে লাগলো ৷
সানার এই মুহূর্তে আরাভের প্রতি প্রচন্ড রাগ হচ্ছে তবুও নিজেকে সংযত করে নিচ্ছে না হলে যে আরুর বলা স্ক্রিপ্টগুলো ভুলে যাবে….

আরাভ: আচ্ছা সে যাই হোক তুমি কিছু বলবে বলছিলে৷
সানা একটু গলা পরিষ্কার করে নিয়ে বলল: বলছিলাম যে আমি আপনাকে বিয়ে করতে পারবোনা তার কারণ ,,,,এটুকু বলে সানা পরের লাইনটা কি আছে ভুলে গেছে তাই থেমে গেলে মাঝপথে ৷
আরাভ: হ্যাঁ কি বল!
সানা মনে মনে : দূর লাইনটা যে এখন আর মনে পড়ছে না ৷
আরাভ :কি হল বল৷
সানা কাচুমুচু মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে পরের লাইনটা কোনভাবেই মনে করতে পারছে না , কিন্তু কিছু একটা তো বলতেই হবে….

আরাভ একটু জোরেই বলল: কি হলো বলছো না কেন? চুপ করে আছো কেন?
সানার এবার স্ক্রিপ্টটা মনে পড়ে গেল তাই আনন্দে জোরে চেঁচিয়ে বলল : হ্যাঁ মনে পড়েছে আমি নন-ভার্জিন’ ৷
সানার কথা শুনে আরাভ সামান্য ভ্রু কুঁচকে তাকাল,,,,,
আসলে ভার্জিন শব্দ টার অর্থ সানা জানে তবে গভীরভাবে ব্যাপারটা নিয়ে কখনও ভেবে দেখেনি বলে এ সম্বন্ধে বেশকিছু আইডিয়া ওর নেই তাই আরু যা শিখিয়েছে তাড়াহুড়োতে সেটুকুই বলেছে….
আরাভ এবার উঠে দাঁড়িয়ে সামান্য বাকা চোখে তাকালো,,,,
আরাভ: Do you have any idea what are u saying ? উত্তেজিত হয়ে ৷
সানার মনে মনে লাড্ডু ফুটছে ও ভাবছে আরাভ হয়ত ওর কথা বিশ্বাস করে নিয়েছে কিন্তু যতক্ষণ ও ভাব ছিল ততক্ষণে আরাভ সানাকে কাছে টেনে নিয়ে সানার ঠোঁট দুটো দখল করে নিয়েছে, আর সানা আরাভের থেকে কোন ভাবেই নিজেকে ছাড়াতে পারছেনা ৷

কিছুক্ষণ পর আর আরাভ নিজে থেকেই সোনা কে ছেড়ে দিল ৷
একহাতে পাঞ্জাবির হাতা টা দিয়ে ঠোঁট টা মুছে নিয়ে আরাভ বলল : নাও এবার তুমি non-virgin ৷
সানা চোখ বড় বড় করে আরাভের দিকে তাকিয়ে আছে , ওর কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না আরাভের কথা ৷ তাহলে কি আরাভ যা বলছে তা কি সত্যি?
সানা : আপনি এসব কি ভুলভাল বলছেন!
আরাভ:আমি যা বলছি ঠিকই বলছি , তুমি জাননা যে কিস করলে সব মেয়েরাই নন-ভার্জিন’ হয়ে যায় ৷ আরে ওই নিব্বা নিব্বির ভিডিওগুলো তে দেখনি? কি করলে আর তুমি সারা জীবনে !
সানা আরাভের কথা বিশ্বাস করে নিয়েছে৷ কি বলবে এখন কোন ভাষায় পাচ্ছে না , নিজে আরাভ কে ফাসাতে এসে নিজেই ফেঁসে গেল ৷

আরাভ: এখন যদি অন্য কোন ছেলে জানে যে তুমি নন ভার্জিন তাহলে কিন্তু কেউ তোমাকে বিয়ে করবে না আমি ছাড়া , এবার দেখো তুমি কি করবে ৷
সানা: না আপনি মিথ্যা বলছেন, এসব হতে পারে না৷
আরাভ : বিশ্বাস না হলে তোমার ভাবি কে গিয়ে জিজ্ঞাসা করো ৷ চোখ মেরে চলে গেল…..
সানা আহাম্মকের মত দাঁড়িয়ে রয়েছে ৷ হিতে বিপরীত হয়ে গেল, এবার কি হবে?

ছাদে দাঁড়িয়ে সমস্ত পায়রাগুলো কে দূর থেকে দাঁড়িয়ে দেখছে আরূ সবগুলো সাদা রঙের পায়রা এক অপূর্ব সুন্দর একটা দৃশ্য…
আরিশ পিছন থেকে এসে আরুকে জড়িয়ে ধরল তারপর বলল:সামনে কেন এগিয়ে যাচ্ছো না আরুপাখি?
আরুশি:সৌন্দর্যকে সবসময় দূর থেকে উপভোগ করাই ভালো , কাছে গেলে সে সৌন্দর্য ফুরিয়ে যায়৷
আরিশ আরুকে নিজের দিকে ফেরালো তারপর আরুশির কপালে একটা ভালোবাসার পরশ একে বলতে লাগলো:কিন্তু তোমার সৌন্দর্য কখন আমার কাছে ফিকে হয়ে যাবে না,তুমি যেমন আমার কাছে সারাজীবন তেমনটাই থাকবে….
আরুশি: বড্ড ভয় লাগে সমস্ত দূরত্বটা কে সরিয়ে দিয়ে একান্তে কাছেপেয়ে ভালোবাসতে , যদি ভালোবাসা ফুরিয়ে যায় !
আরিশ আরূশির কথা শুনে হেসে আরুশির হাতটা ধরে সামনে এগিয়ে গেল , এগিয়ে যেতেই সমস্ত পায়রা গুলো ঝাক ভেঙে বিচ্ছিন্ন হয়ে উড়ে গেল…..

আরিস : সমস্ত কিছু যদি তুমি প্রকৃতির সঙ্গে তুলনা করা তাহলে সেটা সব সময় যে বাস্তব জীবনে সত্য হবে সেটা কোন কথা নয় , আবার তা যে মিথ্যা হবে তাও নয় ৷ জীবনটাকে নিজের মত করে উপভোগ করতে হয় আরুপাখি ৷ যদি তোমার মনে হবে যে তোমার আমাকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসা উচিত তো তুমি সেটাই করবে ৷ ভালোবাসা দেখানোর জন্য বাহ্যিক কোন কারণের প্রয়োজন হয় না ৷ যে সমস্ত ভালোবাসায় কিন্তু নামক বস্তু থাকে তা কোনো ভালোবাসাই নই, নিছকই আবেগ যা একটা প্রকৃত ভালোবাসার সামনে তুচ্ছ প্রায়ই….. প্রকৃতিকে তুমি যতটা দেবে প্রকৃতিও তোমাকে তার দ্বিগুণ ফিরিয়ে দেবে ঠিক তেমনি তুমি আমাকে যতটা ভালোবাসবে তার হাজার গুণ আমি তোমাকে ফিরিয়ে দেবো তা তুমি আমাকে ভালো না বাসলেও ৷ তোমার প্রতি আমার ভালোবাসার পরিবর্তন হবে না কখনোই….

আপনাআপনিই আরুশি নিজের মাথাটা আরিশের বুকে ঠেকালো ৷ আরিসের বুকে আরু মাথাটা রাখতেই অদ্ভুত এক প্রশান্তি অনুভব করল আরূ , এটা যেন নিরাপদ আশ্রয় যেখান থেকে ও কখনো বঞ্চিত হবে না ৷ ভালোবাসার সংজ্ঞাটা যেন আরিশ নিজের ভালোবাসা দিয়ে আরূকে বুঝিয়ে দিচ্ছে তাই হয়তো সবকিছু এত সহজ লাগছে….
আরিস ও পরম যত্নে আরুশিকে জড়িয়ে ধরে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগল….

আরাভদের বাড়ি থেকে ওরা চলে এসেছে অনেকক্ষণ৷ সানা এখনও রুম থেকে বের হইনি , এদিকে বাড়ির সকলেই খুব চিন্তা করছে ৷ হঠাৎ কি হলো যে ওখান থেকে আসার পর সানা বাইরে আসছে না ৷
আরিশের মা : আরূ মামনি তুই একটু গিয়ে দেখ না সানা কি করছে, মেয়েটা সেই কখন ঘরে ঢুকেছে তারপরে তো আর কিছুই বলছে না যহযে আরাভ কে পছন্দ কি না !
আরূ: আচ্ছা মামনি তুমি টেনশন করো না আমি যাচ্ছি ৷
সানা দরজা দিয়ে বসে আছে আর আরাভের বলা কথাগুলো ভাবছে…..
দরজায় টোকা পড়তে বাস্তব জগতে ফিরে এলো সানা৷

তোমার নেশায় আসক্ত পর্ব ১৭

সানা :কে?
আরুশি: আমি আরাভ ৷
আরুশির গলা শুনে সানা দরজা খুলে দিয়ে তাড়াতাড়ি করে আরূশির হাত ধরে ঘরের মধ্যে টেনে নিয়ে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল,,,,,
আরোশী : কি রে দরজা খুলছিস না কেন? সবাই চিন্তা করছে তো!
সানা : আরে ওনাকে ফাঁসাতে গিয়ে তো আমি নিজেই ফেঁসে গেলাম ৷
আরূ: কেন কি হয়েছে?
সানা এরপর যা যা হয়েছে সবকিছু আরুকে বলে দিল, সানার কথা শুনে ওর হাসতে হাসতে পেট ফেটে যাবে এরকম অবস্থা ৷সানার কথা শুনে যা বুঝেছে যে সত্যি ও আরাভ ভাইয়ার কথা বিশ্বাস করেছে ৷
সানা : কিরে তুই হাসছিস কেন বল , উনি সত্যি বলেছেন নাকি মিথ্যে?

আরোশী: যা বলেছেন একদম সত্যি বলেছেন একটু সিরিয়াস হয়ে কারণ এটাই একমাত্র পথ সানাকে মানানোর ৷ আরাভ যথেষ্ট ভাল একটা ছেলে তা সকলেই জানেন , তাই আরাভ সানার কখনো অযত্ন করবে না ৷ আর বিয়েটা হল সানা খুশি থকবে তা এখন না বুঝলেও পরে ও ঠিকই বুঝতে পারবে ৷
সানা ন্যাকা কান্না করে : আমার ওনাকে বিয়ে করা ছাড়া আর কোন গতি নেই ৷ তাহলে আমার ক্রাশের কি হবে এখন!
আরু চোখ বড় বড় করে বলল:তোর আবার ক্রাশ কে?
সানা : কলেজের তুরান sir .
আরুশি কতবার বলবো তোকে যে স্যার বিবাহিত৷
সানা:?? ৷

তোমার নেশায় আসক্ত পর্ব ১৯