তোলপাড় সিজন ২ পর্ব ২৩+২৪

তোলপাড় সিজন ২ পর্ব ২৩+২৪
শান্তনা আক্তার

‘জান্নাত দেখ আহসান কতটা খুশি। আর ওই রিমিও।’ দাঁত কটমট করে বলল স্রুতি।
‘হুম খুশি তো হবেই। যাকে চায়, তাকে পেলে যে-কেউ হাসবেই তো। কান্না কেন করবে?’ জান্নাত বলল।
‘এটা তো আমি চাইনা। আমার আর সহ্য হচ্ছে না এই দৃশ্য। আমি আর বসে থাকতে পারছি না।’
‘আপু যাই বলো না কেন, রিমিকে সত্যি খুব সুন্দর দেখতে৷ সিনেমার নায়িকা বা মডেল হতে চাইলে তেমন সমস্যা হবে না ওর। টাকা ছাড়া এমনিতেই চান্স পেয়ে যাবে। ভাইয়ার চোখ আছে বলতে হবে।’

স্রুতি হতভম্ব হয়ে গেল জান্নাতের কথায়। স্রুতি জান্নাতের হাতে আস্তে করে চিমটি কেটে বলল,
‘তুই কি বললি? পাল্টি খাচ্ছিস? আমাদের কি করার কথা ছিল?’
জান্নাত অজানা ভাব করে বলল, ‘কি কথা ছিল আপু?’
‘কি কথা ছিল মানে! আমরা এখানে এনাদের ইন্সাল্ট করতে এসেছি। মডেল খুঁজতে না।’
‘ওওও হ্যাঁ।’
‘ও হ্যাঁ বললেই চলবে না। কিছু একটা উপায় বের করতে হবে আমাদের। ভাব কি করা যায়।’
‘আমি কি বলি আপু!’
‘কি বলিস? বলে ফেল।’

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

‘আজ থাক৷ অন্যদিন করা যাবে। দেখনা বাপি আর দাদিয়া সামনে বসে আছে আমাদের।’
‘তো কি হয়েছে? বসে থাকুক তাতে কি?’ স্রুতি বলল।
‘আমাদের দুজনকে মেরে তক্তা বানিয়ে ফেলবে। তাও আবার সকলের সামনেই। প্লিজ চুপচাপ বসে থাকো না।’
‘চুপচাপ বসে থাকার তো কথা ছিল না। তুই এভাবে বলতে পারিস না। কিছু একটা কর প্লিজ।’
‘আমার মাথায় কিছুই আসছে না আপু। পুরো খালি মাথা।’

‘ওনাদের কথা বলা শেষ হয়ে যাচ্ছে প্লিজ জান্নাত,কিছু তো একটা কর।’
‘আপু আই এম এক্সট্রিমলি সরি। আই হ্যাভ নো আইডিয়া রাইট নাও।’
‘জানতাম তুই সময় মতো কোনো ভালো আইডিয়া দিতে পারবি না। আমাকেই কিছু একটা করতে হবে দেখছি।’
‘বৃথা চেষ্টা ছেড়ে দাও আপু।’

‘চুপ একদম চুপ। সুবিধা পার্টি মেয়ে তুই। তোকে চিনে ফেললাম। আবার আসিস আপু আপু করতে।’
স্রুতি প্রচুর রেগে কথাগুলো বলে দিল জান্নাতকে। জান্নাত কিছু মনে করেনি কারণ ও বুঝতে পেরেছে দোষটা ওরই। জান্নাত এখন আফসোস করছে ও কেন স্রুতিকে ভুলভাল বুদ্ধি দিল এই ভেবে।
স্রুতি ওর পার্স থেকে একটা ছোট প্যাকেট বের করে বলল, ‘এই দেখ জান্নাত।’
জান্নাত ভালো করে দেখে বলল, ‘আপি এইগুলো কি তোমার হাতে?’

‘দেখতে পারছিস না কি?’
‘হুম মাটি। ভেজা মাটি লাগছে।’
‘ভেজা মাটির মতো লাগছে না,ভেজা মাটিই।’ স্রুতি বলল।
‘কি করবে এটা দিয়ে?’
‘তুই শুধু দেখ কি করি।’ বলেই স্রুতি সবার দৃষ্টিগোচরে শরবতের গ্লাসে মাটি লেপ্টে দিল। তারপর চেঁচিয়ে বলল, ‘ছি ছি! এই গ্লাস ভর্তি মাটি কেন? থু আমার মুখের মধ্যেই চলে গিয়েছে খানিক।’
সকলে স্রুতির দিকে তাকালো। আম্বিয়া ছুটে গেল স্রুতির কাছে৷ তারপর বলল,

‘কি হয়েছে মা?’
‘কি হয়নি? আমরা আপনাদের গেস্ট। আর আমাদের এসব ময়লা গ্লাসে খাবার সার্ভ করছেন?’
স্রুতি ওর হাতের গ্লাসটা আম্বিয়ার হাতে ধরিয়ে দিল। আম্বিয়া গ্লাসটার গায়ে মাটি দেখে সকলের সামনে বেশ লজ্জাবোধ করলো। আম্বিয়াই থালা বাসন ধুয়েছিল। কিন্তু এতটা বেখেয়ালি হয়ে ধুয়েছে সেটা যেন আম্বিয়া মানতে পারছে না। তাই সে বলে ওঠে,

‘আমি তো খুব ভালো করেই ধুয়েমুছে তারপর পরিবেশন করেছিলাম মা।’
‘আপনি ভালো করে ধুয়েছেন মানলাম। কিন্তু এই নোংরা মাটি কোথা এলো?’
‘তা তো জানি না মা।’
স্রুতি মুখ বিকৃত করে বলল,
‘জানেন না! ওয়াও। তার মানে আমি লাগিয়েছি এই নোংরা মাটি?’

‘আমি তা বলিনি মা। আমাকে মাফ করে দিও মা।’ আম্বিয়া হাত জোর করে ক্ষমা চাইলো স্রুতির কাছে। তা দেখে মুনতাহা গিয়ে স্রুতির গালে কোষে একটা চড় বসিয়ে দিল। স্রুতি গালে হাত রেখে হতভম্ব হয়ে মুনতাহার দিকে চেয়ে রইলো। আর জান্নাত কাচুমাচু হয়ে বসে রইলো।
মুনতাহা রাগান্বিত কন্ঠে বললেন, ‘মানুষের ভুল হবে এটাই স্বাভাবিক। উনিও মানুষ। তোমার মায়ের মতো সে। তোমাকে মা বলে সম্মোধন করছে বারবার,আর তুমি তার উপর চোখ পাকিয়ে কথা বলছো?’

‘থাক খালা,আপনি ওকে কিছু বলেন না। ভুল আমার হয়েছে। অবুঝ মেয়ে মাফ করে দিন।’
মুনতাহা আর কিছু বললেন না। পুনরায় নিজের জায়গায় এসে বসে পড়ে। আম্বিয়া গ্লাসটা তিয়াসার হাতে দিয়ে নিয়ে যেতে বলল। আর স্রুতি কিছু না বলে মন খারাপ করে বসে রইলো ফ্লোরের দিকে চেয়ে। রাগ স্রুতির মাথা ছাড়িয়ে যাচ্ছে৷ কিন্তু চুপচাপ বসে থাকতে হচ্ছে ওকে।

এদিকে জিসানের চোখ তিয়াসার উপর সেই প্রথম থেকে আটকে আছে তো আছেই। জিসান ভালো করে জানতে চাচ্ছে তিয়াসার সম্পর্কে। কিন্তু সকলের সামনে কিছু বলে উঠতে পারছে না। তাই কৌশলে বলল ওয়াশরুমে যাবে। আম্বিয়া তিয়াসাকে বলল জিসানকে ওয়াশরুম অবধি নিয়ে যাওয়ার জন্য। প্লান সাক্সেসফুল হওয়ায় জিসান মনে মনে বিশ্বজয়ের হাসি দিল। তিয়াসা ওর বাবা মায়ের রুমের ওয়াশরুম টায় নিয়ে গেল জিসানকে। ওয়াশরুম অবধি গিয়ে তিয়াসা বলল,
‘যান ওটা ওয়াসরুম।’ এতটুকু বলে তিয়াসা চলে যাচ্ছিলো কিন্তু জিসানের কথায় থমকে গেল।

‘আচ্ছা আপনি কি হন এই বাড়ির?’
তিয়াসা হালকা হেসে বলল, ‘আমি আমার জিজুর শালি।’
‘ওহ, তারমানে ভাবির বোন!’
‘জ্বি। আমি গেলাম। একা যেতে পারবেন না?’
‘একা এসেছি যে একা যাব?’
‘মানে?’

‘মানে আপনি নিয়ে এসেছেন তাই আপনিই নিয়ে যাবেন।’
‘আচ্ছা তাহলে আমি বাহিরে আছি আপনি আসলে একসাথে যাব।’
‘কেন যাওয়ার কি দরকার? কথা বলি একটু। আমরা তো সম্পর্কে বেয়াই বেয়ান হলাম৷ একটু আলাপ সালাপ করাই তো যায়।’
জিসানের কথার হাবভাবে তিয়াসা বুঝতে পারলো জিসান ফ্লার্ট করার চেষ্টা করছে। তাই তিয়াসা সরাসরি বলে ওঠে,
‘ফ্লার্ট করার চেষ্টা করছেন?’

‘ফ্লার্ট! আপনার মতো একটা দুই ঝুঁটিওয়ালির সাথে! লাইক সিরিয়াস?’
তিয়াসার সঙ্গে সঙ্গে রাগ চড়ে গেল। ও নাক ফুলিয়ে বলল, ‘আমি কলেজে উঠেছি। আমি বড় একটা বোধবুদ্ধি সম্পন্ন মেয়ে ওকে?
‘হোয়াট! মাত্র কলেজে? যাই হোক নাম কি তোমার?’
‘হে ইউ? তুমি করে বললেন কেন?’

‘এত বাচ্চা একটা মেয়েকে আপনি করে কে বলবে? আমি ভুলে বলে ফেলেছিলাম। সরি।’
‘আপনি তো বাজে একটা লোক দেখছি! কথা বলতে চাই না আপনার মতো লোকের সাথে।’
‘বাজে হওয়ার মতো কি বললাম বা করলাম?’
‘জানি না।’ তিয়াসা মুখ ঘুরিয়ে নিল।

‘বাহ! পুতুলের মতো লাগছে তো আপনাকে। পুরোই বেবি ডল।’
‘একদম মুখ সামলে হুম! কোনো ডল ফল বলবেন না বলে রাখলাম।’
‘ওকে বলবো না। নাম বলো নিজের আগে।’
‘বলবো না নাম।’
‘নাম না বললে আমিও বেবি ডল বলবো।’

ওইদিকে আম্বিয়ার ডাক কানে এলো তিয়াসার। তিয়াসা তড়িঘড়ি করে চলে যেতে নেয়। কিন্তু জিসান হাত ধরে ফেলায় যেতে পারে না।
তিয়াসা চোখ পাকিয়ে বলল,
‘হাত ছাড়ুন আমার।’
‘আগে নাম তারপর।’
‘উফফ! তিয়াসা। হয়েছে?’

‘হুম হয়েছে।’ বলে তিয়াসার হাত ছেড়ে দিল জিসান। ছাড়া পেয়ে দিল এক দৌঁড় তিয়াসা। সাথে সাথে জিসান বলে ওঠে, আমার নাম জিসান৷ আবার দেখা হচ্ছে আমাদের।’
তিয়াসা শুনেছে কিনা জিসান জানে না। তবে জিসান যে তিয়াসার প্রেমে পড়ে গেছে তা জিসান বেশ ভালো করেই বুঝতে পারছে।
তিয়াসা রেগেমেগে ঘরের পাইচারি করছে। আর রিমি খাটের কোণে বসে চিপস খাচ্ছে সাথে তিয়াসার রিয়েকশন দেখে যাচ্ছে। রিমি কিছুই যেন বুঝতে পারছে না তিয়াসার হাবভাব। কিছুক্ষণ পর রিমি তিয়াসাকে জিজ্ঞেস করল,

‘চিপস খাবি তিসু?’
তিয়াসা ব্যঙ্গ করে বলল, ‘তুই গিল।’
রিমি স্বাভাবিক ভঙ্গিতেই বলল, ‘ওকে।’
খানিক বাদে রিমি আবার জিজ্ঞেস করল, ‘কিরে আজ ঘুমাবি না?’
তিয়াসা তেড়ে গেল রিমির দিকে। তারপর গরম চোখ রিমির দিকে তাক করে বলল, ‘আমি ঘুমালে তোর সুবিধা হয় তাইনা রে? ঘুমালেই তো কথা বলবি ভাইয়ার সাথে।’

‘ঠান্ডা হ, ভুতের জামাই। যা ভাগ আমার বোনের মাথা থেকে। হুশ এখনি উড়ে যা।’ রিমি তিয়াসার মাথায় ফু দিয়ে এসব বলছে।
তিয়াসার রাগ আরও বেড়ে গেল। সে নাক মুখ ঘুচিয়ে বলল, ‘তুই চুপ করবি আপু?’
‘কিভাবে চুপ করি? কি হয়েছে তোর? বল আমায়। কলেজে কিছু হয়েছে কি?’
‘না কলেজে কিছুই হয়নি।’
‘তাহলে কেউ কি কিছু বলেছে আজ?’
‘হুম বলেছে।’

‘কে কি বলেছে তার নাম টা শুধু বল আমায়। এক লাথি দিয়ে তাকে পাঠাবো যেখানে পাঠাই। বল তার নাম খালি।’
‘ওইযে আহসান ভাইয়ের বাড়ি থেকে এসেছিল একটা বদমাশ ছেলে। সে বলেছে।’
‘কে জিসান?’
‘হুম হবে হয়তো।’
‘ওই হবে। তাছাড়া আর তো কোনো ছেলে আসেনি। আহসান আর আমার হবু শ্বশুর ছাড়া ওই একজন ছেলেই এসেছে। আহসানের কাজিন জিসান।’

‘যাই হোক ছেলেটা যেন আর না আসে এখানে।’
‘এটা কেমন কথা? ওকে মানা করা যাবে নাকি? ওর ভাইয়ের বিয়ে ওতো আসবেই৷ আচ্ছা তোকে যদি বলে আমার শ্বশুর বাড়ি না যেতে, তাহলে কি যাবি না?’
‘আমার বোনের শ্বশুর বাড়িতে আমি কেন যাব না?’
‘ঠিক সেভাবে জিসান কেন আসবে না?’
‘খুব বাজে ছেলে৷ আমার হাত টেনে ধরেছিল নাম বলিনি বলে।’

‘নাম বলিসনি কেন তুই? বললে কি হতো? ও মজা করেই এমন করেছে। বাদ দে।’
‘কেন বাদ দেব? তুই না বললি লাথি মারবি? তো মেরে দেখাস আমায়।’
‘ধুর পাগলী মেয়ে। মাথা ঠান্ডা কর।’
‘না পারছি না।’
‘তাহলে ঘুমা।’
‘আমি ঘুমালে তোর সুবিধা৷ তাই বারবার ঘুমাতে বলছিস!’ তিয়াসা বলল।
‘আচ্ছা জেগে থাক তাহলে। আমি আর কিছু বলবো না।’

এদিকে আহসানও পড়েছে জিসানের জ্বালায়। জিসান আজ বায়না ধরেছে আহসানের সাথে ঘুমাবে। আহসান না করা সত্ত্বেও জিসান মানলো না। শেষমেষ আহসান রাজি না হয়ে পারলো না।রিমির সাথে কথা বলতে পারবে না বলে আজ খুব বিরক্ত লাগছে আহসানের। তার উপর জিসানের উদ্ভট সব প্রশ্ন।
‘আচ্ছা ভাইয়া লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইড মানে কি?’
আহসান শোয়া থেকে উঠে বসে বলল, ‘এত রাতে তুই লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইড নিয়ে পড়লি কেন?’
‘আমার জানতে খুব ইচ্ছে হলো। তুই কি এটা বিশ্বাস করিস?’
‘জানি না। গুড নাইট।’

‘বল না ভাইয়া। প্লিজ,তোকে বলতে হবে।’
‘আমি মুডে নেই। সো ডোন্ট ডিস্টার্ব মি।’
‘তুই ভাবিকে দেখে কেমন ফিল করেছিলি সেটা বল শুধু। ভাবির সাথে প্রথম দেখার পর তোর মাথায় কি ঘুরপাক খাচ্ছিলো? সব বল আমায়।’
‘তুই কি আমাকে ঘুমাতে দিবি না জিসান?’
‘দেব তো কিন্তু আমার প্রশ্নের উত্তর দে আগে।’

‘আচ্ছা বলছি। প্রথমত আমি লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইড জিনিসটা মোটেও বিশ্বাস করতাম না। কিন্তু রিমিকে দেখার পর বা ওকে জীবনে পেয়ে বিশ্বাস করতে বাধ্য হলাম।’
‘ওকে, কিন্তু ভাইয়া এটা বোঝে কিভাবে? মানে এটা কি সরাসরি লাভকে ইন্ডিকেট করে?’
‘যার যেমন মন মানসিকতা। নাথিং টু সেয়। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে পিওর লাভ।’
‘ভাবিকে দেখে তোর মনে কি ঘন্টা বেজেছিল টাং টাং শব্দে?’

‘না তবে বুকের ডান পাশটা অদ্ভুত ভাবে বারি খাচ্ছিলো। মনে হচ্ছিলো আমি উন্মুক্ত কোনো এক পাখি। স্বাধীন পাখি।’
‘ওয়াও ভাইয়া। তারপর সেদিনই কি বুঝতে পেরেছিলি যে তুই তাকে ভালবাসিস?’
‘হুম, পেরেছিলাম। কিন্তু নিজের কাছে প্রকাশ করতে কয়েকটা দিন লেগেছিল।’
‘ও, আর রাত দিন কেমন লাগতো তখন?’
‘রাত দিন কেন, চারিদিকের সব কিছুতেই রঙিনের ছোঁয়া পেয়েছি। এখনো পাচ্ছি।’
‘তোর এক্সপেরিয়েন্স নিয়ে কিছু বল তাহলে।’ জিসান বলল।

‘ইম, এটা যেহেতু আমার প্রথম লাভ। লাস্ট লাভও। তবে আম যদি এক্সপেরিয়েন্স নিয়ে বলি, তাহলে খুব অল্প সময়ে অনেক কিছু বুঝেছি। আমি কারো হাসির কারণ খুঁজতে শিখেছি। কারো ভালো লাগায় নিজেকে বিলীন করতে শিখেছি। আর তাকে নিয়ে অনেক দূর অবধি ভেবেছি। সে হলো আমার রিমি। আর কিছু বলার নেই।’
‘গ্রেট ভাইয়া। এসব কথা শুনলে মনে কাটা দিয়ে ওঠে। ভালো লাগে শুনতে।’

‘তোর এসবে এত ইন্টারেস্ট কেন বলতো? তুইও কি এসবের মধ্যে পা ফেলেছিস নাকি?’
জিসান লজ্জা পেয়ে বলল, ‘হুম ভাইয়া।’
‘রেয়ালি! কে সে?’
‘বলবো তবে আগে তার মন জয় করি। আগে থেকে বলে চান্স হারাতে চাইনা।’
‘ওকে তোর ইচ্ছে। আমার পরে তোর পালা আসছে তাহলে?’
‘তা আর কিভাবে হয় বল? আপুর বিয়ে টা তো হবে। তারপর আমার পালা।’
‘তা যা বলেছিস জিসান। এই স্রুতি পাগলীটার জন্য কিছু একটা ম্যানেজ করতে হবে দেখছি।’

তোলপাড় সিজন ২ পর্ব ২১+২২

‘আপু কথা বলছিস না কেন আমার সাথে? প্লিজ সরি। আমাকে মাফ করে দে।’
জান্নাত কান ধরে দাঁড়িয়ে আছে স্রুতির সামনে। আর স্রুতি ডোন্ট কেয়ার ভাব করে অন্যদিকে চেয়ে আছে। তাও আবার অভিমান করে।
জান্নাত এবার স্রুতির হাত ধরলে স্রুতি ঝামটা মেরে সরিয়ে দিয়ে বলল, ‘ডোন্ট টাচ মি। তুই আমার দলের না,তাই তোকে আমি চিনিও না।’
‘এভাবে বলো না আপু। আমি তোমাকে কত ভালবাসি,,,,,’

‘থাক তোর ঢং এর ভালবাসা দেখাতে হবে না। কত যে ভালবাসিস তা বুঝেছি আমি।’
‘এমন করো না আপু।’ জান্নাতের চোখ টলমল করছে।
‘হয়েছে এভাবে চোখের পানি দেখাতে হবে না। বিয়ে কিভাবে ভাঙা যায় তাই ভাব।’
‘আপু বিয়ে ভাঙা অসম্ভব। রিমিদের ছোট করে বিয়ে ভাঙা যাবে না। দেখলেতো দাদিয়ার রাগ? গাল তোমার নাই আজ।’
স্রুতি রাগান্বিত কন্ঠে বলল,

‘ওই বুড়ি মরলে ভালো হতো। অসহ্যকর।’
‘আপু! এটা কি বললে তুমি? তোমার থেকে এটা আশা করিনি। তুমি যা করার করো আমি আর তোমার সাথে নেই। গুড বায়।’
‘আরে যা,, যা। তুই যে কি করতে পারবি, তা আমি ভালো করেই জানি। সুবিধাপার্টি মেয়ে কোথাকার। তোকে আমার কোনো প্রয়োজন নেই।’
জান্নাত চলে গেল স্রুতিকে রাগ দেখিয়ে।

তোলপাড় সিজন ২ পর্ব ২৫+২৬