প্যারাময় লাভ গল্পের লিংক || Nurzahan akter Allo

প্যারাময় লাভ পর্ব ১+২+৩
written Nurzahan akter Allo

রিদয় মাঝারে! রেখেছি তোমারে!
তোমার জন্যও অনুভুতি আমার মনটা জুড়ে
এই দুটি চোখে! তোর সপ্ন জমেছে
অশান্ত এ মন ছুটে যায় তোর ই কাছে
আমার মনে অকারনে তুমি দিও না জালা
তুমি ছাড়া এ জীবনটা আমার বড় একেলা
তোমার পেলে এ জীবনে আর তো কিছু চাই না
সারাজীবন থাকবো পাশে!তোমায় ছেড়ে যাবো না
ম্যা হু তেরা আশিকি কাজল মেরে জিনদেগী
সাব কুছ ওদ য়া কারলিয়া
তুমছে পিয়ার কারে গী…

তোরে কতক্ষণ থেকে বলছি ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করতে আয়!তুই কথা শুনতে পাচ্ছিস না।আর সকালবেলা কেউ এভাবে গান বাজায়!আর এত বড় মেয়ে হয়ে তুই এভাবে বেডে উপর লাফাচ্ছিস কেন??তোর কি আর বুদ্ধি শুদ্ধি আর হবে না। (রিমি চৌধুরী গান বন্ধ করে দিয়ে )

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

রুহিঃ আম্মু গানটা বন্ধ করলে কেন?বাকিটা শুনে তারপর না হয় বন্ধ করবে।কেবল হাফ গানে নাচলাম! বাকিটুকু গানে না নাচলে গানটা কষ্ট পাবে তো।
আম্মুঃকয়টা বাজে তোর খেয়াল আছে!তুই কলেজ যাবি কখন।(রাগি চোখে তাকিয়ে)
রুহিঃধুর কলেজে যেতে ভালো লাগছে না।এত পড়ে কি হবে?বিয়ে দিয়ে দাও তো ল্যাটা চুকে যাক।এত পড়াশোনার প্যারা আর সহ্য করতে পাচ্ছি না।
আম্মুঃনিজের বিয়ের কথা নিজ মুখ ফুটে বলছিস! তোর লজ্জা করে না? (দাঁতে দাঁত চেপে)
রুহিঃযা বাবা! নিজের বিয়ের কথা নিজে বলতে লজ্জা লাগবে কেন শুনি?আর কোথায় লিখা আছে যে মেয়েরা নিজের বিয়ের কথা নিজে বলতে পারবে না।
আম্মুঃএতকিছু আমি বুঝি না!তারাতারি ফ্রেশ হয়ে নিচে আসবি।
রুহিঃহুমম!তবে যত যাই বলো আম্মু তারাতারি আমারে বিয়েটা দিয়ে দাও। আমি বিয়ে করবো….(লজ্জা পাওয়ার ভাব করে)
ইমরান চৌধুরীঃকি ব্যাপার মামনি?তুমি এখনো ফ্রেশ হওনি কেন?তারাতারি যাও ফ্রেশ হও!চল আমরা একসাথে ব্রেক ফাস্ট করবো! (রুহির বাবা রুহিকে উদেশ্য করে)
রুহিঃ

বাবা আমার কি বিয়ে হবে না?
ওহ বাবা আমার কি বিয়ে হবে না…(দুষ্টু হেসে ওর আম্মুর দিতে তাকিয়ে)
বাপিঃহা হা হা!হুম হবে তো মামনি আগে সেই রাজপুএকে খুঁজে বের করি।তারপর তার সাথে তোমার বিয়ে দিবো।
আম্মুঃযেমন বাবা তার তেমনই মেয়ে!আমার হয়েছে যত জালা!এসব কথা যাকে বললে তুই ঠিক হবি! আমি তাকেই বলবো দাড়া… (কথাটা বলে চলে গেল)
রুহিঃহুমম!যাও বলো আমি কাউকে ভয় পা।ওই উগান্ডার জলহস্তী’আমার কিছু করতে পারবে না।
কথাটা শুনে রুহি আর ওর বাপি রুম কাঁপিয়ে হাসতে শুরু করছে।রুহির আর ওর বাপির কাজ ওর আম্মুকে চেতানো।রুহির আম্মু কে রুহি আর ওর বাপি রাগিয়ে দেয় আর উনি রেগে বোম হয়ে যায়।তারপর রুহির বাপি রুহিকে ফ্রেশ হতে বলে নিচে চলে যায়।

(উপরের ঘটনা শুনে বুঝে গেছে যে একটা দুষ্টু মেয়ের কাহিনী নিয়েই আমার এই গল্পটি লিখা!আর যে বেডের উপর নাচানাচি শুরু করছে সে হচ্ছে রুহির চৌধুরী! ইমরান চৌধুরী আর রিমি চৌধুরীর একমাএ আদরের কন্যাই হচ্ছে রুহি চৌধুরী।অতিরিক্ত পরিমানের ভদ্র মেয়ে হচ্ছে রুহি!ঠিক কতটা যে ভদ্র সেটা খুব তারাতারি আপনারা বুঝে যাবেন।রুহি এবার অনার্স ১ম বর্ষের ছাএী!পড়াশোনাতেও অতিরিক্ত মেধাবী।এত পরিমান মেধাবী যে কোনরকম টেনেটুনে পাশ করে।এবার চলুন দেখি রুহি কি করছে ওয়াশরুমের ভেতর??)

রুহি আপাতত এক ড্রাম পরিমান চিন্তায় মগ্ন হয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে! আর ওয়াশরুমের বালতি টা উপুর করে রেখে তার উপরে বসে পরে!রুহি সাওয়ার অন করে!আর সাওয়ারের পানিতে ভিজে ভিজে বালতির উপর বসে বসে চিন্তা করছে…

রুহিঃ এবারেও মনে হয় পরীক্ষাতে ফেল করবো!ধুর আর ভাল লাগেনা আর পড়াশোনা।আমার বিয়ে হবে কবে! আমার বরটা যে কোথায় আছে কে জানে?আচ্ছা আমার বরটার কি জন্ম হয়েছে নাকি পৃথিবীতে আসার প্রস্তুতি নিচেছ।নানু একটা বাংলা মুভি দেখতো না! কি যেন মুভিটার নাম।ধুরর মনে পড়ছে না এখন।মেয়েটার বয়স ১২ আর বরটার বয়স সাতদিন মাএ!আমার সাথে যদি এমন হয় তো আমি কি করবো??যদি এমন হয় তো আমিও কি আমার বরকে কোলে নিয়ে ঘুরবো…..আর শেষে কি না আমার বরের ড্রায়াপার আমাকে বদলে দিতে হবে।নাআআআাআ ছিঃ!ছিঃ! এ হতে পারে না।আমি এসব পারবো না। (এক লাফে বালতির উপর উঠে দাড়িয়ে)

তারপর রুহি বিভিন্ন ধরনের কল্পনা কল্পনা শেষ করে সাওয়ার নিয়ে বের হলো!পিংক কালারের লেডিস গেন্জী আর কালো লেডিস থ্রীকোয়াটার পড়ে আছে।ভেজা কাপড় গুলো বারান্দায় মেলে দিয়ে! টাওয়ালটা মাথাতেই জড়িয়ে এগিয়ে গেল ড্রেসিং টেবিলের সামনে।তারপর আয়নার সামনে এসে কি মনে করে দাড়ালো। আয়নাতে একবার তাকিয়ে! মুখ ভেংচি দিয়ে নিচে চলে গেল।রুহীর আম্মুর রুহির মাথা থেকে টাওয়াল খুলে চুল মুছে দিলো!আর মাথায় একখান ঠুয়া মেরে বললো….

আম্মুঃবিয়ে করবো বিয়ে বলে লাফাতে পারো আর চুল গুলো মুছতে পারো না।
রুহিঃইসস্ আম্মু মেরো না তো!আমি মোছা শিখে কি করবো! আমার বরের শিখলেই হবে।(মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে)
বাপিঃহা হা হা! শোনা মামনি খাওয়া শুরু করো!আর তোমরা সাবধানে চলে যেও! আমি সন্ধ্যায় ওখানে পৌঁছে যাবো।আজকে আমি সারাদিন একটু বিজি থাকবো।
রুহিঃআমরা কোথায় যাবো বাপি?আমি আগেই বলে দিচ্ছি! কোথাও যেতে পারবো না।
আম্মুঃতোর বড় মামার ছেলে অভিকের খাৎনা!তাই একটা অনুষ্ঠান করবে!অনেক রিলেটিভরা আসবে।
রুহিঃ বাঙালিরা পারেও বটে!৬ বছরের একটা বাচ্চা ছেলের ইয়ে কেটে দিবে! আর এটা নিয়ে নাকি অনুষ্ঠান করবে?রিলেটিভদের তো শুধু খাওয়ার ধান্দা।আর বড় মামা তার ছেলের খাৎনাতে আবার অনুষ্ঠান করবে কোন সুখে।এটা অনুষ্ঠান করার কোন রিজন হলো…খাৎনা করতে নাকি অনুষ্ঠান করা লাগে। যত্তসব ঢং…
আম্মুঃতোর এসব নিয়ে এত ভাবতে হবে না!তোকে যেতে বলছি তুই যাবি ব্যস্।
রুহিঃনা তুমি ড্রাইভারকে নিয়ে চলে যাও!আমি কালকে সুমি আর ইরাকে(বেষ্টু) নিয়ে চলে যাবো।আর এখন বকবক শুরু করলে কালকেও যাবো না।
বাপিঃথাক তাহলে মামনিকে আর জোর করো না!কালকে ও যাবে। তুমি তাহলে গাড়ি নিয়ে চলে যাও….
আম্মুঃহুমমম

রুহি রুমে এসে সুমিকে ফোন দিয়ে বলল! কলেজে আজকে না যেতে! আর রুহির বাসায় আসতে বললো।আজকে সারাদিন সারারাত পার্টি হবে!কারন রুহির আম্মু বাসায় থাকবে না।ওদিকে রুহির আম্মু রেডি হয়ে রুহিকে এত এত উপদেশ দিয়ে উনি চলে গেল।তার কিছুক্ষন পরে সুমি আর ইশা আসে।তারপর আবার ফুল ভলিউমে গান দিয়ে তিনজন উরাধুরা ডান্স করতে থাকে…তিনজন মিলে অনেক মজা করে।সারাদিন ওরা দুষ্টুমি করেই কাটায়…

রাতে বাইরে থেকে খাবার এনে তিনজন খেয়ে একবেডে শুয়ে আছে।রুহি সুমি পেটের উপর পা তুলে শুয়ে আছে আর গল্প করছে!হুট করে ইশা রুহির দিকে তাকিয়ে বললো…
ইরাঃ আচ্ছা রুহি সিগারেট খোর দের তোর কেমন লাগে?
রুহিঃহুমম ভালোই লাগে!সিগারেট খাওয়াটাও একটা আর্ট…। আমার বর সিগারেট না খেলে আমি তারে বিয়ে করবো না এমনকি কিসও করবো না।
সুমিঃছিঃ!এসব কি বলিস??
রুহিঃকেন রে হুট করে এমন কথা বললি কেন??
ইরাঃনা এমনি জানতে চাইলাম আর কি?
রুহিঃ সত্যি কথা বলবি নাকি এক লাথি দিয়া উগান্ডায় পাঠাবো তোরে??এই এই তারমানে তুই কি কোন সিগারেট খোরের প্রেমে পড়ছিস নাকি???
ইরাঃহুমমম!আমাদের একটা সিনিয়র ভাইয়া আছে না রাহাত নামের।আমি উনাকে ভালবেসে ফেলছি?বাট উনি সিগারেট খায়! কিন্তু আমি তো সিগারেটের গন্ধ সহ্য করতে পারি না।এজন্য রাহাত বাদ..(মন খারাপ করে)
রুহিঃতুই চাস রাহাত ভাইয়া সিগারেট টা ছাড়ুক তাই তো?? (ইরার দিকে তাকিয়ে)
ইরাঃহুমমম! মন থেকে চাই…
রুহিঃ ওকে! আর শোন কালকে মামাদের বাসায় যাবো।বাট সকালে কলেজে গিয়ে আগে রাহাত ভাইয়া র সাঁতার কাটার ব্যবসথা করবো।দেখি আমার হবু জিজু সিগারেট না ছেড়ে থাকে কি করে?শোন!কালকে হবু জিজুকে আমি হালকার উপর ঝাপসা করে একটু আদর দিয়ে আসবো… (দুষ্টু হেসে)

পরেরদিন সকালে..
ইরা আর সুমি মিলে রুহিকে অনেক কষ্টে ঘুম থেকে টেনে তুলে!কারন রুহিকে ঘুম থেকে তোলা আর যুদ্ধ করা প্রায় সমান।তারপর ওরা ব্রেক ফাস্ট করে!আর কলেজের উদেশ্যে তিনজন বেরিয়ে পড়ে।রুহি গাড়ি ড্রাইভ করছিলো! তারপর কিছুদুর গিয়ে গাড়িটা এক সাইডে রেখে একটা দোকানে যায়! আর দুই প্যাকেট সিগারেট কিনে ব্যাগ ঢুকিয়ে নেয়!তারপর সেন্টার ফ্রুট নিয়ে মুখে ঢুকিয়ে চিবাতে থাকে।রুহি আরো কয়েকটা সেন্টার ফ্রুট ইরা আর সুমিকেও দেয়। তারপর তিনজন কলেজে গিয়ে রাহাতকে চিরুনী তল্লাশি করে খুঁজতে থাকে!পুরো কলেজ রাহাতকে হন্য হয়ে খুঁজে না পেয়ে!রুহি একটা গাছের নিচে বসে সেন্টার ফ্রুট দিয়ে বেলুনের মত ফুলাতে থাকে…রুহি রেগে গিয়ে তার বিখ্যাত কিছু গালি দিয়ে রাহাতের গুষ্ঠী উদ্ধার করতে থাকে…

#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_2

ইরা আর সুমি মিলে রুহিকে অনেক কষ্টে ঘুম থেকে টেনে তুলে!কারন রুহি ঘুম থেকে তোলা আর যুদ্ধ করা প্রায় সমান।তারপর ব্রেক ফাস্ট করে কলেজের উদেশ্যে তিনজন বেরিয়ে পড়ে।রুহি গাড়ি ড্রাইভ করছিলো! তারপর কিছুদুর গিয়ে গাড়িটা এক সাইডে রেখে একটা দোকানে যায় আর দুই প্যাকেট সিগারেট কিনে ব্যাগে ঢুকিয়ে নেয়!তারপর সেন্টার ফ্রুট নিয়ে মুখে ঢুকিয়ে চিবাতে থাকে।রুহি সেন্টার ফ্রুট ইরা আর সুমিকেও দেয়। তারপর তিনজন কলেজে গিয়ে রাহাতকে চিরুনী তল্লাশি করে খুঁজতে থাকে!পুরো কলেজ রাহাত হন্য হয়ে খুঁজে না পেয়ে!রুহি একটা গাছের নিচে বসে সেন্টার ফ্রুট দিয়ে বেলুনের মত ফুলাতে থাকে….আর রুহীর রাহাতের গুষ্ঠী উদ্ধার করতে থাকে….

একটু পর রাহাতকে দেখতে পেয়ে রুহি রাহাতকে ডাক দেয়!রাহাত রুহির ডাক শুনে ওদের কাছে এসে দাড়ায় আর বলে…
রাহাতঃহেই রুহি, সুমি,ইরা কেমন আছো?
রুহিঃহুমমম আমরা ভালো আছি!আপনি কেমন আছেন ভাইয়া??
রাহাতঃআমিও ভালো আছি
রুহিঃহুমম ওটা আর থাকবেন না।(আস্তে করে)
রাহাতঃ কিছু বললে
রুহিঃ না তো।ভাইয়া একটা কাজ করে দিবেন। প্লিজ
রাহাতঃহুমম বলো।
রুহিঃইরা আপনাকে ভালবাসে। আজকে থেকে আপনিও ওকে ভালবাসবেন।এখন আপনিও রাজি হয়ে যান! না শব্দ করবেন না! যদি বেশি বকবক করেন তো একটু আগে যে আপনি শিমুল গাছের নিচে হিসু করছেন! ওটার পিক আছে আমার কাছে।এখন সটাসট রাজি হয়ে যান!আর যদি আমার জিজু না হন তো! আপনার সেই পিকটা পোষ্টার বানিয়ে পুরো কলেজে লাগিয়ে দিবো।
রাহাতঃকি????প্লিজ রুহি এমন করো না।আমার ইজ্জতের ফালুদা হয়ে যাবে।আমি না তোমার বড় ভাইয়া হই। (করুন চোখে তাকিয়ে)
রুহিঃ হুমম জানি তো!এই দুষ্টু পিক দিয়ে পোষ্টার বানাবো না। তবে আর একটা একটা কাজ করেন?তার আগে বলেন আমার জিজু হবেন তো…
রাহাতঃহুম হ হ হবো! আরোকটা কি কাজ আগে বলো??

রুহি ওর ব্যাগ থেকে দুইটা সিগারেটের প্যাকেট বের করে! তারপর প্যাকেট থেকে সিগারেট গুলো বের করলো। সিগারেট গুলোতে আগুন জালিয়ে ওদের বসার জায়গাতে রাখলো।এরপর রাহাতকে বললো জলন্ত সিগারেটের উপর বসতে!রাহাত চোখ বড় বড় করে ওদের তিনজনের দিকে তাকিয়ে আছে!রাহাত দৌড় দেওয়ার আগেই তিনজন রাহাত সামনে এমন ভাবে দাড়ালো যে পালানোর রাস্তা নাই।রুহি দুষ্টু হেসে বললো…

রুহিঃ প্রথমত ইরাকে রিজেক্ট করলে আপনার ওই পিক পুরো কলেজ দেখবে!আর আপনি যদি সিগারেট খাওয়া না ছাড়েন তো এখন আপনাকে এই গুলো জলন্ত সিগারেটের উপর বসতে হবে।এবার বলুন আপনি কি করবেন?আপনি যা বলবেন তাই হবে! আফটার অল আপনি আমাদের সিনিয়র ভাই!(দুষ্টু হেসে)
রাহাতঃহুম! হুম! ছাড়বো! ছাড়বো! বাট এমন করো না তোমরা।আমি এই সিগারেটের উপর আমি বসতে পারবো না।আর সিগারেট তো হুট করে তো ছাড়া যায় না তবে আস্তে আস্তে ছেড়ে দিবো।প্রমিস (করুন সুরে)
রুহিঃওকে! আজকে থেকে আপনি আমার জিজু!কালকে থেকে আপনি আর ইরা চুটিয়ে প্রেম করবেন কেমন। আজকে আমরা বাসায় যায়! একটু কাজ আছে…ভাল থাকবেন জিজু।একদম চাপ নিবেন না।আর এখান থেকে যাওয়ার পর যদি পালটি খান তো আমি নিজ দায়িত্বে আপনাকে ভর্তা করবো।(পায়ের তলায় সিগারেট গুলোকে পিষিয়ে ফেলে)
রাহাতঃহুমমম।হুম!হুম..

ইরা তো সেই খুশি!তারপর তিনজন বাসায় ফিরে সাওয়ার নিয়ে রেডি হয়ে নিলো!রুহি কালো জিন্স আর একটা কালো টপস্ পড়লো সাথে একটা কালো কোটি। কালো ওড়না গলায় পেচিয়ে সামনে এনে ঝুলিয়ে রাখলো।তারপর চুল গুলো ছেড়ে দিলো! সুমি আর ইরা জিন্সের সাথে লং কামিজ পড়লো।তারপর তিনজনে একটু সাজুগুজু করে বেরিয়ে পড়লো।

রুহিদের বাসা থেকে ওর মামার বাসায় যেতে ১ ঘন্টা লাগে….তিনজন গল্প করতে করতে ওখানে চলে যায়।রুহি গিয়ে সবার সাথে কথা বলে অভিকের সাথে দেখা করে! অভিক তো মনের সুখে দৌড়াদৌড়ি করে বেড়াচ্ছে ও জানে না ওর সাথে কি ঘটতে যাচ্ছে?

রুহি গিয়ে অভিককে কোলে তুলে নেয়!তারপর রুহি অভিককে বাগানে নিয়ে গিয়ে বলে।
রুহিঃ এই আজকে নাকি তোর খাৎনা করবে??
অভিকঃহুমম আমার তো সেই খুশি লাগছে।দেখ রুহি আপু! কত মানুষ আমাদের বাসায়।আমি তো খুব মজা করছি… (অনেক খুশি হয়ে)
সুমিঃহুমম যা দৌড়াদৌড়ি করার এখনই করে নাও মনু!একটু পর বুঝবে কত ধানে কত চাল।হা হা হা
রুহিঃএই অভি জানিস খাৎনা মানে কি?
অভিকঃহুমম জানি তো।দাদু বলছে খাৎনা মানে নাচ,গান,খাওয়া-দাওয়া (বিশ্বজয় করা হাসি দিয়ে)
ইরাঃ আরে বোকা খাৎনা মানে তোর ইয়ে কেটে দেওয়ারে গাধা।কেটে দিলে বুঝবি…
রুহিঃখাটি বাংলায় বলে………কাটা।বুঝলি!!!!!
অভিকঃ তাহলে আমার কি হবে?হিসি করবো কি করে?(কেঁদে কেঁদে)
রুহিঃ এই কথা ডাক্তার কে জিজ্ঞাসা করবি?তাহলেই বলে দিবে।ডাক্তার যদি মুসলিম হয় তো তাহলে উনারও খাৎনা করতে হয়েছে…।আর উনিই বলতে পারবে কেমনে হিসি করবি। হা হা হা(গগন ফাটানো হাসি দিয়ে)
অভিকঃ আচ্ছা জিজ্ঞেস করবো? ওহহ রুহি আপু আমাকে বাঁচাও! আমি খাৎনা করবো না (হাউমাউ করে কেঁদে)
ইরাঃ আরে বোকা কাঁদিস না!তুই তো সাহসী ছেলে।
রুহিঃ হুমম কাঁদে না ভাই!একটা জায়গায় ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাক।তাহলেই তো হলো…

রুহির কথা শুনে অভিক সত্যি সত্যি একটা ভৌ দৌড় দিলো তারপর লুকিয়ে গেল!গেষ্ট রা খাওয়া-দাওয়া করে ফেলছে!বিকাল ৪ টার দিকে ডাক্তারও চলে এসেছে বাট অভিক কে কোথাও খুঁজে পাচ্ছে না।সবাই খোঁজাখুজি শুরু করছে!রুহি,সুমি আর ইরা যে সব সবার আড়ালে প্যাচ বাধিয়ে বসে আছে। সেটা তো আর কেউ জানে না..ওরা তিনজন মুখ টিপে টিপে হাসছে শুধু। বিকাল ৫ঃ৩০ বাজে ডাক্তার বসে আছে!অভিকের কোন দেখা মিলে নি। অভিককে এখনো খোঁজাখুঁজি কাজ চলছে….বেচারা অভিক খাৎনা করার ভয়ে কোথায় যে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে আছে কে জানে????

অভিকের বাবা ওদের রুমে ভালো করে খুঁজে দেখে অভিক খাটের নিচে ঘাপটি মেরে বসে আছে।অভিকের বাবা অভিককে টেনে হিছড়ে বের করে ধরে আনে!তারপর ডাক্তার সামনে বসায়। অভিক তো ওর সর্ব শক্তি দিয়ে চিৎকার করে কাঁদছে। হঠাৎ অভিক কান্না থামিয়ে ডাক্তারের দিকে ছলছল করে তাকিয়ে বললো…

অভিকঃ ডাক্তার আংকেল আপনি কি মুসলিম??
ডাক্তারঃহুমমম!কেন??
অভিকঃ ওহহহ রুহি আপু তাহলে ডাক্তারেরও কাটা (কথাটা বলে ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দেয়)

রুহিরা ওখান থেকে দৌড়!রুহি ওর আম্মুকে বলে আসে যে বাসায় চলে যাচ্ছে।রুহি ওর গাড়িটা নিয়ে আসে!তারপর সুমি আর ইরাও উঠে বসে গাড়িতে!এখানে আর না থাকাটা বুদ্ধিমানের কাজ না!অভিক যদি সব বলে দেয় তো সাড়ে সর্বনাশ।

তারপর গাড়ি স্টাট দেয় আজকেও রুহির আম্মু এখানে থাকবে তাই রুহি চলে যাচ্ছে।রুহি গাড়িতে গান দিয়ে খুব দ্রুত ড্রাইভ করছে!তারপর একটা লেকের পাশে এসে গাড়িটা পার্ক করে!এই জায়গাটা রুহির খুব পছন্দের।

রুহির সাথে সুমি আর ইশাও নেমে পড়ে!রুহির লোকের পাশে এসে বসতেই। ওর কানে ভেসে আসে যে কেউ খুব ঝগড়া করছে!রুহি ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে একটা ছেলে আর মেয়ে খুব ঝগড়া করছে।রুহি ধীর পায়ে পেছন থেকে গিয়ে দুইজন মাথা ধরে দুজনের মাথা ঠুয়া মারলো!তারপর সরি সরি বলে কেটে পড়লো…এক প্রকার দৌড়ে ওখান থেকে পালাচ্ছে। আর দৌড়াতে দৌড়াতে রুহি পেছনে ঘুরে দেখে ওরা দুজন ঝগড়া করা বাদ দিয়ে মেয়েটা ছেলেটার কাঁধে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে আছে।মনে হয় ওদের মাথা ঘুরছে তাই……

রুহি দৌড়াতে দৌড়াতে ঠাস করে একটা ছেলের সাথে ধাক্কা খায়!ছেলেটা আর কেউ নয় রুহির কাজিন মেজবাউল আহসান মুগ্ধ! রুহি এবার মুখ কাচুমাচু করে উল্টো ঘুরে দৌড় দিতেই মুগ্ধ রুহির হাত ধরে ফেলে আর রাগি চোখে তাকিয়ে বলে…
মুগ্ধঃ এটা তোর বাসার বাগান পেয়েছিস যে এভাবে দৌড়াদৌড়ি করছিস!অসভ্য মেয়ে…আজকে বাসায় চল আজকে তোর একদিন কি আমার একদিন??আজকে তোকে এমন শিক্ষা দিবো জীবনেও ভুলবি না!এত বড় ঢিংগী মেয়ে সারাদিন টোটো করে ঘুরে বেড়াবে……(রুহির হাত ধরে টানতে টানতে)

রুহিঃ আর করবো না ভাইয়া!আর দৌড়াবো না এবার থেকে পিলপিল করে হাটবো পিপড়ার মত।এবারের মত আমাকে ছেড়ে দাও! ওরে কেউ বাঁচাও রে! ভাইয়া আমি কিন্তু বড় বাবাকে বলে দিবো তুমি সিগারেট খাও…এটাও বলবো তুমি একটা মেয়ে কিস করছো?তখন তোমাকে বড় বাবা এত এত বকবে!কুওা ভাইয়া আমার হাত ছাড় না! আমার হাত খুলে যাবে তো….এই হুলো বিড়াল ভাইয়া আমি এখন যাবো না !লেজ কাটা বানর আমি যাবো না বাসায়! তুমি হাত ছড়ো…. (হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে)
মুগ্ধঃঠাস্! আবার এসব ফালতু কথা বলছিস তুই?আজকে আমিও দেখবো আমার হাত থেকে তোকে কে বাঁচায়।যত বড় হচ্ছিস তত বেয়াদব হচ্ছিস তুই…(দাঁতে দাঁত চেপে একটা চড় মেরে )
রুহিঃভ্য ভ্য ভ্য! ইসস্ এত জোরে কেউ মারে। গাল মনে হচ্ছে খাল হয়ে গেলো।আহহ্ মা গো গালটা জলে যাচ্ছে (চিৎকুর দিয়ে কেদে)

#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_3

মুগ্ধঃ এটা তোর বাসার বাগান পেয়েছিস যে এভাবে দৌড়াদৌড়ি করছিস!অসভ্য মেয়ে…আজকে বাসায় চল! আজকে তোর একদিন কি আমার একদিন??আজকে তোকে এমন শিক্ষা দিবো জীবনেও ভুলবি না (রুহির হাত ধরে টানতে টানতে)
রুহিঃ আর করবো না ভাইয়া!এবার আমাকে ছেড়ে দাও! কেউ বাঁচাও আমাকে? আমি কিন্তু বড় বাবাকে বলে দিবো তুমি সিগারেট খাও…এটাও বলবো তুমি একটা মেয়ে কিস করছো?তখন তোমার এত এত বকবে!কুওা ভাইয়া আমার হাত ছাড়! হুলো বিড়াল আমি এখন যাবো না!লেজ কাটা বানর আমি যাবো না বাসায়…. (হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে)
মুগ্ধঃঠাস্! আবার ফালতু কথা বলছিস তুই?আজকে আমিও দেখবো আমার হাত থেকে তোকে কে বাঁচায় (দাঁতে দাঁত চেপে একটা চড় মেরে )
রুহিঃভ্য ভ্য ভ্য! ইসস্ এত কেউ মারে। গাল মনে হচ্ছে খাল হয়ে গেলো।আহহ্ মা গো মা গালটা কি জলছে রে??(চিৎকুর দিয়ে কেঁদে)

( মুগ্ধই হচ্ছে আমার গল্পের নায়ক!মুগ্ধ রুহির বড় বাবার ছেলে।পড়াশোনা শেষ করে মুগ্ধ একটা ব্যাংকে অফিসার পদে জব করে!পড়াশোয় যথেষ্ট মেধাবী।আর রাহাত,আবির মুগ্ধর খুব ভালো বন্ধু!মুগ্ধ খুব রাগী, আর গম্ভীর টাইপের ছেলে।তবে মনটা খুব ভালো )

মুগ্ধ ওর বন্ধু আবিরকে বললো সুমি আর ইরাকে রুহির গাড়িটা নিয়ে ওদের বাসায় পৌঁছে দিতে।সুমি আর ইরা টু শব্দ করে নি কারন ওদের জানা যে মুগ্ধ রেগে গেলে অবস্থা খারাপ করে দেয়!আবির সুমি আর ইরাকে বাসায় পৌঁছে দেয়!আর মুগ্ধ রুহিতে টানতে টানতে ওর গাড়িতে বসায়!তারপর গাড়ি স্টাট দেয়!মুগ্ধ এতটা রেগে যাওয়ার আসল কারন রাহাত মুগ্ধকে বলে দিয়েছে যে রুহি রাহাতকে আসলে কি কি বলছে?আর মুগ্ধর বন্ধু রাহাত…..মুগ্ধ রাগে ফোস ফোঁস করছে! চোখ লাল করে রুহির দিকে তাকিয়ে বলে…

মুগ্ধঃঅসভ্য মেয়ে একদম চুপ!রাহাত তোর বড় আর তুই এসব কি বলছিস ওকে?যত বড় হচ্ছো দিন দিন তত বেয়ারা হয়ে যাচ্ছো তুমি!আর তোকে বলিনি এমন ড্রেসে পড়ে বের হবি না আমার কথা তোর কানে যায় না।এসব ছ্যাচড়ামি ছাড়ো তা না হলে হাত-পা ভেঙে বেডে ফেলে রাখবো।(দাঁতে দাঁত চেপে)
রুহিঃআমি কি করছি?শুধু শুধু বকছো কেন?সব সময় তুমি আমাকে এত বকো কেন?আমি খারাপ কিছু তো রাহাত ভাইয়াকে বলি নি!দাড়াও ওই শালা উগান্ডার রাহাত্যর পেছনে যদি কুকুর না লাগিয়ে দেয় তো আমার নামও রুহি না… (কেঁদে কেঁদে)
মুগ্ধঃঠাস!আর চুপ!!এগুলো কোন ভদ্র মেয়ে ভাষা!অভদ্র মেয়ে একটা!আর একটা শব্দ করলে আজকে তোর একদিন কি আমার একদিন!শেষবার মানা করছি রুহি!ভাল হয়ে যা… (চোখ লাল করে তাকিয়ে )
রুহিঃ……..

মুগ্ধর ধমক আর মার খেয়ে রুহি ফুপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। মুগ্ধরা ওর বাসায় পৌঁছে গাড়ি থেকে নামে!আর রুহির হাত ধরে টানতে টানতে বাসার ভেতরে নিয়ে যায়। রুহি মুগ্ধর বাবাকে ড্রয়িং রুমে বসে থাকতে দেখে চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করে।এমন ভাবে কাঁদছে যে কেউ দেখে বলবে মুগ্ধ রুহিকে অনেক অনেক মেরেছে।মুগ্ধ আবার ঠাস করে সবার সামনে রুহির গালে চড় মেরে দেয়! মুগ্ধর মা এসে মুগ্ধর হাত থেকে রুহির হাত ছাড়িয়ে নেয়।রুহি তো মুগ্ধর মাকে জড়িয়ে ধরে আরো জোরে ভ্য ভ্য করে কেঁদে দেয়!কেঁদে কেঁদে তো বন্যা করে দেওয়ার উপক্রম।মুগ্ধ আবার বিরক্ত হয়ে রুহির দিকে তাকিয়ে বললো..

মুগ্ধঃ রুহি তোর ন্যাকা কান্না বন্ধ কর!নাহলে এমন থাপ্পর দিবো! মাড়ির একটাও দাঁত থাকবে না।আমার ধৈর্য শক্তি এমনিতেই খুব কম আর এসব ন্যাকা কান্না আমি সহ্য করতে পারি না। (দাঁতে দাঁত চেপে চিৎকার করে)
মুগ্ধর মাঃ মুগ্ধ শুধু শুধু মেয়েটাকে মারছিস কেন তুই?কি করছে রুহি??যাই করুক তাই বলে মারবি…
মুগ্ধঃ জানো লোকের পাড়ে গিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছিলো!আর রাহাতকে….(থেমে গিয়ে)
মুগ্ধর বাবাঃ রাহাত কে কি??রাহাতকে যাই বলুক তাই বলে তুমি মেয়েটার গায়ে হাত দিবে!মুগ্ধ ভুলে যেও না রুহি এখন বড় হয়েছে।
মুগ্ধঃ বড় হয়েছে বলে কি মাথা কিনে নিয়েছে নাকি?ভুলভাল কিছু দেখলেই মার হবে ওর!মারের উপরে কোন কথা নেই।না মারলে ও ঠিক হবে না। ঘাড় ত্যাড়া মেয়ে একটা। (কথাটা বলে রাগে হনহন করতে করতে চলে যায়)
রুহিঃবড় বাবা মুগ্ধ ভাইয়া সব সময় আমাকে মারে!এত এত বকে। আমি কিছু না করলেও বকে।বড় বাবা তুমি এত ভাল আর তোমার ছেলে এত খাটাশ কেন?গালটা আমার এখনও জলে যাচ্ছে।কানের মধ্যেও পো পো শব্দ হচ্ছে…. কানের পোকা গুলো কানের মধ্যে কিলবিল করছে মনে হচ্ছে। (ভ্য করে কেঁদে)

মুগ্ধঃ কান্নার শব্দ আসছে!আমাকে কি নিচে এসে আবার আরেক থাপ্পড় লাগাতে হবে…(সিড়ির কাছে দাড়িয়ে )
রুহিঃ এত মারলে এবার কি শান্তি মত এখন একটু কাদতেও পারবো না…..(ঠোঁট ফুলিয়ে)
মুগ্ধঃ না কাদতে পারবি না!আর কাদলে মুখের ভেতর কাগজ ঢুকিয়ে কান্না কর!যাতে শব্দ না হয়। আর যদি শব্দ হয় তো আজকে তোর সাত গুষ্ঠীর নাম ভুলিয়ে দিবো…(দাঁতে দাঁত চেপে)
রুহিঃ আমার সাত গুষ্টীর মধ্যে তুমিও তো আছো!আচ্ছা এক কাজ করো!আরেকটা চড় মেরে আমাকে সাত গুষ্টীর নাম ভুলিয়ে দাও তো দেখি তুমি কেমন পারো??আমিও ভুল চাই সবার নাম…
মুগ্ধঃদাড়া আসছি আমি…
রুহিঃনা না থাক!আর আসতে হবে না তোমাকে। আমি আর কাঁদছি না!

মুগ্ধ একমাএ মানুষ যাকে রুহি খুব ভয় পায়!আর রুহিদের বংশে রুহি, মুগ্ধর বড়বোন মৌমিতা এই দুটোই মেয়ে তাই সবাই রুহি আর মৌমিতাকে খুব ভালবাসে। এরা দুইজন সবার চোখের মনি।মৌমিতা খুব ঠান্ডা মেজাজের বাট রুহি হচ্ছে খুব দুষ্টু…..মৌমিতার বিয়ে হয়ে গেছে। মৌমিতা এখন সিঙ্গাপুরে থাকে ওর হাজবেন্ডের সাথে।

রুহির আম্মু ফোন দিয়ে জেনে নিলো যে রুহি মুগ্ধদের বাসায় আছে!রুহির বাবাও হাফ ছেড়ে বাচলো কারন রুহি ওখানেই সেভ থাকবে।মুগ্ধর আম্মু রান্না ঘরে কফি করছে! রুহি রান্নাঘরের ডেস্কের উপর বসে পা ঝুলিয়ে মোগলাই খাচ্ছে। মুগ্ধর আম্মু এক মগ কফি করে আর মোগলাই নিয়ে রুহিকে বললো মুগ্ধর রুমে দিয়ে আসতে।রুহি না করতে পারলো না কারন বড় আম্মুর পায়ের ব্যাথাটা বেড়েছে সিঁড়ি বইয়ে উঠতে কষ্ট হবে।এজন্য রুহি পিলপিল পায়ে সিঁড়ির দিকে এগোতে থাকলো…

রুহি ট্রে হাতে নিয়ে সিড়ি বেয়ে মুগ্ধর রুমে গেল!মুগ্ধ তখন বসে লেপটপে মুভি দেখছিলো!রুহি মুগ্ধর দরজা খুলে ঢুকে গেল!মুগ্ধ রুহিকে বললো মগটা সেন্টার টেবিলের উপর রেখে ওর সামনে এসে বসতে ।রুহি বিশ্বজয় করা হাসি দিয়ে মুগ্ধর সামনে এসে বসতেই। মুগ্ধ ঠাস করে আবার চড় দিলো।রুহির গালে হাতে দিয়ে জিজ্ঞাসা করলো…

রুহিঃএবার কি জন্য মারলে ভাইয়া? আমি তো কিছু করি নি…আমি তো ভদ্র হয়েই আছি।
মুগ্ধঃসত্যি কিছু করিস নি??তা আমি নিজে মুখে বলবো? নাকি আরেকটা চড় খেয়ে তুই নিজের মুখে স্বীকার করবি তাই বল…
রুহিঃ না থাক! আমিই বলছি….আমি বুঝেছি, তুমি বুঝে গেছো । আর লুকিয়ে লাভ নাই।
মুগ্ধঃহুমম বল!তবে মিথ্যা বললে তিনগুন চড় বেশি খাবি।
রুহিঃআসলে আমিই তোমার কফিটা আমি এটো করছি! আর এই মগ থেকেই কফি আমি আমার মুখে নিয়েই কুলি করে আবার মগে রাখছি। (দুই গালে হাত রেখে)
মুগ্ধঃ আমার চোখের সামনে থেকে বিদায় হ!নয়তো এক আছাড় দিয়ে তোরে নাড়ি ভুড়ি বের করে দিবো।তোর মনে হয় না কয়েক মিনিট দুষ্টুমি না করে শান্ত আর ভদ্র হয়ে থাকি….(দাঁতে দাঁত চেপে)
রুহিঃনা মনে হয় না!আর মন যা বলে না মনের বিরুদ্ধে গিয়ে কিছু করা উচিত না।
মুগ্ধঃমন তা বলবে কোন?তুমি যেমন ঘাড় ত্যাড়া তোমার মনও তোমার মতই ঘাড় ত্যাড়া।এখন তুই যা আমার রুম থেকে আর হ্যা ড্রায়ারে চকলেট আছে যাওয়ার সময় নিয়ে যা….
রুহিঃ আচ্ছা… সব গুলো নিয়ে যায়(অনেক খুশি হয়ে)
মুগ্ধঃহুমমম।
রুহিঃ জানো মুগ্ধ ভাইয়া আজকে অভিকের খাৎনা করছে!অভিক তো সেই কাঁদছে! হা হা হা (চকলেট খেতে খেতে)
মুগ্ধঃআমার সামনে তোর এসব বলতে লজ্জা লাগে না!আর আমাকে এসব বলছিস কেন??
রুহিঃকেন বলবো না?আর লজ্জা লাগবে কেন?তোমার খাৎনার দিনের পিক ও তো আমি দেখছি!বড় আম্মু কাছে থেকে…তখন তো লজ্জা লাগে নি।
মুগ্ধঃতুই এখুনি আমার সামনে থেকে যা!আর একটা কথা বললে! আজকে তোকে বারান্দা দিয়ে নিচে ফেলে দিবো।
রুহিঃহুমম যাচ্ছি! তার আগে একটা কথা বলো তো!তুমি সব সময় ষাড়ের মত এত চেঁচামেচি করো কেন??
মুগ্ধঃরুহিইইই! তুই কি যাবি?? (রেগে)
রুহিঃ আচ্ছা আমি গেলাম!টাটা (কথাটা বলে দৌড়ে চলে যায়)

রুহি চকলেট পেয়ে এত খুশি যে চড়ের খাওয়ার কথা ভুলে গেছে!এটা তো রোজকারে কাহিনী এজন্য রুহিও আর কিছু মনে করে না।মুগ্ধের হাত মার খায় আর চকলেট পেলে সব ভুলে যায়।রুহি চকলেট খেতে ভালবাসে বলে মুগ্ধও বাইরে গেলে চকলেট আনতে ভুল করে না।মুগ্ধর রুম থেকে রুহি বের হয়ে চকলেট খেতে খেতে মনের সুখে গান গাইতে গাইতে নিচে চলে গেল।

প্যারাময় লাভ পর্ব ৪+৫+৬