প্যারাময় লাভ পর্ব ২৮+২৯+৩০

প্যারাময় লাভ পর্ব ২৮+২৯+৩০
written Nurzahan akter Allo

রুহিঃহুমম আমার ইচ্ছে আছে!আর আমার বেশ কয়েকটা আনকমন ইচ্ছের মধ্যে একটা ইচ্ছে হলো….
…..বাসরঘরে খাট ভাঙ্গা….

রুহির কথাশুনে সবাই কিছুক্ষণের জন্য সাইলেন্ট মুডে চলে গিয়েছিল!তারপর মুগ্ধ বাদে সবাই গগন ফাটানো হাসি দিলো।মুগ্ধ আবুলের মত রুহির দিকে তাকিয়ে আছে।মুগ্ধ কল্পনার ক ও করেনি যে রুহি এমন কিছু বলবে।বাকিরা সবাই ওদের নিয়ে মজা করতে শুরু করলো।রুহি মাথা নিচু করে ভাবছে….

রুহিঃ খুব তো বড় বড় কথা বললে মিঃ হাজবেন্ড এবার খাট ভেঙ্গে দেখাও তো।আমি দেখি তোমার এক মাএ বউয়ের ইচ্ছে তুমি কি করে পূরণ করো।তোমাকে প্যাচে ফেলতে আমার ১মিঃ সময়ই যথেষ্ট জানেমান।

আবিরঃ মু…..গ্ধ…. হা.. হ.. হা… হা…. হা..আ…ম…
মুগ্ধঃআগে কথাটা বল তারপর না হয় হাসতে থাক! আর না হলে আগে হেসে নিয়ে তারপর কথাটা বল। (দাঁতে দাঁত চেপে)
রাহাতঃ ভাই খাট কিন্তু ভাঙ্গতেই হবে হা হা হা। ভাই তুই কিন্তু বলছিস! তুই তোর বউয়ের সব ইচ্ছে পূরণ করবি।
সুমিঃ হা হা হা আমি জানতাম এইরকম আনকমন কিছুই তুই চাইবি।হা হা
রুহিঃ আমি বলছি খাট ভাঙ্গতে!আমি তো অন্য কিছু মিন করিনি!খাট ভাঙ্গা মানে আমি বসে বসে হাতুরী দিয়েও ভাংতে পারি!আবার দরকার পড়লে খাটের উপর লাফিয়েও খাট ভাংতে পারি। এখানে এত দাঁত কেলানোর কি আজিব তো!আর বড় কথা তোমরা যা ভাবছো আসলে মোটেও তা না! কারন ওই ভাবে খাট ভাঙ্গা যায় না। (জিহবা্তে কামড় দিয়ে)
রাহাতঃ আসলেই কি ভাঙ্গা যায় না…. হা হা হা
আবিরঃরুহি আমরা কিছু ভাবি নি তো.!কি ভাববো বলো তো?হা হা হা
রুহিঃ কি ভেবেছেন আমি জানি..??
মুগ্ধঃ হুম হুম সব বুঝে গেছি!আচ্ছা এই টপিক বাদ দাও কেমন!

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

বেচারা মুগ্ধ বোন আর দুলাভাইয়ের সামনে লজ্জা তো পাচ্ছে! সাথে রুহির দেওয়া শক খেয়ে মাথা নিচু বসে আছে।মুগ্ধ খুব ভাল করেই বুঝতে পারছে রুহির মাথায় অন্য কিছু পাকিয়ে বসে আছে। রাহাত,আবির,তো মুগ্ধকে পচাতেই আছে!তারপর আড্ডা শেষ করে ঘুমাতে চলে যায়!রুহি,সুমি আর ইরা এক বেডে শুয়ে আছে। রুহি সুমির পেট বরাবর পা তুলে দিসে আরামসে ঘুমাচ্ছে।আর মুগ্ধর বেডে আবির,রাহাত আর আরিয়ার শুয়ে আর মুগ্ধ সোফাতে শুয়ে আছে।আবির রাহাতের পেটের উপর পা তুলে মুগ্ধকে বলছে…

আবিরঃ মুগ্ধ কালকে এই সময় কি তুই বিজি থাকবি..?
মুগ্ধঃ এখন রাত ২ঃ৪৫ বাজে!আর এত রাতে মানুষ ঘুমায় আমার জানা মতে…
রাহাতঃ কালকেও ঘুমাবি!!!!!
আরিয়ানঃ মুগ্ধ ভাই কালকে কি কি করবে??না মানে কি কি ভেবে রাখছো??
মুগ্ধঃ মুখে বললে কি তোরা বুঝবি বল? কালকে স্বশরীরে এখানে এসে দেখিস কি করি??(দাঁতে দাঁত চেপে)
আবিরঃ ব্যাপারটা কিন্তু দারুন হবে তাই না!মুগ্ধ খাট ভাংবে আর আমরা সেটা দেখবো।
আবিরঃহা হা হা! রুহি যে এমন কথা বলবে! সত্যি ভাই বিশ্বাস কর আমি কল্পনাও করি নি।
মুগ্ধঃ….
রাহাতঃ মুগ্ধ কালকে সারাদিন খেতেই থাকবি কেমন! কারন রাতে বেলায় তো তোকে খাট ভাংতেই হবে।হা হা হা
মুগ্ধঃ বিয়ে করছি আমি!বাট দেখছি আমার থেকে বাসর নিয়ে তোরাই এক্সসাইটেড বেশি!আমি উচিত ছিলো! আগে তোদের বিয়ে দিয়ে তারপর আমার বিয়ে করা।
আবিরঃ একদম কথা কাটাবি না!কালকে কি কি করবি তাই বল???
মুগ্ধঃ…..
রাহাতঃ মুগ্ধ কালকে রুহিকে কি উপহার দিবি রে ভাই??
আবিরঃ কি আর দিবে একেবারে বাবু দিলেই তো হয়! তাই না.. (দুষ্টু হেসে)
আরিয়ানঃ উহুম! উহুম! থাক আমরা এসব কথা বাদ দেই!ওরা যা করবে করবে…

মুগ্ধ চুপ করে আছে কারন এদের সাথে এখন কথা বলা মানে নিজের বাঁশ নিজে ঘুরিয়ে নেওয়া!আবিরাও বকবক করতে করতে একটা সময় ঘুমিয়ে পড়ে!মুগ্ধও রুহির কথা ভাবতে ভাবতে একটা সময় ঘুমের জগতে পাড়ি দেয়।

পরেরদিন সকালে…
আজকে রুহি আর মুগ্ধর বিয়ে…!!
আর বিয়ে বাড়ি মানেই হাইকাউ চেচাঁমেচি! মুগ্ধরা সবাই পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছে! আর রুহির তো হা করে ঘুমাচ্ছে! অনেক রাত পযন্ত আড্ডা দেওয়ার কারনে কেউ ঘুম থেকে উঠেনি।মুগ্ধর বাসার সবাই রুহিদের বাসায় গিয়ে আড্ডা দিচ্ছে! সকাল ১০ঃ১২ টার ওদের টেনে তোলা হয় সবাইকে ঘুম থেকে!মুগ্ধ, রাহাত,আবির,আরিয়ান ফ্রেশ হয়ে খেতে এসে দেখে কোন খাবারই রান্না করা নেই কিছু! মুগ্ধ বাসার কাউকে খুঁজেও পাচ্ছে না।মুগ্ধর আম্মুকে ফোন দিলো!তখন মুগ্ধর আম্মু বাসায় এসে মুগ্ধদের সবাইকে রুহির বাসায় নিয়ে গেল! কারন রুহির বাপি মুগ্ধদের বাসায় রান্না করতে দেয় নি….

মুগ্ধ আর উপায় না পেয়ে রুহির বাসায় গিয়ে খেতে বসলো!আশে পাশে রুহিকে খুঁজলো বাট পেলো না।খাবারের মেনু খিচুড়ি,মাছ ভাজা,গরুর মাংস আর সালাড!মুগ্ধ কেবল খাবার মুখে নিতে যাবে! তখন কোথা থেকে রুহি এসে ধপ করে মুগ্ধর পাশে বসে পড়লো! আর মুগ্ধর হাতে খাবারটা ওর মুখে পুড়ে নিলো!সুমি,ইরাও এসে খেতে বসলো।সবাই যে যার কাজে বিজি তাই ওদের সামনে খাবার সাজিয়ে যে যার কাজে চলে গেছে…ডায়নিং টেবিলে আপাতত ওরা ছাড়া কেউ নেই।

রুহি মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে ওকে খাইয়ে দিতে বলে।মুগ্ধও আর কথা না বাড়িয়ে নিজেও খায় আর রুহিকেও খাওয়াতে থাকে!রুহি খেতে খেতে বলছে…
রুহিঃউমম ন ন নিজে উমমম (মুখে খাবার নিয়ে)
মুগ্ধঃ মুখের খাবারটা শেষ করে কথাটা বল।তাহলে বুঝতে পারবো তাই না।(দাঁতে দাঁত চেপে)
রুহিঃ ইয়ে মানে নিজের বিয়ের খিচুড়ি যে এত টেষ্ট না খেলে তো বুঝতেই পারতাম না।
রাহাতঃ আর কত কি শুনবো?একমাএ আল্লাহ জানে…
আবিরঃ রুহি তোমরা হানিমুনে কোথায় যাচ্ছো??
রুহিঃ এখনো ঠিক করি নি ভাইয়া! তবে খুব তারাতারি ঠিক করে ফেলবো। তারপর আপনাদের জানাবো কেমন..
রাহাতঃহুমমম!! ..
রুহিঃবাট….
আবিরঃ বাট কি বলো??
মুগ্ধঃ রুহি যা বলতে দ্বিধা করছে সেটা বলতে আর জোর করিস না!কারন তোরা তো বেঁচে যাবি আমি ফেঁসে যাবো।তাই বলছি খাওয়াতে মন দে…
রাহাতঃরুহি তুমি বলো তো কি বলতে চাচ্ছিলে
আবিরঃ হুম! হুম! আমিও জানতে চাই..বলো! বলো!
রুহিঃআমি বলছিলাম তোমরা সবাই মেরিড হলে ভালো হতো..??
রাহাতঃ কেন?মেরিড হলে কি হতো?
রুহিঃ মেরিড হলে আমরা একসাথে হানিমুনে যেতাম আর…
মুগ্ধঃ হাফ কথা বলিস আর হাফ ঝুলে রাখিস কেন?পুরোটা কথা বলতে না পারলে কথা বলতে আসিস কেন?
রুহিঃবিয়ের দিনেও তুমি আমাকে বকছো কেন?
আবিরঃ রাতে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে সব পুষিয়ে দিবে।এখন বাকি কথা টুকু বলো।(রুহির দিকে তাকিয়ে)
মুগ্ধঃ আবির তুই ওকে খোচাচ্ছিস কেন?মনে হচ্ছে কথাটা না শুনলে তো জীবনটাই বৃথা যাবে।
আবিরঃ কথাটা আমি শুনবো তাহলে তোর এত ফাটছে কেন??
মুগ্ধঃদুম দাম করে কিছু বলে দিলে তখন হবে।তখন বুঝবি!কারন রুহি মুখ না তো মেশিন গান…
আবিরঃ আমি শুনতে চাই!তুই চুপ কর তো(মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে)
রুহিঃ আসলে আমরা সবাই মেরিড হলো একসাথে হানিমুনে যেতাম আর একসাথে বাচ্চা নিতাম আর কি…
রাহাতঃ হানিমুনে যেতে ঠিক আছে!বাট বাচ্চা একসাথে!কেমনে কি??? (ভ্রু কুচকে)
রুহিঃ কেন আগে থেকে যুক্তি করে!আই মিন প্ল্যান করে!মানে ইয়ে করতাম…

এবার মুগ্ধর কিছু হয় নি!মুগ্ধ মনযোগ দিচ্ছে খাচ্ছে!আর মুগ্ধ এমন ভাব করছে! ওকে দেখে মনে হচ্ছে এখন যদি মনোযোগ দিয়ে না খায় তাহলে পৃথিবীটা উল্টো পথে ঘুরতে শুরু করবে।বাট রুহির কথা শুনে আবিরের ভীষম লাগছে!এমন ভীষম লাগছে যে আবিরের চোখ দিয়ে পানি ঝড়তে শুরু করছে!আর রুহি দৌড়ে গিয়ে আবিরকে থাবড়ানো শুরু করছে!রুহি আবিরের মাথা,পিঠে ইচ্ছে মত থাপড়াতে আছে।
বেচারা আবির রুহির থাপড়ানো আর কাশি কোনটাই থামতে পারছে না।দুটোই ব্রেক ফেল গাড়ির মত অবস্থা! এত থাবড়ানোর পরও আবিরের কাশি থামছে না দেখে! রুহি দৌড়ে ঝাড়ু আনলো!মুগ্ধ রুহিকে না বলার আগেই রুহি ঝাড়ু দিয়ে আবিরের পিঠে দুম করে মেরে দেয়!আবির ঝাড়ুর মার খেয়ে মেরুদণ্ড সোজা করে বসে আর সাথে সাথে কাশিও উবে যায়….

#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_29

এত থাবড়ানোর পরও আবিরের কাশি থামছে না দেখে! রুহি দৌড়ে ঝাড়ু আনলো!মুগ্ধ রুহিকে না বলার আগেই রুহি ঝাড়ু দিয়ে আবিরের পিঠে দুম করে মেরে দেয়!আবির ঝাড়ুর মার খেয়ে মেরুদণ্ড সোজা করে বসে আর সাথে সাথে কাশিও উবে যায়….

আবিরঃ মুগ্ধ ভাই তোর বউকে থামা ভাই!আজকে না হয় আমাকে মেরে ফেলবে।
রুহিঃআপনার কি কাশি থামছে? নাকি আর একটা দিবো ভাইয়া??
আবিরঃ না না আমি একদম ঠিক আছে।তুমি খেতে বস বোন…
রুহিঃ যাক বাবা! শেষ মেষ কাশিটা তাহলে থামলো।
রাহাতঃ আবির তুই ঠিক আছে তো ভাই??
আবিরঃ হ্যা মানে না… মানে হ্যা
সুমিঃ হা হা হা
ইরাঃ রুহি তোর বুদ্ধি আছে! একটা মারলি আর কাশি টা থেমে গেল।
মুগ্ধঃরুহি হয়েছে তোর চিকিৎসা করা! এবার খেতে আয়!
রুহিঃহুমম
মুগ্ধঃ আবির আমি এজন্য বলেছিলাম রুহিকে খোঁচাতে যাস না!আমব তো জানি ও কেমন তাই না।আমার কথা টা শুনলে এখন তোর আর ঝাড়ুর মার টা খেতে হতো না।
আবিরঃ…….
রাহাতঃআজকে জানলাম ঝাড়ু দিয়ে মারলে কারো কাশি থামানো যায়। হা হা হা
রুহিঃ ভালোর জন্যই তো মারলাম।
মুগ্ধঃ ভালো কাজ করে আপনি উদ্ধার করছেন…

তারপর যুদ্ধ করে কোনরকম খাওয়াটা সবাই শেষ করে!তারপর মুগ্ধরা চলে যায় আর রুহিকে ঘিরে ধরে সবাই! আর মেহেদী দিতে বসে।কালকে রাতে মেহেদী দেওয়া হয়নি তাই আজকে রুহির দুই হাত ভর্তি মেহেদি দেয়! আর রুহির হাতে মুগ্ধর নামও লিখে দেয়!মেহেদী শুকিয়ে গেলে! রুহিকে বাগানে নিয়ে যায় গোসলের করানোর জন্য!

বাঙালিদের বিয়ের নিয়ম-নীতির তো শেষ নাই!এখন সাতজন এও(বিবাহিত মহিলা) একটা কলসে পানি নিয়ে রুহির মাথায় সেই পানি ঢালবে কারন এটা করলে নাকি বিধবা নামক শব্দ টা রুহির জীবনে না আসে এজন্য..
(গ্রাম্য রীতি সব)

রুহি হাত ধুয়ে বসে ছিলো তখন একদম মহিলা এসে রুহিকে বাগানে ডেকে নিয়ে যায়!তারপর সদ্য বাটা হলুদ রুহির গায়ে ছোঁয়ায়! তারপর রুহিকে হলুদ ছোয়ানো শেষ হলে রুহিকে একটা চেয়ার বসায়!তারপর রুহির মুখে একটা পান দেয় আর রুহির মাথার উপর একটা একটা লাল গামছা দিয়ে ডেকে দেয়!তারপর রুহির এক ভাবি এসে গামছার নিচে ঢুকে রুহির মুখ থেকে মুখ দিয়েই পানটা নেয়! আর কানে কানে কি যেন বলে?তারপর গামছা সরিয়ে ফেলে।তারপর কয়েকজন বিবাহিত মেয়ে একসাথে আসে তারপর সাতজন মিলে একটা কলস ধরে আর রুহির মাথায় পানি ঢালতে থাকে!আর সবাই দোয়া করলো যাতে ওদের সংসারজীবন সুখের হয়। রুহি বিরক্ত হয়ে মনে মনে বলে….

রুহিঃ বাঙালিরা পারেও বটে!ভাবি কানে কানে কি যে বললো সব তো মাথার উপর দিয়ে গেল।আর এসব কি নিয়ম কে জানে?যে এসব নিয়ম যে বানিয়েছে তাকে সামনে পেলে তার পেছনে ক্ষ্যাপা কুকুর লাগিয়ে দিয়ে দৌড় করাতাম।আর না হয় আছিলাম বাঁশ দিতাম।যওসব আলতু-ফালতু নিয়ম।বাঙালিরা এসব বিহেভ সাথে এসব রীতির জন্য অন্য দেশের মানুষ গুলো বাঙালীদের কথা শোনানোর সুযোগ পায়!আর এসব বোকা বোকা কাজ গুলোই তার প্রমান।এসব করার কোন মানেই হয় না তারপরেও…… যওসব আবালের দল।

তারপর রুহি ওয়াশরুমে চলে গেল!তারপর নিজের মনমত সাওয়ার নিয়ে বের হলো!একটুপর পার্লার থেকে রুহিকে সাজানোর জন্য দুইজন মেয়ে আসলো!তারপর রুহিকে সাজাতে বসলো!মেয়েটি রুহিকে সাজাচ্ছে না তো পুরাই যুদ্ধ করতে নেমেছে সেটা ওরাই জানে!রুহি আগেই বলে দিসে সাজাবে ভালো কথা হালকাভাবে যেন সাজায়!আর বেশি মেকাব ঘষলে এক টাকা তো দিবেই না! বরং ওদের থেকে আরো জরিমানা করবে।মেয়ে দুইটি রুহির চুল শুকিয়ে চুল বেঁধে নিলো তারপর মুখটাও সাজানো শেষ করে! শাড়ি পড়াতে গেল…

মেয়ে দুইটা মুচকি মুচকি হাসছে! রুহি ওদের দিকে তাকিয়ে আছে।মেয়েটা দুইটাকে এভাবে মুখ টিপে হাসতে দেখতে রুহি কিছু বলার আগেই একটা মেয়ে বলে উঠলো…
মেয়েটিঃম্যম আপনার বরের নাম কি মুগ্ধ?
রুহিঃ হুমম কেন?
মেয়েটিঃ না মানে!
রুহিঃআসলে,মানে ইয়ে এসব বাদ দিয়ে আসল কথায় আসুন!আর আমার বরের দিকে নজর দিলে চোখ তুলে মার্বেল খেলবো।
মেয়েটিঃ না ম্যস আসলে মুগ্ধ নামটা খুব সুন্দর।
রুহিঃ হুমম! তো??
১ম জনঃআসলে ম্যম আপনাকে দ দ…
রুহিঃ আমাকে দেখে কি আপনাদের জোকার মনে হচ্ছে নাকি!আর আমাকে দেখে এত হাসার কি হলো??
২য় মেয়েটিঃ না ম্যম আপনার পেটে দেখে আমরা..
রুহিঃ আপনার আর আমার পেট আলাদা নাকি! যে এমন ভাবে তাকাচ্ছেন আর হাসছেন?
১ম জনঃ আপনার পেটে আপনার বরের নাম লিখা তাই…
রুহিঃহুম তো!আমার যেখানে ইচ্ছা আমার বরের নাম লিখে রাখবো! তাতে আপনাদের কি?আপনার বরের ভুড়ির উপরে আমার বরের নাম লিখতে যায় নি তাহলে আপনাদের এত ফাটছে কেন??
১ম জনঃ ………..
রুহিঃ কি আর ফাটবে! ওই বুক ফাটার কথাই বলছি আর কি…..

তারপর ওদের সাথে বকবক করতে করতে রুহির সাজ কমপ্লিট হলো!রুহির মাথার বিয়ের সোনালী রংয়ের ওড়না টা দিয়ে দিলো! তারপর রুহি আয়নাতে নিজেকে দেখছে!লাল শাড়ি,গা ভর্তি গয়না,চুলে খোঁপা করে খোপাতে গোলাপের গাজরা,চোখে টানা কাজল,কপালে লাল টিপ,ঠোঁটে লাল লিপস্টিক,নাকে নোজপিন,গলার সোনার সীতা হার,হাতে সোনার চুড়ি,আঙুলের বেশ কয়েকটা সোনার আংটি,কপালে টিকলি,পায়ে নুপুর! হালকা সাজ আর গা ভর্তি গয়না একদম বিয়ের কনে সেজে নিজেকে দেখতে ব্যস্ত রুহি!রুহি আয়নাতে তাকিয়ে মুচকি হেসে মনে মনে বলছে…

রুহিঃ আজকে আমি তোমার লাল টুকটুকে বউ সেজেছি মুগ্ধ!আমার সেই আশা পূরণ হয়েছে মুগ্ধ।(মুচকি হেসে)

ওইদিকে মুগ্ধরাও সবাই নামাজ পড়ে রুহিদের বাসায় যাওয়ার জন্য রেডি!হাস্যকে ব্যাপার মুগ্ধ হেটে যাচ্ছে ওর বউ আনতে! তারপর মুগ্ধ বর বেশে রুহির গেটের আসতেই ভাবি,ইরা,সুমি, আরো কয়েকজন মুগ্ধদের গেট আটকালো!তারপর জোরাজুরি ঝুলাঝুলি করে দশ হাজার টাকা নিয়ে তারপর গেট ছাড়লো! মুগ্ধ ঢুকতে যাবে আবার মুগ্ধর পথ আটকালো!রাহাত ফট করে বলে উঠলো..

রাহাতঃ এই তোমরা এখান থেকে সরবে! নাকি তুলে ছুড়ে মারবো…
সুমিঃ হাত ভেঙ্গে হাতে ধরিয়ে দিবো…
আরিয়ানঃওহ হো আমরা বুঝি দাড়িয়ে দাড়িয়ে হাত ভাঙা দেখবো..
ইরাঃদেখবেন নাকি উল্টো ঘুরে দৌড় দিবেন আপনাদের ব্যাপার!বাট আমাদের হাতে মিষ্টি না খেলে ঢুকতে দিবো না।

তারপর মুগ্ধকে মিষ্টি খাইয়ে ফিতা কাটিয়ে তারপর ঢুকতে দিলো!সুমিরা মুগ্ধর গায়ে গোলাপের পাপড়িও ছিটালো!তারপর বরের বসার জায়গায় মুগ্ধকে বসতে দিলো!হঠাৎ দোতলা থেকে রুহি চিৎকার করে ওর আম্মু ডাকছে আর বলছে…
রুহিঃ আম্মু! ওহ আম্মু কুট্টুশকে কিছু খেতে দাও তো!আজকে কুট্টুশের খেতে দিতে মনে নাই আমার!বিয়ের আনন্দে সবকিছু ভুলে গেছি। পোলাও,মাংস দিও আজকে আমার বিয়ে বলে কথা।

রুহির কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে উপরে তাকিয়ে আছে!বিয়ের কনে যে গলা ফাটিয়ে এভাবে কথা বলতে পারে এটা কারো জানা ছিলো না।মুগ্ধ দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করলো কারন এখানে মুগ্ধর অনেক কলিগরাও আছে! তারপর ভাবিরা রুহিকে এনেও মুগ্ধর পাশের চেয়ারে বসানো হলো!রুহি মুগ্ধর পাশে বসে উসখুস করছে!মুগ্ধ কিছু বলছে না! তাই রুহি মুগ্ধকে উদেশ্য করে বললো।

রুহিঃ কি হলো বর তুমি আমার সাথে কথা বলছো না কেন??তাকিয়ে দেখো আজকে আমি তোমার লাল টুকটুকে বউ সেজেছি আমি.. (লজ্জা মুখে)
মুগ্ধঃ…..
রুহিঃ এই তোমার পেটে কি গুড়ি কৃমি হয়েছে নাকি! তুমি কথা বলছো না কেন??
মুগ্ধঃচুপ করে বসে থাক!তা না হলে থাটিয়ে একটা থাপ্পড় মারবো বলে দিলাম।
রুহিঃ আজকেও মারবে??কি করছি আমি??
মুগ্ধঃ এখন একটা যদি টু শব্দ করলে! আমি চলে যাবো তোকে রেখেই।
রুহিঃ যা বাবা আমি কি করছি??না বললে বুঝবো কি করে?
মুগ্ধঃ বিয়ের কনে কে কোনদিন এভাবে চিৎকার করতে দেখেছিস এর আগে!এত গুলো মানুষের আছে জেনেও এভাবে কথা বললি কেন?এটা কি কোন সুস্থ মানুষের কাজ..??
রুহিঃ আচ্ছা সরি!আর এমন হবে না…
মুগ্ধঃমনে থাকে যেন!বেশি বকবক করলে তোর খবর আছে? মনে রাখিস(দাঁতে দাঁত চেপে)
রুহিঃহুমম!উফফ রে পোলাও এর ঘ্রাণ আসছে! আমার পেটে তো খুধাতে কিলবিল করছে।ইসস কখন যে খাবো রে…
মুগ্ধঃ….

রুহি কিছু বলতে যাবে তার আগেই মুগ্ধ দাড়িয়ে যায়!আর সামনে তাকিয়ে মুচকি হাসে! রুহি মুগ্ধর দৃষ্টি অনুসরণ করে আর সামনে তাকায়! তখন রুহির মুখেও হাসি ফুটে! কারন দুইটা বেস্ট কাপল হাসি হাসি মুখ করে ওদের দিকে তাকিয়ে এগিয়ে আসছে!যাদের দেখে ফিল করা যায় আসলে রিলেশন ঠিক কেমন হওয়া উচিত!ভালবাসা ঠিক কাকে বলে?আর ভালবাসার মানুষকে কিভাবে আগলে রাখতে হয়।
আর এরা হলো অনুষ্ঠানের স্পেশাল গেস্ট। আর তারা হলো…
#রোদ_আলো❤❤(এলোকেশী কন্যা)
#রাসেল_মিষ্টু❤❤(স্পর্শানুভূতি)
আর আলোর শাড়ির আঁচল ধরে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে আসছে… মেঘ….❤❤

#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_30

আর আলোর শাড়ির আঁচল ধরে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে আসছে… মেঘ….❤❤

রোদের আর আলোর ফুল ড্রেসআপ কালো!রাসেল আর মিষ্টু পড়ছে ব্লু ড্রেস।আলো,মিষ্টু, দুইজনেই শাড়ি আর মাথা হিজাব পড়ছে! রোদ,রাসেল,দুইজনেই ব্লেজার।আর মেঘ পড়ছে সবুজ পান্জাবী আর কালো জিন্স। ওরা সবাই এসে মুগ্ধ আর রুহির সাথে কথা বললো!মুগ্ধ রোদদের সবার সাথে কুশল বিনিময় করে আর জড়িয়ে ধরে।সবাই কে দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে!কেউ কারো থেকে কম না।ওরা আসাতে বিয়ে বাড়ি আরো গমগম করছে!মুগ্ধ মেঘের দিকে তাকালো! তারপর মেঘকে কোলে নিয়ে মুগ্ধ মুচকি হেসে বললো…

মুগ্ধঃকি ব্যাপার মেঘ বাবুর মন খারাপ কেন??
রুহিঃ এই মেঘ কি হয়েছে সোনা?তোমার মন খারাপ কেন?? (গাল টেনে)
মেঘঃমন ভালো নেই আমার? (মাথা নিচু করে)
রাসেলঃ কেন জুনিয়র বস?আপনার মনের আবার কি হলো??
মিষ্টুঃমেঘ চলো আগে খেয়ে আসি!তারপর তোমার মন ভালো করছি।কারন পেট খালি থাকলে আমার মাথায় কোন বুদ্ধি আসে না।
রাসেলঃ মিষ্টু এখানে কোন দুষ্টুমি করবে না!আর আসতে না আসতেই তোমার খুধা লেগে গেল?
মিষ্টুঃযা বাবা আমি আবার কবে দুষ্টুমি করলাম?এসব গুজব কে ছড়ালো?শুধু নাম বলো তার! তাকে ভেমরুল থেরাপি দিমু!আর খুধা লাগলে খাবো না।
রোদঃহুমম তাই তো!এই রাসেল একদম মিষ্টুর নামে গুজব ছড়াবে না।
মুগ্ধঃহুমম আলো,রুহি আর মিষ্টু উনারা হচ্ছে পৃথিবীর ইনোসেন্ট প্রাণী
আলোঃ এই মুগ্ধ ভাইয়া আমি আবার কি করছি শুনি?একদম গুজাবেন না…
রোদঃহুমম! হুমম!এই একদম কেউ গুজব ছড়াবে না
আমাদের কারো বউয়ের নামে।
মিষ্টুঃথানকু রোদ ভাইয়া.!সত্যি আপনি বেস্ট
রাসেলঃ হুম তা আর বলতে
রুহিঃ তোমরা সবাই ভুল জানো?এখানে সব চেয়ে ভদ্র আর ইনোসেন্ট হচ্ছি আমি!
মুগ্ধঃওহহ হ্যা!এখানে সব থেকে ভদ্র আর ইনোসেন্ট হচ্ছে আমার বউ।আর রুহি ম্যম এই কথাটা আমাদের মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
রাসেল আর রোদঃ হা হা হা
মুগ্ধঃএবার মেঘ কিছু তো বলো?
মেঘঃতোমাদের সবার বউ আছে!শুধু আমারই নেই।তোমরা আমাকে বউ খুঁজে দাও।আমিও বিয়ে করবো..সবার তো বউ আছে তাহলে আমার বউ থাকবে না কেন??তোমাদের মাঝে আমাকে কেমন যেনো ছোট বাচ্চা! ছোট বাচ্চা! লাগছে।(মাথা নিচু করে)

তারপর মেঘের কথা শুনে সবাই মিলে কয়েক দফা হাসলো!রুহি মেঘকে কোলে নিয়ে বললো..
রুহিঃ মেঘ বাবু এখানে যারা দাড়িয়ে আছে!আই মিন,রোদ,রাসেল,মুগ্ধ কেউ তোমার মত হ্যান্ডস্যম না।তাই ওরা বউ খুঁজে দিচ্ছে না।আমি তোমার বউ খুঁজে দিবো কেমন!আর হ্যা মেঘ তোমাকে পান্জাবীতে পুরাই ঝিংকুর বাপের মত লাগছে!আমি তো ক্রাশ খেয়েছি তোমাকে দেখে..
মেঘঃ সত্যি সবার থেকে আমাকে দেখতে ভালো দেখাচ্ছে তো..?? (চুল ঠিক করতে করতে)
মিষ্টুঃহুমম একদম রাজকুমারের মত লাগছে তোমাকে দেখতে।আমার মেয়ের জামাই বানাবো তোমাকে…
রুহিঃ না মিষ্টু আপু! আমি মেঘকে আমার জামাই বানাবো
মিষ্টুঃ না আমি মেঘকে আমার মেয়ের জামাই বানাবো..
রুহিঃ না বলছি না!আমি ব
মেঘঃথাক আমার বউ লাগবে না!আমি বিয়ে করবো না।তোমরা ঝগড়া করো না।

মেঘের কথা শুনে আরেক দফা হাসির রোল পড়লো!তারপর কাজি এসে মুগ্ধ আর রুহির বিয়ে পড়াতে শুরু করলো..
কাজিঃ বলো মা আলহামদুলিল্লাহ কবুল…
রুহিঃকবুল!কবুল!কবুল…
কাজিঃ একবার বলতে বলেছিলাম
রুহিঃকোশ্চেন ফাঁস হয়ে গেছে!জানা উওর! তাই একেবারে বলে দিলাম

রুহির কথা শুনে সবাই হাসিতে ফেটে পড়লো!রুহি কি বললো কাজির মাথার উপর দিয়ে গেল।তাই উনি আর কিছু জিজ্ঞাসা করলো না।তারপর মুগ্ধও কবুল বলে দিলো।সবাই খেতে গেল!মুগ্ধ ওদের জন্য খাবারের জায়গা আলাদা করছে!এখানে রোদ মেঘ আলো,রাসেল মিষ্টু,মুগ্ধ আর রুহির জন্য।আলো,রুহি আর মিষ্টু মিলে ঠিক করলো তারা তাদের বরের হাতে খাবে।বাট মেঘ প্রতিবাদ করলো কারন মেঘের বউ নাই তাই!মেঘ ঠিক করলো বউরা বরদের খাইয়ে দিবে!যদিও মেঘকে রাসেল,রোদ, আর মুগ্ধ এটা শিখিয়ে দিসে।এজন্য মেঘকে ঘুষও দিতে হয়েছে…

তারপর আর কি সবাই মেঘের কথা মেনে নিলো!আলো একটা প্লেটে পোলাও,মাংস,চিংড়ি আরো কিছু নিয়ে এক লোকমা ভাত প্রথমে মেঘের মুখে দিলো! তারপর রোদের মুখে দিলো।মিষ্টুও প্লেটে পোলাও নিলো!রাসেল মনে করছে মিষ্টু ওর মুখে আগে খাবার দিবে এজন্য এজন্য হা করছে! বাট রাসেলকে মিষ্টু ভুল প্রমান করে দিয়ে আগে মিষ্টু নিজের মুখে খাবার দিলো!বেচারা রাসেল হা করে আছে বাট মিষ্টু খেয়েই যাচ্ছে! আর রুহি প্লেটে খাবার নিয়ে ভাবছে আগে কোনটা দিয়ে শুরু করা যায়।আলো রোদ আর মেঘকে খাইয়ে দিচ্ছে! আর রাসেল আর মুগ্ধ এই দুই বেচারা করুন দৃষ্টিতে তাদের বউয়ের দিকে তাকিয়ে আছে।মিষ্টু আর রুহির কান্ড দেখে আলো আর মেঘ হেসে লুটোপুটি খাচ্ছে।

রুহি আর মিষ্টু খেতে খেতে আলোর দিকে তাকিয়ে দেখে আলো রোদ আর মেঘতে পরম যত্নে খাইছে দিচ্ছে! তখন মিষ্টু আর রুহির হুশ আসে আর তখন দুজনেই জিহবাতে কামড় দেয়! আর ওদের বরকে খাওয়াতে থাকে!রোদ,রাসেল আর মুগ্ধর খাওয়া শেষ হলো তারা এবার প্লেট হাতে নিয়ে আলো,মিষ্টু আর রুহিকে খাওয়াতে থাকে।আর মেঘের তো বউ নাই তাই মেঘ বসে বসে মাংসের হাড় চিবুতে থাকে…

তারপর ওরা খাওয়া দাওয়া শেষ করে!আর একটা রুমের বেডের উপর মুগ্ধ সাথে রোদ,রাসেল, রাহাত,আরিয়ান সহ অনেকে বসেই আড্ডা দেয় দিতে থাকে! কারন আলো রা রোদদের কোন একটা কারনে ওদের সাথে নেয় নি।বেশ কিছুক্ষণ পর তিনজন মিলে এসে মুগ্ধদের সামনে দাড়ালো।তিনজনের মুখেই দুষ্টু হাসি দেখে মুগ্ধদের বুঝতে বাকি নেয় তিনজন মিলে কোন ঘোট পাকিয়ে এসেছে।বাট আলো,মিষ্টু, রুহি কারো সাথে কোন কথা না বলে! শুধু একবার ওদের দিকে তাকিয়ে বিশ্বজয় করা হাসি দিয়ে চলে গেল।মুগ্ধরা আবুলের মত তাকিয়ে আবার আড্ডা দিতে শুরু করে দিলো…

রুহির বাপি মুগ্ধর কাছে এসে মুগ্ধদের বাইরে আসতে বললো!কারন মাগরিবের আজান দিবে একটু পর তাই উনি এখনি রুহিকে বিদায় দিতে চাই।মুগ্ধ রুহির বাপির কথা শুনে বেডে থেকে নিচে নেমে দেখে মুগ্ধর জুতা নেই!মুগ্ধর এদিক ওদিক তাকানো দেখে রোদ এসে মুগ্ধকে জিজ্ঞাসা করলো কি হয়েছে?মুগ্ধ ইশারায় বললো ওর জুতা খুঁজে পাচ্ছে না!রোদ খেয়াল করে দেখলো রোদের ও জুতা নেই!ওদের দেখে রাসেলও উঠে এসে জিজ্ঞাসা করলো কি হয়েছে?রোদ রাসেল বললো ওদের জুতা খুঁজে পাচ্ছে না। রাসেলও দেখলো ওরও জুতা নেই!এবার আর বুঝতে বাকি রইলো না এই কাজ কে বা কারা করছে???
রোদঃহুমম বুঝলাম!আমাদের পকেট ফাঁকা করা ধান্দা..
রাসেলঃ রোদ ভাই মুগ্ধ ভাইয়ের জুতা ওরা চুরি করছে ঠিক আছে!বাট আমার আর আপনার জুতা চুরি করলো এটার আবার কেমন কথা!
রোদঃ চার হিটলার একসাথে আছে!এই তো কেবল শুরু আরো কত কি দেখতে হবে??
মুগ্ধঃআমাদের সোনা বাঁধানো কপাল!ভাগ্য করে বউ পেয়েছি আমরা…হা হা হা
রাসেলঃ হা হা হা! সে আর বলতে..এমন বউ যারা প্রতি পদে পদে আমাদের ফাঁসিয়ে দেয়।

প্যারাময় লাভ পর্ব ২৫+২৬+২৭

মুগ্ধ, রাসেল আর রোদ খালি পায়ে রুমের বাইরে এসে দাড়াতেই ওদের দেখে হাসির রোল পড়লো।তিনজনেই একদিক ওইদিক তাকালো কিন্তু আলোদের দেখতে পাচ্ছে না।ঠিক তখনই সেইম সাজে তিনটা বউ এসে মুগ্ধদের সামনে দাড়ালো!এমন সাজ যে সেজেছে কেউ দেখে বলবে না কোনটা রুহি, কোনটা আলো আর কোনটা মিষ্টু।বউদের মুখে বড় করে ঘোমটা দেওয়া। রোদ,মুগ্ধ আর রাসেল তিনজন তিনজনের দিকে তাকালো! তারপর জোর করে মুখে একটা হাসি আনলো ।সুমি এসে বললো যার যার বউকে খুঁজে নিতে!
সুমিঃ ভাইয়া আপনারা আপনাদের বউকে খুজে বের করুন
রোদঃ এসবের আবার কি দরকার??মুগ্ধ রুহিকে খুজে বের করলেই তো হয়। (সৌজন্য মূলক হাসি দিয়ে)
মুগ্ধঃভাই আপনি এখন আমার ঘাড়ে চাপাচ্ছেন কেন ??আমি জানি রাসেল ভাই পারবে?রাসেল ভাই কাজে লেগে পড়েন..
রাসেলঃইয়ে মানে যার বিয়ে সেই তার বউকে খুঁজে বের করুক!শুধু শুধু আমাদের নিয়ে টানাটানি কেন??
সুমিঃতিন জনেই আপনারা আপনাদের বউকে খুঁজে বের করুন!তা হলে আপনাদের বউ আপনাদের পিঠে চ্যালাকাঠ ভাংবে…আগেই বলে দিয়েছে।
ইরাঃআপনারা কি এখন আপনাদের বউকে ভয় পাচ্ছেন??হা হা
রাসেলঃ কে বললো আমরা আমাদের বউকে খুঁজে বের করতে পারবো না!আর বউ কে ভয় পাবো কেন??দাড়াও এখুনি সবাইকে দেখিয়ে দিচ্ছি যে আমরাও পারি…
রোদঃ হুমম রাইট….
(রাসেল,মুগ্ধ তোমরাও আমার সাথে রেডি হও! কারন আজকেই আমাদের শেষ দিন। আমাদের তিনজনকেই আজকে কিমা বানাবে! ফিসফিস করে বললো)
রাসেলঃ মুগ্ধ ভাই তুমি থাকো!আমি আর রোদ ভাই এখন উল্টো ঘুরে দৌড় দিবো।তুমি পারবো ভাই আমি জানি তুমি পারবে…(মুগ্ধর কাঁধে হাত রেখে ফিসফিস করে বললো)
মুগ্ধঃআমি ফাসলে! আপনাদের নিয়েই ফাসবো।তাই পালানোর কথা বাদ দেন।
রোদঃ আচ্ছা তোমাদের বউ তোমাদের উপর রেগে গেলে তারা কি করে রাগ কমায়??(ফিসফিস করে)
রাসেলঃ আমার বউটা তার সর্বশক্তি আমার মাথার চুল ধরে টানে!(করুন সুরে)
মুগ্ধঃ আর আমার টা কামড়ানো শুরু করে!যতক্ষণ না ওর রাগ কমে। (অসহায় দৃষ্টিতে)
রোদঃ ওহহ!যাক আমার মত অবস্থা তোমাদেরও।সমস্যা নেই তিনজনেই এক হসপিটালে ভর্তি হবো।চল মরতে তো হবেই তাই যুদ্ধে নেমে পড়ি।

রোদ মুচকি হেসে একজনের পাশে গিয়ে দাঁড়ালো!মুগ্ধও মুচকি হেসে একজনের পাশে গিয়ে দাঁড়ালো! রাসেলও দুষ্টু হেসে একজনের পাশে গিয়ে দাড়ালো।তারপর সুমি যে যার বউয়ের সামনে এসে তাদের ঘোমটা তুলতে বললো।তারপর রাসেলরা কাঁপা কাপা হাতে যে যার বউয়ের ঘোমটা তুলতেই রোদ,মুগ্ধ, রাসেল তিনজনেই এক সাথে চিৎকার করে উঠলো…..

প্যারাময় লাভ পর্ব ৩১+৩২+৩৩