প্যারাময় লাভ পর্ব ২৫+২৬+২৭

প্যারাময় লাভ পর্ব ২৫+২৬+২৭
written Nurzahan akter Allo

মুগ্ধকে রংয়ে ডুবানোর বুদ্ধি রুহির!রুহিই এদের পাঠিয়েছে কারন রুহির ভাষ্যমতে নিজের বিয়েতে নিজেই ইনজয় যদি না করি অযথা অনুষ্ঠান করে বিয়ের করার কোন মানেই হয় না।মুগ্ধ কিছু বলার আগেই সবাই মুগ্ধকে টানতে টানতে রুহির বাগানে নিয়ে গেল….

মুগ্ধকে দেখে সবাই আরো চেচাঁমেচি শুরু
করলো!মুগ্ধ চুল বেয়ে বেয়ে রংয়ের পানি পড়ছে বুকের দুইটা বোতাম খোলা।ভেজা শার্ট আর ভেজা চুলে মুগ্ধকে দারুন লাগছে দেখতে।রুহি মুগ্ধকে দেখে চোখ টিপ দিলো!আর ইশারায় শার্টের বোতাম লাগাতে বললো।কারন রুহি ছাড়া অনেক মেয়ে মুগ্ধর বুকের দিকে তাকাবে যেটা রুহি মোটেও সহ্য করবে না।

তারপর সবাই শুরু করলো রং মাখামাখি তবে পানি রং শুধু মুগ্ধকে দেওয়ার হয়েছে আর তাছাড়া সবাই আবির(গুড়ো রং) মাখামাখিতে বিজি।মুগ্ধ কে কেউ ছাড়ছে না ওকে নিয়ে টানাটানি।মুগ্ধ দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করছে শুধু।সবাইকে মিলে মুগ্ধ আর রুহিকে ইচ্ছেমত রং মাখিয়ে ভূত বানিয়ে দিলো….

তারপর মুগ্ধ বাসায় যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই সবাই মুগ্ধকে ঘিরে ধরলো।মুগ্ধ আর রুহির কাজিন সবাই ঠিক করলো বাগানেই ওদের গোসল টা করানো হবে!কারন রাত আটটার দিকে ওদের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হবে। মুগ্ধ আড়চোখে রুহির দিকে তাকিয়ে দেখলো রুহি চুপ করে মাথা নিচু করে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে!রুহির আর মুগ্ধর বাবা মায়েরা এই ফাকে এখান থেকে কেটে পড়ছে!এখন যারা আছে তারা মুগ্ধ আর রুহির বন্ধু আর কাজিন আর কাজিনদের বউ।মুগ্ধ আবার উঠতে গেলে সবাই ওকে জোর করে আবার বসিয়ে দেয়।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

বাগানের মাঝখানে মুগ্ধ আর রুহিকে পাশাপাশি বসতে বলে!মুগ্ধ যেহেতু জিন্স পড়ে আছে তাই বসতে একটু কষ্ট হচ্ছে তাই মুগ্ধর জন্য চেয়ার আনা হয়!ওদেরই একটা কাজিন ফট করে বলে…
মুনাঃ বর চেয়ারে বসবে আর বউ ঘাসের উপর এটা কেমন হয়ে গেলো না।
রাহাতঃ রুহি তুমি মুগ্ধর কোলে বসে পড়ো।এটাই বেটার হবে। (রুহির দিকে তাকিয়ে)
মুগ্ধঃ রাহাত আশে পাশে বড়রা আছে! প্লিজ এসব করিস না।
সুমিঃবড়রা কেউ এখানে নেই আমরা আমরাই আছি সো কোন অজুহাত শুনবো না।
ভাবিঃ কি রে রুহি তুই না বলতি তোর লজ্জার ল ও নেই!তাহলে এখন লজ্জা পাচ্ছিস কেন???কালকে রাতে তাহলে কি করবি শুনি…??কালকে রাতে তো মুগ্ধ তোকে ছাড় দিবে না তখন …. (বএিশ পাটি দাঁত বের করে)
মুগ্ধঃ কেন সাজিদ ভাইয়া আপনাকে ছাড় দেয় নি বুঝি।এজন্য… (ভাবির দিকে তাকিয়ে)
ভাবিঃ সাজিদ না এখন তুমিও তোমার বউকে ছাড় দিবে না দেবর জি…হা হা হা
মুগ্ধঃসে তখন দেখা যাবে…
(তিনবার বিয়ে করা বউ ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।তাই না রে রুহি।মুগ্ধ রুহিকে বিরবির করে কথা বললো।)

তারপর ভাবি আর সুমি রুহি টেনে মুগ্ধর কোলে বসিয়ে দিলো!তারপর বাগানের পানির দেওয়ার জন্য যে ট্যাপটা ছিলো যেখান থেকে এক কলস পানি আনলো।তারপর ভাবি এসে ওদের দুজনের মাথা পানি ঢাললো!রুহির শরীর বেয়ে পানি মুগ্ধ শরীরে এসে পড়ছে।ট্যাপের পানি ঠান্ডা এজন্য রুহি কেঁপে উঠছে যেটা মুগ্ধ খুব ভালো করে বুঝতে পারছে।
এক কলস পানি ঢালতেই মুগ্ধ ওদের আর পানি দিতে না করলো!মুগ্ধ রুহিকে ওর কোল থেকে উঠে ভেতর চলে যেতে বললো।তখন সবাই মিলে ওদের ঘিরে ধরলো…

মুগ্ধঃ প্লিজ ভাবি এখন এসব আর না কারন অলরেডি ৫ঃ৩০ টা বাজে।একটু পর আজান দিবে আর এখানে খোলা জায়গা এভাবে গোসল করাটা ঠিক না তাই না।আপনারা মজা করতে চেয়েছেন আমিও তো এতসময় কোন বাঁধা দেয় নি! বাট এখন আর জোর করবেন না। আর রুহির অল্পতে ঠান্ডা লাগে সো….
ভাবিঃ বাহ্ বউয়ের প্রতি কি ভালবাসা!এখন না হয় ছেড়ে দিলাম পরশুদিন সকালে থেকে তখন কি করবে শুনি…হা হা হা
মুগ্ধঃ সে তখন দেখা যাবে। (দুষ্টু হেসে)

তারপর সবাই মুগ্ধর কথা মেনে নিলো! আর যে যার বাসায় গিয়ে ফ্রেস হয়ে নিলে।মুগ্ধ সাথে রাহাত, আবির আর আরিয়ানও গেল! রুহি ওর ওয়াশরুমে গিয়ে বাথটাবের মধ্যে বসে ভাবছে…
রুহিঃভাবি কি যেন বললো?কালকে মুগ্ধ আমাকে ছাড় দিবে না তাই তো ।ইসসস এসব কথা কেউ বলে নাকি?আমিই তো মুগ্ধ কে ছাড়বো না! তাহলে ও কি ছাড় দিবে শুনি???এরা না পারেও বটে…বাসর ঘরে ছাড়াছড়ি কথা আসছে কোথা থেকে!আর আমরা বাসর ঘরে কামড়াকামড়ি করবো নাকি জড়াংজড়িং করবো সেটা আমরা বুঝবো! আর আমরা যাই করি তাতে কার বাপের কি শুনি???

ওইদিকে মুগ্ধ ভেজা শার্ট নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকতে যাবে তখন আবির,রাহাত আর আরিয়ান ওয়াশরুমে হুড়মুড় করে ঢুকে গেল।মুগ্ধ ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে।বাট ওরা তিনজন মুগ্ধকে চেনে না ভাব করে যে যার মত গোসলের কাজে লেগে পড়ে!আবির মুগ্ধর বাথরুমে শুয়ে পড়ে তারপর বলে…
আবিরঃভাই এভাবে না তাকিয়ে এইদিকে আয় সুখ দুঃখের গল্প করি।
মুগ্ধঃ বাসায় তো আরো ওয়াশরুম আছে তাই না! তাহলে আমার ওয়াশরুমে ঢুকে পড়লি কেন তোরা???(ভ্রু কুচকে)
রাহাতঃএক সাথে গোসল করাই মজাই আলাদা।একদিকে আয় ভাই…
আবিরঃ হ্যালো ফেন্ডস্! আমি কি শুধু শটস্ পড়ে গোসল করতে পারি!কারন…
মুগ্ধঃ আবির আর কয়েকদিন পর তুই বাবা হবি এবার তো মুখে লাগাম দে!এবার একটু লজ্জা তো কর…
রাহাতঃএই জন্মে ওর লজ্জা হবে কি না এটা নিয়ে সবার ডাউট আছে।

মুগ্ধ ওর শার্ট খুলে ফেলে আর চুলে শ্যাম্পু করছে!আর চুল দিয়ে লাল রং বের হচ্ছে!আবির মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে বলছে…
আবিরঃ মুগ্ধ বেবি তোমার বডি ফিগার দেখে আমি ক্রাস খেয়েছি! প্লিজ রুহিকে বিয়ে করো না আমাকে বিয়ে করো প্লিজ…
মুগ্ধঃকেন নই বেবি চলো এখুনি আমরা বিয়ের করে ফেলি..
.
আরিয়ানঃ এটাও দেখার বাকি ছিলো ভাই।
আবিরঃ মুগ্ধ বেবি এমন করে বলো না সোনা! আমি লজ্জা পাচ্ছি…
রাহাতঃ ওই শালা চুপ থাক!তোকে বিয়ে করলে মুগ্ধর বাবা ডাক আর শুনতে হবে না।
মুগ্ধঃ এই তোরা তারাতারি কর নইতো ঠান্ডা লেগে যাবে!
আবিরঃ মুগ্ধ একটা কথা বলবো ভাই…
মুগ্ধঃ হুমমমম!আমি বলতে না করলেও তুই কথাটা বলবি আমি জানি।তাই বণিতা না করে বলে ফেল…
আবিরঃ তুই আসলেই কি এখনো ভার্জিন আছিস তো ভাই!সত্যি কথা বলতো…
মুগ্ধঃ এসব কেমন কথা! এবার কিন্তু বেশি হয়ে যাচ্ছে আবির।
রাহাতঃ মার শালাকে!
আবিরঃ আমি আবার কি ভুল বলছি??মুগ্ধর গলায় বুকে, পেটে দেখ কেমন কামড়ের দাগে লাল হয়ে আছে!এজন্য তো জানতে চাইলাম…
আরিয়ানঃ হা হা হা!ওহহ হো তাই তো!ভাই তুমি কি বিয়ের আগেই বাসর সেরে ফেললে।
মুগ্ধঃ রুহি এভাবে কামড় দিয়ে ওর রাগ কমিয়েছে!আর তোরা ভুল ভাল ভাবা বন্ধ কর।

তারপর মুগ্ধ শ্যাম্পু করে রং তুলে ফেললো!আর রাহাত ওর মুখে ফেসওয়াশ দিচ্ছে আর আবির পুরো শরীর সাবান আর মাথা শ্যাম্পু করে ফেনা লাগিয়ে বসে আছে।মুগ্ধ তারাতারি সাওয়ার নিয়ে টাওয়াল পড়ে বের হয়ে যায়।আর বাকি তিন ওরা সাবান মাখামাখিকে বিজি….

মুগ্ধ রুমে এসে ড্রেস পড়ে নিলো!ভাল করে চুল মুছে নিলো!শার্ট আর প্যান্ট পড়ে পেছনে ঘুরতেই দেখলো রুহি ব্লাউজগুলো বেডে এখনো পড়ে আছে!মুগ্ধ সকালে এগুলো আনতেই বাইরে গিয়েছিলো।মুগ্ধ ব্যাগ হাতে নিয়ে নিচে নেমে মৌমি আর ওর আম্মুকে খুজলো বাট কাউকে না পেয়ে রুহির বাসায় দিকে হাটা ধরলো!মুগ্ধ রুহি বাসায় ডুকে আশে পাশে তাকিয়ে দেখলো রুহির আম্মু! মুগ্ধ রুহির আম্মুর সামনে গিয়ে বললো…

মুগ্ধঃ মেজ আম্মু এইগুলো রুহির! আমি সকালে টেইলার্স থেকে এনেছিলাম বাট দিতে ভুলে গেছি…
রুহির আম্মুঃ আব্বু তুই আর একটু কষ্ট করে রুহির রুমে দিয়ে আয়! আমি রান্না ঘরে যাচ্ছি সেই কখন পায়েসের জন্য কিসমিস দিতে বলছে আমি ভুলেই গেছি…

রুহির আম্মু বাটিতে কিসমিস নিয়ে রান্না ঘরে চলে গেল!আর মুগ্ধ রুহির রুমের দিকে হাটা ধরলো!মুগ্ধ রুহির রুমে গিয়ে দেখলো রুহি রুমে নাই ওয়াশরুম থেকে পানির পরার শব্দ আসছে।মুগ্ধ ওয়াশরুমের দরজাতে নক করলো ঠিক তখনই রুহি বলে উঠলো।
রুহিঃ আম্মু আমাকে ডিস্টার্ব করো না তো!আজকে না আমার গায়ে হলুদ!আমাকে ভালো করে সাবান মেখে গোসল দিতে হবে।আর এমন ভাবে গোসল দিতে হবে যে চকচক করে।আম্মু আর ৫মিঃ সময় দাও হয়ে গেছে…..
মুগ্ধ রুহির কথাটা শুনে হতভম্ব হয়ে দাড়িয়ে আছে..

#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_26

রুহিঃ আজকে না আমার গায়ে হলুদ!আমাকে ভালো করে সাবার মেখে গোসল দিতে হবে।আর এমন ভাবে গোসল দিতে হবে যে চকচক করে।আম্মু আর ৫মিঃ সময় দাও হয়ে গেছে…..

মুগ্ধ রুহির কথা হাবলার শুনলো!রুহি ওয়াশরুমে দরজা খুলতেই দেখে মুগ্ধ দাড়িয়ে। রুহি প্রথমে অবাক হয়ে তাকায় তারপর গটগট করে হেটে আগে রুমের দরজা আটকে দেয়।তারপর তাড়াহুড়ো করে ড্রেস নিয়ে দৌড় দিতে যাবে তখনই মুগ্ধ সামনে দুম করে পড়ে গেল!মুগ্ধ রুহিকে তোলা বাদ দিয়ে হা করে তাকিয়ে আছে।মুগ্ধ রুহির দিকে তাকিয়ে দেখে অরেন্জ কালার একটা টাওয়াল দিয়ে চুল গুলো পেচানো আর হালকা গোলাপি কালার টাওয়াল রুহির শরীরে পেচানো।মুগ্ধ রুহির দিক থেকে চোখ সরিয়ে নেয় কারন শেষ পযায়ে এসে কোন ভুল করতে চাই না!

রুহিঃইসস আমি উঠতে পারছি না আমাকে টেনে না তুলে খাম্বারমত দাড়িয়ে আছো কেন??
মুগ্ধঃ….(টেনে তুলো রুহিকে)
রুহিঃ যাক বাবা টাওয়াল টাইট করে বেঁধেছিলাম বলে এই যাত্তায় বাঁচা গেল।

মুগ্ধ কিছু বললো না!কারন রুহি কিছু বলা আর কলা গাছের সাথে বকবক করা দুটোই সমান। রুহি মুগ্ধর হাত থেকে শপিং ব্যাগটা নিয়ে দেখে ওর ব্লাউজ আরো কিছু ড্রেস! এগুলো সেদিন টেইলার্সে বানাতে দিয়ে এসেছিলো সাথে মেহেদীও আছে…রুহি মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে বললো!

রুহিঃ আজকে তোমার মনের মত করে আমাকে সাজিয়ে দিয়ে তারপর যাবে!আমি তোমার হাতেই আজকে সাজতে চাই।চলে যেও না কেমন!যদি যাও তো টাওয়াল পড়েই আমি আজকে হলুদ দিতে বসবো মনে রেখ।ওয়েট আমি আসছি…
মুগ্ধঃ…..

রুহি ওয়াশরুমে চলে গেল!মুগ্ধর মনে হচ্ছে সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে আর মাথা হ্যাং হয়ে যাচ্ছে। রুহি ওয়াশরুমে থেকে লাল রংয়ের ব্লাউজ পড়ে টাওয়াল পেচিয়ে মুগ্ধর সামনে এসে দাড়ায়।মুগ্ধ এই প্রথম রুহির দিকে নেশাভরা দৃষ্টিতে তাকায়। ফর্সা শরীরে লাল রং খুব বেশি ভালো দেখায়! তারপরে রুহির উন্মুক্ত পেট দেখে মুগ্ধর কেমন যেন পাগল পাগল লাগছে নিজেকে!মুগ্ধ সব চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে আগে মেহেদীর টিউব হাতে নেয় আর তারপর রুহির থেকে টাওয়াল সরাতেই দেখে রুহি পেটিকোটের বদলে থ্রীকোয়াটার পড়ে আছে।মুগ্ধর হাসি পাচ্ছে খুব তারপরেও হাসি চাপিয়ে। রুহির দিকে ভ্রু কুচকে তাকালো!রুহি তখন দাঁত কেলিয়ে বললো…
রুহিঃ আমি থ্রিকোয়াটারের উপরেই শাড়ি পরবো।তাছাড়া আমার শাড়ি খুলে যাবে আমি সিওর।আর থ্রিকোয়াটারের উপরে পড়লে খুলবে না…(বিশ্বজয় করা হাসি দিয়ে)

মুগ্ধ আর কিছু বললো না মেহেদীর টিউব হাতে নিয়ে রুহির সামনে হাটু গেড়ে বসে পড়লো।রুহি কিছু বলতে যাবে তার আগেই মুগ্ধ ইশারায় রুহিকে কোন কথা বলতে না করলো!মুগ্ধ একটু রুহির দিকে তাকিয়ে রুহির নাভিতে মেহেদী ধরতেই রুহি দুইপা পিছিয়ে গেল!মুগ্ধ রুহির পেছনে সরে যাওয়া দেখে মুগ্ধ রুহিকে ধাক্কা দিয়ে বেডে ফেলে দিলো।মুগ্ধর মুখে দুষ্টু হাসি!রুহি অবাক হয়ে মুগ্ধর দিকে আছে শুধু… মুগ্ধ রুহির কাছে এসে রুহির দিকে তাকিয়ে বললো।
মুগ্ধঃভালবাসার চিহ্ন দিয়ে দিচ্ছি।আমার কাজে একদম বাধা দিবি না বলে দিলাম।

মুগ্ধ রুহির নাভিতে ওর নাম বার বার লিখছে আর এমন ভাবে নামটা লিখছে পুরোটা লাভ এর মত দেখাচ্ছে। তারপর মুগ্ধ ফু দিতে থাকে যাতে মেহেদিটা তারাতারি শুকিয়ে যায়।এর মধ্যে রুহির আম্মু এসে রুহিকে জিজ্ঞাসা করলো মুগ্ধ চলে গেছে কি না??রুহি একবার মুগ্ধর দিকে তাকালো! তারপর বললো মুগ্ধ চলে গেছে।আর রুহি ওর আম্মু কে বললো রুহি একাই সাজবে কাউকে পাঠানোর দরকার নাই।রুহির আম্মু চলে গেল।মুগ্ধ রুহির দিকে তাকিয়ে একটা তেডি স্মাইল দিলো।

তারপর মেহেদী শুকিয়ে গেলে মেহেদী ধুয়ে দেখে অনেক সুন্দর রং হয়েছে! আর মুগ্ধর নামটা লিখার স্টাইল টা দারুন ছিলো যার কারনে দেখতে একটু বেশিই ভালো লাগছে।রুহির এখন কেন জানি খুব লজ্জা লাগছে।মুগ্ধ রুহির লজ্জা মাখা মুখ দেখে মুচকি হাসে আর রুহির কপালে একটা আদর দেয়।

মুগ্ধ কথা অনুযায়ী রুহি থ্রীকোয়াটারের উপরে পেটিকোট পড়ে।মুগ্ধ শাড়িটা হাতে নিয়ে দাড়িয়ে ভাবছে কি করে শুরু করবে।মুগ্ধ রুহির কোমরে শাড়ি গুজতেই রুহি লাফ দিয়ে উঠে!তারপর মুগ্ধ শাড়িটা কি করবে বুঝতে পারছে না!তাই ফোন বের করে ইউটিউবে দেখে দেখে রুহিকে শাড়ি পড়াতে থাকে!মুগ্ধ মনোযোগ দিয়ে শাড়ি পড়াচ্ছে আর রুহি মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে আছে।জামদানি হলুদ শাড়িটা রুহির ফর্সা শরীরে দারুন মানিয়েছে।শাড়ি পড়ানো হয়ে গেছে মুগ্ধ দেখে রুহি চুল ভেজা!মুগ্ধ রুহিকে ড্রেসিং টেবিলের সামনের টুল রুহিকে বসিয়ে হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকাতে থাকে।আর রুহি আয়নাতে মুগ্ধকে দেখতে থাকে!..

এবার মুগ্ধ কনফিউজড হয়ে যায় রুহির সাজগোজের জিনিস দেখে।কোনটা দিয়ে কি করে সাজতে হয় সেটা মুগ্ধর জানা নেই।!মুগ্ধ ওর হাতে আইলানা,মাসকারা,কাজল,আইলেস,আই স্যাডো, নিয়ে ভাবতে থাকে এগুলো দিয়ে আসলে কি করে?রুহির মুগ্ধকে দেখিয়ে দেয় কোনটা কি কাজে লাগে!মুগ্ধ আইলেস,আইস্যাডো,রেখে দেয়।মুগ্ধ রুহির মুখে হালকা করে ফেস পাউডার দিয়ে দেয়!তারপর রুহির চোখে টানা করে আইলানা দিয়ে দেয়।তারপর কাজল দেয় খুব যত্ন করে।তারপর লিপ লাইনার দিয়ে ঠোঁট হালকা করে আঁকানোর পর লাল লিপস্টিক দেয়! তাও হালকা করে।আর মুগ্ধর ভাষ্যমতে মতে হালকা লিপস্টিকে নাকি রুহিকে ভালো দেখায়..

তারপর রুহির চুলের মাঝখানে একটু সিথি করে তারপর অল্প একটু চুল ফুলিয়ে ক্লিপ আটকে নেয় আর সিথি করার পর যে চুল গুলো সামনে থাকে ওগুলোকে পেচিয়ে ক্লিপ আটকায়!তারপর রুহির চুল গুলো বেণী করে। রুহি মুগ্ধকে দেখিয়ে দিচ্ছে আর মুগ্ধ সেই অনুযায়ী করছে।তারপর মুগ্ধ রুহিকে কাঁচা ফুলের গয়না পড়ানো শুরু করে!গাদা আর লাল অর্কিড ফুল দিয়ে বানানো ফুলের গয়না!রুহির কপালে ঠিক মাঝখানে লাল অর্কিড আর চারপাশে গাঁদা ফুল। মুগ্ধ প্রথমে রুহির কপালে ফুলের গয়না পড়ায় তারপর ক্লিপ দিয়ে আটকায় তারপর দুল পড়ায় তারপর গলায় মালা।আর আর দুই হাতেও ফুলের গয়না পড়ায়। তারপর একটা করে গাদা ফুল নিয়ে রুহির চুলে বেণীর মাঝে একটা করে দেয় আর ফুল গুলো কালো চিকন ক্লিপ দিয়ে আটকানো হয়।চুলের বেণীর মাঝে চুল আটকানোর পর বেণীটা সামনে একপাশে এনে রাখে।তারপর মুগ্ধ বেডের দিকে তাকিয়ে দেখে আরো একটা গয়না বাকি আছে! মুগ্ধ ওই মালাটা হাতে নিয়ে রুহি দাঁড় করাই তারপর ফুল দিয়ে বানানো কোমর বন্ধণীটাও রুহি পড়িয়ে দেয়।

এখন রুহির সাজ কমপ্লিট!এককথায় হলুদ পরী দেখাচ্ছে আর হালকা সাজে রুহি মানায়।চোখে টানা করে কাজল আর আইলানা দেওয়ার জন্য চোখ দুটো আরো মায়াবী মনে হচ্ছে….

রুহি সাজ কমপ্লিট করে ! আর মুগ্ধ দুই টা পিছিয়ে রুহির দিকে তাকিয়ে দেখে কাঁচা ফুলের সাজে অসম্ভব সুন্দর দেখাচ্ছে। মুগ্ধ রুহির দিকে তাকিয়ে আছে মুগ্ধ নয়নে!মুগ্ধ রুহির দিকে এগিয়ে আসে তারপর একটা লাল টিপ পড়িয়ে দেয়।মুগ্ধ রুহিকে হালকা করে জড়িয়ে ধরে!রুহিও আয়নাতে নিজেকে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে! কারন মুগ্ধ যে ওকে এত সুন্দর করে সাজাতে পারবে সেটা রুহিও কল্পনা করে নি।আর কোন ছেলে যে এত সুন্দর করে আইলানা আর কাজল দিতে সেটা মুগ্ধকে না দেখলে জানা হতো না।

ওইদিকে মুগ্ধ বাসার লোক মুগ্ধকে খুঁজছে বাট কোথাও মুগ্ধ নেই!ফোন করলেও মুগ্ধ কল রিসিভ করছে না।রুহির বেডে উপর মুগ্ধ ফোন সাইলেন্ট মুডে পড়ে আছে।রাহাত,আরিয়ান,আর আবির মুগ্ধ রুমে বসে মুগ্ধর জন্য ওয়েট করছে।
রাহাতঃ আচ্ছা মুগ্ধ কোথাও পালিয়ে গেল না তো..
আরিয়ানঃ দুজন দুজনকে ভালবেসে বিয়ে করছে তাহলে পাঠাবে কোন সুখে..
আবিরঃ ডাল মে কুচ আলু ভর্তা হ্যা!আচ্ছা মুগ্ধ যদি পালিয়েও যায় মুগ্ধর বাবা আমাদের ঠ্যাঙ্গাবে না তো।
রাহাতঃ আচ্ছা আবির তোর ভুল ভাল না বকলে শান্তি হয় না তাই না।ভাল চিন্তা কি তোর মাথায় আসে না??
আরিয়ানঃ আর একটু পর অনুষ্ঠান শুরু হবে তাহলে ভাই গেল কোথায়???
আবিরঃ আমার মন বলছে মুগ্ধ রুহির কাছেই গেছে!
রাহাতঃ এখন তো রুহি সাজগোজ করছে মে বি!জানিস না মেয়েরা বর ছাড়তেও রাজি বাট সাজ ছাড়তে রাজি না।আর রুহি এখন একা পাওয়ার কথাও না…
আরিয়ানঃ রাহাত মুখে লাগাম দাও ভাই! কারন বিয়ে বাড়িতে ছেলেদের থেকে মেয়েদের সংখ্যা বেশি! যদি কোন মেয়ে ফাঁক ফোকর দিয়ে এসব কথা শুনতে পাই তাহলে! আমাদের মেরে চোখ মুখে আলু তুলে দিবে।
রাহাতঃহা হা হা! তা ঠিক বলছো
আবিরঃ বিয়ে বাড়ি যা খেতে দিবে তাই লাভ,,,,আলু,পটল বা ঝাড়ুর বারি। যা দিবে দুম করে স্বাদরে গ্রহন করবো।নো সমস্যা…..

ওইদিকে….
মুগ্ধ মুচকি হেসে বলে…
মুগ্ধঃ আমার বউটা যে এত সুন্দর সেটা এমন সাজে না দেখলে বুঝতেই পারতাম না। (রুহির মাথায় আঁচল তুলে ঘোমটা দিয়ে)
রুহিঃ….
(তুমি ভালবাসা আর পরম যত্নে সাজিয়ে দিয়েছো! এজন্য আমাকে হয়তো সুন্দর দেখাচ্ছে। আমি জানি তোমার মনের মত করে সাজলে সেটা কখনোই অসুন্দর হবে না।মনে মনে…)

তারপর মুগ্ধ মুচকি হেসে রুহির কপালে আদর দিয়ে দেয়!তারপর মুগ্ধ বারান্দায় দিয়ে চলে যায়।কারন এখন দুইজনকে এক রুমে দেখলে অনেকেই অনেক কিছু ভাবতে পারে।মুগ্ধ চলে যাওয়ার পর রুহি ওর রুমের দরজা খুলে দিয়ে বেডে বসে আর ওমনি রুহির আম্মু রুহির রুমে আসে।রুহির আম্মু রুহির দিকে তাকায় আর এগিয়ে এসে আগে রুহির নখ কেটে দেয় আর একটু কাজলের কালি নিয়ে কানের পেছনে লাগায় দেয় যাতে কারো নজর না লাগে!রুহির আম্মু রুহির দিকে তাকিয়ে বলে….
রুহির আম্মুঃপাগলটাকে মানা করলি না কেন? বারান্দা দিয়ে যাওয়ার কি দরকার শুনি?পড়ে গিয়ে যদি পায়ে ব্যাথা পায়….

#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_27

রুহির আম্মুঃপাগলটাকে মানা করলি না কেন? বারান্দা দিয়ে যাওয়ার কি দরকার শুনি?পড়ে গিয়ে যদি পায়ে ব্যাথা পায়….
রুহিঃ ক ক কার কথা বলছো আম্মু???
আম্মুঃযে আমার মেয়েটাকে এত যত্ন করে ভালবেসে সাজিয়ে দিয়ে গেল আমি তার কথায় বলছি।
রুহিঃ আ আস আসলে আম্মু হ হয়েছে কি….. ব ব
আম্মুঃকিছু বলতে হবে না!মুগ্ধ যে কাজ করে খুব সুন্দর ভাবে করে বাট মুগ্ধ যে এত ভাল করে সাজাতেও পারে সেটা জানা ছিলো না।তোরা দুটিতেই সারাজীবন এমনই থাক! এই দোয়ায় করি…
রুহিঃ তুমি কি করে দেখলে মুগ্ধ এখানে ছিলো??
আম্মুঃ আমি বারান্দা দিয়ে মুগ্ধকে লাফ দিতে দেখছি…
রুহিঃ…..
(শালা উগান্ডার জলহস্তী একটু পর গেলে কি হতো..)

মুগ্ধ ওর রুমে গিয়ে রেডি হয়ে নিলো!একটা হলুদ পান্জাবী পড়লো লাল সুতো দিয়ে কাজ করা!মুগ্ধ রেডি হচ্ছে আর আবির রা বেডের উপর বসে বসে মুগ্ধর দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।মুগ্ধ ড্রেসিং টেবিলের সামনে চুল ঠিক করতে করতে বললো…
মুগ্ধঃ তোরা আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন?আমাকে কি এর আগে দেখিস নি নাকি??
রাহাতঃ আচ্ছা মুগ্ধ তোর কি মায়াদয়া বলতে কিছু নেই??
মুগ্ধঃকেন আমি আবার কি করলাম??
আবিরঃ শালা তোর বিয়ে তো হয়েই যাচ্ছে! তুই তাহলে এত সাজগোজ করছিস কেন?
রাহাতঃ শালা তুমি বিয়েও করবা আবার সুন্দর সুন্দর মেয়ে গুলো যাতে তোমাকে নিয়ে পড়ে থাকে তাই এমন সাজগোজ করছো।
আবিরঃ তোর পাশে থাকলে এমনিতেই কোন মেয়ে তাকায় না এখন আরো তাকাবে না।
মুগ্ধঃতোদের বাকওয়াস বকা হয়েছে…নাকি আরো বাকি আছে তাই বল।ভালোই লাগছে শুনতে বলতে থাক..
রাহাতঃ আমরা কিছু বললেই বাকওয়াস তাই না..
মুগ্ধঃ আরে বাবা আমি কই সাজলাম তোরাই বল!শুধু একটা পান্জাবী পড়ছি আর চুল গুলো ঠিক করছি আর হাতে একটা ওয়াচ।
আবিরঃ দাড়া রুহিকে ফোন দিয়ে বলি তুই সাজগোজ করে অনেক মেয়েদের সাথে সেলফি নিচিছস।
মুগ্ধঃ ভুলেও এমন কাজ করিস না ভাই!তাহলে সেদিন মত আমাকে কামড়ে শেষ করে দিবে।আর আজকে যদি আমাকে ওইভাবে কামড়ে দেয় কালকে আমি বিয়ে করতে যেতে পারবো না।
রাহাতঃ তাহলে কালকে রাতে বলবো কেমন! যাতে কালকে রাতে তোকে…..হা হা হা

মুগ্ধ ওদের সাথে কথা বলছিলো বাট কোথায় থেকে মৌমি এসে মুগ্ধর হাত ধরে টানতে টানতে মুগ্ধকে নিয়ে গেল।মুগ্ধদের বাসাতেই হবে ওদের গায়ে হলুদ!মৌমি মুগ্ধ হাত ধরে টেনে ষ্টেজে আনতেই দেখে! সুমি, ইরা, ভাবিরা সবাই একটা লাল ওড়নার চার কোনা ধরে এই দিকে এগিয়ে আসছে।সবাই ওদের দিকেই তাকিয়ে আছে।সুমি,আর ইরা সামনে আর দুই ভাবি পেছনে আর ওদের মাঝখানে রুহি। রুহি শাড়ি পড়ে হাঁটতে পারছে না এত ধীর গতিতে হাটছে মনে হচ্ছে রুহি নয় মাসের পেগনেন্ট।

রুহির ভাবিরা রুহির কাঁধে হাত রেখে রুহিকে দাঁড়াতে বলে!রুহি ওর ভাবিদের কথা শুনে দাড়িয়ে যায়।ঠিক তখন মুগ্ধর ভাবিরা উনাদের বরদের কি ইশারা করতেই মুগ্ধর কাজিনা মুগ্ধর হাত ধরে টেনে আনে তারপর রুহির কাছে এনে দাঁড় করায়। ভাবি সহ কাজিনরা বলে রুহিকে কোলে তুলে নিতে।মুগ্ধ চারদিকে তাকিয়ে দেখে এখানে বড়রা আছে আর সবাই ড্যাবড্যাব করে ওদের দিকেই তাকিয়ে আছে।মুগ্ধর কাজিন বলে উঠলো…

সাজিদঃ কি রে মুগ্ধ রুহীকে কোলে তুলে নে!
মুগ্ধঃ কেন???এখন কোলে নিতে হবে কেন??
সাজিদঃ নিতে বলছে নে!এত কথার কি আছে
মৌমিঃ রুহি কোলে তুলে নে ভাই!!!!!!
মৌমির হাজবেন্ডঃ আমার শালাবাবুর শরীর কি কোন শক্তি নেই নাকি! যে বউকে কোলে তুলতে ভয় পাচ্ছে।
ভাবিঃ কি রে রুহি তোর বর কত ভীতু!হা হা হা
মুগ্ধঃ ভাবি বোঝার চেষ্টা করো এখানে বড়রা আছে!
মুগ্ধর বাবাঃ কি রে আমার ছেলে হয়ে তুই ভয় পাচ্ছিস। ছিঃ!মুগ্ধ আমার নাম এভাবে ডুবাস না বাপ আমার।
সবাইঃ কোলে নাও মুগ্ধ! কোলে তুলে নাও রুহিকে!!!!

সবাই চিৎকার করতে শুরু করছে!মুগ্ধ আর কিছু না বলে রুহিকে কোলে তুলে নেয়।সেই লাল ওড়না সুমি ধরে ছিলো বাট মুগ্ধ তো লম্বা এজন্য সুমি সরে গেল আর রাহাত,আবির, আরিয়ান আর সাজিদ এসে ওড়নার চারকোণা ধরলো আর মুগ্ধ সেই চারজনের মাঝে রুহিকে কোলে নিয়ে হাঁটছে! আর ভাবিরা পাশে থেকে ওদের শরীর ফুলের পাপড়ি দিচ্ছে!এমন একটা সুন্দর মূহুর্তকে ক্যামেরা ম্যান ক্যামেরা বন্দী করে নিলো।মুগ্ধ রুহিকে কোলে নিয়ে আছে আর রুহি মুগ্ধর গলা জড়িয়ে ধরে আছে।আর বাকিরা সব সিটি বাজাচ্ছে….

মুগ্ধ রুহিকে কোলে এনে ওদের জন্য বানানো হলুদের ষ্টেজে বসিয়ে দিলো।মুগ্ধ রুহিকে বসিয়ে দিয়ে নিজেও বসে পড়লো।রুহির লজ্জায় লাল হয়ে গেছে কারন এর আগে যত আবদার, যত দুষ্টুমি চার দেওয়ালের মাঝে করেছিলো বাট এখন এত গুলো মানুষের সামনে কোলে নিয়েছে মুগ্ধ ওকে! এটা ভাবলে আরো বেশি লজ্জা পাচ্ছে রুহি। মুগ্ধ ফিসফিস করে রুহিকে উদেশ্য করে বললো…

মুগ্ধঃ এমন পাগল করা সাজ তারপরে তোর লজ্জা মাখা মুখ এবার মনে হয় আমি নিজেকে আটকাতে পারবো না।
রুহিঃ……
মুগ্ধঃ মন চাচ্ছে তোকে খেয়ে ফেলি।
ভাবিঃ দুজনে কি ফিসফিস করছো শুনি!
মুগ্ধঃ আমি রুহিকে বলছি ওকে এমন পেত্নির মত সাজ কে সাজালো।ইয়াক খুব বাজে দেখাচ্ছে
ভাবিঃ হা হা হা হুম রুহিকে এত বাজে দেখাচ্ছে যে! তোমার এখন রুহিকে খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে না তাই না।
মুগ্ধ আর কিছু বলে না শুধু মুচকি হাসে

মুগ্ধ আর রুহির আম্মু দুজনে এক সাথে আসে ওদের গায়ে হলুদ ছোঁয়াতে।রুহির আম্মু মুগ্ধকে আর মুগ্ধর আম্মু আগে রুহির গায়ে হলুদ ছোঁয়ায়।তারপর মুগ্ধর আম্মু মুগ্ধকে আর রুহির আম্মু রুহিকে হলুদ দেয়।হলুদ দেওয়ার পর ওদের মিষ্টি খাওয়ায় আর ওদের জন্য অনেক দোয়া করে।এরপর মুগ্ধর বাবা আর রুহির বাবা এক সাথে ওদের হলুদ দেয়।এরপর একে একে সবাই ওদের হলুদ লাগায় আর মিষ্টি খাইয়ে দেয়।এভাবে ওদের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শেষ হয়।

তারপর সবাই গোল হয়ে বসে আড্ডা দেওয়া শুরু করে।রুহি আর মুগ্ধ ড্রেস চেঞ্জ করে এসেছে।মৌমি,আর হাজবেন্ড, রাহাত আর ইরা,সুমি আর আরিয়ান,আবির আর ভাবিরা সহ আরো কাজিনা সহ সবাই আড্ডা দিচ্ছে।এবার সবাই মিলে ঠিক করে কিছু একটা খেলবে।তারপর সবাই ট্রুথ আর ডেয়ারের খেলবে বলে ঠিক করে আর যথারীতি খেলাও শুরু করে দেয়। তারপর একে একে সবার পালা শেষ এখন মুগ্ধ আর রুহির পালা আসে…

প্যারাময় লাভ পর্ব ২২+২৩+২৪

মুগ্ধকে সবাই জোর করে ডেয়ার দিসে আর রুহি আর মুগ্ধকে কাপল ডান্স করতে বলে।মুগ্ধর রুহিকে নিয়ে ডান্স শুরু করে।আর মুগ্ধ ঠিক গানের তালে তালে রুহিকে এডজাস্ট করে নিচ্ছে! কারন রুহি কাপল ডান্স পারে না।রুহিও জানতো না কাপল ডান্স ঠিক কতটা রোমান্টিক! এই ডান্সটা যারা উপভোগ করতে পারবে তারাই বুঝবে কাপল ডান্সটা আসলে কি??তারপর রুহি আগেই বলে ডেয়ার না ও ট্রুথই নিবে।তাই আবির রুহির দিকে তাকিয়ে বলে…

আবিরঃ রুহি তুমি তোমার একটা আনকমন ইচ্ছের কথা বলো!যে ইচ্ছের কথা এর আগে তুমি কাউকে বলো নি…
মৌমিঃ এই রুহি বলতো! ফট করে বলে দে তোর আনকমন ইচ্ছের কথা!আমরাও শুনি???
রুহিঃ….
সুমিঃ কি রে রুহি বল?তোর সব ইচ্ছে মুগ্ধ ভাইয়া পূরণ করবে।
রাহাতঃকি মুগ্ধ কিছু বল তুই..
মুগ্ধঃ আমি কি বলবো?আর আমি তো জানিনা ওর আনকমন ইচ্ছে কি??আর জানলে অবশ্যই পূরণ করার চেষ্টা করবো।
মৌমির হাজবেন্ডঃশালা ভেবে বলছো তো!!
মুগ্ধঃএত ভাবার কি আছে??একটা মাএ বউয়ের আবদার বলে কথা (দুষ্টু হেসে)
ইরাঃ কি রে রুহি চুপ করে আছিস কেন তুই??তোর কি কোন ইচ্ছে নেই।
আবিরঃ আরে বোকা বলতে এত দ্বিধা করছো কেন?মুগ্ধ তো বলছে তোমার ইচ্ছে পূরণ করতে সাহায্য করবে তাহলে এত ভাবার কি আছে শুনি???
মুগ্ধঃ আসলে ওর ইচ্ছেই নেই মে বি! এজন্য বলতে পারছে না। থাকলে এতক্ষণে বলে দিতো…
রুহিঃহুমম আমার ইচ্ছে আছে!আর আমার বেশ কয়েকটা আনকমন ইচ্ছের মধ্যে একটা ইচ্ছে হলো….
…..বাসরঘরে খাট ভাঙ্গা….

প্যারাময় লাভ পর্ব ২৮+২৯+৩০