বাবুইপাখির অনুভূতি পর্ব ৩৮

বাবুইপাখির অনুভূতি পর্ব ৩৮
লেখিকা: তানজিল মীম

আচমকা মুখে পানি পড়তেই ধড়ফড়িয়ে লাফ মেরে উঠলো নিলয়। আশেপাশে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করলো সে এই মুহূর্তে সে কোথায় আছে। সামনেই আদ্রিয়ানকে তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলে উঠল নিলয়,
‘ আমি এখন কোথাই আছি দোস্ত?’
‘ কোথায় আবার কোমায়?’
আদ্রিয়ানের কথা শুনে ধারাম করে শোয়া থেকে উঠে বসলো সে তাঁরপর চোখ বড় বড় করে বললো নিলয়,
‘ কি?’
‘ তোর মাথা উঁঠ তাড়াতাড়ি এভাবে পড়ে গেলি কেন?’
আদ্রিয়ানের এবারের কথা শুনে কিছুক্ষন আগের আদ্রিয়ানের বলা কথাগুলো মনে করতে লাগলো নিলয়। পরক্ষণেই আদ্রিয়ান আহিকে ভালোবাসে ব্যাপারটা মনে পড়তেই অবাক দৃষ্টিতে আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে বললো,

‘ দোস্ত তুই কি সত্যি সত্যি আহিকে ভালোবাসিস।’
‘ হুম।’
নিলয় যেন নিজের কানকে এখনো বিশ্বাস করতে পারছে না। নিলয় আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে বললো,
‘ প্লিজ দোস্ত মজা করিস না আমি হার্ট অ্যাটাক করমু নাইলে।’
‘ আরে মজা করবো কেন আমি সত্যি আহিকে ভালোবাসি ওকে বিয়ে করতে চাই। তুই শুধু বল ওকে প্রপোজ কিভাবে করবো?’
আদ্রিয়ানের এবার কথা আস্তে আস্তে বসা থেকে আদ্রিয়ানকে ধরে উঠে দাঁড়ালো নিলয়। তারপর বললো,
‘ তুই চিন্তা করিস না আমি এক্ষুনি আহিকে ধরে নিয়ে আসছি তারপর দুধ কা দুধ আর পানি কা পানি হয়ে যাবে। আর তখনই তুই ওকে প্রপোজ করে ফেলিস।’
বলেই আদ্রিয়ানের হাত ছেড়ে দিয়ে বুকে হাত রেখে দ্রুত বেরিয়ে গেল সে আদ্রিয়ানের রুম থেকে। আর আদ্রিয়ান জাস্ট অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো নিলয়ের যাওয়ার পানে। সে বেশ বুঝতে পেরেছে নিলয় অবাকের চেয়েও অবাক হয়েছে তাঁর কথা শুনে। আদ্রিয়ান হাল্কা হেঁসে গিয়ে বসলো তাঁর চেয়ারে। তারপর অফিসের সব ফাইলগুলোকে দেখতে লাগলো সে। সাথে মনোযোগ দিলো তাঁর কাজে।’

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

বেশ কিছুক্ষন পর,
হঠাৎই বাহির থেকে কিছু আওয়াজ কানে আসতেই আদ্রিয়ান তাঁর কাজ রেখে চুপ করে বসে রইলো অল্পক্ষন। এরই মধ্যে বাহিরের আওয়াজ আস্তে আস্তে ভাড়ি হতে লাগলো যেমন কেউ একজন বলছে,
‘ কি করেছেন কি আপনারা কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমায়? এইভাবে বলা নেই কওয়া নেই ভার্সিটি থেকে তুলে নিয়ে এসেছেন কেন আমায়? আর আদ্রিয়ানের অফিসে কেন নিয়ে এসেছেন? আরে ছাড়ুন বলছি আমায়? আমি কিন্তু আপনাদের নামে কেস করবো…
এইরকম আরো হাজারো কথা বলতে লাগলো আহি। কিন্তু ওর কথা আপাতত কেউ শুনছে না। কিছুক্ষন আগে বেশ স্বাভাবিক ভাবেই সবার সাথে বসে ভার্সিটিতে ক্লাস করছিল সে। ক্লাস শেষ হতেই টিচার বের হওয়ার কিছুক্ষনের মধ্যে একদল কালো কোট প্যান্ট পরিধিত কানে ব্লুটুথ লাগিয়ে ভিতরে ঢুকলো কিছু লোক সাথে দুজন লেডিও ছিল। সবাই বেশ অবাক চোখেই তাকিয়ে রয়েছিল ওদের দিকে। আহি তখন কেবল তার খাতা কলমগুলো ব্যাগের ভিতর ঢুকাচ্ছিল এমন সময় সব লোকগুলো তাঁর সামনে এসে বললো,

‘ আপনাকে আমাদের সাথে যেতে হবে ম্যাম?’
হুট করেই কিছু মানুষের কথা কানে আসতেই আহি তাকালো তাঁদের দিকে। সামনেই একই রকম পোশাক পড়া এতগুলো মানুষকে দেখে অবাক হয়ে বললো তাঁরা,
‘ আপনারা কারা আর আমায় কোথায় যেতে বলছেন?’
‘ সেটা আপনি গেলেই জানতে পারবেন ম্যাম এখন চলুন আমাদের সাথে?’
‘ এখন আমি কোথাও যাবো না আমার কাজ আছে?’
বলেই নিজের ব্যাগপত্র গুছিয়ে বেরিয়ে যেতে নিয়েছিল সে। আহিকে যেতে দেখে কালো কোট পরিধিত লোকগুলোর একজন লোক সেই লেডি দুটোকে ইশারা করলো। সাথে সাথে তাঁরা গিয়ে কোলে তুলে নিয়ে হাঁটা শুরু করলো আহিকে। আহি তো তাদের কাজে চরম অবাক। পুরো ক্লাস রুমের স্টুডেন্টরাই জাস্ট হা হয়ে তাকিয়ে রয়েছিল আহি আর বাকি সবার দিকে। আর সেই থেকেই আহি চেঁচিয়ে চলেছে তাঁদের ওপর কিন্তু কেউ আহির কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয় নি।’
বর্তমানে,
আহির কথাগুলোকে টোটালি ইগনোর করে সেই লেডি দুজন আহিকে কোলে নিয়ে এসে সোজা গিয়ে ঢুকালো আদ্রিয়ানের রুমে।’

হুট করেই দরজার কাছে কারো উপস্থিতি টের পেতেই আদ্রিয়ান তাকালো সামনে। সত্যি সত্যি সামনে আহি আর তাঁর গার্ডগুলোর কাজ দেখে চোখ বড় বড় হয়ে যায় তাঁর। সে সত্যি ভাবে নি নিলয় সত্যি সত্যি আহিকে এইভাবে তুলে নিয়ে আসবে।’
অন্যদিকে সেই লেডি দুজন আহিকে আদ্রিয়ানের সামনে থাকা চেয়ারে বসিয়ে দিল। তারপর বললো,
‘ আমরা নিলয় স্যারের কথা মতো ওনাকে নিয়ে এসেছি বস?’
‘ তাই বলে এইভাবে?’
‘ আসলে উনি আসতে চাইছিলেন না আর নিলয় স্যার বলেছিল উনি যদি আসতে না চান তাহলে আমরা যেন ওনাকে তুলে নিয়ে আসি তাই আর কি।’
‘ ঠিক আছে ঠিক আছে যাও তোমরা।
বলেই আদ্রিয়ান নিজের ফোনটা বের করে ফোন করলো নিলয়কে।’
আর এদিকে আদ্রিয়ানের কথা শুনে সবাই একসাথে বলে উঠল,
‘ ঠিক আছে স্যার।’
বলেই তাঁরা চলে গেল। কিছুটা বিষন্নতা, সাথে কিছুটা রাগী লুকিং নিয়ে তাকিয়ে আছে আহি আদ্রিয়ানের দিকে। প্রচন্ড রাগ হচ্ছে তাঁর এই মুহূর্তে। আহিকে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে আদ্রিয়ানও নিলয়কে ফোনে ‘এখানে আসার কথা বলে’ আহির দিকে তাকিয়ে বললো,

‘ তুমি এইভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছো কেন?’
‘ তাকিয়ে থাকবো না তো কি করবো এটা কি করলো আপনার লোকেরা ভরা ভার্সিটির সামনে দিয়ে তুলে নিয়ে আসলো আমায়। সবাই কি ভাবলো বলুন তো। আর আমাকে এইভাবে ধরেই বা এনেছেন কেন?’
আহির কথা আমি আদ্রিয়ানও হতাশা ভরা কন্ঠ নিয়ে বলে উঠল,
‘ বিশ্বাস করো আহি আমি কিছুই করি নি যা করার সব ওই নিলয় করেছে। ও আসুক তারপর ওর সাথেই কথা বলে নিও তুমি।’
.
এরই মাঝে এক প্রকার দৌড়ে এসে রুমে ঢুকলো নিলয়। নিলয় এতটাই ঝড়ের গতিতে আসলো যে আদ্রিয়ান আহি দু’জনেই প্রায় চমকে উঠেছিল। নিলয় হতভম্ব হয়ে আহির সামনে এসে বললো,
‘ তুমি এসেছো আহি খুব ভালো হয়েছে এখনই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।’
নিলয়ের কথা শুনে আহি বেশ অবাক হয়ে বললো,
‘ কি পরিষ্কার হয়ে যাবে?’
আহির কথা শুনে নিলয় বলে উঠল,
‘ হুম বলবো তবে আমি নই আদ্রিয়ান।’
নিলয়ের কথা শুনে আহিও তাকালো আদ্রিয়ানের দিকে। আর আদ্রিয়ান তো নিলয়ের কথা শুনে চোখ বড় বড় করে তাকালো আহি নিলয়ের দিকে। এখন কি করবে সে সত্যি সত্যি তবে এখন আহিকে প্রপোজ করতে হবে তাঁকে?”– ভেবেই৷ শুকনো ঢোক গিললো আদ্রিয়ান।’

রৌদ্রময়ী দুপুরে খোলা আকাশের নিচে, বড় একটা আম গাছের তলার পাশে থাকা বেঞ্চে বসে আছে অথৈ। চোখে মুখে বিষন্নতার ছাপ তাঁর, এই কয়দিনের বিয়ে, হুল্লোড়, আনন্দ গেল কিন্তু এর কোনো কিছুই যেন অথৈকে খুশি করতে পারলো না। শুধু একটা কারনে সে যাকে ভালোবাসে সেই নীরব বলে। ছোট্ট দীর্ঘ শ্বাস ফেললো অথৈ। তাঁর সামনেই দিয়েই বয়ে চলছে একটা নদী, আর নদীতে বয়ে চলছে ঢেউ। অথৈর দৃষ্টি আপাতত সেদিকেই। অথৈ এই মুহূর্তে সেই আম গাছটার নিচেই বসে আছে যে আম গাছটার সামনে দিয়েই নীরব তাঁর হাত ধরে নিয়ে গিয়েছিল। এখান থেকেই তাঁর প্রথম অনুভূতি শুরু হয়েছিল। আজও গাছে আম আছে, কিন্তু সেই আম পাড়ার মানুষগুলো নেই। কারন সবাই বিজি এখন। সময়ের সাথে সাথে যেন সবকিছুই বদলে যায়। আশেপাশের সব জায়গাতে এমনি নদীর মাঝেও রোদ্দুরেরা চিক চিক করছে শুধু এই বড় আম গাছটার নিচেই একটু ছাউনি পড়েছে। সাধারণত আহির এখানে বসে থাকা কারন দুটো এক এখন নীরব চলে যাবে যেটা সে নিজ চোখে এই মুহূর্তে দেখতে চায় না আর দুই তাঁর বড্ড মন খারাপ। তাঁরাও চলে যেত আজ কিন্তু চাচা চাচির জোরাজোরিতে থেকে গেল কিন্তু কাল সকালে তাঁরাও পাড়ি জমাবে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে। হাজারো কথা মাথায় নিয়ে চুপচাপ বসে আছে অথৈ। এমন সময় অথৈর ভাবনার মাঝে ওর পাশে এসে বসলো নীরব তাঁরপর বললো,

‘ এখানে একা বসে আছো কেন কারো জন্য অপেক্ষা করছো বুঝি?’
হুট করেই নীরবের কন্ঠ শুনে হকচকিয়ে উঠলো অথৈ। পাশ ফিরে তাকাতেই সত্যি সত্যি নীরবকে দেখে শীতল কণ্ঠে বললো সে,
‘ আপনি এখনো যান নি?’
‘ এই তো এখনই চলে যাবো তবে ভাবলাম যাওয়ার আগে তোমার সাথে লাস্ট বারের মতো দেখা আর কথা বলে যাই।’
‘শেষ বারের মতো’ কথাটা কানে বাজতেই যেন বুকটা কেঁপে উঠলো অথৈর। জবে থেকে অথৈ জানতে পেরেছে যে যাকে ভালোবাসে সেই নীরব তবে থেকেই যেন একটু একটু করে দূর্বল হয়ে পড়েছে অথৈ নীরবের উপর। ভালোবাসাটা তো আগেই থেকেই ছিল তাই সেটা যেন বেশি করে হতে লাগলো আরো। অথৈ মানতে না চাইলেও এটাই সত্যি সে ভালোবাসে নীরবকে।’
‘অথৈর ভাবনাগুলোর মাঝেই সামনের আম গাছটার দিকে তাকিয়ে বলে উঠল নীরব,
‘ এ এইটা সেই আম গাছটা না যেখান থেকে তোমায় নিয়ে দৌড়ে ছিলাম।’
নীরবের কথা শুনে অথৈ ছলছল চোখে নীরবের দিকে তাকিয়ে বললো,
‘ আপনার মনে আছে?’
‘ আরে মনে থাকবে না কেন?’ তবে মিথ্যে বলবো না আমার এই গাছটা দেখেই জাস্ট মনে পড়লো।’
‘ওহ।’

অথৈর কথা শুনে নীরব জোরে এক নিশ্বাস ফেলে বলে উঠল,
‘ আমি জানি তুমি হয়তো আমায় কখনোই ভালোবাসবে না অথৈ। আমার মনে পড়েছে সেদিন ভার্সিটি বসে তুমি বলেছিলে তুমি নাকি অন্য কাউকে ভালোবাসো। আসলে আহির কথা শোনার পর থেকে ওই জিনিসটা আমার মাথা থেকে বের হয়ে গিয়েছিল। কালকেই হুট করে মাথায় আসলো কথাটা। আর তখন থেকেই বুঝতে পেরেছি আমি অকারণে তোমাকে ডিসটার্ব করা ঠিক হবে না। আর আমি যেমন তোমায় ভালোবাসি বলে আহির ভালোবাসাকে মেনে নেই নি, তেমন তুমিও অন্য কাউকে ভালোবাসো বলে আমায় মেনে নেও নি। আর হয়তো নিতেও পারবে না। তবে সেসব নিয়ে আপাতত আমার খোপ নেই যা হয়েছে হয়তো ভালোর জন্যই হয়েছে। যাইহোক এখন আমায় যেতে হবে। আর হ্যাঁ চাইলে ঢাকাও বেক করতে পারো যতই হোক সামনে তোমার এক্সাম আছে। আমি তোমায় কথা দিচ্ছি আমি আর কখনোই তোমায় ডিসটার্ব করবো না। অবশেষে বলবো,
ভালো থেকো তোমার ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে।’

বলেই উঠে দাঁড়ালো নীরব। কথাগুলো খুব ইজিভাবে বললেও এখন খুব কষ্ট হচ্ছে নীরবের। যতই হোক অথৈকে সে মন থেকে ভালো বেসেছিল। এসব ভাবতে ভাবতে আস্তে আস্তে এগিয়ে যাচ্ছিল নীরব।’
অন্যদিকে, অথৈর যেন নীরবের প্রতিটা কথা ধারালো চাকু বুকের ভিতর ঢুকিয়ে দেওয়ার মতো আঘাত করছিল। ভয়ংকর ভাবে কষ্ট হচ্ছে তার। কি একটা অদ্ভুত ব্যাপার সে যাকে ভালোবাসে সেও তাঁকে পাগলের মতো ভালোবাসে অথচ তাদের মধ্যে কতটা দুরত্ব। অথৈ ছলছল চোখে তাকিয়ে রইলো নীরবের যাওয়ার পানে এই মুহূর্তে তার ইচ্ছে করছে দৌড়ে গিয়ে নীরবকে জড়িয়ে ধরে বলতে,
‘ প্লিজ আপনি যাবেন না, আমিও যে আপনায় ভালোবাসি। আমার ভালোবাসার মানুষটা যে আপনিই।’
কিন্তু আফসোস এমনটা সে করতে পারে না কারন এতে যে তাঁর প্রান প্রিয় বন্ধুর সাথে বেইমানি করা হয়। নিজের অজান্তেই চোখ বেয়ে দু’ফোটা পানি গড়িয়ে পড়লো অথৈর। আর সামনের চলে যাওয়া ব্যক্তিটিও যেন পুরো বাকরুদ্ধ হয়ে এগিয়ে চলছে ভিতরটা জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে তাঁর। কিন্তু বাহিরে সেটা বের করতে নারাজ।’

বেশ আগ্রহ নিয়েই তাকিয়ে আছে আহি নিলয় আদ্রিয়ানের মুখের দিকে। কারন আদ্রিয়ান অনেকক্ষণ যাবৎই আহিকে কিছু বলার চেষ্টা করছে কিন্তু বলতে পারছে না। আদ্রিয়ানকে এখনো চুপচাপ বসে থাকতে দেখে নিলয় এগিয়ে গেল আদ্রিয়ানের কাছে। তারপর কড়া গলায় বললো,
‘ কি হলো তুই বলছিস না কেন?’
‘ তুই এমন কেন আমি তোকে বলেছি আমি আহিকে প্রপোজ করবো কিন্তু এইভাবে নয়।’
‘ ওতোশতো বুঝি না তাড়াতাড়ি ওঁকে প্রপোজ কর দোস্ত না হলে আমার হয়ে যাবে?’
নিলয়ের কথা শুনে চোখ বড় বড় করে বললো আদ্রিয়ান,
‘ কি?’
‘ হার্ট অ্যাটাক।’
দুজনকে এইভাবে ফুসফুস করতে দেখে বলে উঠল আহি,
‘ আপনারা কি কিছু বলবেন নাকি আমি যাবো, আমার তাড়া আছে।’
‘ হুম যাও (আদ্রিয়ান)
আদ্রিয়ানের কথা শুনে নিলয় বলে উঠল,
‘ না না তুমি যেও না আহি আর একটু অপেক্ষা করো ও এক্ষুনি বলবে, বল বলছি (আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে)
নিলয়ের কথা শুনে আহিও বলে উঠল আদ্রিয়ানকে,
‘ আপনিও বা কিছু বলছেন না কেন বলে ফেলুন না তাড়াতাড়ি কি বলতে চান আমায়? আমিও শুনতে চাই তো?’

আহির কথা শুনে আদ্রিয়ানও বলে উঠল,
‘ তুমি সত্যি শুনতে চাও আমার কথা?’
‘ অবশ্যই শুনতে চাই। তাই না হলে বসে আছি এখনো, বলে ফেলুন তাড়াতাড়ি।’
আহির কথা শুনে আদ্রিয়ান একপলক নিলয়ের দিকে তাকিয়ে আহির চোখে চোখ রেখে বললো,
‘ তাহলে বলি?’
‘ হুম বলুন।’
আদ্রিয়ান আহির দিকে তাকিয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় বলে উঠল,
‘ আহি
‘ হুম
‘ আমি আসলে আমি তোমায় ভা
‘ হুম আপনি আমায়
‘ আমি আসলে আমার জামাকাপড় ফেরত চাই। (অস্থির হয়ে)
আদ্রিয়ানের এবারের কথা শুনে আহি নিলয় দুজনেই আদ্রিয়ানের চোখের দিকে তাকিয়ে একসাথে বলে উঠল,
‘ কি?’

বাবুইপাখির অনুভূতি পর্ব ৩৭

ওদের মুখের ‘কি’ শুনে আদ্রিয়ান প্রচন্ড ঘাবড়ে গিয়ে বলে উঠল,
‘ হুম তুমি যে শ্রীমঙ্গল বসে আমার জামাকাপড় নিয়েছিলে সাথে সেদিন রাতে বৃষ্টির মধ্যে তোমায় আমায় বাসা নিয়ে যে জামাকাপড়গুলো দিয়েছিলাম সেগুলো সব আমার ফেরত চাই।’
আদ্রিয়ানের কথা অবাক হতাশা দুটো নিয়েই বললো আহি,
‘ লাইক সিরিয়াসলি আপনি আপনার জামাকাপড়ের জন্য আমায় এইভাবে তুলে এনেছেন?’
উওরে আদ্রিয়ান কি বলবে বুঝতে পারছে না। ঘেমে পুরো একাকার হয়ে গেছে সে। অন্যদিকে আদ্রিয়ানের কথা আর অবস্থা দেখে নিলয় কপালে হাত দিয়ে বললো,
‘ বুঝতে পারছি এ শালা সত্যি ভালোবাসায় পাগল হয়ে গেছে।’

বাবুইপাখির অনুভূতি পর্ব ৩৯