ভালোবাসার নতুন প্রনয়ণ পর্ব ১৩+১৪+১৫

ভালোবাসার নতুন প্রনয়ণ পর্ব ১৩+১৪+১৫
লেখিকাঃ- konika islam (sanju)

হূর ক্লাস থেকে বেরহতেই এরিশ হূরের হাত ধরে সোজা হাটা দেয় বাইরের দিকে। হূর বলে যাচ্ছে কোথায় যাচ্ছি কি এইটা ঐটা। এরিশ হঠাৎ করে হূরের দিকে তাকাতেই হূর কিছুটা ভয় পেয়ে যায়। তা দেখে এরিশ একটু হেসে বলে
” যদি এতোই ভয় করে তাহলে এতো বকবক করিস কেন?? হূর কিছু বলে না তা দেখে এরিশ কিছু টা রেগেই বলে
” যখন কথা বলা দরকার তখন বলবে না। নয়তো অলটাইম ঐ বি-টিবির মতো ঝিরঝির করতেই থাকে।
হূর এরিশের পা থেকে মাথা অব্দি দেখে বলে

” আপনি কি?? আপনি তো আসতো এরিশ নামক প্যারিস ভাইরাস। এখন বলবেন তো কোথায় যাচ্ছি??? বাসায় থেকে তো ফোন আসার প্রশ্নই আসে না। এরিশ বলে
” বাহ বাহ তোর এতো বুদ্ধি!!! , আল্লাহ তাহলে বুদ্ধি দিয়েছে তোকে। আমার দোয়া কবুল করেছেন। হূর হাসি দিয়ে বলে
” হ্যা আমার ব্রেনতো আর আপনার মতো হাটুতে নিয়ে ঘুরি না। যাই হোক এটা বেল কেন ডাকছেন? এরিশ ভালো মতো দাড়িয়ে বলে
” ডেটে যাবো তোর সাথে । হূর এরিশের কথা শুনে আকাশ থেকে পরছে এমন মনে হচ্ছে। এইসব কি বলছে?! হূর বলে
” পাগল আমি আপনার সাথে যাবো তাও ডেটে? নাকি আমাকে মেরে ফেলার ফন্দি আঁটছেন কোনটা!? এরিশ ধমক দিয়ে বলে
” আরেকটা কথা বলবি তোকে এখান থেকে ধাক্কা দিয়ে বিধবা পদবি গ্রহন করব। আরেকটা কথা বলবিনা।বাবা ফোন দিয়ে বলেছে তোকে নিয়ে যেতে আমার সাথে । হূর এরিশের থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে বলে

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

” এই এই কি বললেন?? বিধবা!! আপনি জেন্ডার চেন্ঞ্জ করালেন কবে?? বিধবা তো স্ত্রী লিঙ্গ। এরিশ নিজের কপাল চাপড়াতে চাপড়াতে বলে
” কপাল সব কপাল। তুই কি হ্যা!! আমাকে এতো কথা বলিস, নিজে কি?? আহাম্মকের দাদার ঘরের নাতিন তুই চল এখন। হূর আমতা আমতা করে বলে
” আপনি নিজের দাদা ভাইকে আহাম্মক বললেন?? এরিশ এবার হূরের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে
” আরেকটা কথা বলবি তো আমি তোকে খুন করে ফেলব৷ হূর ঠোঁটে আঙ্গুল রেখে বুঝালো সে আর কিছু বলবে না। এরিশ হূরের হত ধরে হাটতে লাগে। হূরও বাধ্য মেয়ের মতো এরিশের সাথে সাথে যেতে লাগে।

এরিশ এসে সোজা বসে পরে হূরকে নিয়ে কারে। হূর কিছু বলে না চুপচাপ বসে পরে এরিশের পাশে। কিছু ধূর যেতেই হূর বুঝতে পারে এরিশ তাদের ফাম-হাউসের দিকে যাচ্ছে। তাহলে কি সত্যি বাসায় থেকে কল এসেছিল!? হূর নিজের ফোন ওন করতেই দেখে তার বাবা, কাকাইর কল এসেছিল। কিন্তু ফোন সাইলেন্ট থাকায় বুঝতে পারেনি। হূর এর আগে একবার এখানে এসেছিল। তখন সবাই একসাথে ছিল। তার ফুপিরাও ছিল আজ আবার এই বাড়ি!! হূরকে অবাক করে দিয়ে এরিশ বলে
” ফুপিরা আসবে এই বাসায়। সাথে সিফাতও আসবে। আগেই বলি সিফাতকে যেন তোর আশেপাশেও না দেখি নয়তো আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না। আর মাথায় তোর যেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে যে কেন এই বাসায় হঠাৎ করে সেটা আমারও জানা নেই। হূর এরিশের দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে, কিভাবে সম্ভব। এরিশ গ্লাসে দেখে নিজের চুল
গুলো ঠিক করতে করতে বলে
” পরে না চোখের পলক,,, আহহ কি আমার রূপের ঝলক। দোহাই লাগি হূর বেইবি, অন্য দিকে তাকাও। আমি সেন্স হারাবো ডাই যাবো বাঁচা পারবে না কেউ। হূর কিছু না বলে অন্য দিকে তাকায় আর এরিশ মনযোগ দেয় ড্রাইভিং-এ ।

বাসায় পৌঁছাতেই এরিশের মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। আদিব আর মৃধা একে অন্যের হাত ধরে দাড়িয়ে আছে আর কথা বলছে। হূর মনে মনে ভয় পাচ্ছে যদি এখন কিছু করে বসে তাহলে। এরিশকে কার থেকে নামতে দেখে মৃধা ভয়ে গলা শুকিয়ে যায়। সাথে সাথে আদিবের হাত ছেড়ে বাসার ভিতরে প্রবেশ করে। এরিশ আদিবের সামনে গিয়ে দাড়িয়ে বলে
” লাস্ট বারের মতো বলছি, এরপর আমার বোনের আশেপাশে দেখলে না তোর হদিস খুঁজে পাবে না কেউ। জানে মেরে দিব। বর্তমানে কোনো কাহিনী করতে চাই না। ৫ মিনিট সময়, তোকে যেন এই বাসার আশেপাশেও না দেখি।
বলেই হূরকে নিয়ে ভিতরে ঢুকে যায়। আদিব রাগে ফুসছে, এতো অপমান সহ্য করছে একমাত্র মৃধার জন্য। আদিব চুপচাপ চলে যায়। কিন্তু সব কিছুর বদলা সে ঠিকি নিবে। বাসায় ঢুকতেই আলাইনা দৌড়ে এসে জাপ্টে ধরে হূরকে। হূর আলাইনাকে জড়িয়ে ধরে বলে

” এতো খুশি? কি হয়েছে??? এরিশ বলে
” ওমা তুই জানিস না!? আজ আলাইনার বিয়ে। আলাইনা বলে
” আমার না হূর আপ্পির বিয়ে। দিদুনকে বলতে শুনলাম আজ নাকি এক পাত্র পক্ষ হূর আপুকে দেখতে আসবে। শুনেছি ছেলে নাকি অনেক কিউট মৃধা আপু বললো। তাই ভাবছি হূর আপ্পির বরের কোনো ভাই থাকলে আমিও হূর আপ্পির মতো বউ সেজে চলে যাবো।
হূরের আর এরিশের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পরলো। হূর কি বলবে! সব কেমন লাগছে! এরিশের মা এসে গম্ভীর কন্ঠে বলে
” হূর তাড়াতাড়ি যা। গিয়ে তৈরি হয়েনে। তোর ফুপি উপরে অপেক্ষা করছে।
হূর অনেক কষ্টে নিজের কান্নাটা আটকে রেখে বলে
” হুমমম আচ্ছা। হূরের মা তখন রান্না ঘরে

প্রায় ঘন্টাখানিক কেটে যায়। এরিশ হূরের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেও বৃথা। তাকে কেউ একা ছাড়ছেই না। শেষে সবাই হূরকে রেডি করিয়ে বের হতেই এরিশ রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেয়। হূর বসে আছে আয়নার সামনে। পরনে একটা জামদানী শাড়ি। হালকা সাজ। এরিশকে দেখে হূর বেশ চমকে যায়। এরিশ হূরের দিকে তাকিয়ে বলে
” তুই এই বিয়ে করবি না। নিচে গিয়ে সবাইকে বলবি তুই এই বিয়েতে রাজি না। এরিশের কাথা শুনে হূর বলে
” কেন বলবো? ছেলে দেখতে শুনতে ভালো, ফুপি বললো বিয়ের পর আমাকে পড়াবে। আর কি চাই আর ছেলেকে নাকি আমিও চিনি। এরিশ বলে
” নামি কি ছেলের? হূর মাথা নিচু করে বলে
” নীলআদ্র। নামটা শুনা মাত্র এরিশের মাথায় আগুন ধরে যায়। এরিশ জাস্ট বলে
” দেখ এবার আমি কি করি…..। হূর এরিশকে বলে
” এমন করে কি লাভ! আপনি যতটা সহজ ভাবছেন তেমনটা সহজ না। সবাই মানবে না, আর আমি চাই না কারো সাথে আমার সম্পর্ক খারাপ হোক।

এতেও এরিশের কিছু যায় আসে না। হূরকে একপলক দেখে নিচে নেমে আসে এরিশ। এরিশকে এভাবে যেতে দেখে হূরও যেতে লাগে এরিশের পিছু পিছু।
এরিশ তার বাবার কাছে গিয়ে বলে
” বাবা আজকি হূরকে দেখতে আসবে?? এরিশের বাবা বলে
” হ্যা, ছেলে তোদের নীলা মেমের ভাই। হূরকে খুব পছন্দ করে । ছেলেও শুনলাম ভালো। এরিশ বেশ জুড়েই বলে
” ভালো ভালো শুনে আমার কানের সব ভালো ব্যাকটেরিয়া গুলো মারা গেছে। কি এমন আছে নীলআদ্রের মাঝে!! ওর থেকে ভালে ছেলে আছে। নীল হূরের জন্য পার্ফেক্ট না

এরিশের এমন কথা শুনে সবাই চুপ। হূর দাড়িয়ে আছে শিড়ির এক কোনে। এরিশের মা গিয়ে হূরের পাশে গিয়ে দাঁড়ায়।
হূরের বাবা বলে
” হ্যা তাতো আছেই কিন্তু এরিশ বাবা তুমি এভাবে বলছ কেন? এরিশের বাবা সায়েদ কে থামি দিয়ে বলে
” তো হূরের জন্য কে পারফেক্ট??
হূরের দাদি বলে
” দেখ এরিশ তোর সব পাগলামি আমি মেনে নেই। কিন্তু এটা না সিফাতকে তুই দেখতে পারিস না তাই ওকে এই বাড়িতে আসতে দেয়নি। সিফাত হূরকে পছন্দ করত কিন্তু তোর বলাতে আমি বিয়ের কথা বাড়ায়নি। এখন আবার কি!!।
এরিশের বাবা সবাইকে চুপ করতো বলে এরিশকে বলে
” তুমি কি হূরকে পছন্দ করো?? এরিশ নির্দ্বিধায় বলে দেয়
” হ্যা করি। উপস্থিত কয়েকজন বাদে সবাই অবাক। মৃধা, দিদুন তার ফুপি, আরো কিছু আত্মীয়-স্বজন
এরিশের বাবা আবার বলে

” তুমি হূরকে বিয়ে করতে চাও?? এরিশ ভ্রু কুচকে বলে
” আজব তো তুমি থাকতে এই কথা আমার কেন বলতে হবে?? হূরের চাচি বেশ খুশি। কারণ হূরকে তার বরাবরই খুব পছন্দের, আর নিজেদের মেয়ে নিজেদের বাসায় থাকবে। হূরের মাও খুশি। মৃধা দিদুনের কানে কানে বলে
” দিদুন বিয়ে টা আটকাও নয়তো সব শেষ করে দিবে এই হূর। দেখছ কেমন সবাইকে হাত করে নিয়েছে। হূরের দিদুন বলে
” আমি এই বিয়ে মানি না। এরিশ হূরের দিকে তাকিয়ে বলে
” না মানলে কিছু করার নেই। এরিশের দিদুন বলে

” এই বিয়ে হলে আমি আর এই বাসায় থাকবো না। এরিশ হূরকে পাশকাটিয়ে উপরে উঠতে উঠতে বললো
” থাকবে না ভালো কথা, আমাদের বিয়ে খেয়ে তারপর তুমি তোমার মেয়ের সাথে যেও। আর লাইফটা আমার তোমার না দিদুন। তোমার এইসব নিয়মে আমাকে জড়াতে এসো না।
বলেই চলে যায়। হূর এখনো সেখানে দাড়িয়ে আছে। হূর তার কাকিমার দিকে তাকাতেই কাকিমা তার দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকায়। হূর এবার কেঁদে দেয় আর বলে
” বিশ্বাস করো আমি কাকিমা জানতাম না। এরিশ ভাইয়া এমন কিছু করবে। এরিশের মা হেসে দেয় আর বলে
” ধূর পাগলী। আমিতো আরো খুশি হয়েছি। যা উপরে যা দেখ এরিশ কোথায়।

হূরের দিন একরকম বাড়ি মাথায় করে নিয়েছে।
হূরের সাথে সাথে আলাইনাও ছাঁদে আসে। উপর দিকে একটু ঝামেলা হলেও সবটা সামলে নেয় এরিশের বাবা। এরিশও ছাঁদের কোনে। আলাইনা এরিশকে বলে
” বাহ বাহ এক বলে অল আউট করে দিলা। এরিশ আলাইনা কে বলে
” তুই নিচে যা আমার হূরের সাথে কথা আছে। আলাইনা বলে
” না তো এইভাবে যাবো, দেনাপাওনার ব্যাপার আছে না?? এরিশ বলে
” চকোলেট এনে দিব যা। আলইনা চলে যায়। এরিশ বলে
” দেখ হূর তুই এখন চাইলেও আমার না চাইলেও। মানুষটা আমি স্বার্থপর। কিন্তু আমার থেকে বড় স্বার্থপর তুই। আমার জন্য তোর একটুও খারাপ লেগেনি। এইযে আমার সাথে এমন করতে যাচ্ছিল না সেটা সুদসময় ফিরে পাবি। হূর কিছু বলতে যাবে তখনই এরিশ বলে

” যা এখান থেকে। হূর ভয়ে দুইপা পিছিয়ে যায়। হূরতো ভেবেছিল তার বিয়ের পর এরিশ ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু এরিশের সাথে যে তার বিয়ে হবে ধারনার বাইরে ছিল। এখন নিচে গিয়ে না করলে এরিশ হুংকার দিয়ে উঠবে।
হূর নিচে নামছে হঠাৎ করে কেউ হূরের রুমাল দিয়ে মুখ চেপে ধরে। কিছুসময় ছটফট করার পর। হূরে শান্ত হয়ে যায় আর ধীরে ধীরে চোখ বুজে ফেলে।
এরিশ বলে
” দেখ হূর তুই এখন চাইলেও আমার না চাইলেও। মানুষটা আমি স্বার্থপর। কিন্তু আমার থেকে বড় স্বার্থপর তুই। আমার জন্য তোর একটুও খারাপ লেগেনি। এইযে আমার সাথে এমন করতে যাচ্ছিল না সেটা সুদসময় ফিরে পাবি। হূর কিছু বলতে যাবে তখনই এরিশ বলে
” যা এখান থেকে। হূর ভয়ে দুইপা পিছিয়ে যায়। হূরতো ভেবেছিল তার বিয়ের পর এরিশ ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু এরিশের সাথে যে তার বিয়ে হবে ধারনার বাইরে ছিল। এখন নিচে গিয়ে না করলে এরিশ হুংকার দিয়ে উঠবে।
হূর নিচে নামছে হঠাৎ করে কেউ হূরের রুমাল দিয়ে মুখ চেপে ধরে। কিছুসময় ছটফট করার পর। হূরে শান্ত হয়ে যায় আর ধীরে ধীরে চোখ বুজে ফেলে।খুব সাবধানে হূরকে সবার চোখের আড়াল করে বাসার পিছনের দরজা দিয়ে বের করে আনা হয়।

চোখ মেলতেই হূর নিজেকে আবিষ্কার করে একটা অন্ধকার রুমে। এমন অবস্থা বাইরে দিন নাকি রাত অব্দি বুঝা যাচ্ছে না। হূর ঘামতে লাগে ভয়ে। কারণ আগে কখনো এমন কিছুর সমক্ষীন হতে হয়নি।
হূর কোনো রকম উঠে দাড়ায় সামনে আগাতেই কিছুতে বেজে নিচে পরে যায় হূর। ব্যাথায় কুকরে যায়,পা টা হয়তো কেটে গেছে জ্বালা পুরা করছে । বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পারে জায়গাটা বেশ পুরোনো। হূর সেখানে আসেই জোড়ে চিৎকার দিয়ে বলে
” কেউ কি আছে এখানে?? আমাকে এখানে কে এনেছে?? কেউ শুনছেন?? হূরের আওয়াজ গুলোই দুই দেয়ালে বার বার বারি খেয়ে ফিরে আসছে। হূরের এবার প্রচন্ড রকম ভয় করছে।
হূর আবার দাড়িয়ে যায় আর ধীর পায়ে এগিয়ে আসে খুব সাবধানের সাথে।

অপর দিকে সবাই পাগলের মতো খুজে চলেছে সবাই হূরকে। এরিশের অবস্থা সব থেকে খারাপ। সবার একটাই কথা হূর কোথায়?? সবাই টেনশন করছে। হূরের মা কান্না করছে আর এরিশের মা হূররে মাকে সামলাচ্ছে। এরিশ বৃথা চেষ্টা করছে হিসাব মিলানোর। কারণ হূরের এতটা সাহস নেই বাসায় থেকে একা চলে যাবে। তার সাথে দেখা করার আসার পরই নাকি হূরকে পাওয়া যায়নি। আর হূরকে কেউ বাসায় থেকে বের হতেও দেখা যায়নি। যখন সবাই হূরকে রুমে আনতে যায় দেখে হূর নেই। সবাই সম্পূর্ণ বাড়ি খুঁজলেও কেউ হূরের হদিস অব্দি পায়নি
এরিশের বাবা বলে

” পুলিশকে খবর দেওয়া যাক.। তখন মৃধা বলে
” কেন? পুলিশকে বলার কি আছে?? আর হয়তো হূরের এই বিয়েতে মত ছিল না তাই চলে গিয়েছে।
এরিশ রাগী দৃষ্টিতে মৃধার দিকে তাকাতেই মৃধা বলে
” আমার দিকে এইভাবে তাকালে সত্যি টা মিথ্যা হবে না। এরিশ মৃধার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলে
” সত্যি টা কি মিথ্যা ভাবে সাজানোর বৃথা চেষ্টা কি তুই করছিস মৃধা?? মুহূর্তেই মৃধার চোখ মুখের রঙ পাল্টে যায়। মৃধা বলে
” আম,,আমি কি মিথ্যা বলবো!! এরিশ খুব শান্ত কন্ঠে বলে
” হুমম, সেটাই ভালো। হূরের কিছু হলে যে এই কাজের সাথে যুক্ত তার খবর আছে।
এরিশের বাবা বলে

” আহহ তোরা চুপ করবি..। এটা ভাব মেয়েটা কোথায় গেলো?? প্রায় ঘন্টা পাঁচেক হতে লাগলো। আরেকবার সবাই ভালো করে খুজোঁ বাসাটা। তখনই উপর থেকে নেমে আসে আসে সিফাত।
সিফাত কে দেখে আরেক দফা অবাক এরিশ। সিফাত কখন আসলো??? সিফাত কে দেখেই এরিশ রেগে গিয়ে বলে
” সিফাত এখানে কি করে??? এরিশের মা আমাতা আমতা করে বলে
” কিছু সময় আগেই এসেছে তোর ফুপিকে নিতে বাইরে থেকে চলে যেতে চেয়েছিল শুধু আমি আটকাতে থেকে গলো। এরিশ বলে
” তা এতখন কোথায় ছিল?? এতো যে খুঁজাখুজি হলো সিফাত কোথায় ছিল?? সিফাত বিরক্ত হয়ে বলে
” আমিও সম্পূর্ণ বাসা খুঁজছিলাম।
“এতো টা সময়?? হূর কোথায়?? সিফাত বিরক্ত হয়ে বলে
” আমি কি করে বলবো?? দেখ আমি আর অন্তর্যামী না হূর কোথায় বলে দিব, খুঁজতে হবে।
এরিশ রেগে পাশে থাকা ফুলদানি টা সোজরে মেঝেতে মারে। সিফাত এরিশের কাঁধে হাত রেখে বলে
” চিন্তা করিস না হূর ঠিক আছে।
রাত ২ টা বাজতে চললো কারো চোখে ঘুম নেই। আলাইনা ঘুমিয়ে পরেছে৷ হূরের দিদুন বলে
” আমি ঘুমাতে গেলাম নয়তো বিপি বেরে যাবে। মৃধাও তার দিদুনের সাথে তাল মিলায় এদের দুইজনের কিছু যায় আসে না।

হূর অনেক কষ্টে দরজাটা খুঁজে পেয়েছে কিন্তু না বাইরে থেকে লক করা। হূর বারবার বলছে কেউ দরজাটা খুলো। ঘেমে একাকার হয়েগেছে হূর। চোখ গুলো অতিরিক্ত কান্নার ফলে জ্বালা পুরা করছে। সকালে নাশতা করে বেরিয়ে ছিল হূর আর কিছু হায়নি। বেশ দূর্বল লাগছে হূরের। মাথাটা কেমন ঝিম ঝিম করছে। হূর দুইপা পিছিয়ে যায় ভারসাম্য রাখতে না পেরে পিছনে কিছু সাথে আবার ধাক্কা লাগে। কিন্তু এবার সেই বস্তুটাই হূরের উপর পরে যায়। হূরে চিৎকার করলেও কারো কান অব্দি সেই আওয়াজ পৌঁছায়নি।

সকাল হতেই সবাই যার যার মতো বাসায় ফিরে যাচ্ছে। এরিশ যেতে না চাইলেও। এরিশের বাবা এরিশকে বুঝিয়ে বাসায় যাওয়ার জন্য রাজী করায়। আলাইনারও মুড ওফ হূরকে পাওয়া যাচ্ছে না। সে খুব মিস করছে। মৃধা আলাইনাকে নিয়ে গার্ডেনে দাড়িয়ে আছে। সবার অপেক্ষা। মৃধা বারবার হাই তুলছে। আলাইনার চোখ পরে কিছু একটা উপর রোদের আলোতে উজ্জ্বল জিনিসটা আরো জ্বলজ্বল করছে। আলাইনা মৃধার হাত ছেড়ে দৌড়ে গিয়ে সেটা তুলে নেয়। একটা চেন এটা সে কোথাও একটা দেখেছে। মৃধা গিয়ে তাড়াতাড়ি সেটা নিতে যাবে তখনই আলাইনা সেটা অন্য হাতে নিয়ে নেয়। মৃধা বলে
” কি এইটা দেখি। আলাইনা মৃধার দিকে তাকিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে দৌড় দেয়। মৃধাও পিছু পিছু ছুটে আলাইনাকে থামতে বলছে। কিন্তু আলাইনা তার মতো সোজা বাসার ভিতরে চলে যায়। গিয়ে সে এরিশ ভাইয়া বলে বাসা মাথায় করে নিয়েছে। এরিশ আলাইনাকে এভাবে আসতে দেখে বলে

” কি হয়েছে আলাইনা?? আলাইনা কিছু বলতে যাবে তখনই মৃধা এসে বলে
” না ভাইয়া কিছু না আমি আলাইনাকে ভয় দেখিয়ে ছিলাম বলেছিলাম যে তুই কথা না শুনলে হূরের মতো তোকেও ছেলেধরা নিয়ে যাবে, আলাইনা আসো সবার মন খারাপ চলো আমরা কারে গিয়ে বসি দেখি কে আগে যেতে পারে। মৃধার কথা শুনে ভ্রু-কুচকে আলাইনা বলে
” তুমি এতো মিথ্যা কথা কিভাবে বলো?? তোমাকে অস্কার দেওয়া দরকার মিথ্যা বলার জন্য। তুমি এইসব কিছু বলোনি তুমি তো পাগলের মতো হাই তুলছিলে। ব্রাশ অব্দি করোনি গন্ধ আসছে তোমার থেকে।
এরিশ আলাইনাকে নিয়ে সোফায় বসে পরে আর বলে
” কি হয়েছে আলাইনা সত্যি করে বলোতো। সবাই তাকিয়ে আছে আলাইনার দিকে। আলাইনা তার হাতের চেনটা এরিশের হাতে দেয়। হ্যা এইটা সেই চেন যেটা সে হূরকে তার বার্থডেতে দিয়েছিল। এরিশ সেটা নিয়ে বলে
” এটা তুই কোথায় পেলি?? আলাইনা বলে

” আমি আর মৃধা আপু দাড়িয়ে ছিলাম বাইরে তখন দূর থেকে দেখলাম কিছু একটা চিকচিক করছে। মৃধা র চোখ মুখের রঙ বদলাতে লাগে। সিফাত কিছু না বলেই দৌড়ে গার্ডেনে চলে আসে। সিফাতকে সবাই এইভাবে বের হত দেখে এরিশও সিফাতের পিছু পিছু আসে। পরক্ষণেই এরিশের মনে পরে কালকে সব জায়গায় খুজা হলেও তাদের বাসার বাইরে ইস্টোর রুমটা দেখা হয়নি। আর প্রশ্নই আসে না হূরের এখানে আসার। এরিশ একরকম সবার আগেই দৌড়ে ইস্টোর রুমের দরজা খুলে। আর যা দেখে তার জন্য কেউ প্রস্তুত ছিল না। মেঝেতে পরে আছে হূর রক্তাক্ত অবস্থায়। হূরের উপর পরে আছে পুরনো বই রাখার সেলফটা। আসে পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কাচের টুকরো। এরিশ আর সিফাত তাড়াতাড়ি করে সেই সব সরিয়ে ফেলে। এরিশ হূরকে কোলে তুলে নেয় আর সিফাতকে বলে
” তাড়াতাড়ি করে আমাদের হূরকে হসপিটালে নিতে হবে।

এখন পরিবেশ শান্ত থাকলেও কিছু সময় আগেও এখানে ছোটখাটো সুনামি বয়ে গিয়েছে। হূরকে এই অবস্থায় দেখে একরকম পাগল অবস্থায় ছিল এরিশ। এরিশকে এতটা অশান্ত আগে কখনোই দেখা যায়নি। বরাবরই রাগ জিদ বেশি থাকলেও খুব সুন্দর ভাবেই সে সবটা সামলায়। হঠাৎ করেই একটা চড় বসিয়ে দেয় এরিশ মৃধার গালে। উপস্থিত সবাই অবাক। এরিশ বলে
” হূরের সাথে তোর কি সমস্যা আমি জানি না। কিন্তু হূরের আজ কিছু হলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না।
আলাইনা এক কোনে তার মায়ের হাত ধরে দাড়িয়ে আছে। হূরের দিদুন বলে
” আহহ এরিশ কি হচ্ছে?? এরিশ খুব স্বাভাবিক কন্ঠেই বলে

” দিদুন আমি ভালে করেই জানি এটা মৃধার একার কাজ না। এতে তুমিও মৃধাকে সাহায্য করেছ। মৃধা কেঁদে সত্যিটা বলে দেয়
” আমি কিছু করেনি সব ছিল দিদুনের প্লান। দিদুনই বলেছিল হূরকে তারা মামাবাড়ি চট্টগ্রামে সময় মতো পৌঁছে দিবে। আর হূর আসার পর সবাই হূর হূর করে বেড়াও আমাকে তো কেউ চিনে না। যা করেছি ভালো করেছি। দিদুন চুপ। সিফাত এরিশের মাকে বলে
” মামি মৃধাকে এখান থেকে নিয়ে যাও এরিশ কখন কি করে বসে বলা মুশকিল। আর এটা হসপিটাল। দিদুন আর মৃধাকে নিয়ে আমি বাসায় চলে যাচ্ছি।
সিফাত ওদের নিয়ে চলে যায়। সবাই ভাবছে মানুষ এমন কিভাবে করতে পারে। যেই রুমে হূরের চেকাপ হচ্ছে সেই রুমের দরজায় এরিশ জোরে লাথি দিয়ে চিৎকার করে বলে
” এতো সময় লাগে???? কি করছে এরা!! ঘুমাচ্ছে নাকি?? বালিশ পাঠাবো!!! এরিশের বাবা এরিশ কে ধমক দিয়ে বলে
” এরিশ কি হচ্ছে এইসব?! এরিশ ও বলে
” সব তোমার আদরের দুলালির জন্য হয়েছে। হূরের বাবা এরিশের কাঁধে হাত রেখে বলে
” শান্ত থাক।

হূর চোখ মেলে তাকাতেই দেখে মাথার উপর সাদা ছাঁদ ধীরে ধীরে উঠে বসে। রুমের চারপাশ জানান দিচ্ছে এটা হসপিটাল। মাথা টা বেশ ব্যাথা করছে। হাত দিয়ে বুঝতে পারে মাথায় ব্যান্ডেজ করা। কালকে রাতের কথা মনে পরে হূরের সে তো একটা রুমে বন্দী ছিল। হূরকে উঠে বসতে দেখে নার্স গিয়ে সবাইকে বলে হূরের সেন্স ফিরেছে। একে একে সবাই এসেছে হূরকে দেখতে। দেওয়াল ঘড়ি টার দিকে হূর তাকিয়ে দেখে দুপুর ২ টা বাজে। সবাই হূরকে ঝেকে বসে আছে। তখনই সবাইকে চুপ করিয়ে হূরের কাছে গিয়ে বসে আলাইনা। আর সবাইকে বলে

” তোমরা সবাই বাইরে যাও আপির সাথে আমার কথা আছে। হূরের মা বলে
” আলাইনা হূর আপ্পিকে রেস্ট করতে দাও। আলাইনা বলে
” রেস্টের কথা বাদ দিয়ে বাসায় গিয়ে রোস্ট করে নিয়ে আসো। আমার কথা আছে বললাম না।সবাই দুই বোনকে একা ছেড়ে বাইরে চলে আসে। আলাইনা হূরকে জড়িয়ে ধরে বলে
” তুমি জানো কতটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম আমরা সবাই?? বিশেষ করে এরিশ ভাইয়া। হূর আলাইনকে বলে
” এরিশ ভাইয়া কোথায়?? আলাইনা বলে
” পাপা আর কাকাই মিলে বাসায় পাঠিয়েছে। জানো এই মৃধা নামক ফাজিল কিড়াকে এরিশ নামাক প্যারিস ভাইরাস খুব ভালো ভাবেই জব্দ করেছে। ঠাস ঠাস। হূর আলাইনার কথা বুঝতে না পেরে বলে

” মানে বুজলাম না। আলাইনা মাথায় হাত দিয়ে বলে
” আচ্ছা আমি কি ইংলিশ বলছি?? আমি বলেছি এরিশ ভাইয়া মৃধা আপুকে মেরেছে। ভালোই করেছে। তোমাকে ঐ ইস্টোর রুমে বন্ধ করে রেখেছিল। ফাজিল মহিলা, না না এখনো মহিলা হয়নি সবে তো ১৭ কিন্তু ১ বছর পর হয়ে যাবে। যাই হোক কিছু খাবে? নার্স কে ডাকবো খারাপ লাগছে ??? হূর বলে
” না না। হূর বুঝতে পারে এইসবের পিছনে মৃধার হাত। আলাইনা বলে
” আচ্ছা তুমি থাকো আমার খুদা লেগেছে। আমি খেয়ে আসি। আর হ্যা এরিশ ভাইয়ার সাথে বাসায় চলে এসো কেমন। দেখি বাইরে কি অবস্থা। এদের নিয়ে পারিনা সবাই এক মেয়েকে নিয়ে পরে আছে৷ অন্য দিকে যে আমি একজন আছি সে খায়ল কি আছে?? মিসেস, সায়াদ কে বলতে হবে আমার বাসায় যাওয়ার ব্যবস্থা করো।
বলেই কেবিন থেকে বেড়িয়ে যায় আলাইনা।

বিকেল ৪ টা হবে। বেডে আধশোয়া হয়ে বসে আছে হূর,পাশে অহি আর আর তিথি।।তিথি অনর্গল কথা বলে চলেছে,,আজ এতো বকবক কিভাবে জরছে বুঝতে পারছি না।।হঠাৎই কেউ একজন প্রচন্ড জোড়ে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলো,,,প্রথম দফায় চমকে গেলেও এরিশকে দেখে শান্ত হয়ে বসে হূর।। এরিশ একপ্রকার দৌড়ে ভেতরে ঢুকলেও হূরকে বসে থাকতে দেখা মাত্র থেমে গেলো এরিশ, । কিছুক্ষণ হূরের তাকিয়ে থেকে,,,হূরের কাছে এসে হূরকে জড়িয়ে ধরে। কপালে একটা ডিপ কিস করে বলে
“চল,,,

হূর তো অবাকই সাথে অহি আর তিথিও অবাক,,,এর মধ্যেই সবাই রুমে প্রবেশ করেছে।।বড় বাবইকে দেখে মনে হচ্ছে তিনি বিন্দুমাত্রও অবাক হন নি বা কেউই হয়নি।
“কি হলো চল, ওপপস্ তুই তো হাঁটতে পারবি না।
কথাটা বলেই কোলে তুলে নেয় হূরকে,,,হাতে স্যালাইন লাগানো ছিলো,,,টানে,,ব্যাথায় কুকিয়ে উঠলো হূর।।।এরিশ ভ্রু কুচকে হূরের হাতের দিকে তাকায়, এরিশ বেশ জোরেই
“আমি বলেছিলাম না ওকে এসব না লাগাতে?কেনো লাগিয়েছেন এগুলো?? না লাগালে হয়না!! পাগল হয়ে গিয়েছে সব।
এক মিনিটও থাকতে দিচ্ছি না,ও আমার সাথেই থাকবে। এখানে তোর থাকতে হবে না। আমার হূরপরি আমার সাথে থাকবে আমি দেখে রাখবো।

এরিশের চিৎকারে সবার অন্তরআত্মা কেঁপে উঠলো হূরের,, নার্সরা এসেও হাজির,,,লোকটা কি আসলেই পাগল টাগল হয়ে গেছে নাকি??।এরিশ আবার হূরকে সাবধানে বেডে বসিয়ে দিয়ে, ধীরে ধীরে হাতটা হাতে নিয়ে দেখে। কেমন বাচ্চা বাচ্চা লাগছে উনাকে। তখনই বড় বাবা এরিশকে ধমক দিয়ে বলে
” এরিশ পাগলামোর লিমিট থাকে। তুমি বাচ্চা না। আর হূরের জন্য কোনটা ভালো সেটা ডক্টর রা তোমার থেকে ভালো জানে। এরিশকে উদ্দেশ্য করে হূর বলে
” আমি ঠিক আছি। তখন এরিশ একটু সান্ত হয়। হূরকে কিছু না বলেই বাইরে চলে যায় এরিশ। হূরের বাবা নার্সকে ডাকে।

ক্লান্ত বিকেলের শেষ প্রহর চলছে। সূর্যের সুনালী আলো ছড়িয়ে পরেছে চারদিকে। জানলা দিয়ে হালকা বাতাসে দুলছে পর্দা গুলো। নিরব পরিবেশ খুব একটা যে খারাপ লাগছে হূরের তা কিন্তু না। ভালোই লাগছে হূরের। এরিশের বাচ্চামির কথা মনে পড়তেই হাসি পাচ্ছে। আচ্ছা এরিশ কি সত্যি হূরকে চায় নাকি এইসব শুধু ক্ষনিকের আসক্তি যা কিছুদিন পর কেটে যাবে। আজকাল হূর একটু বেশি ভাবছে এরিশ কে নিয়ে। হুটহাট কেমন কাছে চলে আসে। কথায় রাগ, জিদ, ভালোবাসা সবই থাকে। কখনো আদরে মাখা সেই হূরপুরি ডাক। কখনো এখান থেকে যা রাগ মিশ্রিত কন্ঠ। এইসবের মাঝে হঠাৎ করেই কেউ সেখানে আসে । হূর উৎসুক হয়ে তাকায় সেই দিকে। হূর ভেবেছে হয়তো তার ভাবনার মানুষটাই এসেছে।কিন্তু না নার্স এসেছে। হূরকে একবার দেখে চলে যায়।

রাতে ৯ টা দিকে এরিশ হূরকে খায়িয়ে দিচ্ছে। সবাই বাসায় চলে গিয়েছে, এরিশই সবাইকে বাসায় যেতে বলেছে। এরিশ থামা থামি নেই একের পর এক চামচ করে সুপ দিয়ে যাচ্ছে হূরের মুখে, দম নেবার সময় অব্দি পাচ্ছে না বেচারি, হূর এতে চরম বিরক্ত। কারণ সে বরাবরই নিজের হাতেই খায়।
হাতে বেশ খানিকটা জায়গা কেটে যাওয়া আর তখন কার করা এরিশের পাগলামির জন্য হাত এখন ব্যাথায় মুভ করতে পারছে না। উপর দিকে এরিশও চরম বিরক্ত। একটা নার্স এসে দাঁড়িয়ে আছে। একেতো কিছু করছে না তার দিকে তাকিয়ে আছে। তার এই রকম দাড়িয়ে থাকাতে বেশ বিরক্ত আমাদের এরিশ মহাসয়। নার্সকে উদ্দেশ্য করে এরিশ বলে

ভালোবাসার নতুন প্রনয়ণ পর্ব ১০+১১+১২

” আপনি এখানে এভাবে দাড়িয়ে আছেন কেন? কাজ নেই নাকি!? নার্সটা একটু ভ্যবাচেকা খেয়ে বলে
” না স্যার আসলে তা না। মেম এর খাবারের পর উনাকে ঔষধ দিতে হবে। উনি কি আপনার Wife?? এরিশ বলে
” আপনার কি তাতে?? নার্সটা বলে
” না মানে,, এমনি। আপনি কি সিঙ্গেল?? এরিশ এবার রেগে বলে
” না আমার বউ আছে। এই যে কিছুদিন পর আমাদের বিয়ে। আর এতো প্রশ্ন কেন? আপনি জার্নালিস্ট নাকি আমি আসামি কোনটা?? আজব!!
নার্সটা এরিশের এমন কথা শুে চুপসে যায় হূরের বেশ মজাই লাগছে ব্যপারটা। নার্সটা বলে
” সরি, স্যার আসলে আমি সেটা মিন করিনি। এরিশ বলে
” আপনাকে আর কিছু বলতে হবে না আপনি চলে যান আমি ঔষধ খায়িয়ে দিব। নার্সটাও আর কথা বারায় না।
খাওয়া শেষে এরিশ ঔষধ দেখছে কোনটা এখন খেতে হবে৷ হূর এরিশকে বলে

” এতটা সময় কোথায় ছিলেন? এরিশ হূরের দিকে মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে
” কেন মিস করছিলি নাকি?? হূর কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে যায় এরিশের কথায় কিন্তু নিজেও কমনা তাই সেও বলে
” আমি আপনাকে কেন মিস করতে যাবো? কিন্তু একটা কথা কি জানেন?? এরিশ ইশারায় বলে “কি”? হূর হাই তুলতে তুলতে বললো
” নার্সটা হয়তো আপনাকে লাইক করেছে। আপনাদের মানাবেও অনেক। সুন্দর জুটি। এরিশ হূরের কথা শুনে হূরের দিকে তাকিয়ে বলে

” আমার বউ আছে৷। দুইদিন পর বিয়ে করব ১ মাস পর বেইবি কোলে নিয়ে ছবি তুলবো তারপর দেওয়ালে টানিয়ে রাখব। আর ছবির কোনে লেখা থাকবে মেডফর ইচ-আদার…। ডাফার একটা, আরেকটা কথা বলবি তোকে জানলা দিয়ে নিচে ফেলে দিব।
হূর ভেংচি কেটে আরেক দিকে তাকায়। এরিশ তা দেখে হেসে নিজের কাজে মনযোগ দেয়।
অপর দিকে বাসায় মৃধা আর দিদুনকে সবাই ইচ্ছে মতো কথা শুনচ্ছে, মৃধা, দিদুন কেউ কিছু বলতেও পারছে না।

ভালোবাসার নতুন প্রনয়ণ শেষ পর্ব