ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ৯

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ৯
লেখনিতে : মিমি মুসকান

মেহমান সব চলে গেছে, ঘরে আসে গয়না গাটি যা আছে সব খুলে মা’র কাছে দিয়ে আসলাম। আহিয়ান বাসায় নেই বাইরে গেছে। কোথায় গেছে জানি না আমি জিজ্ঞেস ও করি নি। করলে কি বলতো কিনা তাও জানি না।‌ কেন জানি তার সেই কথাটা আমার মাথায় গেঁথে আছে। জানি না কেন? ভুলতে পারছি না এইসব।‌
রুমে এসে বসে ছিলাম, ভালো লাগছিলো না। বের‌‌ হয়ে রান্না ঘরে গেলাম। ইচ্ছা ছিলো একটু রান্না করার।‌ কিন্তু মা আমাকে কিছু ধরতেই দিলো না। হাঁটতে হাঁটতে চলে এলাম সেই বাগানে। কেন জানি এই বাগানের ফুল গুলো আমাকে মানসিক শান্তি দেয়। দোলনায় বসে পা নাড়াতে লাগলাম। চোখ দুটি বন্ধ করে ফুলের মিষ্টি ঘ্রাণ নিচ্ছিলাম হঠাৎ একটা কথা মাথায় আসলো। আর সেটা হলো আহিয়ান।

হ্যাঁ আহিয়ান! কি হচ্ছে আমার? মাথায় শুধু উনার কথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। কেন জানি অতীত কে বার বার মনে পড়ছে। কারন কি? আচ্ছা এটা নয়তো মানুষ সুখের দেখা পেলে তার অতীত কে বার বার মনে করে। সেটা হবে কি? হতেও পারে! আমি আজ পর্যন্ত আহিয়ান কে কখনো হাসতে দেখে নি। কেমন একটা গম্ভীর স্বভাবের লোক তিনি। অদ্ভুতও বটে! হুটহাট করেই কাজ করে কিন্তু কাজের কৈফিয়ত দিতে রাজি না। কিন্তু এভাবে আমার জীবন নিয়ে খেলার মানে কি?

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

কোনো অভিযোগ নেই, থাকবে কি করে? তার পরিবারের লোকজন গুলো অনেক ভালো। খুব সহজেই মেনে নিয়েছে আমাকে। কেন জানি এখানেও কারন আছে কিন্তু আমাকে বলতে সবাই নারাজ। বিয়েটা যেভাবে হয়েছিল সেখানে আর কিছুই নেই সব পাল্টে গেছে। আর পাল্টাতে বাধ্য কারন বিয়েটা তিনি ভালোবেসে করে নি। তাহলে কি কারন? কে বলবে আমায়? নাকি সারাজীবন অজানায় থেকে যাবো।
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে মাথা টা কে চিন্তামুক্ত করার চেষ্টা করছি কারন চিন্তা মানুষ কে অস্থির করে তোলে, রাগিয়ে তোলে। আর রেগে গিয়ে মানুষ ভুল করে। এমন কিছু হোক চাইছি না।

[ অতীত ]
মনে পড়ে গেল সেদিনের কথা! আহিয়ান এর প্রথম বার একটু ভালো মানুষীর কথা। সেদিনের পর টানা ৩ দিন ভার্সিটিতে আসিনি। তার কারন পুড়ে যাওয়া ক্ষত”টা ছিলো না। ছিলো মামী”দের বেড়াতে যাওয়া। তারা বেড়াতে গিয়েছিল ৩ দিনের জন্য। কিন্তু দুঃখের বিষয় এটা ছিল এই অনাথ মেয়েটির কথা তারা ভুলে গেল। তার জন্য কোনো খাবার রাখে নি বাসায়। সব ঘরে রেখে তালাবদ্ধ করে গেছে। যাবার আগে কিছু শুকনো মুড়ি আর বিস্কুট দিয়ে গিয়েছিল আর বলেছে রাতে এসে পড়বে। আসবে বলে বলে আজ ৩ দিন হলো। তখন এতো ভাবিনি আমি।

আমার ঘর টা তাদের ঘরের পরে ছিলো তাই ঘরটাতে রান্না ঘরের সমস্ত খাবার রেখে তালা দিয়েছে চলে গেলেন। ভার্সিটিতে গেলে অনেক খাটনি হবে আর ক্ষুধাও লাগবে বিধায় যায় নি। ৩ দিন হয়ে গেল মুড়ি আর বিস্কুট খেয়ে কাটিয়ে দিয়েছি।‌কিন্তু আর তো চলছে না। সব ফুরিয়ে আসছে, ঘরে একটু জল ছাড়া কিছুই নেই। ব্যাগ থেকে খুঁজে ৩০ টাকা পেলাম। হাতে মুঠ করে এই টাকা নিয়ে বসে আছি। কি করবো বুঝতে পারছি না। এই টাকা দিয়ে কি চাল কিনে আনবো নাকি মুড়ি কিনে আনবো।‌ এতোদিন মুড়ি খেতে খেতে এখন আর ইচ্ছে করছে না। চাল আনলেও নুন দিয়ে খেতে পারবো। এতে চলে যাবে আমার। পেঁয়াজ আলু আছে মনে হয়। হ্যাঁ হয়ে যাবে আলু সিদ্ধ করে ভাত খেয়ে নিবো।‌মুড়ি আর বিস্কুট খেয়ে আর পারছি না।

টাকা নিয়ে বেরিয়ে পরলাম। চাল কিনে আনলাম। যা এনেছি তাতে আমার কয়েকদিন বেশ চলে যাবে। কাল থেকে ভার্সিটিতে যাবো ভাবছি। দুপুরে রান্না চাপাতে রান্না ঘরে গেলাম। মামী সব খাবার ঘরে রেখে গেছে এখানে কয়েকটা থালা বাসন ছাড়া আর কিছু নেই। ভেবেছিলাম আলু, পেঁয়াজ পাবো কিন্তু নাহ নেই। তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললাম আমার ভাগ্যে আশা করা মানায় না।

ভাত রান্না করে নুন দিয়ে খেয়ে নিলাম। আজ খুব ভালো লাগছে অনেকদিন পর ভাত খেলাম।
বেরিয়ে পরলাম টিউশনি করতে, একজন তো বেতন দিয়েছে কিন্তু সেটা মামী নিয়ে গেছে, আর একজন ১০ তারিখে’র আগে দিতে পারবে না বলে দিয়েছে। ১০ তারিখ আসতে এখনও ৬ দিন বাকি।‌ এ ক’দিন যেভাবে হোক চলতে হবে। আরেকজন তো বেড়াতে গিয়েছে। কবে আসবে জানা নেই আসলে বেতন দিবে। সত্যি কথা বলতে কি যখন বিপদ আসে সব জায়গায় দিয়েই আসে। সব দরজা বন্ধ হয়ে শুধু একটি দরজা খোলার অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছু নেই। টিউশনি করে আসে ভাত খেয়ে ঘুমিয়ে পরলাম। কেন জানি আজ আর পড়তে বসতে মন চাইলো না। শরীর প্রচুর খারাপ লাগছে। সকাল ওঠতে ওঠতে প্রায় অনেক দেরি হয়ে গেল। তাই কোনোমতে তৈরি হয়ে চলে গেলাম। আর খাওয়া হলো না। ভার্সিটিতে গিয়ে দেখি ইতি আজ আসে নি। মন আরো খারাপ হয়ে গেল। ওই’তো ছিল একমাত্র যার সাথে আমি মন খুলে হাসতে পারতাম।

ক্লাস শেষ করে বাইরে একটু হাঁটছিলাম। কেন জানি মনে হচ্ছে মাথা ঘুরছে আমার। ভাবলাম ‌তাড়াতাড়ি হেঁটে বাসায় চলে যাই। ভার্সিটি থেকে বের হতে যাবো হঠাৎ দেখি কেউ আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ভালো করে তাকাতেই দেখি এ তো আহিয়ান। আজ ভার্সিটিতে একবারও দেখি নি ওকে। কিন্তু এখন আমার সামনে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকার মানে কি? রেগেই বলে উঠলাম..
– কি হয়েছে এভাবে কাকতাড়ুয়া’র মতো দাঁড়িয়ে আছেন কেন?
আমার এমন কথায় একটু ‌অবাক হলেন। তারপর কপাল কুঁচকে বললেন..
– এই মেয়ে এতোদিন আসো নি কেন?
খানিকটা অবাক হলাম। উনি কি তাহলে এতোদিন আমায় খুঁজছিলেন। চুপ হয়ে উনার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম।
উনি আবার জিজ্ঞেস করলেন..

– কি হলো কিছু বলছো না কেন? আসো নি কেন.. Whatever! দেখি তোমার হাতের অবস্থা।
আমি উনার কথা কিছুই বুঝতে পারলাম না কারন আমার চোখের সামনে ততোক্ষণে সব ঝাঁপসা লাগছিলো। কিন্তু উনি আমার উওরের আশা না করে আমার হাত টেনে ধরে নিজেই দেখতে লাগল। আমার হাত দেখে আমাকে ধমক দিয়ে বলল…
– এই মেয়ে হাতের ক্ষত এখনও শুকায় নি কেন? ঔষধ লাগাও নি কেন?
আমি নিজের হাত আহিয়ান এর হাত থেকে সরিয়ে ফেলে বলি…
– আজব তো আপনি! আপনি আমার হাত ধরছেন কেন?
– এই মেয়ে তুমি এভাবে কথা বলছো কেন?
– আমি..

এরপর আর কিছু মনে নেই। অজ্ঞান হয়ে গেলাম। কি হয়েছে কিছু জানি না। যখন জ্ঞান ফিরল তখন দেখি আমার হসপিটালে’র বেড এ শুয়ে আছি।‌ হাতে সেলাইন দেওয়া। ওঠার চেষ্টা করতে লাগলাম তখন দেখি ইতি এসে আমায় ধরল। ওকে দেখে খানিকটা অবাক হলাম কারন শেষ বার আমি আহিয়ান এর সাথে ছিলাম।‌তাহলে এখন ইতি কিভাবে।
ইতি আমাকে বসিয়ে দিয়ে বলল..
– এখন কেমন লাগছে?
– হ্যাঁ ঠিক আছি। কিন্তু তুই কিভাবে? আমি তো..
– আহিয়ান ভাইয়া’র সাথে ছিলি। উনি নিজেই তোকে এখানে নিয়ে এসেছে তারপর আমাকে ফোন করেছে।‌আর আমি আসলাম।
– ওহ্ আচ্ছা। তা এখন আমাকে যেতে হবে।
– আরে আরে বস কোথায় যাবি?
– বাসায় যেতে হবে অনেক কাজ আছে বাসায়।
– তুই কি পাগল নাকি? জানিস ডাক্তার কি বলেছে! তুই নাকি কিছুদিন ধরে ঠিকমতো খাবার খাস নি, তাই এখন তোর শরীর খুব দুর্বল। তা বলে কি শুধু কাজ করলেই হবে খেতে হবে না নাকি?
তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললাম..

– খেয়েছি আমি!
– হ্যাঁ কি খেয়েছেন আমি জানি আর বলা লাগবে। এখন বলেন কি হয়েছে?
– কি হবে?
– নিহা প্লিজ বল কি হয়েছে? তোর এই পোড়া হাত, কিছুদিন ধরে খাবার না খাওয়া কোনো সহজ ব্যাপার না ঘাপলা নিশ্চিত আছে!
– আরে কিছু হয় নি।
– বুঝেছি বলবি না থাক বলার দরকার নেই। আমি কে যে বলবি তুই!
– ইতি সত্যি’ই কিছু হয় নি।
– ওহ্ তাই! ( আমার হাত ধরে ) এটা কি রান্না করার সময় ছ্যাকা খেয়েছিস। তা আমাকে বল এখানে কে ছ্যাকা খায়। দেখেই বোঝা যাচ্ছে কেউ তোর হাত ইচ্ছে করে পুড়িয়ে দিয়েছে।

– বেশি বলছিস!
– মোটেও না। সত্যি বলছি। ( আমার হাতের ওপর হাত রেখে ) মামী মেরেছে তোকে!
– পাগল টাগল হলি নাকি।
– মিথ্যে বলিস না আমি দেখেই বুঝতে পারছি।
– নিশ্চুপ হয়ে গেলাম।
– খেতে দেয় নি তোকে!
– কে বললো দেয় নি। কিন্তু এখন বেড়াতে গেছে নানু বাড়ি মানে মামী’র মা’র বাড়ি।
– তাই তুই খেতে পারিস নি।
– কে বললো, খাবার দিয়ে গেছে আমাকে। আসলে অনেক চিন্তায় ছিলাম বলে ঠিক মতো খাওয়া হয় নি।
– আমার যা বোঝার বোঝা হয়ে গেছে।
– কি বুঝলি তুই?
– কিছু না নে খেয়ে নে। তোর জন্য এনেছি।‌
– কে বেলেছে তোকে এইসব আনতে!
– ডাক্তার বলেছে! বলেছে বেশি বেশি খেতে তোকে বুঝলি। এখন খেতে শুরু কর।
– কিন্তু শোন তো…

এর আগেই ইতি আমার মুখে খাবার দিয়ে দিলো। আর কিছু বলতে পারলাম কারন ও খুব জোর করছিল। ইতি আমাকে খাইয়ে দিচ্ছে আর বকাবকি করছে।ভালো লাগছে এটা ভেবে কেউ তো আমাকে নিয়ে ভাবে। হসপিটাল’টা দেখে মনে হচ্ছে অনেক বড়। বিল ও আসবে খুব। এতো টাকা কিভাবে দেবো। ইতি বলে উঠলো..
– টাকা নিয়ে ভাবিস না আমি দিয়ে দিয়েছি।
– আমি তোকে দিয়ে দেব বুঝলি আস্তে আস্তে দেবো ঠিক আছে। বেতন টা পেয়ে নিই।‌
ইতি ধমক দিয়ে বলল..
– আমি তোকে দিতে বলেছি।
মাথা নিচু করে বললাম…
– নাহ!
– তাহলে পাকনামি করছিস কেন?
শান্ত গলায় বললাম..
– আর কারো দয়া নিতে চাই না রে।ঠেকায় পরে আপন’র কাছে পরে আছি। পর থেকে আর দয়া নিতে চাইছি না। এইসব ভালো লাগে না আমার।
অসহায় মুখ করে..

– আমার সাহায্য তোর দয়া লাগছে!
– আমি সেটা বলি নি ইতি।
– থাক আর কিছু বলিস না তুই। তাড়াতাড়ি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়।
– আমাকে যেতে দিবে না।
– কাল দিবে।
– না তা হয় না।
– কেন?
– মামী বাসায় নেই, আমি না থাকলে পুরো বাড়ি খালি। পরে চোর আসবে বাড়িতে।‌
– কিন্তু তোর এই শরীরে..
– বিশ্রাম বাসায় ও নেওয়া যাবে। কিন্তু আমি আর এখানে থাকবো না।
– নিহা তুই আমার কথা শুনতে চাস না কেন?
– তুই বুঝতে পারছিস না। আমাকে বাসায় যেতে হবে।
– না যাওয়া হবে না।

– ইতি প্লিজ এমন করিস না। আমাকে যেতে হবে।‌ আমি তোকে প্রমিস করছি বাসায় গিয়ে রেস্ট নিবো।
– তুই বললেই হলো। আমি জানি তুই কিছু করবি না। বের হয়ে যাবি টিউশনি করাতে।
– না হলে পেট চলবে কিভাবে?
– হয়েছে ইমোশনালি ব্লাকমেইল করা বন্ধ কর।
– ব্লাকমেইল করছি না এটা বাস্তব।
– আচ্ছা একটা কন্ডিশন আছে।
অবাক হয়ে বললাম…
– কি?
চেয়ারে বসে বলল..
– আমি নিজে তোকে বাসায় দিয়ে আসবো আর তুই আজ কোথাও যাবি না। গেলে কাল যাবি বল আগে।
ওর কথায় অবাক হলাম। ও এমন কথা বলবে ভাবিনি। আমি ভ্রু কুঁচকে বললাম..
– সুযোগের সৎ ব্যবহার করছিস!
– না শুধু সাহায্য করতে চাইছি আমার বেস্ট ফ্রেন্ড’র।
– সত্যি তোর মতো ফ্রেন্ড পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার।
– আমি জানি আমি ইউনিক!
– এ্যা আসছে একটু প্রশংসা করছি আর উনি লাফালাফি করতে শুরু করেছে।
– হুহ!
– হয়েছে এখন না রেগে আমাকে নিয়ে চল।
– তুই বস আমি রিসেপশন থেকে আসছি।‌
– আচ্ছা।

ইতি যাবার পর বেড এ একটু শুয়ে পরলাম। কিন্তু আমি এখনও আহিয়ান কে দেখেনি। আচ্ছা উনি কি চলে গেছেন। মনে হয়! কিছুক্ষণ পর ইতি আসল। সে আমাকে নিয়ে ‌বেরিয়ে গেল।‌ দু’জনে বাসায় ফিরলাম। ইতি আমার বাসা দেখে ‌তাকিয়ে আছে। কারন এরকম বাসা সে খুব কম দেখেছে। আমার বাসা টা একটা বস্তির পাশে। বাসায় আসতে হলে ওখান দিয়েই আসতে হয়। দু’রুম আছে বাসাটিতে। ইতি যে আমার বাসা দেখে অনেক অবাক হয়েছে বুঝতে পারলাম। মুচকি হেসে বললাম..
– আমি জানি এই জায়গায় টা তোর পছন্দ হবে না তাই কখনো আনতে চায় নি তোকে।
– হ্যাঁ সব জেনে বসে আছিস তুই!
– কি করবো বল, যার যা সামর্থ্য!
– জ্ঞান দাওয়া শেষ হলে ভেতরে চল।‌
– হ্যাঁ হ্যাঁ আয়।

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ৮

খুব খারাপ লাগছিলো ওকে এই বাসায় এনে। কারন এরকম পরিবেশ তার বোধগম্য নয়। ওর বাবা একজন সরকারি কর্মকর্তা, মা একটা ব্যাংকে উচ্চপদে চাকরি করেন। কমতি নেই কোনো, আর কমতি জিনিস টা বোঝে না তবে হ্যাঁ একজন ভালো মানুষ ও। মানুষের কষ্ট ঠিক বোঝে। ওকে নিজের রুমে নিয়ে আসলাম। রুমে এনে অস্থির হয়ে ওঠলাম। কোথায় বসতে দেবো ওকে। একটা খাট আর আলনা ছাড়া কিছু নেই ঘরে। ওকে খাটে বসিয়ে আমি একটা পানির গ্লাস দিলাম ওকে। মাথা নিচু করে বললাম..

– ঘরে আর কিছু নেই রে।
– আজব এমন ভাবে বলছিস মনে হচ্ছে আমি খেতে এসেছি।
– কিন্তু তুই আমার অতিথি।
– আর তুই অসুস্থ, বস এখানে।
– শোন ডাক্তার তোকে ভুল বলেছে, আমি একদম ঠিক আছি। দেখ কিভাবে তোর সামনে দাঁড়িয়ে আছি।
ইতি ওঠে আমাকে খাটে বসিয়ে বলল..

– এটা শুধু খানিকক্ষণ’র জন্য। নিজের যত্ন না নিলে আবার অসুস্থ হবি বুঝলি। নে এবার শুয়ে পড়।
– আরে শোন তো!
– কি বললাম! শুয়ে পড় একটু ঘুমানোর চেষ্টা কর।
– কিন্তু…
– এতো কথা বলিস কেন?
– আচ্ছা আচ্ছা ঘুমাচ্ছি।
বলেই ঘুমিয়ে পরলাম। শরীর অনেক দুর্বল থাকায় ‌ঘুম খুব তাড়াতাড়ি চলে আসল। অনেকক্ষণ ঘুমিয়েছিলাম, কিন্তু ঘুম থেকে ওঠেই আমার চোখ কপালে…

ভালোবাসার ফোড়ন পর্ব ১০