মনের কোনে পর্ব ৮

মনের কোনে পর্ব ৮
নাহিয়ানা আফ্রিন 

অনেক্ক্ষণ হয়েছে যে আফ্রিন কে ক্যাবিন এ সিফট করা হয়েছে।আফ্রিন এর জ্ঞান ফিরতে সে অনুভব করলো কেউ তার হাত ধরে বসে আছে, চোখ খুলে দেখলো সে আর কেউ নয় আসফিন।আসফিন কে দেখে আফ্রিন অবাক হলো আসফিন কিভাবে জানলো আফ্রিন কই।
আফ্রিন কে তাকাতে দেখে আসফিন বলে কেমন আছো আফ্রিন?
আফ্রিনঃ ভালো আছি,আপনার এ অবস্থা কেনো?
আসফিন ঃ আমি অনেক ভয় পেয়ে গেছি আফ্রিন তোমাকে অই যায়গায় একা অই অবস্থায় পড়ে থাকতে দেকে আমাকে বলবে ওখানে কি হচ্ছিলো?

আফ্রিন ঃ ইয়ে মানে আমি, (কিছু বলার আগে এসিপি নক করে ক্যাবিন এ ঢুকলো)
সামিম রেজা ঃ এখন কেমন লাগছে তোমার নাহিয়ানা?
আফ্রিন ঃ আই এম পারফেক্টলি ফাইন স্যার ডোন্ট ওয়ারি!
সামিম রেজা ঃ বাট নাহিয়ানা তুমি কাজ টা ঠিক করলে না বুঝলা? আমাদের না জানিয়ে রামিম এর আস্তানায় যাওয়া উচিৎ হয় নাই তোমার?যদি রামিম এর উপর চোখ রাখার জন্য লোক না রাখতাম তাহলে কিছুই যানতে পারতাম না আমি।তোমাকে এই কাজ আমি দিয়েছি তোমার আব্বু আমার প্রান প্রিয় বন্ধু বলে মামনি।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

আফ্রিন ঃ আরে আংকেল ডোন্ট ওয়ারি চিল।
আসফিন কিছুই বুঝতে পারে নাই তাদের কথা তাই হা করে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে।
আফ্রিন তাই বুঝতে পেরে আসফিন কে বলতে শুরু করলো যে
আসফিন ওয়েট আপনাকে আমি সব বলছি।

আমি অনেক ছোট থেকে সামিম আংকেল এর কাছ থেকে ফাইটিং শিখতাম, ফাইটিং এর প্রতি আমার আগ্রহ দেখে আম্মু আব্বু সিক্রেটলি আমার জন্য ক্যারাটে মার্সালাট টিউটর রাখে আসতে আসতে আমার ট্রেনিং সিক্রেট ভাবে চলতে থাকে তা আমি আম্মু আব্বু আর সামিম স্যার ছাড়া কেউ জানতো না। তখন কিছু সুত্রে জানতে পারি যে কেউ আমাদের ওখানে বাংলাদেশ থেকে ড্রাগস এর বিজনেস করে আর সিক্রেট মিটিং এর জন্য ইউ এস এ আসবে অইদিন থেকে আমি তার পিছে খবর নেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লাগি।

আর আমি জানতাম যে আপনি আমার পিছনে লোক লাগিয়েছেন আমাকে ভালোবাসেন প্রথম প্রথম বিরক্ত লাগলেও একসময় ভালোবেসে ফেলি আমি৷ তখন রামিম আমাদের বাসায় আসে আর তাকে নিয়ে ঘুরার দায়িত্ব আমার উপর পরে একসময় আমি জানতে পারি যে ড্রাগস্মাগলার আর কেউ না রামিম। ও যখন আমাকে প্রপস করে আমি তখন রাজি হই আমার বানানো প্ল্যান অনুযায়ী সব ভালোভাবে চলতে থাকে কিন্তু সমস্যা হয় ও একদিন আমাকে হোটেল নিয়ে যায় ওর জন্মদিন উপলক্ষে,আর ওর প্লেন ছিলো আমার সাথে রাত কাটানোর এটা বুঝা মাত্র আমার কিছু ফ্রেন্ডস দের সাহায্যে ওর ড্রিংকস এ ঘুমের মেডিছিন মিশিয়ে দেই আর ওর দেওয়া ড্রিংক ও আমি খাই না কিন্তু এমব ভাব করি আমি সত্যিই ড্রাংক। আর এই সুযোগ নেওয়ার জন্য ও আমার সাথে কিছু করার আগেই ঘুমিয়ে যায়।

আমি আমার এক ফ্রেন্ড কে দিয়ে ওর শার্ট খুলিয়ে কম্বল জরিয়ে শুইয়ে দেই আর নিজের জামাকাপড় আর চুল এলোমেলো করে ওর উপর ঘুমিয়ে যাই এজ মাই প্ল্যান ও সকালে উঠে এসব দেখে সব বিলিভ করে নেয়।আর তোমার পাঠানো লোক হোটেল রুম এ আমাকে আর ওকে ঢুকতে দেখে আলিজালি ভাবে আর তা তোমাকে বলে বুঝছো।রামিম কোনোভাবে জানতে পারে যে আম্মু আব্বু ওর সত্যিটা জানে তাই ও আমাদের দেশে নিয়ে আসে আমরা তা জানতাম না ও ওর সাথে আমাকে নেয় আর আব্বু-আম্মু কে অন্য গাড়িতে পাঠায় আমার আম্মু আব্বুর গাড়ির ব্রেক ফেল করে তাদের এক্সিডেন্ট করে মেরে ফেলে।

তাই দেশে এসে সামিম আংকেল এর সাথে যোগাযোগ করে ওকে ধরার জন্য অনেক প্ল্যান করি কিন্তু এখানে আসার ২ মাস পর ও কিছু করতে পারছিলাম না তা আমি প্ল্যান করি যে রামিম কে বলবো আমি ওর সন্তান এর মা হতে চলছি।আর এতে ও বাবুর জন্য হলেও গলে যাবে কিন্তু না এমন কিছুই হয় নাই ও আকার রুম এ সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়ে রেখেছিলো আমার উপর নজর রাখতে। তাই এতো নাটক করা লাগছে বাট আমি অবাক তখন হই যখন জানতে পারি আমি তোমার সাথে সশত্রুতার জন্য ও আমার সাথে এতো নাটক করছে ।

গায়ে হলুদ এর দিন সব জানা যায় সিন্থিয়া ও সব জেনে যায় তাই তো আমি সিন্থিয়া মিলে প্ল্যান করি ওকে হাতে নাতে ধরবো সিন্থিয়ার বিয়ে হয়নি রামিম এর সাথে ওটা নাটক ছিলো।ওখানে নকল রেজিস্টার পেপার ছিলো।আর অই প্রেগন্যান্সির কীট টা আগেই অন্য কেউ ইউজ করেছিলো ওটা এনে আমি যাস্ট নাটক করি রামিম কে দেখানোর জন্য। আজ সকাল এ যখন রামিম আমাকে কল করে বলে সিন্থিয়া কে মেরে ফেলবে কোনো কিছু না ভেবে ছুটে চলে যাই আমি ওখানে

আমি বোকামি টা করি।
আসফিন এতক্ষন অবাক হয়ে শুনছে এসব কথা কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না সে তার অগচোরে এতো কিছু হলো আর সে টের ই পেলো না ছিহ।
অন্যদিকে রামিম কে বাসায় আস মতে দেখে সবাই রামিম কে নানা প্রশ্ন করা শুরু করলো আর বললো সে কইছিলো এতোক্ষন কারো কথার কোনো উত্তর না দিয়ে রামিম সোজা চলে গেলো নিজের রুম এ আর রুম থেকে ওয়াসরুম এ। সাওয়ার অন করে ভাবছে আফ্রিন এতো স্ট্রং কিভাবে হলো। এমন তো না আফ্রিন অনেক বোকা ছিলো সে না কি অন্যকিছু।

মনের কোনে পর্ব ৭

রামিম ঃ যদি আমার সাথে বেইমানি করো তাহলে কেউ বাচবে না আফ্রিন যে ভাবে তোমার মা বাবা কে মেরেছি সেভাবে সবাইকে শেষ করে দিবো আমি।
সিন্থিয়া যতোটা পাইছে ঠিক ততোটা রামিম এর বিরুদ্ধে প্রমান যোগার করে ফেলছে।সুযোগ খুজছে শুধু আফ্রিন এর কাছে দেওয়ার জন্য।
আফ্রিন কে হসপিটাল থেকে আসফিন এর বাসায় নিয়ে আসা হলো সবাই অনেক প্রশ্ন করলো কিন্তু সবাইকে অনেক কষ্টে বুঝিয়ে চুপ করাল আসফিন।

আজ আর নেই আসফিন এর আফ্রিন এর প্রতি কোনো রাগ কোনো ঘৃনা শুধু আছে ভালোবাসা।
আসফিন, আফ্রিন,লিয়া,লাবিব এখন লিয়ার ঘরে বসে আছে আর কিভাবে কি করবে তার প্ল্যানিং করছে তারা।
লিয়া ঃ চলো না আজ রামিম এর বৌভাত এ যাই আর সেখানেই হবে ওর আন্ডা পান্ডা ফান্ডা ফাশ
লিয়া এর কথায় সবাই হেসে ফেলে, লিয়া আর লাবিব আফ্রিন আসফিন কে একা রেখে চলে যায়। ওরা চলে যেতেই, আসফিন আলতো ভাবে জরিয়ে ধরে আফ্রিন কে
আসফিন ঃ ভালোবাসি খুব তোমায় প্রিয়তমা, কবে থেকে তোমাকে পাওয়ার স্বপ্ন দেখি আমি জানো? এতো ভালোবাসি কল্পনাও করতে পারবে না তুমি।

আফ্রিন ঃ আমার কাজের জন্য এতোদিন আমি আপনাকে বলতে পারি নাই আমিও যে আপনাকে অনেই বেশি ভালোবাসি প্রিয়তম। সেই কবে এই মনের_কোনে তোমার নাম লিখে রেখেছি।
আজ আসফিন আর আফ্রিন নিজের মনের কথা বলে শান্তি পেলো তারা আজ আর কোনো ভুল বুঝাবুঝি নাই তাদের মাঝে।নাই কোন তৃতীয় ব্যাক্তি। তাদের ভালোবাসা আজ এক হলো অনেক ঝড়ের বেগ সামলে। সামনেই আর যাই গোক এই মূহুর্তে তারা একসাথে আছে এটাই অনেক।
আজ সবাই রেডি হচ্ছে রামিম এর পর্দা ফাস করার জন্য।
কি হবে আজ তা কেবল তারাই জানে।

মনের কোনে শেষ পর্ব