মনের কোনে শেষ পর্ব 

মনের কোনে শেষ পর্ব 
নাহিয়ানা আফ্রিন 

সবাই সুন্দর মতো রেডি হয়ে বেড়িয়ে গেছে রামিম এর বাড়ির উদ্দেশ্যে। লাবিব ড্রাইভ করছে লিয়া লাবিব এর পাশের সিট এ বসেছে।আসফিন আর আফ্রিন বসেছে পিছের সিট এ সবাই কথা বলছে কিভাবে রামিম কে শায়েস্তা করা যাবে।এই কথা এর মাঝে আসফিন আফ্রিন কপালে চুমু খেলো, আফ্রিন হা করে তাকিয়ে আছে আসফিন এর দিকে আফ্রিন হয়তো কল্পনা করতে পারে নাই এমন সিরিয়াস মোমেন্টে এইরকম করে ফেলবে আসফিন।তাদের এহেন কান্ডে লাবিব আর লিয়া হাসছে!
আফ্রিন ঃ বেশরম লোক মানুষজন দেখে না সবার সামনে যা তা করে বসে।(রেগে বললো)

আসফিন ঃ আমার বউ আমার বউ এর কপাল আমার ঠোট তা দিয়ে আমি চুমু খাবো কার কি?(জোরে বললো)
আফ্রিন ঃ এতো জোরে কেনো বলছেন দিন দিন আপনার লজ্জা শরম কই যাচ্ছে?
আসফিনঃ বউ এর কাছে কিসের এতো লজ্জা।
আফ্রিন ঃ একেবারে যাতা,আচ্ছা দারাও সামিম আংকেল রে কল দেই ফোর্স নিয়া আসার জন্য।
সবাই ঃ ওকে
সামিম ঃ হ্যালো মামনি ফোর্স এর সবাই সিভিল পোষাক এ ওখানেই আছে সময় মতো সামনে আসবে।
আফ্রিন ঃ থ্যাংকস আংকেল।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

সবাই রামিম দের বাসার ভিতর গেলো আর আসফিন বলছে যে অই আফ্রিন তুমি এতো ভারি পোষাক পড়ে ফাইট কেমনে করবা?(কানেকানে জিজ্ঞেস করলো)
আফ্রিন ঃ সময় হলে নিজেই দেখতে পারবেন(এটিটিউড দেখিয়ে বললো।
আসফিন ঃ তাই না কি দেখা যাবে হুহ।
আফ্রিন লুকিয়ে লুকিয়ে সিন্থিয়ার কাছে গেলো।
আফ্রিন ঃ তুমি ঠিকা আছো সিন্থিয়া
সিন্থিয়া ঃ হ্যা, আপু আল্লাহ আমাদের সহায় আছেন কাল সারারাত অই শয়তান বাসায় ছিলো না তাই বেচে গেছি।আর সব প্রমাণ এই ফাইলে আছে।

আফ্রিন ঃ তোমাকে কি বলে যে ধন্যবাদ জানাবো সিন্থিয়া তুমি না থাকলে এসব পসিবল হতো না।
সিন্থিয়া ঃ আরে আপু বলি না তোমাকে আপুর জন্য এইটুকু করাই যায়।
চলো নিচে চলো বলে আফ্রিন আর সিন্থিয়া নিচে নেমে আসে।আফ্রিন চুপিচুপি নিজের হাতের ফাইল এক পুলিশ অফিসার এর কাছে দিয়ে দেয়।

আসফিন ঃ লেডিস এন্ড জেন্টেল মেন এখানে উপস্থিত সবার দৃষ্টি আকর্ষন করছি আপনাদের কিছু বলা বাকি আছে, তাহলে শুনুন আজ যাদের বৌভাত এর আসছেন আপনারা আসলে তাদের বিয়েই হয়নি।
আসফিন এর কথায় সবাই অনেক অবাক হয়ে যায় সবাই।তার থেকে বেশি অবাক হয় রামিম সে সিন্থিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখে সিন্থিয়া হাসছে তার আর বুঝতে বাকি রইলো না এতা সবাই মিলে তাকে নিয়ে খেলেছে তাই ফোন করে রামিম তার লোকদের আসতে বলে আর রামিম সিন্থিয়া কে টান মেরে নিজের কাছে এনে পিছন থেকে গান বের করে গান পয়েন্ট এ রাখেন।

রামিম এর মা অনেক অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ছেলের দিকে কি হচ্ছে।আর সে কেনোই বা সিন্থিয়া কে বন্দুক তাক করে রেখেছে বন্দুক ই বা পেলো কই?
রামিম এর মা ঃ বাবা এসব কি করছিস প্লিজ ছেরে দে ওকে ও তো ছোট ওকে কেন ওভাবে আটকে রেখেছিস?
রামিক এর বাবা ঃ ছিহ তোকে ছেলে বলতেও ঘেন্না হচ্ছে আমার।এই শিক্ষা দিয়েছি আমি তোকে আজ এই দিন দেখালি?
রামিম ঃ চুপ চুপ কেউ কোনো কথা বলবে না। আমাকে নিয়ে খেলতে চেয়েছিলি তোরা এই রামিম কে নিয়ে।আজ সবাই কে মারবো যেভাবে ফুপা ফুপি কে মারছি।

সবাই ঃ কি তুই মারছিস ওদের। অবাক হয়ে বললো।
রামিম ঃ এই তোরা সবাইকে এক এক করে শেষ করে দে।(রামিম ওর লোকদের বললো।)
রামিম এর লোক কিছু করার আগেই পুলিশরা ওর লোকের সাথে মারামারি শুরু করে রামিম এর চোখ অন্যদিকে ঘুরতেই আফ্রিন রামিম এর হাত থেকে পিস্তল কেরে নেয়।আর নিজের শাড়ি টেনে খুলে ফেলে আরে ভাইবেন না কেউ শাড়ির নিচে সে জিন্স৷ আর টপস পড়া ছিলো।

আফ্রিন এবার রামিম এর পেটে ঘুসি মারলো রামিম আফ্রিন কে মারার জন্য হাত উঠাতেই পিছন থেকে আসফিন তার হাত ধরে ফেললো। একদিক থেকে আফ্রিন পিটিয়ে পিটিয়ে আসফিন এর কাছে পাঠাচ্ছে রামিম কে অন্যদিকে আসফিন আফ্রিন এর কাছে বলের মতো ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মারছে এক পর্যায় রামিম আর না পেরে নিচে বসে পরে আর তা দেখে আফ্রিন বলে,

আফ্রিন ঃ আহারে আমার সোনা বাচ্চা তুমি ক্লান্ত হয়ে গেছো?
আসফিন ঃ আরে তুমি কি বলছো আফ্রিন ও তো গ্রেইট রামিম ও কি আর এতো তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হতে পারে।
আফ্রিন ঃ ঠিক বলছো তুমি।(আসফিন আর আফ্রিন দুজনেই হেসে দেয়)
রামিম ঃ তোদের কাউকে আমি ছাড়বো না দেখে নিবো/
আফ্রিন ঃ নে দেখ আমাকে। (রামিম এর কাছে গিয়ে)
আর শোন নিজে তো বাচ তুই যে ড্রাগস স্মাগলার তা আমরা জানি আর সব প্রুভ ও আছে চান্দু।
সবাইকে উদ্দেশ্যে করে আফ্রিন শুরু থেকে সব বলা শুরু করলো।সব কথা শুনে রামিম সহ সবাই আশ্চর্য হয়ে গেছে মেয়েটা কি ডেঞ্জারাস।

রামিম ঃ আমার কাছে থেকেও এতো প্ল্যানিং কিভাবে করলি আমি টের ও পেলাম না।
আফ্রিন ঃ ইন্সপেক্টর একে আর এর সাথীদের নিয়ে যান কোর্টে সময় মতো সব এভিডেন্স জমা দিয়ে দিবো।
পুলিশ রামিম সহ রামিম এর সব লোক নিয়ে গেলো থানায়। ওদের যাওয়ার পর রামিম এর মা বাবা আফ্রিন এর কাছে ক্ষমা চায়। রামিম এর আম্মু তার সব ব্যাবহার এর জন্য মাফ চায় আফ্রিন ও তাদের মাফ করে দেয়।
আসফিন রা সবাই নিজেদের বাসায় চলে আসে। লিয়া আর লাবিব ও তাদের বাসায় চলে যায়।সিন্থিয়া কে সিন্থিয়ার মা বাবা নিয়ে যায়।

……..৫ বছর পড়……
কথায় আছে না পাপ কাউকে ছাড়ে না তা হয়েছে রামিম এর সাথে তাকে ফাশির রায় দিয়েছে আদালত জেলে বসে হয়তো ফাসির দিন গুনছে সে।
আজ সিকদার বাড়ি আবারো নানান সাজে সজ্জিত হয়েছে কারণ আজ আসফিন আর আফ্রিন দুই ছেলের জন্মদিন আফ্রিন ২ টি পুত্র সন্তান এর জননী দুই জন ই জমজ ওদের ৪ বছর হয়েছে।বড় ছেলে হয়েছে পাপার মতো শান্ত আর রাগি নাম আবরাহাম সিকদার আর ছোট ছেলে অনেক দুষ্ট পুরাই বদের হাড্ডি নাম আরহান সিকদার ওদের জন্মদিন এর আয়োজন।
লাবিব লিয়া ও তাদের একমাত্র ছেলে লিছান এসেছে এখানে ওর বয়স ২ বছর।সিন্থিয়া আসতে পারে নাই কারণ সিন্থিয়াও ৮ মাসের প্রেগন্যান্ট অই ঘটনার পর সিন্থিয়া প্রায় কান্না করতো মন খারাপ করে থাকতো তখন আফ্রিন অনেক হেল্প করছে ওকে। সিন্থিয়ার হাসবেন্ড খুব ই ভালোমানুষ অনেক ভালোবাসে সিন্থিয়া কে।

মনের কোনে পর্ব ৮

সব ভালোবাসার মানুষ একসাথে থাকুক এতেই তো চায় সবাই।
আবরাহাম & আরহাম ঃ মাম্মা পাপা,মিমি, চাচ্চু আর লিতান আতো না আমরা কেক কাতবো।
ওদের কথা শুনে সবাই এগিয়ে আসে ওদের দিকে।ভালোভাবেই ওদের জন্মদিন পালন করা হয়।তারপর সবাই সবার মতো নিজের বাসায় চলে যায়।আরহাম আর আবরাহাম দুই ভাই আজ তাদের দাদুন এর সাথে ঘুমাতে যায়।
আসফিন ঃ প্রিয়তমা তুমি আছো বলেই আমার জিবন আজ এতো সুন্দর, আমাকে ২ টা বেস্ট গিফট দিছো তুমি।আমার #মনের_কোনে তোমাদের নিয়েই বসবাস। তোমরা ছাড়া আমি অস্তিত্বহীন।
আফ্রিন ঃ আমিও তো খুব ভালোবাসি তোমাকে আর প্রিন্সদের ওদের ছাড়া বাচা কি সম্ভব

আসফিন ঃ জান যাবে আমার সাথে?
আফ্রিন ঃ কোথায়?
আসফিন ঃ যেখানে নিয়ে যাবো।
আফ্রিন ঃ হ্যা যাবো।
আসফিন আর আফ্রিন ডুব দিলো ভালোবাসার সাগরে। নতুন সকালের অপেক্ষা।

( লেখাঃ নাহিয়ানা আফ্রিন  ) এই লেখিকার আরও লেখা গল্প পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুন এই গল্পের সিজন ২ পড়তে চাইলেও এখানে ক্লিক করুন