মনের কোনে পর্ব ৬

মনের কোনে পর্ব ৬
নাহিয়ানা আফ্রিন 

আজ সিকদার বাড়ি সেজে ওঠেছে নানা রঙের সাজে এতো সুন্দর করে সাজানো আর মামনি এর সবকাজে এতো তাড়াহুড়ো দেখে আফিন অবাক হয়ে গেছে।
আফ্রিন ঃ আজ কি কিছু আছে মামনি? এতো সুন্দর করে সাজানো হচ্ছে সব আজ না রামিম ভাইয়ার বিয়ে সেখানে যাবা না?

মামনি ঃ হ্যাঁ একটি বিশেষ অনুষ্ঠান আছে যা সময় হলে জানতে পারবি আর হ্যা রামিম এর বিয়েতে আমরা আজ যাবো না বুঝছোস তোর বেষ্ট ফ্রেন্ড লিয়া তোকে ফোন এ না পেয়ে আমাদের ল্যান্ডলাইন এ কল দিয়েছিলো আর বললো সে বাংলাদেশে আসছে তাই আসফিন আর লাবিব আনতে গেছে নিজের রুম এ গিয়ে ফ্রেস হয়ে বস নাস্তা পাঠাচ্ছি আমি।(মামনি এটা বলে চলে গেলেন।)
আফ্রিন ভাবছে কি হচ্ছে এসব কি আজ যা তাকে এখন বলা যাবে না কার বিয়া না শ্রাদ্ধ আল্লাহ জানে বললই না আমেক দূর।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

একা একা বিরবির করতে করতে উপর এ উঠে গেলো আফ্রিন।আর আফ্রিন এর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে হেসে উঠলো মামনি। পাগল মেয়েটা।
আফ্রিন ফ্রেস হয়ে খাবার খ্যে ভাবছে কি হচ্ছে আজ তো রামিম এর বিয়ে অইদিকে সিন্থিয়া কি একা একা পারবে সব কিছু সামলাতে।সিন্থিয়া এর কথা ভাবলেই খারাপ লাগা শুরু হয় আফ্রিন এর এতো ছোট একটি মেয়ে কতোই না ভালোবাসে সে রামিম কে অথচ রামিম ভাবতেও পারছে না। আফ্রিন নিজেকে দোষ দিচ্ছে এতো গাধা বলদ কেমনে হয় সে যে নিজের ভালোবাসা চিনে না।তার উপর রামিম এর সাথে রাত কাটানো নিজেকে ধিক্কার যানাচ্ছে। হাতে ছুরি নিয়ে বলছে আত্তহত্যা যদি পাপ না হতো আর আমার পেটে বাবু না থাকতো নিজেকে শেষ করে ফেলতাম।

আসফিন এই পুরো ঘটোনা গাড়ি তে বসে নিজের মোবাইল এ দেখছে রাগে হাত মুস্টিবদ্ধ করে ফেলছে,মন চাচ্ছে এখুনি যাইয়া পিটাইতে পারলে শান্তি লাগতো।এয়ারপোর্টে পৌছে লাবিব আর আসফিন লিয়ার অপেক্ষা করতে লাগলো আসফিন লিয়া কে চিনে কিন্তু লিয়া আসফিন কে চিনে না।আসফিন এর লোক আফ্রিন এর সব ফ্রেন্ডস দের ইনফরমেশন আসফিন কে আগেই দিয়েছিলো।
লাবিব ফোনে কথা বলতে বলতে হেটে যাচ্ছিলো আর হঠাৎ কারো সাথে ধাক্কা খাওয়ায় লাবিব এর ফোন নিচে পরে ফেটে যায়।

লাবিবঃ হেই আর ইউ ব্লাইন্ড? দেখে হাটতে পারেন না হ্যা আপনার জন্য আমার ফোন পরে গেছে।(ফোন তুলতে তুলতে)
অপরপাশের ব্যাক্তি ঃ আসলে কানা আমি না আপনি কারণ ফোন এ কথা বলতে বলতে হয়তো এটা খেয়াল করেন নি যে আপনি নিজ থেকে আমার সামনে এশে পরছেন আর সাডেন এভাবে সামনে আসায় আমি সামলাতে পারি নাই আর ধাক্কা টা আমার গায়ে লেগে যায় ব্রো(একটি মেয়ে বলে উঠলো)
লাবিব মেয়েটির দিকে তাকিয়ে হা হয়ে আছে কারণ মেয়েটি আর কেউ নয় তার হবু স্ত্রী লাবন্য,
লাবিব ঃ লাবন্য তুমি? এখানে কি করছো,,?

লাবন্য কিছু বলার আগে আসফিন এদিকে আসে আর বলে আরে লিয়া এই এম আসফিন আফ্রিন এর কাজিন।
লাবন্য আর লিয়া আলাদা কেউ নয় একজন ই লাবিব জানতো না লাবন্য এর নাম লিয়া।
লিয়া ঃ হেই ভাইয়ু আম লাবন্য মেহজাবিন লিয়া।
এন্ড মিস্টার ইউ এস এ থাকি ভাবতে পারেন নাই তাইতো৷ কই আপনার বাবার ছোট বেলার বন্ধু এর মেয়ে আপনি ধরেই নিয়েছিলেন সে মেবি দেশি বোকা টাইপ হবে তাই না মিঃ লাবিব সিকদার?
লাবিব ঃ তেমন কিছুই না আসফিন চল যাওয়া যাক এখান থেকে দেড়ি হয়ে যাচ্ছে”
আসফিন ঃ হ্যাঁ, চল আসো লিয়া আমাদের সাথে।

এবার এদের কাহিনী বলা যাক,লিয়ার এর বাবা আর লাবিব এর বাবা ছোট বেলা থেকে অনেক ভালো বন্ধু।লাবিব এর বাবা লিয়ার একটা ছবি নিয়ে লাবিব কে দেয় আর বলে তার বন্ধুর মেয়ের সাথে লাবিব এর বিয়ে ঠিক করেছে।ছবিটা তে লিয়ার গ্রামিন সাজ ছিলো যা লিয়া সখ করে তুলেছিলো,তা দেখে লাবিব ভেবে নেয় একটি গাইয়া মেয়ের সাথে তার বিয়ে ঠিক করে। লাবিব তখন তার বাবা কে বলে লিয়া কে কল দিতে লিয়া কে তখন লাবিব এর বাবা কল দেয় আর লাবিব নাম্বার না দেখেই কথা বলা শুরু করে আর যা না তাই বলে অপমান করে গ্রাম এর মেয়ে ভেবে এতে লিয়া অনেক কষ্ট পায়।এই হলো এদের কাহিনী।

রাস্তায় যেতে যেতে আসফিন লিয়া কে কিসব জানি বোঝাচ্ছে।
আসফিন ঃ বুঝতে পারছো লিয়া?
লিয়া ঃ ইয়াপ ব্রো।যাস্ট ওয়েট এন্ড সি হোয়াট এম আই ডুয়িং।
আসফিন ঃ দ্যাটস গ্রেইট লিয়া! আব আয়েগা আসলি মাজা, আগে আগে দেখো হোতায়ে কেয়া?আ বিগ সারপ্রাইজ ওয়েট ফর ইউ আফ্রিন যাস্ট ওয়েট!
আজ লিয়া এসেই আফ্রিন এর সাথে অনেক মজা করছে আর নানা অজুহাতে আফ্রিন কে মেহেদী লাগিয়ে দিছে আর মাঝখানে লুকিয়ে কার জানি নাম লিখলো!

সন্ধা হতেই আফ্রিন কে লিয়া সাজানো শুরু করলো এই বলে যে তাড়া রামিম এর বিয়েতে যাবে। অনেক কষ্টে বুঝিয়ে সুঝিয়ে সাজিয়ে গুজিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো লিয়া।
অন্যদিকে রামিম আর সিন্থিয়ার বিয়ে অনেক সুন্দর ভাবে সম্পূর্ণ হয়।রামিম এর মা অনেক যত্ন করে বরণ করে তুলে তার ছেলের বউ কে।সিন্থিয়া আর রামিম এর বিয়ের সব নিয়ন কানুন সুন্দর করে সেরে ফেলছেন।সিন্থিয়া কে রামিম এর মা নিয়ে গেছেন নিজের ঘরে খাবার খাওয়াতে মহিলা
অনেক খুশি আজ।

আফ্রিন কে নিচে নিয়ে আসলো লিয়া। সবাই বলে ওঠলো যে অইজে বউ এসে গেছে। বউ ডাক টি শোনা মাত্র আফ্রিন চমকে ওঠলো, বউ কাকে বলছে কিসের বউ।
আসফিন ঃ লেডিস এন্ড জেন্টেলম্যান আজ আমার মানে আসফিন আশিক সিকদার এর সাথে নাহিয়ানা আফ্রিন এর বিয়ে আজ।

মনের কোনে পর্ব ৫

আফ্রিন এসব শুনে কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না আজ তার সাথে আসফিন এর বিয়ে।এ কি করে হতে পারে সে অন্যকারো সন্তান এর মা হতে যাচ্ছে!তার কোনো অধিকার নাই আসফিন এর জিবন নষ্ট করার।
আফ্রিন ঃ আসফিন ভাইয়া তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে এদিক আসবে..?
আসফিন ঃ কি বলবি বল(আফ্রিন এর সামনে এসে আসতে করে বললো)
আফ্রিন ঃ আমি এ বিয়ে করতে পারবো না ভাইয়া”
আসফিন ঃ আমি তোর মতামত কি চেয়েছি? শুধু অইটুকু করবি যা আমি বলবো তোকে করতে।
আফ্রিন ঃ তুই বাদ্ধ হয়তো আমার কথা শুনবি নয়তো লিয়া তার প্রান হারাবে(এটা লিয়ার সাথে মিলে আগেই প্ল্যান করেছিলো আসফিন)

আফ্রিন ঃ না এটা কিছুতেই তুমি করতে পারো না ভাইয়া!
আসফিন ঃ আমি কি পারি আর না পারি তা তোর ভাবনার বাহিরে।
আফ্রিন ঃ আচ্ছা আমি রাজি যা বলবা তাই করবো লিয়ার কোনো ক্ষতি করবে না প্লিজ।
আসফিন ঃ দ্যাটস লাইক আ গুড লেডি মাই লাভ!,

( আসফিন কোনোভাবেই আফ্রিন কে হারাতে পারবে না তাই রামিম কিছু করার আগেই রামিম এর বিয়ের সুযোগ নিয়ে রামিম এসব করে।কাল রাতেই আসফিন ওর মা বিয়ের কথা বলে, বাচ্চার কথা চেপে যায় সে ইচ্ছে করেই.
আর সকালে লিয়ার সাথে প্ল্যানিং করে কিভাবে কি করবে এসব।আর এখন বিয়ে না করলে হয়তো আফ্রিন কে সে হারিয়ে ফেলবে।আসফিন তার প্রিয়তমা এর জন্য সব করতে পারে।)

মনের কোনে পর্ব ৭