মনের কোনে পর্ব ৫

মনের কোনে পর্ব ৫
নাহিয়ানা আফ্রিন 

(সেখানে আর কেউ নয় সিন্থিয়া দাঁড়িয়েছিলো আর রামিম এর আসল চেহেরা দেখে সে স্তব্দ হয়ে গেলো)
আফ্রিন ঃ চলে যাও আমার সামনে থেকে না হলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না বলে দিলাম।
রামিম ঃ আমাকে চিনো তুমি জানে মেরে ফেলতেও তোমাকে দুবার ভাববো না আমি কেন জানো?কারণ তুমি আমার খেলার একটা গুটি মাত্র কাউকে তিলেতিলে কষ্ট দিতে চাই যা তোমাকে দিয়ে, জানো জানো কেনো তোমাকে সে ভালোবাসে বুঝছো হাহ বুঝবা কেমনে গাধি একটা তুমি।একজন ছেলে আছে যে তোমাকে অনেক আগে থেকে ভালোবাসে বুঝছো?

তুমি তখন মেবি ১৭ এর ছিলে তখন থেকে আর যখন আমি এটা জানতে পারি আসতে আসতে তার আর তোমার ব্যাপারে খবর লাগাতে থাকি, এইভাবে কেটে যায় ৫ বছর এই ৫ বছর যে বেনামি চিঠি আর গিফট পেয়েছিলে সে আমি ছিলাম না সে অন্যকেউ ছিলো আর আমি যখন তোমাকে বলি অইটা আমি ছিলাম খুব সহযে আমাকে বিশ্বাস করে নিলা।(ভিলেন এর মতো হেসে)

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

আফ্রিন বাকরুদ্ধ হয়ে শুনে যাচ্ছে সব।তার পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে এসব শুনে,কারণ ৫ বছর যে এক নাম না জানা লোক কে সে ভালোবেসেছে তার #মনের_কোনে জায়গা দিয়েছিলো আফ্রিন খুব ভালোবাস ছিলো সেই অজানা মানব কে আর যখন রামিম ওকে বলে যে এসব রামিম করেছে আফ্রিজ তখন বিশ্বাস করে নেয়।কারণ পরিস্থিতি রামিম এর পক্ষে ছিলো এমন নয় রামিম সব প্ল্যান করে সব করেছে তাই।

রামিম থেমে আবার বলা শুরু করলো , তোকে একটা সিক্রেট বলি শোন সেই লোক আর কেউ না আসফিন বুঝছোস? সে আসফিন।এই আসফিন কে আমি ছোট থেকে দেখতে পারি না।আমার বাসায় আমার থেকে বেশি আসফিন এর প্রসংসা করতো, আমাকে বলা হতো আসফিন থেকো শেখো তোমার ১ বছর এর ছোট হয়েও আদব কায়দা তোমার থেকে ভালো।যেমন পড়া লেখা সে সব দিক থেকে পার্ফেক্ট। এসব শুনতে শুনতে আমি অতিষ্ট হয়ে যাই আর তখন থেকে আজ অবদি আমি আসফিন এর প্রতিটি ভালো লাগার ভালোবাসার জিনিস কেরে নেই।

যানো আসফিন এখন তোমাকে ভালোবাসে না ঘৃনা করে,আর সে ততটাই কষ্ট পাচ্ছে যতটা তোকে ঘৃনা করছে?আর সামনে তুই আমাকে দেখে কষ্ট পাবি আর তোকে দেখে আসফিন(হাহাহাহাহাহা)
আফ্রিন আর এসব নিতে পারলো না ঠাস করে একটা চর লাগিয়ে দিলো রামিম এর গালে। আর নিচে বসে পরলো।
রামিম অই অবস্থায় আফ্রিন কে রেখে চলে গেলো,রামিম কে আসতে দেখে সিন্থিয়া দরজার এর সাইডে লুকিয়ে পরে আর রামিম যেতেই!

সিন্থিয়া ঃ আপু, উঠেন.।(আফ্রিন কে উঠাতে উঠাতে বলে)
আফ্রিনঃ তুমি? (সিন্থিয়া কে দেখে অবাক হয়ে)
সিন্থিয়া ঃ হ্যাঁ আপু আমি বসেন আপনি।(আফ্রিন কে বিছানায় বসিয়ে)
আফ্রিন ঃ তুমি এখানে কেনো? তোমার না হলুদ সেখানে যাও!
সিন্থিয়া ঃ এসব বলে লাভ নাই আপু আমি আজ সব সত্যি জেনে গেছি। তুমি কি এখনো রামিম ভাইয়াকে ভালোবাসো, বিয়ে করতে চাও এখনো?

আফ্রিন ঃ আমি তো তাকে ভালোবাসি নাই আমি এতোটাই বোকা ভালোবাসার মানুষ কে চিনতে পারি নাই, আর এর সুযোগ নিলো এই সয়তান আর এতো কিছু জানার পর তো প্রশ্নই আসে নাই বিয়ে করার।আর তোমাকে আমার আরো কিছু বলার আছে সিন্থিয়া আমি ২ মাস এর অন্তঃসত্ত্বা আমার পেটে রামিম এর সন্তান রামিম চায় আমি আমার বেবি কে নষ্ট করে ফেলি কিন্তু সিন্থিয়া কোন মা ই কি পারে তার বাচ্চাকে হত্যা করতে?

সিন্থিয়া ঃ কি বলছো আপু তুমি এসব এতো নোংরা রামিম ভাইয়া আর তাকে কি না আমি এতো ভালোবাসি?আর বাচ্চা নষ্ট এর মতো পাপ কাজ করো বা আপু!আমার কিছু প্ল্যান আছে রামিম কে শাস্তি দেওয়ার।
আফ্রিন আর সিন্থিয়া অনেক্ষন কথা বলে বেরিয়ে আসে আর সিন্থিয়া স্টেজ এ গিয়ে রামিম এর পাশে বসে আর আফ্রিন হল থেকে বেরিয়ে যায়।আসফিন আফ্রিন কে একা বের হয়ে যেতে দেখে তার পিছনে চলে যায়।

রামিম ঃ কোথায় ছিলিস তুই সিন্থিয়া?না বলে এভাবে গায়েব হয়ে গেলি চিন্তা হয়।
অন্যসময় হলে হয়তো সিন্থিয়া গলে যেতো লজ্জা পেতো আর খুশি হতো কিন্তু আজ তো সে রামিম এর আসল চেহারা দেখতে এতো সুন্দর চেহারার পিছে লুকায়িত এক বিচ্ছিরি নোংরা লোক।এতো অন্যায় করার পর ও সে সাবলিল ভাবে আছে ভাবতেই গা ঘিনঘিন করে সিন্থিয়ার তবুও নিজেকে সামলে বলে ওয়াসরুম এ গিয়েছিলো।
…….অন্যদিকে….

সিন্থিয়া ওখান থেকে বের হয়ে যায় এক ফার্মেসী তে সেখান থেকে প্রেগ্ন্যান্সি টেষ্ট এর জন্য কিট নিয়ে বের হয়ে আসে,আফ্রিন কে ফার্মেসি থেকে বের হতে দেখে আসফিন ভাবে কি হলো মেয়েটার ও ফার্মেসি কেনো গেলো।আফ্রিন সেখান থেকে সোজা বাড়ি গিয়ে ড্রেস চেঞ্জ করে কিট নিয়ে যায় টেষ্ট করতে ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে বিছানায় বসে আছে সে কিট হাতে নিয়ে। তার ভাবনা যে পুরোপুরি ঠিক লাল দাগ দুটো স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।কিট টা টেবিল এর ড্রয়ার এর মধ্যে রেখে ঘুমিয়ে পড়ে আফ্রিন।

এদিকে আসফিন ঘুমাতে পারছেনা তার প্রিয়তমা এর চিন্তায় কি হয়েছে তার প্রিয়তমার। তাকে যেভাবেই হোক জানতে হবে।
রামিম তো আজ অনেক খুশি সবকিছু যে তার মন মতো হচ্ছে যেমন টা সে ভেবেছিলো।
সিন্থিয়া একা একাই কাদছে কারণ তার মনের কোনে যায়গা দেওয়া লোক যে এতো খারাপ তা তো সে জানতো না এমন মানুষ কে ভালোবেসেছে সে ভালোবাসার মানে টা ই জানে না ছিহ ঃ

চারজন মানুষ ব্যাস্ত তাদের দঃখ কস্ট হাসি আনন্দ নিয়ে।কেউ তো জানেই না তাদের জিবনে আগামি দিনে কি ঘটবে।আল্লাহ সবসময় ছার দেন কিন্তু কাউকে ছেড়ে দেন না।সব খারাপ এর শেষ এ ভালো থাকে আল্লাহ সব পাপির জন্য নিদিষ্ট শাস্তি ভেবে রেখেছেন।

মনের কোনে পর্ব ৪

রাত ১ টা বেজে ৪০ মিনিট আসফিন লুকিয়ে আফ্রিন এর রুম এ ঢুকে কি যেনো খোঁজে কিন্তু পাচ্ছে না।
অনেক খোজাখুজি এর অর ক্লান্ত হয়ে আফ্রিন এর পাশে বসলো আর ড্র‍য়ার খুলতেই কিট পেলো।আসফিন ওটা দেখে রাগে চোখ লাল হয়ে গেলো ঘাড়ের রগ গুলো টানটাম হয়ে গেলো।
আসফিনঃ আমি ছারবো না তোকে রামিম, কিছুতেই না আমাকে কিছু বললে আমার সাথে কিছু করলে হয়তো ছেড়ে দিতাম কিন্তু তুই আমার উপর অসথাই রেগে আমার প্রিয়তমা কে কষ্ট দিছোস,তার এ অবস্থা করছোস এর মূল্য তোর থেকে আমি গুনে গুনে নিবো।

আর প্রিয়তমা তুমিও কম অপরাধি নও তুমি আমার ভালোবাসা আমার আবেগ আমার অনূভুতি গুলো বুঝতে পারলা না।আমার মনের_কোনে তোমার নাম দেখলে না।রামিম কে কেন ভালোবাসলে কথা ভুল করেছিলাম আমি বলো না।সবার হিসাব হবে একে একে সবার হিসাব আমি নিবো কাউকে ছারবো না কিন্তু তোনার মধ্যে ভেতর বেরে ওঠা ওটা তো রামিম এর অংশ তাহলে ওকে কি করবো আমি?

এক না হওয়া বাচ্চার প্রান তো আমি নিতে পারবো না।বাচিঁয়ে রাখবো আমি অই বাচ্চা কে আর তোমাকেও আফ্রিন কাল থেকে দেখবে আমার অন্যরুপ।সবাই দেখবে আসফিন আশিক আসলে কে?এই বলে আফ্রিন এর রুম থেকে বেরিয়ে গেলো আসফিন।

……….সকালে……….
আফ্রিন ঘুম থেকে উঠে নিচে নেমে অবাক হতে তাকিয়ে আছে সবার দিকে হচ্ছেটা কি এখানে?

মনের কোনে পর্ব ৬